সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১
সংসদে অর্থমন্ত্রী / রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে ব্যাংকের পাওনা ৫১ হাজার কোটি
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ৫১ হাজার ৩৯১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে নোয়াখালী-২ আসনের সরকার দলের এমপি মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। মন্ত্রীর তথ্যানুযায়ী, সবচেয়ে বেশি পাওনা হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কাছে। বিএডিসির কাছে ব্যাংকগুলোর পাওনা ১৫ হাজার ৫৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা, চিনিকলগুলোর কাছে ৭ হাজার ৮১৩ কোটি ৬৮ লাখ, ফার্টিলাইজার, কেমিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে ৭ হাজার ২৫০ কোটি ৭১ লাখ, টিসিবির কাছে ৫ হাজার ১৮ কোটি ৬ লাখ এবং বাংলাদেশ বিমান করপোরেশনের কাছে ৪ হাজার ৪৪১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যান্ড কমিশনসহ (ইউজিসি) দেশের ১৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পাওনা রয়েছে। এদিকে প্রশ্নোত্তরে সংরক্ষিত আসনের ফরিদা ইয়াসমিন এক প্রশ্নে ৩০ ঋণখেলাপি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম জানতে চাইলে মন্ত্রী তা জানাতে পারেননি। ফরিদা ইয়াসমিন তার প্রশ্নে দেশের ৩০ ঋণখেলাপি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের নাম ও তাদের কাছে পাওনার পরিমাণ জানতে চান। জবাবে শীর্ষ ঋণখেলাপি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রণয়নের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে মন্ত্রী জানান। ভোলা-১ আসনের এমপি আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাময়িক হিসাব মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৮৪ মার্কিন ডলার। আওয়ামী লীগদলীয় এমপি নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৫ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১০ হাজার ৭৫২ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ সময়ে সব থেকে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। পটুয়াখালী-১ আসনের এ বি এম রুহুল আমি হাওলাদারের প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, মে ২০২৪ ভিত্তিতে দেশে বর্তমানে গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৪ হাজার ১৬১ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আইএমএফের বিপিএম-৬ অনুযায়ী, এ পরিমাণ ১৮ হাজার ৬৩৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সর্বশেষ মার্চ ২৪-ভিত্তিক গ্রস রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে ৪ মাসের আমদানি ব্যয় নির্বাহের সক্ষমতা রয়েছে। ঢাকা-১৪ আসনের মইনুল হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, বর্তমানে দেশে কর প্রদানকারীর সংখ্যা ১ কোটি ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৭৪৬ জন। এর মধ্যে মে ২০২৪ পর্যন্ত রিটার্ন দাখিল করেছেন ৪২ লাখ ৬২ হাজার ৭০৬ জন।
২৫ জুন, ২০২৪

ট্যানারি মালিকদের কাছে পাওনা ৩২ কোটি টাকা
ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে প্রায় ৩২ কোটি টাকা বকেয়া থাকায় এবার কোরবানির ঈদে চামড়া কেনা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন বগুড়ার ব্যবসায়ীরা। ট্যানারি মালিকরা সময়মতো বকেয়া পরিশোধ না করায় এবারও বগুড়ায় কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ধস নামতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন ট্যানারি মালিকের কাছে বগুড়ার ব্যবসায়ীদের অন্তত ৩২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এই টাকা আটকে রাখা হয়েছে। এক প্রকার জিম্মি হয়েই বগুড়ার ব্যবসায়ীরা ট্যানারিগুলোতে চামড়া সরবরাহ করছেন। গত বছর সেই টাকা পরিশোধ করার জন্য বগুড়া জেলা প্রশাসনের শরণাপন্ন হন ব্যসায়ীরা। কিন্তু তাতে ফল আরও উল্টো হয়েছে। ট্যানারি মালিকরা আগের ২২ কোটি টাকা তো পরিশোধ করেইনি আরও নতুন করে ১০ কোটি টাকা বকেয়া ফেলেছে। ফলে তাদের কাছে পাওনা ৩২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। গত ৩ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর ঢাকার বাইরে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এর বাইরে এবার প্রতি পিস গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ঢাকার বাইরে ১ হাজার টাকাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। বগুড়া জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কোরবানির ঈদে জেলায় গড়ে ৬০ হাজার পিস চামড়া কেনা-বেচা হয়। ঈদকে টার্গেট করে চামড়া ক্রয়-বিক্রয়ের প্রস্তুতি নেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। কিন্তু গত দুই মৌসুমে চামড়ার অস্বাভাবিক নিম্নমুখী দাম হতাশ করেছে ব্যবসায়ীদের। ট্যানারি মালিকরা সব সময় সিন্ডিকেট করে চামড়া কেনে এবং দাম পরিশোধের বেলাতেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অল্প করে টাকা দেয়, যা দিয়ে জেলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ব্যবসা চালাতে পারেন না। তাদের মতে, ছোট সাইজের একটি গরুর চামড়া ২০ থেকে ২২ বর্গফুট হয়ে থাকে। এবার সরকারি দর ৫৫ টাকা বর্গফুট হিসাবে ছোট সাইজের একটি গরুর চামড়ার দাম ন্যূনতম ১ হাজার ২০০ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু বাজারের যে পরিস্থিতি তাতে ওই সাইজের চামড়া ৬০০ টাকায় বিক্রি করাই কঠিন হয়ে পড়বে। বগুড়া জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ট্যানারি মালিকদের কাছে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২২ কোটি টাকা পাওনা ছিল। বকেয়া সেই টাকা আদায়ের জন্য ২০২৩ সালের ১৩ জুন তারা স্থানীয় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠক করে তার দপ্তরের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। উল্টো ট্যানারি মালিকরা আরও নতুন করে ১০ কোটি টাকা বকেয়া রাখেন। ফলে তাদের কাছে আমাদের এখন পাওনা ৩২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।’ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত বকেয়া টাকা পরিশোধের কোনো নিশ্চয়তা তারা পাননি। তিনি বলেন, টাকা পাওয়ার আশায় কয়েকদিন আগে তিনিসহ সমিতির নেতারা ঢাকায় গিয়েছিলেন। কিন্তু ট্যানারি মালিকরা কোনো টাকা-পয়সা পরিশোধ করেননি। তিনি বলেন, ‘আমাদের তো পুঁজি নেই। কী দিয়ে চামড়া কিনব?’ সমিতির সহসভাপতি বজলু প্রমাণিক জানান, চামড়া কেনার জন্য তারা ব্যাংকগুলো থেকেই আশানুরূপ কোনো ঋণ সুবিধা পাননি। যে কারণে চামড়া কেনার মতো প্রয়োজনীয় কোনো পুঁজিই তাদের হাতে নেই। পুঁজি সমস্যার কারণে বগুড়ায় চামড়া ব্যবসায়ীরা পেশা পরিবর্তন করছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সমিতির অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। বর্তমানে সমিতিতে কাগজে-কলমে ২৮৫ জন সদস্য থাকলেও তাদের সিংহভাগই আর ব্যবসার সঙ্গে নেই। কারণ এখানে পুঁজির খুব অভাব।’ বজলু প্রমাণিক ধারণা করছেন, যদি শেষ পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা পুঁজি না পায়, তাহলে গরুর চামড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার বেশি দরে কেনা সম্ভব হবে না। আর খাসি কিংবা বকরির চামড়া হয়তো ১০-২০ টাকার বেশি হবে না। বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ী মুঞ্জুর রহমান ট্যানারি মালিকদের কাছে পান প্রায় ১ কোটি ৬২ লাখ টাকা। টাকা আদায়ে নিয়মিত ধরনা দিচ্ছেন ট্যানারি মালিকদের কাছে। কিন্তু বেশি চাপ দেওয়ার সুযোগও নেই তার। মুঞ্জুর রহমান বলেন, সাত বছর ধরে কয়েকটি ট্যানারি কাছে এই টাকা পাই। কিন্তু আমরা চাপ দিতে পারি না তাদের। বেশি চাপ দিলে কোনো টাকাই দেবে না ট্যানারি মালিকরা। আবার লবণের দামও বাড়তি। এসব সংকটে পড়ে এই ব্যবসা চালাতে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে।
১৬ জুন, ২০২৪

‘ড্যানিস নিট ওয়্যারে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করুন’
ড্যানিস নিট ওয়্যারে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন (টিইউসি) কেন্দ্র'র সভাপতি ইদ্রিস আলী ও সাধারণ সম্পাদক কাজী রুহুল আমিন। বুধবার (১২ জুন) এক বিবৃতিতে গাজীপুরের ড্যানিস নিটওয়ারের শ্রমিকদের আইনানুগভাবে মে-২০২৪ পর্যন্ত প্রাপ্য বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবি জানান তারা।  বিবৃতিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের আইনানুগ পাওনা না দিয়ে মালিক বেআইনিভাবে কারখানা বন্ধ রেখে নানাভাবে ষড়যন্ত্র ও হয়রানি করে আসছে। গত ২৫ এপ্রিলের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি মোতাবেক ৫ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি হিসেবে গণ্য হওয়ায় শ্রম আইন অনুসারে সকল শ্রমিক কর্মচারী এপ্রিল মাসের পূর্ণ মজুরি প্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও কিছুসংখ্যক শ্রমিককে আংশিক মজুরি দিয়ে মজুরি দেওয়া হয়েছে বলে মালিকপক্ষ মিথ্যাচার করছে।  বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ দায়িত্বশীল হলে এতদিন শ্রমিকদের পাওনা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারত কিন্তু তা না করে চরম দায়িত্বহীন আচরণ করছে। সকল শ্রমিকদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী, শ্রম প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিকট আবেদন করে কোনো সমাধান না পেয়ে ঢাকায় শ্রম ভবনের সামনে ১৫ দিনব্যাপী লাগাতার অবস্থান, সমাবেশ ও মিছিলসহ নানাবিধ কর্মসূচি পালন করার ফলশ্রুতিতে ২৯ মে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়। সেখানে ত্রিপক্ষীয় একটি কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা মালিক প্রতিনিধিকে কমিটির প্রধান করে, অদ্যাবধি সেই কমিটির সভা আহ্বান করা হয়নি। অবস্থামতে বলার অবকাশ থাকে না যে, সবাই মালিকদের স্বার্থ রক্ষার্থেই ব্যস্ত।  গত ঈদের ছুটি চলাকালীন শ্রমিকদের না জানিয়ে এবং শ্রমিকদের আইনানুগ পাওনা না দিয়েই গত ১৫ এপ্রিল অন্য মালিকের নিকট কারখানা বিক্রির চুক্তি করেছে। রাতের আঁধারে জেনারেটরসহ বেশকিছু মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেছে। মালিকের ভাড়াটিয়া গুন্ডা বাহিনী দিয়ে শ্রমিকদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই সকল প্রকার ষড়যন্ত্র বন্ধ করে ঈদের আগে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে জোর দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
১২ জুন, ২০২৪

পাওনা টাকা চাওয়ায় ভিক্ষুকের স্ত্রীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন
মৌলভীবাজারের সদর উপজেলায় পাওনা টাকা চাওয়ায় হামিদা বেগম নামে এক নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পুরুষ মিয়া নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) উপজেলার ১০ নম্বর নাজিরাবাদ ইউনিয়নের আগনসী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামিদা বেগম আগনসী গ্রামের ভিক্ষুক আবু হোসেনের স্ত্রী। পুরুষ মিয়া একই গ্রামের বাসিন্দা। হামিদা বেগম বলেন, এক বছর আগে প্রতিবেশি পুরুষ মিয়াকে ২০ হাজার টাকা আরেক আত্নীয়ের কাছ থেকে এনে ধার দিয়েছি। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও পুরুষ মিয়া টাকা পরিশোধ করেননি। বৃহস্পতিবার পুরুষ মিয়ার মাকে বিষয়টি জানাই। এতে তিনিক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে। বৃষ্টির মধ্যেও বাহিরে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে সে। জালাল মিয়া নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এর আগেও পুরুষ মিয়া বিভিন্ন কারণে হামিদা বেগমের বাড়িতে হামলা করেছে। আমরা কয়েকবার বিচার করেছি। আজকের হামিদা বেগমকে বাড়ি থেকে ধরে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছে। আইনিভাবে তার বিচার হওয়া প্রয়োজন।  স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সোহেল বলেন, আমি সকালে খবর পাই পুরুষ মিয়া হামিদা বেগমকে বেঁধে রেখে নির্যাতন চালাচ্ছে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি হামিদা বেগম গাছের সঙ্গে বাঁধা। এ সময় হামিদা বেগমের ভাই বোনকে উদ্ধার করতে গিয়ে পুরুষ মিয়ার সঙ্গে মারামারি লেগে যায়। তাদের থামিয়ে চেয়ারম্যনকে বিষয়টি জানাই এবং পুলিশকে খবর দেই। পরে পুলিশ এসে হামিদা বেগমকে উদ্ধার করে। পুরুষ মিয়াকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে জানতে পুরুষ মিয়ার মোবাইলে ফোন করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়। ১০ নম্বর নাজিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন আহমদ বলেন, আজ সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য আমাকে ঘটনাটি জানায়। ছোট একটি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পুরুষ মিয়া তিনি একটু খারাপ ধরনের মানুষ। পুরুষ মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুলতানুর রহমান কালবেলাকে বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম উদ্ধার করি। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুরুষ মিয়াকে আটক করা হয়েছে। আমি ভিকটিম হামিদা বেগমকে মুক্ত অবস্থায় পেয়েছি। আমরা যাওয়ার পূর্বে তার বাঁধন খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এলাকার লোকজন বলছে হামিদা বেগম গাছের সঙ্গে বাঁধা ছিল। ভিডিওতে বাঁধা অবস্থায় দেখেছি। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
০৭ জুন, ২০২৪

পাওনা টাকার জন্য দুই মাস ধরে ধর্ষণ, গৃহবধূর আত্মহত্যা
কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে পাওনা টাকা আদায়ের নামে এক গৃহবধূকে দুই মাস ধরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বিচার না পেয়ে ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী একসঙ্গে বিষপান করেন। এতে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। স্বামী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত শুক্রবার (২৪ মে) ওই দম্পতি একসঙ্গে বিষপান করেন। বুধবার (২৯ মে) দুপুরে নিজ বাড়িতে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। উপজেলার সদর ইউনিয়নের কলেজপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী গৃহবধূর নাম আশা বেগম। তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৩০)। তাদের ঘরে তিন বছরের একটি শিশুসন্তান রয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন উপজেলার সদর ইউনিয়নের হলপাড়া গ্রামের আবুসামার ছেলে জয়নাল মিয়া এবং তার সহযোগী কারিগর পাড়ার শুক্কুর কসাই, ডাকাত পাড়ার আলম কসাই ও টাঙ্গাইল পাড়ার সোলেমান। মৃত্যুর আগে গত ২২ মে স্থানীয় কয়েকজনের কাছে দেওয়া ওই গৃহবধূর জবানবন্দির একটি অডিও রেকর্ড কালবেলার প্রতিনিধির কাছে আসে। তাতে ওই গৃহবধূ পাশবিক নির্যাতনের বর্ণনা করেছেন। লোমহর্ষক বর্ণনায় উঠে এসেছে কীভাবে জয়নাল ও সহযোগীরা দিনের পর দিন তাকে ধর্ষণ করেছে। অডিওতে গৃহবধূ উল্লেখ করেন, তার বাবা নেই। মা গৃহকর্মীর কাজে বিদেশ গেছেন। স্বামী টাঙ্গাইলে শ্রমিকের কাজ করেন। স্বামীর ধার করা পাওনা টাকা দিতে না পারায় স্থানীয় জয়নাল মিয়া গত রমজান মাসের শুরু থেকে তাকে ধর্ষণ শুরু করেন। পরে তার সহযোগী আলম কসাই, শুক্কুর কসাই ও সোলেমান তাকে দিনের পর দিন সংঘবদ্ধ হয়ে ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনে সেই ধর্ষণের ভিডিও করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। এরপর ব্ল্যাকমেইল করে জয়নাল ও শুক্কুর মিলে তাকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে। পাশবিক নির্যাতনে অতিষ্ঠ এই গৃহবধূ শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে এই নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তার স্বামীকে বিস্তারিত ঘটনা জানান। পরে স্থানীয় মাতবরদের কাছে বিচার দিলেও মেলেনি বিচার। ওই গৃবধূর স্বামী বলেন, আমি টাঙ্গাইল থেকে ফিরে দেখি বউয়ের শরীর ভাইঙ্গা গেছে। জিজ্ঞাসা করলে ধর্ষণের ঘটনা খুলে বলেন স্ত্রী। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যসহ স্থানীয়দের কাছে বিচার দিলেও কোনো সুরাহা মেলেনি। এরপর গত শুক্রবার (২৪ মে) ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী বিষপান করেন। গুরুতর অবস্থায় তাদের প্রথমে রাজীবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে জামালপুর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসক তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় এই দম্পতি বাড়িতে চলে আসেন। বুধবার বাড়িতেই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই দম্পতির বিষপানের পর স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে থানা পুলিশ ম্যানেজ বাদেও ভুক্তভোগীদের ২০ হাজার টাকা দেওয়ার বিনিময়ে ঘটনা মীমাংসার সিদ্ধান্ত হয়। জয়নাল ভুক্তভোগীদের চিকিৎসায় ২০ হাজার টাকা দিলেও তা নিতে অস্বীকৃতি জানান ওই দম্পতি। অভিযোগের বিষয়ে জানতে জয়নাল মিয়ার মোবাইলে কল করলে নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তাই বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে রাজীবপুর থানার ওসি আশিকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে এবং আরও একটি মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে। কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার আল-আসাদ মো. মাহ্ফুজুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ভুক্তভোগী পরিবাকে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করার অনুরোধ করা হয়েছে। মামলা দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০১ জুন, ২০২৪

পাওনা আদায়ে আইআইজি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিটিআরসির চিঠি
ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে রাজস্ব বাবদ পাওনা আদায়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ৩২টি আইআইজি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিটিআরসির পাওনা ৯৭ কোটি ৬৩ লাখ ৫২ হাজার ৭৭৩ টাকা। কমিশনের ২৮৩তম সভায় ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন প্রান্তিকে অপ্রদর্শিত ডাউনস্ট্রিম ব্যান্ডউইথের ওপর রেভিনিউ শেয়ারিং হিসাব অনুযায়ী আইআইজি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পাওনা নির্ধারণ করা হয়। লাইসেন্সপ্রাপ্তির সময় থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অধিকাংশ অপারেটরদের ডাটা সম্পূর্ণ না থাকায়, সে বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত রেভিনিউ শেয়ারের পরিমাণ নির্ধারণে অডিট ফার্মের মাধ্যমে টেকনিক্যাল অডিটেরও সিদ্ধান্ত হয় ওই সভায়। ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মূল রেভিনিউ হলো ৬২ কোটি ৫৫ লাখ ৭১ হাজার ৭৬৭ টাকা। এর সঙ্গে মূল্য সংযোজন কর এবং বিলম্ব ফি যুক্ত করে মোট পাওনা নির্ধারিত হয় ৯৭ কোটি ৬৩ লাখ ৫২ হাজার ৭৭৩ টাকা। এই পাওনা উদ্ধারে গত ২২ মে থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেওয়া শুরু করে বিটিআরসি। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নির্ধারিত রাজস্ব ১৩ জুনের মধ্যে পরিশোধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বিটিআরসির সচিব মো. নূরুল হাফিজ কালবেলাকে বলেন, সরকারি সংস্থা হিসেবে বিধিমতো পন্থায় পাওনা আদায়ে বিটিআরসি তৎপর। সে অনুযায়ী তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা যদি নির্ধারিত সময়ে পাওনা না দেয় তাহলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
০১ জুন, ২০২৪

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পাওনা সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের শেষ জীবনের প্রত্যাশা অবসর ও কল্যাণ ভাতা। অবসরে গিয়েও বছরের পর বছর এই ভাতার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। শেষ জীবনে এসে অবসর সুবিধার টাকা না পেয়ে অনেক শিক্ষককে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। এমনকি অনেকেই পেনশনের অর্থ না পেয়ে মৃত্যুবরণও করেন। জানা গেছে, পর্যাপ্ত অর্থের সংস্থান না থাকায় যথাসময়ে শিক্ষকদের অবসর ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে প্রতি বছর এই খাতে শিক্ষকদের অনিষ্পন্ন আবেদনের সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে প্রতি বছরই বাড়ছে বিপুল অঙ্কের অর্থের ঘাটতি। সব মিলিয়ে অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট বাবদ সরকারের কাছে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পাওনা জমেছে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কল্যাণ ট্রাস্টে বছরে গড় আবেদন পাওয়া যায় ১৬ হাজার ৮০ থেকে ১৭ হাজার। এ ছাড়া বর্তমানে শিক্ষকদের ২৭ হাজার আবেদন ঝুলে আছে, যা নিষ্পন্ন করতে ৭২০ কোটি টাকা প্রয়োজন। বর্তমানে বছরে এই খাতে টাকার ঘাটতি আছে ১২০ কোটি, যে কারণে অনিষ্পন্ন আবেদন ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এবং ক্রমাগতভাবে ঘাটতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া, শিক্ষকদের অবসর সুবিধা বোর্ডে বছরে প্রায় ১০ হাজার ৮০০ আবেদন জমা হয়। আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করতে ১ হাজার ৩২০ কোটি টাকা প্রয়োজন। বর্তমানে এখানে বছরে ঘাটতি ৪৪৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ দুই খাত মিলিয়ে প্রতি বছর ঘাটতি থাকে ৫৭০ কোটি টাকা। ফলে প্রতি বছর অনেক আবেদন অনিষ্পন্ন অবস্থায় থেকে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে এ মুহূর্তে এসব অনিষ্পন্ন আবেদন সম্পন্ন করতে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। কল্যাণ তহবিল এবং অবসর ভাতার ক্ষেত্রে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা বর্তমানে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ক্রমাগতভাবে গ্যাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবসর ভাতা দ্রুত পরিশোধের জন্য এই খাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় বেসরকারি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের অনিষ্পন্ন আবেদনগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ ছাড়া বিদ্যমান জটিলতা স্থায়ীভাবে নিরসনের সব অংশীজনকে নিয়ে একটি কমিটি গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে, অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের অনিষ্পন্ন আবেদনগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে একটি কার্যপত্র উপস্থাপন করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান বলেন, সমস্ত অনিষ্পন্ন আবেদন সম্পন্ন করতে এই মুহূর্তে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। এই বিশাল পরিমাণ টাকার সংস্থান কীভাবে করা যেতে পারে, সে বিষয়ে তিনি স্থায়ী কমিটির কাছে একটি নির্দেশনা চান। কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু বলেন, শিক্ষক কর্মচারীরা পূর্বে প্রাপ্ত বেতনের ২ শতাংশ হারে চাঁদা দিলেও কল্যাণ ও অবসর সুবিধা দিতে হচ্ছে নতুন পে-স্কেলের হিসাবে। যে কারণে কল্যাণ তহবিল এবং অবসর ভাতার ক্ষেত্রে সংকট সৃষ্টি হয়, যা বর্তমানে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় এ দুই খাতে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়ায় গ্যাপটা কিছুটা কমিয়ে আনা সম্ভব হলেও ক্রমাগতভাবে গ্যাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবসর ভাতা দ্রুত পরিশোধের জন্য এই খাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের আহ্বান জানান তিনি। অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী বলেন, শিক্ষকদের চাঁদা এবং স্থায়ী আমানতের সুদ মিলে বছরে আসে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। বর্তমানে ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় এখান থেকে বছরে ৫০-৫৫ কোটি টাকা পাওয়া যাবে; কিন্তু প্রতি বছর শিক্ষকদের দাবিকৃত অবসর ভাতা পরিশোধ করতে প্রয়োজন ৪৪৪ কোটি টাকা। এই ঘাটতি পূরণের জন্য সরকারের অনুদান বৃদ্ধি প্রয়োজন। স্থায়ী কমিটির সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, অবসর সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক সিডমানি হিসেবে প্রদত্ত অর্থ স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখা হয়েছে। ওই স্থায়ী আমানত থেকে প্রাপ্ত সুদের একটি অংশ এই খাতে যোগ হয়। বর্তমানে ব্যাংকের সুদের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই স্থায়ী আমানতের সুবিধা যথাযথভাবে আদায় করে ঘাটতির পরিমাণ কমিয়ে আনার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। আরেক সদস্য মো. মোতাহার হোসেন বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীগণকে অবসরে গিয়ে বছরের পর বছর পেনশনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এমনকি অনেকেই পেনশনের অর্থ না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন, যা কোনোক্রমে কাম্য নয়। অর্থ সংকটের কারণে যথাসময়ে শিক্ষকদের অবসর ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না। এটা সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, অবসর সুবিধা প্রাপ্তির জন্য অনিষ্পন্ন আবেদন সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ার একটা রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষকদের এ সুবিধা দেওয়ার পর বিএনপি সরকার এই খাতে অর্থ বরাদ্দ না দিয়ে একটা বিশাল গ্যাপ তৈরি করে। পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালের বেতন স্কেলে বেতন-ভাতা শতভাগ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই খাতের ব্যয়ও বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পরও সরকার শিক্ষকদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে সমস্যা সমাধানে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, এই খাতে আয়ের চেয়ে ব্যয় অনেক বেশি হওয়ায় হজযাত্রী ও জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য অগ্রাধিকার দিয়ে পর্যায়ক্রমে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অবসর ভাতা পরিশোধ করা হচ্ছে। ফলে ক্রমাগত ঘাটতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যমান জটিলতা স্থায়ীভাবে নিরসনে সব স্টেকহোল্ডারকে নিয়ে একটি কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন তিনি। ঘাটতি পূরণে বিভিন্ন প্রস্তাবনা: সভা সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে ভাতার ঘাটতি পূরণে বেশ কিছু প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। বৈঠকে অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত ২ কোটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বছরে জনপ্রতি ১০০ টাকা, প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষার সময় প্রতি ছাত্রের কাছ থেকে ১০০ টাকা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর তহবিল থেকে বছরে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ এই খাতে বরাদ্দ দিলে বিদ্যমান সংকটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারীদের পেনশন এককালীন পরিশোধ না করে সরকারি কর্মচারীদের মতো অর্ধেক এককালীন পরিশোধ এবং বাকিটা মাসিক পেনশন হিসেবে দেওয়া যায় কি না তা ভেবে দেখার অনুরোধ জানান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে অবসর ভাতা খাতে অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাব্য অন্যান্য উৎসের একটি তালিকা তৈরির প্রস্তাব দেন বাহাউদ্দিন নাছিম। এ বিষয়ে কমিটির আরেক সদস্য আহমদ হোসেন বলেন, যেহেতু এই সমস্যা দ্রুত সমাধানের কোনো সম্ভাবনা নেই, তাই শিক্ষকদের পেনশন এককালীন পরিশোধ না করে দুটি কিস্তিতে পরিশোধের বিধান করে অধিক সংখ্যক শিক্ষককে সুবিধা প্রদানের জন্য তিনি অনুরোধ জানান। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া কালবেলাকে বলেন, শিক্ষার দায় রাষ্ট্রের। শিক্ষকদের নিজেদের সঞ্চয় ঠিকমতো না পাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। শেষ জীবনে সময়মতো অবসর ভাতা না পেয়ে টাকার অভাবে অনেকের চিকিৎসা হয় না। অবসরে গিয়ে টাকার অপেক্ষায় থেকে অনেকের মারা যাওয়ার নজিরও রয়েছে। শিক্ষকদের অবসর ও কল্যাণ তহবিলের ঘাটতি পূরণে জাতীয় বাজেটে শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি অবসর ও কল্যাণ তহবিলের সুবিধা প্রদানে দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
২৫ মে, ২০২৪

পেট্রোবাংলার কাছে এনবিআরের পাওনা ৫৫ হাজার কোটি টাকা
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের পেট্রোবাংলার আওতাধীন ১২ প্রতিষ্ঠানের কাছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা। এ অঙ্ক এনবিআরের মোট রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তের কারণে এসব পাওনা আদায়ে জোর দেওয়া হচ্ছে আগামী অর্থবছরের বাজেটে। এর আগে শুল্ক বিভাগের রাজস্ব আদায় বাড়ানোর কৌশল হিসেবে বকেয়া আদায় করা হবে বলেও এনবিআর আইএমএফকে জানিয়েছে। এনবিআর সূত্র জানায়, আইএমএফের শর্ত পূরণে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। আর রাজস্ব আদায় বাড়াতে এরই মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলাকে কর পরিশোধে চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পেট্রোবাংলা বিষয়টিকে আমলে নিচ্ছে না। সর্বশেষ গত সোমবার পেট্রোবাংলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছে এনবিআর। বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে এ খাতের বকেয়া কর আদায়ে উপায় নির্ধারণ-সংক্রান্ত একটি সভা হয়েছে। এতে এনবিআর সদস্য, পেট্রোবাংলা ও বিপিসির চেয়ারম্যান, বিপিসির অঙ্গ-প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জটিলতা নিরসন করে দ্রুত এসব বকেয়া রাজস্ব আদায়ে সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্তের পাশাপাশি আগামী বাজেটে বুক অ্যাডজাস্টমেন্ট পদ্ধতিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এসব কর খেলাপি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে দেওয়া বরাদ্দ থেকে সরাসরি রাজস্ব বোর্ডে কর্তনের মাধ্যমে অন্তত ১৬ হাজার কোটি টাকা আদায়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে উপস্থাপিত তথ্য পর্যালোচনা করে জানা গেছে, আমদানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন (কর মূসক বা ভ্যাট) ও আয়কর বাবদ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ নিদির্ষ্ট মেয়াদ অতিক্রম হলেও এ পরিমাণ রাজস্ব পায়নি এনবিআর। একইভাবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বকেয়া করের অঙ্ক ৬ হাজার ৮৯৯ কোটি, তিতাস গ্যাসের ২ হাজার ২৮৪ কোটি, পদ্মা অয়েলের ২ হাজার ১৪৫ কোটি, সিলেট গ্যাসের ১ হাজার ৭৩৫ কোটি, মেঘনা পেট্টোলিয়ামের ১ হাজার ২৮ কোটি টাকাসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের কর বকেয়া রয়েছে। এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত ভ্যাটের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, বকেয়া কর আদায় নিয়ে পেট্রোবাংলার সঙ্গে এনবিআরের বিস্তর আলোচনা হয়েছে। তবে এ মূর্হূতে সব বকেয়া পাওয়া না গেলেও বুক অ্যাডজাস্টমেন্টের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রায় বুক অ্যাডজাস্টমেন্ট করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটের ১ হাজার ৬৩৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা পাওনা নিয়ে বৈঠকে বিশদ আলোচনা হয়। এই কমিশনারেটে কোনো মামলা নেই। তাই এই বকেয়া নিরঙ্কুশ বকেয়া প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট। এ ছাড়া শুল্ক-করের বিষয়ে আলোচনায় ইনভয়েস দাখিল করা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ও রংপুর ভ্যাট কমিশনারেটে কোনো ধরনের মামলা না থাকায় শুল্ক বিভাগের ১৭ হাজার কোটি টাকাও নিরঙ্কুশ বকেয়া হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে বৈঠকে। একই সঙ্গে দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে পরিশোধের জন্য পেট্রোবাংলাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
২২ মে, ২০২৪

পাওনা টাকা চাওয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পাওনা টাকা চাওয়ায় এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ফকির আলমগীর। তিনি মধ্য পাকুন্দিয়া এলাকার ফকির লাল মিয়ার ছেলে। সোমবার (১৩ মে) সকালে পাকুন্দিয়া পৌর শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে হামলার ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি। জানা যায়, ভুক্তভোগী ফকির আলমগীর পাকুন্দিয়া পৌর সদরের মৌসুমী সিনেমা হল এলাকায় ঔষধ ফার্মেসির ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। একই এলাকার মহি উদ্দিনের ছেলে হাসান তারেক ও মিলন মিয়ার ছেলে আজাহারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে টাকা পয়সার লেনদেনকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে পাওনা টাকা চাওয়ায় রোববার (১২ মে) রাত ১০টার সময় অভিযুক্তরা দোকানের সামনে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এ সময় প্রতিবাদ করলে একপর্যায়ে দেশি অস্ত্রসহ দোকানে হামলা চালানো হয়। এতে ফকির আলমগীর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এদিকে দোকানে ভাংচুর-লুটপাটের ঘটনায় এক লাখ টাকার ক্ষতি ও নগদ দুই লাখ টাকা লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। ফকির আলমগীর ফার্মেসির ব্যবসার পাশাপাশি স্থানীয় সংবাদকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাকুন্দিয়া থানার ওসি আসাদুজ্জামান টিটু লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
১৩ মে, ২০২৪

বিআইপিডির পাওনা দিচ্ছে না ফারইস্ট ফাইন্যান্স
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্টের (বিআইপিডি) মেয়াদোত্তীর্ণ এফডিআরের ১ কোটি ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ফেরত দিচ্ছে না ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। এমনকি আমানতের ওপর পাওনা মুনাফাও দিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, অর্থমন্ত্রণালয়, এনবিআর এমনকি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বরাবর একাধিকবার চিঠি দিয়েও কোনো সমাধান পায়নি প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করে বিআইপিডি। ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার‌্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিআইপিডির চেয়ারম্যান মো. এহসান খসরু, পরিচালক কাজী মো. মোরতুজা আলী, জেনারেল সেক্রেটারি এ কে এম এহসানুল হক। বিআইপিডির চেয়ারম্যান এহসান খসরু বলেন, তারা ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডে সর্বমোট ১ কোটি ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকার ছয়টি এফডিআর অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। সব এফডিআর ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ফারইস্ট কোনো অর্থ পরিশোধ করেনি। এমনকি লভ্যাংশও দেয়নি। এ পর্যন্ত তাদের ৫৬টি চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমন কি ২০২০ সালের পরে তারা কোনো চিঠির জবাবও দেয়নি।
২১ এপ্রিল, ২০২৪
X