পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি প্রত্যাহারের দাবি বিএসপিপি’র
সাংবাদিকতা নিয়ে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপিপন্থি পেশাজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ-বিএসপিপি।  অ্যাসোসিয়েশনটির বক্তব্য স্বাধীন গণমাধ্যম ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার উপর প্রচ্ছন্ন হুমকি এবং দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা বলে মনে করে বিএসপিপি।  সংগঠনের নেতারা বলেন, কেবলমাত্র পুলিশি রাষ্ট্রেই সাংবাদিকদের এমন হুমকি দিতে দেখা যায়। এ কথা বলতে আজ দ্বিধা নেই যে, পুলিশের উপর ভর করে বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের কারণে পুলিশের ঔদ্ধত্য এতই বেড়েছে যে, তারা আজ ধরাকে সরা জ্ঞান করছে। সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি এটাই প্রমাণ করে যে,  ‘দেশ ক্রমেই পুলিশি রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে’। এই বিবৃতি দুর্নীতিবাজদের উৎসাহিত করবে উল্লেখ করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা। সোমবার (২৪ জুন) রাতে বিএসপিপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। বিএসপিপির বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশের কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ গড়ার পরপর কয়েকটি সংবাদ প্রকাশে ক্ষুব্ধ হয় পুলিশ ক্যাডার সার্ভিসের সংগঠন বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। তারা গণমাধ্যমকে ‘সতর্ক’ করে যে বিবৃতি দিয়েছে, সেখানে সাংবাদিকদের জন্য প্রচ্ছন্ন হুমকিও রয়েছে, যা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সম্পূর্ণ এখতিয়ারবহির্ভূত।  বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আমরা আরও অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করলাম, পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এই বিবৃতির একদিন পরই গণমাধ্যমে যাতে পুলিশের খবর প্রকাশের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়! চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এ ধরনের খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহের অধিকতর সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন নির্দেশনা দেখে মনে হচ্ছে, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করে গণমাধ্যম মহাঅপরাধ করে ফেলেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন চিঠি এটাই প্রমাণ করে যে, ‘রাষ্ট্র দুর্নীতিবাজদের আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিতে যাচ্ছে।’ বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী ও জনগণের সেবক। কিন্তু এখন তারা সেটি ভুলে গেছে। পুলিশের কাজ হচ্ছে ‘দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন’। রাষ্ট্রের সফলতার অন্যতম নিয়ামক হলো দুষ্টকে দমন করে শিষ্টকে পালন করে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা এবং সমৃদ্ধ করা। উন্নত বিশ্বে এই নীতি এখনো চর্চায় থাকলেও বাংলাদেশে এই নীতিকথার চর্চা তো হচ্ছেই না, বরং হচ্ছে তার উল্টো। ‘দুষ্টের পালন, শিষ্টের দমন’ নীতির কারণে দুষ্টরা একটি অপরাধ করে পার পেলে দ্বিতীয় অপরাধ করতে কুণ্ঠাবোধ করছে না। দুষ্টের লালন করে আজ দুর্নীতিবাজ অফিসাররা বিস্তর অর্থ-সম্পদের মালিক বনে যাচ্ছেন। এভাবে ব্যক্তি নানা অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে এবং নানা অপরাধ চক্র গড়ে উঠছে। অপরাধী বেপরোয়া হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ পুলিশের নির্লিপ্ততা ও প্রভাবশালীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়। আর এসব হচ্ছে দেশে গণতন্ত্র না থাকার কারণে। আমরা পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সাংবাদিকদের পেছনে না লেগে, সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দেশ রক্ষার কাজে ছড়িয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি। 
২৪ জুন, ২০২৪

পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি সংবিধান পরিপন্থি : রিজভী 
সাংবাদিকতা নিয়ে পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন যে বিবৃতি দিয়েছে সেটিকে সংবিধান পরিপন্থি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।  তিনি বলেছেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হওয়া মানে গোটা ডিপার্টমেন্টের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ নয়। এ ঘটনায় বিবৃতি দেওয়ায় প্রমাণিত হয়েছে- পুলিশের আরও অনেক কর্মকর্তা দুর্নীতিতে জড়িত। তাদের দুর্নীতির খবর চাপা দিতে এ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।  সোমবার (২৪ জুন) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে স্কাউট মার্কেটে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট কার্যালয়ে সংগঠনের উদ্যোগে এক দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন রিজভী।  এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আশু রোগ মুক্তি কামনায় এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। পরে অসুস্থ বেগম জিয়ার আরোগ্য কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।    রুহুল কবির রিজভী বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এবং সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দুর্নীতির কাহিনি বেরিয়ে এসেছে।  তাদেরসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের দুর্নীতির কেচ্ছা-কাহিনী সবার সামনে বেরিয়ে আসছে। দেশের জন্য লাখ লাখ গণতন্ত্রকামী মানুষ জীবন দিয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন বেনজীর-আসাদুজ্জামানদের জন্য, আওয়ামী লীগের এমপিদের জন্য। প্রশাসনের ব্যক্তিরা এই সরকারকে অবৈধভাবে ক্ষমতায় রাখার জন্য যা খুশি তাই করছে।  তিনি বলেন, এক রাজস্ব কর্মকর্তার ছেলে ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ছাগল কিনছে। তিনি এক মন্ত্রীর পিএস ছিলেন। যত গুরুত্বপূর্ণ পদ দরকার তিনি পেয়েছেন এবং তিনি সেগুলো ব্যবহার করছেন। তার স্ত্রীর নামে বিশাল ডুপ্লেক্স বাড়ি এক জেলায়, আরেক জেলায় আরেক স্ত্রীর নামে অনেক সম্পত্তি করেছেন। কার নামে কত সম্পত্তি রাখবেন এই লোক তারা খুঁজে পাচ্ছেন না। আজকে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্নীতির নানা কাহিনি ভয়াবহ আরব্য উপন্যাসের মতো বেরিয়ে আসছে।  বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, যেখানে সাধারণ মানুষ জীবন চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে দুর্নীতিবাজদের ছেলেমেয়েরা রাজকীয় জীবনযাপন করছে। আওয়ামী লীগ সরকারকে অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য বেনজীর, আসাদুজ্জামানরা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম করেছে, রাতের অন্ধকারে এরা নির্বাচন করে দিয়েছে। তার প্রতিদান হিসেবে এখন জমি দখল করে, গরিব মানুষের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে টাকার পাহাড় গড়ছেন। এতে এই সরকার খুশি। কারণ তারা তাদেরকে ক্ষমতার টিকিয়ে রাখছে।  সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভুইঁয়ার সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ওমর ফারুক শাফিন, সালাউদ্দিন শিশির, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, বিএনপি নেতা বেলাল উদ্দিন সরকার তুহিন, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। এর আগে সকালে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের নিচতলায় মহিলা দলের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল হয়। সেখানে রিজভী অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে খাবারের মধ্যে নানা রকমের ওষুধ মিশিয়ে অসুস্থ করা হয়েছে। উদ্দেশ্য হলো, তাকে তিলে তিলে শেষ করা। মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রুমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর নার্গিস, উত্তরের আহ্বায়ক নায়েবা ইউসুফ, সদস্য সচিব রুনা লায়লা রুনা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এরপর বাদ জোহর একই স্থানে স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল হয়। সেখানে রিজভী অভিযোগ করে বলেন, সরকারের ভয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সহযোগিতা না দিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অমানবিক আচরণ করেছে। এ দেশের সাধারণ মানুষ যদি এখন এই হাসপাতালের ইট খুলে নিয়ে যায়, তাদের করার কিছু থাকবে না। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।  স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানের সঞ্চালনায় এতে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি ইয়াসিন আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।  
২৪ জুন, ২০২৪

পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি প্রত্যাহারের দাবি ক্র্যাবের
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব)। ক্র্যাব সভাপতি কামরুজ্জামান খান ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সোমবার (২৪ জুন) এক বিবৃতিতে বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে পুলিশের কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার অস্বাভাবিক সম্পদের মালিক হওয়ার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে এই সংবাদ প্রকাশ হয়েছে বলে আমরা মনে করি না। সাংবাদিকরা সবসময় দায়িত্বশীল এবং তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশ করে থাকেন। সম্প্রতি পুলিশের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়ে এই সকল সংবাদ তারই ধারাবাহিকতা।  বিবৃতিতে তারা বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি বিবৃতি দিয়ে যে ভাষায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে, তা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি। ওই বিবৃতির মধ্য দিয়ে কতিপয় কর্মকর্তার ব্যক্তিগত দুর্নীতি উৎসাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সকল বিষয় নিয়ে সাংগঠনিক পর্যায়ে পারস্পরিক দোষারোপ করা যৌক্তিক নয়। দেশের স্বার্থে সাংবাদিক ও পুলিশ অপরাধ এবং অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করে আসছে। আগামী দিনেও একই সঙ্গে কাজ করবে সাংবাদিক ও পুলিশ। ক্র্যাব সবসময় সংগঠনের সদস্যদের পেশাদারিত্বকে সম্মান করে, সেই সঙ্গে সদস্যদের আত্মমর্যাদা, নিরাপত্তা ও স্বার্থসংরক্ষণে কাজ করে। ক্র্যাব সদস্যদের প্রতিটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বরাবরই সত্য উঠে আসে। যা সব মহলে প্রশংসিত। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যনির্ভর প্রতিবেদন প্রকাশ করে ক্র্যাব সদস্যরা নিয়মিত পুরস্কৃত হচ্ছেন। পেশাদার সাংবাদিকদের সম্মান ও আত্মমর্যাদা রক্ষায় সবসময় গুরুত্ব দিয়ে থাকে ক্র্যাব।  ক্র্যাব মনে করে, যেসব সাবেক ও বর্তমান পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রচারিত হয়েছে- তা যদি অসত্য হয়, তাহলে দেশের আইন অনুযায়ী প্রেস কাউন্সিলে যেতে পারেন তারা। তা না করে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ঢালাওভাবে সব প্রতিবেদনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর হস্তক্ষেপের শামিল বলে মনে করছে ক্র্যাব। প্রতিবেদন বন্ধ নয় বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের ঘোষিত ‘শূন্য সহিষ্ণু নীতি’ বাস্তবায়নের জন্য সবার সহযোগিতা আশা করে ক্র্যাব। সেজন্য পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের উক্ত বিবৃতি প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে ক্র্যাব।   দুর্নীতি-অনিয়মের অনুসন্ধান এবং ক্ষমতার অপব্যবহার উন্মোচন করাও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার কাজ বলে মনে করে ক্র্যাব। বাধা বিপত্তির মুখেও সাংবাদিক সমাজ তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যাবেন। স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়- এমন বক্তব্য প্রদান থেকে সবাইকে বিরত থাকার আহ্বান জানায় ক্র্যাব। কারণ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার অধিকার বাংলাদেশের সংবিধানেই স্বীকৃত। 
২৪ জুন, ২০২৪

রাসেল ভাইপার নিয়ে যা জানাল বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া, বোড়া বা উলুবোড়া) দেখা যাওয়ার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন এবং জনসাধারণের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ সম্পর্কে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় অবগত। এ প্রেক্ষিতে জননিরাপত্তা এবং জনকল্যাণ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় তথ্য ও দিকনির্দেশনা প্রদান করে বিবৃতি দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, রাসেল ভাইপারের উপস্থিতি উদ্বেগজনক হলেও এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, মানুষের সঙ্গে এই সাপের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা কম। এই সাপ সাধারণত নিচুভূমির ঘাস, বন, ঝোপ-জঙ্গল, উন্মুক্ত বন, কৃষি এলাকায় বাস করে এবং মানুষের বসতি এড়িয়ে চলে। সাপটি মেটে রঙের হওয়ায় মাটির সঙ্গে সহজে মিশে যেতে পারে। মানুষ খেয়াল না করে সাপের খুব কাছে গেলে সাপটি বিপদ দেখে ভয়ে আক্রমণ করে। রাসেল ভাইপার দক্ষ সাঁতারু হওয়ায় নদীর স্রোতে ও বন্যার পানিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিস্তৃত হয়েছে। তাই, সকলকে সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। সাপের কামড় এড়াতে করণীয়  যেসব এলাকায় রাসেল ভাইপার দেখা গিয়েছে, সেসব এলাকায় চলাচলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন। লম্বা ঘাস, ঝোপঝাড়, কৃষি এলাকায় হাঁটার সময় সতর্ক থাকুন। গর্তের মধ্যে হাত-পা ঢুকাবেন না। সংশ্লিষ্ট এলাকায় কাজ করার সময় বুট ও লম্বা প্যান্ট পরুন। রাতে চলাচলের সময় অবশ্যই টর্চ লাইট ব্যবহার করুন। বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার ও আবর্জনামুক্ত রাখুন। পতিত গাছ, জ্বালানি লাকড়ি, খড় সরানোর সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করুন। সাপ দেখলে তা ধরা বা মারার চেষ্টা করবেন না। প্রয়োজনে জাতীয় হেল্প লাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করুন বা নিকটস্থ বন বিভাগের অফিসকে অবহিত করুন। সাপের কামড়ের ক্ষেত্রে করণীয় দংশিত অঙ্গ নড়াচড়া করা যাবে না। এই সাপ পায়ে দংশন করলে বসে যেতে হবে, হাঁটা যাবে না। হাতে দংশনে হাত নড়াচড়া করা যাবে না। হাত-পায়ের গিরা নাড়াচাড়ায় মাংসপেশীর সংকোচনের ফলে বিষ দ্রুত রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে গিয়ে বিষক্রিয়া করতে পারে। আক্রান্ত স্থান সাবান দিয়ে আলতোভাবে ধুতে হবে অথবা ভেজা কাপড় দিয়ে আলতোভাবে মুছতে হবে। ঘড়ি বা অলঙ্কার বা তাবিজ, তাগা ইত্যাদি থাকলে খুলে ফেলুন। দংশিত স্থানে কাটবেন না, সুঁই ফোটাবেন না, কিংবা কোনো রকম প্রলেপ লাগাবেন না বা অন্য কিছু প্রয়োগ করা উচিত নয়। সাপে কাটলে ওঝার কাছে গিয়ে অযথা সময় নষ্ট করবেন না। যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যান। আতঙ্কিত হবেন না, রাসেল ভাইপারের বিষ প্রতিষেধক বা অ্যান্টিভেনম নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে পাওয়া যায়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিষ প্রতিষেধক বা অ্যান্টিভেনম আছে এবং সব জায়গায় হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভেনম রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  রাসেল ভাইপারের প্রাদুর্ভাব কমাতে করণীয় বেজি, গুঁইসাপ, বাগডাশ, গন্ধগোকুল, বন বিড়াল, মেছো বিড়াল, তিলা নাগ ঈগল, সারস, মদন টাক এবং কিছু প্রজাতির সাপ রাসেল ভাইপার খেয়ে এদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ সকল বন্যপ্রাণীকে মানুষের নির্বিচারে হত্যার কারণে প্রকৃতিতে রাসেল ভাইপার বেড়ে যাচ্ছে। তাই বন্যপ্রাণী দেখলেই অকারণে তা হত্যা ও এদের আবাসস্থল ধ্বংস করা থেকে বিরত থাকুন।  স্মরণ রাখা প্রয়োজন, রাসেল ভাইপার বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর ৬(১) ধারা অনুযায়ী সংরক্ষিত প্রাণী। রাসেল ভাইপার ইঁদুর খেয়ে যেমন ফসল রক্ষা করে, তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সাপের বিষ হতে অনেক জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি হয়। সাপ মারা দণ্ডনীয় অপরাধ, সাপ মারা হতে বিরত থাকুন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর নির্দেশনায় বাংলাদেশ বন বিভাগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। স্থানীয়ভাবে সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ও সচেতন সমাজের প্রতি অনুরোধ জানানো হলো। পরিস্থিতি সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী আপডেট প্রদান করা হবে।
২২ জুন, ২০২৪

কওমিতে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের বিবৃতি
কওমি মাদ্রাসায় ছাত্রলীগের কমিটি গঠন প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। শনিবার (১৫ জুন) দেওয়া বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, কওমি মাদ্রাসা হলো দেশপ্রেমিক আদর্শ নাগরিক তৈরির কারখানা। শিক্ষা সিলেবাসের দিক থেকে কওমি মাদ্রাসার সিলেবাস ও সাধারণ শিক্ষার মধ্যে বিস্তর ফারাক ও আদর্শিক পার্থক্য বিদ্যমান। কওমি শিক্ষা সিলেবাসের সঙ্গে ছাত্রলীগের আদর্শ পুরোপুরি সাংঘর্ষিক ও বিপরীত।  তিনি বলেন, ছাত্রলীগ সেক্যুলার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। কওমি মাদ্রাসা একমাত্র তৌহিদ বা একত্ববাদে বিশ্বাসী। উভয়পক্ষের মধ্যে মতাদর্শের কোনো মিল নেই। তাহলে কওমি মাদ্রাসায় ছাত্রলীগ কীভাবে রাজনীতি করবে? হ্যাঁ ছাত্রলীগ যদি কওমি মাদ্রাসার চিন্তাচেতনার আলোকে তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ঢেলে সাজাতে পারে, তাহলে ভিন্ন কথা। ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, শিক্ষামন্ত্রী নিজে একজন ইসলামবিদ্বেষী বিতর্কিত ব্যক্তি। কওমি মাদ্রাসায় কী হবে না হবে, কী পড়ানো হয়, এর পেছনে কেন লাগলেন? এটা আদর্শিকভাবে কওমি মাদ্রাসা ধ্বংসের কোনো চিন্তা কি না তা ভাবতে হবে।  তিনি বলেন, ছাত্রলীগ নিজেদের আদর্শবান ও নৈতিকতাসম্পন্ন হিসেবে প্রমাণ করে দেখাক। দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইসলামি সংগঠনের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। এটা খুব স্পষ্ট, ছাত্রলীগের মতো সংগঠন কওমি মাদ্রাসায় নেই বলে সেখানে সন্ত্রাস, ধর্ষণ, চরিত্রহীনতা নেই। কাউন্সেলিং করার প্রয়োজন তো ছাত্রলীগের বেশি। কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের কাউন্সেলিং করানোর দরকার নেই। তারা নিজেরা দেশপ্রেম, মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতাসম্পন্ন জাতি হিসেবে দেশও বিদেশে অসামান্য অবদান রেখে চলছে। 
১৫ জুন, ২০২৪

মিরনজিল্লার হরিজনপল্লি উচ্ছেদ চেষ্টায় ক্ষোভ জানিয়ে ৬০ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি
দেশের ৬০ বিশিষ্ট নাগরিক ঢাকা (দক্ষিণ) সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক মিরনজিল্লার হরিজন সম্প্রদায়কে পূনর্বাসন ব্যতিরেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সেইসঙ্গে বিষয়টি মানুষের জীবনের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার বিবেচনা করে মিরনজিল্লা হরিজন সম্প্রদায়কে পূর্নবাসন ছাড়া উচ্ছেদ না করার দাবি জানিয়ে লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দেশের ৬০ বিশিষ্ট নাগরিক লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মিরনজিল্লা কলোনিতে ৩ ও ৪ জুন উচ্ছেদ অভিযানে চার প্লাটুন পুলিশ চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ওই নির্ধারিত দিনে তারা কিছু করেনি। কিন্তু গত ৯ জুন বেলা এগারটার দিকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ নিয়ে ওই এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গেলে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন বাধা দেন। কর্তৃপক্ষ একটি বাউন্ডারি দেয়াল ও কয়েকটি স্থাপনা ভেঙ্গে ওই দিনের মতো ফিরে আসে। এর পূর্বে ৬ জুন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মিরনজিল্লা হরিজন পল্লী উচ্ছেদের প্রতিবাদে বংশালের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের আগা সাদেক সড়কে কলোনির সামনে ‘বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ’ মানববন্ধনের আয়োজন করে। তারা সমস্বরে বলেছেন, বংশালের এই পল্লী ঘিরে ৪০০ বছরের পুরোনো বসতি। যেখানে কয়েক হাজার মানুষ গাদাগাদি করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। চলমান এই অবস্থার এখান থেকে উচ্ছেদ হলে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব, মেয়রের এই সিদ্ধান্ত চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল বলেও মনে করেন হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ।   যদিও বস্তি উচ্ছেদ মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে পুনর্বাসন ছাড়া কোন বস্তি বা কলোনী উচ্ছেদ করা যাবে না। কারণ সংবিধানে জনগনের বাসস্থানের অধিকার রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির অন্তর্ভুক্ত। সেইসঙ্গে সুপ্রীম কোর্ট অভিমত দেয় যে, বাসস্থানের অধিকার তার জীবন ধারনের অধিকারের সামিল যা আমাদের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত ৬ জুনের সংবাদে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৬ মে হরিজন সেবক সমিতির পক্ষ থেকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর দেওয়া চিঠিতে কলোনির আবাসন সংকট সমাধানে পাঁচটি ১০ তলা ভবন নির্মাণের আবেদন করা হয়। একই বছরের ১৬ মে দক্ষিণ সিটির ৩৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়াল হোসেন মেয়র বরাবর দেওয়া চিঠিতে মিরনজিল্লা হরিজন সুইপার কলোনিতে ১০ তলা বিশিষ্ট পাঁচটি ভবন নির্মাণের অনুরোধ জানান।    কিন্তু বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক কাঁচাবাজার করার নামে হরিজনদের কলোনির একাংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া শুধু অমানবিক নয়, তা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে ঘোষণা দিয়েছেন, বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না বা আবাসন থেকে বঞ্চিত হবে না, সেখানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) পুরান ঢাকার বংশালের আগা সাদেক রোডের মিরনজিল্লার সুইপার কলোনির সংখ্যালঘু হরিজন সম্প্রদায়কে গৃহহারা করতে উঠে পড়ে লেগেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কি প্রধানমন্ত্রীর এই অঙ্গীকার মানার প্রয়োজনীয়তা বোধ করে না? তাই নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে দাবি জানাচ্ছি কোন অবস্থায়ই মিরনজিল্লার হরিজন সম্প্রদায়কে পূনর্বাসন না করে উচ্ছেদ করা যাবে না। এ বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত অঙ্গীকার বাস্তবায়নে তার হস্তক্ষেপ আশা করছি। একইসঙ্গে সরকার ও সিটি কর্পোরেশনকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে, এই সরকার এসডিজি বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ, যার মূল কথাই হচ্ছে কাউকে পিছনে ফেলে রাখা যাবে না, আর প্রত্যেক নাগরিকের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীর মধ্যে রয়েছেন— মানবাধিকারকর্মী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. জেড আই খান পান্না, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রমুখ।
১৪ জুন, ২০২৪

সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া তথ্যের প্রতিবাদে ফখরুলের বিবৃতি
সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে তারেক রহমানসহ গ্রেনেড হামলা মামলায় ১৫ জন সাজাপ্রাপ্ত আসামি পলাতক থাকার যে তথ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তুলে ধরেছেন সেটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২১ আগস্টের বোমা হামলা মামলায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তারেক রহমানসহ বিএনপির কয়েকজন নেতাকে যুক্ত করা হয়েছে। তারেক রহমানের ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করার এটি একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।  তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী নেতৃত্বকে দুর্বল এবং গণতন্ত্রকে বিপন্ন করতে বর্তমান আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর তারেক রহমানের নাম চার্জশিটে ঢোকানো হয় নিজেদের মতাদর্শের অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তাকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে তাদেরই আন্দোলনের ফসল ১/১১ এর সরকারের সময়সহ দুই দফা তদন্ত ও চার্জশিটে তারেক রহমানের নাম না থাকার পরেও তাকে জড়িত করা সম্পূর্ণরূপে আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ।  মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী চক্র দীর্ঘদিন ধরে সুপরিকল্পিতভাবে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। আর সে জন্যই চক্রান্তমূলকভাবে ২১ আগস্টের মামলায় জড়িত করা হয়েছে তাকে। বাংলাদেশে আইনের শাসনের অনুপস্থিতিতে সত্যের জন্য, সম্মানের জন্য, আত্মমর্যাদার জন্য সুশীল ভদ্রলোকদের সমাজে টিকে থাকাকে অসম্ভব করে তোলা হয়েছে।  বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, সুশাসন ও ন্যায়বিচার থাকলে লুটেরা, টাকা পাচারকারী এবং ক্ষমতাঘনিষ্ঠ ঋণখেলাপিদের আইনের আওতায় শাস্তি হতো। অথচ তারাই আজ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।  বিএনপির এই নেতা বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতীক ও চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রধান নেতা তারেক রহমানকে গ্রেপ্তারের হুমকি গণতন্ত্রকামী জনগণের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা বলে আমি মনে করি। আমি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে গ্রেপ্তারের হুমকির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
১৩ জুন, ২০২৪

সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিএনপির বিবৃতি
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় শুক্রবার (৭ জুন) বাংলাদেশ সীমান্তে ঢুকে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী-বিএসএফ এর গুলিতে আলতাব হোসেন নামে একজন কৃষকসহ তিনজন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (৮ জুন) বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগের দিন অর্থাৎ গতকাল বিকেলে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কতৃর্ক তিনজন বাংলাদেশিকে গুলি করে আহত করার ঘটনায় আবারো প্রমাণিত হলো যে, সীমান্তে বিএসএফ কতৃর্ক বাংলাদেশিদের হত্যা ও আহত করার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার নির্বিকার। আর সে কারণেই সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার যেন উৎসব শুরু হয়েছে। সম্প্রতি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে নারীদের উপরও গুলি চালিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তে বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন এবং হত্যা ও আহত করার ধারাবাহিকতা এখন পর্যন্ত পুরোদমে চলছে। অথচ বাংলাদেশ সরকার নতজানু নীতির কারণেই সীমান্তে বাংলাদেশি জনগণের জানমালের নিরাপত্তার তোয়াক্কা করে না। শুধুমাত্র অবৈধ ক্ষমতাকে দখলে রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্বকে উজাড় করে দিয়ে দেশকে একটি দুর্বল রাষ্ট্রে পরিণত করার নীলনকশা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। জনগণের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হলেই কেবলমাত্র দেশ ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বিএসএফ কতৃর্ক একজন কৃষকসহ দু’জন বাংলাদেশিকে গুলি করে গুরুতর আহত করার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এধরণের নির্মমতা বন্ধ করার জন্য আবারো জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি। আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।
৩০ নভেম্বর, ০০০১

বাজেট প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী / বিএনপি-জামায়াত আগেই বিবৃতি রেডি রাখে
বিএনপি-জামায়াত বাজেট ঘোষণার আগেই বিবৃতি রেডি করে রাখে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের তাদের বিবৃতি-বক্তব্য দেখলে হুবহু মিল খুঁজে পাবেন। বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ক্ষমতার হালুয়া রুটির ভাগবাটোয়ারার জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ যারা বিএনপি দল গঠন করেছিলেন, ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী দুই বছর ও একাধারে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের চার মেয়াদ ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা তাদের পক্ষে এখন আর সহ্য হচ্ছে না। তারা কোনো উন্নয়ন-অগ্রগতিও সহ্য করতে পারছে না। এখন তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। গতকাল চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিএনপি ও কতিপয় বুদ্ধিজীবীর প্রতি প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, বাজেট জনগণের কল্যাণে যদি না আসে, তাহলে ১৫ বছরে দরিদ্রতা ৪০ শতাংশ থেকে নেমে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে কেমনে এলো? এটি সম্ভব হয়েছে বাজেট বাস্তবায়নের কারণেই। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সহসভাপতি ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, জাতীয় শ্রমিক লীগের সহসভাপতি সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
০৮ জুন, ২০২৪

ওষুধের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদকের বিবৃতি
গভীর উদ্বেগের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে যখন দিশেহারা দেশের জনগণ তখন ওষুধের দাম বৃদ্ধি করে দেশের জনগণকে এক নির্মম পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে এই সরকার বলে এক বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম। ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টের তথ্যমতে, চিকিৎসা ব্যয়ের ৭০ শতাংশ ব্যক্তির পকেট থেকে খরচ হয়, সেই ওষুধের দাম বৃদ্ধি করে যেন নির্মম এক প্রহসনের আয়োজন করল জনবিচ্ছিন্ন এই সরকার।  ২০২২ সালে কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া শুধু ওষুধ কোম্পানিগুলোর সুপারিশে ২০টি জেনেরিকের ৫৩টি ওষুধের দাম বৃদ্ধি করে ওষুধ প্রশাসন, যা ছিল নজিরবিহীন। সে সময় প্যারাসিটামল, হৃদরোগ, ব্যথানাশক ও গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের দাম ৫০-১৩৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এরপর ২০২৩ সালে আরেক দফায় ২৩৪টি জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম ১০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। ওষুধের দাম বৃদ্ধির এই রেশ কাটতে না কাটতেই দৈনিক একটি পত্রিকা সূত্রে জানা যায়, অতি সম্প্রতি পুনরায় কয়েক মাসের ব্যবধানে দু’শতাধিক ওষুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কমপক্ষে ২০ শতাংশ। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে এই দাম বাড়িয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি। ভঙ্গুর অর্থনীতি ও লুটপাটের রাজনীতির বলি হচ্ছে সাধারণ জনগণ। ওষুধ প্রশাসন এসব ক্ষেত্রে নীরব। এভাবে হুট করে দামবৃদ্ধির কারণে অনেকেই মাঝপথে ওষুধ সেবন বন্ধ করে দিচ্ছে, ফলে নানা রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডায়াবেটিস কিংবা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের দাম বাড়ার কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো এইসব ওষুধ বন্ধ করে দেওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগসহ নানা অসংক্রামক রোগের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। দাম বৃদ্ধি পেয়েছে জীবন রক্ষাকারী এন্টিবায়োটিকেরও। কোর্স সম্পন্ন না করে এন্টিবায়োটিক বন্ধ করলে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স তৈরি হচ্ছে যা শীর্ষ ১০টি জনস্বাস্থ্য হুমকির একটি। একই সঙ্গে ডায়াবেটিস কিংবা হৃদরোগের ওষুধের দাম বৃদ্ধিতে মারাত্মক ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। যারা দীর্ঘ মেয়াদি রোগে ভুগছেন নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার জন্য তাদের মাসিক খরচ ২-৪ হাজার টাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিত্যনৈমিত্তিক পণ্য কেনা নিয়ে যখন নাভিশ্বাস তখন জীবন রক্ষাকারী ওষুধ কেনাটা সাধারণ মানুষের জন্য বিলাসিতায় পরিণত হয়েছে। ১৯৮২ সালের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১১ (১) ধারা অনুযায়ী স্পষ্ট বলা আছে "সরকার অফিসিয়াল গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ওষুধের দাম নির্ধারণ করতে পারবে।" অথচ এই নিয়মের তোয়াক্কা না করে ২০২২ সালেই ওষুধ প্রশাসন দাম বাড়িয়েছে ২ বার। এরপর ২০২৩ ও ২০২৪ সালে আরও ২বার। এভাবে দেশের প্রতিটি খাত ধ্বংসের সম্মুখীন। চিকিৎসা মৌলিক অধিকার তাও আজ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত এই সরকার কোনোভাবেই দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা না করে এক চরম দুর্যোগের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। অবিলম্বে স্বাস্থ্য খাতে এই বেহাল দশার সঙ্গে জড়িত অবৈধ সরকারের কুশীলবদের জবাবদিহিতার মুখোমুখি করতে হবে।
০৪ জুন, ২০২৪
X