মাছ চাষ শিখতে বিদেশ যেতে চান ১০০ কর্মকর্তা
বিদেশ সফর নিয়ে এর আগেও সমালোচনার মুখে পড়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা। এবার মাছ চাষ শিখতে বিদেশ যেতে চান ১০০ কর্মকর্তা। যার জন্য ব্যয় হতে পারে প্রায় সাত কোটি টাকা। এমনটাই প্রস্তাব করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।  প্রস্তাব অনুযায়ী বিদেশ সফরের জন্য প্রত্যেকের পেছনে ব্যয় হবে সাত লাখ টাকা করে। প্রতি ব্যাচে ১০ জন করে মোট ১০টি ব্যাচে এই বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বা শিক্ষা সফরের ব্যবস্থা করা হবে।  ‘বিদ্যমান সরকারি মৎস্য খামার ও বাঁওড়গুলোর সক্ষমতা ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পে এমন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১৪০৮ কোটি ১২ লাখ টাকা।  প্রস্তাবটি নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে গত ১৩ আগস্ট পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা শেষে বিদেশ সফরের সুযোগ রাখা হয় বলে সূত্রে জানা গেছে।  প্রস্তাবিত প্রকল্পে বৈদেশিক প্রশিক্ষণের বিষয়ে অর্থ বিভাগের মতামত নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এ বিষয় তেমন আপত্তি দেওয়া হয়নি। প্রকল্পটির সমীক্ষা করার ক্ষেত্রেও মানা হয়নি নির্দেশনা। এতে বলা হয়-একটি অভিজ্ঞ, নিরপেক্ষ ও পেশাদারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে সম্ভাভ্যতা সমীক্ষা করতে হবে। কিন্তু এ প্রকল্পে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে করা হয়েছে। ক্রয় পদ্ধতি হিসেবে ডিপিএম (সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি) উল্লেখ করা আছে। কিন্তু এমন প্রস্তাব পিপিআর-২০০৮-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ অবস্থায় সব নির্মাণকাজের ক্রয় পদ্ধতি ওটিএম (ওপেন টেন্ডার মেথড) এ উল্লেখ করা প্রয়োজন বলে পিইসি সভায় মত দেওয়া হয়। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এ কে এম ফজলুল হক সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বিদেশ সফর তো আর এখন হচ্ছে না। প্রকল্পটি কয়েক বছর ধরে বাস্তবায়িত হবে। ভিয়েতনাম কিভাবে স্বল্প খরচে হ্যাচারি শিল্প স্থাপন করে লাভবান হয়েছে, সেটি সরাসরি দেখলে আমাদের দেশের লাভ হবে। এ জন্য বৈদেশিক প্রশিক্ষণের সুযোগ রাখা হয়েছে।  প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, সরকারি মৎস্য খামার আধুনিকীকরণ, প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, গুণসম্পন্ন প্রজননক্ষম মাছ সংরক্ষণ এবং মৎস্য খাতে নিয়োজিত জনবলের কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দক্ষতা উন্নয়ন করা হবে। এসব উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য সম্পূর্ণ সরকারি তহবিলের অর্থে প্রকল্পটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।  পরিকল্পা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় নির্মাণকাজে ব্যয় প্রাক্কলনের ক্ষেত্রে মোট ব্যয়ের ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ ডিজাইন অ্যান্ড কনসালটিং ব্যয় হিসাবে ধরা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পে ৫৩টি খামারে ৭ হাজার ১৬০ বর্গফুটের ৩য় তলা অফিস বিল্ডিং এবং ১২০টি খামারে ৪০০ বর্গফুটের লেবার শেড নির্মাণের প্রস্তাব আছে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এসব খামারে নবম গ্রেডের একজন ফার্ম ম্যানেজার এবং ১৩তম গ্রেডের একজন ক্লার্ক কাম টাইপিস্ট রয়েছেন।
১৬ আগস্ট, ২০২৩
X