বাঘা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অনিয়মের প্রতিবাদ
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা পরিষদের সামনে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমি রেজিস্ট্রির সময় অতিরিক্ত টাকা আদায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে দলিল লেখক ও সর্বস্তরের জনসাধারণের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় শুরু হয়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলু, বাঘা পৌর মেয়র মো. আক্কাছ আলী, পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শফিউর রহমান শফি, সাবেক দলিল লেখক সমিতির সভাপতি স্বপন আলী। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাঘা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস দীর্ঘদিন ধরে ভূমিদস্যুদের দখলে। তারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরকারি নির্ধারিত ফির বাইরে বিভিন্ন অজুহাতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকে। এই সিন্ডিকেট সরকারি নিয়ম বহির্ভূতভাবে সমিতির নাম করে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। একটি মহলের দিকনির্দেশনায় সমিতিটি পরিচালিত হয়ে থাকে এবং এর লভ্যাংশ তাদের ব্যক্তিগত খাতে জমা হয়। এ ছাড়া উক্ত মহলের নির্দেশনায় মদদপুষ্ট ব্যক্তিদের সভাপতি, সেক্রেটারি করে দলিল লেখকদের জিম্মি করে রেখেছে। দলিল লেখকরা ভোটের মাধ্যমে সভাপতি, সেক্রেটারি নির্ধারণের দাবি জানালেও তা কর্ণপাত করছে না ওই সিন্ডিকেট।
২১ জুন, ২০২৪

জব্বারের বলী খেলা / নতুন চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরীফ
তারা সতীর্থ। বলীর কসরত শিখেছেন একই ওস্তাদের কাছে। দারুণ সেসব কসরত দেখিয়ে এবার মাতিয়ে তুলেছেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার ১১৫তম আসর। তাদের একজন এবারের নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ, অন্যজন রানারআপ মো. রাশেদ। দুজনই কুস্তির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন গতবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শাহজালাল বলীর কাছে। এদিকে এবারও তৃতীয় হয়েছেন খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠের অস্থায়ী মঞ্চে শুরু হয় বলীদের লড়াই। সকাল থেকে রেজিস্ট্রেশন করে যাচাই-বাছাই শেষে মূল মঞ্চে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৮০ কুস্তিগির। প্রধান অতিথি হিসেবে ঐহিত্যবাহী এ মেলার উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে ময়দান। আশপাশের বিভিন্ন ছাদ এবং ভবনের উঁচু স্থানে অনেকে ভিড় জমান। কুস্তিগিররাও বিভিন্ন ভঙ্গিতে শারীরিক কসরত দেখিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিতে শুরু করেন। ৮০ কুস্তিগিরের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত শুরু হয় বহুল প্রতীক্ষিত এ প্রতিযোগিতা। কখনো মুষ্ঠিবদ্ধ হাত, কিংবা কপাল-কাঁধ ঠেকিয়ে লড়তে শুরু করেন কুস্তিগিররা। শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনালে মুখোমুখি হন রাশেদ ও সৃজন চাকমা এবং বাঘা শরীফ ও মো. রাসেল। সেমিফাইনালে দুই ম্যাচ চলে প্রায় ৩০ মিনিট। সেমিফাইনালে বিজয়ী হয়ে ফাইনালে ওঠেন মো. রাশেদ ও বাঘা শরীফ। অন্যদিকে, রাসেলকে হারিয়ে এবারও তৃতীয় হন সৃজন চাকমা। এ নিয়ে পরপর তিনবারই তিনি তৃতীয় হয়েছেন। ফাইনালে ১১ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস লড়াই: বিশালাকার শরীর আর চাহনিতে লড়াকু ভাব। দুজনই একই গুরুর শীর্ষ হওয়ায় একে অন্যজনকে চেনেন খুব ভালোভাবেই। আবার দুজনের বাড়িও একই জায়গায়। তবে লড়াই শুরুর পর কেউ যেন কাউকে ছাড় দেন না। ফাইনালে বাঘা শরীফ ও মো. রাশেদ দুজনই মরিয়া হয়ে ওঠেন জেতার জন্য। চলতে থাকে একের পর এক ঘাত-প্রতিঘাত। এভাবে প্রায় ১১ মিনিট জমজমাট লড়াই চলে তাদের মধ্যে। শুরু থেকে জিততে মরিয়া হলেও শেষ দিকে এসে হাল ছেড়ে দেন রাশেদ। হঠাৎ সতীর্থ শরীফের হাত তুলে ধরে জানান দেন হার মানার। এ সময় চ্যাম্পিয়ন শরীফ অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, গতবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলী খেলায় অংশ না নিয়ে আমাকে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। অন্যদিকে, রানারআপ রাশেদ বলেন, আমি আগে বলী খেলায় অংশ নিইনি। আমাকে খেলায় নিয়ে এসেছেন শরীফ ভাই। তাই তাকে জয়ী করে দিয়েছি। অন্যদিকে, দুই শিষ্যকে সুযোগ করে দিতে এবার খেলায় অংশ নেননি কুমিল্লার শাহজালাল বলী। এভাবে বলী খেলায় কুমিল্লার ওস্তাদ-সতীর্থদের এমন ভালোবাসাকে অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি চট্টগ্রামের দর্শকরা। পতেঙ্গা থেকে আসা তরুণ মো. ইমতিয়াজ কালবেলাকে বলেন, ‘বলী প্রতিযোগিতায় ওস্তাদ-সতীর্থদের এমন ভালোবাসা দেখে খুবই ভালো লেগেছে।’ লড়ছেন ৭১ বছরেও: জীর্ণশীর্ণ শরীর, গালভর্তি সাদা দাড়ি। ৭২-এর ঘরে বয়স, অথচ এখনো বলীর নেশা কাটিয়ে উঠতে পারেননি খাজা আহমদ। বাবার হাত ধরে ১১ কি ১২ বছর বয়স থেকে বলী খেলায় অংশ নিচ্ছেন তিনি। ফুসফুসে নানা সমস্যা। গত বছর বলেছিলেন অসুস্থতার কারণে আর অংশ নেবেন না বলী খেলায়। কিন্তু এ নেশা কাটেনি তার। গতকালও তাকে দেখা গেছে লালদীঘির মাঠে। উঠেছেন স্টেজে, লড়েছেন বুক ফুলিয়ে। খাজা আহমদ জানালেন, তার বাবাও বলী খেলা খেলতেন। ১১ কি ১২ বছর বয়স থেকে তিনি নিজেও বলী খেলায় অংশ নিচ্ছেন। জব্বারের বলী খেলায় ৫১ বছরের বেশি সময় ধরে অংশ নিচ্ছেন। একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন বলেও দাবি তার। কৃষিকাজ করেন খাজা আহমদ। তার বাড়ি চট্টগ্রামের পতেঙ্গায়। এলাকায় তিনি ‘খাজা আহমদ বলী’ নামে পরিচিত।
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

চট্টগ্রামে জব্বারের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ
তারা সতীর্থ। বলীর কসরত শিখেছেন একই ওস্তাদের কাছে। দারুণ সেই সব কসরত দেখিয়ে এবার মাতিয়ে তুলেছেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার ১১৫তম আসর। তাদের একজন এবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ, অন্যজন রানার্স আপ মো. রাশেদ বলী। দুজনই কুস্তির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন জব্বারের বলীখেলার গতবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার শাহজালাল বলীর কাছে। অন্যদিকে এবারও তৃতীয় হয়েছেন খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা।  এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রামের লালদিঘি মাঠের অস্থায়ী মঞ্চে শুরু হয় বলীদের লড়াই। সকাল থেকে শতাধিক বলী রেজিস্ট্রেশন করলে যাচাইবাছাই শেষে মূল মঞ্চে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৮০ বলী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বেলুন উড়িয়ে ঐহিত্যবাহী এ মেলার উদ্ধোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন।  প্রতিযোগিতা শুরুর আগ থেকেই কানাই কানাই পূর্ণ হয়ে উঠে লালদিঘির ময়দান। আশপাশের বিভিন্ন ছাদ এবং ভবনের উঁচু স্থানে অনেকে ভিড় জমান। বেলুন উড়িয়ে প্রতিযোগিতা শুরুর পর শিষ-আর করতালির শব্দ ভেসে আসতে শুরু করে চারদিক থেকে। বলীরাও বিভিন্ন ভঙ্গিতে শারীরিক কসরত দেখিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিতে শুরু করে। ৮০ বলীর অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে  শেষ পর্যন্ত শুরু হয় বহুল প্রতিক্ষিত এ প্রতিযোগিতা। কখনো মুষ্ঠিবদ্ধ হাত, কিংবা কপাল-কাঁধ ঠেকিতে লড়তে শুরু করে বলীরা। শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনালে মুখোমুখি হন মো. রাশেদ ও রাঙ্গামাটির সৃজন চাকমা বলী। অপর সেমিফাইনালে মুখোমুখি হন বাঘা শরীফ ও মো. রাসেল বলী। সেমিফাইনালে দুই ম্যাচ চলে প্রায় ৩০ মিনিট। সেমিফাইনালে বিজয়ী হয়ে ফাইনালে ওঠেন মো. রাশেদ ও বাঘা শরীফ বলী। অন্যদিকে তৃতীয় স্থান নির্ধারণীতে রাসেলকে হারিয়ে এবারও তৃতীয় হন সৃজন চাকমা। গত তিনবার জব্বারের বলীখেলায় অংশ নিয়ে তিনবারই তৃতীয় হয়েছেন সৃজন। খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি জেলায় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন বলীখেলায় চ্যাম্পিয়ন তিনি। ফাইনালে ১১ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস লড়াই বিশালকার শরীর আর চাহনিতে লড়াকু ভাব। দুজনের বাড়িই একই গুরুর শীর্ষ হওয়ায় একে অন্যজনকে চেনে খুব ভালোভাবেই। আবার দুজনের বাড়িও একই জায়গায়। তবে লড়াই শুরুর পর কেউ যেন কাউরে ছাড়ে না। ফাইনালে ওঠে বাঘা শরীফ ও মো. রাশেদ বলী দু’জনই মরিয়া হয়ে উঠে জেতার জন্য। চলতে থাকে একের পর এক ঘাত প্রতিঘাত। এভাবে কখনো ঘায়েল হচ্ছিল বাঘা শরীফ, ঘুরে দাঁড়িয়ে তারপর বাহু কিংবা কপাল ঠেকিয়ে বিড়বিড় করে কথা বলে দু’জনই। তারপর আবারও চলে লড়াই। এভাবে একে একে প্রায় ১১ মিনিট জমজমাট লড়াই চলে বাঘা শরীফ ও রাশেদ বলীর মধ্যে। শুরু থেকে জিততে মরিয়া হলেও শেষ দিকে এসে হাল ছেড়ে দেয় রাশেদ বলী। হঠাৎ সতীর্থ বাঘা  শরীফের হাত তুলে ধরে জানান দেয় হার মানার।  এভাবেই ফাইনালে প্রায় ১১ মিনিট লাড়াইয়ের পর বাঘা শরীফের হাত উচিয়ে ধরেন রাশেদ। এ সময় চ্যাম্পিয়ন শরীফ অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, গতবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলীখেলায় অংশ না নিয়ে আমাকে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।  অন্যদিকে রানার্স আপ মো. রাশেদ বলেন, আমি আগে বলীখেলায় অংশ নেইনি। আমাকে জব্বারের বলী খেলায় নিয়ে এসেছেন শরীফ ভাই। তিনি আমার সিনিয়র। তাই তাকে জয়ী করে দিয়েছি। চ্যাম্পিয়ন শরীফ ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। আমার জন্যেও দোয়া করবেন। অন্যদিকে নিজের দুই শিষ্যকে সুযোগ করে দিতে এবার খেলায় অংশ নেননি কুমিল্লার শাহজালাল বলী। এবারও অংশ নিয়ে গতবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলীর সামনে আবারও জয়ের মুকুট অর্জনের সুযোগ থাকলেও শিষ্যদের জন্য সেটি ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। এভাবে বলী খেলায় কুমিল্লার ওস্তাদ-সতীর্থদের এমন ভালোভাসাকে অভিনন্দন জানাতে ভুলে নি চট্টগ্রামের দর্শকরা। ফাইনাল শেষে হাততালি ও বাঁশি বাজিয়ে ভালোবাসার উষ্ঞ ভালোবাসার জানান দিয়েছে তারাও।  পতেঙ্গা থেকে আসা তরুণ মো. ইমতিয়াজ কালবেলাকে বলেন, ‘বলী প্রতিযোগিতায় ওস্তাদ-সতীর্থদের এমন ভালোবাসা দেখে খুবই ভালো লেগেছে।’
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

৫০০ বছরের ঐতিহাসিক নিদর্শন বাঘা শাহী মসজিদ
প্রাচীন ও প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহাসিক নিদর্শন রাজশাহীর বাঘা শাহী মসজিদ। ৫০০ বছর আগে বাংলার স্বাধীন সুলতান নুসরত শাহ সুন্দর কারুকার্যখচিত এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। ১৫২৩-২৪ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত এই ঐতিহাসিক মসজিদটি আজও আপন মহিমায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলায়। বাংলাদেশের ৫০ টাকার পুরোনো নোট আর ১০ টাকার স্মারক ডাকটিকিটে দেখা মেলে প্রাচীন স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন এই মসজিদের। ৫০০ বছরের পুরাতন এই শাহী মসজিদটি দেখতে দর্শনার্থীদের আনোগোনা সবসময় বিদ্যমান। মসজিদটির স্থাপত্যশৈলীর আকর্ষণে দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকেরা প্রতিনিয়ত ছুটে আসেন বাঘা উপজেলায়। এই মসজিদটি রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে বাঘা উপজেলা সদরে অবস্থিত। সরেজমিনে দেখা গেছে, মসজিদটি সমতলের আট থেকে ১০ ফুট উঁচু একটি বেদির ওপর নির্মিত। নিচে থেকে এটির দিকে তাকালে চোখ চলে যায় মসজিদের চৌচালা গম্বুজের দিকে। মসজিদে চমৎকার কারুকাজ আর টেরাকোটার নকশা পরিপূর্ণ। মসজিদের দক্ষিণ পাশ দিয়ে চলে গেছে বাঘা-ঈশ্বরদী সড়ক। সেখান থেকে উত্তর দিকে মুখ ফেরালেই মসজিদের ১০টি গম্বুজের কয়েকটি দৃশ্যমান হয়। এরপর প্রধান ফটক থেকে এর নির্মাণশৈলী দর্শনার্থীদের টেনে নিয়ে যায় মসজিদের ভেতরে। ১০ গম্বুজের এই মসজিদে রয়েছে পাঁচটি দরজা। মাঝখানের দরজার ওপর ফারসি হরফে লেখা একটি শিলালিপি রয়েছে। চার কোনায় রয়েছে চারটি চৌচালা গম্বুজ, ভেতরে ছয়টি স্তম্ভ, চারটি অপূর্ব কারুকার্যখচিত মেহরাব। এর নকশায় রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী আম, গোলাপ ফুলসহ নানা রকম নকশা। মসজিদের আঙিনা ঘিরে রয়েছে সীমানাপ্রাচীর। উত্তর ও দক্ষিণ দিকে রয়েছে দুটি প্রবেশপথ। দুপাশেই রয়েছে বিশাল দুটি ফটক। দক্ষিণ পাশের ফটকটি এখনো রয়েছে। সেখানেও রয়েছে দারুণ কারুকাজ। তবে উত্তর পাশের ফটকের  অবস্থা আর আগের মতো নেই। এ ছাড়া মসজিদের সামনে খনন করা আছে বিশাল এক দিঘি। মসজিদের সবখানে টেরাকোটার নকশা। কিছু কিছু জায়গায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ২০০৭ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ নকশা প্রতিস্থাপন করেছে। সিরাজগঞ্জের টেরাকোটা শিল্পী মদন পাল কাজটি করেছিলেন। মসজিদের উত্তর পাশে হযরত শাহদৌলা (র.) এবং তার পাঁচ সাথির মাজার অবস্থিত। এই মাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে হজরত শাহ (র.) এর পরিবারের মাজার। শাহী মসজিদ প্রাঙ্গণের বাইরে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রয়েছে দুজন বাগদানী দরবেশের মাজার। এ ছাড়া এখানে আসা আরও অনেক সাধকেরও মাজারও আছে। বাঘা শাহী মসজিদসংলগ্ন মাটির নিচ থেকে আবিষ্কৃত হয় মহল পুকুর। ১৯৯৭ সালে মাজারের পশ্চিম পাশে খননকাজের সময় একটি বাঁধানো মহল পুকুরের সন্ধান মেলে। সেটি একটি সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে অন্দরমহলের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তিন দিক থেকে বাঁধানো সিঁড়ি ভেতরে নেমে গেছে। সরকারি বা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এখানে মানত করতে আসেন প্রচুর দর্শনার্থী। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আবদুল হান্নান মসজিদের গম্বুজ ভেঙে পড়ার কিছু তথ্য কয়েক বছর আগে দিয়েছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ১৮৯৭ সালের এক ভূমিকম্পে স্থানীয় অন্যান্য ঐতিহাসিক ইমারতের সঙ্গে বাঘা শাহী মসজিদেরও ক্ষতি হয়। ভেঙে পড়ে ওপরের ১০টি গম্বুজ। তার পর থেকে দীর্ঘদিন মসজিদের ভেতরটা পরিত্যক্ত ছিল। একসময় ভেতরে টিনের ছাপরা তৈরি করে নামাজ চলত। পরে গম্বুজগুলো পুনর্নির্মিত হয়। ১৯৭৬ সালের ৩১ আগস্ট থেকে কাজ শুরু হয়, চলে ১৯৭৭ সালের জুলাই পর্যন্ত। এরপর ২০০৭ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ নকশা প্রতিস্থাপন করে সিরাজগঞ্জের কারুশিল্পী মদন পালকে দিয়ে পুনরায় সংস্কার করে নেয়। মসজিদটি দেখতে এসেছিলেন চারঘাট উপজেলার ঝিকড়া বাজার এলাকার বিপুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘জায়গাটা অনেক সুন্দর। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এই জায়গার গুরুত্ব অনেক। তাই সময় পেলেই মাঝেমধ্যে এখানে বেড়াতে আসি।’ বাঘা মাজারের খাদেম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু কালবেলাকে বলেন, ‘প্রশাসনের কর্মকর্তা ও এলাকার বিশিষ্টজনদের নিয়ে একটি কমিটি আছে। সেই কমিটি এই মসজিদ ও মাজার পরিচালনা করেন। প্রতি শুক্রবার এই মসজিদে অসংখ্য মানুষ নামাজ আদায় করতে আসেন দূর-দূরান্ত থেকে।’ তিনি বলেন, ‘এই মসজিদ ঘিরে প্রায় ২৫৬ বিঘা জমির ওপর সুবিশাল দিঘি, আউলিয়াদের মাজার, মূল দরগাহ শরিফ ও জাদুঘর রয়েছে। শীতে অসংখ্য অতিথি পাখি আসে এখানে। ওই সময় দিঘির পাড়ে ভিড় করেন বহু দর্শনার্থী।’ বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর মসজিদটি পরিদর্শন করেন। তিনি পরিদর্শন বইয়ে লেখেন, ‘৫০০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যপূর্ণ স্থাপনাটি পরিদর্শন করি। ধর্মীয় ঐতিহাসকি স্থাপনা পরিদর্শন করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। এর ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হলো।’ মসজিদের মোতয়াল্লি খোন্দকার মুনসুরুল ইসলাম বলেন, ‘এই বছর মসজিদের বয়স ৫০০ বছর পূর্ণ হলো। এ উপলক্ষে বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করার কথা রয়েছে।’
০২ এপ্রিল, ২০২৪

মৌলভীবাজারে দেখা মিলল লাখ টাকার বাঘা আইড়
পৌষসংক্রান্তি উপলক্ষে মৌলভীবাজাররের শেরপুর ও শ্রীমঙ্গলে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে এ মেলা শুরু হয়। ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলায় গিয়ে দেখা যায়, ছোট বড় মিলিয়ে অনেক প্রজাতির মাছ উঠেছে। ক্রেতার পাশাপাশি মেলায় মাছ দেখতে আসা মানুষের ভিড় দেখা গেছে।  বাজার ঘুরে দেখা যায়, মফিজ মিয়া নামের এক মাছ ব্যবসায়ী বড় আকারের বাঘা আইড় মাছ নিয়ে এসেছেন। তিনি মাছটির দাম হাঁকাচ্ছেন এক লাখ টাকা।  ব্যবসায়ী মফিজ মিয়া জানান, ৫০ কেজি ওজনের বাঘা আইড়টির দাম উঠে ৬০ হাজার টাকা। মেলায় অন্য আরেকজন মাছ ব্যবসায়ী মো. হারুন মিয়া এনেছেন আরেকটি বাঘা আইড়। এটির দাম হাঁকান ৯০ হাজার টাকা। এক মাছ ব্যবসায়ী হাবিব মিয়া নিয়ে এসেছেন ৩৫ কেজি ওজনের একটি চিতল মাছ। যার দাম হাঁকান ৭২ হাজার টাকা। মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, দিনে ক্রেতা কম হলেও রাতে শুরু হবে মূল বেচাকেনা। প্রতিবছরই শ্রীমঙ্গলের এই পৌষসংক্রান্তির মাছের মেলায় স্থানীয় মাছের পাশাপাশি সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা, মনু নদী ও হাকালুকি হাওর সুনামগঞ্জের হাওর থেকে নিয়ে আসা হয় দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ। এ ছাড়াও মেলায় বড় বাঘা আইড়, বোয়াল, চিতল, রুই, কাতল, গজারসহ নানা প্রজাতির মিঠাপানির মাছের সমাহার হয়।
১৫ জানুয়ারি, ২০২৪

সেই দিনটি / বাঘা যতীন
বাঘা যতীন ছিলেন বিপ্লবী ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। তার প্রকৃত নাম যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি ঝিনাইদহ জেলায় ১৮৭৯ সালের ৭ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। কোনো অস্ত্রের সাহায্য ছাড়াই খালি হাতে বাঘ হত্যা করার পর তাকে বাঘা যতীন নামে অভিহিত করা হয়। এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাস করার পর সাঁটলিপি ও টাইপ শেখেন। পরবর্তী সময়ে বেঙ্গল গভর্নমেন্টের স্টেনোগ্রাফার নিযুক্ত হন। যতীন ছিলেন শক্ত-সমর্থ ও নির্ভীকচিত্ত এক যুবক। যুগান্তর দলে কাজ করার সময় মানবেন্দ্রনাথ রায়ের সঙ্গে পরিচয় হয় এবং অচিরেই তারা একে অন্যের আস্থাভাজন হন। ১৯০৮ সালে যতীনসহ কয়েকজন বিপ্লবীকে আলীপুর ষড়যন্ত্র মামলায় জড়িত করা হয়। এ মামলার বিচারে বারীন্দ্রকুমার ঘোষকে যাবজ্জীবন নির্বাসন, অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে জেল এবং অনুশীলন সমিতিকে বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে যতীন ও নরেনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ভারতবর্ষের বাইরেও বিপ্লবীদের সংগঠিত করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়। সান ফ্রান্সিসকো শহরে যুগান্তর আশ্রম প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং শিখ সম্প্রদায় এ সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ইউরোপে অবস্থানরত ভারতীয় বিপ্লবীরা ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স পার্টি গঠনের উদ্দেশ্যে বার্লিনে সমবেত হন এবং তারা এতে জার্মানির সাহায্য কামনা করলে জার্মান সরকার সম্মত হয়। এরই মধ্যে যতীনকে বিপ্লবী দলগুলোর কমান্ডার-ইন-চিফ করা হয়। ১৯১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক গোলাগুলিতে যতীন প্রাণ হারান।
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

পদ্মায় জেলের জালে ১ মণ ওজনের বাঘা আইড়   
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পদ্মা নদীতে জেলের জালে ১ মণ ওজনের একটি বাঘা আইড় মাছ ধরা পড়েছে। যা প্রায় ৫২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে মাছটি।  শুক্রবার  (২৮ জুলাই ) দুপুরের অনুমানিক ৩টার দিকে পদ্মা ও যমুনার মোহনায় ভাটিতে কলাবাগান এলাকায় মাছটি ধরা পড়ে। পরে দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরিঘাটের উন্মুক্ত নিলামে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে ৫২ হাজার টাকায় ভাই ভাই মৎস্য আড়ৎদারের মালিক মাসুদ মোল্লা মাছটি কিনে নেয়।   মাসুদ মোল্লা বলেন, ‘১ হাজার ৩৫০ টাকা দরে ৫৪০০০ হাজার টাকায় ফরিদপুরের এক মাছ শৌখিন ব্যক্তির কাছে মাছটি বিক্রি করে দিয়েছি। পদ্মায় প্রায়ই বড় বড় মাছ ধরা পড়ছে। পদ্মার মাছ সুস্বাদু হওয়ায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া এত বড় মাছ এই অঞ্চলে বিক্রি না হলেও, আমরা ঢাকায় বিক্রি করে থাকি।’    
০২ আগস্ট, ২০২৩

একান্ত সাক্ষাৎকারে গণঅধিকারের রাশেদ / বিএনএমের পেছনে বিএনপির বাঘা বাঘা নেতা রয়েছেন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) পেছনে বিএনপির বাঘা বাঘা নেতা রয়েছেন বলে দাবি করেন গণঅধিকার পরিষদের (নুর) সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান। তিনি বলেছেন, বিএনএমের নেতারা তাদের নামও আমাদের বলেছেন। হয়তো বিএনপিও তাদের নাম জানে। শুধু এটুকু বলি, তাদের অনেককে বিএনপি এরই মধ্যে শোকজ করেছে। আমি মনে করি, বিএনপির আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত।  বিএনএমসহ দুটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ফলে নিবন্ধনের জন্য কমিশনের প্রাথমিক তালিকায় থাকা ১২টি দলের মধ্যে ১০টি দল বাদ পড়েছে। এর মধ্যে গণঅধিকার পরিষদও রয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কোনো আপত্তি থাকলে তা নিষ্পত্তি সাপেক্ষে আগামী ২৬ জুলাই দল দুটির নিবন্ধনের গেজেট প্রকাশ করা হবে। এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মোবাইল ফোনে কালবেলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন রাশেদ খান। এ সময় তিনি নিবন্ধন ইস্যুতে দলটির পরবর্তী করণীয়সহ নানা বিষয়ে কথা বলেন। গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় দাবি করা হয়েছে, নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া শর্ত তারা পূরণ করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলটি নিবন্ধন পায়নি। এ প্রসঙ্গে রাশেদ খান বলেন, নির্বাচন কমিশন বলেছে, রেজা কিবরিয়াকে অপসারণ করা হয়েছে। সেটা আসলে গঠনতন্ত্র  মেনেই করা হয়েছে। কাউন্সিলও গঠনতন্ত্র মেনেই হয়েছে। সেই তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের কাছে আছে, আমরা এরই মধ্যে সেটা প্রেস ব্রিফিং করে জানিয়েছিও। ইসি শুধু আমাদের একটি ভুল ধরেছে, সেটা হলো ১০০টি উপজেলা কার্যালয়ের মধ্যে নাকি ৩০টি কার্যালয় ওইভাবে পায়নি। এই একটি কারণে নাকি আমাদের নিবন্ধন দেয়নি। এ অভিযোগ সঠিক নয়। কারণ, আমাদের দুই শতাধিক উপজেলা কমিটি ও ১০০টির বেশি উপজেলা কার্যালয় রয়েছে। কিন্তু যাদের নিবন্ধন দিয়েছে, তাদের তো কার্যালয়ই নেই। আমরা মনে করি, নিবন্ধন না দেওয়ার পেছনে অন্য কারণ রয়েছে। গণঅধিকার পরিষদ যেহেতু রাজপথে সরকারবিরোধী আন্দোলন করছে, সেজন্য এজেন্সি এবং সরকারের নির্দেশনা ছিল—এই দলটিকে নিবন্ধন দেওয়া যাবে না। এ কারণে গণঅধিকার পরিষদকে নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া বিভিন্ন সময় আমাদের নানা মাধ্যমে প্রলোভন দেখানো হয় যে, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে নির্বাচনে গেলে তোমাদের নিবন্ধন দেওয়া হবে। কিন্তু আমরা বরাবরই বলেছি, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই নিবন্ধন পাইনি। নিবন্ধন না পাওয়ায় গণঅধিকার পরিষদের পরবর্তী করণীয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নিজে আমাদের হাইকোর্টে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাহলে আমরা নিবন্ধন পেয়ে যাব—এমন ইঙ্গিতও তিনি দিয়েছেন। সিইসি বলেছেন, বিভিন্ন কারণে অনেকের নমিনেশন বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু তারা হাইকোর্টে গিয়ে নমিনেশন ফিরে পেয়েছেন। এটা আমাদের কাছে হাস্যকর মনে হয়েছে। আমরা নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই বলেছে, আমরা যেন আইনি লড়াইয়ে যাই। এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনে থাকব। একদফা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা মনে করি, গণআন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন হবে, তারপর নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। নতুন সেই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আমরা নিবন্ধন পাব বলে আশা করি। এখন এ ইসির কাছ থেকে নিবন্ধন পাওয়ার কোনো আশা আমাদের নেই। তার পরও নিবন্ধন পেতে এখন রাজপথে আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি লড়াইও চালিয়ে যাব। নিবন্ধন পেতে যাওয়া বিএনএম ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, বিএনএম ও বিএসপি গোয়েন্দা সংস্থার তৈরি দল। গোয়েন্দা সংস্থা বিভিন্ন জায়গায় তাদের অফিসও নিয়ে দিয়েছে। এ তথ্য গণমাধ্যমেও এসেছে। এই দুটি দল গণমানুষের দল নয়। বিএনএমের নেতারা বিভিন্ন সময় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেছেন, তোমরা যদি নিবন্ধন চাও, আমাদের জানাও। আমরা গোয়েন্দা সংস্থাকে বলে দেব। তাদের বলেছি, আমরা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে রাজনীতি করব না। গণঅধিকার পরিষদ গণমানুষের দল, জনগণকে নিয়েই আমাদের রাজনীতি। এমনিতেই নির্বাচন কমিশন আমাদের নিবন্ধন দিতে বাধ্য। কারণ, আমরা ইসির শর্ত পূরণ করেছি। বিএনএমের নেতারা তখন বলেছেন, বিএনপিতে তো পরিবারতন্ত্র চলছে। তারেক রহমান দুর্নীতিবাজ, খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। দলটি ভ্যানিশ হয়ে যাবে। আমাদের (বিএনএম) পেছনে বিএনপির বাঘা বাঘা নেতা আছে। তোমরা (গণঅধিকার পরিষদ) যেহেতু কোটা আন্দোলন সফল করেছ, এখন গণঅধিকার পরিষদে আছ। তোমাদের একটা গ্রহণযোগ্যতা আছে। তোমরা যদি আমাদের সঙ্গে থাক, তাহলে তোমরা নিবন্ধনও পাবে আবার আগামীতে এমপি-মন্ত্রীও হতে পারবে। আমরা বলেছি, আপনাদের সঙ্গে কাজ করা সম্ভব হবে না। কারণ, আপনারা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে নিবন্ধন নিচ্ছেন। আমরা এভাবে নিবন্ধন নিতে চাই না। শুধু নিবন্ধনই আমাদের কাছে মুখ্য নয়, জনগণের কাছে দেওয়া কমিটমেন্টই মুখ্য। রাশেদ খান বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে আগামীতে অন্য দল নির্বাচনে না গেলেও যাতে বিএনএম যায়, সেজন্য দলটিকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য, বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও বিএনপি ভেঙে দলটির কিছু নেতা এবং বিভিন্ন দলের নেতাদের দিয়ে বিএনএমের ব্যানারে নির্বাচন করা। এভাবে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায় সরকার। এজন্য এ দলটি গঠন করা হয়েছে। নিবন্ধন না পাওয়া ১০টি দল একত্রিত হয়ে গত সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে। নিবন্ধনের দাবিতে এ জোট কি আগামীতেও রাজপথে সক্রিয় থাকবে—এমন প্রশ্নে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জুর উদ্যোগে নিবন্ধন না পাওয়া ১০টি দলকে একত্রিত করে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। সেখানে আমরা নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে দলগতভাবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সব বিষয়ে তারা যে একমত—এমন নয়। তাই এই ১০ দলীয় জোট আগামীতে সক্রিয় থাকবে কি থাকবে না, সেটা এখনই বলা যাবে না।
১৯ জুলাই, ২০২৩
X