রেলওয়ে পয়েন্টসম্যান পদে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ
রেলওয়ে পয়েন্টসম্যান পদে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা শুরুর আগেই এ পদের প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যায়। পরীক্ষার পর মিলিয়ে তা একই রকম বলে জানা গেছে। ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র এসেছে কালবেলার হাতেও।  সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে রেলের পয়েন্টসম্যান সহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। চার মার্চ থেকে শুরু হয়ে ১৮ মার্চ আবেদন শেষ হয়। ১৮ নম্বর গ্রেডের এই নিয়োগে ৩৫১টি পদের বিপরীতে এক লাখ চার হাজার ৪৯০ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। রাজধানীর ২৩টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৭০ নম্বরের এক ঘণ্টার এমসিকিউ পরীক্ষা শুরু হয় শুক্রবার (২৮) সকাল ১০টায়।  কিন্তু পরীক্ষা শুরুর আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নপত্র চলে আসে। এ নিয়ে রীতিমতো হইচই শুরু হয়। তবে কোনো কোনো মাধ্যম থেকে দাবি করা হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর ২০ মিনিটের মধ্যেই এ পদের প্রশ্নপত্র বাইরে আসে। তবে এ ব্যাপারে রেলওয়ের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। যদিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যেমে পরীক্ষা বাতিলের দাবি উঠেছে।   জনবল নিয়োগে বিভাগীয় নির্বাচন কমিটির আহ্ববায়কের দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে যুগ্ম মহাপরিচালক এ এম সালাহউদ্দীন। এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ ছাড়া রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকেও পাওয়া যায়নি। তাছাড়া একই দিন বিকেলে সহকারী লোকোমোটিভ, ফিল্ড কাননগো, আমিন পদেও নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৮ জুন, ২০২৪

ভারতে প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে এবার নতুন আইন
ভারতে ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি-কাম-এন্ট্রান্স টেস্ট (এনইইটি) ও ইউজিসি-নেট পরীক্ষা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে একটি আইন কার্যকর করেছে। ইউজিসি নেট পরীক্ষা বাতিল ও এনইইটি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পড়ুয়ারা। ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি অর্থাৎ এনটিএ, যারা এই পরীক্ষা পরিচালনা করেন, তারাও প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। বিক্ষোভের মধ্যেই নতুন এই আইনটি কার্যকর করা হলো। শুক্রবার গভীর রাতে এই আইনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। খবর এনডিটিভির নতুন আইনে দোষী সাব্যস্ত হলে ১০ বছরের জেল ও এক কোটি টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু চার মাস আগে পাবলিক এক্সামিনেশন (প্রিভেনশন অব আনফেয়ার মিনস) আইন, ২০২৪-এ সম্মতি দিয়েছিলেন। শুক্রবার জারি করা নয়া পরীক্ষা আইনের বিধি অনুযায়ী, পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্বে থাকা সংস্থার কোনো ব্যক্তি যদি প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় যুক্ত থাকে, তাহলে তাকে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হতে পারে। এদিকে যদি কোনো কর্মকর্তা পরীক্ষায় জালিয়াতির কথা জেনেও চুপ থাকেন, তাহলে তাকেও এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। তবে প্রশ্নফাঁস বা পরীক্ষায় জালিয়াতি মামলায় বাইরের লোক জড়িত থাকলে তাদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং সর্বাধিক ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান রয়েছে নতুন আইনে। এই আইনে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার উল্লেখ রয়েছে। ন্যায় সংহিতা কার্যকর হবে ১ জুলাই থেকে। তবে এই পরীক্ষা আইনের বিধানগুলো এখন থেকেই কার্যকর বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ততদিন ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনেই এই আইনের ধারাগুলো কার্যকর থাকবে।
২৩ জুন, ২০২৪

অর্থ নিয়ে দুই গাড়ি চালককে প্রশ্নপত্র দেন ডিজিএম
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের তৎকালীন উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ার গোপনে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ছবি নিজের মোবাইলে তুলে নেন। পরে ফাঁস করা এ প্রশ্নপত্র প্রিন্ট করে অর্থের বিনিময়ে দুই গাড়িচালককে দেন। তারা আবার অন্য আসামিদের কাছে প্রশ্নপত্র বিক্রি করেন। রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় করা মামলার অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ফজলুর রহমান কালবেলাকে বলেন, মামলাটিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপরাধের কোনো উপাদান ছিল না। আমরা সব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পেনাল কোডের কয়েকটি ধারায় ৩০ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছি। আসামিরা ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র প্রিন্ট করে অন্যদের কাছে বিক্রি করেছে। ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। তদন্ত শেষে গত বছরের ২২ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের পরিদর্শক আলমগীর হোসেন পাটোয়ারী আদালতে চার্জশিট জমা দেন। পরে গত বছরের ৭ আগস্ট ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এএম জুলফিকার হায়াত এ মামলার চার্জশিট আমলে গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে গত ২২ এপ্রিল গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ফজলুর রহমান বিমানের তৎকালীন ডিজিএম মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ারসহ ৩০ জনকে অভিযুক্ত করে অধিকতর চার্জশিট দাখিল করেন। তবে মামলার ঘটনা ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় না পড়ায় পেনাল কোডের ৪২০/৪০৩/৪০৬/৪১১/১০৯ ধারায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন—বিমানের শিডিউলিং সুপারভাইজার মাহবুব আলম শরীফ, সিকিউরিটি গার্ড আইউব উদ্দিন, এমটি অপারেটর মহসিন আলী, মিজানুর রহমান, ফারুক হোসেন, নজরুল ইসলাম, ফিরোজ আলম, জাহাঙ্গীর আলম, মো. মাসুদ, মো. মাহবুব আলী, এনামুল হক, মাহফুজুল আলম, ট্রাফিক হেলপার আল আমিন, আ. মালেক, আলমগীর হোসেন, গাড়িচালক আব্দুল্লাহ শেখ, সাজ্জাদুল ইসলাম, এমএলএসএস তাপস কুমার মণ্ডল, জাহিদ হাসান, হারুন অর রশিদ, সমাজু ওরফে সোবাহান, জাকির হোসেন, বিএফসিসি অপারেটর সুলতান হোসেন, মুরাদ শেখ ওরফে মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ বেতারের গাড়িচালক ফারুক হোসেন, জুয়েল মিয়া, রাজিব মোল্লা, অফিস সহায়ক আওলাদ হোসেন ও হেলপার জাবেদ হোসেন। অধিকতর চার্জশিটে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর আনোয়ারসহ নিয়োগের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটির চার সদস্য বিমানের জিএসই পদসহ অন্য পদের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরির কাজ শুরু করেন। ওইদিন বিমানের বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টারের প্রিন্সিপাল নাজমুল হুদা ও ইঞ্জিনিয়ার কায়সার জামান নিজেদের অংশের প্রশ্নপত্র পেনড্রাইভে নিয়ে আসেন। তার কিছু সময় পরে আনোয়ার জিএমের (অ্যাডমিন) রুমে আসেন। তারা প্রশ্নপত্র সেট করার পর মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ারকে এর ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য দেখতে বলেন। তখন আনোয়ার বলেন, ল্যাপটপের স্ক্রিনে দেখতে সমস্যা হচ্ছে বলে প্রিন্ট কপি চান। তাকে প্রিন্ট কপি দেওয়া হলে তিনি ২০-২৫ মিনিট ধরে সোফায় বসে চেকব্যাক করেন। প্রশ্নপত্র চেকব্যাকের সময় মেজর আনোয়ার গোপনে মোবাইল ফোনে প্রশ্নটির ছবি তুলে নেন। পরে তিনি প্রশ্নের প্রিন্টকপি আসামি গাড়িচালক মাসুদ ও জাহাঙ্গীর আলমকে অর্থের বিনিময়ে সরবরাহ করেন। আসামি জাহাঙ্গীর ও মাসুদ অর্থের বিনিময়ে অন্য আসামিদের কাছে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগপত্রের প্রশ্নপত্র বিক্রি করেন। মেজর আনোয়ার যে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন, সেটির কপি জাহাঙ্গীর আলম, হারুন অর রশিদ, মাহফুজুল আলম ও আওলাদ হোসেনের কাছে থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া প্রশ্নটির ছবি আসামি জাহাঙ্গীর, মাসুদ, হারুন, এনামুল, মাহফুজুল, জাহিদ, জাবেদেরও মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়। এ ছাড়া ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর সকালে বিমানের প্রধান কার্যালয়ে জুনিয়র অপারেটর (জিএসই) ক্যাজুয়াল পদের প্রশ্নপত্র ফটোকপির সময় এর ছবি তুলে নেন এমএলএসএস জাহিদ হাসান। পরে তা আওয়াদ ও সমাজুকে সরবরাহ করেন। অধিকতর চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামি জাহাঙ্গীর, আওলাদ ও মাসুদ তাদের জবানবন্দিতে সুনির্দিষ্টভাবে ঘটনা সংক্রান্তে আসামি তাইজ ইবনে আনোয়ারের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করেছেন। দুই গাড়িচালক জাহাঙ্গীর ও মাসুদের সঙ্গে আনোয়ারের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ক্রয়/বিক্রয় সংক্রান্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের তথ্য রয়েছে। আসামি জাহাঙ্গীরের কাছে থেকে তিনটি ডায়েরি উদ্ধার করা হয়। যেখানে বিমানের নিয়োগ পরীক্ষায় চাকরি দেওয়ার নামে যে টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে তার তথ্য রয়েছে। এ ছাড়া আসামি জাহাঙ্গীর, মাসুদ ও আনোয়ার নিজেদের মধ্যে এসব টাকা বণ্টন করে নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
১০ মে, ২০২৪

বন্ধ হোক প্রশ্নপত্র ফাঁস
কয়েক বছর ধরেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। পাবলিক পরীক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন নিয়োগ ও ভর্তি পরীক্ষায়ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর আসছে সংবাদমাধ্যমে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি দুরারোগ্য ব্যাধির মতো জেঁকে বসেছে। কোনোভাবেই এর হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি প্রেসের কর্মী থেকে শুরু করে ছাত্র-শিক্ষক, ব্যাংক কর্মকর্তা—অনেকেই এ চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে এর আগে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সর্বশেষ পরীক্ষায় আবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। পরীক্ষায় তিন ধাপে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। প্রথম ধাপে জালিয়াতির অভিযোগে ৭৪ এবং তৃতীয় ধাপে একই অভিযোগে ১৩ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সব মিলিয়ে আটক ৮৭ জন। গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা চলাকালে উত্তরপত্র, ডিজিটাল ডিভাইসসহ মাদারীপুরে সাতজন এবং রাজবাড়ীতে একজন পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। রাজবাড়ীতে গ্রেপ্তার পরীক্ষার্থী পরে আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এর আগে গত বছর ৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপের নিয়োগ পরীক্ষায়ও জালিয়াতির অভিযোগে গাইবান্ধায় ৩৭, রংপুরে ১৯ ও দিনাজপুরে ১৮ জনকে আটক করা হয়। ওই সময় তাদের কাছ থেকে ২৪টি মাস্টারকার্ড, ২০টি ব্লুটুথ, ১৭টি মোবাইল ফোনসেট, ব্যাংক চেক ও স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়। এর আগে ২০২২ সালের নিয়োগ পরীক্ষায় শুধু রাজবাড়ী জেলা থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ১৩ জনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাকরিপ্রত্যাশীদের খুঁজে বের করে তারা ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষায় পাস করানোর আশ্বাস দিত। আগ্রহী পরীক্ষার্থীদের ডিজিটাল ডিভাইস দেওয়া হতো এবং তাদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে ১-২ লাখ টাকা জামানত নেওয়া হতো। অবশিষ্ট টাকা চাকরি পাওয়ার পর পরিশোধ করা হবে বলে চুক্তি করা হতো। ২০১৯ সালের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ঢাকা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে প্রশ্নপত্র বাইরে চলে যায়। পরে চাকরিপ্রার্থীদের ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর সরবরাহ করা হয়। পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে প্রতিবার একাধিক ব্যক্তি আটক হলেও কোনোবার পরীক্ষা বাতিল করেনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা জালিয়াতি রোধে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এরপরও ঠেকানো যাচ্ছে না প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো জঘন্য ও নিন্দনীয় একটি কাজের সঙ্গে জড়িতরা প্রকৃতপক্ষে দেশ এবং জাতির শত্রু। তাদের নীতিনৈতিকতা বলে কিছু নেই। শুধু অর্থের বিনিময়ে তারা যা খুশি তাই করতে পারে। প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তরপত্র জালিয়াতির ঘটনা আমাদের সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ জঘন্য অপরাধ প্রতিরোধের সহজ উপায় হচ্ছে অপরাধীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা প্রতিরোধে দেশে আইন আছে। জালিয়াত চক্রের সন্ধান যখন পাওয়া গেছে, তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও কঠোর হতে হবে। এ চক্রের সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। শিক্ষাঙ্গনে দুর্নীতির এক অভিনব পদ্ধতি প্রশ্নপত্র ফাঁস। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার ধরনটাও পাল্টে গেছে। পরীক্ষার আগে পড়াশোনা করার চেয়ে তারা বেশি ব্যস্ত ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের খোঁজে। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা বর্তমানে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে বলে নানামহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা এমনকি বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হয়েছে বলে গণমাধ্যমে বারবার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ফাঁস হওয়া প্রশ্নের মধ্যে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষাসহ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নও রয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় কারণ, এর চাহিদা আছে। আর এ ফাঁসে যারা জড়িত, তারা আর্থিক দিক দিয়ে ব্যাপকভাবে লাভবান হন। ২০০১ সাল থেকে পরবর্তী ১৬ বছরে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে ১০ বার। সিআইডি সম্প্রতি ২০২০ সালের প্রশ্ন ফাঁসের একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এ ঘটনা জানতে পেরেছে। তারা ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে সাতজনই চিকিৎসক। আর এ ফাঁস করা প্রশ্ন দিয়ে দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছেন। তারা পাস করে চিকিৎসকও হয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে নানারকম পদক্ষেপ নেওয়া হলেও রোধ করা যাচ্ছে না প্রশ্নপত্র ফাঁস। প্রশ্ন ফাঁস প্রশ্ন তৈরি থেকে, ছাপা পরিবহন এবং বিতরণ যে কোনো পর্যায়ে হতে পারে। তাই প্রতিটি পর্যায়ে সৎ এবং যোগ্য লোক থাকা দরকার। থাকা দরকার কঠোর মনিটরিং। শুধু সৎ হলেই চলবে না, দক্ষতাও থাকতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণাও থাকতে হবে। যেমন, কম্পিউটারে প্রশ্ন তৈরি হলো সেখান থেকে তা ডিলিট করলেই শেষ হয়ে যায় না। আসলে সেটা থেকে যায়। প্রিন্টারেও থেকে যায়। কোনো অনলাইন ডিভাইসেও থেকে যেতে পারে। তাই ওই প্রযুক্তি সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন করে কীভাবে কাজ করতে হয় তাও জানতে হবে। এ সমস্যার সমাধান করতে হলে দেখতে হবে প্রশ্নপত্র তৈরি এবং পরীক্ষার হলে পৌঁছানো পর্যন্ত এতে কারা থাকেন। প্রশ্নপত্র তৈরিতে নিয়োজিত কমিটি কতটুকু বিশ্বস্ত সেটা খতিয়ে দেখা উচিত। তাদের শিক্ষাজীবন হতে শুরু করে আদর্শ, রাজনৈতিক কার্যকলাপ এমনকি পারিবারিক ইতিহাসও ঘেঁটে দেখা দরকার। তাদের মধ্যে কেউ সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এমন করছে, এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। আবার এসব প্রশ্নপত্র যেখানে ছাপা হয়, সে প্রেসের কেউ এ কাজ করছে কি না, সেদিকেও কড়া নজর রাখতে হবে। লেখক: রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান এবং সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের উপদেষ্টা
০৭ মে, ২০২৪

স্কুল শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় মাদ্রাসার প্রশ্নপত্র
রাজশাহীতে অষ্টম শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় এক কেন্দ্রে স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষার্থীদের মাদ্রাসার প্রশ্ন সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাজশাহী নগরীর কোর্ট একাডেমি কেন্দ্রে এ ঘটনায় ঘটে। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে কিছুক্ষণ পর আসল প্রশ্ন সরবরাহ করে কর্তৃপক্ষ। তবে এ নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় পরীক্ষার্থীদের।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় রাজশাহী কোর্ট একাডেমি কেন্দ্রের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় জেনারেল প্রশ্নের পরিবর্তে মাদ্রাসার প্রশ্ন দেওয়া হয়। ভুল বুঝতে পেরে পরীক্ষা শুরুর প্রায় ১৫ মিনিট পরে আসল প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। আগের ভুল প্রশ্নের সেট পূরণ করায় আসল প্রশ্নের সেট মেলাতে গিয়ে এক প্রশ্নে কয়েকজন মিলেও পরীক্ষা দিতে হয়েছে। অনেকটা গ্রুপ আকারে পরীক্ষা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সজিবুল ইসলাম নামের ওই কেন্দ্রের এক পরীক্ষার্থী বলেন, রাজশাহী কোর্ট একাডেমি কেন্দ্রের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ভুল করে স্কুল পর্যায়ের পরিবর্তে স্কুল পর্যায়-২ (মাদ্রাসা) এর প্রশ্ন দিয়েছিল। ভুল প্রশ্ন দিয়েই উত্তরপত্রের প্রশ্ন কোড পূরণ করে উত্তর দাগানোও শুরু হয়েছে অনেকের। প্রায় ১৫ মিনিট পরে আসল প্রশ্ন নিয়ে আসেন স্যাররা। তড়িঘড়ি করে প্রশ্ন চেঞ্জ করে আসল প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। সেক্ষেত্রে আগের পূরণ করা প্রশ্নের সেট নিয়ে অনেকে বিড়ম্বনার শিকার হন। তখন রুমের দায়িত্বে থাকা স্যাররা যার যে সেট পূরণ করা ছিল তাকে সেই সেট অনুযায়ী প্রশ্ন মিলিয়ে দেন। শেষে এক প্রশ্নে কয়েকজন মিলে গ্রুপ করেও পরীক্ষা দিতে দেখা গেছে। আর সময়ের ক্ষতিপূরণ হিসেবে পুরো কেন্দ্রে অতিরিক্ত ২০ মিনিট বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, এটা তো কোনো পরীক্ষার সিস্টেম হতে পারে না। কয়েকজনের গাফিলতির কারণে কেন আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হবে। যাদের গাফিলতির কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত বলেও মনে করেন এই চাকরি প্রত্যাশী। এ বিষয়ে রাজশাহী কোর্ট একাডেমির প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র প্রধান সফিকুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগযোগ করা হলে তিনি ‘এখন ব্যস্ত আছি এখন কথা বলা যাবে না’ বলে ফোনটি কেটে দেন। এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, আজকের কোথাও কোনো ভুল প্রশ্ন বিতরণের তথ্য আমার কাছে নেই। আমার কাছে কেউ অভিযোগও করেননি। তবে যদি এমনটি হয় বা কেউ অভিযোগ করে তবে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৫ মার্চ, ২০২৪

ফেসবুক টেলিগ্রামে ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র বিক্রি
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কড়া নজরদারির মধ্যেও ফেসবুক ও টেলিগ্রামে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিক্রির বিজ্ঞাপন দেখা যায়। বিষয়টি জানতে পেরে শাহবাগ থানায় মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরির চক্রটির সন্ধান পায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় দুই যুবককে। তারা হলো আন নাফিউল ওরফে নাফিজ ইকবাল ও আসিফ তালুকদার। তাদের মধ্যে আসিফ তালুকদার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাইবার সিকিউরিটি ইনচার্জ পরিচয় দিয়ে শিশু বিশেষজ্ঞ ও সাইবার টিনস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সাদাত রহমানের নামে ফেক আইডি ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র বিক্রি করত। রোববার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বগুড়ার শিবগঞ্জের দবিলা সংসারদিঘী গ্রাম থেকে গত শনিবার নাফিজ ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি রাথাবাড়ীর সবুজ আহমেদের ছেলে। জাবিতে ভর্তিপরীক্ষায় গ্রেফতার ১: জাবি প্রতিনিধি জানান, শ্রুতিলেখক পরিবর্তনের মাধ্যমে অসদুপায় অবলম্বন করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ায় ৫ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র ও রোল নম্বর বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনায় সাগর হোসেন নামে এক শ্রুতিলেখককে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া অশোভন আচরণের দায়ে সাজিদ হাসান নামে এক ভর্তিচ্ছুর উত্তরপত্র ও রোল নম্বর বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত রোববার কলা ও মানবিক অনুষদে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় এসব ঘটনা ঘটে। বাকি ৪ শ্রুতিলেখককে শনাক্ত করা যায়নি। ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র ও রোল নম্বর বাতিল হওয়া পরীক্ষার্থীরা হলেন, সাজিদ হাসান, দেলোয়ার হোসেন, রাজু আহমেদ, টুটুল হাসান, মেহেদী হাসান ও আওয়াল হোসেন আরাফাত।
২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

আধা ঘণ্টা দেরিতে এসএসসির প্রশ্নপত্র বিতরণ, আত্মগোপনে ২ পর্যবেক্ষক
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার প্রথম দিন বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা সকাল ১০টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শেরপুরের একটি কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র আধা ঘণ্টা দেরিতে বিতরণ করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত  দুই পর্যবেক্ষক আত্মগোপনে রয়েছেন। জেলা শহরের মডেল গার্লস ইনস্টিটিউট, শেরপুর কেন্দ্রের ২০১ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. চাঁন মিয়া। ঘটনার তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানান তিনি। অভিযুক্ত দুই পর্যবেক্ষক হলেন, মডেল গার্লস ইনস্টিটিউটের শিক্ষক নাজির আহমেদ ও জঙ্গলদি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহাদাত হোসেন কনক। সরেজমিন জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে মডেল গার্লস ইনস্টিটিউট, শেরপুর কেন্দ্রে ৫৯৭ জন পরীক্ষার্থী ছিল। এই কেন্দ্রের ২০১ নম্বর কক্ষে চারজন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। ওই কক্ষের পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘প্রশ্নপত্র দিতেই ২২ মিনিট দেরি করা হয়। আবার ঠিক বেলা ১টায় উত্তরপত্র জমা নেন দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা। পরীক্ষার্থীরা আরও বলে, ‘বিষয়টি কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষকে আমরা জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের চলে যেতে বলেন। এ ছাড়া কেন্দ্রে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা পরীক্ষা শেষে সময় বৃদ্ধির আবেদন করলেও আমাদের হাত থেকে খাতা টেনে নেওয়া হয়েছে।’ অভিভাবক আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমার মেয়ে এই কক্ষের পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের অব্যস্থাপনা এবং শিক্ষকদের অবহেলার জন্য অনেক জিপিএ-৫ ও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার মতো শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।’ তিনি অপরাধীদের শাস্তি দাবি করেন। সাতানিপাড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও হল সুপার এমদাদুল হক বলেন, প্রশ্নপত্র খুলে সব কক্ষে পৌঁছাতে পাঁচ মিনিটের বেশি দেরি হওয়ার কথা নয়। কেন দেরি হলো আমিও বুঝতে পারছি না।’ তবে ঠিক ২২ মিনিট দেরি হয়নি বলে দাবি তার। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. চাঁন মিয়া বলেন, ‘প্রশ্নপত্র দেরিতে দেওয়া ঠিক হয়নি। এখানে শিক্ষকদের কারণে দেরি হয়েছে বলে অভিযোগ পেলাম। এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মহোদয় বিকেলে তলব করেছেন। তবে বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে‌।’
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ / প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত চার পুলিশ গ্রেপ্তার
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজশাহী ও দিনাজপুরের চার পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনায় রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানায় মামলার পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়। রাজশাহীতে গ্রেপ্তাররা হলেন এএসআই গোলাম রাব্বানী, কনস্টেবল আবদুর রহমান ও শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল। এ ছাড়া দিনাজপুরে গ্রেপ্তার হওয়া আরেক কনস্টেবলকে রাজশাহীতে আনা হচ্ছে।  এর মধ্যে আবদুর রহমান ও শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) সদর দপ্তরে কর্মরত। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার এ পরীক্ষার আগে আসামিরা ১৫-২০ জন চাকরিপ্রার্থীকে পাস করিয়ে দেওয়ার চুক্তি করেন। এ জন্য তাদের ছোট আকারের হেডফোন সরবরাহ করেন। এ হেডফোনের মাধ্যমে বাইরে থেকে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নের সব উত্তর বলে দেওয়ার কথা ছিল। এ জন্য একেক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার চুক্তি করা হয়েছিল। পুলিশের অভিযানে কিছু স্ট্যাম্প, ১০ লাখ টাকার একটি চেক এবং ১৪টি গোপন ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পরীক্ষার আগের রাতে প্রথমে আরএমপি সদর দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর শাহরিয়ার পারভেজ ও আবদুর রহমানকে আটক করা হয়। পরে তথ্যের ভিত্তিতে দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানা থেকে এএসআই গোলাম রাব্বানীকে আটক করা হয়। আরএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জামিরুল ইসলাম বলেন, মামলায় আরও একজন পুলিশ কনস্টেবলকে দিনাজপুরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে রাজশাহী আনা হচ্ছে।
০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

কেরানীগঞ্জে বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে আব্দুল্লাহপুরের বাঘাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ফাঁস করা প্রশ্নে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। কিছু  অসাধু শিক্ষক পরীক্ষার আগেই নিজেদের প্রাইভেট পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের হাতে প্রশ্নপত্র তুলে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অসাধু শিক্ষকরা তাদের প্রাইভেট পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য এই অসাধু উপায় অবলম্বন করেছে। জানা গেছে, গত ১৪ নভেম্বর থেকে বিদ্যালয়টির বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়টির কিছু অসাধু শিক্ষক পরীক্ষার আগের দিন তাদের কাছে থাকা প্রশ্নপত্র প্রাইভেট পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের হাতে ও মোবাইলের মাধ্যমে দিয়ে দেন। গত মঙ্গলবার বিজ্ঞান পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। এই প্রশ্ন পেয়ে এক সাংবাদিকা ওই দিন রাতে ইউএনওকে ফরোয়ার্ড করে রাখে। পর দিন বুধবার সেই ফাঁসকৃত প্রশ্নেই পরীক্ষা নেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা।  এভাবেই ইংরেজি ১ম পত্র ও ইংরেজি ২য় পত্রসহ পরীক্ষার বিভিন্ন প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের কিছু অসাধু শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়টির নবম শ্রেণির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, এমন করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আমরা হতাশ। আমাদের স্কুলের কিছু অসাধু শিক্ষক  প্রাইভেটের ছাত্রছাত্রীদের পাস করিয়ে দিতে অসদুপায় অবলম্বন করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস করে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছেন। অসৎ শিক্ষকরা শিক্ষার্থী ধরে রাখার জন্য এ কাজ করছেন। এই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি। বাঘাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন বলেন, কিছু অসাধু শিক্ষক তাদের কোচিং বাণিজ্য টিকিয়ে রাখার জন্য প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত থাকতে পারে। উচ্চ বিদ্যালয়ের ও কলেজ মিলে প্রায় ৬৫ জন শিক্ষক ও কলেজ প্রভাষক  রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৫-২০ জন ইংরেজি, অঙ্ক ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা বাঘাপুর স্কুল ও কলেজের আশপাশ এলাকায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কোচিং সেন্টার খুলে বসেছে। আমি ওই সকল অসাধু শিক্ষকের কাছে জিম্মি। গভর্নিং বোর্ডের সভায় তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোছা. কামরুন্নাহারকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল বিন করিম জানান, বিষয়টি তদন্তে জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বলা হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
২৮ নভেম্বর, ২০২৩
X