সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আর্থিক সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্রের
জুন মাসের মৌসুমি বন্যা থেকে পুনরুদ্ধারে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলাকে সহায়তা করতে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি)-এর মাধ্যমে সাড়ে তিন লাখ ডলার মানবিক সহায়তা প্রদান করছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর মধ্যে বহুমুখী নগদ সহায়তা হিসাবে এই অর্থ বিতরণ করবে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। ইউএসএআইডি-এর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাথে অংশীদারত্ব এবং এই ট্র্যাজেডিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে খাদ্য ও পানি কেনা, জীবিকা নির্বাহ, আশ্রয়কেন্দ্র মেরামত এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা করতে পেরে গর্বিত। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারি বর্ষণের কারণে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২৫ লাখের বেশি মানুষ, বাস্তুচ্যুত হয়ে ৩০,০০০ জন আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে সিলেট ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে আরও একটি স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যেখানে জরুরি সহায়তার প্রয়োজন এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে ৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে। উন্নয়নখাতে ২০০ মিলিয়ন ডলার এবং মানবিক সহায়তায় আরও ১০০ মিলিয়ন ডলারের বার্ষিক বাজেটের মাধ্যমে ইউএসএআইডি বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুযোগ প্রসারিত, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়ন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও অনুশীলনের প্রচার, পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনে সহনশীলতা বৃদ্ধি করে।  
০৩ জুলাই, ২০২৪

সুনামগঞ্জে নদীর পানি কমলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
সুনামগঞ্জে নদীর পানি কমলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভোরে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩২ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ সেমি কমে বুধবার (৩ জুলাই) সকালে পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে ৬ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও জেলার খাসিয়ামারা, ছিলাই ও সোনালী ছেলা ও যাদুকাটা নদীর পানি কমেছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, বুধবার থেকে আবারও ভারি বর্ষণ হতে পারে। উজানে ভারতের মেঘালয়েও বৃষ্টি হবে। শনিবার (৬ জুলাই) সকাল থেকে বৃষ্টিপাত কমে আসবে।  এদিকে বন্যার পানি উঠায় তাহিরপুর উপজেলার ২১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪টি বিদ্যালয়ের মূল্যায়ন পরীক্ষা হচ্ছে না। শুধুমাত্র ট্যাকেরঘাট খনিজ প্রকল্প উচ্চ বিদ্যালয়, চানপুর উচ্চ বিদ্যালয়, লাউড়েরগড় আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, জয়নাল আবেদীন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আইডিয়াল ভিশন উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী ইউনূছ উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে।  উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, বন্যার কারণে ২১টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বন্যায় ছাতক-আন্ধারীগাঁও-সুনামগঞ্জ সড়কের আন্ধারীগাঁও এলাকায় ভাঙনে দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এতে ছাতক উপজেলার ছাতক সদর, দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া, মান্নারগাঁও এবং পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলী সাব্বির আহমেদ জানান, সড়কের ভাঙন এলাকা নিয়ে আমরা চিন্তিত। প্রাকৃতিক বৈরী পরিবেশও অনেকাংশে কাজের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে খুব কম সময়ের মধ্যে একটি কালভার্টে নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে এখানে। এসব বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।   অন্যদিকে জামালগঞ্জ উপজেলা সদরের ভীমখালি, সাচনাবাজার, ফেনারবাঁক, জামালগঞ্জ উত্তর এবং বেহেলী ইউনিয়নে পানি উঠে যাওয়ায় সব কয়েকটি রাস্তায় লোকজন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।  উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কামরুল ইসলাম জানান, উপজেলার প্রায় ৫৮০টি ছোট-বড় পুকুরে মাছ ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬১ লাখ টাকা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলাউদ্দিন জানান, ভারি বর্ষণে আউশ ধানের ২৫ হেক্টর জমি ক্ষতি হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন শাকসবজি ও তরমুজের প্রায় ১২ হেক্টর জমি নষ্ট হয়েছে। বৃষ্টি বাড়লে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান জানান, যাদুকাটায় পানি কমেছে। তবে এখনো জনবসতি, এমনকি উপজেলা পরিষদেও পানি রয়েছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টি হবে। এটি পাঁচ জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এ কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
০৩ জুলাই, ২০২৪

মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি, আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে ভিড়
টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। বুধবার (১৯ জুন) দুপুরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় তথ্য সূত্রে জানা গেছে, কুলাউড়ায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি ঘটেছে। জানা যায়, ঈদের দিন সোমবার (১৭ জুন) ভোররাত থেকে শুরু হওয়া ভারি বর্ষণ এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। পাহাড়ি ঢল ও তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার ১ পৌরসভাসহ ৬টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলা পরিষদ এলাকা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পৌর শহরের মাগুরা, সাদেকপুর, বিহালা, সোনাপুর, কাদিপুর ইউনিয়নের ছকাপন, মৈন্তাম, ভাগমতপুর, গুপ্তগ্রাম, তিলকপুর, ভূকশিমইল ইউনিয়নের সাদিপুর, কোরবানপুর, মুক্তাজিপুর, জাবদা, কালেশার, কাইরচক, চিলারকান্দি, কানেহাত, জয়চণ্ডী ইউনিয়নের ঘাগটিয়া, মিরবক্সপুর, কামারকান্দি, কুটাগাঁও, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের দেখিয়ারপুর, কুলাউড়া গ্রাম, বনগাঁও, গাজীপুর আংশিকসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও প্লাবিত হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত কুলাউড়ার ৬০টি গ্রাম ও এলাকা প্লাবিত। এসব গ্রাম ও এলাকার লক্ষাধিক মানুষ বন্যা আক্রান্ত। এ ছাড়া ২২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে ১৯৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ১৪টি মেডিকেল টিম গঠন করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এদিকে বুধবার দিনব্যাপী বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে খাবার বিতরণ করেন মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য, স্কোয়াড্রন লিডার (অব.) সাদরুল আহমেদ খান। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী  বলেন, বন্যার্ত পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতনের কর্তৃপক্ষের নিকট শুকনো খাবারের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। খাবার পাওয়া গেলে তা দুর্গত পরিবারগুলোর মাঝে বিতরণ করা হবে। এখন পর্যন্ত ২২টি আশ্রয়কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। এতে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ১৯৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে বলে তিনি জানান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঢলের পানিতে ৪৮০ হেক্টর আউশ ধান এবং ১৬৫ হেক্টর গ্রীস্মকালীন শাকসবজি নিমজ্জিত রয়েছে। পানি আরও বাড়লে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সুজিত কুমার চন্দ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। যে সকল পরিবার আশ্রয় নিয়েছে তাদের মাঝে খাবার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শুকনো খাবারও পাঠানো হচ্ছে। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল  বলেন, জেলার সবগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
২০ জুন, ২০২৪

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর জরুরি নির্দেশনা
ভারি বৃষ্টি এ উজানের ঢলে বন্যা দেখা দিয়েছে সিলেট বিভাগে। এমন পরিস্থিতিতে সিলেটের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় জরুরি নির্দেশনা দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। বুধবার (১৯ জুন) সচিবালয়ে ঈদপরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় ও বন্যাকবলিত এলাকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দেশের কয়েক জায়গায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় ডায়রিয়া এবং পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে পর্যাপ্ত স্যালাইন ও ওষুধ মুজত রাখতে হবে।   একই সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে, বন্যার সময় এবং বন্যা পরবর্তী রোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।  প্রসঙ্গত, ২০ দিনের মাথায় দ্বিতীয় দফা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে সিলেট। মহানগর ও জেলাজুড়ে প্রায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে মহানগরে ১৫টি এলাকার ১০ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত। বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি এলাকার বিদ্যুতের সাবস্টেশন। সুরমা নদী ছাপিয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এটি প্লাবিত হলে দক্ষিণ সুরমার প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়তে পারে। মঙ্গলবার (১৮ জুন) বিকেল থেকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষায় কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। তাদের সহায়তা করছে সিলেট সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগ। নদীর পাড়ে বালির বস্তা ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা করছেন তারা। গত ২৭ মে সিলেটে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে জেলার সব উপজেলার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হন। সেই বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগেই গত শনিবার ফের বন্যাকবলিত সিলেট।
১৯ জুন, ২০২৪

কক্সবাজারে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, দুর্ভোগে হাজারও পরিবার
কক্সবাজারে চকরিয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অপরিবর্তিত রয়েছে। টানা বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে নতুন করে আরও বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ১৮টি  ইউনিয়নের তিন লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান।  বুধবার (৯ জুলাই) সকালে এ কথা জানান তিনি। ইউএনও জেপি দেওয়ান বলেন, সরকারিভাবে জরুরি বরাদ্ধ এখনো পৌঁছায়নি। তবে তাদের নিয়মিত বরাদ্ধ চাল বিতরণ করা হচ্ছে।  এদিকে চকরিয়া পেকুয়ায় বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সংসদ সদস্য জাফর আলম, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা।  ক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, জেলায় সবেচেয়ে বেশি প্লাবিত এলাকা চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায়। দুই উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ২৫টি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। যেখানে তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বেসরকারি হিসেবে এর সংখ্যা আরও বেশি। কী পরিমাণ ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে এখনো জানা যায়নি।  তবে পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে বলে জানান চকরিয়া প্রকল্প কর্মকর্তারা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পাহাড়ি ঢলের প্রবেশমুখ সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন ও কাকারা ইউনিয়ন ৪ থেকে ৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে আছে। জিদ্দাবাজার-কাকারা-মানিকপুর সড়কের কয়েকটি অংশের ওপর দিয়ে মাতামুহুরী নদী থেকে উপচে আসা ঢলের পানি প্রবাহিত হওয়ায় বসতঘরগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। শুকনো খাবার ছাড়া রান্নার কোনো ব্যবস্থা নেই। কক্সবাজারের পানি বোর্ডের কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম ও মোহাম্মদ সালমান জানান, চকরিয়ার লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, হারবাং, সাহারবিল, চিরিঙ্গা, পূর্ব বড় ভেওলা, বিএমচর, পশ্চিম বড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, কোনাখালী, ফাঁসিয়াখালী, বদরখালী, ডুলাহাজারা, খুটাখালী বদরখালীসহ ও চকরিযা তিনটি বেড়িবাঁধটি ভেঙে উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানি লোকলয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এসব ইউনিয়নের নিচু গ্রামগুলোতেই পানি উঠেছে। চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে পৌরসভার অধিকাংশ ওয়ার্ড পানির নিচে তলিয়ে গেছে। স্ব-স্ব ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা পানি যাতে দ্রুত নিচের দিকে নেমে যায়, সেজন্য কাজ করছে। এ ছাড়াও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর বেড়িবাঁধটি রক্ষার জন্য বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে।  এদিকে চকোরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের বন্যার পানির আঘাতে ১০০ ফুটের মতো বাউন্ডারি দেওয়ালের পার্শ্ববর্তী স্থান হতে মাটি সরে যাওয়াতে দেয়াল ধসে পড়েছে বলে জানান সাফারি পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেছেন, বন্যাকবলিত প্রায় এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী প্রায় দুই লাখ লোক পানিবন্দি রয়েছে। সরকারি হিসাবে এর সংখ্যা আরও বেশি। এ ছাড়া বন্যাকবলিত মানুষদের নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। যেসব মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যারা ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চাচ্ছেন না সেসব পরিবারগুলোকে প্রাথমিকভাবে শুকনো খাবার দিতে সব চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চকরিয়ার বন্যার ব্যাপারে জেলা প্রশাসককে অবহিত করে ত্রাণ বরাদ্দ চেয়েছি। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, গত কয়েক দিন ধরে প্রবল বর্ষণে চকরিয়ায় পেকুয়া প্রতিটি উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছে। তারা বোট নিয়ে পানিবন্দি মানুষের ঘরে ঘরে যাচ্ছে এবং তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে।
০৯ আগস্ট, ২০২৩

বন্যা পরিস্থিতি সামলাতে দিল্লিতে নামল সেনা
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ডুবে আছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। অতিবৃষ্টির পর যমুনা নদীর পানি বেড়ে ঢুকে পড়ে শহরে। এরকম অবস্থায় রাজধানীর বেশিরভাগ জায়গা তলিয়ে আছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়ার পর রাজধানীতে নামানো হয়েছে সেনা সদস্যদের। এদিকে হিমাচল, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখন্ড ও হরিয়ানায়ও বন্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে। বন্যায় ভারতে এ পর্যন্ত প্রায় ১৪৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। খবর এনডিটিভির। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় খাবার পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন দিল্লির অধিবাসীরা। ওয়াজ, রাবাদ, চন্দ্রওয়াল এবং ওখলায় পানি শোধনাগার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সে কারণে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। এ ছাড়া বন্যায় বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে প্রায় সম্পূর্ণ উত্তর ভারত। বন্যায় উত্তর-পশ্চিম ভারতে ১৪৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে হিমাচলেই মারা গেছে ৯১ জন।  
১৫ জুলাই, ২০২৩
X