সংসদে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট পাস
জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পাস হয়েছে। রোববার (৩০ জুন) বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন ছাড়াই পাস হলো দেশের ৫৩তম এ বাজেট।  আগামীকাল ১ জুলাই থেকেই এ বাজেট কার্যকর হবে। এর আগে গতকাল শনিবার বড় কোনো পরিবর্তন ছাড়াই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য অর্থ বিল জাতীয় সংসদে পাস হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়। তবে বিলটি পাসের আগে কিছু সংশোধনী তুলে ধরা হয়। যার মধ্যে কিছু সংশোধনী অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গ্রহণ করেন। অন্যগুলো তিনি গ্রহণ করেননি। পরে সেগুলো কণ্ঠভোটে অনুমোদন করেন সংসদ সদস্যরা। গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এই বাজেট পেশ করেন। এবারের বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর থাকছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ব্যতীত প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।   বাজেটে ঘাটতি দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকার জোগান দেওয়া হবে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণে। এরমধ্যে বিদেশি উৎস থেকে নেওয়া হবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র থেকে এক লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।    নতুন বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।
৩০ জুন, ২০২৪

সম্পূরক বাজেট পাস
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৩৭ হাজার ৮১৭ কোটি ৪০ লাখ ৫৭ হাজার টাকার সম্পূরক বাজেট জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। গতকাল সোমবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০২৪’ সংসদে তোলেন। পরে সেটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। আগামী ৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া অর্থবছরের কার্যক্রম নির্বাহের জন্য সংযুক্ত তহবিল থেকে মঞ্জুরি করা অর্থের বেশি বরাদ্দ ও নির্দিষ্টকরণের কর্তৃত্ব প্রদানের জন্য এই সম্পূরক বিল আনা হয়। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ৬২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অনুকূলে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। সংশোধিত বাজেটে ২২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বরাদ্দ বেড়েছে ৩৭ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। আর অপরিবর্তিত রয়েছে বা হ্রাস পেয়েছে ৪০টির ক্ষেত্রে। সার্বিকভাবে ৪৭ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা হ্রাস পেয়ে সংশোধিত বাজেট হয়েছে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। সম্পূরক বাজেটে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৬৪৯ কোটি ৩৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। সম্পূরক বাজেটে ২০টি দাবির বিপরীতে ৬৬টি ছাঁটাই প্রস্তাব দেন চারজন সংসদ সদস্য। এর মধ্যে দুটি মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনা হয়। সেগুলো হলো, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। এর আগে সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা করেন সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা।
১১ জুন, ২০২৪

নতুন অর্থবছরের বাজেট পাস
মাত্র দুই মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি দাবির ছাঁটাই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পর জাতীয় সংসদে পাস হলো ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট। গতকাল সোমবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ১১ লাখ ১০ হাজার ৮৪০ কোটি টাকার নির্দিষ্টকরণ বিল-২০২৩ সংসদে উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়। নতুন অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে সীমিত রেখে সাড়ে ৭ শতাংশ ধরা হয়েছে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা। এর আগে রোববার সংসদে অর্থবিল ২০২৩ পাস হয়। সংবিধানের ৮৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদের আইন ছাড়া কোনো কর আরোপ বা সংগ্রহ করা যাবে না। আবার ৯০(৩) অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সংযুক্ত তহবিল থেকে আইনের দ্বারা নির্দিষ্টকরণ ছাড়া সরকারের অর্থ বরাদ্দ বা ব্যয় না করার বাধ্যবাধকতা আছে। সংবিধানের এ নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রতিবছর রাজস্ব আয় ও ব্যয়ের জন্য সংসদে দুটি বিল পাস করতে হবে। এর একটি অর্থবিল। অন্যটি নির্দিষ্টকরণ বিল। অর্থবিলের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন খাতে কর ও শুল্ক হার নির্ধারণ করা হয়। আর নির্দিষ্টকরণ বিলের মাধ্যমে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জন্য সারা বছরের ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। প্রতিবছর সংসদে বাজেট উপস্থাপনের সময় ওই অর্থবছরের জন্য মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বরাদ্দ প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। এটিই নির্দিষ্টকরণ বিল। এর ওপর বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। বাজেট পাসের দিন তারা ওই মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা তুলে ধরে বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব করেন। এবার বাজেটের ওপর সংসদে উত্থাপিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য ৫৯টি মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, গণফোরাম ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে ১০ জন সংসদ সদস্য মোট ৫০৩টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনেন। অন্যান্য বছর সব প্রস্তাবের ওপর আলোচনা না হলেও গুরুত্বপূর্ণ ১০ থেকে ১৫টি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ নিয়ে সংসদে আলোচনা করেন বিরোধীদলীয় সদস্যরা। কিন্তু এবার নজিরবিহীনভাবে দুটি ছাড়া আর কোনো মন্ত্রণালয়ের ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সুযোগ পাননি তারা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সাস্থ্যসেবা বিভাগের ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়। সব প্রস্তাবই কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। বাকি সব মন্ত্রণালয়ের ছাঁটাই প্রস্তাব স্পিকার তার ক্ষমতাবলে সরাসরি ভোটে দেন। ১ জুলাই থেকে নতুন বাজেট কার্যকর হবে। এর আগে রাষ্ট্রপতির সম্মতিসাপেক্ষে নির্দিষ্টকরণ আইন গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। গত ১ জুন অর্থমন্ত্রী ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখ’ শিরোনামে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট সংসদে উপস্থাপন করেন। এবারের বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২০ হাজার কোটি টাকা, কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা, আর বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। একই সময়ে আয়ের প্রাক্কলন হচ্ছে ৫ লাখ কোটি টাকা। এ বাজেটের ঘাটতি ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। এ ঘাটতি পূরণে সরকার কোন খাত থেকে কত টাকা ঋণ নেবে, তারও একটি ছক তৈরি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ ঋণ নেবে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া বৈদেশিক ঋণ হিসেবে নেবে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।
২৭ জুন, ২০২৩
X