দক্ষিণ চীন সাগরে মুখোমুখি দুই পরাশক্তি
বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে একই দিনে মহড়া চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। রোববার (৭ এপ্রিল) এই মহড়া ঘিরে মুখোমুখি হয়ে পড়েছে বিশ্বের এই দুই পরাশক্তি। খবর আল জাজিরার। দক্ষিণ চীন সাগরে ফিলিপাইন, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে প্রথমবারের মতো যৌথ সামরিক মহড়া আয়োজনের কথা আগেই ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে এই চার দেশের মতো মহড়া নিয়ে আগে-ভাগে কোনো ঘোষণা দেয়নি চীন। কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই তাদের সঙ্গে একই দিনে সাগরের একই এলাকায় মহড়ার আয়োজন করেছে চীনা সামরিক বাহিনী। বেইজিংয়ের পিপলস লিবারেশন আর্মি বা পিএলএ সাউদার্ন থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ চীন সাগরে নৌ ও বিমান কমব্যাট পেট্রলের আয়োজন করেছে। ইতোমধ্যেই মহড়ার অংশ হিসেবে তাইওয়ানের চারপাশে ঘুরছে চীনের ৩০টি সামরিক বিমান। তবে নিজেদের অন্য সামরিক তৎপরতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি চীন। এর আগে একই দিনে যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-ফিলিপাইন ও অস্ট্রেলিয়াও যৌথ মহড়া চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। ফিলিপাইন ও জাপানের নেতাদের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রথম ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠকের আগে এই মহড়ার খবর এলো। এমন মহড়ার খবরে দুপক্ষের মধ্যেই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরের যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যদিও সম্প্রতি ফিলিপাইনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। চীনা আগ্রাসন থেকে ফিলিপাইনকে রক্ষার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে নিজেদের এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের এমন খবরদারি মানতে নারাজ শি জিনপিংয়ের দেশ।
০৭ এপ্রিল, ২০২৪

কোনো পরাশক্তি নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না : বাহাউদ্দিন নাছিম
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। কোনো পরাশক্তি নেই নির্বাচন প্রতিহত করতে পারে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হবে। আগামী ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার খুলনায় জনসভা সফল করার লক্ষ্যে আজ বুধবার (৮ নভেম্বর) সাতক্ষীরা শহরের একটি রিসোর্ট সেন্টারে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত যৌথ মতবিনিময় সভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এসব কথা বলেন। বাহাউদ্দিন নাছিম বিএনপি-জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাদের জন্মদাতা সামরিক শাসক খুনি জিয়া, মুশতাক গংরা বঙ্গবন্ধুকে ও তার পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে সামরিক শাসন, স্বৈরশাসন, কারফিউ গণতন্ত্রের নামে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর যে ষড়যন্ত্র ছিল, সেই গোষ্ঠী এখন বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিশ্বাস করে না। তারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে এ দেশকে একটি তালেবানি রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশের মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে- এটা তারা চায় না। আলোচনা সভায় উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাহাউদ্দিন নাছিম ২০১৩ সালের জামায়াত-বিএনপির সহিংসতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ১ অক্টোবর সরকার গঠন করে যে সহিংসতা চালিয়েছিল তার শিকার বাংলাদেশের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিমের খুলনা বিভাগের অন্যতম জেলা সাতক্ষীরা। আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের দেখতে এখানে আসলে সেই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষায় শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়েছিল নেতাকর্মীরা।  বাহাউদ্দিন নাছিম আরও বলেন, বাংলাদেশ এবং জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন বিশ্ব আলোচনায়, বিশ্বের রোলমডেল ঠিক তখনই বিরোধীরা সমাবেশ করতে ব্যর্থ হয়ে হরতাল অবরোধের নামে আবার অগ্নিসন্ত্রাস আর মানুষ পুড়িয়ে মারা শুরু করেছে। সেজন্য নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে আগুনসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রাজপথে থাকতে হবে। খুনি-দুর্নীতিবাজ লুটপাটকারী ওই বিএনপি-জায়ামাতের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে, যে হাত দিয়ে বোমা মেরে বিএনপি মানুষ হত্যা করবে, গাড়িতে আগুন দিবে, সেই হাত ভেঙে দিতে হবে। কোনোভাবেই স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে দেশকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। আগামী নির্বাচনে আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রক্ষমতায় রাখতে হবে। আগামী ১৩ নভেম্বরে খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে আওয়ামী লীগের সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত করতে হবে। সমাবেশকে সফল করতে সবাই মিলে মিশে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক তুখড় ছাত্রনেতা এস.এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দৈনিক ভোরের পাতা ও দ্য পিপলস টাইমের সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতাজা হাসান, সিআইপি, সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, আশাশুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এ বি এম মুস্তাকিমসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কোনো রক্তচক্ষুকে ভয় পায় না। যথাসময়ে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তারেক জিয়া একজন খুনি, অস্ত্র ব্যবসায়ী। লন্ডনে বসে আছে, মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। সেখান থেকে মদদ দিয়ে দেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করছে। ২০১৪ সালে গান পাউডার দিয়ে ওই বিএনপি-জামায়াত মানুষ হত্যা করেছিল। এখন হরতাল অবরোধের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারছে, পুলিশ হত্যা করছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে আগুনসন্ত্রাস করছে। এটি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের রাজপথে থেকে প্রতিহত করতে হবে। সন্ত্রাসীরা, জঙ্গিরা গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করবে, পুলিশ হত্যা করবে, সাংবাদিক নির্যাতন করবে তা হতে দেওয়া যাবে না। আগুন দিয়ে জ্বালাও পোড়াও করলে বিএনপি নেতাদের বাড়ি থেকে ধরে এনে সেই হাতে আগুন ধরিয়ে দিতে হবে। জনতার আদালতে বিচার করতে হবে। আগামী ১৩ তারিখের খুলনার জনসভা হবে নৌকা বিজয়ের মহাসমাবেশ। সেই সভা থেকে নৌকা বিজয়ের জন্য শপথ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। সভায় সাতক্ষীরা থেকে লক্ষাধিক মানুষ খুলনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় যোগ দিতে সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন। ইতোমধ্যে প্রতিদিন সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলার ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুতি সভা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন নেতাকর্মীরা।
০৮ নভেম্বর, ২০২৩

উত্তেজনার মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র তৎপরতা বাড়াল তিন পরাশক্তি
ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা চরমে। এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বার বার আলোচনায় আসছে পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়টি। এরই মধ্যে জানা গেল সাম্প্রতিক বছরে নিজ নিজ পারমাণিক পরীক্ষাকেন্দ্র ঘিরে তৎপরতা বাড়িয়েছে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। তিন দেশই নির্মাণ করেছে নতুন পরীক্ষাকেন্দ্র ও টানেল। স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত বেশ কিছু বিশেষ ছবি বিশ্লেষণ করে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। সিএনএন বলছে, খুব শিগগিরই নতুন করে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র বা চীন পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালাবে, এমন তথ্য-প্রমাণ নেই। তবে তিন দেশই সম্প্রতি তাদের তিনটি পারমাণবিক পরীক্ষাকেন্দ্র সম্প্রসারণ করেছে। পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোর একটি চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে, রাশিয়ার আর্কটিক মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জে একটি এবং অন্যটি যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা মরুভূমিতে। মিডলবেরি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জেমস মার্টিন সেন্টার ফর ননপ্রলিফারেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জেফরি লুইস বলেন, স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবিতে দেখা যায়, গত তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে পাহাড়ের নিচ দিয়ে নতুন টানেল, রাস্তা, অস্ত্রাগার নির্মাণের পাশাপাশি পরীক্ষাকেন্দ্রে গাড়ির যাওয়া-আসা বেড়েছে। পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা নিষিদ্ধ করতে ১৯৯৬ সালের সিটিবিটি চুক্তি করা হয়। এই চুক্তি রাশিয়া অনুমোদন করলেও এখনো যুক্তরাষ্ট্র ও চীন করেনি। এরপরও এ চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর কোনো পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালায়নি মস্কো, বেইজিং ও ওয়াশিংটন। জেফরি লুইস বলেন, তবে সত্যিই এমন অনেক ইঙ্গিত রয়েছে যে রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু পরীক্ষা আবার শুরু করতে পারে। তিন পরাশক্তির পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষাকেন্দ্রের এসব স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করেছেন মার্কিন বিমানবাহিনীর সাবেক কর্নেল ও গোয়েন্দা বিশ্লেষক সেড্রিক লেইটনও। বিশ্লেষণের পর তিনিও একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, এটা খুবই স্পষ্ট- এই তিন দেশ শুধু তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার আধুনিক করতে প্রচুর সময়, প্রচেষ্টা ও অর্থ ঢালছে না। এসব অস্ত্র পরীক্ষা ঘিরেও তৎপরতা জোরদার করেছে তারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বেইজিং ও মস্কোর সম্পর্ক বেশ শীতল। এ পরিস্থিতিতে তিন দেশের এমন তৎপরতা পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের প্রতিযোগিতা বাড়াতে পারে। তবে এ নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে তিন দেশ সংঘাতে জড়াবে, এমনটা মনে করছেন না বিশ্লেষকরা।  
২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X