লাখেরও বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক নেবে মালদ্বীপ, শর্ত পূরণ হলেই ভিসা
এবার বাংলাদেশের শ্রমবাজারের জন্য আরেক সম্ভাবনার দ্বার খুলছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এশিয়ার এই দেশটি বাংলাদেশ থেকে আবারও শ্রমিক নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায় কতদিন এই বাজার ধরে রাখতে পারবে বাংলাদেশ। এর আগেও বাংলাদেশি এজেন্সির নানা দুর্নীতির কারণে এই বাজার একাধিকবার হাতছাড়া হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে লাখের বেশি শ্রমিক নিতে চায় মালদ্বীপ কিন্তু তাতে কিছু শর্ত দিয়েছেও দীপ রাষ্ট্রটি। এই মুহূর্তে তীব্র শ্রমিক সংকট চলছে সেখানে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের সীমাবদ্ধতা তুলে দিতে চায় দেশটির সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইহুসান মত দিয়েছেন, এটি করা না হলে তারা শ্রমিকের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন না।  এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মালদ্বীপের সান পত্রিকা। তাতে বলা হয়, মঙ্গলবার মালদ্বীপ সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে একটি বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইহুসান বলেছেন, বর্তমান নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা লাখের ঘরে পৌঁছে যাবে। তিনি বলেন, ‘মালদ্বীপে বর্তমানে শ্রমিক সংকট আছে। তাই বাংলাদেশি শ্রমিকদের সর্বোচ্চ ১ লাখ কোটার সীমা বাদ দিতে হবে। তবে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে সীমাবদ্ধতা তুলে নেওয়ার আগে একটি সুরক্ষা নীতি বাস্তবায়নের কথাও বলেছেন তিনি। এ ক্ষেত্রে দেশটিতে অবস্থান করা সব প্রবাসীর একটি বায়োমেট্রিক ডেটা রেকর্ড তৈরি করার কথা বলেন তিনি।  মালদ্বীপে কাজের প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রবাসীদের অফিসিয়াল ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াও তাঁরা যে দ্বীপে কাজ করে সেখান থেকে একটি পৃথক পারমিট পেতে হবে। এমনটি করা হলে অবৈধ অভিবাসন রোধ করা যাবে। এর আগে বাংলাদেশ থেকে জাল নথি ব্যবহারের মাধ্যমে শ্রমিক নেওয়ার একাধিক ঘটনার পর গত এপ্রিলেই দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। তাই বাংলাদেশি শ্রমিকের সীমাবদ্ধতা হিতে বিপরীত হয় কি না তা নিয়েও সন্দেহ করেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে মালদ্বীপের আগের সরকার বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নেওয়ার ক্ষেত্রে সীমারেখা টেনে দিয়েছিল। তবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে এই সীমারেখা তুলে দেয়। কিন্তু বাংলাদেশি এজেন্সিগুলোর নানা দুর্নীতির কারণে গত এপ্রিলে আবারও বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগকে দেশটি কঠোর হয়ে যায়।  মালদ্বীপের আইন অনুযায়ী, কোনো দেশের সর্বোচ্চ এক লাখ শ্রমিক দেশটিতে কাজ করতে পারবে। কিন্তু বর্তমানে এক লাখ ২০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি মালদ্বীপে অবস্থান করছেন। এর মধ্যে অনেকেই আছেন অবৈধভাবে।
২৮ জুন, ২০২৪

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক শোষণের অভিযোগ জাতিসংঘের
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। তারা অভিবাসী শ্রমিকদের শোষণের হাত থেকে রক্ষা করতে মালয়েশিয়াকে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার জেনেভা থেকে এ নিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। বিবৃতিতে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কয়েক মাস ধরে মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী বাংলাদেশি শ্রমিকরা খুব খারাপ অবস্থায় আছেন। তারা বলেন, তাদের শোষণ, অবিচার ও অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে রক্ষা করার পদক্ষেপ নিতে হবে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ অভিবাসী মালয়েশিয়ায় পৌঁছে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ পান না। এ অবস্থায় ভিসা শেষ করতে বাধ্য হন তারা। ফলে গ্রেপ্তার, আটক, দুর্ব্যবহার ও নির্বাসনের ঝুঁকিতে পড়েন অভিবাসীরা। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের অপরাধ নেটওয়ার্কগুলোকে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। কারণ এ চক্রের বিরুদ্ধে অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতারণামূলক নিয়োগের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ উপার্জনের অভিযোগ রয়েছে। তারা আরও বলেছেন, এ চক্রের সঙ্গে দুই দেশের সরকারের কিছু উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা জড়িত আছেন। এটি ঠিক নয়। এটি বন্ধ হওয়া দরকার। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশকে এ পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, মালয়েশিয়াকে অবশ্যই পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে শ্রম অভিবাসনকে পরিচালনা করতে হবে। এ ছাড়া অভিবাসী কর্মীদের রক্ষায় জাতিসংঘের নির্দেশিকা নীতির অধীনে চলতে হবে। মালয়েশিয়াকে শোষণের শিকার ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ, সুরক্ষা এবং সহায়তা করতে হবে। ব্যক্তি পাচারের বিরুদ্ধে আইন কার্যকর এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতাকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা করতে হবে। এর আগেও মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এসব বিষয়ে আলোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০ এপ্রিল, ২০২৪

আরও বাংলাদেশি শ্রমিক নেবে ইতালি
বৈধ উপায়ে আরও বাংলাদেশি শ্রমিক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও এলেসান্দ্রো।  মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ আগ্রহের কথা জানান তিনি। এ সময় ইতালির রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রায় ২ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী  ইতালিতে রয়েছেন যারা দু'দেশের অর্থনীতিতেই ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছে। বৈধ উপায়ে আরও বাংলাদেশি সেখানে নেওয়ার বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী চামড়াজাত পণ্য, অটোমোবাইল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ইতালির সহযোগিতা কামনা করেন। মন্ত্রী এবং রাষ্ট্রদূত উভয়েই ইতালিতে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক সফর ও ২০২৩ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সম্মেলনের সাইডলাইনে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কথা স্মরণ করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রস্তাবে রাষ্ট্রদূত যৌথ চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্ব দেন। প্রসঙ্গত, ২০২৭ সালের মধ্যে ১০টি খাতে বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ কর্মী নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইতালি সরকার। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাইরের দেশ থেকে কর্মী নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে। দেশটির এমন উদ্যোগকে বাংলাদেশিদের জন্য বিশাল সুযোগ হিসেবে দেখছেন প্রবাসীরা। ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৪ লাখ ৫২ হাজার শ্রমিক নেবে ইতালি সরকার। ইউরোপিয়ান লেবার অথরিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতালিতে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে, নার্স, ডাক্তার, ফিজিওথেরাপিস্ট, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক পরিষেবাসহ বিভিন্ন খাতে। 
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

মালয়েশিয়ায় নির্মাণাধীন ভবন ধসে নিহত ৩ বাংলাদেশি শ্রমিক
মালয়েশিয়ার পেনাং প্রদেশে নির্মাণাধীন ভবন ধসে ৩ বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তারা হলেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার হরিপুর গ্রামের মোহাম্মদ মোকাদ্দেস আলী (৪৬), কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (২৯) এবং পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইপাই গ্রামের মো. আহাদ আলী (৪২)। গতকাল বুধবার কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর প্রথম প্রেস সচিব সুফি আব্দুল্লাহিল মারুফ পাসপোর্ট নম্বরসহ নিহত বাংলাদেশিদের পরিচয় নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, তিনজনের লাশ বর্তমানে পেনাং জেনারেল হাসপাতালে আছে। আরও দুই বাংলাদেশি শ্রমিককে ধ্বংসস্তূপ থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে, তারা ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। গত মঙ্গলবার রাতে মালয়েশিয়ার পেনাং রাজ্যে নির্মাণাধীন একটি ভবন ধসে পড়ে। সেখানে মোট ১৮ জন বাংলাদেশি কাজ করছিলেন। তাদের মধ্যে ৯ জন সেখানে আটকা পড়েন। পরে তিনজনের লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি দুজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। চারজন এখনো আটকা পড়ে আছেন, তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার পত্রিকাগুলো। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মোহাম্মাদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর হাইকমিশনের প্রথম শ্রম সচিব এ এস এম জাহিদুর রহমান এবং আইন সহকারী সুকুমারান সুবরামানিয়মকে ঘটনাস্থলে পাঠান। ওই দুই কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং তথ্য সংগ্রহ করেন। প্রেস সচিব সুফি মারুফ জানান, নিহত ৩ প্রবাসীর লাশ দ্রুত দেশে পাঠাতে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্যও কাজ করবে হাইকমিশন।
৩০ নভেম্বর, ২০২৩
X