চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত​​
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে অজ্ঞাতনামা গাড়ির চাপায় আবুল কালাম (৬২) নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৮ জুন) রাত ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পদুয়া এলাকার থ্রি স্টার সিএনজি পাম্পের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের মরকটা গ্রামের সুজাত আলীর ছেলে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নিহতের ভাতিজা জাকির হোসেন। নিহতের ভাতিজা জাকির হোসেন জানান, আবুল কালাম প্রায় সময় বিকেল বেলা অনেক দূর হাঁটাহাঁটি করতেন। প্রতিদিনের মতো আজকেও মহাসড়কের পাশ দিয়ে হাঁটার সময় অজ্ঞাত গাড়ি তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। আমরা রাতে খবর পেয়ে চাচার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসি। শনিবার বেলা ১১টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। মিয়াবাজার হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় পদুয়া এলাকায় এক পথচারী নিহত হয়েছেন। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই নিহতের স্বজনরা মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যায়।
২৯ জুন, ২০২৪

পথচারী ও শিশুদের নিয়ে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’তে ভিজলেন মেয়র আতিক
বায়ুদূষণ রোধ ও তীব্র তাপপ্রবাহে শহরকে ঠান্ডা রাখতে নগরীতে স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’র ব্যবস্থা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সংস্থাটির চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিনের পরামর্শে এ ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’র ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় ঢাকা উত্তরের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামসহ পথচারী ও শিশুদের ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’তে ভিজে আনন্দ করতে দেখা যায়। শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ সরণিতে গিয়ে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি সরবরাহের জন্য রাখা বিশেষ ভ্যান পরিদর্শন করেন এবং নিজে ট্যাপ ছেড়ে পানি পান করেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। পরে স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টির মতো পানি ছিটানো শুরু হলে মেয়র নিজে উচ্ছ্বসিত শিশু-কিশোরদের সঙ্গে ছিটানো ওই পানিতে ভিজেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় এক মাস ধরে ঢাকাসহ সারা দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। এ তাপপ্রবাহ থেকে নাগরিকদের কিছুটা স্বস্তি দিতে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন ডিএনসিসিতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান অ্যাড্রিয়েন আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টারের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন। সে অনুযায়ী ডিএনসিসির দুটি স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেয়র আতিক বলেন, দুটি গাড়ি দিয়ে প্রতিদিন চার লাখ লিটার পানি আমরা ছিটাব। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পানি দেওয়া হবে। তবে গাড়িগুলো অলিগলিতে যেতে পারবে না, মেইন রোডে থাকবে। আর সড়কে পানি ছিটানোর জন্য ১০টি ব্রাউজারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একেক ব্রাউজারে ১৫ হাজার লিটার করে পানি ধরে। আগামী সাত দিনের মধ্যে উত্তর সিটির বিভিন্ন পার্কে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করা হবে জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের পার্কগুলোতে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলেছি। আমরা আশা করি, আগামী সাত দিনের মধ্যে পার্কগুলোতে কৃত্রিম পানির ব্যবস্থা করতে পারব। এ ছাড়া আমাদের প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে বিশুদ্ধ পানির ভ্যান থাকবে। ছোট ছোট ভ্যানগুলো নিয়ে অলিগলিতে পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগরের মানুষ ভ্যান থেকে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে পারবেন। এগুলোও আমাদের চিফ হিট অফিসারের পরামর্শে করা হয়েছে। নগরের দোকান এবং শপিংমলগুলোর সামনে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি দোকান বা শপিংমলে পানির ব্যবস্থা রাখুন। যাতে নগরবাসী তৃষ্ণা মেটাতে পারে। গত বছর নগরের বিভিন্ন এলাকায় ৮০ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর আমরা চিফ হিট অফিসারের পরামর্শে নগরের বিভিন্ন এলাকায় ৮০ হাজার গাছ লাগিয়েছি। এবার আমরা আরও এক লাখ ২০ হাজার গাছ লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পরপরই আমরা এ কার্যক্রম শুরু করব। পাশাপাশি এসব কাজ রক্ষণাবেক্ষণে আমরা বেশ গুরুত্ব দিচ্ছি। যে এলাকায় গাছগুলো লাগানো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কমিউনিটিকে আমরা যুক্ত করছি।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

নির্মাণাধীন ভবনের কলাম মাথায় পড়ে পথচারী নিহত
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাত মসজিদ রোডে নির্মাণাধীন ভবনের কলাম ভেঙে মাথায় পড়ে হাসান (৪৬) নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সাত মসজিদ হাউজিংয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হাসান বায়োফার্মা লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে সাপ্লাই চেইন বিভাগে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। হাসান চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানার জুইডন্ডী গ্রামের ফজল আহমেদের ছেলে। তিনি সাত মসজিদ এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। নিহতের প্রতিবেশী শফিউর রহমান জানান, হাসান নামাজ পড়তে মসজিদে যাচ্ছিলেন। পথে নির্মাণাধীন একটি ভবনের কলাম ভেঙে মাথায় পড়লে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে আমরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান তিনি আর বেঁচে নেই। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। মোহাম্মদপুর থানার ওসি মাহফুজুল হক ভূঁইয়া জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ওই হাউজিংয়ে ৮০ জন লোক মিলে জমি কিনে ভবন তৈরির কাজ করছেন। শনিবার রাতে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় ভবনের একাংশ ভেঙে হাসান নামে এক ব্যক্তির মাথায় পড়লে তিনি মারা যান। নিহতের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
০৭ এপ্রিল, ২০২৪

সিরাজগঞ্জে ট্রাকের চাপায় পথচারী নিহত 
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দ্রুতগামী একটি ট্রাকের চাপায় মো. সায়েম আলী (১৭) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৭ মার্চ) ভোরে ঢাকা-নাটোর মহাসড়কের খালকুলা বাজার এলাকায় জনতা হোটেলের সামনে এ দুর্ঘটনা হয়। নিহত পথচারী মো. সায়েম আলী পাবনা জেলার সাথিয়া উপজেলার সাথিয়া গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার এসআই মো. শফিকুল ইসলাম। হাইওয়ে থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার খালকুলা এলাকায় সায়েম আলী রাস্তা পারাপারের সময় ঢাকার দিক থেকে আসা দ্রুতগামী একটি ট্রাক তাকে চাপা দিলে তিনি ঘটনাস্থলে নিহত হন। এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ হাইওয়ে হাটিকুমরুল থানার ওসি মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর কার্যক্রম চলছে। পাশাপাশি এ ব্যাপারে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।    
২৭ মার্চ, ২০২৪

ভাঙা পাটাতনেই পার হচ্ছেন হাজারো পথচারী
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল রেলস্টেশনের ভাঙা ফুটওভারব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন হাজার হাজার পথচারী। জানা যায়, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার প্রধান ব্যবসা কেন্দ্র জামতৈল বাজারকে দুই ভাগ করে রেখেছে জামতৈল রেলস্টেশন। এর পূর্বদিকে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিদ্যুৎ অফিস এবং উপজেলার ১৫টি গ্রামের জনসাধারণ রয়েছে তেমনি পশ্চিম দিকে রয়েছে উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, পুলিশ স্টেশন, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, বীমা এবং প্রধান বাজার।  পূর্বদিক থেকে পশ্চিম দিকে এবং পশ্চিম দিক থেকে পূর্বদিকে নিরাপদে যাতায়াতের একমাত্র ব্যবস্থা রেলস্টেশনের এই ফুটওভারব্রিজ। সেই ফুটওভারব্রিজের বেশ কয়েকটি পাটাতন অকেজো এবং ১টির প্রায় অর্ধেক ভেঙে গেছে। সেখান দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে পথচারীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় এক যুগ আগে তৈরি হওয়া ফুট ওভারব্রিজটির বেশ কয়েকটি পাটাতন নড়বড়ে হয়ে গেছে। জনসাধারণ ওই পাটাতনের ওপর দিয়ে ভয়ে ভয়ে যাতায়াত করছে। ২টি পাটাতনের অবস্থা একেবারে খারাপ। তার মধ্যে ১টির অর্ধেক প্লাস্টার খুলে লোহার রড বের হয়েছে। পথচারী কৃষ্ণ কুমার সাহা বলেন, কর্তৃপক্ষের এটা নিয়ে কোনো মাথাব্যথা আছে কিনা আমরা জানি না। এই ফুটওভারব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ হাজার পথচারী ওঠানামা করে। একদিকে স্কুল-কলেজের হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী অন্যদিকে প্রধান বাজার রয়েছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি ট্রেনের যাত্রীরাও এই ফুটওভারব্রিজটি ব্যবহার করে থাকে। এটা সংস্কার করা প্রয়োজন। জামতৈল রেল স্টেশন মাস্টার আমিনুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ দিন আগে আইডাব্লিউ ডিপার্টমেন্টের লোকজন এসে এই ফুটওভারব্রিজটির ৮টি পাটাতন চিহ্নিত করে গেছে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত তাদের কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখছি না । স্থানীয় ও পথচারীরা আমাদেরকে বারবার অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছে। আমরাও প্রতিনিয়ত আই ডব্লিউ ডিপার্টমেন্টকে তাগাদা দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, খুবই দ্রুত এটা মেরামত হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী হাসান আলী বলেন, যে কয়েকটি পাটাতন ভাঙা এবং নড়বড়ে হয়ে গেছে সেগুলো দু-একদিনের মধ্যে মেরামতের ব্যবস্থা করে দেব।
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

অটোরিকশার ধাক্কায় নারী পথচারী নিহত
বাসায় অব্যবহৃত টাইলস ফেরত দিতে গিয়ে আর ফেরা হলো না সীমা আক্তারের। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় তিনি নিহত হন। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটের দিকে অধ্যাপক কেএম শামসুল হুদা সড়কের গজারিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত সীমা আক্তার (২৮) গজারিয়া উপজেলার টেঙ্গারচর ইউনিয়নের টেঙ্গারচর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। এ ছাড়াও তিনি সাবেক ইউপি সদস্য আ. গাফফার মিয়ার মেয়ে বলে জানা যায়।  প্রত্যক্ষদর্শী নিহত সীমা আক্তারের ভাশুরের স্ত্রী মুন্নি আক্তার জানান, আমাদের বাসায় বিল্ডিংয়ের কাজ চলছে। ঘরের সাজসজ্জার জন্য ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে টাইলস ক্রয় করা হয়েছিল। কিছু টাইল প্রয়োজনের থেকে বেশি ক্রয় করা হয়েছে। তাই অব্যবহৃত টাইলসগুলো দোকানে ফেরত দেওয়ার জন্য দোকানে গিয়েছিলাম। তবে পথিমধ্যে অতিরিক্ত গতিতে আসা একটি অটোরিকশা আমার জা’র প্রাণটাই কেড়ে নিল।  স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কেএম শামসুল হুদা সড়কের ভাবেরচর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ভবনের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন সীমা আক্তার। এ সময় দ্রুতগতির একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সীমা আক্তারকে ধাক্কা দেয়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার ওসি মো. রাজিব খাঁন জানান, লাশ গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে। আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। 
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ট্রাক উল্টে পথচারী নিহত
দোহারে ট্রাক উল্টে এক পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম বাদশা মিয়া (৬৮)। তিনি রাইপাড়া ইউনিয়নের পোদ্দারবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। প্রত্যক্ষদর্শী এবং ক্ষতিগ্রস্ত দোকানি জানান, সকাল ৯টায় দোহার থেকে বালুভর্তি ২টি ট্রাক তীব্র গতিতে আসছিল। চালনায় চকের দোহার প্রান্তে ওভারটেক করার মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রাক রাস্তার পাশের দোকানের কিছু অংশ এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে বিলে গিয়ে পড়ে।  এ সময় রাস্তার পাশে হাঁটতে থাকা বাদশা মিয়া ট্রাকের আঘাতে গুরুতর আহত হন। তাকে তাৎক্ষণিক দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনার পর ট্রাকের ড্রাইভার এবং হেল্পার পলাতক রয়েছে বলে জানা যায়।
১৯ জানুয়ারি, ২০২৪

বেপরোয়া বাসচাপায় পথচারী নিহত
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় বেপরোয়া বাসচাপায় আব্দুন নূর (৫৫) নামের এক পথচারী নিহত হয়েছেন। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার সিলেট-দিরাই আঞ্চলিক মহাসড়কের গাগলী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুন নূর গাগলী গ্রামের বাসিন্দা। জানা যায়, সিলেট থেকে দিরাইয়ের উদ্দেশ্যে আসা একটি বেপরোয়া গতির যাত্রীবাহী বাস গাগলী এলাকায় এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পথচারী আব্দুন নূরকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই পিষ্ট হয়ে মারা যান ওই পথচারী। এরপর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মোক্তাদির হোসেন বলেন, বেপরোয়া বাসের চাপায় এক পথচারী নিহত হয়েছেন। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। বাস জব্দ করা হয়েছে।
১৫ জানুয়ারি, ২০২৪

অন্ধকার সেতুতে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব পথচারী
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক জাতীয় অর্থনীতিতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করছে। আর এ মহাসড়ক নিরাপদ রাখার দাবি গাড়িচালক ও মালিকরা প্রতিনিয়তই জানিয়ে আসছে। এ মহাসড়কের মেঘনা সেতু গুরুত্বপূর্ণ হলেও গত কয়েক মাস ধরে সেতুর ল্যাম্প পোস্টে আলো না জ্বলায়, প্রায়ই ছোট-বড় ছিনতাইয়ের কবলে পড়ছেন এ পথে চলাচলকারী যানবাহন চালক ও পথচারী। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলাকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সাথে মেলবন্ধন করেছে গুরুত্বপূর্ণ এই মেঘনা সেতু। বলা হয়ে থাকে দেশের বস্ততম এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। গত কয়েক মাস যাবত সেতুর ল্যাম্প পোস্টে আলো না থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যানবাহন চালক ও পথচারীদের। সেতুর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও অংশে দেশের স্বনামধন্য বেশ কয়েকটি প্রাইভেট কোম্পানি থাকায় সেখানে চাকরিরত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করেন। তাদের কাজকর্ম শেষে এই সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয়। আর নিরাপত্তা বাহিনী ও রাতে সেতুর ল্যাম্প পোস্টে আলো না থাকায় প্রতিনিয়তই ছিনতাইকারীদের কবলে পড়তে হয় তাদের। তাছাড়া দূরপাল্লার যানবাহন বিশেষ করে ট্রাকচালকদের গাড়ি গতিরোধ করে ছিনতাইকারীর কবলে পরার খবর পাওয়া যায় প্রায়ই। এ ছাড়া অন্ধকারে সেতু এলাকায় চুরি হয়ে যাচ্ছে সেতুর মূল্যবান মালামাল। সরকার এত টাকা দিয়া সেতু তৈরি করছে আর নিরাপত্তা বাহিনী এবং ল্যাম্পপোস্টগুলোতে আলো না থাকায় মানুষের জানমাল হুমকির মুখে এবং সেতুটির গুরুত্বপূর্ণ মালামাল চুরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। চোর চক্রের অপতৎপরতা রোধ করতে না পেরে বাধ্য হয়ে আনসার নিয়োগ দেওয়ার চিন্তা করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। তবে বরাদ্দের অভাবে এই পরিকল্পনাটিও ভেস্তে যেতে পারে। স্থানীয়রা জানায়, গত কয়েক মাসে এই এলাকায় বেড়েছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। আর সেতুর মালামাল চুরি করতে গড়ে উঠেছে সঙ্ঘবদ্ধ একটি চক্র। তানভির ও তার বন্ধু মেঘনাঘাটের দেশের সনামধন্য একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে। তাদের ডিউটি শেষ হতে হতে প্রায় রাত হয়ে যেত, অনেক সময় বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকলেও বাস পাওয়া যেত না। সেজন্য প্রায় রাতে অফিস ছুটির পর মেঘনা সেতু হেঁটে পার হয়ে গজারিয়ার জামালদী স্ট্যান্ডে আসতে হয়। প্রায় সময় সেতুর ওপরে এবং এর নিচের অংশে অনেকে ছিনতাকারীদের কবলে পরে। বিশেষ করে ঈদ, পূজা এবং মাসের প্রথমে যখন কোম্পানিগুলো থেকে শ্রমিকদের বেতন দেবার সময় হয়। তিনি আরও জানান, কিছুদিন আগে এক রাতে সে সহ তার সহকর্মীরা সেতুর ওপর দিয়ে পার হচ্ছিরেন। হঠাৎ তাদের পিছনে থাকা বন্ধুকে সেতুতে আগে থেকেই বসে থাকা তিন চারজন সঙ্ঘবদ্ধ ছিনতাইকারী ছুরি ঠেকিয়ে তার পাওয়া বেতনের টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাই করে নিয়ে যায়। আল আমিন এবং হোসেন একই পরিবারের আপন দুই ভাই, তারাও চাকরির সুবাদে সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করে। রাতে বাসায় ফেরার পথে ছিনতাইকারীরা তাদের ধাওয়া করলে কোনোরকমে প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালিয়ে জীবন রক্ষা করে। পরে তারা জামালদী বাসস্ট্যান্ডে লোকজনকে জানালে সেখান থেকে মানুষজন সেতু ওপরে ছিনতাইকারীদের ধরতে গেলে জনতার উপস্থিতি দেখে মোটরসাইকেলযোগে চক্রটি পালিয়ে যায়। তবে এ ঘটনার পরের দিন তারা দুই ভাই জানতে পারে, ওই রাতেই তাদের সাথে কাজ করা এক বন্ধুর মোবাইল ফোন ছিনতাই করেছে, আবার তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে চেয়েছে। এ ঘটনার পর জীবনের নিরাপত্তা না থাকায় তারা দুই ভাই চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। সাইদুল নামে অপর আরেকজন জানায়, তারা প্রতিনিয়ত এ দিক দিয়ে যাতায়াত করে। তবে হঠাৎ বিভিন্ন কারণে গাড়ি না পেলে সে দিন মৃত্যুকে হাতে নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হয় মেঘনা সেতুর ওপর দিয়ে প্রায় শোনা যায় এখানে ছিনতাই হয়। এত বড় ব্রিজ এখানে নেই রাতের বেলা কোনো পুলিশ, সেতুর লাইটগুলোতে নেই আলো আর এই সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকরারী চক্র অপকর্ম করে যাচ্ছে। তাছাড়া ব্রিজের বিভিন্ন অংশের নাট-বল্টু চুরিসহ মূল্যবান মালামাল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে তবে দেখার কেউ নেই। সরেজমিনে সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সব ল্যাম্প পোস্টই দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু কোনোটিতেই আলো জ্বলছে না। অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে আছে গোটা এলাকা। হেডলাইটের আলোয় চলাচল করছে যানবাহন, অন্ধকারেই হেঁটে সেতু পার হচ্ছেন কয়েকজন মানুষ। সেতুর নিচের গজারিয়া অংশের বিস্তীর্ণ এলাকায় দেখা যায়, মানুষের ছোট-বড় জটলা। কেউ বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ আবার একসাথে মিলে সিগারেট, গাঁজাসহ বিভিন্ন রকম মাদক সেবন করছেন। তবে এ সময় সেতু এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে কোনো বাহিনীকেই দেখা যায়নি।  তাছাড়া একাধিক যানবাহন চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাতে সেতুটিতে আলো না থাকায় ওঁৎ পেতে থাকা এই চোর-ছিনতাইকারী চক্রটি গাড়ির গ্লাসে ঢিল মেরে মাঝেমাঝে হুমকি-ধমকি দিয়ে গাড়ির গতিরোধ করে মোবাইল, টাকা-পয়সাসহ অন্য মূলবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। বিষয়টি সম্পর্কে তারা আরও বলেন, গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়েই চলাচল করি। তারপরও সেতুতে পর্যাপ্ত আলো থাকা দরকার ছিল। সরকার হাজার কোটি টাকা খরচ করে এত সুন্দর একটি স্থাপনা তৈরি করেছে সেখানে আলো থাকবে না বিষয়টি দুঃখজনক। ১নং হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারম্যান মনিরুল হক মিঠু বিষয়টি সম্পর্কে বলেন, সেতুর সিঁড়ির লোহা, নাট বল্টু, পাইপ চুরি করাসহ পথচারীরা ছিনতাইকারীর কবলে পরা বিষয়টি আমি শুনেছি। নিরাপত্তার ব্যাপারটি তো ইউনিয়ন পরিষদের দেখার কথা নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে আলোচনা করব যেন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়।  বিষয়টি সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস কালবেলাকে বলেন, নতুন সেতু যখন তৈরি করা হয় তখন অনেক দামি তার লাগানো হয়েছিল কিন্তু 'মেঘনা এবং গোমতী সেতুকে কেন্দ্র করে সঙ্ঘবদ্ধ একটি চোরচক্র গড়ে উঠায় সব চুরি করে নিয়ে গেছে কোনোভাবেই যেন এই চক্রটির হাত থেকে সেতুর গুরুত্বপূর্ণ মালামাল রক্ষা করতে পারছি না। তবে আমাদের বরাদ্দ কম থাকায় পুনরায় আমরা পুরোপুরি ল্যাম্পপোস্টের আলো জ্বালাতে পারছি না। আমার ঊর্ধ্বতন র্কমকর্তাকে জানানো হয়েছে বরাদ্দ পেলেই আলো জ্বালানোর কাজ করব। আর সেতুর নিরাপত্তার বিষয়াটি দেখার জন্য এত জনবল (সওজ) নেই। তবে নিরাপত্তার বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। তাদেরও জনবল সংকট। এরই মধ্যে মুন্সীগঞ্জ আনসার কমান্ডারের কাছে জনবল চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। তিনি বড় একটি ডিমান্ট দিয়েছেন যেখানে আনসারদের থাকা খাওয়াসহ অন্য বিষয়গুলো সওজকে দেখতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আমি প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে আলাপ করেছি। চোর ছিনতাইকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ফাইনাল একটি সমাধানের চেষ্টার প্রক্রিয়াটি অব্যাহত রয়েছে।  ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নিরাপত্তার বিষয়ে ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাড়ির ইনর্চাজ হুমায়ন কবির (পিপিএম) জানান, আমরা সব সময় রাস্তায় থাকি জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। আমাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। তবে সড়ক ও জনপদ বিভাগ যদি নতুন কোনো রোডম্যাপ তৈরি করে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের সর্বোচ্চ সাহায্য করব।  উল্লেখ্য, যানবাহনের অত্যধিক চাপে চার লেনের দ্বিতীয় মেঘনা সেতু নির্মান করা হয়। আর এ সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৭৫০ কোটি টাকা। ১২টি স্প্যানের ওপর নির্মিত দ্বিতীয় মেঘনা সেতুর দৈর্ঘ্য ৯৩০ মিটার, ১৭.৭৫ মিটার প্রস্থ। আর এ সেতুতে মানুষ চলাচলের জন্য দেড় মিটার ফুটপাত রাখা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই লেনের সেতুর কারণে যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় মেঘনা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে সরকার। ২০২০ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের সাত মাস আগে ২০১৯ সালের ২৫ মে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় সেতুটি। 
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

অন্ধকার সেতুতে ছিনতাই সর্বস্ব হারাচ্ছে পথচারী
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ মেঘনা সেতুর ল্যাম্পপোস্টে কয়েক মাস ধরে আলো জ্বলছে না। এতে প্রায়ই ছিনতাইয়ের কবলে পড়ছেন এ পথে চলাচলকারী যানবাহনের চালক ও পথচারীরা। তা ছাড়া অন্ধকারে চুরি হয়ে যাচ্ছে সেতুর মূল্যবান মালপত্রও। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলাকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত করা এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। এ ছাড়া সেতুর সোনারগাঁ অংশে দেশের স্বনামধন্য বেশ কয়েকটি প্রাইভেট কোম্পানি থাকায় সেখানে চাকরি করা অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বসবাস মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের বিভিন্ন এলাকায়। তাদের কাজকর্ম শেষে এই সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয়। আর নিরাপত্তা বাহিনী ও রাতে সেতুর ল্যাম্পপোস্টে আলো না থাকায় প্রতিনিয়তই ছিনতাইকারীদের কবলে পড়তে হয় তাদের। তা ছাড়া দূরপাল্লার যানবাহন বিশেষ করে ট্রাকচালকদের গাড়ির গতিরোধ করে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ার খবর পাওয়া যায়। আল আমিন এবং হোসেন আপন দুই ভাই। তারাও চাকরির সুবাদে সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করেন। তারা জানান, কয়েকদিন আগে রাতে বাসায় ফেরার পথে ছিনতাইকারীরা তাদের ধাওয়া করলে কোনো রকমে দৌড়ে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেন। পরে তারা জামালদী বাসস্ট্যান্ডে এসে লোকজনকে জানালে সেখান থেকে মানুষজন সেতু ওপরে ছিনতাইকারীদের ধরতে গেলে জনতার উপস্থিতি দেখে মোটরসাইকেলে চক্রটি পালিয়ে যায়। তবে এ ঘটনার পরের দিন তারা জানতে পারেন, ওই রাতেই তাদের সঙ্গে কাজ করা এক বন্ধুর মোবাইল ফোন ছিনতাই হয়েছে সেতুতে। এ ঘটনার পর তারা দুই ভাই চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। সাইদুল নামে আরেকজন জানান, তারা প্রতিনিয়ত এদিক দিয়ে যাতায়াত করেন। তবে হঠাৎ বিভিন্ন কারণে গাড়ি না পেলে সেদিন মৃত্যুকে হাতে নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হয়। প্রায়ই শোনা যায় এখানে ছিনতাই হয়। এত বড় ব্রিজ। এখানে রাতের বেলা কোনো পুলিশ নেই। সেতুর বাতিগুলোতে নেই আলো। আর এই সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী অপকর্ম করে যাচ্ছে। তা ছাড়া ব্রিজের বিভিন্ন অংশের নাটবোল্ট চুরিসহ মূল্যবান মালপত্র চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে, তবে দেখার কেউ নেই। সরেজমিন সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সব ল্যাম্পপোস্টই দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু কোনোটিতেই আলো জ্বলছে না। অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে আছে গোটা এলাকা। হেডলাইটের আলোয় চলাচল করছে যানবাহন, অন্ধকারেই হেঁটে সেতু পার হচ্ছেন লোকজন। একাধিক যানবাহন চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাতের বেলায় সেতুটিতে আলো না থাকায় ওতপেতে থাকা এই চোর-ছিনতাইকারী চক্রটি গাড়ির গ্লাসে ঢিল মেরে মাঝে মাঝে হুমকি-ধমকি দিয়ে গাড়ির গতিরোধ করে মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সাসহ অন্যান্য মূলবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। বিষয়টি সম্পর্কে তারা আরও বলেন, গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়েই চলাচল করি, তারপরও সেতুতে পর্যাপ্ত আলো থাকা দরকার ছিল। সরকার হাজার কোটি টাকা খরচ করে এত সুন্দর একটি স্থাপনা তৈরি করেছে, সেখানে আলো থাকবে না, বিষয়টি দুঃখজনক। হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বিষয়টি সম্পর্কে বলেন, সেতুর সিঁড়ির লোহা, নাটবোল্ট, পাইপ চুরিসহ পথচারীদের ছিনতাইকারীর কবলে পড়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। নিরাপত্তার ব্যাপারটি তো ইউনিয়ন পরিষদের দেখার কথা নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে আলোচনা করব, যেন নিরাপত্তর ব্যবস্থা করা হয়। বিষয়টি সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস কালবেলাকে বলেন, নতুন সেতু যখন তৈরি করা হয়, তখন অনেক দামি তার লাগানো হয়েছিল। কিন্তু ‘মেঘনা এবং গোমতী সেতুকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ একটি চোর চক্র গড়ে ওঠায় সব চুরি করে নিয়ে গেছে। কোনোভাবেই যেন এই চক্রটির হাত থেকে সেতুর গুরুত্বপূর্ণ মালপত্র রক্ষা করতে পারছি না। তবে আমাদের বরাদ্দ কম থাকায় আবার আমরা পুরোপুরি ল্যাম্পপোস্টে আলো জ্বালতে পারছি না। আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই আলো জ্বালানোর কাজ করব। আর সেতুর নিরাপত্তার বিষয়াটি দেখার জন্য এত জনবল নেই। তবে নিরাপত্তার বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছে, তাদেরও জনবল সংকট। এরই মধ্যে মুন্সীগঞ্জ আনসার কমান্ডারের কাছে জনবল চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। তিনি বড় একটি ডিমান্ট দিয়েছেন, যেখানে আনসারদের থাকা-খাওয়াসহ অন্য বিষয়গুলো সওজকে দেখতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আমার প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে আলাপ করেছি, চোর-ছিনতাইকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ফাইনাল একটি সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নিরাপত্তার বিষয়ে ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হুমায়ন কবির (পিপিএম) জানান, আমরা সব সময় রাস্তায় থাকি জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য, আমাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ যদি নতুন কোনো রোডম্যাপ তৈরি করে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের সর্বোচ্চ সাহায্য করব।
১১ ডিসেম্বর, ২০২৩
X