জাবি শিক্ষার্থীদের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
টানা চতুর্থদিনের মতো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে আপিল বিভাগে বহাল রাখার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে অবরোধ করেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহালের রায় বহাল রেখেছেন, তারই প্রতিবাদে আমরা রাস্তা অবরোধ করেছি। যেহেতু এখনো শুনানি দেয়নি সেটার ওপর আশা রেখে জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা এখনো অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কর্মসূচি দিচ্ছি না, তবে আজকের অবরোধ কর্মসূচি থেকে জানাতে চাই, যদি এই কোটাপ্রথা বহালের টালবাহানা করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে সারা দেশ অচল করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির বলেন, কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদের কর্মসূচি হিসেবে সারা বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় এখানেও শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেছে, অসুস্থ মানুষের কথা চিন্তা করে অ্যাম্বুলেন্সগুলো বিকল্প রাস্তা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে পার করে দেওয়া হয়েছে। পরে কর্মসূচি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, আদালত যেহেতু সময় বাড়িয়েছে তাই আমরা এখনো অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অবরোধে যাব না। স্বল্প সময়ের জন্য অবরোধ করব। জনগণের জানমালের যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
১৫ ঘণ্টা আগে

দ্বিতীয় দিনের মতো চবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম-হাটহাজারী মহাসড়ক অবরোধ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কঠোর আন্দোলনে হুঁশিয়ারি দেন তারা। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুর ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম - খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করেন প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। এতে সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া চট্টগ্রাম থেকে হাটহাজারী, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িগামী সব যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।  আন্দোলনরত সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমরা এ বৈষম্যমূলক কোটা প্রথা মানি না। কোটার কারণে মেধাবীরা তাদের সঠিক মূল্যায়ন পাচ্ছে না। কোনো মেধাবী শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ৮০ পেয়েও চাকরি পাবে না আর কোটাধারীরা সহজেই চাকরি পাবে এটা মানা যায় না।’ আরবি বিভাগের মাসুম তালুকদার বলেন, আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবি তুলে ধরেছি। অতি শিগগিরিই এ কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ছাত্র সমাবেশ হবে বলে জানিয়েছেন তারা।   এর আগে বুধবার (৩ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে চট্টগ্রাম-হাটহাজারী মহাসড়ক অবরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।  বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা অবশ্যই যৌক্তিক একটি আন্দোলন করছে। এভাবে সড়ক অবরোধ করে জন দুর্ভোগ সৃষ্টি না করে ভিসি বরাবর একটি লিখিত দাবি জানানোর কথা বলেন তিনি। এর মাধ্যমে উপরমহলেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি পৌঁছে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
২০ ঘণ্টা আগে

কুবি শিক্ষার্থীদের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে এবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টা থেকে এ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে বিশ্বরোড অভিমুখে যাত্রা শুরু করলে তারা পুলিশি বাধার মুখে পড়েন। পরে ময়নামতি জাদুঘর সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে কোটবাড়ি বিশ্বরোডে অবস্থান নেন। সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করে কোটাপদ্ধতি পুনর্বহালসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে এ অবরোধ হয়। চাকরিতে মেধাভিত্তিক নিয়োগ বহাল রাখার দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’ শিরোনামের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রায় চার-পাঁচশ শিক্ষার্থী নানা স্লোগান দিতে থাকেন। তারা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নেই’, ‘মেধা যার মেধা যার চাকরি তার চাকরি তার’  ‘মুক্তি যুদ্ধের মূল কথা সুযোগে সমতা’, ‘স্বাধীনতার মূল কথা সুযোগে সমতা’, ‘রেলের ৪০ শতাংশ কোটা মুক্ত করে রেল সম্পদ রক্ষা করো’, ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক মেধাবীরা মুক্তি পাক’ ইত্যাদি। বিক্ষোভ কর্মসূচি ও সড়ক অবরোধের বিষয়ে, লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আবু রায়হান বলেন, কোটা ব্যবস্থা বাতিল  না হলে আমরা আন্দোলন করে যাবো। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছিল তারা আজ সংসদে বসে আছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ তারা ধ্বংস করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে সব কোটা ব্যবস্থা উঠিয়ে দেন। তবে তবে আজ কেন এই কোটা। সকল সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা উঠিয়ে দিতে হবে। নৃবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস দেখলে দেখা যাবে সংগ্রাম ছাড়া অধিকার পাওয়া যায়নি। তাই আজ আমাদের মহাসড়ক অবরোধ। মেধা দিয়ে যদি চাকরি না পায় তাহলে একটি স্বাধীন দেশে মৌলিক অধিকার কোথায়? পাকিস্তান আমলে বৈষম্যের কারণে আমরা রাজপথে নেমে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। আজও আমরা সেই বৈষম্যের শিকার। বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগ হোসেন বলেন, আজকে আমরা রাজপথে এসেছি কারণ হাইকোর্ট  আদেশ দিয়েছে কোটা প্রথা পুনর্বহাল থাকবে। সবমিলিয়ে ৫৬ শতাংশ কোটা থাকবে। যদি এই কোটা বহাল থাকে তবে মেধাবী শিক্ষার্থীরা সুযোগ পাবে না। দেশে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন। বিশেষ কোনো গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের বিপক্ষে আমাদের আন্দোলন নয়। সারা দেশে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়ক বিশেষ গুরুত্ব আছে। উপর মহল যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদেরকে আমরা বার্তা দিতে চাই। যদি তারা ব্যবস্থা বাতিল না করে তাহলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর আন্দোলন করবো। এ বিষয়ে কুমিল্লা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরান হোসেন বলেন, মহাসড়ক এক মিনিট অবরোধ হলেও সরকারের কাছে বার্তা চলে যায়। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর এ দাবির বিষয়ে সরকার অবগত। মানুষের ভোগান্তি নিরসনে শিক্ষার্থীরা যেন স্থান ত্যাগ করেন সে ব্যাপারে আমাদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সম্পূর্ণ একমত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বাংলাদেশের ব্যস্ততম মহাসড়ক। তাই প্রশাসন চেষ্টা করছে যেন দ্রুত তারা স্থান ত্যাগ করে।
২৩ ঘণ্টা আগে

কোটা সংস্কারের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে সোয়া ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, পোস্টার প্রদর্শন এবং কোটাবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। এর আগে বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কোটাব্যবস্থা বাতিল চাই না, কোটার সংস্কার চাই। যারা কোটা পাওয়ার অধিকার রাখে তাদেরকে অবশ্যই সেই অধিকার দেওয়া হোক। কিন্তু অতিরিক্ত কোটা প্রদানের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক মেধাবীদের বঞ্চিত করার সুযোগ আমরা মেনে নিতে পারি না। এ সময় তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।  যাদের কোটা আছে জীবনদ্দশায় একবারই কোটা ব্যবহার করতে পারবে। প্রতি ১০ বছর পর পর জনশুমারির সঙ্গে অর্থনৈতিক সমীক্ষা করতে হবে যাতে আমরা বুঝতে পারি কোটার প্রয়োজনীয়তা কেমন এবং কোটার মূল্যায়ন করা। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারি চাকরিতে বেতন কাঠামোর নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির) মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহালে উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতিবাদে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এদিকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিষয়টি নিয়ে আপিল বিভাগে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এ সময় পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর কোটা নিয়ে নিয়মিত আপিল করার নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। গত ৯ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত না করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
০৪ জুলাই, ২০২৪

কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ
ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, পোস্টার প্রদর্শন এবং কোটাবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। ৪ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিগুলো হলো, ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।  যাদের কোটা আছে জীবনদ্দশায় একবারই কোটা ব্যবহার করতে পারবে। প্রতি ১০ বছর পর পর জনশুমারির সঙ্গে অর্থনৈতিক সমীক্ষা করতে হবে যাতে আমরা বুঝতে পারি কোটার প্রয়োজনীয়তা কেমন এবং কোটার মূল্যায়ন করা। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারি চাকরিতে বেতন কাঠামোর নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির) মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহালে উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতিবাদে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এদিকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিষয়টি নিয়ে আপিল বিভাগে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এ সময় পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর কোটা নিয়ে নিয়মিত আপিল করার নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। গত ৯ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত না করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
০৪ জুলাই, ২০২৪

কোটা বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্রসমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা।  বুধবার (৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর জিরো পয়েন্ট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ১ নম্বর গেটে এসে মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট থেকে হাটহাজারী ও নন্দীরহাট এলাকা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে হাটহাজারী থানার পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি জানিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। সমাবেশে শিক্ষার্থীদের ‘সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘মেধা না কোটা? মেধা- মেধা’, ‘মেধাবীদের কান্না, আর না, আর না, কোটার বিরুদ্ধে -লড়ায় হবে একসাথে’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো ২০১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে, দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সমাবেশে শিক্ষার্থীদের দাবি, কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের ওপর জুলুম করা হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ ও অন্যায় সিদ্ধান্ত। এ ছাড়া এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধার অবমূল্যায়ন হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন। পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের রায় আমাদের পক্ষে না আসলে পুনরায় চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করা হবে। এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি ও ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
০৩ জুলাই, ২০২৪

কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল রেখে হাইকোর্টের আদেশের প্রতিবাদে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। কোটা বাতিল চেয়ে মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে বেলা ১১টা থেকে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। মানববন্ধন শেষে প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় আন্দোলনরতরা চার দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবি আদায় না হলে লাগাতার আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, ২০১৮ সালের রক্তের দাগ আজও শুকায়নি। টিয়ারশেলের দাগ এখনো আছে। আমাদের সেই সংগ্রাম ব্যর্থ হওয়ার পথে। আমাদের ওপর হাইকোর্ট যে রায় চাপিয়ে দিয়েছেন আমরা সেই রায় মানি না। যারা কোটাধারী মেধাবী পরিচয় দিতে চান, তাদের বলতে চাই, এই পরিচয় খুবই লজ্জার। আন্দোলনকারী অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ভূমিকা সরকার বলেন, কোনো বৈষম্যহীন রাষ্ট্রে ৫৬ শতাংশ কোটা থাকতে পারে না। তীব্র আন্দোলনের মুখে সরকার যেখানে কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছিল হাইকোর্ট কেন সেই কোটাকে আবার পুনর্বহাল করল আমরা জানি না। আমি নিজে মেয়ে হয়েও বলছি, আমাদের মেয়েদের জন্য আলাদা কোটার প্রয়োজন নেই। নারী পুরুষ আমরা সবাই সমান।কোটা বাতিল হোক এটাই আমাদের চাওয়া। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাইনুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের মো. মিরাজ হোসেন, নাইমুর রহমান ও ইংরেজি বিভাগের তামিম প্রমুখ।
০২ জুলাই, ২০২৪

কোটা বাতিলের দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলসহ চার দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার পাদদেশে শিক্ষার্থীরা সমাবেশ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি জানান। পরে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবীর বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেছি রাস্তা ছেড়ে দিতে। কারণ অনেক মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। আশা করব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আমাদের শিক্ষার্থীরা সহনশীলতা দেখাবে।’ শিক্ষার্থীদের ৪টি দাবির মধ্যে রয়েছে-  ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। এ ছাড়া দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। আন্দোলনরত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নামে কোটা চালু করে তাদের একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যদিও তারা কোনো প্রকার বৈষয়িক লাভের উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করেননি। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অবমাননাকর এই কোটা ব্যবস্থা চাই না। এই মহান সংগ্রামে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলমান থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘আগামী ৪ জুলাই আপিল বিভাগে আমাদের দাবির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রায় আসবে আমরা আশা করি। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্সসূচিতে যাব।’ আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের জাহিদুল ইমন বলেন, ‘আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ৪ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ অসাম্য রায়ের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে।’
০১ জুলাই, ২০২৪

বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরে মহাসড়ক অবরোধ
গাজীপুরে বকেয়া পাওনা পরিশোধ ও লে-অফ প্রত্যাহার করে কারখানা চালুর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শ্রমিকরা। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শনিবার (১৫ জুন) সকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা থানার বড়বাড়ি এলাকায় ন্যাশনাল কেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের শ্রমিকরা এ বিক্ষোভ করে। আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, ন্যাশনাল কেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি নামের কারখানাটিতে শ্রমিকদের চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এ ছাড়াও গত বছরের বাৎসরিক ছুটির টাকা ও ২ মাস ১৯ দিনের বেতন, ঈদ বোনাস পাওনা রয়েছে। এসব বেতন বোনাস ও লে-অফ প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার সকাল থেকেই কারখানার গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করে শ্রমিকরা।  সকাল ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে তারা পুনরায় কারখানার গেটের সামনে অবস্থান নেয়। পরে তারা দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়। এতে প্রায় ২০ মিনিট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। বর্তমানে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান করছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম বলেন, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করলে ১০ মিনিটের মতো যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মহাসড়কে যান চলাচলও স্বাভাবিক আছে। শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
১৫ জুন, ২০২৪

বেতন-বোনাস দাবিতে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ
বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে কুমিল্লার চান্দিনায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছে ‘ডেনিম প্রসেসিং প্লান্ট লি.’ নামে একটি গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা। গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া অবরোধ চলে টানা দেড় ঘণ্টা। এতে মহাসড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ফলে ঈদযাত্রায় চরম ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রী ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স। জানা গেছে, গত দুই মাসের বকেয়া বেতনসহ বোনাসের টাকা না দেওয়ায় মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা। প্রশাসনের উপস্থিতিতে মালিকপক্ষ আজ শনিবার শ্রমিকদের সব বেতন-বোনাস পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকরা। সময়মতো বেতন দেওয়া না হলে আবারও আন্দোলনে যেতে পারেন বলেও জানান তারা। একাধিক বিক্ষুব্ধ শ্রমিক জানান, ‘আমরা পেটের দায়ে গার্মেন্টসে চাকরি করি। এই গার্মেন্টসে সব সময়ই এক মাসের বেতন আটকে রাখা হয়। আর বছরে ৩-৪ মাসের বেতন আটকে রাখা হয়। এ ছাড়া মাসে ৯০ ঘণ্টা ওভারটাইম করলেও ৩০-৩৫ ঘণ্টার টাকা দেয়। বাকি ওভারটাম পুরোটাই কেটে দেয় তারা। শ্রমিকদের ঘাম ঝরা টাকা খেয়ে ফেলে মালিক কর্তৃপক্ষ। ঈদের আর মাত্র ২ দিন বাকি, এখনো আমাদের ২ মাসের বেতন বকেয়া এমনকি বোনাসও দেওয়া হয়নি। আমরা ঈদ করব কীভাবে?’ শ্রমিক মাহাবুব, ফিরোজসহ একাধিক শ্রমিক জানান, বেতন না পেয়ে বাধ্য হয়ে আমরা মহাসড়কে নেমেছি। এখানে আসার পর পুলিশের সঙ্গে মালিক পক্ষের গুন্ডা বাহিনী আমাদের মারধর করেছে। আমাদের এক নারী শ্রমিকসহ তিনজনকে বেধড়ক মারধর করেছে তারা। এদিকে দেশের ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক টানা দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকায় উভয় পাশে মহাসড়কের বুড়িচং উপজেলার কাবিলা থেকে দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ২০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। অবরোধে আটকে থেকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় ঈদের ছুটিতে ঘরমুখো যাত্রী ও চালক-শ্রমিকদের। খুব বেশি বেকায়দায় পড়ে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, বিদেশগামী যাত্রী ও হাটের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া গরুবাহী ট্রাকচালকরা। ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার বিদেশগামী যাত্রী বিল্লাল হোসেন জানান, দুপুর ২টার মধ্যে আমাকে বিমানবন্দরে পৌঁছতে হবে। দ্রুত পৌঁছার জন্য প্রাইভেটকার ভাড়া নিয়ে এসেছি। কিন্তু যানজটে আটকা পড়ে চান্দিনাতেই দুপুর দেড়টা বেজেছে। সিরাজগঞ্জ থেকে আসা গরুবাহী ট্রাকচালক আনোয়ার হোসেন জানান, গরু নিয়ে চট্টগ্রাম যাব। প্রচণ্ড রোদের মধ্যে যানজটে আটকে আছি। এমন রোদে গরুগুলোও অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে ডেনিম প্রসেসিং প্লান্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘বৃহস্পতিবার থেকেই বেতন-বোনাস দেওয়া শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে আবারও বেতন বোনাস দেওয়া হচ্ছিল। সব শ্রমিক নয়, কিছু উচ্ছৃঙ্খল পোলাপান মহাসড়কে উঠেছিল।’ অভারটাইম কাটার বিষয়ে তিনি বলেন ‘এখানে শ্রমিকরা ঘণ্টায় টার্গেট অনুযায়ী প্রোডাকশন দিতে পারে না। তখন টার্গেট হিসাব করে অভারটাইমের টাকা দেওয়া হয়।’ চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাবের মো. সোয়াইব জানান, মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। শনিবার তাদের বেতন ও বোনাস নিশ্চিত করা হবে। তবে মহাসড়ক অবরোধ করে যাত্রীদের দুর্ভোগ সৃষ্টি করা দুঃখজনক। চান্দিনা-দাউদকান্দি সার্কেলের অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এনায়েত কবির সোয়েব জানান, অনেক চেষ্টার পর শ্রমিকরা অবরোধ উঠিয়ে নিলে যান চলাচল শুরু হয়। দেড় ঘণ্টায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচল স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লেগেছে। চান্দিনা থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ সহযোগিতা করেছে।
১৫ জুন, ২০২৪
X