সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার পরিকল্পনা নেই : জনপ্রশাসনমন্ত্রী
জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হেসেন জানিয়েছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। তিনি বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে বিভিন্ন পদের বিপরীতে চাকরি প্রার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরো বেশি প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে ৩০ বছরের কম বয়সী প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে। বুধবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদে টেবিলে উপস্থাপিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শাহনেওয়াজের এক প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।  বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশনজট নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সেশনজট থাকলেও বর্তমানে উল্লেখযোগ্য কোন সেশনজট নেই বললেই চলে।  শিক্ষার্থীরা ১৬ বছরে এসএসসিসহ ২৩-২৪ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে থাকে। চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর হওয়ার ফলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পরও তারা চাকরিতে আবেদনের জন্য কমপক্ষে ৬-৭ বছর সময় পেয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে একজন প্রার্থী আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২/১ বছর লেগে যায়। ফলে চাকরিতে যোগদানের জন্য নূন্যতম বয়স ৩০ বছর থেকে ৩৫ বছর করার যে দাবি করা হচ্ছে প্রকৃত পক্ষে তার কাছাকাছি পর্যায়ে উপনীত হয়। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রী বলেন, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় বিভিন্ন স্তরে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বয়স ও জেন্ডারভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী কম বয়সী (২৩-২৫) সুপারিশকৃত প্রার্থীর সংখ্যা সব থেকে বেশি (৩৭.৬৮ শতাংশ) এবং বেশি বয়সী (২৯ এর ঊর্ধ্বে) সুপারিশকৃত প্রার্থীর সংখ্যা সব থেকে কম (১.৭১ শতাংশ)। তিনি জানান, চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ বছর থেকে ৫৯ বছরে উন্নীত হওয়ায় বর্তমানে শূন্য পদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কমে গেছে। এ প্রেক্ষাপটে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে বিভিন্ন পদের বিপরীতে চাকরি প্রার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরো বেশি প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে যাদের বয়স বর্তমানে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে তারা চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ পেলেও অনুর্ধ্ব ৩০ বছরের প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে। এসব শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই বলে মন্ত্রী জানান।
০৩ জুলাই, ২০২৪

পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহারের পরিকল্পনা সরকারের
হাইড্রোজেন ও অ্যামেনিয়া থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে সরকার। ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার সম্ভব হবে। বুধবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। ওই সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেট্রোবাংলার অধীন রূপান্তরিত গ্যাস কোম্পানি লি. (আরপিজিসিএল)-এ জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেন উৎপাদনে টেকসই ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতির ওপর উন্নত বিশ্বের চলমান অধিকতর গবেষণাসমূহের ফলাফল এবং গৃহীত কার্যক্রমের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের লক্ষ্যে একটি সেল গঠন করা হয়েছে। ওই সেল গ্রহণযোগ্য তথ্যাদি প্রাপ্তির পর একটি প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করবে। আশা করা যায়- ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার সম্ভব হবে। আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জন্য সমতার ভিত্তিতে সুবিচার নিশ্চিত করা এবং বিচারব্যবস্থায় দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধন করে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার বদ্ধ পরিকর। বর্তমান সরকার বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি লাঘবে সঠিক বিচারের নিশ্চিয়তা প্রদান করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে অধঃস্তন আদালতে ১ হাজার ৪২৯ জন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান। আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৭টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এতে উপকারভোগী মোট মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৩৯ হাজারেরও বেশি। এ পর্যন্ত ৫৮টি জেলা এবং ৪৬৪টি উপজেলা সম্পূর্ণভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হয়েছে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহী এ ৫টি বিভাগ এখন সম্পূর্ণভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত। অর্থাৎ এসব জেলা, উপজেলা ও বিভাগে কোনো ভূমিহীন গৃহহীন মানুষ নেই। ব্যারাক হাউসের মাধ্যমে আমরা ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৮টি পরিবারকে পুনর্বাসন করেছি। ব্যারাক হাউস ছাড়াও আমরা ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৫৩টি পরিবারকে নিজ জমিতে বিনামূল্যে গৃহনির্মাণ করে দিই। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫টি পরিবারের কাছে স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে ২ শতাংশ জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা একক ঘর হস্তান্তর করেছি। মুজিববর্ষে উপকারভোগী মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৩০ হাজার মানুষ। ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমুল মানুষকে জমির মালিকানাসহ ঘর করে দেওয়ার লক্ষ্যে সারা দেশে ৬ হাজার ৯৪৫ একর খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য তিন হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা। সাতক্ষীরা-৪ আসনের এস এম আতাউল হকের প্রশ্নের সংসদ নেতা বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরের ১৩ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা থেকে ৯.১২ গুণ বাড়িয়ে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ১১৯টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় এ সহায়তা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
০৩ জুলাই, ২০২৪

প্রকল্পের মেয়াদ শেষ / ইভিএম নিয়ে নতুন পরিকল্পনা ইসির
বহুল আলোচিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রকল্প নিয়ে নতুন চিন্তাভাবনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমানে যেসব যন্ত্র সচল রয়েছে সেগুলো আগামীতে অনুষ্ঠিতব্য স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি যন্ত্রটির কারিগরি উন্নয়ন ও উৎপাদন ব্যয় কমানোর দিকেও মনোযোগ দিচ্ছে সংস্থাটি। নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। গতকাল রোববার আলোচিত এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে ব্যয় না বাড়িয়ে কেবল প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর জন্য এরই মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে ইসি। পরিকল্পনা কমিশন থেকে প্রস্তাবনা বিবেচনার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাবও পেয়েছে সংস্থাটি। ফলে এ প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়তে পারে। আর এ সময়ের মধ্যে ইভিএম যন্ত্রটির কারিগরি উন্নয়ন ও তার ব্যবহারের দিকে নজর দিবে ইসি। সেই লক্ষ্যে প্রকল্পের মেয়াদের শেষ দিনে গতকাল দেশসেরা প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে বৈঠক করেছে সংস্থাটি। বৈঠকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম কায়কোবাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. হায়দার আলী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো. মাহফুজুল ইসলামসহ কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র কালবেলাকে জানায়, একেকটি ইভিএমের দাম প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এই ব্যয় কীভাবে কমানো যায়, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মেশিনগুলোর ওজন কমানোর কথা হয়েছে বৈঠকে। কারিগরি উন্নয়ন তথা ভিভিপ্যাট (ভোটার ভেরিফাইয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল) যুক্ত করারও সিদ্ধান্ত হয়। জানা গেছে, এক এগারোর সরকারের সময় ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন দেশের ভোট ব্যবস্থায় ইভিএমের ব্যবহার শুরু করে। সে সময় তারা বুয়েট থেকে ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে মেশিন তৈরি করে নেয়। ওই কমিশনের ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সময়ে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশনও ভোটযন্ত্রটি ব্যবহার করে। তবে ২০১৫ সালে রাজশাহী সিটি নির্বাচনে একটি মেশিন অচল হয়ে পড়ায় তা আর ব্যবহার উপযোগী করতে পারেনি রকিব কমিশন। পরবর্তী সময়ে তারা বুয়েটের তৈরি স্বল্প মূল্যের ওই মেশিনগুলো পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং উন্নত মানের ইভিএম তৈরির পরিকল্পনা করে। ২০১৭ সালে কেএম নূরুল হুদার কমিশন এসে বুয়েটের তৈরি ইভিএমের চেয়ে প্রায় ২০ গুণ বেশি দামে মেশিন কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) কাছ থেকে উন্নতমানের ইভিএম তৈরি করে নেয় তারা। এতে মেশিনপ্রতি ব্যয় হয় ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকার মতো। হাতে নেওয়া হয় ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার প্রকল্প। দেড় লাখের মতো ইভিএম কেনে রকিব কমিশন। প্রকল্পের সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের ব্যবস্থা না থাকায় সেই উন্নত মানের ইভিএম মেয়াদ ১০ বছর হলেও পাঁচ বছর যেতে না যেতেই সেগুলো অকেজো হওয়া শুরু করে। ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২৩ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে প্রায় প্রতিটি সেটেই কোনো না কোনো সমস্যা দেখা দেয়। প্রায় ৪০ হাজারের মতো মেশিন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অবশিষ্ট ১ লাখ ১০ হাজার মেশিনের মধ্যে অধিকাংশগুলোতে ধরা পড়ে নানান ত্রুটি। কিন্তু মেরামতের জন্য ছিল না নতুন কোনো অর্থের জোগান। ফলে হাজার হাজার কোটি টাকার ইভিএম অচল হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। অকেজো মেশিন মেরামত, সংরক্ষণ প্রভৃতির জন্য প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব দিলে বৈশ্বিক অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে সরকার তা নাকচ করে দেয়। এ অবস্থায় ইভিএমের ভবিষ্যৎ চরম অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হয়। একদিকে ইভিএমের ব্যবহার হ্রাস এবং অন্যদিকে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ দিকে হওয়ায় ইভিএম মেশিনগুলো কী করা হবে তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে কমিশন। এমন প্রেক্ষাপটে আবারও ইভিএম নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে ইসি। জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, এটা (গতকালের বৈঠক) ছিল কেবল প্রাথমিক আলোচনা। এরপর সিরিজ আলোচনা হবে। এজন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটির পরামর্শক্রমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এক্ষেত্রে স্টেকহোল্ডার বা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসতে পারে কমিশন। সবার মতামত পেলে ইভিএমের কারিগরি উন্নয়নে হাত দেবে ইসি। তিনি বলেন, গতকাল ইভিএম প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে পরিকল্পনা কমিশনে ব্যয় না বাড়িয়ে কেবল প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর জন্য আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। হয়তো কয়েকদিনের মধ্যেই তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্পর্কে আমাদের জানাবে।
০১ জুলাই, ২০২৪

ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জঙ্গিদের একত্র করে হামলার পরিকল্পনা
নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব। সংস্থাটি বলছে, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলো একত্রিত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জঙ্গিদের নিয়ে দেশে হামলা ও নাশকতার পরিকল্পনা নিচ্ছে। গতকাল র‍্যাব-১৫-এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার এবং র‍্যাব-৭ চট্টগ্রামের যৌথ দল অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার চৌফলদণ্ডী থেকে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো জামালপুরের জাকারিয়া মণ্ডল, ভোলার বোরহানউদ্দিনের নিয়ামত উল্লাহ ও ফেনীর সোনাগাজীর মো. ওজায়ের। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে উগ্রপন্থি ১০টি বই, ২৯টি লিফলেট, একটি ডায়েরি, দুটি মাদ্রাসার পরিচয়পত্র, দুটি এনআইডি, একটি অ্যান্ড্রয়েড ও একটি বাটন মোবাইল এবং ৪ হাজার ৫৯০ টাকা উদ্ধার করা হয়। র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখান পরিচালক আরাফাত ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলো একত্রিত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জঙ্গিদের নিয়ে দেশে হামলা ও নাশকতার পরিকল্পনা নিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে কক্সবাজারে বৈঠক করতে এসেছিল ওই তিনজন। তারা ১৮ থেকে ২০ বছরের তরুণদের টার্গেট করে সদস্য সংগ্রহ করছে। বর্তমানে পার্শ্ববর্তী একটি দেশ থেকে ‘আনসার আল ইসলাম’ সংগঠনটি পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশকে তাদের একটি শাখা বলে দাবি করে সংগঠনটি। আরাফাত ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে। তারা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলামে’ যোগ দেয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে সংগঠনটির কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে পড়ে। পরে সংগঠনের নতুন সদস্য সংগ্রহসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করতে আনসার আল ইসলাম মতাদর্শী ‘আস-শাহাদাত’ নামে নতুন একটি জঙ্গি গ্রুপ তৈরি করা হয়। এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা আনুমানিক ৮৫ থেকে ১০০ জন। গ্রুপটির উদ্ভাবক হলেন পার্শ্ববর্তী দেশের হাবিবুল্লাহ এবং কথিত আমির সালাহউদ্দিন। তিনি জানান, গ্রুপটির বাংলাদেশের আঞ্চলিক শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত আমির ইসমাইল হোসেন র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। অন্য সদস্যরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছে। বর্তমানে আনসার আল ইসলাম নাম ব্যবহার না করে ‘আস-শাহাদাত’ গ্রুপের নামে সদস্য সংগ্রহ ও দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সদস্যদের মধ্যে দেশের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিতৃষ্ণা তৈরি করা তাদের উদ্দেশ্য। সংগঠনের সদস্যদের তারা বিভিন্ন উগ্রবাদী বই, মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, টেলিগ্রাম ও বিপ গ্রুপের মাধ্যমে সরবরাহ করত। গোপন অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করা এবং নির্দেশনা দেওয়া হতো। র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেপ্তার জাকারিয়া একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত। এক বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংগঠনের আমির সালাহউদ্দিন ও ইসমাঈলের সঙ্গে তার পরিচয়। পরে সে ‘আস-শাহাদাত’ গ্রুপের ময়মনসিংহ ও জামালপুর অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়। আর নিয়ামত এবং ওজায়ের চট্টগ্রামের পটিয়ার একটি মাদ্রাসার কিতাব শাখায় অধ্যয়নরত।
২৯ জুন, ২০২৪

সর্বগ্রাসী ক্ষুধা থেকে বের হয়ে আসতে হবে : পরিকল্পনা সচিব
সর্বগ্রাসী ক্ষুধা থেকে আমাদের বের হয়ে শুদ্ধাচারী মনোভব পোষণ করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার। তিনি বলেন, গণমাধ্যম এখন সৎ মানুষ সেজে থাকা দুর্নীতিবাজদের বের করে আনছে।  কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের সর্বগ্রাসী মনোভব থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সম্মানের থেকে কেন আমরা বিচ্যুত হচ্ছি। শুধু নিজে সৎ থাকলে হবে না। আশপাশের সবাইকে সৎ রাখতে হবে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি ২০২৪-২৫ স্বাক্ষর ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার এসব কথা বলেন।  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য আব্দুল বাকী, আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য রেহানা খাতুন ও বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। সত্যজিত কর্মকার বলেন, আমরা সর্বগ্রাসী হয়ে গেছি। আমাদের চাই চাই আরও লাগবে কেন? সরকার আমাদের কি দেয়নি, আমরা কেন নীতিবহির্ভূত কাজ করছি। এই দেশ তো আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে। সর্বগ্রাসী ক্ষুধা এমন পর্যায়ে গেছে প্রধানমন্ত্রী আমাদের শুদ্ধাচার পুরস্কার দিয়ে নিবৃত করছে। আমাদের সবাইকে সর্বগ্রাসী ক্ষুধা থেকে বের হতে হবে।  তিনি বলেন, এখানে আজ অনেকেই অনুপস্থিত, যা খুবই দুঃখজনক এটা শুদ্ধাচারের পরিপন্থি। এটা সরকারের অন্যতম কর্মসূচি অথচ অনেকে নেই। আমার মনে হয় আয়োজকদের কারণে আজ অনেক চেয়ার ফাঁকা। আমাদের সময়ের প্রতি, দায়িত্বের প্রতি আরও যত্নবান হওয়া দরকার। অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, অনাচার দিয়ে কোনো সমাজ চলতে পারে না। শুদ্ধাচার এর বিপরীত শব্দ কি অনাচার। সামাজিক অনাচার দূর করে মানবসভ্যতা রচনা করাই কাজ। মানুষের কাজই হচ্ছে অনাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।  তিনি বলেন, আমাদের বিভিন্ন বিলবোর্ডে জাতির পিতার কথা বলা আছে সেই অনুসারে আমাদের চলতে হবে। মানুষকে সম্মান জানাতে হবে। শুদ্ধ হওয়ার জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। জীবনের প্রতি পদক্ষেপ শুদ্ধাচার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। শুদ্ধাচার অর্জন করবার জন্য জাতির পিতাকে অনুসরণ করে জীবন পরিচালনা করতে হবে।
২৭ জুন, ২০২৪

যে দুই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পাল্টে যাবে ঢাবির চিত্র
চলমান চতুর্থ ও আসন্ন পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের সময়কালে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে বিশ্ববাজারের উপযোগী মানবসম্পদ তৈরির জন্য ৪০ হাজার শিক্ষার্থী, ২ হাজারের অধিক শিক্ষক এবং ৬ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (এডিবি) ও ভৌত অবকাঠামোগত মাস্টার প্ল্যান (পিএমপি) নামে দুটি প্ররিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। যা ২০৪৫ সালের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে যাবে অনন্য উচ্চতায়। পাল্টে যাবে এর একাডেমিক ও ভৌতিক চিত্র। বুধবার (২৬ জুন) বিকেলে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে সিনেট চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল তার অভিভাষণে এ তথ্য জানান।   অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিশন এবং এই সম্পর্কিত মিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রস্তাবিত একাডেমিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (এডিবি) ও ভৌত অবকাঠামোগত মাস্টার প্ল্যান (পিএমপি) এই দুটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একাডেমিক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ২০৩৫ সালের মধ্যে এই বিদ্যাপীঠ উচ্চতর গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে, যা কার্নেগির শ্রেণিবিভাজন অনুযায়ী আর টু বিশ্ববিদ্যালয়। এই ধারাবাহিকতায় ২০৪৫ সালের মধ্যে এটি রূপান্তরিত হবে গবেষণা-প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় হবে। প্রস্তাবিত একাডেমিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নকালে অনেক বিভাগের শিক্ষার্থী-সংখ্যা যৌক্তিক পর্যায়ে আনা হবে। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী কিছু নতুন বিভাগও খোলা হবে। তিনি বলেন, ভৌত অবকাঠামোগত পরিকল্পনা (পিএমপি) সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হলে আধুনিক গবেষণাগারসহ একাডেমিক ফ্লোর স্পেস ২৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭০০ বর্গফুট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫৯ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ বর্গফুট হবে। লাইব্রেরির সুবিধা ১ হাজার ৫০০ জন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩ হাজার জন হবে এবং নারী শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধা ৩৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ শতাংশে উন্নীত হবে। মাস্টার প্ল্যানে প্রদর্শিত ভবনসমূহ বহুতলবিশিষ্ট হওয়ায় ভবনসমূহের ফুটপ্রিন্ট ২৭ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২২ শতাংশে নেমে আসবে। ফলে সবুজ চত্বর ও উন্মুক্ত স্থান বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া প্রণীত মাস্টার প্ল্যানে ওয়াকওয়ে ও সাইকেল-লেন নির্মাণ করে শিক্ষার্থীবান্ধব যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বৃষ্টির পানি ধারণ, সৌরশক্তি উৎপাদন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, জলাধার সংরক্ষণ, সৌন্দর্যবর্ধন, বিদ্যমান খেলার মাঠের সংস্কার, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার মাঠ ও সুইমিংপুল নির্মাণ করা হবে। উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুই পরিকল্পনার ফেইজ-১ সংক্রান্ত অবকাঠামো উন্নয়নের একটি প্রকল্প ইতোমধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে সক্রিয় বিবেচনাধীন। সেখানে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল, একাডেমিক ভবন ও আধুনিক লাইব্রেরি নির্মাণ এবং উন্নতমানের গবেষণাগার স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। 
২৬ জুন, ২০২৪

সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বুধবার (২৬ জুন) স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।  তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্টের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা দেশকে এগিয়ে নিতে পারেনি, বরং একের পর এক ক্যু হয়েছে। সরকারপ্রধান বলেন, ২০০৯ থেকে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় আছে বলেই দৃশ্যমান ও টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসলাম তখন দেখলাম এসএসএফের শুটিং প্র্যাকটিসের  কোনো জায়গা নেই। শুটিং প্র্যাকটিস করার জন্য জায়গা করে দিয়েছি এবং এখন সেটি আরও উন্নত করে দিচ্ছি। তাদের অফিসার্স মেস থেকে শুরু করে সবকিছুই আমাদের হাতে গড়া। লোকবলও বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে শুধু এসএসএফ না, বর্তমান সরকার সবার জন্যই করেন। এসএসএফ সদস্যদের তিনি আরও বলেন, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কারণ নিজের ভেতরে এসব না থাকলে সফলতা অর্জন করা যাবে না। সব বাহিনীর প্রতিনিধি এসএসএফে রয়েছে। যা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ প্রতিহত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। এসএসএফ সদস্যরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আমার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, তাদের জীবনও ঝুঁকির মধ্যে থাকে। আমার নিরাপত্তায় যারা থাকে, আমি নিজেও তাদের জন্য চিন্তিত থাকি। কারণ আমার ওপর বারবার আঘাত এসেছে। নেতাকর্মীরা জীবন দিয়ে আমাকে রক্ষা করেছেন। আমি দোয়া করি, যারা আমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত আল্লাহ সবাইকে যেন সুরক্ষিত রাখেন।
২৬ জুন, ২০২৪

অর্থ ছাড়া সুনীল অর্থনীতি নিয়ে ‘অর্থহীন’ পরিকল্পনা
রাজন ভট্টাচার্য 8 সুনীল অর্থনীতির কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সমুদ্র সম্পদ আহরণ এবং এ সংক্রান্ত স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এর ছয়টি মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক করা হলেও এর সময়সীমা ও বাজেট চূড়ান্ত করা হয়নি। ফলে এ সবকিছুই অনর্থক পরিকল্পনা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। সব মিলিয়ে মোট পরিকল্পনা ১৪২টি। দুই বছরের স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা ২৭টি। ২ থেকে ৫ বছরের মধ্যে মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা ৪২টি এবং পাঁচ বছরের বেশি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সংখ্যা ৪৫টি। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিআইডব্লিউটিএ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট, বিআইডব্লিউটিসি, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, পায়রা, মোংলা, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষসহ ৯টি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কথা রয়েছে। তবে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়সীমা নির্ধারণ ও অর্থ সংস্থান ছাড়া এসব উদ্যোগ অর্থহীন। এটি শুধু কাগজে-কলমে থাকবে, বাস্তবায়ন হবে না। একই মত মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তারও। তারা বলেছেন, সময় ও অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি পরিকল্পনায় যুক্ত না থাকায় এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা নেই। প্রকৃত অর্থে এটি অপরিকল্পিত ও অসম্পূর্ণ। সুনীল অর্থনীতিকে বাস্তবে রূপ দিতে অর্থবহ পরিকল্পনা প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অধ্যাপক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল হক। এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সমুদ্রসম্পদ আহরণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাবিষয়ক সমন্বয় কমিটি অনুমোদিত ‘সুনীল অর্থনীতি উন্নয়ন পরিকল্পনা’ গ্রহণ করা হয়েছে। এর বাণিজ্যিক নৌ পরিবহনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন অংশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে মোট আমদানি ছিল ৬৮ দশমিক এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই সময়ে রপ্তানি ছিল ৪১ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। উল্লিখিত মোট বাণিজ্যিক পরিবহনের ৯৫ ভাগের বেশি সমুদ্রপথে এবং তিনটি প্রধান সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়েছে। ৩ হাজারের বেশি জাহাজ এই পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। ভাড়া হিসেবে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বেশি পরিশোধিত হয়। আগামী ২০৪৩ সালের মধ্যে জাহাজের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে। কেবলমাত্র চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে ১৪ মিলিয়ন টিইইউ কার্গো হেন্ডেল করার সক্ষমতা অর্জন করবে। ২০১৯ সালে এই বন্দর তিন মিলিয়ন টিইইউ ক্লাবে পৌঁছেছে। বর্তমান বাস্তবতা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিবেচনা করে সরকার উপকূল বরাবর বিভিন্ন কৌশলগত অবস্থানে খাতভিত্তিক বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল, বে-টার্মিনাল, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল ও মাতারবাড়ী বাণিজ্যিক টার্মিনাল নির্মাণের মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দর এলাকা সম্প্রসারণে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে। জানতে চাইলে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে কালবেলাকে বলেন, সমুদ্র ঘিরে যে কার্যক্রম নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় শুরু করেছে, তা আগামী দিনে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও কূটনৈতিক চিন্তার ফসল হিসেবে সমুদ্রে অধিকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পণ্য পরিবহনে ছয়টি জাহাজ সংগ্রহের কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আরও ২১টি জাহাজ সংগ্রহ করা হবে। গভীর সমুদ্র থেকে ১২১ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনের মাধ্যমে ইস্টার্ন রিফাইনারি প্ল্যান্টে অপরিশোধিত তেল পরিবহন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বরগুনায় শিপ বিল্ডিংয়ের জন্য কার্যক্রম চলমান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাড়ানো হচ্ছে। বন্দরগুলো পর্যায়ক্রমে উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সব মিলিয়ে সমুদ্র পরিবহন ও সমুদ্র অর্থনীতির অংশ উন্নত (আপগ্রেড) হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব উদ্যোগ বাস্তবায়নের কথাও জানান তিনি। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বলছে, ২০১২ ও ২০১৪ সালে জার্মানির সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল (আইটিএলওএস) এবং নেদারল্যান্ডসের হেগে সালিশি ট্রাইব্যুনালে সমুদ্রে বাংলাদেশের অধিকার বিষয়ক দুটি রায় বাংলাদেশের পক্ষে আসে। এতে দেশের মোট সমুদ্রসীমা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারে। এর মধ্যে বঙ্গোপসাগরের ১২ নটিক্যাল মাইল রাষ্ট্রাধীন অঞ্চল; ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল। চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে অবস্থিত সব ধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর দেশের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সুনীল অর্থনীতির নতুন ও অবারিত দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সুনীল অর্থনীতি কার্যক্রম, সমুদ্র সম্পদ আহরণ এবং এ সংক্রান্ত কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এই কৌশলগত কর্মপরিকল্পনার ছয়টি মূল ছয়টি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, বিশ্বমানের বন্দর স্থাপন, মেরিটাইম ও নৌপরিবহন ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে সমুদ্র বন্দর ও গভীর বন্দরগুলোর উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি। আঞ্চলিক ও উপাঞ্চলিক কোস্টাল শিপিংয়ের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখা। দ্বিপক্ষীয়, উপ-আঞ্চলিক এবং আঞ্চলিক সমঝোতা স্বাক্ষর, চুক্তি প্রটোকল ইত্যাদি সম্পাদনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নৌবাণিজ্য সম্প্রসারণ। কোস্টাল ট্যুরিজমের মাধ্যমে অর্থনীতির উন্নয়ন। মেরিটাইম এডুকেশন সেক্টরের প্রসারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের দক্ষ ও অর্ধদক্ষ নৌকর্মী, দক্ষ নাবিকদের কর্মক্ষেত্র সম্প্রসারণ, উপার্জন বৃদ্ধি। অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহনের ক্ষেত্রে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নৌপথের নাব্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন। স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা স্বল্পমেয়াদি ২৭ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, কর্ণফুলী নদীতে চট্টগ্রাম ড্রাইডক সংলগ্ন এলাকায় ৬০০ মিটার দৈর্ঘের নতুন পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ। কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট এলাকায় নির্মিত ৪০০ মিটার জেটি সচলকরণ এবং নদীর নাব্য বৃদ্ধিতে ড্রেজিং প্রকল্প বাস্তবায়ন। নিউমুরিং ওভারফ্লো কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ, দ্বিতীয় নিউমুরিং ওভারফ্লো কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ। এই চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সাতটি প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষকে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, পশুর চ্যানেলের রামপাল পর্যন্ত ড্রেজিং, রুজভেল্ট জেটির অবকাঠামো উন্নয়ন, ভিটিএমআইএস প্রবর্তন, আউটার বারে ড্রেজিং, টাগবোট সংগ্রহ, মোবাইল হারবার ক্রেন সংগ্রহ এবং বন্দরের দুটি অসম্পূর্ণ জেটি নির্মাণ। গভীর সমুদ্রে কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সুবিধার উন্নয়নে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে। নৌপরিবহন অধিদপ্তরের দুটি পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সি ক্রুজ ও কোস্টাল ট্যুরিজমের ব্যবস্থা এবং শ্রীলংকা ও মালদ্বীপের সঙ্গে কোস্টাল ট্যুরিজজের সম্ভাব্যতা যাচাই। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ছয়টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ-হাতিয়া-বরিশাল উপকূলীয় রুটে দক্ষ যাত্রীবাহী সার্ভিস পরিচালনার লক্ষ্যে যাত্রীবাহী জাহাজ নির্মাণ। ঢাকা-খুলনা-বরিশাল নৌরুটের জন্য নতুন দুটি যাত্রীবাহী জাহাজ সংগ্রহ। প্রতিষ্ঠানের পুরোনো ডাম্প ফেরি প্রতিস্থাপনকল্পে দুটি উন্নতমানের কে-টাইপ ফেরি নির্মাণ। প্রতিষ্ঠানের জন্য চারটি কে-টাইপ ও চারটি কনভেনশনাল পল্টুন নির্মাণ। চট্টগ্রাম টার্মিনাল-১ জমিতে জেটি নির্মাণ। বাংলাদেশ-ভারত-শ্রীলংকা-মালদ্বীপ—এই চার দেশের মধ্যে ক্রুজ সার্ভিস চালুর জন্য শিপ সংগ্রহ প্রকল্প অনুমোদন ও ডিজাইন চূড়ান্তকরণ এবং শিপ সংগ্রহের ক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের যুক্ত করা এবং নির্মাণাধীন দুটি অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী জাহাজে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ছয়টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, কক্সবাজার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, মজু চৌধুরী হাট এবং ইলিশা ঘাটে নৌ পর্যটনের সুবিধা সংবলিত নদীবন্দর স্থাপন। কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার-মহেশখালী রুটে কোস্টাল যাত্রী সার্ভিস চালু, অভ্যন্তরীণ নৌপথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্প (১ম পর্যায়ে ২৪টি নৌপথ)। ১২টি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথের খনন প্রকল্প। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন চীন সরকারের সহায়তায় ছয়টি নতুন জাহাজ, তিনটি ওয়েল ট্যাঙ্কার এবং তিনটি নতুন বাল্ক ক্যারিয়ার কেনা। বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির দুটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, মাস্টার্স কোর্স পরিচালনা ও বাংলাদেশে স্থাপিত নতুন চারটি একাডেমিকে কারিগরি সহায়তা অব্যাহত রাখা। ন্যাশনাল মেরিটাইমস ইনস্টিটিউটের দায়িত্বে রয়েছে ইনস্টিটিউটের মাদারীপুর শাখা শীর্ষক প্রকল্প। মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যমেয়াদি লালদিয়ায় মাল্টিপারপাস টার্মিনাল, কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট থেকে বাকলিয়ার চর পর্যন্ত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্য বৃদ্ধি প্রকল্প, ব্লু-ইকোনমি উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য জাহাজ খাতের উন্নয়ন, বিআইডব্লিউটিসির জন্য ৩৫টি বাণিজ্যিক ও আটটি সহায়ক জলযান সংগ্রহ এবং নতুন দুটি স্লিপওয়ে নির্মাণসহ ৪২টি পরিকল্পনা। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা পাঁচ বছরের বেশি নেভিগেশন এইড সংগ্রহ, অয়েল স্পিল ভেসেল, জয়মনিগোলে মাল্টিপারপাস জেটি নির্মাণ, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন উদ্ধারকারী জলযান সংগ্রহ, নদীশাসন কার্যক্রম গ্রহণ, ১০টি ব্লাল্ক ক্যারিয়ার ও ছয়টি ক্রুজ শিপ, চারটি সেলুলার কনটেইনার জাহাজ ক্রয়সহ ৪৫টি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বাণিজ্যিক নৌপরিবহনে আট অবকাঠামো উন্নয়ন এগুলোর মধ্যে রয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বন্দর কর্তৃপক্ষসমূহ ২০২০-৩০ সালের মধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে ২০২০-৩০ সালের মধ্যে মানবসম্পদ উন্নয়ন। ২০২০-৩০ সালের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ও বন্দর কর্তৃপক্ষসমূহের উদ্যোগে কনটেইনার পরিবহন। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০২০-২৫ সালের মধ্যে আধুনিক গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপন। নৌ মন্ত্রণালয়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএর উদ্যোগে ২০২০-২৫ সালের মধ্যে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনালের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন।
২৬ জুন, ২০২৪

পশ্চিমাদের শায়েস্তা করতে উত্তর কোরিয়া নিয়ে রাশিয়ার যে পরিকল্পনা
ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহের প্রতিশোধ হিসেবে পরমাণুশক্তিধর দেশ উত্তর কোরিয়াকে ভয়ানক সব অস্ত্র দিতে পারে রাশিয়া। খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই খবর জানিয়েছেন। মার্কিন কর্মকর্তাদের ধারণা, এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- যুদ্ধবিমান, সারফেস টু এয়ার মিসাইল, সাঁজোয়া যান এবং ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। উত্তর কোরিয়া সফর ও দেশটির নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি সইয়ের একদিন পর গত বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পুতিন। চলতি মাসের শুরুতে পুতিন হুমকি দিয়েছিলেন, পশ্চিমাদের সঙ্গে শত্রুতা রয়েছে, এমন সব দেশের হাতে অস্ত্র তুলে দিতে পারে মস্কো। কারণ, রাশিয়ায় আঘাত হানার জন্য ইউক্রেনকে প্রাণঘাতী সব অস্ত্র দিচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো।  পুতিন বলেন, শুধু উত্তর কোরিয়াতেই নয়, বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে অস্ত্র পাঠানোর অধিকার রয়েছে রাশিয়ার। এ জন্য মস্কোর সঙ্গে করা বিভিন্ন দেশের অস্ত্র চুক্তির কথাও উল্লেখ করেন পুতিন। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে একটি সার্বিক কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তিতে কোনো পক্ষ আগ্রাসনের শিকার হলে পারস্পরিক সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। পুতিনের পিয়ংইয়ং সফরকালে গত বুধবার এ প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হয়। এদিকে পুতিনের এমন ঘোষণায় উদ্বেগে পড়ে গেছে মার্কিন প্রশাসন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, এমন পদক্ষেপে গোটা কোরীয় উপদ্বীপে স্থিতিশীলতা বিপন্ন হবে।  হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, পুতিনের এই ঘোষণার ফলে উদ্বেগ সত্ত্বেও বিস্ময়ের কোনো কারণ নেই। তার মতে, রাশিয়া মরিয়া হয়ে বৈদেশিক সহায়তার সন্ধান করছে।  কিরবি মনে করেন, মস্কোর এমন পদক্ষেপ সম্পর্কে চীনেরও উদ্বেগ বাড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বেইজিংকে উত্তর কোরিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর অনুরোধ করে আসছে। কিন্তু রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা বাড়লে উত্তর কোরিয়ার ওপর চীনের প্রভাব কমে যেতে পারে। বিশেষ করে উত্তর কোরিয়া আবার পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করলে গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বিপন্ন হতে পারে। এতে চীনের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে কিরবি মনে করছেন।
২২ জুন, ২০২৪

ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের পরিকল্পনা জানত ইসরায়েল?
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে সাধারণ মানুষকে অপহরণ করবে, এমন বিষয় কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই জানত ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম কান নিউজ এক প্রতিবেদনে এমন পিলে চমকানো খবর প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গাজা ডিভিশন ‘ডিটেইলড এন্ড টু এন্ড রেইড ট্রেনিং’ শিরোনামে ওই নথি তৈরি করেছিল। হামলার প্রায় দুই সপ্তাহ আগে অর্থাৎ গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর ওই নথি বিতরণ করা হয়। সেখানে বলা হয়, ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের এলিট ইউনিট সিরিজ মহড়া চালিয়েছে। এ মহড়ায় সামরিক পোস্টে হামলা চালানো, সেনাসদস্য ও বেসামরিক ব্যক্তিদের অপহরণ এবং জিম্মিদের গাজায় কোথায় রাখা হবে—এ বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। কান নিউজের বরাত দিয়ে জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ওই নথির ব্যাপারে অবগত ছিল। ৭ অক্টোবরের ওই হামলা রুখতে ব্যর্থতা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে এই নথির কথা সামনে এলো। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের পরিকল্পনা পুরোটাই জানা ছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর। কিন্তু ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের নিয়ে বিদ্যমান ধারণা এবং সিনিয়র কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে আগে থেকে সতর্ক করা হলেও সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
২০ জুন, ২০২৪
X