ফসলি জমি থেকে ইউপি সদস্যের বালু উত্তোলন
ঝিনাইদহের মহেশপুরে ফসলি জমির মাঝখানে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। এতে ভাঙন সৃষ্টি হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে আশপাশের জমিগুলো। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউপির চুন্নিরআইট গ্রামে ফসলি জমির মাঝখানে বসানো হয়েছে ড্রেজার মেশিন। সেখানে ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন নিজে উপস্থিত থেকে এ মেশিনের মাধ্যমে খনন যন্ত্রের সাহায্যে বালু তোলার কাজ করছে। সে বালু জমানো হচ্ছে পাঁকা রাস্তার পাশে একটি জায়গায়। একপাশে রয়েছে বাড়ি ও আরেকপাশে রয়েছে মেহগুনি বাগান। বালু উত্তোলনের ফলে আশপাশের অন্যান্য জমিগুলোর আইল ভাঙনসহ বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। স্থানীয় বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, বিচার দেব কোথায়, কার কাছেই বা দেব যেখানে আমাদের ওয়ার্ড মেম্বার নাসির উদ্দিন নিজেই বালু তুলে আমাদের ক্ষতির মুখে ফেলছে। তাহলে অন্য জায়গায় বিচার দিয়ে কি বিচার পাবো?  তারা আরও বলেন, তারপরও আমরা চেয়ারম্যান ও অ্যাসিল্যান্ডকে জানিয়েছিলাম। তারা একদিন এসে পাইপ ভেঙ্গে দিয়ে যায়। কিন্তু আবারও একইভাবে চলছে বালু উত্তোলন। অবৈধ ড্রেজার দ্বারা ফসলি জমিতে পুকুর খননের নামে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন বলেন, কিছু না কিছু তো করে খেতে হবে, সে কারণে বালু তুলছি। শুধু মেম্বারগিরি করে তো আর পেট চলবে না। কম বেশি সবাইকে ম্যানেজ করেই বালু তোলার কাজ করছি। ফসলি জমি নষ্ট করে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা কবির হোসেন বাদী হয়ে ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মহেশপুর থানায় এজাহার দায়ের করেছেন।  মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসায়মিন মনিরা বলেন, ফসলি জমি নষ্ট করে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের দায়ে ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, রেগুলার মামলা হবে।
৩০ জুন, ২০২৪

নেতাই নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি
ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় ঘোষগাঁও ইউনিয়নে নেতাই নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে শতাধিক ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে রয়েছে নেতাই পাড়ের বাসিন্দারা। নেতাই পাড়ের ভূঁইয়াপাড়া এলাকায় বসবাসরতদের বেশিরভাগই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকজন। তাদের বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। এ বিষয়ে ভূঁইয়াপাড়া গ্রামের লোকজন ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া গতকাল শুক্রবার সকালে এলাকাবাসী ভূঁইয়াপাড়া এলাকায় এবং নেতাই নদীপাড়ে ড্রেজার বন্ধে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ভূঁইয়াপাড়া আদিবাসী গ্রাম সমাজের চেয়ারম্যান হারুন রংদি, দুর্জয় আরেং, সুষময় নেংওয়া প্রমুখ। হারুন রংদি বলেন, অসংখ্য ড্রেজার বসিয়ে নেতাই নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে আমাদের ঘরবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। যে কোনো সময় ভাঙনের কবলে পড়বে। ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে বালু মহাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল খালেক মেম্বার বলেন, আমরা ইজারা নিয়ে বালু উত্তোলন করছি। আশপাশে যাদের জমি আছে, তাদের ভাড়া দেওয়া হচ্ছে, তারা সুবিধা পাচ্ছে। কিন্তু যারা মানববন্ধন করছে, তারা বাইরের লোক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত শারমিন বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মানববন্ধনের বিষয়টিও জেনেছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
২৯ জুন, ২০২৪

রাজবাড়ীর গড়াই নদীতে অবৈধভাবে চলছে বালু উত্তোলন!
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির নারুয়া গড়াই নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে নদী তীরবর্তী বাড়িঘর ও ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। প্রতি বছরই নতুন করে বাড়ছে ভাঙনের পরিধি। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহল ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসব বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। কিন্তু নীরব ভূমিকায় রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।  উপজেলার নারুয়া খেয়া ঘাটের অদূরে বাকসাডাঙ্গী এলাকায় গড়াই নদীর মাঝখানে অবৈধ ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলছে তাদের বালু তোলার কাজ। এতে করে পানির প্রবাহের গতি পরিবর্তন হয় নদী পার ভেঙে এলাকার ফসলি জমিসহ বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। তবে বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কিছুই বলতে সাহস পাচ্ছে না স্থানীয়রা। জানা গেছে, এই বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত নারুয়া ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাদশা মোল্লাসহ স্থানীয় প্রভাবশালী একাধিক ব্যক্তি। যদিও বালু উত্তোলনের জন্য তাদের কাছে কোনো অনুমতি নেই। এতে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।  সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর মাঝখানে ও কুল ঘেঁষে তিনটি ড্রেজার মেশিন বসানো। এর প্রতিটি মেশিনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একটি করে বাল্কহেড। এসব ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে দেদার তোলা হচ্ছে বালু। সেই বালু বাল্কহেডের এর মাধ্যমে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।  বাকসাডাঙ্গী গ্রামের একাধিক বাসিন্দা বলেন, এই অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে পাকা রাস্তাসহ বাড়িঘর ফসলি জমি প্রতিনিয়ত নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তারা আরও বলেন, নদী থেকে বালু তোলার কারণে নারুয়া বাজার থেকে বাকসাডাঙ্গী হয়ে কোনাগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেশিরভাগ অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে। বাকি যতটুকু আছে এটুকু চলে গেলে কৃষক তার উৎপাদিত ফসল নারুয়া হাটে আনতে পারবে না। সেই সঙ্গে এই সড়কটি ভেঙে গেলে বাকসাডাঙ্গী, কোনাগ্রাম ও চর-ঘিকমলার মাঠে নদীর পানি ঢুকে পড়বে। এতে করে আর ফসল আর উৎপাদন করতে পারবে না কৃষক।  ড্রেজার মেশিন চালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা কুষ্টিয়া থেকে আসছি। নারুয়ার বাদশা মোল্লা আমাদের ভাড়া করে নিয়ে আসছে। আমরা মাঝ নদী থেকে বালু তোলার পরে কুলে গিয়ে আনলোড করি। প্রশাসন বন্ধ করলে আমরা চলে যাব।  অভিযোগের বিষয়ে জানতে বাদশা মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো কথাই বলতে রাজি হয়নি। বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায় বলেন, নারুয়াতে আমাদের কোনো বালু মহল নেই। যদি কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
২৮ জুন, ২০২৪

ভাঙন আতঙ্কের মধ্যেই বালু উত্তোলন
যমুনা নদীর পানি বাড়ায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বেশ কয়েক দিন ধরেই চলছে তীব্র ভাঙন। তীরবর্তী মানুষগুলো ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। এ অবস্থায়ও নদীর অদূরে চলছে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আখতার হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলার এনায়েতপুর থানাধীন খুকনী ইউনিয়নের আড়কান্দি-ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের এ অভিযোগ উঠেছে। উত্তোলিত বালু পাইপের মাধ্যমে এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে যমুনায় ভাঙন আরও বাড়ছে দাবি করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয়রা। স্থানীয় সূত্র জানায়, গত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় যমুনা নদীর ডান তীর শাহজাদপুরের খুকনী ও জালালপুর ইউনিয়নের অন্তত ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন চলছে। ভয়াবহ ভাঙনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তীরবর্তী ব্রাহ্মণগ্রাম, আড়কান্দি, জালালপুর, পাকড়তলা, হাটপাঁচিল ও মনাকষা গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। এরই মধ্যে এ অঞ্চলের কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, অন্যান্য স্থাপনা ও জমিজমা নদীতে বিলীন হয়েছে। চলতি মৌসুমে যমুনার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় ব্রাহ্মণগ্রামে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আকতার হোসেনের নেতৃত্বে একটি চক্র নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বিক্রি শুরু করেছে। তারা ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে চুরি করে কেটে আনা বালু ভলগেট নৌকায় করে নদীর আড়কান্দি তীরে নেওয়ার পর পাইপের মাধ্যমে এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে এসব বালু বিক্রি করছে। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে নদীতে ভাঙন বেড়েছে। বালু ফেলতে কৃষকদের জমির ওপর দিয়ে জোর করে পাইপ টানাসহ নদী থেকে প্রভাব খাটিয়ে বালু তুলছে চক্রটি। কেউ প্রতিবাদ করলে তারা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, আরকান্দি-ব্রাহ্মণগ্রামে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করার বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৫ জুন, ২০২৪

একদিকে নদীভাঙন, অন্যদিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নেতৃত্বে অবাধ বালু উত্তোলন
যমুনা নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছে তীব্র ভাঙন। তীরবর্তী মানুষগুলো ভাঙন আতংকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। এ অবস্থায় অদূরেই চলছে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আখতার হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলার এনায়েতপুর থানাধীন খুকনী ইউনিয়নের আড়কান্দি-ব্রাক্ষণগ্রাম এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের এ অভিযোগ উঠেছে। উত্তোলিত বালু পাইপের মাধ্যমে ১ কিলোমিটার দূরে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে যমুনায় ভাঙন আরও বাড়ছে বলে দাবি করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।  স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে যমুনা নদীর ডানতীর শাহজাদপুরের খুকনী ও জালালপুর ইউনিয়নের অন্তত ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন চজলছে। ভয়াবহ ভাঙনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তীরবর্তী ব্রাক্ষণগ্রাম, আড়কান্দি, জালালপুর, পাকড়তলা, হাটপাঁচিল ও মনাকষা গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। এরইমধ্যে এ অঞ্চলের কয়েক হাজার ঘর-বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ মাদ্রাসা অন্যান্য স্থাপনা ও জমিজমা নদীতে বিলীন হয়েছে।  চলতি মৌসুমে যমুনার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় ব্রাহ্মণগ্রামে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আখতার হোসেনের নেতৃত্বে একটি চক্র নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বিক্রি শুরু করেছে। তারা ড্রেজার দিয়ে নদী হতে চুরি করে কেটে আনা বালু ভলগেট নৌকায় করে নদীর আড়কান্দি তীরে নেওয়ার পর পাইপের মাধ্যমে এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে এসব বালু বিক্রি করছে।  অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে নদীতে বেড়েছে। বালু ফেলতে কৃষকদের জমির উপর দিয়ে জোড় করে পাইপ টাঙ্গানোসহ নদী থেকে চুরি করে প্রভাব খাটিয়ে বালু তুলছে ঐ চক্রটি। কেউ প্রতিবাদ করলে তারা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।   এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, আরকান্দি-ব্রাক্ষণগ্রামে ডেজ্রার দিয়ে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করার বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  
১০ জুন, ২০২৪

অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা বালু জব্দ
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আজমপুরের দোবিলা বিল দখল করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছিল কয়েকটি শক্তিশালী সরকার দলীয় বালু সিন্ডিকেট। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বালু উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধ থাকলেও বিলের দু’পাশের ৪-৫টি স্থানে বিশাল বালুর স্তূপ করে রাখা প্রায় ৪ হাজারের অধিক ট্রাক বালু বিক্রির পাঁয়তারা করছিলেন তারা। এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশ হলে উত্তোলনকৃত বালু জব্দ করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ শাওন। বৃহস্পতিবার (৩০মে) বিকেলে আগামী ২ জুন নিলাম দেওয়ার সিন্ধান্ত করে নোটিশ বোর্ডে বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন সরকারি জলমহাল থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দুটি স্থান থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করা হয়েছে। অথচ একই বিল থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা ৪-৫টি বালু স্তূপের মধ্যে মাত্র দুটি স্পটের ১ লাখ ২০ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করেছেন। অন্য ৩টি স্পটের প্রায় ২ হাজার ট্রাক বালু রয়ে গেল ধরাছোঁয়ার বাইরে। তারা দিনে ও রাতে ট্রাকভর্তি করে তাদের বালু অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানান দোবিলা বিল পাড়ের বাসিন্দারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলিভদ্রপুর ও আজমপুর বিলপাড়ের কয়েকজন জানান, ৩টি স্পটের বালু উত্তোলনকারীরা সরকারদলীয় নেতা হওয়ার কারণেই তাদের বালু জব্দ করা হয়নি। অন্য দু-জনের বালু জব্দ করা হয়েছে। শ্রীরামপুর গ্রামের চঞ্চল জানান, আমি যে বালু উত্তোলন করে রেখেছি তা গ্রামবাসীর কারণে আনতে পাচ্ছি না। গ্রামবাসীরা ট্রাক আটকে দেওয়ার কারণে যত ঝামেলা হচ্ছে।  সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ শাওন জানান, আজমপুর ইউনিয়নের সরকারি দোবিলা বিলের এপার থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা দুটি স্পটের বালু জব্দ করা হয়েছে, যা ২ জুন নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করা হবে। পরে বাকিগুলো দেখব।
৩১ মে, ২০২৪

অবৈধ বালু উত্তোলনে রাজবাড়ীর পদ্মাপাড়ে ভাঙনের শঙ্কা
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের পাশ থেকেই বালু তুলে বিক্রি করছে একটি চক্র। স্থানীয়দের শঙ্কা, এতে বর্ষায় নদীভাঙন বৃদ্ধি পাবে কয়েকগুণ।  জানা যায়, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই দিন রাতে বালু তুলে বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রটি। তবে দিন থেকে রাতের বেলা বালু তোলার গতি বৃদ্ধি পায় কয়েকগুণ। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন পদ্মার তীর থেকে এভাবে কয়েক লাখ টাকার বালু লুট করছে চক্রটি। অব্যাহতভাবে বেশ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার ফলে নদী তীরে সৃষ্টি হয়েছে অনেক বড় বড় গর্তের। ফলে বর্ষায় এই এলাকায় নদীভাঙন বৃদ্ধি পাবে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অথচ বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০-এর ৫ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান, চা-বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্যকোনো মাধ্যমে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এ ছাড়া সেতু, কালভার্ট, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন করা যাবে না। কিন্তু এ আইনকে বৃদ্ধাঙুলী দেখিয়ে দৌলতদিয়া ৭নং ফেরি ঘাট থেকে মাত্র ৫শ গজ দূরে বাহিরচর দৌলতদিয়া ছাত্তার মেম্বার পাড়ায় পদ্মা নদীর পাড়ে এক্সকাভেটর দিয়ে নদীপাড়ের জমি খনন করে বালু তোলা হচ্ছে। এই বালু তোলায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী বেলায়েত মণ্ডল। সরেজমিনে দেখা যায়, বাহিরচর দৌলতদিয়া ছাত্তার মেম্বার পাড়ায় পদ্মা নদীর পাড়ের জমি থেকে এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এই বালু নিতে বেশ কয়েকটি ডাম্প ট্রাক অপেক্ষা করছে। বালু ভর্তি ডাম্প ট্রাক চালাচলের জন্য পদ্মা নদীর পাড় থেকে শুরু করে ৭ নম্বর ফেরি ঘাট পর্যন্ত করা হয়েছে বিশেষ রাস্তা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে অন্তত ১০টি ট্রাক বালু ভর্তি করে ছুটে যায়। এসব বালু উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এবং উপজেলার বাইরেও বিক্রি করা হয়। নদীপাড়সহ আশপাশের কৃষি জমি থেকেও গভীর গর্ত করে বালু তোলা হয়েছে। বালু কাটায় নেতৃত্বদানকারী বেলায়েত মণ্ডলের জমি বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্টরা।  নাম জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করে এক ড্রাম ট্রাক চালক বলেন, ‘এখানকার জমির মালিক বিলা মণ্ডল বালু বিক্রি করছেন। তাতে কার কী সমস্যা। এসময় ভেকুচালক বলেন, ‘রাত দিন দিয়ে ১০/১৫ গাড়ি মাটি বিক্রি করা হয়। এসময় তাকে গত এক ঘণ্টায় ১০/১৫টি ট্রাক বালু বোঝাই করে চলে যাওয়ার কথা বললে তিনি চুপ করে থাকেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ এই বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের ভূমিকা বড়াবড়ই প্রশ্নবিদ্ধ। আর স্থানীয়রা কিছু বলতে গেলে তাদের দেখানো হয় নানা ধরনের ভয়-ভীতি। খোলা ট্রাকে বালু পরিবহন করায় ধুলায় বাড়ি ঘরে থাকা দায় বলে জানান অনেকেই। নদীর পার থেকে বালু উত্তোলন দ্রুত বন্ধের দাবি পদ্মা পারের মানুষের। স্থানীয় মুরাদ হোসেন জানান, প্রশাসনের লোকজন মাঝে মধ্যেই এসে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। আবার রহস্যজনক কারণে ফের শুরু হয় বালু উত্তোলন।  আল আমিন নামের এক ট্রাকচালক বলেন, প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ ট্রাক বালু বিক্রি করা হয়। মাঝে মধ্যে প্রশাসন থেকে অভিযান চালিয়ে বালু তোলা বন্ধ করে। কিন্তু কয়েক দিন পর আবার বালু তোলা শুরু হয়। অভিযুক্ত বেলায়েত মণ্ডল জানান, নদীর পাড় থেকে বালু কাটার জন্য প্রশাসনের কোনো অনুমতি নেই। জমির মালিকদের টাকা দিয়ে বালু কাটা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র জানান, বালু ব্যবসায়ীরা বালু উত্তোলনের পক্ষে কিছু কাগজ-পত্র প্রদর্শন করেছিলেন। তবে সেসব কাগজ-পত্রের তেমন কোনো ভিত্তি পাওয়া যায়নি। তাই বালু উত্তোলন বন্ধে বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়েছে। তারপরও রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করছে বলে জানতে পেরেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৭ মার্চ, ২০২৪

শ্রীমঙ্গলে কৃষিজমি থেকে অবৈধভাবে সিলিকা বালু উত্তোলন
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় চলছে কোটি টাকার অবৈধ সিলিকা বালুর ব্যবসা। কৃষি জমিতে শ্যালো মেশিন বসিয়ে সিলিকা বালু উত্তোলন করছে, এখন ও মামলা অবস্থা সিলিকা বালু উত্তোলন হচ্ছে। এলাকার ফসলি জমি নষ্ট করে এসব বালু তোলায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সৃষ্টি করেছে। একেকটি গর্ত ৫০ থেকে ১৫০ ফুট গভীর হয়। প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ বাধা দিতে সাহস পায় না। বাধা দিতে গেলে উল্টো হয়রানি শিকার হতে হয়। এই চক্র খুবই শক্তিশালী। তিন ইউনিয়নের ১৪-১৫টি গ্রামের কয়েকশ’ পরিবার ও এলাকাবাসী। এতে তেল-গ্যাস পাইপের জাতীয় গ্রিড লাইন পড়েছে হুমকির মুখে। যে কোনো সময় বা ভূমিকম্পে এসব এলাকা ধসে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, মাটির নিচের দিকে নামে, তা ছাড়া ফসল ভালো করে ফলে না, সবদিকেই ক্ষতি। দিনরাতে প্রচুর বালুর গাড়িগুলো আসতেছে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে, এগুলোর সরকারি কোনো অনুমতি নেই, কোনো লিজ নেই, রাজস্ব নেই, কোনো কিছু নেই। অথচ বলব যে এগুলা প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে সিলিকা বালু আসতেছে। অবৈধ সিলিকা বালু উত্তলনের সাথে জড়িত ফেরদৌস, নানু, কাউছার, ফয়েজ, কবির মোল্লা, দুদু, কদর আলী, আসলাম, এসব বালু ব্যবসায়ীরা বহু দিন ধরে ভূনবীর ও মির্জাপুর ইউনিয়নে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। এখন তাদের আঙুল ফুলে কলা গাছ। শ্রীমঙ্গলের ভুনবীর কোনো অনুমতি তো নাই। তারপরও সিলিকা বালু তোলে। এ ব্যাপারে অভিযোগ করে আর কি হবে, অভিযোগ করে কোনো ফায়দা নাই। এই ব্যাপারে তো কোনো উদ্যোগ নেই, কেউ কোনো গুরুত্ব দেয় না। পরিবেশের ক্ষয়-ক্ষতির কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না। মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলাতে ২৯টি সিলিকা বালু ছড়া ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক হাইকোর্টে এক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে ইজারা বন্দোবস্ততে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। পরে ২০১৮ সালে আদালত এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট (ইআইএ) প্রাপ্তিসাপেক্ষে ছড়ার ইজারার অনুমোদন দিতে বলা হয়। পরে ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক মৌলভীবাজার কার্যালয় থেকে ১৪২৮ বাংলা সনের বৈশাখ মাস হতে ১৪২৯ বাংলা সনের ৩০ চৈত্র ২ বছরের জন্য ইজারা সংক্রান্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে শ্রীমঙ্গল উপজেলাতে ২৯টি ছড়ার ইজারা বন্দোবস্ত পান ইজারাদাররা। ওই ২৯টি ছড়ার ইজারাদাররা শুধু ২৫ শতাংশ সিকিউরিটির টাকা জমা দিয়ে পরিবেশ ছাড়পত্র ‘ইআইএ’ সংগ্রহের জটিলতার অজুহাতে দেখিয়ে বিগত দুই বছর রাজস্বের বাকি টাকা জমা না দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছেন। এতে শুধু বিগত দুই বছরে ভ্যাট, ট্যাক্স ও ইজারা মূল্যসহ এই বালুমহাল থেকে ইজারাদাররা ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৪ হাজার ৫৬২ টাকা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন। বিগত ২০১৬ সাল থেকে হিসাব করলে সরকার এ খাত থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকার মতো রাজস্ব আহরণ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাকি কোনো ইজারাদার ‘ইআইএ’ জমা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার তাগিদ অনুভব করছেন না এবং তারা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছেন। তারা পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতির কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না। বর্তমানে ১৪৩০ বাংলা সন চলমান কিন্তু ১৪২৯ বাংলা সনে পূর্বের ওই দরপত্রের ইজারার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ নতুন ইজারা দরপত্র কেনো আহ্বান করছে না তা বোধগম্য নয়? ছোট বড় ২৯টি ছড়ার মধ্যে ৬টি ছড়া বৈধতা রয়েছে বাকি ২২টি ছড়ায় বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত সরকার।    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কিছু দিন আগে একজন সাংবাদিকের ওপর হামলা করে সেই সাংবাদিকে বেদম মারপিট করে। তিনি সাংবাদিক তানভীর ইসলাম কাওছার। বাংলাদেশ পোস্টের মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।(গত ৪ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নে ভুনবীর চৌমুহনায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত সাংবাদিক এর খালা খুশ ভানু বেগম বাদী হয়ে একই ইউনিয়নের চিহ্নিত বালু দস্যু কাওছার, ফেরদৌস, কবির মোল্লা, নানু, দুদু, ফয়েজ ও আসলামের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করে  শ্রীমঙ্গল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এখনও মামলা চলমান। কয়েকজন আসামি জেলহাজতে, বাকিরা জামিনে আছে।   কৃষক মো. হাসান মিয়া বলেন, সরকার বালু তোলার অনুমতি দেয়নি, তবে কিভাবে বালু তুলে আনে। জমি থেকে বালু তুলে, সরকারি কর্মকর্তা নাই, দেখেও না, চেকও করে না, তারা বসে রইছে চেয়ারে। এই দেশের সম্পদ যদি আমরা ধ্বংস করি, তাইলে তো আমাদেরই সর্বনাশ। জমি থেকে বালু তুললে তো এই জমির মধ্যে আর কোনো ফলন হবে না। মো. ইরা মিয়া বলেন, ভুনবীর এর দিকে যদি আপনি দেখেন, তো ভয় পাইবেন। যে রকম গর্ত হইছে, অন্তত মনে করেন ১২ থেকে ১৪ একর জায়গা হইব, বালু উত্তোলন করে এই জায়গা একেবারে অযোগ্য করে দিছে তারা। এতে তো ক্ষতি হয়। সিলিকা বালু উত্তোলন করলে জায়গা গভীর হয়ে যায়, জায়গাও নষ্ট হয়ে যায়, এ জমিগুলোতে কোনো ফসল করা যাবে না। কৃষক মো. হাসান মিয়া বলেন, জমি থেকে বালু তুলে, সরকারি কর্মকর্তা নাই, দেখেও না, চেকও করে না, তারা বসে রইছে চেয়ারে। যেমন মনে করেন মাটির নিচের দিকে নামে, তা ছাড়া আপনার ফসল ভালো করে ফলে না, সবদিকেই ক্ষতি। কোনো অনুমতি তো নাই। এটা নিয়ে তো অনেক কিছু হয়, কিন্তু পরে আবার ঠিকই তারা বালু তোলে। জমি থেকে বালু তুললে তো এই জমির মধ্যে আর কোনো ফলন হবে না। এ ব্যাপারে অভিযোগ করে আর কি হবে, অভিযোগ করে কোনো ফায়দা নাই। এই ব্যাপারে তো কোনো উদ্যোগ নাই, কেউ কোনো গুরুত্ব দেয় না। সিলিকা বালুর ব্যবসা সিন্ডিকের প্রধান অভিযুক্ত কাওছার বলেন, এগুলো কে করে আমি তো জানি না। আগে দেখেন, কোনো কিছু পান কি না। আমি তো জানি না। আমার সম্পর্কে এই অভিযোগ কে দিয়েছে, অভিযোগকারী কে। আমার ভালোবাসার লোক আছে, খারাপ করার লোকও থাকতে পারে। আমার গাড়ি-ঘোড়া চলে আর মাঝেমধ্যে আমি এলাকার কোনো কাজকাম থাকলে তাদের দিয়ে দেই আরকি। আমাকে নিয়ে দেখবেন যে আমি কোনো জায়গায় বালু উত্তোলন করি। এখানে আপনি আমাকে সরাসরি পাবেন। আমার বাড়ি ভুনবীর ইউনিয়নেই, আমাকে ফোন দিলে আমি আপনাদের সঙ্গে দেখা করব। অবৈধ বালু ব্যবসায়ী কবির মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি বালু তুলি না। এখানে মেশিন দিয়ে বালু তোলা হয় না। বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সমরু বলেন, দিন রাতে প্রচুর বালুর গাড়িগুলো আসতেছে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। এগুলোর সরকারি কোনো অনুমতি নেই, কোনো লিজ নেই, রাজস্ব নেই, কোনো কিছু নেই। অথচ আমি বলব যে এগুলো প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে আসতেছে। আবার আসতেছে ভুনবীর চৌমুহনায়, সিলিকা বালুর বড় বড় ডিল করা, এসব কি প্রশাসন দেখে না, তাদের নজরে আসে না। তাহলে হঠাৎ একদিন একটা অভিযান চালালো, দৌঁড়ানি দিল, এরপর ৩ থেকে ৪ দিন পর দেখা যায় আবার সব আগের মতো। তারা বলে না না সব ঠিক আছে। এতে বুঝা গেল যে যে কোনোভাবে প্রশাসনকে তারা ম্যানেজ করছে। এ কাজে আমরা ভীষণভাবে জর্জরিত। এতে দেশের ক্ষতি, সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, সব দিক দিয়েই ক্ষতি। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মৌলভীবাজার জেলা সমস্বয়কারী আসম সালেহ সোহেল বলেন, একটা বলে থাকি যে, এই যে ভুনবীর আশপাশে যে ইউনিয়নগুলো আছে শ্রীমঙ্গলের, সেখানে যে সিলিকা বালু আছে, সেটা তো দামি বালু এবং সেই বালু উত্তোলনের ব্যাপারে সরকারের কিন্তু নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু সরকারের সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেখানে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কিভাবে সেখানে বালু উত্তোলন করা হয়, প্রশাসনের কি সেখানে কোনো দায়িত্ব নেই? আমরা মনে করি, আমরা পরিবেশ কর্মীরা এত কথা বলছি, যে এই বালুটি হচ্ছে সরকারি বালু। সরকার কখনো লিজ দিচ্ছে না। আর যদি কোথাও লিজ দিয়ে থাকে সরকার, আমরা বলছি যে পুরো দমে বন্ধ করে দিতে হবে।  সহকারী কমিশনার (ভূমি) শ্রীমঙ্গল সন্দ্বীপ তালুকদার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমরা প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিব। বিষয়টা আমাদের নজরে আসছে।  প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কৃষিজমিতে শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে- এমন অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, আমাদের কাছে যে নিউজ ছিল রেগুলার মোবাইল কোর্টে জরিমানা করা হচ্ছে। দরকার হলে আজও মোবাইল কোর্ট পাঠাবো, আইনগত ব্যবস্থা নেব।  মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে, বিষয়টি দেখছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২৮ নভেম্বর, ২০২৩
X