সাত দশক পর ফিলিস্তিনিপন্থি প্রার্থীর কাছে লেবার পার্টির পরাজয়
যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সাবেক শিল্পনগরী ব্ল্যাকবার্নে সাত দশকের ইতিহাসের পতন হয়েছে। আসনটিতে এতকাল রাজত্ব করে আসছিল লেবার পার্টি। তবে এবারের নির্বাচনে লেবার প্রার্থী কেট হলার্নকে হারিয়েছেন ফিলিস্তিনপন্থি স্ত্রতন্ত্রপ্রার্থী আদনান হোসাইন।  শুক্রবার (০৫ জুলাই) মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় ইসরায়েলি অভিযান নিয়ে লেবার পার্টির অবস্থান ভোটারদের মধ্যে বিভক্তি ও অসন্তোষ তৈরি করেছে। আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আদনানের জয় সেই ইঙ্গিত দিয়েছে।  নির্বাচনে ফিলিস্তিনপন্থি এ স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়েছেন ১০ হাজার ৫১৮ ভোট। অন্যদিকে পরাজিত প্রার্থী পেয়েছেন ১০ হাজার ৩৮৬ ভোট। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ১৩২ ভোটে পরাজিত হয়েছেন।  আসনটিতে সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ক্রেইগ মারেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। গাজাপন্থি প্লাটফর্ম জজ গ্যালওয়েজের ওয়ার্কাস পার্টি থেকে নির্বাচন করে তিনি সাত হাজার ১০৫ ভোট পেয়েছেন। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এ আসনটিতে ৬৯ বছর ধরে প্রতিনিধিত্ব করে আসছে লেবার পার্টি।  আদনান হোসাইন পেশায় আইনজীবী। নির্বাচনে গাজাপন্থি প্লাটফর্ম থেকে দাঁড়িয়েছেন। তাকে সাবেক লেবার কাউন্সিলরদের একটি দল সমর্থন দিয়েছিল। দলটির গাজা নীতিকে ঘিরে তারা লেবার পার্টি থেকে সরে আসেন। গত মে সামের শুরুতে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলটি ব্ল্যাকবার্ন বরোর দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল।  জুনের মাঝামাঝিতে মিডল ইস্ট আইকে আদনান বলেন, সাধারণ নির্বাচনের জয়ের ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাসী। আমি এ কমিউনিটিতে বড় হয়েছি। তাদের ভাষায় আমি কথা বলি। আমি তাদের সংগ্রামের গল্পগুলোও জানি।  তিনি বলেন, গাজায় যা ঘটছে তা গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য আমি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। দারিদ্র্য ও স্বাস্থ্যসেবাও রড় ইস্যুগুলোর অন্যতম বলে জানান তিনি।   
০৫ জুলাই, ২০২৪

ইসরায়েলি গবেষকের স্বীকারোক্তি, পরাজয় একেবারেই সন্নিকটে
গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের পরাজয় একেবারেই সন্নিকটে, যুদ্ধে ব্যর্থতার বিষয়টি ঢেকে রাখতেই এখন গাজায় লাগাতার হামলা চালানো হচ্ছে। হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন প্রাচীন ইতিহাসের একজন গবেষক। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে নিয়েও মন্তব্য করেছেন এই গবেষক। তার দাবি, ইসরায়েল ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। আর এর জন্য একমাত্র দায়ী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সবশেষে ইসরায়েলকে রক্ষার একটি পথও বাতলে দিয়েছেন তিনি।  ইসরায়েলের বিজয়ের যুগ শেষ হয়ে গেছে। নেতানিয়াহুর এখন উচিত ব্যর্থতার ভেতর থেকেই বিজয় কল্পনা করা। জেমান ইসরায়েল নিউজ সাইটে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে এমন মন্তব্য করেছেন পোল্যান্ডের ওয়ারশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হ্যাগি ওলশানিতস্কি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাচীন ইতিহাস বিভাগের একজন শিক্ষক।  ওলশানিতস্কি লিখেছেন, ৭ অক্টোবরে শুরু হওয়া যুদ্ধে ইসরায়েল কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারবে না, কারণ ইসরায়েল তার শত্রুকে ঠেকিয়ে রাখার সব শক্তিগুলো ব্যয় করে ফেলেছে। তার আর বর্ধিত কোনো শক্তি-সামর্থ্য নেই। অতীতে ইসরায়েল যেসব বিজয় অর্জন করত, সেসবের এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই। তিনি লিখেছেন, সাত অক্টোবরের ঘটনার পর ইসরায়েলি হামলায় যত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, তা দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩০ বছরের বর্ণবাদী শাসনে নিহত কৃষ্ণকায় নাগরিকদের সংখ্যার চেয়েও বেশি। ওলশানিতস্কি আশঙ্কা প্রকাশ করে লেখেন, অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিরা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর যেভাবে হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসযজ্ঞ ও তাদের সম্পদের ওপর অগ্নিসংযোগ করছে, তাতে নতুন একটি যুদ্ধের আগুনকেই উসকে দেয়া হচ্ছে।  গাজায় চলমান যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে দায়ী করে ওয়ারশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষক লিখেছেন, নেতানিয়াহু বিচার বিভাগসহ ইসরায়েলের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন, যেন গাজা যুদ্ধে ব্যর্থতার জন্য তাকে কারাগারে যেতে না হয়। আসলে ক্ষমতালোভী নেতানিয়াহু ক্ষমতা হারানোর ভয়েই গাজা যুদ্ধের ইতি টানছেন না।  ইসরায়েলের এই বিশেষজ্ঞ আরও লিখেছেন, ইসরায়েলকে রক্ষার একটি ক্ষুদ্র সম্ভাবনা রয়েছে নেতানিয়াহুর সামনে, আর সেটি হলো গাজায় যুদ্ধের আগুন থামানো। সব কিছুতেই ইসরায়েলের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে যাওয়ার আগে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। এই সুযোগ ইসরায়েলের হাতছাড়া করা উচিত নয়। 
০২ জুলাই, ২০২৪

ওয়ার্নার আর বৃষ্টিতে পরাজয় টাইগারদের
বর্তমান প্রেক্ষাপটে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৪০ কখনোই লড়াইয়ের মতো স্কোর না। মাঝে মধ্যে এই রান তো দলগুলো দশ ওভারেই তুলে ফেলে। বিশেষ করে প্রতিপক্ষ যখন হয় অস্ট্রেলিয়ার মতো হার্ড হিটার দল। চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে প্রথম ম্যাচে টাইগাররা অজিদের এই ১৪১ রানের টার্গেটই দিয়েছিল। আশা ছিল বোলিং ভালো করে ম্যাচ জমিয়ে তুলবে বাংলাদেশ তবে ডেভিড ওয়ার্নারের ছিল অন্য পরিকল্পনা। ওয়ার্নারের ঝড়ো ফিফটিতে জয়ের কাছে ছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে অজিদের সে কাজ করতে দেয়নি বৃষ্টি। অ্যান্টিগুয়ার ঝড়ো বৃষ্টিতে ডিএলএস মেথডে পরাজয় হয়েছে বাংলাদেশের। শুক্রবার (২১ জুন) অ্যান্টিগুয়ায় চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে গ্রুপ ‘১’ এর অস্ট্রেলিয়ার কাছে বৃষ্টি আইনে ২৮ রানে পরাজয় দিয়ে বিশ্বকাপের সুপার এইট মিশন শুরু হলো বাংলাদেশ। বৃষ্টি ম্যাচে বাগড়া দেওয়ার আগেই অবশ্য জয়ের কাছাকাছি ছিল অজিরা। দ্বিতীয়বারের মতো বৃষ্টি আসার সময় অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ১১.২ ওভারে ১০০ রান। ১২তম ওভারের প্রথম বলে তাসকিনকে ছয় মেরে নিজের ফিফটি তুলে নেন ওয়ার্নার। ওয়ার্নারের ঝড়ো ইনিংসে ডিএলএস মেথডে ২৮ রানে এগিয়ে ছিল অজিরা। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি না থামায় ওই ব্যবধানেই সুপার এইটে প্রথম জয় পায় মিচেল মার্শের দল। এর আগে টাইগারদের দেওয়া ১৪১ রানের টার্গেটে অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নার প্রথম দুই ওভার সতর্ক শুরু করেন। মাত্র ১০ রান আসে সেই দুই ওভার থেকে। তবে তৃতীয় ওভার থেকে হাত খুলে খেলা শুরু করেন দুই ব্যাটারই। এর মধ্যে মোস্তাফিজ ও তাসকিনের করা দুই ওভার থেকেই আসে ২৮ রান। ৬.২ ওভারেই অজিদের রান হয়ে যায় ৬৪। তবে অজিদের রান ৬৪ হওয়ার পর হানা দেয় বৃষ্টি। বৃষ্টি আসার আগ পর্যন্ত হেড করেছেন ৩১ ও ওয়ার্নার ৩২ রান। বৃষ্টি আইনে অবশ্য অনেক এগিয়ে যায় অজিরা। সেসময় বৃষ্টি না থামলে জয়ী হতো তারাই কারণ সে সময় তাদের রান থাকতে হতো ৩৫ সেখানে বর্তমানে তারা এগিয়ে যায় ২৯ রানে। বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে বাংলাদেশ অবশেষে ব্রেকথ্রু পায় রিশাদ হোসেনের হাতে। বৃষ্টির পর ম্যাচ শুরু হতেই বোল্ড করেন ৩১ রানে থাকা ট্রাভিস হেডকে। এখানেই ক্ষান্ত হননি রিশাদ। নিজের পরের ওভারে এসে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন অজি অধিনায়ক মিচেল মার্শকে। রিভিউ নিয়েও উইকেট বাঁচাতে পারেননি মার্শ, প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন ৬ বলে ১ রান নিয়ে। তবে বাকি কাজ সহজেই করেছেন ম্যাক্সওয়েল ও ওয়ার্নার।  এদিকে শুরুতে ব্যাটিং করে স্টার্ক, জাম্পাদের সামনে ঠিক স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না টাইগার ব্যাটাররা। তবে অধিনায়ক শান্তর রানে ফেরা ও তাওহীদ হৃদয়ের ঝড়ো ৪০ রানে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১৪০ রানে। অজি পেসার প্যাট কামিন্স আবার করেছেন হ্যাটট্রিক।
২১ জুন, ২০২৪

ইউরোতে প্রথম অঘটন, স্লোভাকিয়ার কাছে বেলজিয়ামের পরাজয়
প্রথম অঘটন দেখলো এবারের ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ (ইউরো)। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে গ্রুপ ‘ই’ উত্তেজনাপূর্ণ এক ম্যাচে স্লোভাকিয়া গ্রুপ ফেভারিট বেলজিয়ামকে হারিয়ে আসরের প্রথম অঘটনের জন্ম দিয়েছে। পুরো ম্যাচটি নাটকীয় মুহূর্ত এবং বিতর্কিত সিদ্ধান্তে পরিপূর্ণ ছিল, যেখানে স্লোভাকিয়া বেলজিয়ামের ভুলের সদ্ব্যবহার করে ১-০ গোলের একটি স্মরণীয় জয় অর্জন করে। সোমবার (১৭ জুন) অবশ্য ম্যাচের চূড়ান্ত মুহূর্তে রোমেলু লুকাকু মনে করেছিল যে তিনি বেলজিয়ামের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমতাসূচক গোল করেছেন। তবে, ভিডিও সহকারী রেফারি (ভিএআর) গোলটি বাতিল করে দেয় হ্যান্ডবলের কারণে। এটি ম্যাচে লুকাকুর দ্বিতীয় বাতিল হওয়া গোল ছিল, কারণ ভিএআর আগেও আমাদু ওনানার হেডার থেকে লুকাকুর আরেকটি গোল বাতিল করে। ম্যানচেস্টার সিটির জেরেমি ডোকুর একটি ডিফেন্সিভ ভুলের সুযোগ নিয়ে স্লোভাকিয়ার ইভান শ্রাঞ্জ গোল করে দলটিকে লিড এনে দেয়। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের তৃতীয় স্থানে থাকা বেলজিয়ামকে অবাক করে দিয়ে ৪৮ তম স্থানে থাকা স্লোভাকিয়া লিড নিয়ে নেয়। বেলজিয়াম অবশ্য গোল শোধের অনেক সুযোগ পান। বেলজিয়ামের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা লুকাকুর জন্য বেলজিয়াম গোল করতে ব্যর্থ হয় এবং খালি হাতে মাঠ ছাড়ে। ম্যাচ জুড়েই গোলের সামনে বেলজিয়াম ছিল ব্যর্থ। বদলি খেলোয়াড় জোহান বাকায়োকোকে স্লোভাকিয়ার ডেভিড হ্যানকোর একটি দুর্দান্ত গোললাইন ক্লিয়ারেন্স দ্বারা থামানো হয়। লুকাকুর হতাশা স্পষ্ট ছিল কারণ তিনি বেশ কয়েকটি সুযোগ মিস করেন, যার মধ্যে একটি ছিল ডোকুর ডান দিক থেকে নেয়া চমৎকার এক দৌড়ের পর। তবে লুকাকু সেটি গোলে রুপান্তরিত করতে পারেননি। ম্যানচেস্টার সিটির কেভিন ডি ব্রুইনা পুরো ম্যাচ জুড়ে একটি ক্রমাগত হুমকি ছিলেন এবং আর্সেনালের লিয়ান্দ্রো ট্রোসার্ডের একটি শট বারের উপর দিয়ে যায়। হতাশাজনক এই হারের পর অবশ্য বেলজিয়ামকে দ্রুত পুনর্গঠিত হতে হবে। কারণ পরের ম্যাচে তারা রোমানিয়ার মুখোমুখি হবে যারা আজকে গ্রুপ ই-র অন্য ম্যাচে ইউক্রেনকে ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে। ম্যাচটিতে রোমানিয়ার জয় ২৪ বছর পর ইউরোর আসরে তাদের প্রথম জয়।
১৮ জুন, ২০২৪

ইউরোপা লিগ ফাইনালে অপরাজিত লেভারকুসেনের পরাজয়
সুযোগ ছিল ইউরোপের প্রথম দল হিসেবে অপরাজিত থেকে ট্রেবল জেতা। পুরো মৌসুমজুড়ে তারা যে রকম খেলেছে, তাতে তাদের বিপক্ষে বাজি ধরার লোক খুব কম পাওয়া যেত। অপরাজিত থেকে পুরো মৌসুম শেষ করতে তাদের সামনে ছিল শুধু দুটি ফাইনাল। তবে তার প্রথমটিতেই হেরে জার্মান ক্লাব বায়ার লেভারকুসেনের অপরাজিত থেকে মৌসুম শেষ করার স্বপ্নে জল ঢেলে দিয়েছে ইতালিয়ান ক্লাব আটালান্টা। আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ইউরোপা লিগের ফাইনালে বায়ার লেভারকুসেনকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ৬১ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শিরোপা জিতেছে ইতালির ক্লাব আটালান্টা। আটালান্টার নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড আদেমোলা লোকম্যানের হ্যাটট্রিকে সহজ জয় আসে ইতালির ক্লাবটির জন্য। আর আটালান্টার জয়ে যেকোনো প্রতিযোগিতা মিলে এই মৌসুমে প্রথম পরাজয় বরণ করতে হলো লেভারকুসেনের। ২৬ বছর বয়সী এই ফুটবলার আটালান্টা আসার আগে এভারটন ও আরবি লিপজিগের মতো দলে ছিলেন। ফরোয়ার্ড হিসেবে তিনি তার ক্যারিয়ারের সেরা সময়টুকু কাটাচ্ছেন ইতালির এই ক্লাবে। আর তাতেই নিশ্চিত হয়েছে আটালান্টার প্রথম ইউরোপীয় ট্রফি।   জিয়ান পিয়েরো গাসপেরিনির নেতৃত্বাধীন ইতালিয়ান সিরি আর দলটি পুরো ম্যাচজুড়েই অসাধারণ খেলেছে। পুরো ম্যাচজুড়ে দাপুটে পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে তারা লেভারকুসেনকে তাদের অপরাজিত থেকে মৌসুম শেষ করার স্বপ্ন পূরণ হতে দেয়নি। লেভারকুসেনের অপরাজিত থাকার রেকর্ডটি ৫১ ম্যাচ এবং ৩৬১ দিন পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। গত বছরের মে মাসে সর্বশেষ পরাজয় বরণ করে নিয়েছিল তারা।   এই মৌসুমে জাভি আলোনসোর নেতৃত্বে লেভারকুসেন তাদের প্রথম বুন্দেসলিগা শিরোপা দখল করে। ৩৪ ম্যাচে ২৮টি জয় এবং ৬টি ড্র নিয়ে শেষ করে শাকা-গ্রিমালদোরা। জার্মান ক্লাবটি ইউরোপীয় ফুটবলের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে তিনটি প্রধান ট্রফি জেতার গৌরব অর্জন করার জন্য ফেভারিট ছিল। প্রথমবারের মতো বুন্দেসলিগা জয়ের পর  ইউরোপা লিগ ও ডিএফবি পোকাল (জার্মান কাপ) জিতে একেবারে নিখুঁত মৌসুম কাটানোর লক্ষ্য ছিল ক্লাবটির।  অন্যদিকে আটালান্টা, যারা কোয়ার্টার ফাইনালে লিভারপুলের মতো দলকে বাদ দিয়েছিল এবং সেমিফাইনালে মার্সেইকে পরাজিত করে ফাইনালে পা রেখেছিল। তারা ফাইনালে প্রথম থেকেই লেভারকুসেনের সঙ্গে সমান তালে লড়েছে। ম্যাচের প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা ছিল তাদের।  প্রথম থেকেই দেখে শুনে খেলতে থাকা আটালান্টা ও তার সমর্থকরা ৩১ মিনিটের মধ্যেই আনন্দে ভাসে। দলটির ফরোয়ার্ড লোকম্যানের গোলগুলি আটালান্টাকে প্রথমার্ধে ২-০ লিড দেয় এবং তিনি ৭৫তম মিনিটে একটি অসামান্য একক গোলে নিজের হ্যাটট্রিক এবং দলের বিজয় নিশ্চিত করেন। লেভারকুসেনের প্রত্যাবর্তন করার খ্যাতি থাকা সত্ত্বেও লোকম্যানের তৃতীয় গোলটি নিশ্চিত করে যে আজকে অন্তত কোনো রূপকথা লেখা হচ্ছে না। যদিও লেভারকুসেনের অপরাজিত ট্রেবলের স্বপ্ন ভেঙে গেছে, তবে তারা এখনও আরেকটি ট্রফি জয়ের মাধ্যমে ইতিহাস তৈরি করার সুযোগ রয়েছে। তারা শনিবার বার্লিনে জার্মান কাপ ফাইনালে দ্বিতীয় স্তরের দল কায়সারসলাউটেনের মুখোমুখি হবে।
২৩ মে, ২০২৪

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ১ রানে পরাজয় বেঙ্গালুরুর
এবারের আইপিএলের কথা চিন্তা করলে টার্গেটটা অবশ্য বেঙ্গালুরুর নাগালের মধ্যেই ছিল। একসময় মনে হচ্ছিল হেসে খেলেই কোহলির দল ম্যাচটি জিতবে। তবে দলটি যে বেঙ্গালুরু তীরে এসে তরী ডোবানো যাদের স্বভাব। শেষ পর্যন্ত দারুণ লড়াই করে ২২৩ রানের টার্গেটে ২২১ রানে থামে তারা। রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে মাত্র ১ রানে হারে মন ভাঙে বেঙ্গালুরুর সমর্থকদের। রোববার (২১ এপ্রিল) কলকাতার তপ্ত গরমে ২২৩ রানের লক্ষ্যে ৩৫ রানেই বিরাট কোহলি (১৮) ও ফাফ ডু প্লেসিসের (৭) উইকেট হারায় বেঙ্গালুরু। মনে হচ্ছিল তখনই কলকাতার হাতে ম্যাচ চলে গেছে। তবে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন উইল জ্যাকস ও রজত পতিদার। তৃতীয় উইকেটে তারা দুজন ১০২ রান যোগ করে ম্যাচ কলকাতার হাত থেকে ছিনিয়ে নেন। তবে ১৩৭ রানের মাথায় এক ওভারে এই দুইজন ফিরলে চাপে পড়ে বেঙ্গালুরু। পরে আরও দুই উইকেট হারিয়ে রীতিমতো বিপদে পড়ে বেঙ্গালুরু। তবে সুয়েশ প্রভুদেসাই (২৪) ও দিনেশ কার্তিকের (২৫) ব্যাটে ১৯ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০২ পর্যন্ত যায় বেঙ্গালুরু। তবে তখনো মনে হচ্ছিল ম্যাচ অনেক দূরে। শেষ ওভারে জিততে লাগত ২১ রান। মিচেল স্টার্কের করা প্রথম চার বলে তিন ছক্কায় প্রায় ম্যাচটি জিতিয়েই ফেলছিলেন কর্ণ শর্মা। তবে শেষ দুই বলে ৩ রান লাগার সময় আর পারেনি তারা। পঞ্চম বলে কর্ণ আউট হয়ে যান ৭ বলে ৩ ছক্কায় ২০ রান করে। তাতে জিততে শেষ বলে ৩ রান প্রয়োজন ছিল। ২ রান হলে সুপার ওভার। কিন্তু মোহাম্মদ সিরাজ ও লোকি ফার্গুসন ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হলে ১ রানে জয় পায় কলকাতা। বল হাতে আন্দ্রে রাসেল ৩ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। ব্যাট হাতে অপরাজিত ২৭ রান করা এই অলরাউন্ডার ম্যাচসেরাও হন। ২টি করে উইকেট নেন হরশিত রানা ও সুনীল নারিন।
২১ এপ্রিল, ২০২৪

ক্রিকেটারদের টেস্ট খেলার আগ্রহ নিয়ে পাপনের সন্দেহ 
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের বয়স কম নয়। প্রায় ২৪ বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেটের সঙ্গে বাংলাদেশ যুক্ত থাকলেও ক্রিকেটের সবচেয়ে পুরোনো ফরম্যাটে অর্জন এখনও নগন্য। এতদিন ধরে খেলেও বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটে যে ম্যাচুরিটি নিয়ে খেলার কথা তার কোন কিছুই নেই শান্ত-লিটনদের খেলায়। যার বড় প্রমাণ সিলেটে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে স্মরণকালের অন্যতম বড় পরাজয়। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান চক্রে যেখানে জয় লক্ষ্য থাকা উচিত সেখানে উল্টো রানের হিসাবে ৩২৮ রানের বিশাল পরাজয় হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তদের। টাইগারদের এরকম লজ্জার হারে দেশবাসীর সঙ্গে হতাশ টাইগার ক্রিকেটের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও। এমনকি বিসিবি সভাপতির কাছে মনে হয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের টেস্ট খেলার কোনো আগ্রহই নেই। মিরপুরে হোম অব ক্রিকেট খ্যাত শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘সমস্যা হচ্ছে হারাটা নিয়ে না, সমস্যা হচ্ছে যেভাবে তারা হেরেছে। যেভাবে তারা খেলেছে, তাদের এই মাইন্ডসেট, এটিটিউড, শট সিলেকশন এটা জঘন্য বিচ্ছিরি ছিল দেখতে। মনে হয়েছে তারা খেলতে চায় না এই ফরম্যাটটা। অথবা অন্য কোনো সমস্যা।’ তবে পাপনের মনে হয় দল যত খারাপ অবস্থাতে ছিল ঠিক অতটা খারাপ অবস্থাতেও নেই। বিসিবি সভাপতি ও ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, ‘সবার কাছে যেমন লেগেছে আমার কাছেও তেমন লেগেছে ভালো লাগার কোনো কারণ নেই। আসলে এখানটায় কয়েকটা ব্যাপার আছে আমার মতামতটা বলতে পারি। প্রথম কথাটা হচ্ছে আমি এখানে হারা জেতা নিয়ে চিন্তিত না। হঠাৎ করে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা যখন চলে যায় নতুন একটা দল আসে তারা ৪-৫ বছর স্ট্রাগল করেই। সেদিক থেকে বলব আমাদের দলে ওরকম খারাপ অবস্থা হয়নি।’ এ ছাড়াও ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘এরা কেউ বাচ্চা ছেলে না, হঠাৎ করে আজকে ওদের মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই জিনিসটা বলে দিতে হবে। তারা প্রত্যেকে জানে। এই কারণে আমাদের মনটা খারাপ হয়েছে এবং সেটা নিয়েই কথা বলব। সেজন্য আজকে সবার সঙ্গে বসার জন্য এখানে আসছি।’ তবে দলে সিনিয়র ক্রিকেটাররা না থাকা এবং পেস সহায়ক উইকেটে টেস্ট খেলা নিয়ে পাপন বলেন, ‘একটা হচ্ছে তামিম সাকিব মুশফিক রিয়াদের মতো খেলোয়াড়রা নেই। ওরা এই প্রথম এরকম একটা খেলা খেলতে যাচ্ছে যেখানে কেউ নেই। দ্বিতীয়ত উইকেট আমরা টোটালি অন্য ধরনের এক উইকেটে খেলছি। এটাতে করে যারা খেলছে তাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।’
২৬ মার্চ, ২০২৪

মুমিনুলের লড়াইয়ের পরেও রেকর্ড হার
সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিন শেষেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের পরাজয় বাকি ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা। তৃতীয় দিনেই ৪৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশ যে খেলা চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত নিয়েছে তার পুরো কৃতিত্ব মুমিনুল হকের। প্রথমে মিরাজ এবং পরে শরীফুলকে নিয়ে মুমিনুলের হার না মানা প্রতিরোধের পরেও বড় পরাজয় ঠেকাতে পারেনি বাংলাদেশ।  সোমবার (২৫ মার্চ) নয়নাভিরাম সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে লঙ্কানদের বিপক্ষে রেকর্ড ৩২৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। রানের হিসেবে যেটি তাদের ষষ্ঠ বড় পরাজয়। টেস্টটিতে প্রথম ইনিংসে লঙ্কানদের ২৮০ রানের জবাবে ১৮৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে সফরকারী দল করে ৪১৮ রান। বাংলাদেশ জবাবে অলআউট হয়েছে ১৮২ রান করে। মুমিনুল অপরাজিত থাকেন ৮৭ রানে।    আজকের দিনে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল যতটা পারা যায় হার বিলম্বিত করা। অবশ্য এই লক্ষ্যে প্রথমেই ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা। দিনের তৃতীয় ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন নাইটওয়াচ ম্যান তাইজুল। কাসুন রাজিথার বলে লেগ বিফোর হন তিনি। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। এর পর শুরু হয় ক্রিজে আসা মিরাজকে নিয়ে মুমিনুলের হার বিলম্বিত করার লড়াই। দুজনে মিলে একে একে দুটি লজ্জার রেকর্ডের হাত থেকে বাঁচান বাংলাদেশকে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বনিম্ন স্কোর ও ঘরের মাঠে নিজেদের সর্বনিম্ন স্কোর। বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় স্রেফ ৫১ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর সপ্তম উইকেটে তারা দুজনে যোগ করেন ৬৬ রান। বাংলাদেশও স্বপ্ন দেখতে থাকে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে লঙ্কানদের দ্বিতীয় সেশনে নেওয়ার। তবে সেই স্বপ্নে আবারো কাসুন রাজিথার ধাক্কা। লঙ্কান পেসারের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন তিনি। ৬ চারে ৫০ বলে ৩৩ রান করে ফিরেন মিরাজ। মিরাজের বিদায়ে হারের আরও কাছে চলে যায় বাংলাদেশ। শঙ্কা থাকে আরও উইকেট যাওয়ার। তবে শরিফুলকে নিয়ে খেলা দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত নিতে সক্ষম হন মুমিনুল। তবে দ্বিতীয় সেশনে আর বেশিদূর যেতে পারেননি টাইগাররা। শরিফুলকে নিয়ে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্যে ওভার খেলতে থাকেন মুমিনুল। মুমিনুল তুলে নেন অর্ধশতকও। তবে তাদের দুজনের মধ্যকার ৪৭ রানের জুটি ভাঙার পরেই নিশ্চিত হয়ে যায় পরাজয়। কাসুন রাজিথাই লঙ্কানদের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন। পরের বলে খালেদকে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেটও পূর্ণ করেন এই পেসার। শেষ উইকেট হিসেবে নাহিদ রানা আউট হলে নিশ্চিত হয় লজ্জার পরাজয়। মুমিনুল অপরাজিত থাকেন ৮৭ রানে। দুই ইনিংসে দুই শতকের জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠে লঙ্কান দলপতি ধনঞ্জয় ডি সিলভার হাতে।
২৫ মার্চ, ২০২৪

মুমিনুল-মিরাজে বিলম্বিত পরাজয়
সিলেটে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংসের পরেই বলতে গেলে নিশ্চিত হয়ে যায় স্বাগতিকদের পরাজয়। শ্রীলঙ্কার দেওয়া রান পাহাড়ের চাপে গতকালেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। সেই অসহায় অবস্থার সামনে দাড়িয়ে চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের  লক্ষ্য ছিল হার যতটা পারা যায় পরাজয় বিলম্বিত করা। মুমিনুল হক-মেহেদী হাসান মিরাজ সেই কাজটিই করছিলেন।   সোমবার (২৫ মার্চ) নয়নাভিরাম সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিনে ব্যাট করছে বাংলাদেশ। লঙ্কানদের দেওয়া ৫১১ রানের রান পাহাড়ে তৃতীয় দিন শেষেই হার এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। আজকের দিনে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল যতটা পারা যায় হার বিলম্বিত করা।  অবশ্য এই লক্ষ্যে প্রথমেই ধাক্কা স্বাগতিকরা। দিনের তৃতীয় ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন নাইটওয়াচ ম্যান তাইজুল। কাসুন রাজিথার বলে লেগ বিফোর হন তিনি। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। এর পর শুরু হয় ক্রিজে আসা মিরাজকে নিয়ে মুমিনুলের প্রতিরোধ বা সহজ কথায় হার বিলম্বিত করা। দুজনে মিলে একে একে দুটি লজ্জার রেকর্ডের হাত থেকে বাঁচান বাংলাদেশকে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বনিম্ন স্কোর ও ঘরের মাঠে নিজেদের সর্বনিম্ন স্কোর। বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় স্রেফ ৫১ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর সপ্তম উইকেটে তারা দুজনে যোগ করেন ৬৬ রান। বাংলাদেশও স্বপ্ন দেখতে থাকে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে লঙ্কানদের দ্বিতীয় সেশনে নেওয়ার। তবে সেই স্বপ্নে ধাক্কা দেয় কাসুন রাসিথা। লঙ্কান পেসারের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন তিনি। ৬ চারে ৫০ বলে ৩৩ রান করে ফিরলেন মিরাজ। মিরাজের বিদায়ে হারের আরও কাছে চলে যায় বাংলাদেশ। শঙ্কা থাকে আরও উইকেট যাওয়ার। তবে শরিফুলকে নিয়ে খেলা দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত নিতে সক্ষম হয়েছেন মুমিনুল। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১২৯ রানে ৭ উইকেট। ক্রিজে আছেন শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে ৪৬ রান করা মুমিনুল ও তার সঙ্গী হিসেবে আছেন ৩ রান করা শরিফুল।
২৫ মার্চ, ২০২৪

আলজাজিরা থেকে / গাজায় বিশ্বের নৈতিক পরাজয় ঘটেছে
গাজার ইজরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এই যুদ্ধ যে নির্মম এবং বিশ্বে মানবিক ব্যর্থতার একটি উদাহরণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। চলতি সপ্তাহে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনে আমন্ত্রিত পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা কি এই যুদ্ধ নিয়ে কোনো কথা বলবেন? এই অসম যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তারা কি কোন পদক্ষেপ নেবেন? আজকে আমরা বিশ্বের যে নৈতিক পরাজয় দেখছি তাতে ভবিষ্যতের জন্যও আমি শঙ্কিত।  গত ১৩৮ দিনে গাজায় যা ঘটেছে এই বর্বরতা কোনো কিছুর সঙ্গে তুলনাযোগ্য নয়। হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে বহু মানুষ। সম্পূর্ণ একটি জনপদ যেন মাটিতে মিশে গেছে। কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং তীব্র শীতে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে।  খাদ্যের জোগান নেই, প্রায় ৫ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে রয়েছে। খাবার, পানি, স্বাস্থ্যসেবা, স্যানিটেশনসহ মৌলিক চাহিদাগুলো কেড়ে নেওয়া হয়েছে। একটি সমগ্র জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। গাজার জনগণের ওপর যে নৃশংসতা চলছে সাহসী প্যালেস্টাইনি সাংবাদিকরা তা বিশ্বের সামনে তুলে ধরছেন। আর এটি করতে গিয়ে অনেক সাংবাদিক হত্যার শিকারও হয়েছেন। অথচ এই সব কিছু দেখেও কোনো কিছু না দেখার ভান করে আছে সবাই।   অনেকে অন্ধত্বের ভান ধরে থাকলেও এই নৃশংসতা বন্ধে মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। গাজার উদ্ধাস্তুদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার সময় এখন পর্যন্ত ১৬০ জন মানবাধিকারকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। তার পরেও আমাদের দলগুলো খাদ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম  এবং নিরাপদ পানি পৌঁছে দিতে সংকল্পবদ্ধ। আমাদের নিরাপত্তার ঝুঁকি রয়েছে, প্রবেশের সীমাবদ্ধতা রয়েছে তা সত্ত্বেও আমরা যা যা করতে পারি তার সবই করছি।  ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং জাতিসংঘের বৃহত্তম মানবিক সংস্থা থেকেও আমরা কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমি যে মানবাধিকার সংস্থায় কাজ করি আমাদের একমাত্র পরিকল্পনাসমগ্র গাজাজুড়ে সাহায্যের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য সবকিছু করা। আমাদের সামনে অনেক বাধা রয়েছে, অনিরাপত্তা রয়েছে, তবুও আমরা বসে থাকতে পারি না। আমরা নৈতিকভাবে পরাজয় বরণ করতে চাই না।  ইসরায়েলের ওপর ৭ অক্টোবরে যে হামলা হয়েছিল তা অবশ্যই নিন্দনীয়। কিন্তু তা গাজার প্রতিটি শিশু, নারী ও পুরুষের সঙ্গে যা ঘটছে তাকে ন্যায্যতা দিতে পারে না। জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে যাওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাছে আমার বার্তাটি পরিষ্কার। আমরা গাজায় দখলদার শক্তি ইসরায়েলের কাছে অনুরোধ করছি যে মানবাধিকার কর্মীরা গাজার অবরুদ্ধ মানুষদের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে তাদের হামলার লক্ষবস্তু করা না হোক। আমরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের বাধ্যবাধকতাগুলো সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।  সেইসব দেশ যারা জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থায় অর্থ সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে তাদের কাছে আমরা অনুরোধ করি যেন তারা তাদের সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেয়। আমি জি-২০ এর আমন্ত্রিতদের কাছে আহ্বান জানাই আপনারা আপনাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং প্রভাব ব্যবহার করে এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবং গাজার জনগণকে বাঁচাতে সাহায্য করুন। না হলে গাজায় বিশ্বের যে নৈতিক পরাজয় ঘটেছে তার ভবিষ্যৎ হবে আরও সংশয়ের।  মার্টিন গ্রিফিথস : জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি    
২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X