শিশুর জিব কেটে ফেলল প্রতিবেশী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে মো. সাইম নামে এক শিশুর জিব ও ঠোঁট কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে কাউসার মিয়া নামে এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে।  রোববার (২৩ জুন) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু সাইমের জিহ্বায় ৭টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। ঠোঁটে আঘাতপ্রাপ্ত।  আহত সাইম নাটঘর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের মালেক মিয়ার ছেলে। এর আগে শুক্রবার (২১ জুন) উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  জানা গেছে, বাড়ির সীমানা নিয়ে শিশু সাইমের বাবা মালেক মিয়ার সঙ্গে পাশের বাড়ির কাউসার মিয়ার এক বছর ধরে বিরোধ চলে আসছিল। শুক্রবার সকালে কাউসার মিয়া বিরোধপূর্ণ জায়গার সীমানা খুঁটি তুলে আরেক জায়গায় বসিয়ে দেয়। ঘটনাটি দেখে ফেলে শিশু সাইম। সে তার বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি বলে দেয়।  এর কিছুক্ষণ পর বিষয়টি জানতে পেরে সাইমকে খুঁজতে থাকে কাউসার মিয়া। একপর্যায়ে সাইম বাড়ি থেকে বের হলে তার ওপর দা ও লাঠি নিয়ে হামলা করে কাউসার মিয়া ও তার লোকজন। সাইমকে পিটিয়ে একপর্যায়ে তার জিহ্বায় ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। তার ঠোঁটের কিছু অংশ কেটে ফেলে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত শিশুর মা পারভীন বেগম বলেন, আমার ছেলের জিব ও ঠোঁট নৃশংসভাবে কেটে দেওয়া হয়েছে। এখন সে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। চারদিন ধরে তাকে কিছু খাওয়াতে পারছি না। এ ধরনের বর্বরতা মেনে নেওয়া যায় না। আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। অভিযোগের বিষয়ে জানতে কাউসার মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রতন কুমার ঢালী বলেন, শিশুটির জিব ও ঠোঁটে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার জিবে ৭টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসরা তাকে যথাযথ চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। বর্তমানে তার অবস্থা উন্নতির দিকে। নবীনগর থানার ওসি মাহবুব আলম কালবেলাকে বলেন, শিশুটি জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। লিখিত অভিযোগ হাতে পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২৩ জুন, ২০২৪

ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার নিবন্ধ / ‘প্রতিবেশী কূটনীতিতে বাংলাদেশ’
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক যাত্রা শুরু হয়। ভারতের সমর্থনে বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তি স্থাপন করে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। তরুণ বাংলাদেশ দ্রুত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হয়, যা বিশ্ব আসরে তার বৈধতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ তার উদ্দেশ্যের প্রতি সহানুভূতিশীল দেশি-বিদেশি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য পশ্চিমা শক্তিগুলোর স্বীকৃতি নবজাতক রাষ্ট্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করেছে।  একইসঙ্গে, জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনে মিত্রদের সমর্থন আদায় করে বাংলাদেশ এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এক কূটনৈতিক বিজয়গাঁথা রচনা করেছে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে স্বাধীনতার পর গত ৫৪ বছর ধরে বাংলাদেশ বিভিন্নভাবে সফলতার স্বাক্ষর রেখেই চলছে। এর পাশাপাশি প্রতিবেশী কূটনীতিতেও বাংলাদেশের সফল পদচারণা রয়েছে।  অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও প্রতিবেশী কূটনীতিতে বাংলাদেশের যে সফল পদচারণা তার ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে বাংলাদেশ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে তার অঙ্গীকারে অটল থেকেছে। প্রতিবেশী কূটনীতি জোরদার করণের লক্ষ্যে বর্তমানে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (SAARC)-এর মতো আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা আরও জোরদার করেছে। সার্কের মধ্যে সহযোগিতামূলক উদ্যোগ বাংলাদেশকে দারিদ্র্য বিমোচন, বাণিজ্য উদারীকরণ এবং পরিবেশগত স্থায়িত্বসহ আঞ্চলিক সমস্যা মোকাবিলার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে।  আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতার গুরুত্ব স্বীকার করে বাংলাদেশের প্রতিবেশীদের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততার নীতি অনুসরণ করেছেন। বাংলাদেশের বৃহত্তম প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তার নেতৃত্বে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখেছে। একইভাবে, চীন, ভুটান এবং মিয়ানমারের মতো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার প্রচেষ্টা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক একীভূতকরণে অবদান রেখেছে। প্রতিবেশী কূটনীতিতে আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশের অবস্থান কতটা জোরালো তা ইতিহাসের বিশ্লেষণ থেকে পরিষ্কারভাবে জানা দরকার।  ইতিহাস বলছে, স্বাধীনতার সময় থেকে ২টি দেশ যে ঐক্যের ভিত্তিতে নিজেদের সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে চলেছে তা আজ পর্যন্ত বিদ্যমান রয়েছে। তবে মাঝে কিছুটা সময় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে খানিকটা নেতিবাচক সম্পর্ক বিরাজমান থাকলেও বিগত ১২ বছরে ২টি দেশের সম্পর্ক বিশেষ উচ্চতায় পৌঁছেছে। ছিটমহলসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান এসেছে বিগত ১২ বছরে। বাংলাদেশ বর্তমানে ভারতের ৫টি সর্ববৃহৎ রপ্তানিকৃত দেশের তালিকায় রয়েছে।  এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পে ভারতের সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। অর্থনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক দিক থেকেও দুই দেশের মধ্যে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক দল যেমন ভারতে তাদের কার্যক্রম প্রদর্শন করে, তেমনি ভারতীয় সাংস্কৃতিক দলও বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম উপস্থাপন করে। এর মাধ্যমে দুই দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের একটি শক্তিশালী সেতুবন্ধন রচিত হয়েছে। এখানে বলে রাখা ভালো, যে বাংলাদেশ ও ভারত উপমহাদেশের ২টি রাষ্ট্র হওয়ায় দুই দেশের সাংস্কৃতিক জগতের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। এ কারণে আবহমান কাল থেকে উভয় দেশ সাংস্কৃতিক দিকগুলো অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার এই চমৎকার সম্পর্কের ফলে প্রতিবেশী কূটনীতিতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভারতের ন্যায় একইভাবে চীনকেও আমাদের কাছাকাছি প্রতিবেশী হিসেবে আমরা জানি। চীনের সঙ্গেও আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। বাংলাদেশ হওয়ার আগে থেকে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে যদিও কিছুটা বিতর্ক থাকলেও পরবর্তীকালে চীন আমাদের অর্থনৈতিক বিকাশের অন্যতম সহযাত্রী হয়। নিরাপত্তা কাঠামোসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক কাজে চীন আমাদের সহযোগিতা করে। চীন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে। চীনের সঙ্গে সম্পর্কটি সরাসরি নিরাপত্তা সংক্রান্ত না হলেও আমরা অর্থনৈতিক সম্পর্কটি যদি বিবেচনা করি, চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমরা যে পণ্যসামগ্রী আমদানি করি, তারমধ্যে চীনের অবস্থান প্রথম তারপর ভারত। কাজেই অর্থনৈতিকভাবে আমরা চীনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক না, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটেও চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। তারমানে শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক না, চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটি ত্রিপাক্ষিকমাত্রায় আছে। যেমন রোহিঙ্গা ইস্যু। রোহিঙ্গা ইস্যুতেও চীন চেষ্টা করছে ইতিবাচকভাবে সমাধানের জন্য। বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং চীন যারা ত্রিপাক্ষিকভাবে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কাজ করতে চেষ্টা করছে। কাজেই চীনাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক শুধু দ্বিপাক্ষিক তা নয়। এর বাইরেও উপাদান আছে। চীন যেহেতু বড় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে, এশিয়া অঞ্চলের প্রধান হিসেবে পরিগণিত হয়েছে, কাজেই আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সঙ্গে সঙ্গে চীনের সাথে আমাদের ত্রিপাক্ষিক সম্পর্কের যে ধারাবাহিকতা তা রক্ষা করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।  কাজেই বাংলাদেশের প্রতিবেশী কূটনীতির ফলে ভারত ও চীনের সঙ্গে আমাদের যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক তা এশিয়া মহাদেশের দেশগুলোসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের নিকট প্রতিবেশী কূটনীতির দিক থেকে দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরে। আমরা আমাদের প্রতিবেশী এই দু’দেশের সঙ্গে সুসম্পর্কের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার মাধ্যমে কূটনৈতিক বিশ্বে বাংলাদেশ দৃঢ় অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিকভাবে মোটামোটিভাবে আলোচিত হচ্ছে। যার ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের জন্য একটি ইতিবাচক কূটনৈতিক জায়গা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম নিকটতম প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার। যা বার্মা নামেও পরিচিত। ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য মিয়ানমার ৬তম দেশ হওয়ায়, ৫২ বছরেরও বেশি সময় হয়েছে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শুরু করেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, দুই রাষ্ট্র বিভিন্ন কূটনৈতিক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে চালচলন করেছে, তা সত্ত্বেও, সহযোগিতা সবসময়ই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে বাংলাদেশের অনেক মানুষ জীবিকার সন্ধানে বার্মায় (বর্তমানে মিয়ানমার) যাতায়াত করতেন। তখন থেকেই বার্মার (মিয়ানমার) সঙ্গে এ দেশের মানুষের একটা অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ভারত বাদে একমাত্র মিয়ানমারের সঙ্গেই বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত ভূকৌশলগত কারণে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  মিয়ানমার বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ শুধু চীনের সঙ্গেই নয়, সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়েছে ভারতের সঙ্গেও। ভারত ও চীন পাল্লা দিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলছে। ভারত ও চীনের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষাকারী বাংলাদেশও মিয়ানমারের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে সমানতালে। বহুখাতভিত্তিক কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতাবিষয়ক বঙ্গোপসাগরীয় উদ্যোগ বা বিমসটেকের সাত সদস্য দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আছে। এই বিমসটেকের মাধ্যমেও দুই দেশের বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্পর্ক বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। মিয়ামারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্পর্ক বৃদ্ধির অনেক সুযোগ আছে। গ্যাস ও বিদ্যুৎ আমদানির মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে জ্বালানি নিশ্চয়তা লাভ করতে পারে।  দুই দেশ যৌথ উদ্যোগে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করতে পারে। বাংলাদেশ মিয়ানমারের অবকাঠামো উন্নয়নেও অবদান রাখতে পারে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও অন্যান্য দাতাগোষ্ঠীর অর্থায়নে প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়ে নির্মাণের মাধ্যমেও দুই দেশের মধ্যে স্থল যোগাযোগ বাড়তে পারে। বাংলাদেশ-ভারত এবং বাংলাদেশ-চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ন্যায় প্রতিবেশী কূটনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ-মিয়ানমার দু’দেশই সমানভাবে লাভবান হওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবেশী কূটনীতিতে এই তিন দেশ ছাড়াও সার্কভুক্ত দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দেশের সাথে বাংলাদেশের রয়েছে বেশ ভালো কূটনৈতিক সম্পর্ক। যার ফলে প্রতিবেশী কূটনীতিসহ বিশ্ব কূটনীতিতে বাংলাদেশের রয়েছে অনন্য অবস্থান। প্রতিবেশী কূটনীতিসহ বিশ্ব কূটনীতিতে বাংলাদেশের এমন দৃঢ় অবস্থানে পিছনে শক্তি হিসেবে কাজ করেছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্ব ও কঠোর পরিশ্রম। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা গত কয়েক দশক ধরে দেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার নেতৃত্বে রয়েছেন। তাঁর নেতৃত্ব শৈলী, বাস্তববাদিতা, দূরদর্শিতা এবং গতিশীলতা গভীর রাজনৈতিক উপলব্ধির পরিচায়ক। অর্থনৈতিক কূটনীতি শেখ হাসিনার পররাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি। বাংলাদেশের অর্থনীতি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। শেখ হাসিনা বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টের লক্ষ্যে, বাণিজ্য অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে বৈচিত্র্যময় করতে কূটনৈতিক মাধ্যম ব্যবহার করেছেন।  ‘লুক ইস্ট’ নীতির মতো উদ্যোগগুলো এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করেছে, যখন বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফের মতো বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সম্পৃক্ততা উন্নয়ন এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার সুবিধা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল কূটনীতির কারণেই বাংলাদেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধির অনন্য অধ্যায়ে প্রবেশ করে। উন্নীত হয় নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে। মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের সামনে মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  বাংলাদেশ যেভাবে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে, তা বিশ্বসভায় অনেক বেশি প্রশংসিত হয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আছে বলেই কূটনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ এতোটা এগিয়ে গিয়েছে। প্রতিবেশী কূটনীতিতে বাংলাদেশের সুসংহত এই অবস্থান ধরে রাখতে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। আমার বিশ্বাস শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী কূটনীতিতে নয় বরং একদিন বিশ্ব কূটনীতির রোল মডেলে পরিণত হবে। ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া : উপাচার্য, (রুটিন দায়িত্ব) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক চেয়ারম্যান, ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
২১ জুন, ২০২৪

প্রতিবেশী বৃদ্ধের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৫) একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ফুল চাঁন মিয়া নামের এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।  বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানান র‍্যাব-১১-এর মিডিয়া অফিসার মেজর অনাবিল ইমাম। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর দাদা মঙ্গলবার সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই থানায় বৃদ্ধকে হস্তান্তর করা হয়েছে।  সোনারগাঁ থানা পুলিশ ফুল চাঁন মিয়াকে দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। মামলায় বলা হয়, সোনারগাঁ পৌর এলাকার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওই ছাত্রী ৮ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক প্রয়োজনে প্রতিবেশী ফুল চাঁন মিয়ার বাড়িতে যায়। এ সময় তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরে আরও দুই দফায় ধর্ষণ করা হয়। গত সোমবার বিকেলে ফের ওই ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিলে ভুক্তভোগী আত্মহত্যার হুমকি দেয় এবং পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি জানায়। এতে এলাকায় ঘটনা জানাজানি হলে ফুল চাঁন বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। সোনারগাঁ থানার ওসি এস এম কামরুজ্জামান বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে বৃদ্ধকে র‍্যাব সদস্যরা গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল’
পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বিশ্বাস ও বন্ধুত্বের শক্তিতে বলিয়ান বাংলাদেশ ভারত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও কৌশলী নীতিতে গত দেড় দশকে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এক প্রশংসনীয় উচ্চতায় পৌঁছেছে। এর সঙ্গে বন্ধুরাষ্ট্র ভারত-নেপালের ঘনিষ্ঠ আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সহযোগিতা আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরও ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এতটা মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে যা বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত।  শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভারতের কলকাতায় ইন্দো বাংলা ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের মৈত্রী সম্মেলন যোগ দিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।  বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক রক্তের অক্ষরে লেখা উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত সরকার এবং তাদের জনগণ বাংলাদেশকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছিল। ভারতের অসংখ্য সাহসী সৈনিক ও জনগণ আমাদের জন্য জীবন দিয়েছে। এক কোটি বাঙালি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, খাবার, চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহসহ সকল সহযোগিতা ভারতের কাছ থেকে আমরা পেয়েছি। বাংলাদেশ-ভারতের মিত্র বাহিনীর অভিযানে আমরা ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।  প্রধানমন্ত্রীর উদ্বৃতি দিয়ে নানক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথায় বলি, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস ভারতীয় শহীদদের রক্ত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে রচিত হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদের আত্মত্যাগ- এ দুটি দেশেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ বাংলাদেশ ও ভারতের মেলবন্ধন তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আমরা যেমন ভারতের কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছি। সেই সঙ্গে সাংস্কৃতিক, সামাজিক সহযোগিতার জোরদারে উভয় দেশে জনগণের মধ্যে নানা ক্ষেত্রে যোগাযোগ হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ-ভারত এবং নেপালের  সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ।  বিভিন্ন সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরের সফলতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, সর্বশেষ ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে ভিসা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, আঞ্চলিক যোগাযোগ, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা সহযোগিতা অর্থনৈতিক ও অন্য বিষয়গুলো চুক্তি সমঝোতা স্বাক্ষর হয়। বাংলাদেশ-ভারত বড় ব্যবসায়িক বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে। টানা চতুর্থবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সাথে ভারতের বাণিজ্যিক ব্যবস্থা ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। দিমুখী বাণিজ্যে অচিরেই ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি হতে পারে অনুমান করা হয়। বাংলাদেশ ও ভারত ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব বর্তমান সামগ্রিক বন্ধুত্বের জায়গায করে নিয়েছে।  তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একসাথে জঙ্গি মোকাবিলা আঞ্চলিক এবং আঞ্চলিক বাণিজ্য সহযোগিতা সংযোগ কৌশলগত বিষয়ে অংশীদার হয়ে কাজ করার বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্পর্ক পারস্পরিক আস্থা সম্মান শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় গভীর থেকে গভীর হোক।   এ সময় উপস্তিত ছিলেন- ড. সুকান্ত মজুমদার এমপি, জি-২০ প্রেসিডেন্ট হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, ইন্দো বাংলা ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশন স্বপন মজুমদার, বিধায়ক অগ্নিমিত্র পাল, বিজ্ঞানী যিষ্ঞু বসু, অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। বাংলাদেশের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দি, শফিউল আরম চৌধুরী নাদেল,  দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, আলাউদ্দিন চৌধুরী নাসিম, এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দলিব ইলিয়াস প্রমুখ।
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

গাছ কাটার দ্বন্দ্বে স্বামী-স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম করল প্রতিবেশী
ঝালকাঠির নলছিটিতে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। রোববার (২১ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার ১নং ভৈরবপাশা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে ইশ্বরকাঠি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীর নাম জহর আলী হাওলাদার (৬০) ও তার স্ত্রী মিনারা বেগম (৫০)। আহত জহর আলী হাওলাদারের ছেলে হিরণ বলেন, সকালে মৃত কাঞ্চন হাওলাদারের ছেলে ইকবাল ও উজ্জল আমাদের জমির গাছ কাটছিলেন। বাবা তাদের বাধা দিলে এক পর্যায়ে লাঠি দিয়ে তারা আমার বাবাকে পেটাতে শুরু করে। পরে মা তাকে রক্ষা করতে গেলে, মাকে ধারালো অস্ত্রের কোপে জখম করে। আমার বাবা ঘাড়, পিঠ, মাথা ও হাতে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। মায়ের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। এরপরে স্থানীয় লোকজন জহর আলী হাওলাদার ও তার স্ত্রীকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। মিনারা বেগমের মাথায় ১৪টি সেলাই লাগে। এ বিষয়ে নলছিটি থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে নলছিটি থানার এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। জমিজমা নিয়ে তাদের বিরোধ চলছে। বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা চলমান।
২১ জানুয়ারি, ২০২৪

প্রতিবেশী দেশ থেকে আমদানি হচ্ছে দশ হাজার মেগাওয়াট
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের দিকে ঝুঁকেছে। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশও দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। তা ছাড়া দেশে বেশ কয়েকটি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র, একটি বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে। এ ছাড়া একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র আগে থেকেই ছিল। কর্মকর্তারা জানান, সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা-২০২৩ অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ২০৫০ সালের মধ্যে বার্ষিক ৫০ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ওয়াট/আওয়ার ক্লিন এনার্জি আমদানির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে ৬১ দশমিক ৯ মিলিয়ন টন কার্বন ডাইঅক্সাইডের সমতুল্য গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ অবস্থায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন এ প্রসঙ্গে কালবেলাকে বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। বর্তমানে চাহিদা মেটাতে উচ্চমূল্যের ডিজেল চালিত কেন্দ্রগুলো চালাতে হচ্ছে। নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ানো গেলে উচ্চমূল্যের বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে আসবে। এজন্য আমরা প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে উৎপাদিত বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা করছি। কারণ দেশে এই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে পরিমাণ স্থানের প্রয়োজন, তা আমাদের নেই। জানা গেছে, নেপাল থেকে প্রথমবারের মতো ৪০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। পর্যায়ক্রমে দেশটি থেকে আরও ৭ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। ভারতীয় গ্রিড লাইনের মাধ্যমে এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসবে। এ ছাড়া ভারতের রাজস্থান থেকে আরও এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। আগামী বছর এই বিদ্যুৎ দেশে আসবে। এ ছাড়া ভুটান থেকেও বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে আলোচনা চলছে।
২০ ডিসেম্বর, ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করছে রাশিয়ার প্রতিবেশী ফিনল্যান্ড
রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ ফিনল্যান্ড আগামী সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি সামরিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করবে। এই চুক্তির আওতায় নর্ডিক দেশটির প্রতিরক্ষা সহায়তার অংশ হিসেবে তাদের দেশে মার্কিন সেনা ও সামরিক রসদ আসবে। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) ফিনিশ সরকার এ তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এর আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে চলতি বছরের শুরুতে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দেয় ফিনল্যান্ড। চুক্তি সম্পর্কে ঘোষণার আগে সরকারি কর্মকর্তারা বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের এই চুক্তির উদ্দেশ্য হলো সংঘাতের সময় ফিনল্যান্ডে দ্রুত সামরিক বাহিনীর প্রবেশ এবং সহায়তার অনুমতি দেওয়া। ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিনা ভ্যালটোনেন সাংবাদিকদের বলেন, সব কিছু নিয়ে আলাদাভাবে একমত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এটি শান্তিকালীন কার্যক্রম সহজ করবে। তবে সংকটের সময় এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কর্মকর্তারা বলছেন, চুক্তির আওতায় দেশের ১৫টি স্থাপনা ও এলাকা তালিকাভুক্ত করেছে ফিনল্যান্ড। এসব স্থাপনা ও এলাকায় মার্কিন সামরিক বাহিনী কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই প্রবেশ করতে পারবে এবং সামরিক সরঞ্জাম ও গোলাবারুদ সংরক্ষণ করতে পারবে। গত সপ্তাহে ফিনল্যান্ডের প্রতিবেশী সুইডেনও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একই ধরনের সামরিক চুক্তি করেছে। এই চুক্তির আওতায় মার্কিন সামরিক বাহিনীকে চারটি বিমান ঘাঁটি, একটি বন্দর ও পাঁচটি সামরিক ঘাঁটিসহ ১৭টি এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেয় দেশটি। ফিনল্যান্ড সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হলেও সুইডেন সদস্য নয়। তুরস্ক ও হাঙ্গেরির বাধায় সুইডেনের যোগদান আটকে রয়েছে।
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩

বাংলাদেশ বিশ্বস্ত প্রতিবেশী : ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
বাংলাদেশকে বিশ্বস্ত প্রতিবেশী হিসেবে অভিহিত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) এ কথা বলেন তিনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এফওসি বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় পর্যালোচনা করার লক্ষ্যে একটি বিস্তৃত আলোচনার জন্য একটি মূল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশকে বিশ্বস্ত প্রতিবেশী হিসেবে অভিহিত করেন এবং দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত গ্লোবাল সাউথ এবং জি-২০ এর ভার্চুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণের প্রশংসা করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে নেতৃত্বের অঙ্গীকারের আশ্বাস দেন। তিনি এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর জোর দেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সির অধীনে একমাত্র দক্ষিণ এশিয়ার নেতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ‘জি-২০ লিডারস সামিট’-এ যোগদানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান। উভয় পররাষ্ট্র সচিব বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং ২০২৩ সালের অগ্রগতির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। দুই প্রধানমন্ত্রীর দ্বারা সংযোগ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সম্প্রতি কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, এ ধরনের সহযোগিতা শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বাস্তব ফল প্রতিফলিত করে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করেন। এর মধ্যে তিস্তা চুক্তি এবং অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন চুক্তির প্রাথমিক সমাপ্তি, বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্য থেকে বাণিজ্য বাধা দূর করা এবং দুই দেশের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব তার প্রতিপক্ষকে জনগণের মধ্যে যোগাযোগ আরও গভীর ও প্রসারিত করার অনুরোধ জানান। তিনি রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ভারতের সহায়তাও চেয়েছেন। পরের রাউন্ড ফরেন অফিস কনসালটেশন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। পররাষ্ট্র সচিব ২৫ নভেম্বর ঢাকায় ফিরবেন।
২৪ নভেম্বর, ২০২৩

এবার রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশে সেনা পাঠাচ্ছে জার্মানি
রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ লিথুয়ানিয়ায় সেনা মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জার্মানি। এরই মধ্যে এ বিষয়ে একটি রোডম্যাপ প্রণয়ণে কাজ শুরু করে দিয়েছে দুই দেশ। গতকাল সোমবার (২ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যম ইআরআরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস। জার্মানি ও লিথুয়ানিয়া পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য। কয়েক সপ্তাহ আহে লিথুয়ানিয়ায় আরও ৪ হাজার জার্মান সেনা মোতায়েনের কথা জানিয়েছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস। অবশ্য ন্যাটোর ব্যাটলফ্রন্টের অংশ হিসেবে বর্তমানে লিথুয়ানিয়ায় দেড় হাজার জার্মান সেনা অবস্থান করছে। জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ন্যাটোর পূর্ব ইউরোপীয় উইংয়ের প্রতি সংহতি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে সেনা মোতায়েনের আগে এখনো অনেক বাকি। আগামী নভেম্বরের শেষ দিকে বা ডিসেম্বরের শুরুর দিকে এ বিষয়ে একটি রোডম্যাপ প্রণয়নের প্রত্যাশা করছে জার্মানি ও লিথুয়ানিয়া। এর আগে গত রোববার (১ অক্টোবর) ইউক্রেনে ব্রিটিশ সেনা মোতায়েন করার কথা জানিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস। রুশ সেনাদের মোকাবিলায় জেলেনস্কি বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতেই তাদের মোতায়েন করার কথা জানিয়েছিল যুক্তরাজ্য। যদিও পরে মস্কোর হুমকিতে এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে যুক্তরাজ্য। স্থানীয় সময় রোববার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক জানান, এখনই ইউক্রেনের ব্রিটিশ সেনা মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা নেই। যদিও এর আগে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস কিয়েভের সহায়তায় সেখানে সেনা মোতায়েনের কথা জানিয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে বিপুল সামরিক সহায়তা দিলেও সরাসরি সেনা মোতায়েন থেকে বিরত থেকেছে পশ্চিমা দেশগুলো। রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর সরাসরি সংঘাত এড়াতেই এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে না তারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমনটা করা হলে তা হবে পারমাণবিক হামলার ও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর চূড়ান্ত ধাপ। এর আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস জানান, রুশ সেনাদের মোকাবিলায় ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে উন্নত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে কিয়েভে সামরিক প্রশিক্ষক পাঠাতে পারে যুক্তরাজ্য। পশ্চিমা বহুদেশ ইউক্রেনের সেনাদের নিজ দেশে প্রশিক্ষণ দিলেও এখনো কেউ কিয়েভে সামরিক প্রশিক্ষক পাঠায়নি। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। তিনি জানান, ইউক্রেনে যদি ব্রিটিশ সেনা পাঠানো হয় তবে তারা রুশ বাহিনীর বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।
০৩ অক্টোবর, ২০২৩
X