চলতি মাসে ভারি বৃষ্টিপাত ও বন্যার শঙ্কা
মে মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৯ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। চলতি জুন মাসে দেশে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কতিপয় স্থানে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।  এ ছাড়া সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে এ মাসে এক-দুইটি  লঘুচাপ হতে পারে যার মধ্যে একটি মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। পাশাপাশি এ মাসে দেশে চার থেকে ছয় দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় হতে পারে।  রোববার (২ জুন) আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া জুন মাসের আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকার ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন। জুন মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। প্রথম সপ্তাহের প্রথমার্ধে সারা দেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষাকাল) বিস্তার লাভ করতে পারে। এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যার মধ্যে একটি মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। চলতি মাসে দেশের কোথাও কোথাও এক থেকে দুটি মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে। জুন মাসে চার থেকে ছয় দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় হতে পারে। মে মাসজুড়ে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। স্বাভাবিক অপেক্ষা ৩৫ দশমিক ৯ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। সবচেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীতে ৯ দিন। ঢাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। চলতি মাসেও সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে।  মে মাসের শেষ দিকে ঘূর্ণিঝড় রিমাল আঘাত হানে। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করার সময় পটুয়াখালী ও খেপুপাড়ায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১১ কিলোমিটার। এ সময় নারায়ণগঞ্জে দৈনিক সর্বোচ্চ ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। মে মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (যশোর ও চুয়াডাঙ্গা ১ মে) রেকর্ড করা হয়। এ মাসে দেশের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা যথাক্রমে এক দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এক দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি এবং সারা দেশে গড় তাপমাত্রা এক দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। গত ১ থেকে ৫ মে পর্যন্ত মাঝারি থেকে তীব্র, ১৩ থেকে ২৬ মে পর্যন্ত মৃদু এবং ২৮ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন ঢাকার্য সবোর্চ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুড়িগ্রামের রাজারহাটে রোববার সর্বোচ্চ ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যার থেকে সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর, নোয়াখালী, বাগেরহাট, যশোর, বরিশাল, পটুয়াখালী ও ভোলা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গা হতে প্রশমিত হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
০২ জুন, ২০২৪
X