যমুনায় একদিনে ৩৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে টাঙ্গাইলে যমুনা নদীতে একদিনে ৩৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বহী প্রকৌশল মো.সাজ্জাদ হোসেন। মঙ্গলবার (২ জুলাই) পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, জেলায় ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত যমুনা নদীর পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে বিপৎসীমার ১০ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী নূরুল আমিন জানান, দু’দিন আগেও টাঙ্গাইলের যমুনা নদীসহ জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করে। অপরদিকে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে যমুনাসহ জেলার সব নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করছে।
০২ জুলাই, ২০২৪

যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বাড়ছেই। ফলে প্লাবিত হচ্ছে যমুনার অভ্যন্তরীণ চরাঞ্চলের ফসলি জমি। গত পাঁচ দিন ধরেই একটানা পানি বাড়ছে যমুনায়। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ নদনদীর পানিও বেড়ে চলেছে। পাউবো বলছে, আরও তিনদিন পানি বাড়বে এবং বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।  শনিবার (২২ জুন) সকালে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৮ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা: ১২ দশমিক ৯০ মিটার)।  অপরদিকে কাজিপুর মেঘাই পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮২ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার নিচ প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১৪ দশমিক ৮০ মিটার)।  যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ৫টি উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলোর ফসলি জমি প্লাবিত হতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের নিম্নভূমি। বন্যা আতংক বিরাজ করছে চরাঞ্চলের মানুষের মাঝে।  সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আরও তিন দিন যমুনায় পানি বাড়বে। এতে বিপৎসীমা অতিক্রম করে ছোট থেকে মাঝারি বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২২ জুন, ২০২৪

কুড়িগ্রামে সব নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
কুড়িগ্রামে টানা কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদনদীর পানি বাড়তে থাকা অব্যাহত রয়েছে। জেলার নদ-নদীগুলোর মধ্যে ধরলা ও তিস্তা নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  বৃহস্পতিবার (২০ জুন) তিস্তার পানি বেড়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনো বিপৎসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ার কারণে নদনদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে এসব এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা। ডুবে গেছে সবজিক্ষেতসহ বিভিন্ন উঠতি ফসল। সরেজমিনে সদর উপজেলার যাত্রাপুরের রসুলপুর, পোড়ার চর ও কালির আলগা ও উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লারহাট, খুদিরকুঠি, ভোগলের কুঠি, এলাকার একাংশে গিয়ে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদের পানির তীব্র স্রোতের কারণে বিশাল এলাকাজুড়ে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা নদের ভাঙনে ভেঙে যাওয়া ভিটে থেকে তাদের বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। চারদিকে বন্যার পানি থাকায় শুকনা জায়গার অভাবে এসব নদীভাঙা মানুষ আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঠাঁই নিয়েছে। গত এক সপ্তাহের ভাঙনে প্রায় ১৫-২০টি পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়েছে। রসুলপুর গ্রামের জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মাহাবুবার রহমান বলেন, মসজিদের খুব কাছ দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পানির স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে, আমরা চিন্তায় পরেছি মসজিদটি ভাঙনে পরতে পারে। এ ছাড়াও তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকায় রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা বুড়িরহাট স্পার বাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ছাড়াও তিস্তা নদীর তীরবর্তী থেতরাই ইউনিয়নের গোরাইপিয়া, জুয়ান সতরা, চর নিয়াসা ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখা, গতি আসাম চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ৯ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের আরো প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে প্রায় অর্ধশতাধিক চর প্লাবিত হয়েছে। এসব নদনদী তীরবর্তী অঞ্চলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুড়িগ্রামের তথ্যমতে, দুধকুমার নদের পানি সমতলে বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমায় অবস্থান করছে ও ধরলা নদীর পানি তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ৪৪  সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি বেড়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ কালবেলাকে বলেন, কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে নদনদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের উদ্ধারের জন্য চারটি স্পিড বোট প্রস্তুত রয়েছে। বন্যার্তদের জন্য নগদ ১২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ও ২৫১ টন চাল প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলার যাত্রাপুরের বিস্তীর্ণ চরে নদী ভাঙনের শিকার ৫০টি পরিবারে ইতোমধ্যে শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।
২১ জুন, ২০২৪

নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
নেত্রকোনায় পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতে ক্রমাগত বাড়ছে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। ফলে বন্যার আশঙ্কা করছেন প্রশাসনসহ এলাকাবাসী। গত তিনদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার প্রধান প্রধান নদীগুলোর মধ্যে উব্দাখালী নদীর পানি কলামাকান্দায় বিপৎসীমার ৪৭ সেমি ওপর দিয়ে বইছে। এ ছাড়া জেলার প্রধান নদী ধনু-কংশ-সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে বলে জানিয়েছে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাসাবাড়ির আঙিনায় পানি উঠতে শুরু করেছ। এ ছাড়া গ্রামীণ সড়কে পানি উঠায় চলাচলে বেগ পেতে হচ্ছে। পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বসত ঘরে পানি উঠবে এবং সুপেয় পানি ও খাবার সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। কলমাকান্দায় উব্দাখালী নদীর পানি বেড়ে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নেই পানি ঢুকেছে। এর মধ্যে সদর, বড়খাপন ও পোগলা ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা ও কৈলাটি, রংছাতি ও খারনৈসহ বাকি ৫টি ইউনিয়নের কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুকনো খাবার, আশ্রয়কেন্দ্র, উদ্ধারকারী দল, মেডিকেল টিমসহ সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান কলমাকান্দা ইউএনও। এদিকে জেলার হাওর উপজেলা মদন মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীর লোকালয়ে উজানের পানি ডুকতে শুরু করেছে। কলমাকান্দা ইউএনও আসাদুজ্জামান বলেন, কলমাকান্দা উপজেলা প্রশাসন যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
২০ জুন, ২০২৪

পানি বৃদ্ধি ঠেকাতে কাপ্তাই হ্রদে খুলল ১৬ গেইট
কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লেকের উজান ও ভাটি এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণে ১৬টি গেট ছয় ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়েছে।   শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে এই গেটগুলো খোলা হয়। ১৬টি গেট দিয়ে ৯ হাজার কিউসেক পানি ছাড়ার কথা জানিয়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকাল ১০টা থেকে হ্রদের উজান ও ভাটির এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেট ছয় ইঞ্চি করে খোলা হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে। এ ছাড়াও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতি সেকেন্ডে ২৫ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। পানি ও বৃষ্টি বৃদ্ধি পেতে থাকলে গেট খোলার পরিমাণ বাড়ানো হবে। বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে পানি আছে ১০৭.৫৪ ফুট এমএসএল। কাপ্তাই হ্রদে সর্বোচ্চ পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএলের (মিনস সি লেভেল)। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে কাপ্তাই হ্রদ খনন না হওয়ায় পলি জমে হ্রদের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় অল্প পানিতেই হ্রদ পরিপূর্ণ হয়ে যায়।  অপরদিকে প্রতি দিনই বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে জেলা শহরের অন্যতম প্রধান সংযোগ সড়ক ফিসারি বাঁধে এবং নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরে প্রবেশ করছে হ্রদের পানি, দেখা দিয়েছে জনদুর্ভোগ। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫টি ইউনিট থেকে মোট ২০০ থেকে ২০৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়েছে।
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

যমুনা ও তিস্তায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় এবং ভারতের উজান থেকে আসা পানির ঢল কিছুটা কমায় উত্তরে নদনদীর পানি কিছুটা কমেছে। তবে তিস্তা ও যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ছুঁইছুঁই করছে বিপৎসীমা। পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের বসতভিটা ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বসতভিটা ছেড়ে অন্য স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন বন্যাকবলিতরা। নদী তীরবর্তী হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তীব্র আকার ধারণ করেছে নদীভাঙন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর— সিরাজগঞ্জ: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার মাত্র ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সোমবার সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৭৩ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে কাজীপুরের মেঘাই পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৫৫ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১৪ দশমিক ৮০ মিটার)। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আরও দু-এক দিন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিপৎসীমা অতিক্রমও করতে পারে। তবে ভারি বন্যার আশঙ্কা নেই। দুদিন পর থেকে পানি কমতে শুরু করবে। লালমনিরহাট: উজানের ঢল ও বর্ষণে আবারও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে গত চার দিন থেকে নিম্নাঞ্চলের পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন। কমেনি ভোগান্তি। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি বেড়ে বিকেল ৩টায় বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আবারও বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর আগে গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে নদী তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। গত চার দিন থেকে তিস্তা চর এলাকা ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, উজান থেকে পাহাড়ি ঢল কম আসায় দ্রুত পানি কমতে শুরু করলেও সোমবার দুপুর থেকে আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে তিস্তা নদীর পানি। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আবারও প্লাবিত হবে নতুন নতুন এলাকা। কুড়িগ্রাম: ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে চতুর্থ দফা বন্যার পর পানি নেমে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দেখা দিয়েছে তীব্র নদীভাঙন। সরেজমিন দেখা যায়, জেলার উলিপুরে বন্যার পানি কমলেও তিস্তার ভাঙনে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তীরবর্তী মানুষ। এমনকি স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছে। টানা বৃষ্টি ও উজানি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে নদীভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার তিস্তা নদীবেষ্টিত দলদলিয়া ও থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার, অর্জুন, লালমসজিদ, ভেন্ডার পাড়া, কুমার পাড়া, ফকির পাড়া ও শেখের খামার এলাকার ভাঙন কবলিত মানুষরা। এসব এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। নিরুপায় হয়ে অন্যের জায়গায় অনাহারে অর্ধাহারে দিনাপাত করছেন। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নদীভাঙন এলাকায় আমরা জিও ব্যাগ ফেলে এবং প্রয়োজনীয় মালপত্রসহ সার্বক্ষণিক নদীভাঙন রোধে কাজ করে যাচ্ছি। মিরসরাই (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পাহাড়ি ঢলে বিধ্বস্ত হয়েছে একটি সেতুর নির্মাণাধীন বিকল্প সড়ক। এতে দুই ইউনিয়নের ১২ গ্রামের মানুষ, ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের। জানা গেছে, এক মাস আগে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সড়ক ভেঙে একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবছার কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার এনামুল হক সরকার বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো কারও হাত থাকে না। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কটি ভেঙে যায়। পানি প্রবাহ কমলে সড়কটি সংস্কার করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীকে এই সেতুর বিকল্প সড়ক পরিদর্শনের জন্য পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিকল্প সড়ক সংস্কারসহ সেতুর কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে।
২৯ আগস্ট, ২০২৩

সিরাজগঞ্জে যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, চরাঞ্চল প্লাবিত
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার মাত্র ১৭ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।  সোমবার (২৮ আগস্ট) সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৭৩ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কাজিপুরের মেঘাই পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৫৫ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ নিয়ে গত দুই মাসে তিন দফায় যমুনার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হলো।  এদিকে দফায় দফায় পানি বাড়ায় আবাদি জমি প্লাবিত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চরের কৃষকরা। কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিয়া মুন্সী বলেন, কয়েকদিন আগে চরাঞ্চলের জমি থেকে পানি নেমে গিয়েছিল। কিছু কিছু স্থানে কৃষকরা চাষাবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু আবারও পানি বাড়ায় বিপাকে পড়েছে এখানকার কৃষকরা। এখন শীতকালীন সবজি চাষের মৌসুম। দফায় দফায় পানি বেড়ে চরের আবাদযোগ্য জমিগুলো প্লাবিত হওয়ায় চাষাবাদ করতে পারছে না এ অঞ্চলের কৃষক।  মেছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ মাস্টার বলেন, ইতিমধ্যে চরের আবাদি জমি তলিয়ে বাড়িতেও পানি উঠতে শুরু করেছে। এ নিয়ে তিন দফায় পানি বেড়ে চাষাবাদ ব্যহত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষক।  সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের  উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আরও দু-একদিন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিপৎসীমা অতিক্রমও করতে পারে। তবে বন্যার আশঙ্কা নেই। দুদিন পর থেকে পানি কমতে শুরু করবে।
২৮ আগস্ট, ২০২৩
X