নিট হিসাব ছাড়াই মুনাফা দেখাচ্ছে ব্যাংক
বছরের প্রথম ছয় মাসের লাভ-ক্ষতির হিসাব চূড়ান্ত করেছে দেশের ব্যাংকগুলো। প্রকৃত মুনাফা যেমনই হোক জুন শেষে বরাবরের মতো পরিচালন মুনাফা বেড়েছে বেশিরভাগ ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের। ঋণ বিতরণ না বাড়িয়ে সরকারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করেই মুনাফা বাড়াচ্ছে ব্যাংকগুলো। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে বেসরকারি খাত। গত ছয় মাসে অনেক ব্যাংকের এই মুনাফা বেড়েছে। তবে এটিই মূল হিসাব নয়। নিট হিসাবে মুনাফা অনেক কমে যাবে। জানা গেছে, ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৬৮০ কোটি। অর্থাৎ এবার ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ৫৮০ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ৪৫০ কোটি। ২০২৩ সালের একই সময় ব্যাংকটির এই মুনাফা ছিল ৩২০ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে বছরের প্রথম ছয় মাসে সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৫৭৯ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৪০৭ কোটি টাকা। এক বছরে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ১৭২ কোটি টাকা। এ সময়ে মধুমতি ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১৮০ কোটি, যা আগের বছর ছিল ৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকটির মুনাফা বেড়েছে ৯৯ কোটি টাকা। বছরের প্রথম ছয় মাসে ইউনিয়ন ব্যাংক ২৫০ কোটি ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ২১১ কোটি টাকার মুনাফা করেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফার প্রবৃদ্ধির তথ্য দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ব্যাংকগুলোর আয়ের বড় একটি অংশ আসে বৈদেশিক বাণিজ্যের কমিশন থেকে। বিদায়ী বছর আমদানি কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। শ্লথ ছিল রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি। তবে অর্থবছরের শেষ দিকে রেমিট্যান্সের গতি কিছুটা বেড়ছে। আবার খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় সব ব্যাংকের। কিস্তি পরিশোধ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় বাড়ছে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ। তারল্য সংকট, মূলধন ঘাটতি, সঞ্চিতি (প্রভিশন) ঘাটতিসহ বেশির ভাগ ব্যাংকের আর্থিক ভিতও নাজুক হয়ে উঠেছে। এর পরও দেখা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। এ বিষয়ে একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘পরিচালন মুনাফা বৃদ্ধির অর্থ এই নয় যে, ব্যাংক খাত ভালো আছে। সঞ্চিতি সংরক্ষণ ও কর পরিশোধের পর পরিচালন মুনাফার কত অংশ টেকে সেটা দেখার বিষয়। ব্যাংকগুলোয় মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আবার কিছু ব্যাংক মূলধন ঘাটতি ও সঞ্চিতি ঘাটতিতে রয়েছে। ডলার ও তারল্য সংকটের কারণে অনেক ব্যাংক প্রত্যাশানুযায়ী ব্যবসা করতে পারছে না।’ আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে যে মুনাফা থাকে সেটিকেই বলা হয় পরিচালন মুনাফা, যা কোনো ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা নয়। এ মুনাফা থেকে খেলাপি ঋণ ও অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) সংরক্ষণ এবং সরকারকে কর পরিশোধ করতে হয়। প্রভিশন ও কর-পরবর্তী এ মুনাফাকেই বলা হয় ব্যাংকের প্রকৃত বা নিট মুনাফা। বিপুল পরিমাণ ঋণ পুনঃতপশিল সত্ত্বেও চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা, যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ। এসব ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রেখে সরকারের কর পরিশোধের পর নিট মুনাফার হিসাব হবে। পুনঃতপশিলকৃত ঋণকে ‘স্ট্রেসড’ বা ‘দুর্দশাগ্রস্ত’ হিসেবে দেখায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পুনঃতপশিলকৃত ঋণের স্থিতি ছিল ২ লাখ ১২ হাজার ৭৮০ কোটি টাকার বেশি। আবার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আদায় অযোগ্য হওয়ায় ব্যাংকগুলো ৬৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করেছে। সব মিলিয়ে দেশের ব্যাংক খাতের অন্তত এক-চতুর্থাংশ ঋণই ছিল দুর্দশাগ্রস্ত। খেলাপির খাতায় ওঠা ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো গ্রাহক উচ্চ আদালতে মামলা করছেন। এসব মামলায়ও বিপুল পরিমাণ ঋণ আটকা পড়েছে।
০২ জুলাই, ২০২৪

৯ মাসে ওয়ালটনের মুনাফা বেড়েছে ৫১২ কোটি টাকা
চলতি হিসাব বছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ওয়ালটন হাই-টেকের মুনাফা বেড়েছে ৫১২ দশমিক ৪২ কোটি টাকা বা ২০৫ শতাংশ। ওয়ালটন হাই-টেকের এই সময়ের জন্য প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। রোববার কোম্পানিটির পর্ষদসভায় এ আর্থিক প্রতিবেদন ফল প্রকাশ করা হয়। ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের ৯ মাসে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৭৬২ দশমিক ৩৪ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ২৪৯ দশমিক ৯১ কোটি টাকা। হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ওয়ালটনের মুনাফা হয়েছে ৪২১ দশমিক ৯৮ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ২৩৫ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা। ৯ মাসে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫.১৭ টাকা; যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮.২৫ টাকা। কোম্পানির এনএভিপিএস পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত দাঁড়িয়েছে ২৫৮.২২ টাকা এবং পুনর্মূল্যায়নসহ ৩৫৯.৬৮ টাকা। কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ২২.৮৮ টাকা।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি / সিটি ব্যাংকের নিট মুনাফা ৩৩% বাড়ল
সিটি ব্যাংক তাদের ২০২৩ সালের সমন্বিত বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বহিঃনিরীক্ষকের অনাপত্তি পত্রের ভিত্তিতে ব্যাংকের পর্ষদ সভায় গতকাল বুধবার ব্যাংকটি ২০২৩ সালের জন্য ৬৩৮ কোটি টাকার কর-পরবর্তী সমন্বিত নিট মুনাফা ঘোষণা করে। ২০২২ সালের ৪৭৮ কোটি টাকার বিপরীতে এই মুনাফা ৩৩.৫ শতাংশ বাড়ল। পর্ষদ সভায় এই মুনাফার ওপরে ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ও ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশও প্রস্তাবিত হয়, যা ব্যাংকের আগামী ৩০ মে তারিখে অনুষ্ঠিতব্য বার্ষিক সাধারণ সভায় অনুমোদনের জন্য উত্থাপিত হবে। এই আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২৩ সালে ব্যাংকটি মোট ১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকার পরিচালন মুনাফা করতে সমর্থ হয়, যা ২০২২ সালে ছিল ১ হাজার ২৩৭ কোটি টাকা। এই সময় ঋণের বিপরীতে ২৫৬ কোটি টাকার প্রভিশন সংস্থান বাবদ ব্যয় করেছে। নিট মুনাফা ৬৩৮ কোটি টাকা হওয়ার কারণে এ ব্যাংকের রিটার্ন অন ইকুয়িটি বা শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগের বিপরীতে রিটার্ন পৌঁছালো ১৭.৭ শতাংশে। এদিকে ব্যাংকটির আয়ের উল্লেখযোগ্য দুটি দিক হলো, এর মোট আয়ের ২৬ শতাংশই এসেছে ফি, কমিশন ইত্যাদি থেকে এবং এই আয়ের ৪০ শতাংশই এসেছে ব্যক্তি খাত থেকে (রিটেইল, কার্ড ও ক্ষুদ্র ঋণ)। এই নিট মুনাফা ঘোষণার মধ্য দিয়ে ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা ২১ পয়সা, যা ২০২২ সালে ছিল ৩ টাকা ৯০ পয়সা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
২৮ মার্চ, ২০২৪

অবৈধ মুনাফা সবচেয়ে বেশি ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার
পৃথিবীতে বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে অর্জিত অবৈধ মুনাফা সবচেয়ে বেশি হয় ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোয়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। আইএলও ‘প্রফিটস অ্যান্ড পভার্টি: দ্য ইকোনমিকস অব ফোর্সড লেবার’ বা ‘মুনাফা ও দারিদ্র্য: বাধ্যতামূলক শ্রমের অর্থনীতি’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বাধ্যতামূলক শ্রম দেওয়া শ্রমিকদের মাথাপিছু মুনাফার হিসাব তুলে ধরেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, মাথাপিছু অবৈধ মুনাফা অর্জনের দিক থেকে ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। এই দুই অঞ্চলের দেশগুলোর বার্ষিক মাথাপিছু অবৈধ মুনাফা ২১ হাজার ২৪৮ ডলার। তালিকায় এরপর রয়েছে আরব দেশগুলো। এসব দেশে যেখানে মাথাপিছু অবৈধ মুনাফা ২০ হাজার ৩১৮ ডলার। আমেরিকা অঞ্চলের দেশগুলোয় মাথাপিছু অবৈধ মুনাফা ১৫ হাজার ১১৯ ডলার, আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোয় ৫ হাজার ৮৭৯ ডলার ও এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোয় ৫ হাজার ১৯৯ ডলার। আইএলওর প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বে প্রতি বছর বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে বছরে ২৩৬ দশমিক ৬০ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার মুনাফা অর্জিত হয়। এর মধ্যে ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর অর্জন সর্বোচ্চ ৮৪ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ৮ হাজার ৪২০ কোটি ডলার। পরের অবস্থানে থাকা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এ ধরনের মুনাফা অর্জিত হয় ৬২ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৬ হাজার ২৪০ কোটি ডলার। আমেরিকা অঞ্চলে এই মুনাফার অঙ্ক এখন ৫২ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ২১০ কোটি ডলার। আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলো বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে ১৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৯৮০ কোটি ডলার এবং মধ্যপ্রাচ্যের, তথা আরব দেশগুলো ১৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার মুনাফা করে। এই বাধ্যতামূলক শ্রমের বড় অংশই বেসরকারি অর্থনীতিতে নিয়োজিত। বিশ্বের কোন অঞ্চলে কত মানুষ বাধ্যতামূলক শ্রম দেয়, সেই হিসাবও দেখিয়েছে আইএলও। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলো। ২০২২ সালে এই দুটি অঞ্চলে ১ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ বাধ্যতামূলক শ্রম দিত। আফ্রিকা অঞ্চলে এই সংখ্যা ছিল ৩৮ লাখ, আমেরিকায় ৩৬ লাখ; ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া অঞ্চলে ৪১ লাখ। এ ছাড়া আরব দেশগুলোতে ৯ লাখ মানুষ বাধ্যতামূলক শ্রম দেন। আইএলও বলছে, ২০১৪ সালের পর এই বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে সৃষ্ট মুনাফা বেড়েছে ৬ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বা ৩৭ শতাংশ।
২২ মার্চ, ২০২৪

সরকারি ঋণ আইন ২০২২ বাস্তবায়ন / ৬ বছরের মধ্যে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা না নিলেই তামাদি
সঞ্চয়পত্রে সরকারি ঋণ আইন-২০২২ বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর ছয় বছরের মধ্যে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা উত্তোলন না করলে সরকারের দায় তামাদি হয়ে যাবে। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে দেওয়া এক প্রজ্ঞাপনে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। আইনে বলা হয়েছে, সরকারি সিকিউরিটি বা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রে এই আইনের অধীন সরকার কর্তৃক গঠিত বা নিযুক্ত কোনো ট্রাস্ট ব্যতীত সরকার অন্য কোনো ট্রাস্টের কোনো প্রকার নোটিশ গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে না; বা এরূপ কোনো নোটিশ দ্বারা সরকারকে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করতে বাধ্য করা যাবে না এবং এ ধরনের বিষয়ে সরকারকে ট্রাস্টি হিসেবে গণ্য করা যাবে না। এ ছাড়া সরকারি সিকিউরিটি বা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের সুদ বা মুনাফা বাবদ পাওনা অর্থ যে তারিখে পাওনা হয়েছে, ওই তারিখ থেকে ৬ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট পাওনা বাবদ সরকারের দায় তামাদি হয়ে যাবে। আইনে বলা হয়েছে, তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর অধীন তথ্য প্রাপ্তির অধিকার ক্ষুণ্ন না করে, কোনো ব্যক্তি এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত ক্ষেত্র ও পদ্ধতি অনুসরণ ব্যতীত, সরকারের দখলে বা হেফাজতে থাকা সরকারি সিকিউরিটি বা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট বা এতদসংক্রান্ত কোনো দলিল পরিদর্শন করতে বা এর কোনো তথ্য চাইতে পারবে না। অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের স্বত্ব অর্জনের উদ্দেশ্যে কোনো দরখাস্ত বা আবেদনে মিথ্যা তথ্য বা বক্তব্য দেওয়া হলে ৬ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ১ লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে আইনে।
১২ মার্চ, ২০২৪

রমজানে মজুত করে মুনাফা রোধে কঠোর হতে হবে
মাঠ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি জেলা প্রশাসকদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আসন্ন রমজান কেন্দ্র করে মজুতদারির মাধ্যমে মুনাফাকারী ও ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধেও কঠোর হতে হবে। একই সঙ্গে স্থাপনা ও ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড যথাযথ অনুসরণের দিকেও নজর দিতে বলেন তিনি। গতকাল রোববার নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে জেলা প্রশাসকদের চার দিনব্যাপী সম্মেলন উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করার পর থেকে নিত্যপণ্য মজুতকারীদের বিরুদ্ধে টানা হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, সামনে রমজান মাস, এ সময় কিছু কিছু ব্যবসায়ী সব সময় পণ্য মজুত করে, কৃত্রিমভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়ে মুনাফা লুটতে চায়। সেদিকে নজর দিতে হবে, কেননা এটি আমাদের আশু করণীয় কাজ। কোথাও যেন ভোক্তাদের হয়রানির শিকার হতে না হয়। আমাদের দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে। পরনির্ভরশীলতা কমাতে হবে, আর এটা যে আমরা করতে পারি সেটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে প্রমাণ করেছি। সেদিকে একটু নজর দেওয়া একান্তভাবে দরকার। সরকার প্রধান বলেন, আরেকটি বিষয় হচ্ছে সরবরাহ। সেটা নিয়েও সমস্যার সৃষ্টি হয় অথবা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। কেউ কেউ মজুতদারি করে। পণ্য পচিয়ে ফেলবে তবু বাজারে ছাড়বে না। সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়ে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। রমজান সামনে রেখেই এ কথাগুলো আমি সবার আগে বললাম। যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যথাযথভাবে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দিকে সবাইকে নজর দিতে হবে। খাদ্যে ভেজাল দেওয়া প্রতিরোধেও জেলা প্রশাসকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রোজা এলেই এই সমস্যাগুলো বেশি পরিমাণে দেখা দেয়। এগুলোর দিকেও নজর দিতে হবে। সম্প্রতি রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে সঠিকভাবে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে কি না, তা সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শুধু সিটি করপোরেশন এলাকায় নয়, দেশের অন্যান্য স্থানেও এটি অনুসরণ করতে হবে। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত আলো বাতাস সরবরাহের ব্যবস্থা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা এগুলো রেখেই ভবন নির্মাণ করতে হবে। তিন ফসলি আবাদি জমি বাড়িঘর বা শিল্প-কারখানাসহ অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না মর্মে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ফসলি জমি রক্ষা করতে হবে। সরকার দেশের উন্নয়ন করছে, পাশাপাশি দেশের মানুষের অধিকারও নিশ্চিত করা দরকার। সমাজে কিশোর গ্যাং সমস্যা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যাবে এবং পড়াশোনা করবে সেই সময় এই সমস্যাটা দেখা দেয়। এলাকাভিত্তিক নজরদারি বাড়াতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা লেখাপড়া করবে তারা তা না করে কেন বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়াবে? এ ব্যাপারে কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকদের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকদের নিয়ে সবার মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, যেন কারও ছেলে মেয়ে এ ধরনের কিশোর গ্যাং, জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়তে না পারে। প্রতিটি পরিবারকে নিজের সন্তান-সন্ততিদের প্রতি নজরদারি বাড়াতে হবে। প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধের দিকে মননিবেশ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবারগুলোকে একটু সচেতন করতে হবে, শুধু গ্রেপ্তার করে বা ধরে লাভ নেই। সেক্ষেত্রে সেখানে থাকা বড় অপরাধীদের সংস্পর্শে এসে এরা আরও বড় কোনো ধরনের অপরাধ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যেতে পারে। এ কারণে গোড়া থেকেই আমাদের ধরতে হবে এবং পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে। তিনি মাঠ প্রশাসনকে জনগণকে কর প্রদানে উৎসাহিতকরণ ও সচেতনতা সৃষ্টি, সার্বজনীন পেনশন স্কিম গ্রহণ, সমবায়ের মাধ্যমে কৃষিকে উৎসাহিতকরণ, সেচ কাজে সোলার প্যানেলের ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ ও সমন্বিত বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং দেশের প্রতি ইঞ্চি অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সচেতনতা সৃষ্টি, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার রোধ করে ভূউপরিস্থ জলাধার সংরক্ষণ ও এর ব্যবহার নিশ্চিত করা, লবণাক্ততা প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় খননকার্য চালানো, জনগণের সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে পানি শোধনাগারগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচিগুলো সম্পর্কে তদারকি নিশ্চিত করা ও যথাযথ প্রাপ্যরাই এর সুবিধা পাচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করা, আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলোর উপকারভোগীদের খোঁজ খবর নেওয়া ও তাদের সমস্যার সমাধান, যুব সমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে ওঠায় সরকারের সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগানোয় উৎসাহিত করার এবং ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে কারিগারি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, যত বেশি ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে তত বেশি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, মাদকসহ তাদের মাঝে বিভিন্ন অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে। এ জন্য তিনি উপজেলাভিত্তিক মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রকল্পগুলার দ্রুত বাস্তবায়ন এবং বছরজুড়ে শিক্ষার্থীদের জন্য নানারকম প্রতিযোগিতার আয়োজনে জেলা প্রশাসনকে নজর দেওয়ার কথা বলেন। সরকারের প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে নজর রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না এবং এগুলো কতটুকু স্থানীয় জনগণের কাজে আসবে, সে বিষয়ে প্রয়োজনে আমাকে সরাসরি রিপোর্ট দিতে হত। শুধু নামকাওয়াস্তে প্রকল্প যেন না করা হয়, সে বিষয়ে তিনি সবাইকে পুনরায় সচেতন করেন। পুনরায় ভোট দিয়ে সরকার পরিচালনায় সুযোগ করে দেওয়ার মাধ্যমে উন্নয়নের ধারাবাহিতা অব্যাহত রাখার সুযোগ প্রদানের জন্য আবারও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন. আমি ১৯৭৫ সালের পর যে নির্বাচনগুলো প্রত্যক্ষ করেছি এবং অংশ নিয়েছি, তার মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবচেয়ে সুষ্ঠু, অবাধ এবং গ্রহণযোগ্য হয়েছে। সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধারাবাহিকভাবে সরকারে আছি, তার মানে এই নয় যে, ক্ষমতাকে শুধু ভোগ করতে এসেছি। জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম এবং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বক্তব্য দেন।
০৪ মার্চ, ২০২৪

ছয় মাসে ওয়ালটনের মুনাফা বেড়েছে ২৩ গুণ
বৈশ্বিক নানা সংকটে নাজুক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির মুনাফায় ব্যাপক উত্থান ঘটেছে। চলতি হিসাববছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর’২৩) বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে প্রায় ২৩ গুণ বা ২ হাজার ২৭০ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা বৃদ্ধিসহ আর্থিক প্রায় সব সূচকেই ব্যাপক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। ওয়ালটন হাইটেকের চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। গত সোমবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ৩৭তম সভায় আলোচ্য সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৪০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাববছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এদিকে, চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২৩) কোম্পানির মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। বিক্রয়ের বিপরীতে কাঁচামাল ও ফ্রেইট কস্ট উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় কোম্পানিটি তার মোট মুনাফার শতকরা হার আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়াতে পেরেছে। পাশাপাশি অন্যান্য আর্থিক সূচকেও ব্যাপক উন্নতি হয়েছে ওয়ালটন হাইটেকের। এ সময় কোম্পানিটির প্রশাসনিক ও বিক্রয়-সংক্রান্ত ব্যয়গুলো সার্বিকভাবে কম হওয়ায় অপারেটিং প্রফিট মার্জিন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তা ছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমায় কোম্পানিটির কর পরবর্তী নিট মুনাফা বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস), শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস)। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ২৪ টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল শূন্য দশমিক ৪৭ টাকা। একই সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত দাঁড়িয়েছে ২৪৪ দশমিক ২৬ টাকা, পুনর্মূল্যায়নসহ ৩৪৫ দশমিক ৭৫ টাকা। প্রথম ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ১৬ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ ও শতকরা হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেকাংশে কমেছে। এতে বিক্রয়ের বিপরীতে আর্থিক ব্যয়ের শতকরা হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। এ ছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় গত অর্থবছরের প্রথম অর্ধ-বার্ষিকে কোম্পানিটি ৩৩৬ কোটি ১০ লাখ টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। সেই ক্ষতি চলতি বছরের আলোচ্য সময়ে প্রায় ৮৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে মাত্র ৪৩ কোটি ৭৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এদিকে, আলোচ্য সময়ে কোম্পানির মোট আর্থিক ব্যয় হয়েছে ১৭৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৬৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ফলে কোম্পানির কর পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ।
২৪ জানুয়ারি, ২০২৪

সোনালী ব্যাংকের রেকর্ড পরিচালন মুনাফা
২০২৩ সালে ৩ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে সোনালী ব্যাংক। কিন্তু ব্যাংকের পরিচালন ব্যয়, ঋণের বিপরীতে প্রভিশন এবং সরকারি ট্যাক্স হিসাব করা হয়নি। খরচ বাদ দিয়ে মূলত নিট মুনাফা হিসাব করা হয়েছে। খরচ বাদ দিলে ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা কিছুই থাকবে না। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকার ডেফারেল বা প্রভিশন রাখতে অতিরিক্ত সময় নিয়েছে সোনালী ব্যাংক। সোমবার সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম। সোনালী ব্যাংক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ২০২৩ সাল শেষে ১ লাখ ৫০ হাজার ৭৩২ কোটি টাকার আমানত সংগ্রহ হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৮০৯ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী, অ্যাডভান্স ডিপোজিট রেশিও দাঁড়ায় ৬৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ, যা আগের যে কোনো বছরের তুলনায় অনেক বেশি। সদ্য সমাপ্ত বছরে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৩ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা, যা ২০২২ সালের তুলনায় ১ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা বেশি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বর্তমান খেলাপি ঋণের পরিমাণ জানাতে পারেননি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম। তবে আগের খেলাপি থেকে এই বছরে ৫৬৭ কোটি টাকা নগদ আদায় সম্ভব হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। ব্যাংকের লোকসানি শাখার সংখ্যা ১৭ থেকে ৯টিতে নেমে এসেছে। ভবিষ্যতে এর সংখ্যা আরও কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৯৯২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। তা বিতরণকৃত মোট ঋণের ১৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ। আফজাল করিম আরও জানান, ২০০৭ সালে আমাদের ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। এখন তা কমতে কমতে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকায় নেমেছে। ভবিষ্যতে আরও কমানো হবে। তিনি জানান, ২০২৩ সালে সুদ থেকে ৮২৭ কোটি টাকা আয় করেছে সোনালী ব্যাংক। অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে যত ঋণ বিতরণ হয়, তার ১৫ শতাংশই সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ হয় বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। তিনি বলেন, এখন থেকে চেক ছাড়াই মাত্র ২ মিনিটেই যে কোনো শাখা থেকে কোনো চার্জ ছাড়াই টাকা উত্তোলন করতে পারবেন সোনালী ব্যাংকের গ্রাহকরা। চেক ছাড়া টাকা উত্তোলনের জন্য শুধু প্রয়োজন হবে সোনালী ই-ওয়ালেট অ্যাপস। মোবাইলে ইন্সটল থাকতে হবে অ্যাপসটি। থাকছে না স্বাক্ষর ভেরিফিকেশনের কোনো ঝামেলা। সোনালী ব্যাংকের যে কোনো শাখায় ‘কিউ আর কোড’ টাঙানো থাকবে।
০২ জানুয়ারি, ২০২৪

সোনালী ব্যাংকের রেকর্ড পরিচালন মুনাফা
২০২৩ সালে ৩ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে রাষ্ট্রীয় সোনালী ব্যাংক। কিন্তু ব্যাংকের পরিচালন ব্যয়, ঋণের বিপরীতে প্রোভিশন এবং সরকারি ট্যাক্স হিসাব করা হয়নি। খরচ বাদ দিয়ে মূলত নিট মুনাফা হিসাব করা হয়। খরচ বাদ দিলে ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা কিছুই থাকবে না। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকার ডেফারেল বা প্রভিশন রাখতে অতিরিক্ত সময় নিয়েছে সোনালী ব্যাংক।  সোমবার (১ জানুয়ারি) সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম। সোনালী ব্যাংক থেকে সরবরাহকৃত বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ২০২৩ সাল শেষে ১ লাখ ৫০ হাজার ৭৩২ কোটি টাকার আমানত সংগ্রহ করেছে ব্যাংকটি। এর মধ্যে এক লাখ ৮০৯ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী এডভান্স ডিপোজিট রেশিও দাঁড়ায় ৬৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। যা আগের যে কোনো বছরের তুলনায় অনেক বেশি। সদ্য সমাপ্ত বছরে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৩ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। যা আগের একই বছরের তুলনায় এক হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা বেশি।  সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বর্তমান খেলাপি ঋণের পরিমাণ জানাতে পারেননি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তবে পূর্বের খেলাপি থেকে এই বছরে ৫৬৭ কোটি টাকা নগদ আদায় সম্ভব হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। ব্যাংকের লোকসানি শাখার সংখ্যা ১৭ থেকে ৯ টিতে নেমে এসেছে। ভবিষ্যতে এর সংখ্যা আরও কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৯৯২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। তা বিতরণকৃত মোট ঋণের ১৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ। আফজাল করিম আরও জানান, ২০০৭ সালে আমাদের ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। এখন তা কমতে কমতে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকায় নেমেছে। ভবিষ্যতে আরও কমানো হবে। ২০২৩ সালে সুদ থেকে ৮২৭ কোটি টাকা আয় করেছে সোনালী ব্যাংক। অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে যত ঋণ বিতরণ হয় তার ১৫ শতাংশই সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ হয় বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। তিনি বলেন, এখন থেকে চেক ছাড়াই মাত্র ২ মিনিটেই যে কোনো শাখা থেকে কোনো চার্জ ছাড়াই টাকা উত্তোলন করতে পারবেন সোনালী ব্যাংকের গ্রাহকরা। চেক ছাড়া টাকা উত্তোলেন জন্য শুধু প্রয়োজন হবে সোনালী ই-ওয়ালেট অ্যাপস। মোবাইলে ইন্সটল থাকতে হবে অ্যাপসটি। থাকছে না স্বাক্ষর ভেরিফিকেশনের কোনো ঝামেলা। সোনালী ব্যাংকের যে কোনো শাখায় ‘কিউ আর কোড’ টাঙানো থাকবে। সোনালী ই-ওয়ালেট অ্যাপসের মাধ্যমে অ্যাড মানি ফিচার ব্যবহার করে ই-ওয়ালেটে টাকা উত্তোলন করা যাবে। এরপর ক্যাশ সেকশনে টাকার পরিমাণ ও মোবাইল নাম্বার বলে আপনার টাকা গ্রহণ করতে পারবেন কোনো ঝামেলা ছাড়াই। টাকা পে কার্ড চালুর মাধ্যমে লেনদেনের ফলে সব ধরনের চার্জ কমে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  আফজাল করিম বলেন, ব্যাংকের বিভিন্ন সার্ভিসগুলো ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। সোনালী ই-ওয়ালেট সেবার মাধ্যমে যে কোনো জায়গা থেকে একাউন্ট খুলে যে কোনো ধরনের লেনদেন মোবাইলে করতে পারবেন গ্রাহকরা। প্রবাসী আয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, রেমিট্যান্সের বৃদ্ধির জন্য মোবাইল অ্যাপস চালু করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ ৬টি দেশ থেকে সহজেই রেমিট্যান্স পাঠাতে পারছেন প্রবাসীরা। এ ছাড়া সোনালী ব্যাংক মালদ্বীপে শিগগিরই রেমিট্যান্স এক্সচেঞ্জ হাউস খুলবে বলেও জানান তিনি।
০১ জানুয়ারি, ২০২৪

রেকর্ড ৭০০ কোটি টাকার মুনাফা রূপালী ব্যাংকের
রূপালী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফায় ৭০০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, খেলাপি হতে আদায়সহ বিভিন্ন আর্থিক সূচকে রেকর্ড লক্ষণীয়। ২০২২ সালে যেখানে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ছিল ১০৬ কোটি সেখানে ২০২৩ সাল শেষে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৭০০ কোটি টাকারও বেশি। পরিচালন মুনাফার এই চিত্র পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একমাত্র রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক রূপালী ব্যাংক পিএলসির। বছর শেষে পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ৭ গুণেরও বেশি। গত বছরের তুলনায় মুনাফা বেড়েছে ৭ গুণ। শুধু মুনাফা নয় বরং খেলাপি ঋণ আদায়, আমানতের প্রবৃদ্ধি, ঋণ বিতরণ, নতুন হিসাব খোলা, লোকসানি শাখা কমানো, অটোমেটেড চালানসহ সকল ক্ষেত্রের অর্জনে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি। নগদ আদায়েও ব্যাংকটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ সফলতা এসেছে। এক্ষেত্রে ঈর্ষনীয় সফলতা দেখিয়েছে ব্যাংক। ৫৫০ কোটি টাকা নগদ আদায়ে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ২২ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ১৬ শতাংশে। রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ঘোষিত একের পর এক কর্মসূচি সফলতার চাবিকাঠি হয়ে কাজ করেছে। নতুন হিসাব খোলার ক্ষেত্রেও রয়েছে ব্যাংকের আরও বড় সফলতা। যেখানে বিগত ৫১ বছরে মাত্র ২২ লাখ সক্রিয় অ্যাকাউন্ট রয়েছে ব্যাংকটির সেখানে ২০২৩ সালে ৮ লক্ষাধিক নতুন হিসাব খোলা হয়েছে। আস্থা ফেরায় ব্যাংকটিকে দীর্ঘদিন পর ফিরেছেন বড় বড় করপোরেট ক্লায়েন্টরা। নতুন হিসাব খোলায় রেকর্ড করায় ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে ব্যাংকের স্বল্প সুদের ডিপোজিটের ক্ষেত্রেও। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমেছে উচ্চ সুদের আমানতের পরিমাণ, বেড়েছে স্বল্প সুদ ও সুদবিহীন আমানত। ব্যাংকটির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরায় আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ। যেখানে বছর জুড়ে বিভিন্ন ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগেছে সেখানে রূপালী ব্যাংকের আমানত বেড়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক পরিচালনায় বর্তমানে দক্ষতার পরিচয় রেখে চলেছে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্র খাতের একমাত্র ব্যাংকটি। বর্তমানে যখন বেশির ভাগ ব্যাংক তারল্য সংকটের মুখে রয়েছে তখন ব্যাংকটির দক্ষ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেতৃত্বে ট্রেজারি ম্যানেজমেন্টে রয়েছে উল্লেখযোগ্য সফলতা।  ২০২৩ সালে ব্যাংকটির লোকসানি শাখার পরিমাণও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। লোকসানি শাখা কমে দাড়িয়েছে ৭ এ। এর আগে কখনো এত কম লোকসানি শাখা ব্যাংকটিতে ছিল না। ব্যাংকখাত সংশ্লিস্টরা মনে করেন দীর্ঘদিন পরে ব্যাংকটিতে সুশাসন ফিরেছে। এতে করে সকল স্টেকহোল্ডার তার সুফল পেতে শুরু করেছে। তারা আরও মনে করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায় উপযুক্তদের পদায়ন করায় এসেছে এ সাফল্য। ১৯৮৬ সালে ব্যাংকটির শেয়ার মূলধনের ৯১% সরকারি মালিকানায় রেখে বাকি অংশ বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে নিয়োগ ও নতুন ঋণ বিতরণের বিষয়ে ধীর গতির কারণে আর্থিক বিভিন্ন সূচকে ধারাবাহিকভাবে পিছিয়ে পড়তে থাকে ব্যাংকটি। ২০২২ সাল থেকে ব্যাংকটি ইউটার্ন নিতে শুরু করেছে। সময়োপযোগী কিছু সিদ্ধান্ত বদলে দিয়েছে রূপালী ব্যাংকের আর্থিক চিত্র। ব্যাংকটি এখন বেশি সুদের আমানত ছেড়ে কম সুদের আমানতের দিকে ঝুঁকছে। সিএমএসএমই ঋণ বিতরণ ও খেলাপি ঋণ আদায়ে জোর দেওয়াসহ নানা সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে আর্থিক উন্নতির কারণে সব সূচকে অগ্রগতি হয়েছে রূপালী ব্যাংকের। কোন কোন পদক্ষেপের ফলে বিভিন্ন অর্জনে রেকর্ড হয়েছে জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, মূলত সেবার মান বৃদ্ধি, খেলাপি ঋণ আদায়ে সর্বোচ্চ মনোযোগ, সিএমএসএমই ঋণ বিতরণে অগ্রাধিকার এবং লো কস্ট-নো কস্ট ডিপোজিট সংগ্রহে জোর উদ্যোগ নেওয়ার ফলে এ ফলাফল এসেছে।
০১ জানুয়ারি, ২০২৪
X