সঠিকভাবে ভ্যাকসিন না দেওয়ায় ব্যবসায়ীর মৃত্যু
জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যবসায়ী জালাল সিকদার (৫০) পটুয়াখালীর বাউফল পৌর শহরের শেরেবাংলা সড়কের বাসিন্দা। ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর ফলপ্রসূ না হওয়ায় জালাল সিকদারের মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা। বুধবার (২০ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রমজানের আগে তাকে বাসার সামনেই একটি কুকুরে কামড় দেয়। এরপর বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে বাইরের একটি ফার্মেসি থেকে তিনি ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ ক্রয় করে প্রয়োগ করেন। কিন্তু ভ্যাকসিন প্রয়োগের পরও জালাল সিকদারের অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। বাউফল পৌরসভার কাউন্সিলর আল মামুন বলেন, জালাল সিকদারের লাশ সতর্কতার সঙ্গে দাফন করার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, বাইরের ফার্মেসিগুলোতে ওষুধ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যথাযথ কোড অনুসরণ করা হয় না। হয়তো ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
২১ মার্চ, ২০২৪

ক্যানসারের ভ্যাকসিন তৈরির দ্বারপ্রান্তে রাশিয়া : পুতিন
ক্যানসারের ভ্যাকসিন নিয়ে সুসংবাদ দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, রুশ বিজ্ঞানীরা ক্যানসারের ভ্যানসিন তৈরির দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  তিনি বলেন, আমরা তথাকথিত ক্যানসারের ভ্যাকসিন তৈরির দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছি। এটি দ্রুতই রোগীর জন্য পাওয়া যাবে, যা নতুন প্রজন্মের জন্য কার্যকর ওষুধ হিসেবে সামনে আসতে চলেছে। মস্কোর ফিউচার টেকনোলজি ফোরাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। রুশ প্রেসিডেন্ট ক্যানসারের টিকার কথা বললেও আসলে এটি আসলে কোন ধরনের ক্যানসারে কার্যকর হবে তা তিনি স্পষ্ট করেননি।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের অনেক দেশ ও কোম্পানি ক্যানসারের টিকা নিয়ে কাজ করছে। গত বছর যুক্তরাজ্য সরকার ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য বায়োএনটেকের সঙ্গে চুক্তি করেছে। এর আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ হাজার রোগীর কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।  বায়োএনটেক ছাড়াও মর্ডানা ও মার্ক ক্যানসারের পরীক্ষামূলক টিকা আবিষ্কার করেছে। গবেষণায় দেখো গেছে, জটিল ধরনের মেলানোমায় আক্রান্ত রোগীদের তিন বছরের চিকিৎসার পর এর পুনরাবৃত্তি বা মৃত্যুর হার অর্ধেক কমে গেছে।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, বর্তমানে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) বিরুদ্ধে ছয়টি নিবন্ধিত রয়েছে। এ ভাইরাস থেকে জরায়ুমুখের ক্যানসারসহ কয়েক ধরনের ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে।  রাশিয়া এর আগে করোনা মহামারির সময়ে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ‘স্পুটনিক ভি’ নামের নিজস্ব টিকা আবিষ্কার করে। এরপর এসব টিকা বেশ কয়েকটি দেশে এ টিকা বিক্রি করা হয়। যদিও টিকাটির বিষয়ে রুশ জনসাধারণের অনেক বেশি অনিচ্ছা ছিল।
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

পথকুকুরকে ভ্যাকসিন দিয়ে যে রেকর্ড গড়ল ভুটান
পথকুকুররা সবসময় অবহেলিত। এদেরকে কেউ কাছেই ঘেঁষতে দেয় না। সেখানে শতভাগ পথকুকুরকে ভ্যাকসিন দিয়ে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে রেকর্ড গড়েছে ভুটান। ভুটানের রাজধানীতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে শেরিং ঐতিহাসিক এই অর্জনের বার্তা দেন। তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে দেড় লাখের বেশি পথকুকুর এবং ৩২ হাজার পোষা কুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে দেশীয় সংস্থার পাশাপাশি সহযোগিতা করেছে গ্লোবাল অ্যানিমেল দাতব্য সংস্থা হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এশিয়া মহাদেশে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন পথকুকুর রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নানাবিধ রোগে আক্রান্ত। এ ছাড়া জীবাণুবাহী এসব কুকুরের কামড়ে বহু মানুষের মৃত্যুও হয়ে থাকে। মূলত ভ্যাকসিনেশনের বাইরে থাকায় কুকুরের জন্মহার ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। যা নিয়ে সতর্ক হয়ে ওঠে ভুটান। তারা হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানায়। শুরুতে ছোট পরিসরে কার্যক্রম পরিচালিত হলেও ধীরে ধীরে তা গোটা দেশে ছড়িয়ে যায়। এই কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক সংগঠনটি ৩২ জনের বেশি ভুটানের নাগরিককে উচ্চপর্যায়ের প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন করতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী এ কার্যক্রমের পেছনে অবদান রাখা সবাইকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি, উদ্যোগটিকে গোটা বিশ্বের অর্জন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সঠিক দিকনির্দেশনা এবং মানুষের সহযোগিতা ছাড়া এটি সম্ভব হতো না। যদিও ছোট পরিসরে শুরু, কিন্তু এই চেষ্টা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনালের মুখপাত্র বলেন, ভুটান সরকারের মতো এতটা উৎসাহ নিয়ে ব্যবস্থাপনা ও সহযোগিতা—এমনটা আমরা আর দেখিনি।
২৬ নভেম্বর, ২০২৩

প্লাস্টিক মহামারির ভ্যাকসিন পলিভ্যাক
প্লাস্টিক দূষণ বিশ্বব্যাপী জটিল সমস্যা। পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য, অর্থনীতি ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য বিরাট হুমকি। বিশ্বে বছরে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য সাগরে গিয়ে মিশছে। বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় ২৫ কোটি পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হয়। দিনে প্রায় চার কোটি ওয়ানটাইম প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার হচ্ছে দেশে। যার মধ্যে বোতল, প্লেট, গ্লাস, চামচ অন্যতম। এসব প্লাস্টিক থেকে সৃষ্ট বর্জ্য প্রায়ই নদী-নালা হয়ে সমুদ্রে মিশছে, যার পরিমাণ প্রায় আড়াই লাখ টন। আরেক হিসাবে দেখা গেছে, নদী ও সাগরে আবর্জনার আশি ভাগই প্লাস্টিক। এসব প্লাস্টিক মাটিতে মিশতে সময় নেবে পাঁচশ বছরেরও বেশি। অর্থাৎ এসব প্লাস্টিক প্রথমে যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করবে তাতেই ধ্বংস হবে পরিবেশ। উপরন্তু এসব প্লাস্টিক পণ্য রিসাইকেল করাও দুঃসাধ্য। দেশে প্লাস্টিকের উল্লেখযোগ্য কিছু বিকল্প এখন আছে। যেমন ভুট্টা, কাসাভার স্টার্চ থেকে তৈরি পলিব্যাগ। বাংলাদেশি গবেষকদের আবিষ্কৃত পাটের সেলুলোজ থেকে তৈরি হয় পলিব্যাগ। কিন্তু সমস্যা হলো, এগুলোর দাম প্রচলিত পলিথিনের তুলনায় ৫-২০ গুণ বেশি। ফলে বাংলাদেশের মতো বাজারে এটির প্রসার ঘটানো কঠিন। এ প্রেক্ষাপটে তিন বছরের গবেষণায় ‘পলিভ্যাক’ নামে একটি সমাধান এনেছে পরিবেশগত প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ইকোভেশন বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এটা এক ধরনের পরিবেশবান্ধব ‘বায়োডিগ্রেডেল’ প্লাস্টিক তৈরির ফর্মুলা, যেখানে প্লাস্টিক পলিমারের সঙ্গে বিশেস একটি ফর্মুলা কসিন অল্প মাত্রায় মেশানো হয়। ওটাকেই গবেষকরা বলছেন প্লাস্টিকের ভ্যাকসিন। আর ওই ভ্যাকসিন মেশানো প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারের পর মাটিতে ফেলা হলে আর্দ্রতা, পানি ও বাতাসের সংস্পর্শে সেটা জেল আকার ধারণ করবে। তাতে কোনো মাইক্রোপ্লাস্টিকও থাকবে না। আরও কিছুদিন পর সেটি এমন অবস্থায় পরিণত হবে যখন বিভিন্ন অণুজীব যেমন ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া তা খেয়ে ফেলতে পারবে। এতে করে যেমন রিসাইকেল করা সম্ভব, তেমনি কোনো মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং কোনো বিষাক্ত পদার্থও থাকবে না পরিবেশে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ইকোভেশনের প্রতিষ্ঠাতা সানজিদুল আলম সিবান শান বলেন, আমরা বায়োট্রান্সমিউটেশন নামে একটি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছি, যা প্লাস্টিক পণ্য যেমন পলিথিন, ওয়ান টাইম কাপ-প্লেট ইত্যাদি উৎপাদনের সময় প্লাস্টিকে পচন ধরাতে একটি মাস্টারব্যাচ যুক্ত করে। প্রযুক্তিটি পলিওলিফিনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যার মধ্যে রয়েছে সবচেয়ে বেশি জমে থাকা প্লাস্টিক পলিথিন (যেমন প্লাস্টিক ব্যাগ, প্যাকেজিং) এবং পলিপ্রোপিলিন (যেমন প্লাস্টিকের কাপ, বোতলের ক্যাপ) যেগুলো এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে একটি মোমযুক্ত পদার্থে পরিণত হবে যদি সূর্যের আলো, বায়ু এবং জলের মতো পরিবেশগত অবস্থার সংস্পর্শে আসে। ইকোটক্সিসিটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই মধ্যস্থতাকারী মোম মাটি, গাছপালা এবং জলজ পরিবেশের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ক্ষতিকর নয়। ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক তখন মোমকে হজম করে কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং পানিতে ভেঙে ফেলবে। এটি মাইক্রোপ্লাস্টিকও তৈরি করে না, যেটা অন্যান্য বায়োডিগ্রেডেবল পণ্যগুলোর একটা বড় সমস্যা। এভাবে প্রাপ্ত পদার্থটির আণবিক ওজন প্রায় ৬০০-১০০০ ডাল্টন, বিদ্যমান প্রযুক্তি যা ৫০০০ ডাল্টনের নিচে পেতে অক্ষম ছিল। এই নিম্ন স্তরে, পলিমারটি পর্যাপ্ত পরিমাণে ভেঙে যায়, যা জীবাণুর জন্য জৈবিকভাবে উপলব্ধি একটি মোমযুক্ত পদার্থে পরিণত হয়। উপ-অনুকূল অবস্থার অধীনে, ক্ষয় হতে কিছুটা বেশি সময় লাগতে পারে। ইকোভেশন মূলত যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং বাংলাদেশে উদ্ভাবিত প্রযুক্তির সমন্বয়ে কাজ করছে। এ বিষয়ে শান বলেন, প্লাস্টিক দূষণ বেশ বড় একটা সমস্যা। কোনো একক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয় এটা সমাধান করা। উদ্ভাবনী গবেষণা, পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন, সচেতনতা কার্যক্রম, সরকারি আইন প্রয়োগ এবং ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। সমাধানের কী কী উদ্যোগ নিচ্ছেন প্রশ্নে শান বলেন, আমরা দেশের সব প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরির আওতায় নিয়ে আসব। এ লক্ষ্যে প্রথমে নিজেরাই দুটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করছি যেখান থেকে বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব বায়োডিগ্রেডেবল পণ্য তৈরি হবে। একটি হবে দেশীয় বাজারের জন্য, আরেকটি রপ্তানিকেন্দ্রিক। এরপর আস্তে আস্তে যখন বাজারে পলিথিন, একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে আমাদের পণ্য পরিচিত হবে, তখন বিভিন্ন কারখানার সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের মাধ্যমেই এ পণ্য তৈরি করব। প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার ফ্লেক্সিবল প্যাকেজিং এবং ২০ হাজার কোটি টাকার একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের বাজারে এই নতুন প্রযুক্তির ব্যবসায়িক সম্ভাবনাও অনেক। আর আমাদের ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট করছি আপাতত ৫০০ টন প্রতি মাসে উৎপাদনের সক্ষমতা নিয়ে। পুরোপুরি শুরু হলে আমরা বছরে ৬ হাজার টন প্লাস্টিক দূষণ থেকে দেশকে বাঁচাতে পারব। সঙ্গে অন্য ফ্যাক্টরিকে পলিভ্যাকের আওতায় এনে ধীরে ধীরে সব সোর্স থেকেই প্লাস্টিক দূষণ কমানো শুরু করব।
২৯ অক্টোবর, ২০২৩

ভ্যাকসিন প্রকল্পের দ্রুত অনুমোদন চায় এডিবি
বাংলাদেশে ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা বাড়াতে দ্রুত প্রকল্প অনুমোদন চায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বর্তমানে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি অনুমোদন না হলে স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং। বুধবার পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা জানান এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে মন্ত্রীর দপ্তরে এ বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, করোনা, ডেঙ্গুসহ আরও নানা রোগের টিকা তৈরি করা হবে। আগামীতে আরও নতুন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। এখন থেকেই এর প্রস্তুতি দরকার। এরই মধ্যে সরকার একটি প্রকল্প নিয়েছে। সেখানে এডিবি ৩৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার ঋণ দেবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অঙ্ক ৩ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটি দ্রুত অনুমোদনের অনুরোধ জানিয়েছে এডিবি। মন্ত্রী বলেন, আমার পক্ষ থেকে কোনো কমতি থাকবে না। এটি ভালো উদ্যোগ। দ্রুত অনুমোদনের ব্যবস্থা করা হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টরের বরাতে জানান, গত অর্থবছর বাংলাদেশে কাজের পরিবেশ, অর্থছাড়, প্রকল্প বাস্তবায়ন, ঋণ অনুমোদন—সব ক্ষেত্রেই ভালো সময় পার করেছেন তিনি। এডিমন গিন্টিং বলেন, এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী পর্যায়ে আগামী ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ আর অল্প দামে টিকা কিনতে পারবে না। তখন আন্তর্জাতিক বাজারদর অনুযায়ীই টিকা কিনতে হবে। এজন্য এখন থেকে দেশে টিকা তৈরির সক্ষমতা বাড়ানোর প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আমরা প্রকল্পটির দ্রুত অনুমোদন চাই।
১২ অক্টোবর, ২০২৩

ভ্যাকসিন প্রকল্পের দ্রুত অনুমোদন চায় এডিবি
বাংলাদেশের ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা বাড়াতে দ্রুত প্রকল্প অনুমোদন চায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বর্তমানে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি অনুমোদন না হলে স্বল্প সুদের ঋণ পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চত হবে।  বুধবার (১১ অক্টোবর) সকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা জানান এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে মন্ত্রীর দপ্তরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।  বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, করোনা ও ডেঙ্গুসহ আরও নানা ধরনের রোগের টীকা তৈরি করা হবে। আগামীতে আরও নানা ধরনের ভাইরাস আসতে পারে। সেজন্য এখন থেকে প্রস্তুতি দরকার। সরকার সেজন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সেখানে এডিবি ৩৩৮ মিলিয়ন ডলার বা ৩৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার ঋণ দেবে। টাকার অঙ্কে ৩ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে অর্ধেক স্বল্প সুদে এবং অর্ধেক বাজার দরের কাছাকাছি সুদ থাকবে। প্রকল্পটি যাতে দ্রুত অনুমোদন করিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য এডিবি অনুরোধ করেছে।  মন্ত্রী বলেন, আমার পক্ষ থেকে কোনো কমতি থাকবে না। এটি ভালো উদ্যোগ। এডিবি আমাদের ভালো বন্ধু। যত দ্রুত অনুমোদন করা যায় সেই ব্যবস্থা করা হবে।  তিনি বলেন, এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেছেন, গত অর্থবছর বাংলাদেশে তার সবচেয়ে ভালো সময় কেটেছে। কাজের পরিবেশ, অর্থছাড় , প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং ঋণ অনুমোদন সব ক্ষেত্রেই ভালো সময় পার করেছেন তিনি।  এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং বলেন, গত অর্থবছর বাংলাদেশের জন্য সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২ বিলিয়ন ডলার স্বল্প সুদে এবং দেড় বিলিয়ন ডলার বাজার দরের কিছু কম সুদের ঋণ। এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী পর্যায়ে আগামী ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ আর স্বল্প দামে টিকা কিনতে পারবে না। তখন আন্তর্জাতিক বাজার দর অনুযায়ীই টিকা কিনতে হবে। এজন্য এখন থেকে দেশেই যাতে বাংলাদেশ টিকা তৈরি করতে পারে সেজন্য সক্ষমতা বাড়ানোর প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এটি যাতে দ্রুত অনুমোদন হয় সেটিই আমরা চাই। 
১১ অক্টোবর, ২০২৩

ডেঙ্গু ভ্যাকসিন ও আমাদের করণীয়
দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে ভেঙেছে মৃত্যুর সব রেকর্ড। ২০০০ সালের পর থেকে প্রতিবছরই কমবেশি ডেঙ্গু হয়েছে তবে এ বছর আক্রান্ত এবং মৃত্যুসংখ্যা আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। আগস্টে এসেও আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে ডেঙ্গু রোগের সংখ্যা আরও বাড়বে। বিশেষ করে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের পরিস্থিতি খারাপ হবে। সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে যে, পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ এবার ডেঙ্গু ঝুঁকিতে থাকবে। ডেঙ্গুর সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। লক্ষণ অনুযায়ী এই রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়। পৃথিবীতে প্রতিবছর গড়ে ৫ লাখ মানুষ ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং এর মধ্যে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। পৃথিবীব্যাপী মশা নিয়ন্ত্রণই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায়। তবে কোনোভাবেই যেন মশার সঙ্গে পেরে উঠছে না মানুষ। তাই পৃথিবীর বড় বড় গবেষণা সংস্থা নজর দিয়েছে ডেঙ্গু ভ্যাকসিন তৈরিতে। নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বেশ কয়েকটি কোম্পানি এরই মধ্যে ডেঙ্গু ভ্যাকসিন তৈরিতে সফল হয়েছে এবং কয়েকটি ডেঙ্গু ভ্যাকসিনের ফেজ-৩ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত সানোফি পাস্তুর দ্বারা তৈরি ডেনভ্যাক্সিয়া হলো একমাত্র ভ্যাকসিন, যা ২০১৫ সাল থেকে বিশ্বের অনেক দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত এবং ব্যবহৃত হচ্ছে। সানোফির তথ্য মতে, এটি আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এমন ৯ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ব্যক্তিরা গ্রহণ করতে পারবে। সানোফি পাস্তুর ৯ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ডেনভ্যাক্সিয়া গ্রহণের কথা বললেও আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল ৯ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য এটি দেওয়ার সুপারিশ করেছে। এটি শুধু তাদের জন্য, যারা আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল এবং যে এলাকায় ডেঙ্গু হয় সেখানে বসবাস করে। ডেঙ্গু ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যে, এই ব্যক্তি আগে ডেঙ্গু দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিল। কারণ, যেসব শিশু আগে ডেঙ্গু সংক্রমণ হয়নি তাদের এই ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে ডেঙ্গু হলে রোগটি গুরুতর হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এমন প্রমাণ ইতিমধ্যে মিলেছে। তাই, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের টিকা দেওয়ার আগে পরীক্ষাগার-নিশ্চিত পূর্ববর্তী ডেঙ্গু সংক্রমণের প্রমাণ পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। ডেনভ্যাক্সিয়ার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, তাই এ বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য ও উপাত্ত নেই। যদিও তারা বলছে, অন্তঃসত্ত্বাদের ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিনের কোনো ক্ষতিকর প্রভাব নেই। গর্ভাবস্থায় ডেনভ্যাক্সিয়ার প্রভাব নির্ধারণের জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন। অন্তঃসত্ত্বারা যেহেতু যে কোনো ভাইরাসজনিত রোগের জটিলতার ঝুঁকিতে থাকে, তাই ভ্যাকসিন প্রদানকারী অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য টিকা দেওয়ার সুপারিশ করার সময় ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনা করা উচিত। বুকের দুধ পান করানো মায়েরা যদি ডেনভ্যাক্সিয়া ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন, তাহলে তা বুকের দুধ পানকারী সন্তানদের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, সে বিষয়েও পরিপূর্ণ গবেষণা হয়নি। নবজাতকের মায়েদের এই ভ্যাকসিন প্রদান করার আগে বুকের দুধ পানকারী সন্তানদের মধ্যে ডেঙ্গু ভাইরাসের ঝুঁকি বিবেচনা করা প্রয়োজন। ৯ বছরের কম বয়সী শিশুদের আগে ডেঙ্গু সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা কম। এ কারণে ৯ বছরের কম বয়সীরা ডেনভ্যাক্সিয়া ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য যোগ্য নয়। যারা ডেঙ্গুপ্রবণ এলাকায় বসবাস করেন না অথবা ভ্রমণকারী, তাদের জন্যও এই ভ্যাকসিন অনুমোদিত নয়। ডেঙ্গু থেকে পূর্ণ সুরক্ষার জন্য ডেনভ্যাক্সিয়া ভ্যাকসিনের তিনটি ডোজ এবং প্রতিটি ডোজ ছয় মাসের ব্যবধানে (০, ৬ এবং ১২ মাসে) দিতে হবে। শিশুদের মধ্যে যাদের টিকা দেওয়ার আগে ডেঙ্গু হয়েছিল তাদের ক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে ডেঙ্গু রোগ, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এবং গুরুতর ডেঙ্গু থেকে ৮০ ভাগ (১০০ জনের মধ্যে ৮০ জন) রক্ষা করে। ভ্যাকসিনটি চার ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাসের (ডেঙ্গু ১, ২, ৩ এবং ৪) বিরুদ্ধেই সুরক্ষা দেয়। ডেনভ্যাক্সিয়া ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কত বছর ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দেয়, সেটি নিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ গবেষণা এখনো হয়নি। তবে কোম্পানির তথ্য মতে, ভ্যাকসিনটি কমপক্ষে ছয় বছরের জন্য ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে। যদিও ভ্যাকসিনটি অত্যন্ত কার্যকর, তবে টিকাপ্রাপ্ত স্বল্পসংখ্যক ব্যক্তির ক্ষেত্রে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির প্রমাণও পাওয়া গেছে। ডেনভ্যাক্সিয়া ভ্যাকসিনের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে রয়েছে—ব্যথা, চুলকানি বা ইনজেকশন সাইটে ব্যথা, মাথাব্যথা, দুর্বলতা এবং সাধারণ অস্বস্তি। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো থেকে বোঝা যায়, এটি শরীরে সুরক্ষা তৈরি করছে। অন্যান্য ভ্যাকসিনের মতো এই ভ্যাকসিনেও কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হতে পারে। জাপানের তাকেদা ফাউন্ডেশন QDENGA® (TAK-003) নামে একটি ডেঙ্গু ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। এটি ২০২২ সালের আগস্টে ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য ইন্দোনেশিয়া জাতীয় ওষুধ ও খাদ্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থা দ্বারা অনুমোদিত হয়েছে। ছয় বছর থেকে ৪৫ বছর বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে যে কোনো সেরোটাইপের ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দেবে বলে তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর প্রায় ১২টি দেশে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। ফেজ-১, ২ ও ৩ পর্যায়ের ট্রায়ালে এই ভ্যাকসিন কার্যকর ও নিরাপদ প্রমাণিত হয়েছে। এ টিকাটি ছয় বছরের বেশি সবাইকে দেওয়া যেতে পারে। তবে অবশ্যই দুটি ডোজ দিতে হবে। প্রথম ডোজ দেওয়ার তিন মাস পরে দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয়। এতে শরীরে আজীবন প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় বলে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে গবেষণালব্ধ নিশ্চিত প্রমাণ নেই। চার থেকে ৬০ বছর বয়সী মানুষকে এ টিকা দেওয়া যাবে। QDENGA® প্রয়োগের ক্ষেত্রে আগে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ছিল কি না, তা পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে না। এটি DENV-2 ধরনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। তবে অন্য তিনটি ডেঙ্গু ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট ডেঙ্গু জ্বর থেকেও সুরক্ষা দেবে বলে জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইউকে, আইসল্যান্ড, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশ জাপানের তৈরি এই ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। ভারতের প্যানেসিয়া ফার্মাসিউটিক্যালস ও সেরাম ইনস্টিটিউট যৌথভাবে ডেঙ্গু ভ্যাকসিন তৈরির প্রায় শেষ প্রান্তে চলে এসেছে। এই কোম্পানির ভ্যাকসিনটির তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। এ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আরও ৭টি কোম্পানি ডেঙ্গু ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ডিভি১-ডিভি ৪, টেট্রাভেক্স-ডিভি-টিভি ০০৩, আভিদা বায়োটেকস, কে. এম. বায়োলিক্স কেডি ৩৮২/ টেট্রাভ্যালেন্ট, ইমার্জেক্স পেপজিএনপি-ডেঙ্গু, কোডাভ্যাক্স-ডেনভি, প্যানাসিয়া বায়োটেক ইত্যাদি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন আমদানি এবং প্রয়োগ করবে কি না সেটি নানা মাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে। তবে এটির আমদানি এবং প্রয়োগের পূর্বে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করা প্রয়োজন। এ ছাড়াও পৃথিবীর অন্যান্য দেশ, যারা এটি প্রয়োগ শুরু করেছে তাদের কাছ থেকে এর ফলাফল এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা প্রয়োজন।   লেখক : অধ্যাপক, কীটতত্ত্ববিদ, গবেষক প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ইমেইল: [email protected]
০৮ আগস্ট, ২০২৩

বিনামূল্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা প্রদানের সময় জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা প্রদান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিনামূল্যে প্রদান করা হবে এই টিকা।  সোমবার (৭ আগস্ট) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। বাংলাদেশকে এই টিকা দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।  স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২৭ হাজার নারী এতে আক্রান্ত হন এবং সাড়ে ছয় হাজার মারা যায়। সার্ভিকাল ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।  এ টিকা দিতে পারলে মৃত্যুর সংখ্যা, সংক্রমণ ও রোগীর সংখ্যা কমবে।  তিনি বলেন, স্কুল থেকে এ টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করা হবে। কারণ ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী মেয়েদের এ টিকা দেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে এই বয়সী সব মেয়েদের এ টিকা দেব। সাড়ে ২৩ লাখ টিকা হাতে পেয়েছি। পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম, বরিশাল দ্বিতীয় দফায় রাজশাহী, খুলনা, রংপুর ও ময়মনসিংহে টিকা দেওয়া হবে। নভেম্বরে আরও ২০ লাখ এবং ডিসেম্বরে ১২ লাখ টিকা পাওয়া যাবে। আগামী বছরে ৪২ লাখ টিকা এবং ২০২৫ সালে ২৩ লাখ টিকা পাওয়া যাবে বলে জানান মন্ত্রী।  জাহিদ মালেক বলেন, বাংলাদেশে ভালো করে করোনার টিকা দিতে পারায় গ্যাভি (টিকা ব্যবস্থাপনার বৈশ্বিক জোট) এবং ডব্লিউএইচও খুবই খুশি। তারা আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আগামী ৫ বছরে ১০ কোটি করোনার টিকা দেবে। ৫ কোটি মানুষকে সেই টিকা দিতে পারব। বিনামূল্যে আমরা এ টিকা পাব বলে আশা রাখি। যার মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এ টিকা দিতে খরচ হবে ৬০০ কোটি টাকা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি চিকিৎসকরা যারা বিএসএমএমইউয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পড়ছেন তারা বাড়তি ভাতার দাবি করছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে আমরা তার অনুমতিক্রমে ভাতা ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করে দিয়েছি। ইন্টার্ন চিকিৎসকদেরও দাবি ছিল। তারা এখন মাসে ১৫ হাজার টাকা করে ভাতা পান, সেটিকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করছেন সাড়ে ৬ হাজার আর সাড়ে ৪ হাজার ইন্টার্ন চিকিৎসক রয়েছেন। তাদের বাড়তি টাকা দিতে খরচ হবে ৬৪ কোটি টাকা। এটি অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।  
০৭ আগস্ট, ২০২৩

ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নেব- বিএসএমএমইউ উপাচার্য
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) গবেষণা করে ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। গতকাল শনিবার বিএসএমএমইউতে ডেঙ্গুবিরোধী সামাজিক আন্দোলন চাই নামে একটি সংগঠনের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, দেশে সারা বছর ডেঙ্গু নিয়ে কাজ হয় না বলেই আজ এ অবস্থা। বিএসএমএমইউতে ডেঙ্গু নিয়ে রিসার্চ করব। ডেঙ্গু প্রতিরোধ কমিটির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এখানকার চিকিৎসকরাও কাজ করবেন। ভ্যাকসিন বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগকে দ্রুত কাজ শুরুর আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদকে চেয়ারম্যান ও আবাসিক চিকিৎসক (আরপি) সহকারী অধ্যাপক ডা. তৌফিক আহমেদকে সদস্য সচিব করে ডেঙ্গু প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুকে প্রধান উপদেষ্টা, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে বিশেষ উপদেষ্টা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলমকে উপদেষ্টা পদে মনোনীত করা হয়েছে। দৈনিক বঙ্গজননী ও দ্য ন্যাশনাল নিউজ ইউএসএর প্রধান সম্পাদক আলী নিয়ামতকে সভাপতি করা হয়েছে। সহসভাপতি করা হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার ইউংয়ের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা রুবিনা খান, ক্যাটের সিনিয়র সহসভাপতি ড. রশিদ আসকারী, উইয়ের সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশাকে।
০৬ আগস্ট, ২০২৩
X