ঈদযাত্রায় ১৩ দিনে সড়কে ২৩০ প্রাণহানি
এবারের ঈদুল আজহায় ১৩ দিনে সারা দেশে ২৩৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩০ জনের প্রাণ গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০১ জন। গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। গত ১১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত সংঘটিত দুর্ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন করেছে বিআরটিএ। ঈদ-পূর্ববর্তী ১১ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত ছয় দিনে সারা দেশে ১১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০৯ জন নিহত এবং ১২৩ জন আহত হয়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ১৯টি দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত ও ২১ জন আহত হন। আর ঈদ-পরবর্তী ১৮ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত সাত দিনে সারা দেশে ১২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২৩ জন নিহত ও ১৭৪ জন আহত হয়েছেন। নূর মোহাম্মদ মজুমদার জানান, ঈদযাত্রা কেন্দ্র করে ১৩ থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত বিআরটিএর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটসহ ৬৪টি জেলার জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে সারা দেশে ৩ হাজার ৭৩৯টি মামলায় ৮৫ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং ৫৭টি গাড়ি ডাম্পিং স্টেশনে পাঠানো হয়। ব্যাটারিচালিত রিকশা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মানবিক বিবেচনায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর সুযোগ করে দিয়েছেন। তবে আগে যেমন প্রধান সড়কে রিকশা চলত না, এখনো তেমন চলবে না।
২৬ জুন, ২০২৪

মে মাসে ১৭৬ বাইক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ১৭৫
সারা দেশে গত মে মাসে ৫০৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১০ জন নিহত এবং ৯২১ জন আহত হয়েছে। রেলপথে ৩৭টি দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ৫টি দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত এবং ৫২ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৫৫০টি দুর্ঘটনায় ৫৫০ জন নিহত এবং ৯৩২ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে ১৭৬টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৫ জন নিহত এবং ১৯০ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ, নিহতের ৩৪ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং আহতের ২০ দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতিটি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত একজনের। আর গড়ে দিনে সড়কে প্রাণ ঝড়েছে ১৭ জনের। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি প্রকাশিত মাসিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
১৩ জুন, ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোয় প্রাণহানি বেড়ে ২৩
যুক্তরাষ্ট্রের সাত অঙ্গরাজ্যে টর্নেডো, বজ্রপাতসহ ঝড়বৃষ্টিতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ২৩-এ দাঁড়িয়েছে। সাত অঙ্গরাজ্যের প্রায় তিন লাখ বাসিন্দা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন। আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতেও বজ্রঝড়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনকি বন্যাও হতে পারে। খবর বিবিসির গত রোববার ঝড়কে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের ২০টি অঙ্গরাজ্যে ৬৬০টির বেশি ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। টর্নেডো ও প্রচণ্ড গতির বাতাসে বিভিন্ন ভবনের অংশবিশেষ ভেঙে পড়েছে, কিছু গাড়ি উল্টে গেছে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আরকানসাসে ৮ জন, টেক্সাসে ৭ জন, ওকলাহোমায় দুজন ও কেন্টাকিতে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, সোমবার সকালে আলাবামা অঙ্গরাজ্যে ঘরের ওপর গাছ পড়ে ৭৯ বছর বয়সী এক নারী মারা গেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এরই মধ্যে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছেন। কেন্দ্রীয়ভাবে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ঝড়কে কেন্দ্র করে কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বাশের অঙ্গরাজ্যটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। কলোরাডোতে বজ্রপাতে এক খামারির মৃত্যু হয়েছে। তার ৩৪টি গরুও মারা গেছে। টেক্সাসে ঘূর্ণিঝড়ে যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে, তারা সবাই কুক কাউন্টির ভ্যালি ভিউর বাসিন্দা। এর মধ্যে দুই ও পাঁচ বছর বয়সী দুটি শিশুও আছে। মঙ্গলবার সকালে নিউইয়র্ক, পেনসিলভানিয়া, নিউজার্সি, মেরিল্যান্ডসহ পূর্ব উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ভারি বৃষ্টি হয়।
২৯ মে, ২০২৪

বেপরোয়া বাস খাদে পড়ে ৫ জনের প্রাণহানি
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিলাসবহুল যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে সুপার ভাইজারসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বাসটির আরও ১৫ যাত্রী। গতকাল শুক্রবার সকাল ৭টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাতিসা ইউনিয়নের বসন্তপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন মিয়াবাজার হাইওয়ে থানার ইনচার্জ এস এম লোকমান হোসাইন। আহত যাত্রীরা জানিয়েছেন, বাসটি বেপরোয়া গতিতে চলায় তারা চিৎকার-চেঁচামেচি করলেও আমলে নেননি চালক। চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রিলাক্স পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি (যশোর ব-১১-০২৫১) যাত্রা করে। গতকাল সকাল ৭টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বসন্তপুর এলাকায় পুরোনো সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি খাদে পড়ে যায়। ডাবল-ডেকার বাসটির ভেতরে আটকে পড়েন সব যাত্রী। ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। নিহতরা হলেন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মতিউর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন (৩০), চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বাহারছড়া গ্রামের নুরুল আবছারের ছেলে নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী বদরুল হাসান রিয়াদ (২৫), নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার সাহাপুর গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে নাসির উদ্দিন পলাশ (৩৬), বাসের সুপারভাইজার ময়মনসিংহের চণ্ডীমুণ্ডা গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে মাসুদ (২২) ও হেলপার লক্ষ্মীপুর জেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে আবু তাহের খোকন (৪৮)। এ ছাড়া দুর্ঘটনায় আহতদের কয়েকজন হলেন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মতিউর রহমানের ছেলে ফিরোজ (৪২), একই এলাকার আলী আহমেদের ছেলে মোক্তার আহম্মেদ (৩৮), ফজলুর রহমান (৪২), আরাফাত হোসেন (৩৪), মো. সিয়াম (৩২), মো. সোহাগ (২৮), কামরুন নাহার (২৬), স্বপন শিকদার (২৫), রফিকুল ইসলাম (৩০) ও মনির হোসেন (৩০)। তাদের চারজনকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নিহত মোহাম্মদ হোসেনের বড় ভাই আহত ফিরোজ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ছোট ভাই আকাশের মালয়েশিয়ার ফ্লাইট ছিল। তাই নিয়ে আমরা দুই ভাই ও নিকটাত্মীয় মুক্তার আহমেদ ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাই। ছোট ভাইকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিয়ে সায়েদাবাদ থেকে বাড়ির উদ্দেশে বাসে করে রওনা দিই। পথে দুর্ঘটনায় ভাই মোহাম্মদ হোসেন মারা যান। ফিরোজ হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তার ভাই পেশায় একজন নির্মাণ ঠিকাদার। আদরের ছোট ভাইকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে পারলেও বড় ভাইয়ের লাশ নিয়ে বাড়ি যেতে হচ্ছে। নিহত নাছির উদ্দিন পলাশের ভগ্নিপতি আফতাব উদ্দিন তুহিন বলেন, নাসির উদ্দিন পাইপ ফিলটারের কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি বাসে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন। হাইওয়ে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি, নাছির উদ্দিন চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। আহত বাসযাত্রী ঢাকার নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র রাঙামাটির আরজ হোসেন সুমন বলেন, রাত সাড়ে ১২টায় বাসটি ছাড়ার কথা থাকলেও ২৮ জন যাত্রী নিয়ে রাত ২টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করে। ফজরের নামাজের আগে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকায় একটি হোটেলে যাত্রাবিরতি করে বাসটি। যাত্রাবিরতির আগে গাড়িটির গতি বেপরোয়া থাকায় যাত্রীরা চিৎকার শুরু করেন। যাত্রাবিরতি শেষে গাড়িটি আবারো বেপরোয়া গতিতে চলছিল। যাত্রীদের চিৎকার-চেঁচামেচিতে চালক বাসটির গতি কমাননি। চৌদ্দগ্রামের বসন্তপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় বাসের বেশিরভাগ যাত্রী ঘুমে ছিলেন। বেপরোয়া গতির কারণেই বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা যাত্রী চট্টগ্রামের হাটহাজারীর নাবিল হোসেন বলেন, গাড়ির গ্লাস ভেঙে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সঙ্গে আটকে পড়াদের বের হতে সহায়তা করি। আহতদের কয়েকজনকে টেনে বের করি। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রবিউল হাসান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ১০ জনকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চারজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সাব-ইনচার্জ বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ এবং স্থানীয় জনগণের সহায়তায় বাসের ভেতর থেকে নিহত পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।’ মিয়াবাজার হাইওয়ে থানার ওসি এস এম লোকমান হোসাইন বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর থেকে বাসের চালক পলাতক। দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও নিহতদের লাশ উদ্ধার শেষে থানায় আনা হয়েছে।’
১৮ মে, ২০২৪

বজ্রপাতে ৩ জনের প্রাণহানি আজও হতে পারে ঝড়-বৃষ্টি
দেশজুড়ে বৃষ্টির সঙ্গে বয়ে গেছে কালবৈশাখী ঝড়। গতকাল রোববার বজ্রপাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজও সারা দেশে বজ্রপাত, কালবৈশাখী ও বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। ঝড় ও বজ্রপাতের কারণে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে বৃষ্টি বেশ উপকারী হয়েছে ফসলের জন্য। আবহাওয়া ঠান্ডা হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে মানুষ। কয়েক দিনে প্রায় বৃষ্টিতে সেই রুক্ষতা দূর হয়েছে, প্রকৃতি সবুজ-শ্যামল হয়ে উঠেছে। গাছে গাছে সবুজ পাতার সমারোহ দেখা গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগগুলোর কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগগুলোর দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ সময় সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দিন এবং রাতের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এ সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে আবহাওয়া অফিস জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। গতকাল চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এদিন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বোচ্চ ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, বগুড়া, নীলফামারী, চাঁদপুর, নোয়াখালী, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, বরিশাল, পটুয়াখালী ও ভোলায় বৃষ্টি হয়েছে। আওহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বজ্র-ঝড়ের তীব্রতা কমে গেলেই তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এ তাপপ্রবাহ মৃদু তাপপ্রবাহই হবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হতে পারে ৩৭ ডিগ্রি পর্যন্ত। বজ্রপাতে ৩ জনের প্রাণহানি: ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার মোলানীপাড়া গ্রামে সবজিক্ষেতে কাজের সময় বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম নিখিল বর্মন। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালী গ্রামে ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। ওই কৃষকের নাম সুজন মিয়া (৬০)। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে কৃষক সুজন মিয়া সয়াবিন তুলতে ক্ষেতে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। এ জমিতে পৌঁছানোর একপর্যায়ে বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। পরে ক্ষেতেই বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় তার। নড়াইলের লোহাগড়ার সরুশুনা গ্রামে বজ্রপাতে মিরাজ মুন্সি (১৫) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। ওই গ্রামের সালাউদ্দিন শেখ জানান, বিকেলে বিপুল মুন্সির ছেলে মিরাজ বাড়ির পাশের ইছামতি বিলে কৃষি কাজের সময় বজ্রপাতে আহত হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন জানান, আহত মিরাজ মুন্সিকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
১৩ মে, ২০২৪

আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি
আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যা হয়েছে। এতে একদিনে অন্তত দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। শনিবার (১১ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, শুক্রবার আফগানিস্তানের বাঘলানে অস্বাভাবিক ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এতে করে অঞ্চলটিতে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যার প্রভাবে কয়েক হাজার বাড়িঘর ধ্বংস  এবং অন্তত দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। তবে এতে আরও হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে।  আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কেবল বাঘলানে দেড় হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত এবং ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া সেখানে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। অন্যদিকে তালেবান প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬২ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।  বাঘলান ছাড়াও আফগানিস্তানের আরও কয়েকটি প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আকস্মিক বন্যা হয়েছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, বন্যায় উত্তরাঞ্চলের তাকহার প্রদেশে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এদিনের বৃষ্টির ফলে বাদাকশান, ঘোর এবং পশ্চিমাঞ্চলের হেরাতেও বিভিন্ন অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে গত শীতের মওসুমটি ছিল শুষ্ক। ফলে বৃষ্টির পানি পর্যাপ্ত আকারে শুষে নিতে পারছে না মাটি। দেশটিতে জলাবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক হুমকিতে ছিল। যার  ফল এখন বাস্তবে দেখা মিলছে।  পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র দেশ আফগানিস্তান। বিজ্ঞানীদের মতে, দেশটি এত বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত নয়। গত চার দশক ধরে দেশটি যুদ্ধিবিগ্রহে বিধ্বস্ত ছিল। ফলে অর্থনীতি অনেকটা দুর্বল।  আফগানিস্তান পৃথিবীর অন্যতম একটি গরিব দেশ। বিজ্ঞানীদের মতে, এমন বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য দেশটি প্রস্তুত নয়। গত চার দশক আফগানিস্তানে যুদ্ধবিগ্রহ লেগে ছিল। এ কারণে দেশটির অর্থনীতি অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই দুর্বল।  
১১ মে, ২০২৪

মের ৮ দিনেই এপ্রিলের চেয়ে বেশি প্রাণহানি বজ্রপাতে
দেশে বজ্রপাতে গত মাসে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তার চেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে চলতি মাসের শুরুর আট দিনে। এপ্রিলজুড়ে বজ্রপাতে নিহতের সংখ্যা ৩১। চলতি মে মাসের আট দিনে নিহত হয়েছে ৪৩ জন। সে হিসাবে ১ এপ্রিল থেকে ৮ মে পর্যন্ত ৩৮ দিনে ৭৪ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ পুরুষ ও ১১ জন নারী। নিহতদের মধ্যে ৩৫ জনই কৃষক। স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের (এসএসটিএএফ) গবেষণা সেলের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকদের মধ্যে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালনকালে সংগঠনটি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, চলতি মাসে এক দিনে বজ্রপাতে ১১ জন নিহত ও ৯ জন আহত হয়েছেন। পাশাপাশি বজ্রপাতের ক্ষেত্রে কৃষকরা কীভাবে নিজেদের নিরাপদ রাখতে পারেন, সে বিষয়ে প্রতিবেদনে আলোকপাত করা হয়েছে। সংগঠনের সদস্যরা সম্প্রতি মানিকগঞ্জের সিংগাইর, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান, ঢাকার নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিদর্শন করেন। এ সময় ৫০০ জন করে কৃষক নিয়ে দল তৈরি করে বজ্রপাত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা বজ্রপাত থেকে কৃষকদের বাঁচাতে মাঠে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। এ ছাড়াও মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত চার মাস বজ্রপাত সচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালনারও আহ্বান জানিয়েছে এসএসটিএফ। কৃষকদের কিছু পরামর্শও দিয়েছে সংগঠনটি। বজ্রপাত বাড়ার পেছনে দুটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান ফোরামের সভাপতি ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে গাছ কাটা, বিশেষ করে মাঠে উঁচু গাছ কাটা। গাছপালা না থাকলে মাঠে বা খোলা জায়গায় বজ্রপাত মানুষের ওপর আঘাত হানে। অধিকাংশ মানুষ মনে করেন ঝড়ের সময় গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়াই ভালো; কিন্তু এটা ভুল। মানুষকে ঘরবাড়ি বা স্থাপনায় আশ্রয় নিতে হয়। সরকার হাওর অঞ্চল ও উন্মুক্ত এলাকায় বজ্রনিরোধ যন্ত্র স্থাপনের উদ্যোগ নিতে পারে বলে পরামর্শ দেন কবিরুল বাশার। এক দিনে আরও ৭ জন নিহত: সাতক্ষীরা, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নড়াইল, নরসিংদী ও চট্টগ্রামে বৃহস্পতিবার বজ্রপাতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার রামনগর গ্রামে ঘেরে মাছ ধরতে যাওয়ার সময় শিমুল হোসেন (১৩) নামে এক কিশোর; নওগাঁর মান্দা উপজেলার চকনারায়ণ গ্রামে ধান কাটার সময় বাবুল হোসেন (৩৫) নামে শ্রমিক; চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার মোহাম্মদপুর জালমাছকুড়ি এলাকায় কোমল (২৮) নামে এক কৃষক; নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার উলা গ্রামের মাঠে কাটা ধান গুছিয়ে রেখে বাড়ি ফেরার পথে মোহাম্মদ মজিবর চৌধুরী (৫৫) নামে এক কৃষক; নরসিংদী সদর উপজেলার ভাটপাড়া এলাকায় ধান কাটার সময় কবির মিয়া নামে এক কৃষক এবং ফুটবল খেলতে গিয়ে বিজয় (১২) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। এ সময় আরও ২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ছাড়া চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বজ্রপাতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন উত্তম চৌধুরী (৫৫) নামে এক কৃষক। টানা ৩ দিন ঝড় ও বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস: আগামী তিন দিন সারা দেশে বিভিন্ন বিভাগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ সময় সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে, ৩৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বোচ্চ ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
১০ মে, ২০২৪

ঈদযাত্রায় সড়কে গড়ে দিনে ২৪ জনের প্রাণহানি
এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে-পরে ১৫ দিনে ৪-১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে ৩৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬৭ জন নিহত হয়েছেন। যা গড়ে প্রতিদিন ২৪ জনের বেশি।  বুধবার (২৪ এপ্রিল) ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনার এ চিত্র তুলে ধরেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংগঠনটির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।  সংগঠনটি বলেছে, ঈদযাত্রায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন দুই চাকার বাহন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। গত বছরের তুলনায় এবার ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেড়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে-পরে ১৫ দিনে ৪-১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে ৩৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে দেড় হাজার মানুষ। এ হিসাবে গত বছরের তুলনায় এবার দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩৯ দশমিক ২০ শতাংশ এবং প্রাণহানি বেড়েছে ২০ দশমিক ১৯ শতাংশ। ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় মানবসম্পদের যে ক্ষতি হয়েছে, তার আর্থিক মূল্য ১ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলেছে, গত বছর ঈদুল ফিতরের সময় ঈদযাত্রায় ২৪০টি দুর্ঘটনায় ২৮৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত প্রতিবেদন তুলে ধরেন সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ। প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ৬৩, শিশু ৭৪। ১৮৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৫৬ জন, যা মোট নিহতের ৪২ দশমিক ৫০ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৬৮ পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ১৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪১ জন। এ সময় তিনটি নৌ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭ জন। ১৪টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়েছেন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগের ধারাবাহিকতা নেই উল্লেখ করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, ‘সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জীবনে নিত্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগের ধারাবাহিকতা নেই। সবকিছু চলছে দায়সারাভাবে। অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহন খাতের অব্যবস্থাপনার কারণে। এ অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা।’ গত বছর ঈদযাত্রায় প্রতিদিন গড়ে ১৭ দশমিক ১৪টি দুর্ঘটনায় ২০ দশমিক ৩৫ জন নিহত হয়েছিল। এ বছর ঈদযাত্রায় প্রতিদিন গড়ে ২৩ দশমিক ৮৬টি দুর্ঘটনায় ২৪ দশমিক ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ঈদ উদযাপনকালে সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচটি পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এছাড়া স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন ৭৪ জন। দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১২৯টি (৩৬ দশমিক ০৩ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১৪৩টি (৩৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৪৮টি (১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে এবং ৩৮টি (১০ দশমিক ৬১ শতাংশ) শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাসমূহের ৯৩টি (২৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৩৮টি (৩৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৭২টি (২০ দশমিক ১১ শতাংশ) পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়া, ৪১টি (১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৪টি (৩ দশমিক ৯১ শতাংশ) অন্য বিভিন্ন কারণে ঘটেছে। মোট দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে ২৯ দশমিক ০৫ শতাংশ দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে ৩০ দশমিক ৭৯ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ দুর্ঘটনায় ১১ দশমিক ৭১ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪ দশমিক ৫২ শতাংশ দুর্ঘটনায় ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ। প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণসমূহ উল্লেখ করে বলা হয়, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে  ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজির মতো ঘটনা। সংবাদ সম্মেলনে দুর্ঘটনা কমাতে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করা, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি, পরিবহন মালিক-শ্রমিক-যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি প্রাণহানি ১৪
দেশের নয় জেলায় কালবৈশাখী ও বজ্রপাতে ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে ঝালকাঠিতে তিনজন, পটুয়াখালীর বাউফলে তিন, ভোলায় দুই এবং রাঙামাটি, পিরোজপুর, যশোর, বাগেরহাট, নেত্রকোনা ও খুলনায় একজন করে নিহত হয়েছেন। এসব জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েক হাজার বাড়িঘর। এ সময় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন, নিখোঁজ রয়েছেন দুই জেলে। এ ছাড়া অন্তত ২৫টি গরু ও মহিষের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পিরোজপুরে কালবৈশাখী শুরু হয়। ১০ মিনিটের ঝড়ে হাজার হাজার গাছপালা ভেঙে পড়েছে, বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে জেলার বিদ্যুৎ সংযোগ। এ সময় ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টিতে গাছচাপায় রুবি বেগম (২৩) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি পিরোজপুর পৌরসভার হুলারহাট এলাকার মিরাজ সরদারের স্ত্রী। এ ঘটনায় তার ছয় বছরের মেয়েসহ ১৩ জন আহত হয়েছেন। এদিকে ঝালকাঠির সদর উপজেলার শেখেরহাট, পোনাবালিয়া ইউনিয়ন ও কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নে ঝড়ের সময়ে মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন শেখেরহাট এলাকার ফারুক হোসেনের স্ত্রী মিনারা বেগম, আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের মৃত আলম গাজীর স্ত্রী হেলেনা বেগম এবং পোনাবালিয়া এলাকার মো. বাচ্চুর ষষ্ঠ শ্রেণিপড়ুয়া মেয়ে মাহিয়া আক্তার ঈশান। ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় ঝড়ে রাতুল (১৪) নামে এক কিশোর ও সুফিয়া বেগম (৮৫) নামে এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন। রাতুল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাঁতেরকাঠি গ্রামের জহির সিকদারের ছেলে। তাকে রাস্তায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, বজ্রপাতের শব্দে হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে। আর সুফিয়া বেগম দাশপাড়া ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের মৃত আহম্মেদ প্যাদার স্ত্রী। ঘরের ওপর গাছ পড়ে তিনি মারা যান। বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মারজান বলেন, রাতুলকে হাসপাতালে আনার আগেই সে মারা গেছে। তার শরীরে বজ্রপাতে ঝলসানোর কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে বজ্রপাতের শব্দে হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। সুফিয়া বেগমের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন দাশপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনএম জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি জানান, ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পুরো এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকারে গিয়ে আচমকা ঝড়ের কবলে পরে প্রাণ হারিয়েছেন ইব্রাহিম ফরাজি (৫০) নামে এক জেলে। তার বাড়ি উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরওয়াডেল গ্রামের। এদিকে ভোলার লালমোহন উপজেলার বদরপুরে ঘরচাপায় হারিস নামের এক বৃদ্ধ ও তুজমদ্দিনের শম্বুপুরে মো. মনজুরুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক ঝড়ের মধ্যে বজ্রপাতের শব্দে আতঙ্কিত হয়ে মারা গেছেন। ঝড়ের সময় একটি ঘরের নিচে আশ্রয় নেন হারিস। ওই ঘরটিই ভেঙে চাপা পড়েন তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে দাফনের জন্য পাঁচ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। এদিকে তুজমদ্দিনের শম্ভুপুরে স্কুল শিক্ষক মো. মনজুরুল ইসলাম ঝড়ের মধ্যে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতের শব্দে হার্টঅ্যাটাকে মারা যান বলে জানা গেছে। তিনি পূর্ব গোলকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন, লালমোহনে ঘরচাপা পড়ে মৃত হারিসকে ২৫ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা শেষে আরও সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে। মনপুরা উপজেলায় কালবৈশাখীতে লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে পুরো দ্বীপাঞ্চল। এতে উপজেলার হাজিরহাট, উত্তর সাকুচিয়া ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার তিনশর বেশি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। অন্যদিকে ঝড়ের কবলে অনেকের মাছের ট্রলার ও নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন চরে থাকা কৃষকের ৩০টি গরু নদীতে পড়ে নিখোঁজ রয়েছে। সোনারচর গ্রামে ঝড়ে ভেঙে পড়া ঘরের নিচে চাপা পড়ে আহত হয়েছেন তিনজন। হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি নিজাম উদ্দিন হাওলাদার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ১ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের। ইউএনও জহিরুল ইসলাম জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে আড়াইশ থেকে তিনশ ঘর সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মাঠে ক্ষয়ক্ষতির নিরুপণ করা হচ্ছে। কোনো সাহায্য সহযোগিতা পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে দেওয়া হবে। বরিশাল বিভাগীয় আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ বশির আহম্মেদ বলেন, বিভাগের উপকূলীয় এলাকা পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও বরগুনার ওপর দিয়ে কালবৈশাখী বয়ে গেছে। গতকাল বরিশাল জেলায় ১৫.২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। তবে পটুয়াখালী, বরগুনা ও পিরোজপুরে বৃষ্টি ও বাতাসের গতি অস্বাভাবিক ছিল। অন্যদিকে ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক তারের ওপর গাছ পড়ে লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এজন্য পিরোজপুর ও বরগুনার তথ্য অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। স্থানীয়রা বলছেন, বিভাগের ৪২টি উপজেলার মধ্যে ৩০টিরও বেশি উপজেলায় কালবৈশাখী আঘাত হেনেছে। এসব এলাকায় কয়েক হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে রাঙামাটির রাজস্থলীতে গতকাল বিকেলে বাড়ির সামনে কাজ করার সময় বজ্রপাতে সাজেউ খিয়াং (৪৮) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ধনুছড়ি পাড়া গ্রামের অংসাউ খিয়াংয়ের ছেলে। রাজস্থলী থানার ওসি ইকবাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়ার কোমলপুর গ্রামে গতকাল সকালে বজ্রপাতে মো. ওবায়দুল্লাহ গাজী (২৯) নামে এক মৎস্যচাষি নিহত হয়েছেন। তিনি ওই গ্রামের মো. দেলোয়ার হোসেন গাজীর ছেলে। ডুমুরিয়া থানার ওসি সুকান্ত কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে হাওরে বজ্রপাতে শহীদ মিয়া (৫২) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার রাজঘাট হাওরে বজ্রপাতে এ ঘটনা ঘটে। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় ধানক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে আব্দুল মালেক পাটোয়ারী (৬০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। সকালে উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের বিলে এ ঘটনা ঘটেছে। ঝিকরগাছার শংকরপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য পোদাউলিয়া গ্রামের জাহান আলি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত আব্দুল মালেক উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের মৃত ওমর আলি পাটোয়ারীর ছেলে। রোববার সকাল ৯টার দিকে বাগেরহাটে আকস্মিক ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলার বিভিন্নস্থানে কয়েকশ কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রচুর গাছপালা উপড়ে ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আকস্মিক ঝড় চলাকালে জেলার কচুয়া উপজেলার চর সোনাকুড় গ্রামে বজ্রপাতে আরিফুল ইসলাম লিকচান (৩৫) নামে মাদ্রাসার দপ্তরি নিহত হয়েছেন। (প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা)
০৮ এপ্রিল, ২০২৪

গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে প্রাণহানি বেড়ে ১৫
গাজীপুরের কালিয়াকৈরের কোনাবাড়ী এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণে নাদিম (২২) নামে দগ্ধ আরও একজন মারা গেছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ১৫ জন মারা গেলেন। শনিবার (২৩ মার্চ) রাত ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যান তিনি। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ঘটনায় নাদিম নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের ৫৫ শতাংশ ফ্লাইম বার্ন ও ইন হ্যালেনশান ইনজুরি হয়েছিল। তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আইসিইউর ১৮ নম্বর বেডে মৃত্যু হয় তার। এই নিয়ে এখন পর্যন্ত নারী শিশুসহ ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ১৩ মার্চ গাজীপুরের কালিয়াকৈরের তেলিরচালা এলাকায় শফিকুল ইসলাম খানের বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৩৬ জন দগ্ধ হন। প্রসঙ্গস, মৌচাক তেলির চালা এলাকায় শফিক খানের বাড়িটি স্থানীয় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ওই বাড়ির রান্নাঘরে শ্রমিকরা রান্না করছিলেন। ইফতারের আগ মুহূর্তে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে একটি পরিবারের সিলিন্ডারের গ্যাস ফুরিয়ে যায়। নতুন আরেকটি সিলিন্ডারে সংযোগ দেওয়ার সময় সেটিতে আগুন ধরে যায়।
২৪ মার্চ, ২০২৪
X