মিরসরাইয়ে পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন কাটছে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাকা-আধাপাকা গ্রামীণ সড়ক ভেঙে গেছে। অনেক এলাকায় পুকুর ডুবে লক্ষাধিক টাকার মাছ চলে গেছে। মিরসরাই পৌরসভা, খৈয়াছড়া ইউনিয়ন, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন, করেরহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন নিচু গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে আছে ফেনাপুনি, সোনাপাহাড় গ্রামের কয়েকশত পরিবার। অনেক পরিবারের চুলায় পানি ওঠায় রান্নাও করতে পারছে না। এ ছাড়াও খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের পূর্ব খৈয়াছড়া গ্রামের ভেণ্ডারপাড়া এলাকায় একটি কালভার্ট ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়ছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। এদিকে জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সোনাপাহাড় বিশ্বরোড় নূরানি জামে মসজিদ এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পরিবারের সদস্যরা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নিচ দিয়ে কয়েকটি ব্রিজ আরশিনগর ফিউচার পার্ক বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে এ এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়ে যায়। এতে করে এখানকার বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়তে হয়। মিরসরাই পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের নোয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাজেদুল করিম আসাদ বলেন, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আমাদের এখানে বারোমাসি একটি খাল ভেঙে বাড়ির উঠানে এবং রাস্তায় পানি উঠে গেছে। এতে করে সাধারণ মানুষদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাল পার্শ্ববর্তী হাটবাজারগুলোকে ঘিরে গড়ে উঠেছে শত শত অবৈধ দোকান-পাট ও স্থাপনা। এগুলোর কারণে বিভিন্ন খালে পানিপ্রবাহে বিঘ্ন ঘটে। ফলে প্রত্যেক বছর নিম্নাঞ্চল এলাকা পানির নিচে ডুবে যায়। এ ছাড়াও অপরিকল্পিতভাবে পানি নিষ্কাশনের পথ না রেখে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা গড়ে তোলায় প্রতি বছর জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইউসুফ হারুণ বলেন, আমার নির্বাচনী ওয়ার্ড ফেনাপুনী এলাকায় ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলে আমাদের চেয়ারম্যানসহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে এসেছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তথ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পাঠাবো। যোগাযোগ করা হলে খৈয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক জুন বলেন, মায়ানী ইউনিয়নের আবুতোরাবের ব্রিজের পাশের খালের ওপর অবৈধ স্থাপনার কারণে আমার ইউনিয়নের অনেক আজ পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত এ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হবে না ততক্ষণ আমার ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ কষ্ট করবে। তিনি বলেন, আমি আমার ইউনিয়নের মেম্বারদের নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে তাদের একটি তালিকা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পাঠিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারি বরাদ্ধ দেওয়ার কথা রয়েছে।
০২ জুলাই, ২০২৪

পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভোরে পাহাড়ি ঢলের পানিতে মহারশী নদীর খৈলকুড়া বাঁধ ভেঙে ও বাঁধের দুই কূল উপচে উপজেলার ১৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ সময় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ওইসব এলাকার শতাধিক মানুষ।  এদিকে ঢলের পানিতে পলি জমে রোপা আমন বীজতলার সামান্য ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে বেশ কিছু পুকুরের মাছ। এ ছাড়াও ওই ঢলের পানিতে উপজেলা পরিষদের মেইন রাস্তাসহ মসজিদ রোড (কাঁচাবাজার) ও হাসপাতাল রোডে প্রায় হাঁটু পানি জমে যায়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের খৈলকুড়া নামক স্থানে মহারশী নদীর বাঁধ ভেঙে পাহাড়ি ঢলের পানিতে নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্টদের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও তিনি আরও বলেন, ঝিনাইগাতীতে প্রতিবছরই মহারশী নদীর বাঁধ ভেঙে অথবা নদীল দু’কোল উপচে শহর এলাকায় পানি প্রবেশ করায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শহররক্ষার স্বার্থে মহারশী নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’ পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দিতা রানী ভৌমিক, পিআইও মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা। 
০২ জুলাই, ২০২৪

ব্রহ্মপুত্রের পানিতে কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
ভারি বর্ষণ আর উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জেলা সদরের যাত্রাপুর ও উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করে কয়েকশ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।  এদিকে বাড়ছে ধরলা ও দুধকুমার নদের পানিও। এ অবস্থায় এসব নদ-নদীর নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। মঙ্গলবার (০২ জুলাই) দুপুরে পাউবো বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, দেশের উত্তরাঞ্চল ও এর উজানে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারি ধেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এই সময়ে উত্তরাঞ্চলের দুধকুমার, ধরলা ও তিস্তা নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পেয়ে কয়েকটি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। পাউবো, কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দুধকুমার অববাহিকার পাটেশ্বরী পয়েন্টে ১৪১ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।  সোমবার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে ধরলার পানি কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার দিকে ধাবিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে এর নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গে চলছে তীব্র ভাঙন। উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চর বালাডোবা, বতুয়াতলি মূসার চর, ব্যাপারিপাড়া নতুন চর এবং পূর্ব ও পশ্চিম মশালের চর ও মোল্লাহাটের খুঁটি গ্রামের শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। বাধ্য হয়ে এসব পরিবারের অনেকে নৌকায় আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে যাচ্ছেন। ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী মোল্লাহাট বাজার এলাকায় শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। বাজার রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। খুদিরকুঠি গ্রামের বাসিন্দা মখলেছুর রহমান বলেন, আমাদের গ্রামে ৫০টিরও বেশি পরিবারের বসবাস। সবকটি পরিবারের ঘরের ভেতর পানি। বাইরে চারপাশে পানি। পানি বাড়তে আছে। উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতাউর রহমান বলেন, বন্যা পরিস্থিতিতে পানিবন্দি পরিবারে খাদ্য সহায়তা দেওয়া জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। এ ছাড়াও দুর্গত পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এদিকে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে যাত্রাপুরের রলাকাটা চরে একের পর এক বসতভিটা বিলীন হচ্ছে। চরের উত্তর দিকে অব্যাহত ভাঙনে গত এক সপ্তাহে অন্তত ১৫ পরিবার বাস্তুহারা হয়েছে।  ওই গ্রামের বাসিন্দা বেল্লাল মিয়া বলেন, বন্যার পানি এখনও বাড়িঘরে প্রবেশ করে নাই। তবে ভাঙনে এলাকার মানুষ দিশাহারা। রলাকাটার পশ্চিমে মাঝের চর ও চিড়াখাওয়ার চরের আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বাড়তে থাকলে দুই একদিনের মধ্যে বাড়িঘরে পানি ঢুকবে। যাত্রাপুরের কালির আলগা ও গোয়াইলপুরির চরে গত দুই দিনে পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সেখানকার বেশ কিছু পরিবারের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। বেশিরভাগ পরিবারের বসতবাড়ির চারপাশে পানি। গোয়াইলপুরির চরের বাসিন্দা মাহবুবার রহমান বলেন, পরিস্থিতি খারাপ। বন্যার কবলে পইড়া গেছি। ঘরবাড়িতে পানি ঢুকতাছে। আইজ কাইলের মধ্যে সব ঘরবাড়িতে পানি ঢুইকা পড়বো। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা ত্রাণ সহায়তা বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। জেলাজুড়ে ৪ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবারও পানি বৃদ্ধির ফলে যেসব এলাকা প্লাবিত হচ্ছে আমরা সেদিকে বাড়তি নজর রাখছি।
০২ জুলাই, ২০২৪

কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্রসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় চর-দ্বীপচরগুলোর নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে চরম ভোগান্তিতে আছেন এসব বানভাসী মানুষজন। গত ৪ দিন ধরে ধরলা ও তিস্তায় বইছে বিপৎসীমার উপর দিয়ে। ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও গঙ্গাধর নদে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভাঙনের কারণে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। শনিবার (২২ জুন) বিকেলে পাউবো’র দেওয়া তথ্য বলছে, গত ১২ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৪৪ সেমি ও ধরলা নদীর পানি তালুক শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ৭ সেমি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও গঙ্গাধর নদে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ধরলা নদীর ভাঙনে রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের কিং ছিনাই, জয়কুমার ও নামা জয়কুমার গ্রামের কমপক্ষে ১০টি পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে বাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে জয়কুমার আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ কিং ছিনাই গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক পরিবার। একই উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের কালীরহাট ঘাট এলাকায় তিস্তার ভাঙণে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাজার ভাঙণের ঝুঁকিতে পড়েছে। ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে রৌমারী ফেরী ঘাট ও উপজেলার বন্দবের ইউনিয়নের চরবন্দবেড়, ফলুয়ারচর, পালেরচর, কুটিরচর, দক্ষিণ ফলুয়ারচর, পশ্চিম ফুলুয়ারচর, খনজনমারা, দক্ষিণ বাগুয়ারচর ও চর শৌলমারী ইউনিয়নের খেদাইমারী, ঘুঘুমারী, সুখেরবাতি, সোনাপুর, চর খেদাইমারী, শেখের বাজারসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার। রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের কিং ছিনাই এলাকার বাসিন্দা রাশিদুল হাসান জানান, গতকাল থেকে ধরলা নদীর পানি বেড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এক দিনের ব্যবধানে ধরলা পাড়ের প্রায় ১৫টি বাড়ি ভেঙে গেছে। এছাড়াও নামা জয়কুমার, জয়কুমার ও কিং ছিনাই গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার ও বন্যা আশ্রয়ন প্রকল্পের বিল্ডিংসহ প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙন রোধে এখন পর্যন্ত কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, গতকাল থেকে কুড়িগ্রামে ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এই মুহুর্তে জেলায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন তীব্র আকারে দেখা দিয়েছে। ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তায় ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন কাজ করছে। শুক্রবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জেলার ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে এসেছেন। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের উদ্ধারের জন্য সবরকম প্রস্তুতি রয়েছে। বন্যার্তদের জন্য নগদ অর্থ ও পর্যাপ্ত চাল মজুদ  রয়েছে।
২৩ জুন, ২০২৪

নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
নেত্রকোনায় পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতে ক্রমাগত বাড়ছে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। ফলে বন্যার আশঙ্কা করছেন প্রশাসনসহ এলাকাবাসী। গত তিনদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার প্রধান প্রধান নদীগুলোর মধ্যে উব্দাখালী নদীর পানি কলামাকান্দায় বিপৎসীমার ৪৭ সেমি ওপর দিয়ে বইছে। এ ছাড়া জেলার প্রধান নদী ধনু-কংশ-সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে বলে জানিয়েছে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাসাবাড়ির আঙিনায় পানি উঠতে শুরু করেছ। এ ছাড়া গ্রামীণ সড়কে পানি উঠায় চলাচলে বেগ পেতে হচ্ছে। পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বসত ঘরে পানি উঠবে এবং সুপেয় পানি ও খাবার সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। কলমাকান্দায় উব্দাখালী নদীর পানি বেড়ে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নেই পানি ঢুকেছে। এর মধ্যে সদর, বড়খাপন ও পোগলা ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা ও কৈলাটি, রংছাতি ও খারনৈসহ বাকি ৫টি ইউনিয়নের কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুকনো খাবার, আশ্রয়কেন্দ্র, উদ্ধারকারী দল, মেডিকেল টিমসহ সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান কলমাকান্দা ইউএনও। এদিকে জেলার হাওর উপজেলা মদন মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীর লোকালয়ে উজানের পানি ডুকতে শুরু করেছে। কলমাকান্দা ইউএনও আসাদুজ্জামান বলেন, কলমাকান্দা উপজেলা প্রশাসন যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
২০ জুন, ২০২৪

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তা ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ছুঁই ছুঁই করছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। বুধবার (১৯ জুন) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। এর আগে সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে ৫১ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে একই পয়েন্টে পানি কিছুটা কমে বিকেল ৩টা থেকে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়ি ও রাস্তা ঘাট তলিয়ে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এতে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারে ঘরবাড়িতে পানি ওঠে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানি, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কালমাটি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদী-তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে। এসব এলাকার অনেক বাড়িঘরে পানি উঠেছে। অপর দিকে গত রাত থেকে সানিয়াজান নদীর পানি বৃদ্ধিতে হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নে ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডে পানি প্রবেশ করেছে। ঘরবাড়ি ও রাস্তা ঘাট তলিয়ে গিয়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ২শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। চর সিন্দুর্নার মফিজার রহমান বলেন, গত রাত থেকে তিস্তা পানি বৃদ্ধি পেয়ে চর এলাকার বসতবাড়ি ও চলাচলের রাস্তা ডুবে গেছে। পরিবারগুলো ঘর থেকে বের হতে পাচ্ছে না। হাতীবান্ধার ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন বলেন, গতকাল থেকে ফকিরপাড়া ইউনিয়নের দুইটি ওয়ার্ডের প্রায় ২ শতাধিক পরিবারের ঘর বাড়িতে পানি প্রবেশ করে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে অবগত করা হয়েছে। এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, গজলডোবায় পানি ছেড়ে দেওয়ার কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল থেকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার মাত্র ২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বেলা গড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি কিছুটা কমে বিকেল ৩টা থেকে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
১৯ জুন, ২০২৪

তিস্তায় বাড়ছে পানি, নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতে বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তার পানি। এতে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।  মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুর ১২টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার মাত্র ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। তবে একই পয়েন্টে সন্ধ্যা ৬টা থেকে পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে উঠতি ফসলি জমি। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ।  ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম জানান, ভারতের সিকিমে প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণে সেখানে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। আর তিস্তায় সেই পানি প্রবেশ করায় নদী তীরবর্তী কিছু কিছু এলাকায় পানি প্লাবিত হয়েছে।    এদিকে তিস্তায় পানি বৃদ্ধিতে লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কালমাটি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়ন, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ইউনিয়ন, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি ইউনিয়ন, হাতীবান্ধা উপজেলার  গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী এবং পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী চরের বাদাম ক্ষেত, ধান বীজতলা, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন উঠতি ফসলী জমি ডুবে গেছে। সদর উপজেলা খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার রেজাউল করিম জানান, উজান থেকে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে পানি। নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। পানি উঠেছে অনেক বাড়ি ঘরে।  তিস্তা গোবর্ধন চরের কৃষক আলী হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যখন পানি চাই তখন পাই না, এখন বর্ষাকালে আমরা পানি দিয়ে কি করব। আরেক কৃষক নেয়ামত আলী বলেন, প্রতি বছর বর্ষাকালে বন্যা আর নদী ভাঙনের শিকার হয়ে আমরা এখন দিশাহারা। প্রতি বছরই বাড়ি সরাতে হয়। এখন আর আমরা কোনো সহযোগিতা চাইনা, আমরা চাই স্থায়ী বাঁধ। যাতে আমাদের আর বাড়ি সরাতে না হয়।  লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার রায় জানান, ভারতের সিকিমে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উজানের পানি ব্যাপকহারে তিস্তা নদীতে প্রবেশ করলে আমাদের বাংলাদেশ অংশের তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হবে।
১৮ জুন, ২০২৪

ফের পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ভারি বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে আবারও সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে সুরমা, চেলা ও পিয়ান নদীর পানি। বর্তমানে এসব নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার উপর দিয়ে। ক্রমাগত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলসহ শহরের মানুষের মধ্যেও বন্যার আতঙ্ক বিরাজ করছে। উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে প্রবল বেগে ঢলের পানি প্রবেশ করছে। ধনীটিলা-ছনবাড়ী বাজার সড়কের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ঢলের পানি। পানির প্রবল স্রোতে ভেঙে গেছে এই সড়কের বিভিন্ন অংশ। ইউনিয়নের নিজগাঁও রতনপুর, ছনবাড়ী, নোয়কুট, রহমতপুর, বনগাঁও, দারোগাখালী, বৈশাকান্দি, বাহাদুরপুরসহ ১০-১২টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। ধানের বীজতলা ও শাকসবজির বাগান ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে কোথায় কোনোন বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলা আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুতসহ আগাম সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এদিকে রোববার পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত ইসলামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন ছাতক উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম কিরন ও নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফা মুন্নাসহ প্রশাসনের লোকজন। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে সুরমা, চেলো ও পিয়াইন নদী পানি বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ, ছাতক-জাউয়া, ছঠাতক-দোয়ারা ও ছাতক-সুনামগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন অংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। সড়কগুলোর কার্নিশে পৌঁছে গেছে ঢলের পানি। ইসলামপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বসত ঘরের আঙিনায় বন্যার পানি কড়া নাড়ছে। বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফা মুন্না জানান, তিনি ভারত থেকে নেমে আসা ভারতী ঢলে প্লাবিত ইসলামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন কররছেন। আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত সহ প্রাথমিক সব ধরনের প্রস্তুতি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। এখনও আশ্রয় কেন্দ্রে কেউ আশ্রয় নেয়নি। এদিকে রোববার দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদঅর পানি বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে আবহাওয়াবিধ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা বলেছেন, বন্যা হবার মত কোন আশঙ্কা নেই। অপরদিকে বৃষ্টির পানি পাহাড়ি নদী দিয়ে এপারে নামায় দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুরের পাশ দিয়ে খাসিয়ামারা নদীর বেড়িবাঁধ ও বোগলাবাজার ইউনিয়নের চিলাই নদীর বেড়িবাঁধ শনিবার দুপুরে ভেঙে গেছে। এতে আশপাশের গ্রাম ও সড়ক প্লাবিত হয়ে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে পানি কমতে শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জানা যায়, সীমান্তের ওপার মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে গেল তিন দিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ১৫০ মিলিমিটার এবং সীমান্তের ওপারে হয়েছে ৪৪১ মিলিমিটার। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বাড়লেও অন্য নদীগুলো বিশেষ করে কালনী ও জাদুকাটায় পানি দেড় থেকে আড়াই ফুট নিচে রয়েছে। জেলার অন্য নদীগুলোর পানিও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
১৬ জুন, ২০২৪

বাড়ছে সব নদ-নদীর পানি, কুড়িগ্রামে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
উজানে ভারি বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলের কারণে কুড়িগ্রামে ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ সব নদ-নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব নদ-নদীর তীরবর্তী নিচু অঞ্চলের বাদাম ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। শনিবার (১৫ জুন) বিকেল ৪টায়  পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৮৫ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৮২ সেন্টিমিটার, তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আগামী সপ্তাহে জেলায় একটি স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।  কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন জেলায় বজ্রসহ ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।  কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘ভারতের উজানে ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার নদ-নদীগুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী সপ্তাহে জেলার নিম্নাঞ্চলের চরগুলো তলিয়ে যাবার আশঙ্কা করা হচ্ছে।’ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘কুড়িগ্রামে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়ে চরের নিম্নাঞ্চলগুলো তলিয়ে যায়। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রাথমিকভাবে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
১৫ জুন, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রিমাল / আশ্রয়কেন্দ্রে ভোলা উপকূলের অর্ধলাখ মানুষ, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে উপকূলের মানুষ। রোববার (২৬ মে) দুপুরের পর থেকে ঢালচর, কুকরি-মুকরি, মাঝের চরসহ বিভিন্ন চরের প্রায় ৫৩ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। এ ছাড়াও এসব চরের ১০ হাজার গবাদি পশু রাখা হয়েছে মুজিব কিল্লায়। এদিকে জোয়ারে তলিয়ে গেছে সাগর উপকূলের ঢালচরসহ বেশ কয়েকটি দ্বীপচর।  ভোলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আরিফুজ্জামান জানান, মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। এদিকে মেঘনার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হওয়ায় তলিয়ে গেছে নিচু এলাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বাঁধের বাইরের রাজাপুর, ধনিয়া, মাঝের চরসহ বেশকিছু এলাকায় প্লাবিত হলেও এখন পর্যন্ত বাঁধের কোনো ক্ষতি হয়নি, বাঁধ সুরক্ষিত রয়েছে। এদিকে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপকূলজুড়ে বৈরীভাব বিরাজ করছে। মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে কাজ করছে রেড ক্রিসেন্ট, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) ও চিলেকোঠাসহ বিভিন্ন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা। সময় যত বাড়ছে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ততই আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা বাড়ছে।
২৭ মে, ২০২৪
X