গাজায় হামলায় মানবাধিকার সংস্থার নীরবতা ভণ্ডামি
গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে নীরব অবস্থানের জন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আচরণ এক ধরনের ভণ্ডামি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গাজায় হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করছে সারাবিশ্ব; কিন্তু তা বন্ধে কেউ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। গতকাল রোববার ফিলিস্তিনের ফতেহ আন্দোলনের মহাসচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেবরেল আলরজউব সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মুসলিম উম্মাহর নিরাপত্তা এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা লাঘবের জন্য মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত। ১৯৬৭ সালে গৃহীত প্রস্তাব অনুসরণ করতে বলেন, যাতে বলা হয়েছিল যে, পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনের রাজধানী হবে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার দ্ব্যর্থহীন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে গাজায় নারী, শিশুসহ হাজার হাজার মানুষ হত্যাসহ ইসরায়েলি বাহিনীর হাসপাতালে হামলার নিন্দা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি করা উচিত। বাংলাদেশ এরই মধ্যে মিশরের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য দুই দফা ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যেখানেই সুযোগ পেয়েছি, ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামে সবসময় আওয়াজ তুলেছি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ শাসনামলে ১৯৯৭ সালে ইয়াসির আরাফাতের বাংলাদেশ সফরের কথাও স্মরণ করেন। ফিলিস্তিনের ফতেহ আন্দোলনের মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার নিঃশর্ত সমর্থন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আওয়াজ তোলার জন্য ধন্যবাদ জানান। জেবরেল আলরজউব বলেন, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করা দরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এ উদ্দেশ্যে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। সেখানে খাদ্যের তীব্র সংকট বিরাজ করছে এবং মানুষ অনাহারে রয়েছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। জেবরেল আলরজউব আরও বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতিই এই সংকট সমাধানের একমাত্র পথ। আরব দেশগুলোতে ৪০০ মিলিয়ন মানুষ বসবাস করলেও তারা ঐক্যবদ্ধ নয়। তারা ঐক্যবদ্ধ হলে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন সহজেই বন্ধ হবে। আরব বিশ্বের শক্তি ও সম্পদ আছে, শুধু ঐক্যই ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে পারে। তিনি বলেন, এই যুদ্ধ বন্ধ না হলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক শান্তি কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবে না। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দৃঢ় ভূমিকার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। ফিলিস্তিনের ফতেহ আন্দোলনের মহাসচিব প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের একটি চিঠিও হস্তান্তর করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে স্বাধীনতা দিবস এবং জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সম্মিলিত সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। প্রদর্শনীটি ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকবে। পরে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী তাদের সমরাস্ত্রসহ সরঞ্জাম প্রদর্শন করে। এ উপলক্ষে বিমানবাহিনীর যুদ্ধ বিমানের ফ্লাই-পাস্ট এবং অনুষ্ঠানস্থলে হেলিকপ্টার থেকে সেনাবাহিনীর প্যারাট্রুপারদের সফল অবতরণ প্রত্যক্ষ শেষে তিন বাহিনীর বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখেন তিনি। জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান।
২৫ মার্চ, ২০২৪
X