সেতু যেন মরণ ফাঁদ
বরিশালের বাকেরগঞ্জ পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের একতা বাজার সংলগ্ন দশমী খালের উপর নির্মিত সেতুটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ও পারশিবপুরের সাথে সংযোগ সেতুটির বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পরে রড বেরিয়ে গেছে। জানা যায়, সেটির দুইপাশে নিরাপত্তা রেলিং ভেঙে সেতুর উপরেই পড়ে রয়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। বড় রঘুনাথপুর, ছোট রঘুনাথপুর, শাকবুনিয়া, দূর্গাপুর, পাদ্রিশিপুর, কানকি এ ৬ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করেন। বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় প্রতিদিন ওই সেতু দিয়ে শত শত কোমলমতি শিশু ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। অথচ সেতুটি মেরামতের জন্য কোনো উদ্যোগ নেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।  স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, প্রায় পাঁচ বছর যাবত এই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে সেতুর মাঝখানে পলেস্তারা খসে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় রাতে গর্তে পরে গিয়ে পথচারী দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। পরে স্থানীয় লোকজন ওই গর্তে কাঠের তৈরি পাটাতন বানিয়ে এখন চলাচল করছে। এই ভাঙাচোরা সেতুটি নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ওই এলাকার স্থানীয়রা। স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করে বলেন, রঘুনাথপুর ও পারশিবপুর সড়কে দশমী খালের ওপর প্রায় ১০ বছর আগে বিএনপি নেতা ঠিকাদার কাজী বশির এর মাধ্যমে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সেতুটি নির্মাণ করেন। এই সেতু দিয়ে জেলা উপজেলা সদরের সঙ্গে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। বর্তমানে সেতুটি দিয়ে কোনো প্রকার যানবাহন চলাচল করতে পারছেনা। রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন, আমাদের এলাকায় কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে সেতু টি দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সসহ কোনো যানবাহন না আসতে পারায় রুগী নিয়ে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। টিনে বা বাসের চেংগি বানিয়ে কাঁধে করে অসুস্থ ব্যক্তিকে পার করতে হয়।এছাড়াও সেতুটির কারণে এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের চলাচলে ভোগান্তি হচ্ছে। পাদ্রীশিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো.জাহিদ হাসান বাবু বলেন, সেতুটি প্রায় ১০ বছর আগে নির্মিত হয়েছে। কাজের মান হয়তো ভালো না হওয়ায় খুব কম সময়ে সেতুটির এই পরিস্থিতি হয়েছে। সেতুটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেতুর মাঝখানে একাধিক স্থানে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় নতুন করে নির্মাণ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। উপজেলা প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া বলেন, পাদ্রীশিবপুর একতা বাজার সংলগ্ন সেতুটির বিষয়ে আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে সরেজমিনে গিয়ে সেতুর বর্তমান পরিস্থিতি দেখে প্রয়জনিয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুর রহমান  বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলবো। বর্তমানে সেতুটি সংস্কার করতে বা নতুন করে নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হবে।
৩১ মার্চ, ২০২৪
X