শাহ আমিন গ্রুপের ২ পেট্রোল পাম্প বন্ধের নির্দেশ
১৬৩ কোটি টাকা ঋণখেলাপি হওয়ায় চট্টগ্রামভিত্তিক পরিবহন কোম্পানি শাহ আমিন গ্রুপের তিন কর্ণধারের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে তিনটি অর্থঋণ মামলা করে ইসলামী ব্যাংক চাক্তাই শাখা। এসব মামলায় তাদের দুটি পেট্রোল পাম্পে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ রাখতে মেঘনা পেট্রোলিয়ামকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম অর্থ ঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রেজাউল করিম কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আদেশের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, ইসলামি ব্যাংকের অর্থায়নে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর শিকলবাহা ও সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে দুটি পেট্রোল পাম্প পরিচালনা করে বিপুল মুনাফা অর্জন করলেও খেলাপি ঋণ পরিশোধে এগিয়ে আসছে না। ঋণ পরিশোধে এগিয়ে না আসায় বাদী ব্যাংকের দরখাস্তের ওপর উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ও মেঘনা পেট্রোলিয়ামকে শাহ আমিন গ্রুপের দুই ফিলিং স্টেশনে জ্বালানি তেল বিক্রি না করতে নির্দেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৬৩ কোটি টাকা ঋণখেলাপি হওয়ায় শাহ আমিন গ্রুপের তিন কর্ণধারের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে মামলা করে ইসলামী ব্যাংক। মামলার আসামিরা হলেন শাহ আমিন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমদ নবী চৌধুরী, তার স্ত্রী ও কোম্পানির চেয়ারম্যান মমতাজ বেগম এবং ছেলে (পরিচালক) সৈয়দ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। এর আগে আদালতের সমন জারির দেড় বছরেও জবাব দাখিল না করায় চলতি বছরের ৬ জুন তাদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদলত। ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে অয়েল, মোটর পার্টস ও পেট্রোল পাম্পের ব্যবসা করে আসছেন আহমদ নবী চৌধুরী। এরপর ২০০৫ সাল থেকে পরিবহন ব্যবসায়ও প্রায় এক দশক রমরমা ব্যবসা করে শাহ আমিন। পরে ২০০৭ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে ১২৫ কোটি টাকার ঋণ নেয় গ্রুপটি। ব্যাংকের টাকায় ব্যবসা সম্প্রসারণ করে লুব্রিকেন্টস অয়েল, গ্রিজ ও ব্র্যাক অয়েল উৎপাদনে। কিন্তু অদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও বিপণনের কারণে কয়েক বছরের মাথায় বন্ধ হয়ে যায় গ্রুপটির ‘বস’ লুব্রিকেন্টস। এতে লোকসানে পড়ে আটকে যায় ব্যাংক ঋণ।
২১ নভেম্বর, ২০২৩

পেট্রোল পাম্প ধর্মঘট প্রত্যাহার
সরকারের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন পেট্রোল পাম্প ও ট্যাঙ্ক লরি মালিক-শ্রমিক নেতারা। এ সময়ের মধ্যে মালিক-শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কার্যালয়ে ধর্মঘটে যাওয়া মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানান পেট্রোল পাম্প ও ট্যাঙ্ক লরি মালিক-শ্রমিক নেতারা। তিন দফা দাবি আদায়ে রোববার ভোর থেকে সারা দেশে জ্বালানি তেল উত্তোলন, পরিবহন ও বিক্রিতে ধর্মঘট পালন শুরু করে পেট্রোল পাম্প ও ট্যাঙ্ক লরি শ্রমিক-মালিকদের একাংশ। এর ফলে ভোর থেকে খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, পার্বতীপুর, চট্টগ্রামসহ দেশের অধিকাংশ ডিপো থেকে তেল উত্তোলন বন্ধ ছিল। খুলনা ও রাজশাহীতে পেট্রোল পাম্প বন্ধ ছিল। ঢাকায় পেট্রোল পাম্পে তেল বিক্রি অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যার পর সংকট দেখা দেয়। কারণ ডিপো থেকে তেল পরিবহন প্রায় বন্ধ থাকায় পাম্পগুলোতে মজুত কমে যায়। এ প্রেক্ষাপটে রাত ৮টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিপিসি কার্যালয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিপিসির পরিচালক (মার্কেটিং) অনুপ বড়ুয়া। বৈঠক শেষে রাত ৯টার পর আন্দোলনকারী নেতারা উপস্থিত সাংবাদিকদের আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা জানান। ধর্মঘটে যাওয়া পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (একাংশ) মহাসচিব মিজানুর রহমান বলেন, সরকারের আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট ৩০ তারিখ পর্যন্ত প্রত্যাহার করেছি। এর মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ হবে বলে আশ্বাস পেয়েছি। বিপিসির পরিচালক (মার্কেটিং) অনুপ বড়ুয়া কালবেলাকে বলেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পেট্রোল পাম্প ও ট্যাঙ্ক লরি মালিক-শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট স্থগিতে রাজি হয়েছেন। তাদের দাবি নিয়ে বিপিসি কাজ করছে। এর আগে সকালে কারওয়ান বাজারের যমুনা অয়েল কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির একাংশের সভাপতি মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, যারা ধর্মঘট ডেকেছে তারা সমিতির কেউ না। তিনি বলেন, যেহেতু সরকার ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি মানার আশ্বাস দিয়েছে, তাই এখন আন্দোলন করার যুক্তি নেই। বর্তমানে প্রতি লিটার জ্বালানি তেল বিক্রি করে ২০ পয়সা কমিশন পায় পেট্রোল পাম্প। এটি বাড়িয়ে বিক্রয় মূল্যের সাড়ে ৭ শতাংশ করার দাবি তাদের। বাকি দাবির মধ্যে আছে পেট্রোল পাম্পের ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট ও ট্যাঙ্ক লরি ভাড়ার ওপর ভ্যাট সংযুক্ত নয়; এটি আলাদা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ। ২৫ বছরের বেশি বয়সী ট্যাঙ্ক লরির ইকোনমিক লাইফের জন্য পৃথকভাবে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ। ইতোমধ্যে পেট্রোল পাম্পের ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে। সরকার অনুমোদিত পরিবেশকদের নিয়মিত জ্বালানি তেল সরবরাহ করে বিপিসির অধীন থাকা তিন রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা। এ জ্বালানি তেল কিনে নিয়ে ব্যবসায়ীরা নিজস্ব পেট্রোল পাম্প থেকে ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেন গ্রাহকের কাছে বিক্রি করেন।
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

একাংশের কর্মসূচি পালন আজ / পেট্রোল পাম্প ধর্মঘট নিয়ে বিভক্ত মালিক-শ্রমিকরা
জ্বালানি তেল উত্তোলন, বিতরণ ও পরিবহনের সঙ্গে জড়িত পেট্রোল পাম্প মালিক ও শ্রমিকরা পরস্পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছেন। একটি অংশ জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে আজ রোববার রাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল উত্তোলন, বিতরণ ও পরিবহন বন্ধের ডাক দিয়েছে, অন্যপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, সরকারের আশ্বাসের কারণে সবকিছু স্বাভাবিক থাকবে। এদিকে, প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ধর্মঘটে যাওয়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের এক কর্মকর্তা। অন্যদিকে ধর্মঘটে যাওয়া সংগঠনের নেতারা জানান, সরকার শুধু একটি দাবি মেনেছে। আজকের ধর্মঘট আগামীকাল সোমবার প্রত্যাহার হতে পারে। গতকাল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মীর আহসান উদ্দিন পারভেজ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তাদের দাবি ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নে আশ্বস্ত করা হয়। সে পর্যন্ত সব ডিপো থেকে তেল উত্তোলন স্বাভাবিক রাখা হবে। অন্যদিকে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান রতন স্বাক্ষরিত আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়ন না করায় আজ থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ করে কর্মসূচি পালন করা হবে। সংগঠনটির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্যাঙ্কলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, খুলনা বিভাগীয় ট্যাঙ্কলরি শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ট্যাঙ্কলরি শ্রমিক কল্যাণ সমিতি। মালিক সমিতির একাংশের মহাসচিব মো. মিজানুর রহমান রতন দাবি করেন, তারাই বৃহত্তর অংশ। ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের একাংশের মালিক-শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে আছেন। অন্য অংশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে সংগঠনটির পাঠানো প্যাডে দেওয়া নম্বরগুলোও বন্ধ পাওয়া যায়।
০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

জ্বালানি তেল উত্তোলন বন্ধের ঘোষণা
দাবি বাস্তবায়িত না হলে ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতি এবং বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দষ্টিকালের জ্বালানি তেল উত্তোলন এবং পরিবহন থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি।  রোববার (২৭ আগস্ট) দুপুরে ধানমণ্ডির সীমান্ত স্কয়ারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ পেট্রল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল। তারা বলেন, আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন ও সেই সঙ্গে গেজেট প্রকাশ না করা হলে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দষ্টিকালের জন্য সারা দেশের সব জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন থেকে বিরত থাকবে। তিন দফা দাবি হলো- ১. জ্বালানি তেল বিক্রয় কমিশন ৭.৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা। ২. পেট্রল পাম্পের ব্যবসায়ীরা যে কমিশন এজেন্ট, তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা।  ৩. (ক) ট্যাংকলরি ভাড়ার ওপর ভ্যাট সংযুক্ত নয়, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করতে হবে। (খ) ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে ট্যাংকলরির ইকোনমিক লাইফের জন্য আলাদাভাবে সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করতে হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান রতন, বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব শেখ ফরহাদ হোসেন, বাংলাদেশ পেট্রল পাম্প মালিক সমিতির রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল, রাজশাহী বিভাগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল আউয়াল জ্যোতি এবং খুলনা বিভাগের সভাপতি আবদুল গাফফার বিশ্বাস ও কুমিল্লা জেলার সভাপতি মো. কামাল চৌধুরীসহ বিভিন্ন বিভাগ ও জেলার নেতারা।
২৭ আগস্ট, ২০২৩
X