মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১
কাশ্মীরে নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্ব দেন যোগব্যায়ামে
তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার প্রথমবার ভূস্বর্গ জম্মু ও কাশ্মীরে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। গতকাল শুক্রবার সকালে তিনি সেখানে যোগব্যায়াম করেন। শুধু তাই নয়, যোগব্যায়াম দলের নেতৃত্বও দেন মোদি। দশম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন উপলক্ষে এ আয়োজন করা হয়। কিন্তু শ্রীনগরে ভারি বৃষ্টির কারণে মূল অনুষ্ঠানে কিছুটা পরিবর্তন আসে। আগের মতো খোলা মাঠে যোগব্যায়ামে অংশ নিতে পারেননি তিনি। বিকল্প হিসেবে ডাল লেকের তীরে শের-ই-কাশ্মীর আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের ভেতরে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়। মোদির যোগব্যায়াম এনডিটিভিসহ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সরাসরি সম্প্রচার করে। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তার ভক্তরা এতে যোগ দেন। সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়, শ্রীনগর থেকে মোদি জাতির উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন। তিনি যোগ ব্যায়ামের গুরুত্ব তুলে ধরে দিবসের শুভেচ্ছা জানান। নরেন্দ্র মোদি বলেন, যোগ দিবসে দেশবাসীকে এবং বিশ্বের প্রতিটি কোণে যোগব্যায়াম অনুশীলন করা মানুষকে শুভেচ্ছা জানাই। আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ১০ বছরের একটি ঐতিহাসিক যাত্রা পূর্ণ করেছে। গত ১০ বছরে যোগব্যায়ামের সম্প্রসারণ তার উপলব্ধি পরিবর্তন করেছে। আজ বিশ্ব দেখছে যোগের মাধ্যমে নতুন অর্থনীতির পথ প্রশস্ত হচ্ছে। ভারতে, ঋষিকেশ ও কাশী থেকে কেরল পর্যন্ত যোগের মাধ্যমে পর্যটনের একটি নতুন সংযোগ দেখা যাচ্ছে। সারা বিশ্ব থেকে পর্যটকরা ভারতে আসছেন। কারণ তারা এ দেশে সঠিক পদ্ধতিতে যোগব্যায়াম শিখতে চান। আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হলো যোগের স্বীকৃতির একটি দিন। ২০১৪ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত হওয়ার পর প্রতি বছর ২১ জুন সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে। প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত এই মানসিক সুস্থতা অনুশীলনকে বিশ্বব্যাপী প্রচার করার উদ্দেশ্যে এর যাত্রা। দিবসটি চালু করতে মোদি নিজেই জাতিসংঘে প্রস্তাব দেন। তা ১৭৭টি দেশ সমর্থন করে। বর্তমানে ভারতের পাশাপাশি নিউইয়র্ক, প্যারিস, বেইজিং, ব্যাংকক, কুয়ালালামপুর, সিউলসহ বিভিন্ন দেশে দিবসটি গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হচ্ছে।
২২ জুন, ২০২৪

নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন মাত্রা
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংযোগ, ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা, ঐতিহ্য এবং শিল্পকলা সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে যেমন মিল রয়েছে তেমনি এ বিষয়গুলোর প্রতি দুই দেশের মানুষের আবেগও প্রায় একইরকম। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে ভারত বাংলাদেশের জন্য সরাসরি যুদ্ধে জড়ালেও, তাদের সীমান্ত খোলা রেখেছিল পাকিস্তানিদের দ্বারা বাঙালিদের গণহত্যার শুরু থেকেই। নিষ্ঠুরতা থেকে বাঁচতে দেশের প্রায় ১ কোটি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। ভারত সরকার নানা অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধে নিপীড়িত মানুষদের দীর্ঘ ৯ মাস আশ্রয় দিয়েছে, খাদ্য দিয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের সঙ্গে তার প্রতিবেশী ভারতের সম্পর্কের সূচনা হয় ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারত কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের মধ্য দিয়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইন্দিরা গান্ধীর কূটনৈতিক প্রজ্ঞা ও আদর্শিক নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে সেই সম্পর্ক ভিন্ন উচ্চতায় পৌঁছায়। ১৯৭২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে দেওয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চিরদিন অটুট থাকবে। বিশ্বের কোনো শক্তিই পারবে না এই মৈত্রীতে ফাটল ধরাতে।’ বঙ্গবন্ধু দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তি গড়েছিলেন, একে অপরের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধার ভিত্তিতে। বঙ্গবন্ধু প্রদর্শিত কূটনৈতিক সম্পর্কের পথেই চলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কৌশলগত পরিস্থিতির কারণে একে অন্যের বৈদেশিক নীতিতে দুই দেশই অগ্রাধিকার পেয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৯ জুন (রোববার) সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদকে নিয়ে নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ভুটান, নেপাল, মরিশাস ও সিসিলির সরকার-রাষ্ট্রপ্রধানসহ আট হাজারের বেশি বিশিষ্টজন অংশ নেন। পরে রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর ভোজসভায় যোগ দেন তারা। ভারতে তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন এনডিএ জোটের প্রধান নরেন্দ্র মোদি। জওহরলাল নেহেরু ছাড়া আর কোনো প্রধানমন্ত্রী টানা তিনবার শপথ নেওয়ার কৃতিত্ব পাননি। ৯ জুন সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত শপথ অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের ৭২ সদস্যও শপথ গ্রহণ করেন। এ অনুষ্ঠানে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে উপস্থিত থাকলেও এতে যোগ দেননি তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদিকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। মোদির পাশাপাশি তার মন্ত্রিপরিষদে ৭২ সদস্যও এ অনুষ্ঠানে শপথগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে ক্যাবিনেট পদের মন্ত্রী ৩০ জন। স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী পাঁচজন। বিজেপির পাশাপাশি মোট ১১টি জোটসঙ্গীকে মন্ত্রীর পদ দেওয়া হয়েছে। ৪৩ জন মন্ত্রী তিনবার বা তার বেশিবার এ দায়িত্ব পালন করেছেন। ৭২ মন্ত্রীর মধ্যে ৩৯ জনই আগের সরকারে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়। কড়া নিরাপত্তায় ঘেরা জমকালো এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে তিনি বিজেপির ৯৬ বছর বয়সি সিনিয়র নেতা লালকৃষ্ণ আদভানির সঙ্গে তার বাড়িতে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘বৈঠকে দুই নেতা তাদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলেন, এ ছাড়াও তারা পরস্পর সৌহার্দ্য বিনিময় ও অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করেন।’ এরপর সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ভবনে তৃতীয় বিদেশি নেতা হিসাবে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বিজেপি এবার নির্বাচনে এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তাই সরকার গড়তে এনডিএ’র শরিক দলগুলোর ওপর পদ্মশিবিরকে অনেকাংশে নির্ভর করতে হচ্ছে। তবে বিজেপি স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ, শিক্ষা এবং সংস্কৃতির মতো ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মন্ত্রণালয়গুলো নিজের হাতেই রেখেছে। অন্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বেশ কিছু বণ্টন করা হয়েছে শরিক দল চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি, নীতীশ কুমারের জেডিইউ, চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি (আর), একনাথ শিন্ডের শিবসেনা, এইচডি দেবগৌড়ার জেডিএস এবং জয়ন্ত চৌধুরীর আরএলডির মধ্যে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের এ কথা জানান। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির আইটিসি মৌর্য হোটেলে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি নরেন্দ্র মোদি এবং এনডিএ জোটকে নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আবারও অভিনন্দন জানান এবং প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। সোমবার (১০ জুন) সকালে হায়দরাবাদ হাউসে একান্ত বৈঠক করেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। দুই নেতা নতুন করে ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম আলোচনায় বসেন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত আলোচনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। এরই অংশ হিসেবে শেখ হাসিনার ভারতে পরিকল্পিত দ্বিপক্ষীয় সফরের বিষয়টিও আলোচনায় আসে। এ মাসের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের কথা রয়েছে। রাষ্ট্রপতি ভবনে এ সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দু’দেশের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করতে নরেন্দ্র মোদির নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার আন্তরিক আগ্রহ ব্যক্ত করেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে এবং নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক কাজের সুযোগ রয়েছে। মানুষে মানুষে সংযোগ বৃদ্ধিতে যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নসহ উভয় দেশের আরও উন্নতিকল্পে আমাদের একযোগে কাজ করে যেতে হবে। বৈঠকে দুই নেতা বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আগামী দিনগুলোতে আরও দৃঢ় করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অত্যন্ত উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে রাষ্ট্রপতি ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তার ভারতীয় সমকক্ষকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।’ নরেন্দ্র মোদি গত ১০ বছর গত ধরে তার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন এবং শেখ হাসিনাও ইতোমধ্যে ১৬ বছর ধরে তার সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন এবং একে অপরের কাছ থেকে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে অনেক বিষয় জড়িত। যেহেতু উভয় সরকার দেশ পরিচালনায় অব্যাহত রয়েছেন, সেহেতু একসঙ্গে কাজ করার কিছু সুবিধা আছে। উভয় দেশের জনগণ বিভিন্ন দিক থেকে উপকৃত হচ্ছে যার মধ্যে দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে যোগাযোগ রয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, ‘আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত এবং আরো গভীর হবে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের পার্লামেন্টের রাজ্যসভা সদস্য ও কংগ্রেস পার্লামেন্টারি পার্টির চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী ও তার পুত্র লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ১০ জুন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আইটিসি মৌর্য হোটেলে সাক্ষাৎ করেন তারা। এসময় সোনিয়া গান্ধীর কন্যা ও ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী উপস্থিত ছিলেন। হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে গান্ধী পরিবারের সাথে একান্তে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। এই সাক্ষাতের পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ভারতের ইউনিয়ন মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক হয়। বৈঠক দুটির বিষয়ে পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের ইউনিয়ন মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠকটিও হৃদ্যতাপূর্ণ ছিল উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে এস জয়শঙ্করের আন্তরিকতার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পুনরায় মন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানান ও একসাথে কাজের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। এ মাসের শেষ দিকে আবার ভারত সফর করবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  সেই সফরের আগে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠনে শেখ হাসিনার অংশ নেয়া এবং মোদির সঙ্গে আলাদা বৈঠকের  আলাদা গুরুত্ব আছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাদের কথায়, এটা আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে মোদি সরকারে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কেরই ইঙ্গিত। সেটা বাংলাদেশের নির্বাচনের আগেও দেখা গিয়েছে। সামনেও দেখা যাবে। তবে তারা মনে করেন, এর ফলে বাংলাদেশ কতটা লাভবান হবে বা বিভিন্ন অমীমাংসিত ইস্যু সমধানে কতটা কাজে আসে তা ভবিষ্যৎ বলবে। ভারতে সরকার পরিবর্তন হলে সাধারণত তাদের পররাষ্ট্র নীতিতে তেমন পরিবর্তন হয় না। আর ভারতে তো ওই অর্থে সরকার পরিবর্তন হয়নি। মোদিই আবার ক্ষমতায়। পররাষ্ট্র নীতির ব্যাপারে ভারতে একটা সাধারণ কনসেনসাস আছে। আর বাংলাদেশের ব্যাপারে সেটা আরো নির্ধারিত। দলের পরিবর্তন হলেও বাংলাদেশ নীতিতে পরিবর্তন আসে না। মানুষের প্রত্যাশা বা চাহিদার ভিত্তিতে হয়তো কোনো জিনিস হাইলাইটেড হতে পারে। ‘আসলে দুই দেশের কোনো দেশেই সরকার পরিবর্তন হয়নি। ওখানে হয়তো জোট থেকে কয়েকজন মন্ত্রী হয়েছেন। তাতে তো আর বিরাট কোনো পরিবর্তন হয়ে যাবে না। দুই দেশের সম্পর্ক যে রকম আছে সে রকমই থাকবে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন ভারতে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। আওয়ামী লীগের এক টার্ম তো ভারতে কংগ্রেসই ক্ষমতায় ছিলো। ২০১৪ সালে মোদি ক্ষমতায় এলো। তখন তো অনেকে ভেবেছিল মোদি ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগের অনেক অসুবিধা হবে। কোনো অসুবিধা তো হয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকে এই সম্পর্ক অনেক পুরোনো। এই সম্পর্ক আরও ভালো হবে। এটা তো পরিবর্তন হওয়ার কোনো কারণ নেই। প্রতিবেশী ভারতের যে কোনো ঘটনাই বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের সফল নেতৃত্বে সারা বাংলাদেশ ঐক্যবদ্ধ হয়, ফল হিসেবে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা। কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তর না করে জোর করে শাসনের চেষ্টা করা হলে বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। সে সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত। সরাসরি সমর্থন, আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে ইন্দিরা গান্ধীর ঐতিহাসিক ভূমিকা এবং মাতৃসুলভ আচরণে খুব অল্প সময়ে বাঙালি জাতি বিশ্বের পরাক্রমশালী  সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে ছিনিয়ে আনে দেশমাতৃকার স্বাধীনতা। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন যেমন ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তেমনি ভারতের নির্বাচনও বাংলাদেশের কাছে হয়ে ওঠে গুরুত্বপূর্ণ। নানা হিসাব-নিকাশে বাঙালি সমর্থনের দলটির পক্ষভুক্ত হয়ে যায়। গণতান্ত্রিক ধারবাহিকতা ভারতের জাতীয় নির্বাচন এখন সারাবিশ্বে একটি মডেল।  বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত তিনটি সরকারের আমলে যে দেশটির সঙ্গে তারা সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলেছে এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে যারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে সে দেশটি নিঃসন্দেহে ভারত। এই ধারাবাহিকতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নতুন মেয়াদেও সেই ধারা বজায় থাকার সম্ভাবনাই বেশি। অন্যদিকে ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতেও বাংলাদেশের গুরুত্ব বিগত দেড় দশকে ক্রমশ বেড়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবেও ভারত একাধিকবার বলেছে, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতে বাংলাদেশই তাদের ‘সবচেয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী’। এই সময়ে নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, কানেক্টিভিটি বা সংযোগ, অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন, স্থল ও সমুদ্রসীমায় বিরোধ নিরসন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা ইত্যাদি ইস্যুতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনায় অভাবনীয় অগ্রগতিও লক্ষ্য করা যায়। শেখ হাসিনা বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ভারত ও চীন দুই দেশের সঙ্গে ভারসাম্যের কূটনীতি বজায় রেখেছেন। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় এই মুহূর্তে বাংলাদেশের চীনকে প্রয়োজন রয়েছে। বিষয়টি ভারতের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশ ভালো বন্ধু, প্রতিবেশী হিসেবে ভারত এই সত্য অবশ্যই বুঝতে পারছে। শেখ হাসিনা সরকার কখনো ভারতবিরোধী কার্যকলাপে কোনো শক্তিকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না। এই সত্য ১৯৯৬ সালে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকেই প্রমাণিত হয়েছে। সরকার এই নীতি এখনো বজায়ে রেখেছে এবং ভারত এটা বিশ্বাসও করে। চীনের মতামত উপেক্ষা করে বাংলাদেশ ‘কোয়াড’ জোটে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ মনে করেছে এই জোটে অংশগ্রহণ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন। শুধু মহান মুক্তিযুদ্ধ নয়, পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির ব্যাপারেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার কল্যাণে বিশ্বব্যাপী জনমত গঠিত হওয়ায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে পাকিস্তান সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু এই ঋণের কথা ভুলে যাননি। পাকিস্তান থেকে লন্ডন হয়ে ঢাকা  ফেরার পথে তাই তিনি দিল্লি অবতরণ করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য। ভারতের মাটিতে বসেই তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আন্তরিক সহায়তার জন্য ভারত সরকার ও সেদেশের জনসাধারণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এক কথায় ফিরিয়ে নিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী ভারতীয়  সৈন্য। ২০২৪ এর শুরুতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কর্মতৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশের প্রতিবেশী প্রভাবশালী রাষ্ট্র ভারতের সমর্থন আদায়েরও চেষ্টা করেছিল তারা। নরেন্দ্র মোদি সরকার তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। উপরন্তু তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বন্ধুর পরিচয় দিয়েছে। এ ছাড়া করোনা মহামারির সময় ভারতই প্রথম আমাদের টিকা দিয়ে সহায়তা করেছে। গত এক দশকে নরেন্দ্র মোদি তার যোগ্যতা দিয়ে অন্যতম বিশ্ব নেতা হয়ে উঠেছেন। সঠিক বৈদেশিক নীতির মাধ্যমে ভারতকে নিয়ে গেছেন বিশ্ব রাজনীতিতে অনন্য উচ্চতায়। একজন চা বিক্রেতা থেকে এই ভারতীয় নেতা দীর্ঘ রাজনৈতিক পথপরিক্রমায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ভারতের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে। তার পরিপক্ব রাজনীতি ভারতীয় জনতা দলকে পর পর তিনবার ক্ষমতায় বসাতে সক্ষম হয়েছে। হীরেন পণ্ডিত: প্রাবন্ধিক, গবেষক ও কলামিস্ট
১১ জুন, ২০২৪

টানা তৃতীয়বার দিল্লির মসনদে নরেন্দ্র মোদি
টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করলেন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনের উন্মুক্ত চত্বরে এক জমকালো অনুষ্ঠানে শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে এ দায়িত্ব নেন তিনি। ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাকে শপথবাক্য পাঠ করান। জওহরলাল নেহরুর পর মোদিই একমাত্র ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী, যিনি টানা তিনবার দিল্লির মসনদে বসলেন। তার শপথের পরপরই নতুন জোট সরকারের ৭২ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী শপথ নেন। তাদের মধ্যে ৩০ জন কেবিনেট মন্ত্রী, ৩৬ জন প্রতিমন্ত্রী ও ৫ জন দপ্তরবিহীন প্রতিমন্ত্রী। এনডিএ জোট থেকে ১১ জনকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। আলোচিত দুই প্রাদেশিক নেতার মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি থেকে দুইজন কেবিনেট মন্ত্রী ও বিহারের নীতিশ কুমারের জেডিইউ থেকে একজন কেবিনেট মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ প্রায় ৯ হাজার দেশি-বিদেশি অতিথি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে উপস্থিত থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস বর্জন করে। অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বিদেশি অতিথিদের জন্য নৈশভোজের আয়োজন করেন। এ অনুষ্ঠান ঘিরে রাজধানী নয়াদিল্লিতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি ভবনের একটি অংশকে উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা (নো-ফ্লাই জোন) ঘোষণা করা হয়। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ও ভিআইপিদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে অতিরিক্ত প্রায় ১ হাজার ১০০ ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। খবর এনডিটিভির। তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ নেওয়ার সময় দর্শকাসন থেকে ‘মোদি মোদি’ এবং ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান ওঠে। করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো রাষ্ট্রপতি ভবন চত্বর। এর আগে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে অনুষ্ঠানস্থলে এসে উপস্থিত হন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে রাষ্ট্রপতি তাকে নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করান। মোদির শপথের পরপরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যরা একে একে শপথ নেন। পর্যায়ক্রমে রাজনাথ সিং, অমিত শাহ, নীতিন গড়করি, জেপি নাড্ডা, শিবরাজ সিং চৌহান, নির্মলা সিতারমন, এস জয়শংকর, মনহর লাল খাত্তার, এইচডি কুমারস্বামী, পীযূষ গয়ালসহ ৭২ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী শপথ নেন। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে বিভিন্ন শরিক দলের সংসদ সদস্যও রয়েছেন। আগের দুবার বিজেপি একক সংখ্যারিষ্ঠতা পেলেও এবার তা না পাওয়ায় সরকার গঠন করতে শরিকদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তবে অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর দল তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) থেকে রাম মোহন নাইডু ও চন্দ্রশেখর পেম্মাসানিকে কেবিনেট মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বিহারের নীতিশ কুমারের জেডিইউ থেকে রাজিব রঞ্জন (লালন সিং) কেবিনেট মন্ত্রী ও রামনাথ ঠাকুর প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে গতকাল সকালে নরেন্দ্র মোদি প্রথমে যান রাজঘাটে জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা জানাতে। সেখান থেকে তিনি যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির স্মৃতিসৌধ ‘সদৈব অটল’-এ। তারপর জাতীয় যুদ্ধস্মারক। প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন প্রধানকে পাশে নিয়ে শ্রদ্ধা জানান দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া বীর সেনানিদের। নতুন মন্ত্রিসভায় যারা থাকছেন: মোদির নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন নীতিন গড়করি, রাজনাথ সিং, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, শিবরাজ সিং চৌহান, নির্মলা সীতারমণ, এস জয়শঙ্কর, মনোহর লাল খাত্তার, এইচ ডি কুমারাস্বামী, পীযূষ গয়াল, ধর্মেন্দ্র প্রধান, জিতন রাম মাঞ্জি, সর্বানন্দ সোনোয়াল, রাজীব রঞ্জন সিং, বীরেন্দ্র কুমার, কে রাম মোহন নাইডু, প্রহ্লাদ যোশি, জুয়াল ওরাম, জি কিষান রেড্ডি, কিরেন রিজিজু, চিরাগ পাসওয়ান, হরদীপ সিং পুরি, মনসুখ মান্ডাভিয়া, ভূপেন্দ্র যাদব, গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, গিরিরাজ সিং, অশ্বিনী বিষ্ণু ও রাও ইন্দ্রজিৎ সিং। অনুষ্ঠানে প্রায় ৯ হাজার অতিথি: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সিশেলসের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আফিফসহ শপথ অনুষ্ঠানে প্রায় ৯ হাজার অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীণ কুমার জগন্নাথ, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোগবে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কুমার দহল ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিরোধীদের সন্দেহ, সরকার টিকবে না: এদিকে মোদির এবারের জোট সরকার টিকবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতারা। ইন্ডিয়া জোট এবারের লোকসভায় ২৩৩ আসন পেয়েছে। তারা সরকার গঠনের জন্য চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতিশ কুমারের সঙ্গে গোপনে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন বলে আলোচনা রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস বিজেপিকে উপযুক্ত সময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
১০ জুন, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি। দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে দাঁড়িয়ে ঐতিহাসিক এ শপথগ্রহণ করলেন তিনি। জওহরলাল নেহেরুর পর দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে টানা তিনবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার নজির গড়লেন নরেন্দ্র মোদি।  আজ (রোববার) ঠিক সন্ধ্যা ৭টা ২৩ মিনিট ২১ সেকেন্ডে রাষ্ট্রপতি ভবনে তাকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১০টা বছর পার করে একাদশ বছরে পদার্পণ করলেন মোদি। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ১৯৬৪ সালের ২৭ মে পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নেহেরু। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি। ১৯৫১-৫২ সালে প্রথম সাধারণ নির্বাচনে ৪৮৯টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৩৬৪টি আসনে জিতেছিল কংগ্রেস। ১৯৫৭ সালে ৪৮৯টি আসনের মধ্যে ৩৭১টিতে জিতেছিল। ১৯৬২ সালে ৩৬১টি আসন জিতেছিল কংগ্রেস।  আর মোদি প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন ২০১৪ সালে। টানা ১০ বছরের কংগ্রেসের শাসনের পরে বিজেপির ঝড় উঠেছিল ভারতে। আর প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন মোদি। যিনি এর আগে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।  ২০১৯ সালে বিজেপির আধিপত্য আরও বৃদ্ধি পায়। দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেছিলেন। আর ২০২৪ সালের ৯ জুন সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদি।  তবে ২০১৪ সাল এবং ২০১৯ সালের মধ্যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়তে পারেনি বিজেপি। এবার লোকসভা নির্বাচনে ২৪০টি আসন পেয়েছে নরেন্দ্র মোদির দল। সেই পরিস্থিতিতে এনডিএ জোটের বিভিন্ন দলের সাহায্য নিয়ে ২৭২-র ম্যাজিক ফিগার পার করেছে বিজেপি। ২০১৪ সাল এবং ২০১৯ সালে বিজেপি এককভাবেই ম্যাজিক ফিগার পার করে গিয়েছিল। সেই নিরিখে বিচার করলে তৃতীয় দফায় নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছেন মোদি।  এদিকে মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ঘিরে তারকাদের ঢল নেমেছে দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে। বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে সেখানে উপস্থিত রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জু, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী প্রচন্ড, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে।  এ ছাড়াও উপস্থিত আছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, সুপারস্টার শাহরুখ খান, রজনীকান্ত, মুকেশ আম্বানিদের মতো তারকারা।  
০৯ জুন, ২০২৪

মোদিই হলেন সংসদ নেতা, জোটের এমপিদের প্রস্তাব পাস
নরেন্দ্র মোদিকে সংসদীয় দলের নেতা মনোনীত করেছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের (এনডিএ) নবনির্বাচিত এমপিরা। শুক্রবার (৭ জুন) সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে এনডিএ জোটের নির্বাচিতদের সভা শেষে এ ঘোষণা আসে। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, মোদিকে নেতা করার একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। এ ছাড়া মোদিকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাবে জোটের এমপিরা সই করেছেন। আজ বিকেলেই দেশটির রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে সরকার গঠনের দাবি জানাবেন এই জোট নেতারা। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশটির সংসদে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মোদি জোটের নেতা নির্বাচত হলে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ আরও প্রশস্ত হবে। আগামী রোববার তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন। অপরদিকে সংসদে রাহুল যেন বিরোধী দলের নেতার আসনে বসেন, সে দাবি বেশ জোরদার হচ্ছে। ইতোমধ্যে কংগ্রেসসহ ও জোটের অনেক নেতা এই দাবি তুলেছেন। এবারের নির্বাচনে চমক দেখিয়েছে কংগ্রেস। তারা নির্বাচনে ৯৯টি আসন পেয়েছে। কংগ্রেসের এই সাফল্যের কৃতিত্ব রাহুলকে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কংগ্রেসের ইন্ডিয়া জোটও নির্বাচনে ২৩২টি আসনে জিতে নিজেদের সক্ষমতার জানান দিয়েছে। একই দাবি তুলে কংগ্রেসের রাজ্যসভার এমপি বিবেক টাঙ্কা বলেন, রাহুল জি নির্বাচনী প্রচারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনিই আমাদের নির্বাচনী মুখ ছিলেন। লোকসভায় সংসদীয় দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করা তার কর্তব্য। শিবসেনার (ইউবিটি) এমপি সঞ্জয় রাউতও গান্ধীর প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, রাহুল গান্ধী যদি নেতৃত্ব গ্রহণ করতে প্রস্তুত হন, তাহলে আমরা আপত্তি করব কেন? তিনি একাধিকবার নিজেকে জাতীয় নেতা হিসেবে প্রমাণ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় নেতাদের একজন। আমরা সবাই তাকে চাই এবং তাকে ভালোবাসি। জোটের কোনো আপত্তি বা মতপার্থক্য নেই। ২০০৪ সালে রাজনীতিতে নাম লেখান রাহুল গান্ধী। তবে ৫৩ বছর বয়সী এই কংগ্রেস নেতা এখন পর্যন্ত কোনো সাংবিধানিক পদে বসেননি। যদিও এই সময়ের মধ্যে তার দল কংগ্রেস দেশের ক্ষমতায় পর্যন্ত ছিল।
০৭ জুন, ২০২৪

ঐক্যবদ্ধ বিরোধী হিসেবে লোকসভায় যাবে কংগ্রেসের ‘ইন্ডিয়া’ জোট
কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ‘ইন্ডিয়া’ আগামীতেও ঐক্যবদ্ধ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তারা আপাতত সরকার গঠনের আশা ছেড়েছেন। শক্তিশালী বিরোধী হিসেবে লোকসভায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জোটটি। খবর আনন্দবাজারের। বুধবার (৫ জুন) নয়াদিল্লিতে জোটের কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের কৌশল নিয়ে বৈঠক শেষে এ ইঙ্গিত দেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। এ সময় তার সঙ্গে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত, সিপিএমের নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, আপ নেতা সঞ্জয় সিংহসহ জোটের অন্যান্য দলের নেতারা ছিলেন। লোকসভা নির্বাচনে জোটটি ২৩২ আসন পায়। কংগ্রেস এককভাবে ৯৯টি আসনে জিতেছে। কিন্তু এতে সরকার গঠনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জিত হয়নি। স্বভাবতই ২৯৩ আসন পাওয়া নরেন্দ্র মোদির এনডিএ জোট সরকার গঠনের দিকে এগোচ্ছে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের বৈঠক শেষে তারা ইতিমধ্যে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ অবস্থায় বাধ্য হয়েই বিরোধী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেসের ‘ইন্ডিয়া’ জোট। আগামী দিনের পরিকল্পনা বিষয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বক্তব্যের সারাংশ ছিল, তাড়াহুড়ো নয়, আপাতত সঠিক সময়ের অপেক্ষা করবেন তারা। সময় ও সুযোগ বুঝে পরবর্তী ‘রণকৌশল’ ঠিক করা হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, খাড়গের এই মন্তব্যেই ইন্ডিয়া জোটের মনোভাব স্পষ্ট, অর্থাৎ এখনই সরকার গঠনের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠা বৃথা। বরং সরকার গঠনের দাবি জানালে ‘ক্ষমতার লোভ’ বলে বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রচারে নামতে পারেন মোদি-অমিত শাহ। এতে ‘ইন্ডিয়া’র ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে। তাই এখন সঠিক সময়ের অপেক্ষায় জোট। বৈঠক শেষে জোট শরিক আইইউএমএলের নেতা পিকে কুনহালিকুট্টি বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় স্বস্তিতে নেই বিজেপি। সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’ শিবসেনার নেতা সঞ্জয়ও বলেন, ‘জনগণ এই সরকার বদলে ফেলতে চেয়েছিল। সঠিক সময়েই সেই লক্ষ্য পূরণ হবে।’ বৈঠকের আগে চাচা রাম গোপাল যাদবকে সঙ্গে নিয়ে খাড়গের বাসভবনে পৌঁছেন উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টির (এসপি) প্রধান অখিলেশ যাদব। কংগ্রেস নেতা কেসি ভেনুগোপাল, জেএমএমের সংসদ সদস্য ও ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের স্ত্রী কল্পনা সরেন, বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা এনকে প্রেমচন্দ্রও বৈঠকে অংশ নেন।
০৬ জুন, ২০২৪

বিপুল ভোটে জিতলেন নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে নিজ নিজ আসনে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুথ ফেরত সমীক্ষার অধিকাংশই বলেছিল নরেন্দ্র মোদির বিজেপি জোট খুব সহজেই জিততে যাচ্ছে। আবারও ভারতের ক্ষমতায় আসছে মোদি-অমিত শাহ-এর বিজেপি।  তবে ভোট গণনায় দেখা গেল বিজেপি জোট সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেলেও খুব মসৃণ হচ্ছে না এই জয়। নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে বিরোধী জোটের সঙ্গে।  হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরও শেষপর্যন্ত বিরাট ব্যাবধানেই জিতলেন নরেন্দ্র মোদি। গুজরাটের বারানসী আসনে মোদি ৬ লাখ ১১ হাজার ৪৩৯ ভোট পেয়েছন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের অজয় রায় পেয়েছেন ৪ লাখ ৬০ হাজার ৪৫৭ ভোট। ব্যবধান এক লাখ ৫২ হাজার ৫১৩ ভোটের। অপরদিকে গান্ধীনগর থেকে রেকর্ড ভোটে জয়ী হয়েছেন অমিত শাহ। ৫ লক্ষ ২৬ হাজার ভোটে জয়লাভ করলেন মোদির ডানহস্ত এই বিজেপি নেতা।  বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারতে সাত দফার বিশাল নির্বাচনী যজ্ঞ শুরু হয় গত ১৯ এপ্রিল। টানা দেড় মাস পর গত শনিবার (১ জুন) শেষ হয়।   পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ৫৪৩ সদস্যের লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে একটি দল বা জোটের ২৭২টি আসন প্রয়োজন। তবে ভোট শেষ হওয়ার পরপরই প্রকাশিত বেশিরভাগ বুথফেরত জরিপই জানায়, এনডিএ জোট ৩৫০টির বেশি আসন পেতে পারে এনডিএ। টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরতে পারেন মোদি।  
০৪ জুন, ২০২৪

বিজেপি জোট ৩০০ ছুঁইছুঁই, জরিপের আভাস পেরোল বিরোধীরা
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোট গণনার প্রায় ৪ ঘণ্টা পেরিয়েছে। এতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন দেশটির ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট ২৯০ আসনে এগিয়ে আছে। অপরদিকে বুথফেরত জরিপের চেয়ে ভালো অবস্থানে থেকে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস নেতৃত্বধীন ‘ইন্ডিয়া’ জোট। মঙ্গলবার (৪ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এনডিটিভির লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ইন্ডিয়া’ জোট ২৩০টি আসনে এগিয়ে। তারা বুথফেরত জরিপের আভাস পেরোতে সক্ষম হয়েছে। শনিবার ওই জরিপে বলা হয়, মাত্র ১৪১-১৬২টি আসন পেতে পারে বিরোধী ইন্ডিয়া জোট। যা ইতোমধ্যে ছাড়িয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলছে। এ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দল ২১ আসনে এগিয়ে থেকে বিজয়ের আশা করছে।  দেশটিতে সরকার গঠনে লোকসভায় ৫৪৩ আসনের মধ্য ২৭২ আসনে বিজয়ী হতে হবে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর লাইভ আপডেট বলছে, বিজেপি জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা খুব সহজে অর্জন করতে চলেছে।  এর আগে বুথফেরত জরিপে বলা হয়, ৩৫০টিরও বেশি আসন পেয়ে ফের ক্ষমতায় আসছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ। অর্থাৎ নরেন্দ্র মোদিই আবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন। তবে এত আসন না পেলেও মোদি খুব ভালো অবস্থানে আছেন। দেশটিতে সাত দফার ভোট শেষে আজ মঙ্গলবার (৪ জুন) স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোট গণনা শুরু হয়। প্রথমে পোস্টাল ব্যালট গণনা করেন কর্মকর্তারা। বর্তমানে একে একে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ভোট গণনা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ইভিএমে ভোট হওয়ায় ফলাফল দ্রুত প্রস্তুত করা সম্ভব হচ্ছে। সন্ধ্যার আগে সব কেন্দ্রের ফল পাওয়া যাবে। রাতের মধ্যে ভোটের ফলাফলের চূড়ান্ত ঘোষণা আসতে পারে।  এদিকে বিজয় উদ্‌যাপনের প্রস্তুতিও শুরু করেছে বিজেপি। বিভিন্ন রাজ্যে জমকালো আয়োজনের অপেক্ষায় দলের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে ভারতে এবারের লোকসভা নির্বাচন বিশ্বরেকর্ড করেছে। বিশ্বের সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে বেশিসংখ্যক ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার এ দাবি করেছেন। ভোটের এ হারকে অলৌকিক ঘটনা হিসেবে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। খবর বিবিসির। প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, সাত দফার ভোট শেষে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল গণনা চলছে। এক এক করে কেন্দ্রগুলো থেকে ফল আসছে। এবারের নির্বাচনে নথিভুক্ত ভোটার ছিলেন প্রায় ৯৭ কোটি। এদের মধ্যে ৬৪ কোটি ২০ লাখের বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। এ সংখ্যাটি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।
০৪ জুন, ২০২৪

বুথফেরত জরিপের পথে আনুষ্ঠানিক ফল, এগিয়ে মোদির জোট
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। এতে প্রথম কয়েক ঘণ্টায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট এগিয়ে রয়েছে। ইন্ডিয়া টুডের তথ্য মতে, নরেন্দ্র মোদির এনডিএ জোট ২৬৩টি আসনে এগিয়ে আছে। অপরদিকে এখন পর্যন্ত বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোট এগিয়ে আছে ১৯৮টি আসনে। আরও কয়েকটি কেন্দ্র থেকেও মোদির দলের বিজয়ের খবর আসছে। দেশটিতে সাত দফার ভোট শেষে আজ মঙ্গলবার (৪ জুন) স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোট গণনা শুরু হয়। প্রথমে গণনা পোস্টাল ব্যালট গণনা করেন কর্মকর্তারা। বর্তমানে একে একে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ভোট গণনা করা হচ্ছে।  আনুষ্ঠানিকভাবে যে ফল আসছে তাতে বুথফেরত জরিপ সঠিক হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বুথফেরত জরিপে মোদি আবারও প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন বলে দাবি করা হয়েছিল। এরপর বিজয় উদ্‌যাপনের প্রস্তুতিও শুরু করে বিজেপি।  গত শনিবার শেষ দফা ভোটের দিন সন্ধ্যায় যে বুথফেরত জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়, তার সবগুলোতেই বলা হয়, ৩৫০টিরও বেশি আসন পেয়ে ফের ক্ষমতায় আসছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ। অন্যদিকে মাত্র ১৪১-১৬২টি আসন পেতে পারে বিরোধী ইন্ডিয়া জোট। বুথফেরত এ জরিপের ফল প্রকাশের পর সারা দেশে বিজয় উৎসব করার প্রস্তুতিও সেরে ফেলেছে বিজেপি। চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগেই ‘দাপ্তরিক কাজ’ও শুরু করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রোববার সব মিলিয়ে সাতটি বৈঠক করে মোদি স্পষ্ট করে দেন, নির্বাচনের ফল তার দলের পক্ষেই যাচ্ছে। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী তিনিই হবেন। এ রকম অবস্থায় সবাই তাকিয়ে আছেন আজকের চূড়ান্ত নির্বাচনী ফলের দিকে। বুথফেরত জরিপের ফল কতটা সত্যি হয়, সেটারও একটা পরীক্ষা হয়ে যাবে আজ। খবর এনডিটিভির। শনিবার বুথফেরত জরিপের ফল অনুযায়ী বিজেপি জোট ৩৫০টিরও বেশি আসনে জয় পেতে যাচ্ছে। এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ে বেশি আসন পেতে যাচ্ছে বিজেপি। দক্ষিণেও এবার ভালো ফল করতে যাচ্ছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলটি। কেরালায়ও প্রথমবারের মতো জয়ের খাতা খোলার আভাস দিয়ে রেখেছে বুথফেরত জরিপগুলো। সব মিলিয়ে বিজেপি জোট ক্ষমতায় আসছে আর নরেন্দ্র মোদিই যে আবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন তা একরকম নিশ্চিত।
০৪ জুন, ২০২৪

পশ্চিমবঙ্গে নরেন্দ্র মোদি বিকশিত বাংলা ছাড়া বিকশিত ভারত সম্ভব নয়
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বিকশিত বাংলা ছাড়া বিকশিত ভারত সম্ভব নয়। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল বাংলার বায়ু, বাংলার ফল পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান’। অথচ দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো সিপিএম এবং তৃণমূল বাংলাকে বরবাদ করে দিয়েছে। মোদি গতকাল পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুরে এক নির্বাচনী জনসভায় এ কথা বলেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থনে গতকাল জনসভা করেন মোদি। আগামী ১ জুন যাদবপুরে ভোট হবে। জনসভায় মোদি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে সন্দেশখালির মতো ঘটনা ঘটে। যে তৃণমূল শৃঙ্খলারক্ষার মতো প্রাথমিক দায়িত্ব পালন করতে পারে না, তাদের শাস্তি দেওয়া জরুরি। তৃণমূলের রাজনীতি রক্তপাতের রাজনীতি। তৃণমূল দুর্নীতির রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। তৃণমূল শুধু ভোট ব্যাংকের রাজনীতি করে। সিপিএম এবং তৃণমূল, নামেই দুটি পার্টি। ওদের দোকান আলাদা; কিন্তু ওরা যা বলে, ওরা যা করে সব এক। দোকান আলাদা হলেও পণ্য এক। জনতার উদ্দেশে মোদি বলেন, ‘বিজেপি আপনাদের আকাঙ্ক্ষাকে বোঝে। তাই রাস্তাঘাটের উন্নয়নের জন্য অনেক বেশি খরচ করছে। পরিবহনে অনেক বেশি খরচ করছে। কলকাতা মেট্রোর অনেক উন্নতি হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে ইলেকট্রিক বাসও চলতে দেখবেন আপনারা। আর তাতে প্রচুর চাকরিও হবে।’ শেষে মোদি বলেন, ‘বাংলায় আরও বেশি সংখ্যায় পদ্ম ফুটবে ৪ জুন। কিন্তু সিপিএমকে ভোট দেবেন না। কারণ সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে তৃণমূলের হাত শক্ত করা। আপনারা যে কোনো মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন, কেন্দ্রে কার সরকার তৈরি হবে। যে কেউ বলবে মোদি সরকার গড়বে। তা-ই যদি হয়, তবে তৃণমূলকে ভোট দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন কেন? মুখ্যমন্ত্রী ম্যাডাম তো এরই মধ্যে বলেছেন, কেন্দ্রে তিনি বিরোধী জোটকে সমর্থন করবেন। তবে মনে রাখবেন ৪ জুন ইতিহাস রচনা করবে বিজেপি।
২৯ মে, ২০২৪
X