মার্কিন বিমানবাহী রণতরী আইজেনহাওয়ার কেন পালিয়ে গেল?
মার্কিন সরকার এখনো ফিলিস্তিনের আলআকসা তুফান নামক অভিযানের পরিণতিতে জড়িয়ে আছে। গাজা থেকে পরিচালিত হামাস ও ইসলামী জিহাদের ওই অভিযানের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত বিমানবাহী রণতরী আইজেনহাওয়ার ছুটে এসেছিল লোহিত সাগরে। কিন্তু এখন জলদানবটি এই অঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।  ইয়েমেনিরা মার্কিন বিমানবাহী বিশাল রণতরী ‘ইউএসএস আইজেনহাওয়ার’-এর ওপর হামলা করেছে বলে খবর প্রকাশের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই বিশাল সাগর-দানবের ওপর ইয়েমেনি হামলার খবরকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পেন্টাগন। কিন্তু ইয়েমেনিরা এই খবরের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করলে পেন্টাগনের বিশেষজ্ঞরা ইজ্জত বাঁচানোর জন্য ঘোষণা করেন যে, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লোহিত সাগরে এই রণতরীর মিশন শেষ করা হয়েছে!  এই ঘটনার পর অনেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলেছে যে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের প্রতি পাশ্চাত্যের অস্ত্র সাহায্য অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েলের অবস্থা এখনো নাজুক ও তা দৃশ্যমান এবং বিখ্যাত মার্কিন রণতরীর এখনো সেখানে থাকা উচিত। কিন্তু ইয়েমেনিদের নতুন হামলার পর অস্টিন ঘোষণা করেন যে, আইজেনহাওয়ারের পিছু হটা দরকার এবং সম্ভবত ‘থিওডোর রুজভেল্ট’ রণতরী সেখানে যাবে। আইজেনহাওয়ারের পিছু হটা কেন গুরুত্বপূর্ণ? ইউএসএস ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিমিৎজ শ্রেণির দশটি বড় রণতরীর অন্যতম যা মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাহুর অন্যতম বা গোটা মার্কিন নৌবাহিনীর অন্যতম প্রধান পেশিশক্তি। পারমানবিক শক্তিচালিত এই রণতরী চালু করা হয়েছিল ১৯৭৭ সালের ১৮ অক্টোবর। ৩৩৩ মিটার দীর্ঘ এই জাহাজের ওজন ১১৪ হাজার টন। এটি সবচেয়ে শক্তিশালী রাডার-ব্যবস্থা ও ন্যাভিগেশন সহায়ক যন্ত্রপাতিতে সুসজ্জিত। এর নৌ-কর্মী বা ক্রু ও মেরিন সেনার মোট সংখ্যা ৫ হাজার ৬৮০। এই রণতরী সাবমেরিনগুলোর সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে সেসবের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে সক্ষম এবং আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ‘স্পেরো’ ক্ষেপণাস্ত্রের নৌ ও স্থল সংস্করণেরও অধিকারী। এতে রয়েছে ১০০'রও বেশি জঙ্গি বিমান ও হেলিকপ্টার যেগুলো এই বিশাল জাহাজ থেকে উড্ডয়ন করতে সক্ষম। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় দখলদার ইসরায়েল বিপর্যস্ত হলে এ অঞ্চলে পাঠানো হয় আইজেনহাওয়ার। জ্বালানি পরিবহনের নিরাপত্তার কথা বলে এ অঞ্চলে এলেও আসলে এর মূল লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের আশপাশে একটি ভাসমান বিমানঘাঁটি হিসেবে কাজ করা যাতে কখনো দরকার হলে এর যুদ্ধবিমানগুলো খুব অল্প সময়ে নানা ধরনের অভিযান চালাতে পারে।  কিন্তু ইয়েমেনিদের উপর্যুপরি হামলার মুখে বিমানবাহী রণতরী আইজেনহাওয়ার এমন সময় লোহিত সাগর ছেড়ে চলে যাচ্ছে যখন কৌশলগত এই অঞ্চল ছাড়তে এ রণতরীর বাধ্য হওয়াটা মার্কিন সরকারের জন্য মোটেই প্রত্যাশিত ছিল না। বিশেষ করে লেবাননের হিজবুল্লাহর হাতে ইসরায়েল যখন ব্যাপক মার খাচ্ছে ও ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার এ সংক্রান্ত উদ্বেগ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে তখন আইজেনহাওয়ারের পলায়নের ঘটনা প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষার ইতিহাসে এক যুগান্তরকারী ঘটনা। ইসরায়েলের এই কঠিন সময়ে তাকে সহায়তা দিতে আইজেনহাওয়ারের ব্যর্থতার গ্লানি তেলআবিব ও ওয়াশিংটনের জন্য হজম করা বেশ কঠিন হলেও বাস্তবতা হল এ রণতরী ইয়েমেনের ও হিজবুল্লাহর শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতগুলো খেতে থাকলে জো বাইডেনের নির্বাচনী আশাভরসার তরী এগিয়ে চলাও হয়ে পড়ত অত্যন্ত শোচনীয় ও জটিল অবস্থার শিকার।  লোহিত সাগর বেশ কয়েকটি সাগরের ও সাগর পথের সংযোগ-পথ হিসেবে বিভিন্ন পণ্য বিশেষ করে জ্বালানি পরিবহনের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সামরিক দিক থেকেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এ সাগরের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বও মার্কিন সরকারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সৌদি আরব, ইহুদিবাদী ইসরায়েল ও মিশরের নিরাপত্তা রক্ষা ও ইয়েমেনের বিপ্লবীদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের জন্যও এ অঞ্চলে মার্কিন হস্তক্ষেপ জরুরি। আঞ্চলিক মার্কিন সামরিক কমান্ড কেন্দ্রের এতদিনের বক্তব্য অনুযায়ী আইজেনহাওয়ারের উপস্থিতি ছাড়া এসব বিষয় তত্ত্বাবধান করা সম্ভব নয়। কিন্তু আজ বিশ্ববাসী স্পষ্টভাবে দেখছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে নিজের ঘাঁটিগুলোরই নিরাপত্তা রক্ষায় অক্ষম। আর এটাও নতুন বিশ্বপরিস্থিতির এক স্মরণীয় দিক।  গাজায় আট মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চালিয়েও নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েল কেবল বেসামরিক ফিলিস্তিনি নারী ও শিশু এবং নিরস্ত্র জনগণকে হত্যা ছাড়া আর কিছুই অর্জন করতে পারেনি। ফলে ইসরায়েল ও তার প্রধান সহযোগী মার্কিন সরকার উভয়ই এক কৌশলগত অচলাবস্থার শিকার। ইহুদি লবিগুলোর চাপ ও নির্বাচনী আর রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে মার্কিন সরকার নেতানিয়াহুর ওপর তেমন চাপও দিতে পারছে না। ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে লেবানন, ইরাক, ইয়েমেন ও সিরিয়ার প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এই শক্তিগুলো ইসরায়েলকে তার অপরাধযজ্ঞের যথাযথ শাস্তি দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।  গাজার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ ও প্রায় এক লাখ ব্যক্তি আহত হয়েছে যাদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী। আহত হয়েছে আরও প্রায় এক লাখ মানুষ।   
২৫ জুন, ২০২৪

ইসরায়েলের সহায়তায় পৌঁছাল দ্বিতীয় মার্কিন বিমানবাহী রণতরী
হামাসের হামলার পরপরই মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম মিত্র ইসরায়েলের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সেই ঘোষণা বাস্তবে পরিণত করতে তেল আবিবকে একের পর এক সহায়তা দিয়ে আসছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। এবার তারই অংশ হিসেবে ইসরায়েলি উপকূলীয় এলাকার কাছে দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী পাঠিয়েছে মার্কিন সেনা সদর দপ্তর পেন্টাগন। ইসরায়েল ও হামাসের বর্তমান সংঘাতে যেন ইরান বা লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ জড়িয়ে না পড়ে, সেটা নিশ্চিত করতেই এ বিমানবাহী রণতরী পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড বলেছে, বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস আইজেনহাওয়ার মধ্যপ্রাচ্যে পৌঁছেছে। এ বিমানবাহী রণতরীর সঙ্গী হয়ে একজোড়া গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ও একটি গাইডেড মিসাইল ক্রুজারও মধ্যপ্রাচ্যে গেছে।  
০৬ নভেম্বর, ২০২৩

ইসরায়েলের সহায়তায় মধ্যপ্রাচ্যে পৌঁছাল দ্বিতীয় মার্কিন বিমানবাহী রণতরী
হামাসের হামলার পরপরই মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম মিত্র ইসরায়েলের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সেই ঘোষণা বাস্তবে পরিণত করতে তেলআবিবকে একের পর এক সহায়তা দিয়ে আসছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। এবার তারই অংশ হিসেবে ইসরায়েলি উপকূলীয় এলাকার কাছে দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী পাঠিয়েছে মার্কিন সেনা সদর দপ্তর পেন্টাগন। ইসরায়েল ও হামাসের বর্তমান সংঘাতে যেন ইরান বা লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ জড়িয়ে না পড়ে, সেটা নিশ্চিত করতেই এই বিমানবাহী রণতরী পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড বলেছে, বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস আইজেনহাওয়ার মধ্যপ্রাচ্যে পৌঁছেছে। এই বিমানবাহী রণতরীর সঙ্গী হয়ে একজোড়া গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ও একটি গাইডেড মিসাইল ক্রুজারও মধ্যপ্রাচ্যে গেছে। এর আগে সংশ্লিষ্ট দুজন মার্কিন কর্মকর্তা এবিসি নিউজকে বলেছেন, বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস আইজেনহাওয়ারকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে অবস্থান করা ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ডের সঙ্গে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে তখন বলেছিলেন, আমি বিমানবাহী রণতরী আইজেনহাওয়ারকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে যাত্রা শুরুর নির্দেশ দিয়েছি। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড রোধ এবং বর্তমান সংঘাত সম্প্রসারণের যে কোনো প্রচেষ্টা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর আগে গত শনিবার (৭ অক্টোবর) ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার দুদিন পর ৯ অক্টোবর মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস ফোর্ড স্ট্রাইক গ্রুপ পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
০৫ নভেম্বর, ২০২৩

ইসরায়েলের সহায়তায় দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
হামাসের হামলার পরপরই মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম মিত্র ইসরায়েলের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সেই ঘোষণা বাস্তবে পরিণত করতে তেলআবিবকে একের পর এক সহায়তা দিয়ে আসছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। এবার তারই অংশ হিসেবে ইসরায়েলি উপকূলীয় এলাকার কাছে দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর কথা জানিয়েছে মার্কিন সেনা সদর দপ্তর পেন্টাগন। ইসরায়েল ও হামাসের বর্তমান সংঘাতে যেন ইরান বা লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ জড়িয়ে না পড়ে, সেটা নিশ্চিত করতেই এই বিমানবাহী রণতরী পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সংশ্লিষ্ট দুজন মার্কিন কর্মকর্তা এবিসি নিউজকে বলেছেন, বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস আইজেনহাওয়ারকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে অবস্থান করা ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ডের সঙ্গে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, আমি বিমানবাহী রণতরী আইজেনহাওয়ারকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে যাত্রা শুরুর নির্দেশ দিয়েছি। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড রোধ এবং বর্তমান সংঘাত  সম্প্রসারণের যে কোনো প্রচেষ্টা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর আগে গত শনিবার (৭ অক্টোবর) ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার দুদিন পর মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্যে বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস ফোর্ড স্ট্রাইক গ্রুপ পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
১৫ অক্টোবর, ২০২৩
X