রাসেল ভাইপারের ফাঁসি দিল গ্রামবাসী
ঘাঁস কাটতে গিয়ে প্রায় ৪ ফুট উচ্চতার এক রাসেল ভাইপার সাপকে আধামারা করে এক কৃষক। পরে স্থানীয় লোকজন সাপটির গলায় প্লাস্টিকের দড়ি পেঁচিয়ে গাছে ঝুলিয়ে ফাঁসি দিয়ে মেরে ফেলে। এরপর সাপটির পেটে বাচ্চা আছে কি না?  তা দেখতে সাপটির পেট ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলে এক পল্লী চিকিৎসক। অতঃপর সাপটিকে পুড়িয়ে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ১০ টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর বটতলা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।  এসময় কেউ কেউ আবার এ দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছাড়লে বিষয়টি ভাইরাল হয়। তবে বিষয়টি অমানবিক ও আইনবিরোধী বলে দাবি করছেন প্রশাসনের কর্মকর্তা ও পরিবেশবিদরা। আর গ্রাসবাসী বলছেন, সাপটি ভয়ংকর ও বিষধর হওয়ায় লোকজনের মাঝে পরিচিত করতে এবং সচেতন করতে গাছে ঝুলিয়ে মারা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা বনবিভাগের কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, এভাবে একটি জীবকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করে পেট কেটে ফেলার ঘটনা আইনবিরোধী ও নেক্কারজনক। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন তিনি। বিকেলে সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, সকাল ১০ টার দিকে কল্যাণপুর এলাকার মোক্তার হোসেনের ছেলে জিয়াউর রহমান নিজ জমিতে ঘাঁস কাটতে গিয়েছিলেন। সেসময় তিনি ঘাঁসের জমিতে একটি রাসেল ভাইপার সাপ দেখতে পান। এরপর সাপটি হাসুয়া দিয়ে আঘাত করে আধামরা করেন এবং তার ভাই নাসির উদ্দিনকে ফোন দেন। পরে স্থানীয়রা সাপটিকে বটতলা নামক স্থানে নিয়ে এসে একটি গাছে দুপুর ২ টা পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখে।  এরপর সাপটির পেটে বাচ্চা আছে কি না? তা দেখতে পেট কাটেন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাক। তারপর সাপটিকে পুড়িয়ে মাটা চাপা দেন স্থানীয়রা। এ বিষয়ে কৃষক জিয়াউর রহমান জানান, নিজ জমিতে ঘাঁস কাটার সময় সাপটি তার দিকে তেড়ে আসছিলো। সে সময় তিনি সাহস করে হাসুয়া দিয়ে আঘাত করে আধামরা করেন সাপটিকে। এরপর ফোনে স্থানীয়দের ডাকেন। পরে স্থানীয়রা সাপটিকে গাছে ঝুলিয়ে রেখে মেরেছে। বটতলা এলাকার মুদি দোকানি মো. বকুল হোসেন জানান, সাপটি বিষধর ও ভয়ংকর। সেজন্য জনগণকে সচেতন করতে এবং পরিচিতি বাড়াতে সাপটিকে সবাই মিলে অনেকক্ষণ গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। পরে এক ডাক্তার সাপটির পেট কাটেন। অতপর পুড়িয়ে মাটি চাপা দেওয়া হয়। অনেকে আবার ভিডিও করে ফেসবুকে দিয়েছেন। পল্লী চিকিৎসক মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, সাপটির পেট মোটা ছিল। পেটে বাচ্চা আছে কি না? তা দেখার জন্য সবাই তাকে পেট কাটার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তবে পেট কাটাটা তার ভুল হয়েছে। কৃষক রবিউল ইসলাম ও গৃহিণী সেবা রাণী বিশ্বাস জানান, রাসেল ভাইপার সাপের খবরে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত। সবাই ঘরে থাকতে এবং মাঠে যেতে ভয় পাচ্ছেন। ঘটনাটি বন ও প্রাণি সংরক্ষণ আইন বিরোধী বলে জানান বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের সহসভাপ‌তি সাহ‌াবউদ্দিন। তিনি জানান, বড় কোনো জনসচেনতা নেই। এভাবে আমরা প্রকৃতিকে ধ্বংস করছি। এর ক্ষতিপূরণ কোনোদিন শোধ হবে না। এমন ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি জানান, মানুষ আতঙ্কে অনেক কিছু করে ফেলেন। সকলকে আরো সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
০৩ জুলাই, ২০২৪

ছেলের খুনিদের ফাঁসি চান মা
মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ছেলে হত্যার খুনিদের ফাঁসি চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক অসহায় মা।  রোববার (৩০ জুন) উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের গরেরগাঁও গ্রামের নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হত্যা মামলার আসামিদের ফাঁসির দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন নিহত আরমানের মা রহিমা আক্তার । সংবাদ সম্মেলনে রহিমা আক্তার ছেলে হত্যার ফাঁসির বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ সময় তিনি বলেন, আমার ছেলেকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। খুনিদের ফাঁসি চাই। আসামিদের ফাঁসি কার্যকর হলে আরমানের আত্মা শান্তি পাবে।  এ সময় তিনি তাৎক্ষণিক খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানান। এর আগে, পূর্ব বিরোধের জেরে গত শনিবার (২২ জুন) গভীর রাতে গরেরগাঁও গ্রামের রফিক মিয়ার ওপর হামলা করে তানভীর নামে এক যুবক। এ সময় সে আরমানকে ঘর থেকে ডেকে এনে বুকে বেশ কয়েকবার ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরমানকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত রফিক মিয়াকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে।
০১ জুলাই, ২০২৪

হবিগঞ্জে মাকে হত্যায় ছেলের ফাঁসি
হবিগঞ্জে মাকে হত্যার দায়ে ছেলের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত ফজলু মিয়া (৪৭) নবীগঞ্জ উপজেলার আদিত্যপুর গ্রামের বাসিন্দা। রায়ে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার বিকেলে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইয়াছির আরাফাত এ রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাবিবুর রহমান খান জানান, ২০০৫ সালে আদিত্যপুর গ্রামের বাসিন্দা ফজলু মিয়া তার মা আঙ্গুরা বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক উল্লিখিত রায় দেন। ওই রায়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
২৭ জুন, ২০২৪

কত জনকে ফাঁসি দিয়েছিলেন জল্লাদ শাহজাহান
না ফেরার দেশে চলে গেলেন আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া। ৭৩ বছরের জীবনে শাহজাহানের ৩২ বছরই কেটেছে কারাগারের চার দেয়ালে। ২০২৩ সালের ১৮ জুন কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও মুক্ত আকাশের নিচে তার স্থায়িত্ব ১ বছরের বেশি নয়। এই এক বছরে অনেক চড়াই উৎরাই পার হতে হয়েছে জল্লাদ শাহজাহানকে। অত:পর অনন্তলোকের পথে পাড়ি জমালেন তিনি।  সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। রোববার রাতে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে হাসপাতালে আনা হয় বলে জানা গেছে হাসপাতাল সুত্রে।  শাহজাহান ভূঁইয়ার জন্ম নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। সে সময় হত্যা ও অস্ত্র মামলায় তার ৪২ বছরের সাজা হয় তার। ফাঁসি কার্যকর ও অন্যান্য কারণে তার সাজার মেয়াদ কমিয়ে ৩২ বছর করা হয়।  কারাগারের নথি অনুসায়ী, ১৯৯২ সালের ৮ নভেম্বর ডাকাতির জন্য ১২ বছর এবং ১৯৯৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর অপর একটি মামলায় ডাকাতি ও হত্যার জন্য ৩০ বছরের কারাদণ্ড হয় শাহজাহানের।  আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া কারাজীবনে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামি ও যুদ্ধাপরাধীসহ ২৬ জনকে ফাঁসি দিয়েছেন বলে রেকর্ড রয়েছে জেলের নথিতে। যদিও শাহজাহানের দাবি, তিনি আরও বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন।  কারা সূত্রে জানা যায়, জল্লাদ শাহজাহান নরসিংদী জেলার পলাশ থানার ইছাখালী গ্রামের মৃত হাছেন আলীর ছেলে। মুক্তির আগ পর্যন্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান জল্লাদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কারাগারে তার কয়েদি নম্বর ছিল ২৫৮৯। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ছয় আসামি লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মেজর বজলুল হুদা, লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ, লে. কর্নেল এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ ও ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদের ফাঁসি দেন জল্লাদ শাহজাহান। এছাড়া চারজন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসিও দিয়েছেন জল্লাদ শাহজাহান। মানবতা বিরোধী অপরাধী আবদুল কাদের মোল্লা, সালাউদ্দিন কাদের ওরফে সাকা চৌধুরী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ এবং মীর কাসেম আলীর ফাঁসি দেন তিনি। এ ছাড়া ১৯৯৩ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবী কন্যা শারমীন রীমা হত্যা মামলার আসামি মুনির, ১৯৯৭ সালে বহুল আলোচিত ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসান, ২০০৪ সালে এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাই এবং আতাউর রহমান সানিকেও ফাঁসি দিয়েছেন জল্লাদ শাহজাহান। ৩২ বছর কারাগারে থাকাকালীন তার পরিবারের কেউ তার খোজ নেইনি সেই আপেক্ষ থেকে মুক্তির পর পরিবারের কাউকে খোঁজার চেষ্টা না করে কেরানীগঞ্জে একাকী জীবন বেঁছে নিয়েছিলেন আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান।  
২৪ জুন, ২০২৪

অপহরণ করে হত্যা, তিনজনের ফাঁসি
নড়াইলে ইজিবাইক কেনার প্রলোভনে পলাশ মোল্যাকে অপহরণ ও হত্যার দায়ে ৩ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার (১২ জুন) দুপুরে নড়াইলের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ও জেলা দায়রা জজ আলমাচ হোসেন মৃধা এই আদেশ দেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- লোহাগড়া উপজেলার মাকড়াইল গ্রামের মৃত আবুল খায়ের মোল্যার ছেলে আনারুল মোল্যা, মরিচপাশা গ্রামের মৃত মোক্তার সর্দারের ছেলে জিনারুল ইসলাম ওরফে তারা মিয়া এবং আড়পাড়া গ্রামের আকুব্বার শিকদারের ছেলে মো. নাজমুল শিকদার।  এরমধ্যে রায় ঘোষণার সময় জিনারুল ইসলাম ওরফে তারা মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামি আনারুল মোল্যা ও নাজমুল সিকদার পলাতক রয়েছে। মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৩ জুন সকালে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মাকড়াইল গ্রামের আব্দুস সালাম মোল্যার ছেলে পলাশ মোল্যা (২৫) কে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় পার্শ্ববর্তী গ্রামের আনারুল মোল্যা, জিনারুল ইসলাম এবং মো. নাজমুল শিকদার। তারা ৪০ হাজার টাকায় ইজিবাইক কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পলাশ মোল্যাকে অপহরণ করে। পুলিশ ২০১৮ সালে ২৬ জুন মাগুরা জেলার সদর থানার ধানখোলা গ্রামের জাহাঙ্গীর এর পাটক্ষেত থেকে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করে। ৮ জুলাই পলাশ মোল্যার পরিবার বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়ে এবং ছবি দেখে তার লাশ শনাক্ত করে।  এ ঘটনায় পলাশের ভাই আহাদ আলী বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় প্রথমে হারানোর জিডি এবং পরে অপহরণ করে হত্যা মামলা দায়ের করে।  মামলার স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এই রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জিনারুল ইসলাম ওরফে তারা মিয়া উপস্থিত ছিলেন। অপর দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি আনারুল মোল্যা ও নাজমুল সিকদার ইতোপূর্বে জামিনে থেকে পলাতক রয়েছে। নড়াইলের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. ইমদাদুল ইসলাম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উচ্চ আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার পরবর্তী আদালতের রায় কার্যকর হবে।
১২ জুন, ২০২৪

ভাবিকে হত্যায় দেবরের ফাঁসি
বরিশালে ভাবিকে হত্যার দায়ে দেবরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৯ মে) বরিশালের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক টিএম মুসা রায় দেন। দণ্ডিত আলম শরীফ বরিশাল সদর উপজেলার উত্তর কড়াপুর এলাকার বাসিন্দা লতিফ শরীফের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার বরাতে বেঞ্চ সহকারী মো. সবুজ জানান, দণ্ডিত আসামির ভাই সৌদি প্রবাসী হালিম শরীফের স্ত্রী বিলকিস বেগম। স্বামী সৌদি আরবে থাকায় দেবর আলম প্রায়ই তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। কিন্তু এতে সে রাজি হয়নি। বিলকিস ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর নগরীর কাশিপুর চহুতপুর শেরেবাংলা সড়কের নির্মাণাধীন শরীফ ম্যানশনে যায়। এ সময় সেখানে আলমসহ অজ্ঞাত কয়েকজন আসে। এ সময় আলম তার ভাবিকে পুনরায় কুপ্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় প্রথমে বিলকিসকে মারধর করে। পরে ধারালো চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। গুরুতর জখম বিলকিসকে প্রথমে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৪ সালের ২৮ জানুয়ারি মারা যায় বিলকিস। এ ঘটনায় বিলকিসের বাবা মফিজউদ্দিন হাওলাদার বাদী হয়ে আলমসহ অজ্ঞাত ৩-৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার এসআই সুলতান আহমেদ ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর শুধু আলম শরীফকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। বিচারক ১৪ জনের সাক্ষ্য নিয়ে রায় দিয়েছেন। রায়ে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ৭ কার্যদিবসের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চাদালতে আপিল করতে হবে।
১০ মে, ২০২৪

ভ্যানচালক হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসি
জয়পুরহাটের কালাইয়ে ভ্যানচালক আবু ছালাম হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৭ মে) জয়পুরহাট অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। মৃতদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন কালাই উপজেলার আওড়া গ্রামের হারুন অর রশিদ, মোস্তাক হোসেন এবং হাফিজার রহমান। আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন হারুন অর রশিদ। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন বিচারক। ভ্যানচালক আবু ছালাম সদর উপজেলার দুর্গাদহ গ্রামের বাসিন্দা। দুর্গাদহ বাজার থেকে আবু ছালামের ভ্যান ভাড়া করে আসামিরা কালাইয়ের আওড়া গ্রামে আসে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত তিন আসামির মৃত্যদণ্ড দিয়েছেন। রায় শুনে আসামি হাফিজার রহমান জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। আসামি হারুন অর রশিদ পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ১৩ জানুয়ারি কালাই পৌরসভার আওড়া মহল্লার কবরে অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কালাই থানা পুলিশের তৎকালীন ওসি মির্জা শাহজাহান বাদী হয়ে মামলা করেন। কালাই থানার এসআই আব্দুস ছাত্তার মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে হারুন অর রশিদকে গ্রেপ্তার করে। হারুন ও তার দুই সহযোগী ভ্যানচালক আবু ছালামকে হত্যা করে ভ্যানটি বিক্রি করে দেয় বলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুস ছাত্তার মামলা তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ৯ জুলাই ৩ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার বিচারে সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালতের বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।
০৭ মে, ২০২৪

শিবির ক্যাডার জামাই কাশেম, বাইট্টা ইউসুফের ফাঁসি
চট্টগ্রামের আলোচিত ঘটনা অধ্যক্ষ গোপালকৃষ্ণ মুহুরী খুন। দুর্ধর্ষ ক্যাডার গিট্টু নাছিরের সঙ্গী হয়ে এই খুনে অংশ নেন আরেক শিবির ক্যাডার ছোট সাইফুল। পরে সেই গিট্টু নাছিরের হাতেই ভাইবোনসহ খুন হন সাইফুল। বাঁচতে পারেননি গিট্টু নাছিরও। এবার সাইফুলসহ ৩ খুনে ফাঁসিতে ঝুলতে হবে শিবিরের দুই ক্যাডারকে। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. কামাল হোসেন শিকদার দুজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেন আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এমএ ফয়েজ। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন আবুল কাশেম ওরফে জামাই কাশেম ও ইউসুফ ওরফে বাইট্যা ইউসুফ। ৭০ বছর বয়সী দুজনের বাড়ি নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার বালুচরা এলাকায়। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু ঈসা বলেন, আসামিদের দণ্ডবিধির ৩০২/১১৪/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড এবং প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ২০০৪ সালে ৩৬ শতক জমিকে কেন্দ্র করে একসঙ্গে সাইফুল ও তার ভাইবোনসহ তিনজনকে হত্যা করেন গিট্টু নাছির। এক বছর পর র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন সেই গিট্টু। হত্যার ২০ বছর পরে রায় দিলেন আদালত। অনুসন্ধানে ও সূত্রে জানা যায়, মূলত নগরের বায়েজিদ এলাকার গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে ছোট সাইফুল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল গিট্টু নাসিরের। পরে গিট্টুর গুলিতেই নিহত হন ভাইবোনসহ ছোট সাইফুল। আদালত সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ থানার দক্ষিণ পাহাড়তলী মৌজার ৩৬ শতক সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে আবুল কাশেম ওরফে জামাই কাশেম এবং ইউসুফ ওরফে বাইট্টা ইউসুফের সঙ্গে সাইফুল ইসলাম এবং তার ভাইবোনদের বিরোধ চলে আসছিল। ২০০৪ সালের ২৯ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাইফুলের বাড়িতে দেয়াল টপকিয়ে ঢুকে পড়েন শিবিরের তৎকালীন দুর্ধর্ষ ক্যাডার গিট্টু নাছির, ফয়েজ মুন্না, আজরাইল দেলোয়ার, আবুল কাশেম এবং বাইট্টা ইউসুফ। তাদের গুলিতে নির্মমভাবে খুন হন সাইফুল আলম, বড় ভাই মো. আলমগীর ও বোন মনোয়ারা বেগম। এ ঘটনায় সাইফুলের স্ত্রী আয়েশা আক্তার শিল্পী বায়েজিদ বোস্তামী থানায় ইউসুফ, কাশেম, গিট্টু নাছির ও ফয়েজ মুন্নাকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এজাহারে আজরাইল দেলোয়ারের নাম ছিল না। গিট্টু নাছিরকে ক্রসফায়ার: ২০০৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি এজাহারভুক্ত চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার তৎকালীন ওসি আমিনুল ইসলাম। এর মধ্যে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন আসামি গিট্টু নাছির ও ফয়েজ মুন্না। ২০০৭ সালের ১৬ জানুয়ারি তৎকালীন চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি বিচার নিষ্পত্তির জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠালে আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নেন আদালত। ২০১৭ সালের ৫ জুলাই গিট্টু নাছির ও ফয়েজ মুন্নাকে মামলা থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হয় এবং ইউসুফ ও কাশেমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। জানা যায়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে আসামি কাশেম নিজেকে জালালাবাদ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয় দিয়ে মামলাটি রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহারে ২০১০ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। এতে সুপারিশ করেন মরহুম আওয়ামী লীগের নেতা ইনামুল হক দানু। ওই বছর রাষ্ট্রপক্ষের কাছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মামলা বাতিল করতে বলা হয়। ২০১৩ সালে মামলা বাতিলে আদালতে দরখাস্ত দেওয়া হয়। এদিকে রায়ের পর ইউসুফের ছেলে মো. পারভেজ বলেন, আমার বাবা নির্দোষ।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

৮ বছরের মধ্যে ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ ফাঁসি দিল ইরান
ইরানে গত বছর বিভিন্ন অপরাধের দায়ে কমপক্ষে ৮৩৪ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এই সংখ্যা গত আট বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং দুই দশকের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ইরানি মানবাধিকার সংগঠনের প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা। মঙ্গলবার ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এবং প্যারিসভিত্তিক টুগেদার অ্যাগেইনস্ট দ্য ডেথ পেনাল্টি (ইসিপিএম)। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরিমাণ ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় ফাঁসি দেওয়ার সংখ্যা এত বেড়েছে। ২০২২ সালের বিক্ষোভ চলাকালীন নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ৯ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। অবশ্য গত বছর অন্যান্য অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হারও বেড়েছে। ২০২৩ সালের মোট মৃত্যুদণ্ডের অর্ধেক মাদকসংক্রান্ত মামলায় দেওয়া হয়েছে। ওই বছর ইরানে ৪৭১ জনকে এই ধরনের অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ইরান হিউম্যান রাইটসের পরিচালক মাহমুদ আমিরি মোগাদ্দাম মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এ সংখ্যাকে ‘বিস্ময়কর’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সমাজে ভয় জিইয়ে রেখেই ক্ষমতায় থাকতে পারবে বর্তমান সরকার। আর এ ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড হলো সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।’
০৫ মার্চ, ২০২৪

ইউনাইটেড হাসপাতাল বন্ধ ও জড়িতদের ফাঁসি চাই
রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুল এলাকার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত চিকিৎসকদের ফাঁসি ও হাসপাতাল বন্ধ চান বলে জানিয়েছেন শিশুটির বাবা শামীম আহমেদ। গত রোববার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। শামীম আহমেদ বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা করায় আমাকে হত্যার ভয় দেখানো হচ্ছে। এ ঘটনায় আমি শাহবাগ থানায় জিডি করেছি। জড়িতদের কাউকে ধরা যাচ্ছে না। অথচ রামপুরার জে এস হাসপাতালে যে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটল, সঙ্গে সঙ্গে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা মামলা করলেও কোনো অগ্রিগতি নেই। ফলে আমরা ডিবির শরণাপন্ন হলাম। ডিবি থেকে বলা হয়েছে তারা অভিযোগ আমলে নেবে। আয়ানের বাবার আবেদন ও খতনা করাতে দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয়ে গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ বলেছেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে মামলা হয়েছে। ডিবি পুলিশ ছায়া তদন্ত করছে। যারা এ ঘটনায় জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আয়ানের বাবাকে হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, আয়ানের বাবা ডিবিতে মামলা তদন্তের আবেদন করলে আমরা তদন্ত করব। আসলে অনেক প্রতিষ্ঠান বড়। তিনি সাধারণ মানুষ, বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লড়াই করে পারবেন না। আমরা তার পাশে আছি। হাসপাতালটির অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার অনুমোদন ছিল না। এতে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনার দায় তারা এড়াতে পারে না।
২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X