কুমিল্লায় কপাল পুড়েছে ৪ এমপির
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত ফলাফলে কুমিল্লার ১১টি আসনে চার স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় পেয়েছেন। এতে কপাল পুড়েছে বর্তমান ৪ সংসদ সদস্যের। রোববার (৭ নভেম্বর) রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান। নৌকা নিয়ে হেরে যাওয়ার তালিকায় রয়েছেন- সেলিমা আহমাদ মেরি, ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন, রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও অ্যাডভোকেট আবুল হাসেন খান। কুমিল্লা-২ (হোমনা-মেঘনা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ মেরিকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আব্দুল মজিদ। কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনকে হারিয়ে জিতেছেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম সরকার। কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ। কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। আসনটিতে প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল হাসান খান তৃতীয় হয়েছেন। এ আসনে জিতেছেন কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ জাহের। তিনি পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮১০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফুলকপি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৬১ হাজার ৫২২ ভোট। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল হাশেম খান পেয়েছেন ২২ হাজার ৩১৫ ভোট।
০৮ জানুয়ারি, ২০২৪

শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাল প্রভাবশালী ৩ দেশ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ অর্জন করায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিশ্বের প্রভাবশালী ৩টি দেশের রাষ্ট্রদূত। সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে এ অভিনন্দন জানান তারা। গণভবনে এদিন শেখ হাসিনার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারত, রাশিয়া ও চীন রাষ্ট্রদূতরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এছাড়াও এদিন ভুটান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূতরাও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পাশাপাশি সাক্ষাৎ করেন আগা খান ডিপ্লোমেটিক রিপ্রেজেনটেটিভের প্রতিনিধিরাও। এ সময় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয়ী হওয়ায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিজ নিজ দেশের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান তারা। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রদূতরা বাংলাদেশের সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার দৃঢ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় সহযোগিতা কামনা করেন। এদিকে বিকেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮ আসনের মধ্যে ২২৩ আসনে জয়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থীরা। এ জয়ের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থ দফা সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ২২৩টি আসনে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। আর আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়ের হার এবার বেশি। তারা ৬১টি আসনে জয় পেয়েছেন। আর অন্যান্য দল পেয়েছে তিনটি আসন।
০৮ জানুয়ারি, ২০২৪

ভোট নয় গণভোট 
আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কিন্তু আগের এগারোটি সংসদ নির্বাচনের চেয়ে এবারের নির্বাচন অন্যরকম, ব্যতিক্রমী। আমার বিবেচনায় এটা নির্বাচন নয়, গণভোট। গণতন্ত্র অব্যাহত থাকবে কিনা সে প্রশ্নে গণভোট। বাংলাদেশের উপর বিদেশি নিষেধাজ্ঞা হবে কিনা, সে বিষয়ে গণভোট। এই নির্বাচনে আপনি কাকে ভোট দিচ্ছেন সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়, আপনার ভোট গুরুত্বপূর্ণ।  জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ৩০০ আসলে প্রার্থী দেয় বিভিন্ন দল। যে রাজনৈতিক দল ১৫০টির বেশি আসনে জয়ী হয় তারাই সরকার গঠন করে। স্বাধীনতার পর ৭৩ এর নির্বাচন এবং ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত নির্বাচন সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী দল সরকার গঠন করে।  ১৯৭৫ এর ২৫ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সংসদীয় ব্যবস্থার বদলে রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু ৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি। এরপর জনগণের অভিপ্রায়ে নয়, ক্ষমতার পালাবদল হয় অস্ত্রের শক্তিতে। খুনি মোশতাক, জিয়া, এরশাদ কেউই জনগণের রায়ে ক্ষমতার মসনদে বসেননি। তারা ক্ষমতা দখল করেছে, অস্ত্রের জোরে, পিছনের দরজা দিয়ে।  ৭৯ থেকে ৮৮ পর্যন্ত তিনটি জাতীয় সংসদ ছিল আসলে রাবার স্টাম্প। অবৈধ সরকারের কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়াই ছিল এই তিনটি সংসদের প্রধান কাজ। ৯০ এ গণআন্দোলনের মুখে এরশাদের পতন হয়। তিনজোটের রূপরেখা অনুযায়ী, ৯১ এর সংসদ আবার ৭২এর সংবিধান অনুযায়ী সংসদীয় গণতন্ত্রে ফিরে যায়। এরপর দেশে সাতটি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ৯৬ এর ১৫ ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচন ছিল একটি প্রহসন। ভোট ছাড়া অনুষ্ঠিত ঐ সংসদের আয়ু ছিল এক মাসেরও কম।  বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে স্বল্প মেয়াদের সংসদে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সংবিধান সংশোধনী গৃহীত হয়। ৯১ এর সংসদও শেষ হয়েছিল মেয়াদ পূর্তির কিছুদিন আগে। ৯৬ এর জুনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদই প্রথম মেয়াদপূর্ণ করে। ৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচন (৯৬ এর ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসন বাদ দিলে) অনুষ্ঠিত হয়েছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। এই চারটি সংসদ নির্বাচনে প্রতিবারই ক্ষমতার বদল হয়েছে। ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থই দাঁড়ায় ক্ষমতাসীন দল হেরে যাবে। এরকম বাস্তবতায় ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করার ‘সাংবিধানিক ক্যু করে। বিএনপি-জামায়াত সংবিধান সংশোধন করে প্রধান বিচারপতির বয়স বৃদ্ধি করে যেন তাদের একান্ত অনুগত সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে পারেন। নানা রকম কারসাজি করে ২৮ অক্টোবর ২০০৬ সালে বিএনপি শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা ছেড়ে দেয় তাদের বাধ্যগত রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজ উদ্দিন আহমদকে। ইয়াজ উদ্দিনের নেতৃত্বে বিএনপির বি টিম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নেয়। ঐ দিনই মূলত: বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মৃত্যু ঘটে।  তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে এমনভাবে বিএনপি দিগম্বর করে যে, এর সুযোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশের সুশীল সমাজ। ২০০৭ সালের এক-এগারো ছিল সুশীলদের ক্ষমতা দখল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাংবাধানিক ফোঁকড় দিয়ে দেশে অনির্বাচিত সরকারের চিরস্থায়ী ক্ষমতা দখলের সুযোগ সৃষ্টি হয়। জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ এবং ড. ফখরুদ্দীনের ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার' ব্যবস্থায় মানুষ তিক্ত বিরক্ত ওঠে।  এ সময় এই অনির্বাচিত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তৈরি হয় জনমত। বেগম জিয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব এই অনির্বাচিত ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে মতামত দেন। তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চ্যালেঞ্জ হয় বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল হয়।  ২০১৪ থেকে দুটি নির্বাচন হয়েছে দলীয় সরকারের অধীনে। ২০১৪ সালের নির্বাচন বিএনপি বর্জন করে। তাদের ঐ সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল, তা বিএনপির নেতারাই স্বীকার করেন। ঐ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস অন্যরকম হতো।  ২০১৮ সালে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের একটি মহা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা কিছু গণতন্ত্র বিরোধী অপশক্তি সেই সম্ভাবনাকে নষ্ট করে। ২০১৮ সালে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে নব্য আওয়ামী লীগার প্রশাসন এবং চাটুকাররা। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর আস্তে আস্তে গণতন্ত্র বিরোধী অপশক্তি সংঘবদ্ধ হতে শুরু করে। পশ্চিমা বিশ্ব, সুশীল সমাজের একটি অংশের ক্রীড়নকে পরিণত হয় রাজনৈতিকভাবে প্রায় দেউলিয়া বিএনপি। নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু এবং ‘অংশ-গ্রহণমূলক’ নির্বাচনের আওয়াজ তুলে শুরু হয় সংবিধান এবং গণতন্ত্র হত্যার ষড়যন্ত্র।  একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশ নিয়ে শুরু করে অতিমাত্রায় মাতামাতি। ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ নানা নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখানো শুরু হয়। অন্যদিকে পশ্চিমাদের আপনজন সুশীলরা গণতন্ত্রের জন্য আহাজারি শুরু করেন। এসবেই আশার আলো দেখতে শুরু করে বিএনপি। নিজেরা ক্ষমতায় যেতে নয় বরং আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাতে সবকিছুকে করার মুচলেকা দেয় বিএনপি।  নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় না হলে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দেয় দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি। এদের সঙ্গে যুক্ত হয় কিছু খুচরা দলও। বিএনপির আন্দোলনে বাতাস দেয় পশ্চিমা বিশ্বের কয়েকটি দেশ এবং দেশের সুশীল সমাজের একটি অংশ। এদের অভিন্ন লক্ষ্য হলো, যে কোনো মূল্যে নির্বাচন হতে না দেওয়া। সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করে একটি অসাংবিধানিক সরকারকে ক্ষমতায় বসানো। অন্যদিকে, শেখ হাসিনা যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র এবং সংবিধান রক্ষার প্রত্যয় ঘোষণা করেন। গত দুই বছর ধরে আসলে এই দুই ধারার লড়াই দৃশ্যমান। আস্তে আস্তে মনস্তাত্বিক যুদ্ধ থেকে এই যুদ্ধ এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। নির্বাচন বানচাল করে বাংলাদেশকে গণতন্ত্র হীন করতে চায় একপক্ষ। অন্যদিকে গণতন্ত্র এবং সংবিধানকে এগিয়ে নিতে চায় আরেক পক্ষ। আর এই লড়াইয়ের ফয়সালার দিন ৭ জানুয়ারি । ৭ জানুয়ারি যেন নির্বাচন না হয় সেজন্য সব চেষ্টাই করা হয়েছে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ধুয়া তুলে নির্বাচনকে অনিশ্চিত করে তোলার সব চেষ্টাই ছিলো দৃশ্যমান। বিএনপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চেষ্টাও সফল হয়েছে। আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই দেশে একটি নির্বাচনী আবহ তৈরি করেছে। জাতীয় পার্টি এখনও দোদুল্যমান। থেকেও নেই। অবস্থা বেগতিক দেখলে তারা যেকোনো কিছুই করতে পারে। তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম ভোটে না থাকার মতোই। স্বাভাবিকভাবে, সাধারণ ভোটারদের কাছে আপাতঃ দৃষ্টিতে এই ভোট আগ্রহহীন, উত্তেজনা শূন্য।  অনেকেই মনে করতে পারেন, আওয়ামী লীগই তো আবার ক্ষমতায় আসবে, কাজেই ভোট দিয়ে লাভ কি। ভুলেও এ করম ভাবনাকে প্রশ্রয় দেবেন না। এই নির্বাচন কোনো দলের ক্ষমতায় থাকা না থাকার নয়। এই নির্বাচন বাংলাদেশের অস্তিত্বের। ধ্বংসের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর এই নির্বাচন। এই নির্বাচনে আপনার একটি ভোট গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারে। আপনার ভোট নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপনার রায়। আপনার ভোট বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ। অন্য যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে এই নির্বাচন তাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যারা এক-এগারোতে বাংলাদেশে ‘অনির্বাচিত সরকার' এনেছিলে এই ভোট তাদের শেষ যুদ্ধ। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায় না, বাংলাদেশকে একটি পরনির্ভর রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়, এটা তাদের শেষ লড়াই। পশ্চিমাদের ভৃত্য সুশীলরা যারা বাংলাদেশকে একটি পরনির্ভর পশ্চিমাদের পুতুল রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়, এই নির্বাচন তাদের শেষ সুযোগ।  আপনি ৭ জানুয়ারি ভোট না দিলে আপনি অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে। বিদেশি প্রভুদের পক্ষে। ভোট না দেওয়া মানেই আপনি গণতন্ত্র বিরোধী অপশক্তিকে ক্ষমতাবান করলেন। এই অপশক্তি ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বানচালের সবচেষ্টো করেছে। নির্বাচনের সব রং উৎসবকে ফ্যাকাসে করতে চেয়েছে। এদের ধারণা ছিল, এসব করলেই নির্বাচন থেকে সরে আসবে সরকার। ভয়ে কাঁপবে। ভয় যে আওয়ামী লীগ পায়নি তা নয়। আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতাই যে অজানা শঙ্কায় বিভ্রান্ত হয়েছিলেন, এত বোঝা যায় তাদের দায়িত্ব জ্ঞানহীন কথা বার্তায়। কিন্তু একজন অতন্দ্র প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে আছেন। গণতন্ত্রের জন্য সংবিধান সুরক্ষার ব্রত নিয়ে। তার নাম শেখ হাসিনা। অনেকেই এমপি হবার দ্বার প্রান্তে, অনেকে মন্ত্রী হবারও খোয়াব দেখতে শুরু করেছেন। কিন্তু এই নির্বাচন যে হতে যাচ্ছে সব জাতীয় এবং আন্তজার্তিক বাধা ও ষড়যন্ত্র পেরিয়ে তার কারণ শেখ হাসিনা। তার অমিত সাহস, বিচক্ষণ দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই ৭ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচনে তাই আপনার নিরপেক্ষ থাকার কোনো সুযোগ নেই।  আপনি কার পক্ষে? আপনি কি চান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের অনাকাঙ্খিত নিষেধাজ্ঞা আসুক? আপনি কি চান, অনির্বাচিত সুশীলবাবুরা ক্ষমতা দখল করুক? আপনি কি চান, দেশ গতিহীন এক অন্ধকার হতাশার অধ্যায়ে প্রবেশ করুক? যদি না চান, তাহলে ৭ জানুয়ারি ভোট দিন। যেকোনো প্রার্থীর পক্ষে। আপনি আপনার ইচ্ছামতো প্রতীকে ভোট দিন। নৌকা, লাঙ্গল, ঈগল, ট্রাক, ডাব যেকোনো মার্কায়। আপনার ভোট প্রদানই হবে গণতন্ত্র রক্ষার সবচেয়ে বড় অস্ত্র । যারা প্রার্থী হয়েছেন, আল্লাহর ওয়াস্তে একদিনের জন্য ভালো মানুষ হন। ভোটারদের প্রতিপক্ষকে ভয়ভীতি দেখাবেন না। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসতে উৎসাহিত করেন। তাদের নির্ভয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে দিন। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ, কারো পক্ষ নেবেন না। কাউকে জেতানো কিংবা কারচুপি করে দেশের ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তার দিতে ঠেলে দেবেন না। আর আমরা এই নির্বাচন কে বাংলাদেশে অস্তিত্ব রক্ষার নির্বাচন হিসেবে বিবেচনা করি। ভোট জনগণের উৎসবের দিন। আসুন সেই উৎসবে মেতে ষড়যন্ত্রকারীদের ‘না’ বলি। সৈয়দ বোরহান কবীর, নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত [email protected]
০৬ জানুয়ারি, ২০২৪

হরতাল সফলে ঢাকা উত্তর যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জনের আহ্বানে আগামীকাল শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হওয়া ৪৮ ঘণ্টা হরতাল সফলে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে এই মিছিল করেন তারা। এ সময় ‘ডামি নির্বাচন মানি না, মানব না’, ‘একতরফা নির্বাচন মানি না, মানব না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান রাজের নেতৃত্বে এই মিছিল হয়। এতে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের আওতাধীন বিভিন্ন থানা এবং ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
০৫ জানুয়ারি, ২০২৪

নির্বাচন ঘিরে নতুন কর্মসূচি বিএনপির
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করার জন্য বিএনপি আবারও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সে অনুযায়ী আগামীকাল শুক্রবার ঢাকাসহ সারা দেশে মিছিল ও গণসংযোগ করবে বিএনপি।  বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই ঘোষণা দেন। তিনি জনগণের উদ্দেশে বলেন, আমরা আগামী ৭ জানুয়ারি প্রহসনের সংসদ নির্বাচন বর্জন করতে দেশবাসী ও সম্মানিত ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, একতরফা নির্বাচনে সরকার নিজেরা নিজেরা পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা ঘটিয়ে বিএনপি ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণঅধিকার পরিষদের কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা হামলা করেছে। আমি এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর ২৯ অক্টোবর থেকে দলটি চার দফা হরতাল ও ১৩ দফা অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। এরপর লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি দিয়ে আসছে দলটি। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন করে এই কর্মসূচির ঘোষণা দিলো বিএনপি।
০৪ জানুয়ারি, ২০২৪

নারীদের ভোটকেন্দ্রে আনতে নাসিমপত্নীর উঠান বৈঠক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের পক্ষে ভোটের মাঠে নেমেছেন তার সহধর্মিণী বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহানারা আরজু।  জানা গেছে, প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা, দোকানপাট, পাড়া, মহল্লায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। এরই ধারাবাহিকতায় ছাগলনাইয়া উপজেলার পৌরশহরের ১, ২, ৩ ওয়ার্ডে নারী ভোটারদের সঙ্গে উঠান বৈঠক করেছেন নাসিমপত্নী। এ সময় ৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে আসতে নারীদের প্রতি জোড় আহ্বান জানান তিনি। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে পৌরশহরের ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর খোকন পাটোয়ারীর উদ্যোগে এ উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উঠান বৈঠকের মধ্য দিয়ে ডা. জাহানারা আরজু স্বামীর পক্ষে প্রতিদিনের মতো নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। বৈঠকে কয়েক হাজার নারী ভোটার অংশ নেন এবং আগামী ৭ জানুয়ারি নৌকায় ভোট দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। নৌকার পক্ষে তারা নাসিমপত্নীর সঙ্গে স্লোগান ধরেন। পরে সবার হাতে স্বামীর নির্বাচনী লিফলেট তুলে দেন ডা. জাহানারা আরজু। উঠান বৈঠকে আসা সুফিয়া বেগমের বাড়ি দক্ষিণ সতর গ্রামে। তিনি মূলত অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। প্রার্থীর সহধর্মিণীকে কাছে পেয়ে খুশি হন তিনি। তাদের জীবনমানের উন্নতির জন্য কিছু আবদারের কথাও জানান নাসিমপত্নীর কাছে। তার মতো অনেকেই নানা দাবির কথা তুলে ধরেন।  ডা. জাহানারা আরজু বলেন, এই আসনে নারীর ক্ষমতায়ন, নারীরা যেন তথ্যপ্রযুক্তিতে এগোতে পারে, সর্বোপরি মানুষের জীবনমান পরিবর্তনের জন্য নৌকার প্রার্থী কাজ করবেন। তিনি সব শ্রেণিপেশার মানুষকে ভালোবাসেন ও শ্রদ্ধা করেন। কারো মধ্যে কোনো ভেদাভেদ করেন না। উঠান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, এনসিসি ব্যাংকের কর্মকর্তা, জালাল চৌধুরী পাপ্পু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ নিজাম উদ্দিন মজুমদার, পৌর মেয়র এম মোস্তফা, ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
০২ জানুয়ারি, ২০২৪

জাতীয় নির্বাচন ও স্থিতিশীলতা বিষয়ে গোলটেবিল বৈঠক
জাতীয় নির্বাচন ও এর স্থিতিশীলতা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছে ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (আইসিএলডিএস)। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) লেকশোর হোটেলে আয়োজিত বৈঠকটির সঞ্চালনায় ছিলেন ড. ফারজানা মাহমুদ এবং নূর সাফা জুলহাস। গোলটেবিল বৈঠকে আমন্ত্রিত অতিথিরা জাতীয় নির্বাচন ও স্থিতিশীলতা বিষয়ে তাদের মূল্যায়ন তুলে ধরেন। আইসিএলডিএসের নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রশীদের সূচনা বক্তব্যের মধ্যদিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ডিবিসির সম্পাদক জায়েদুল আহসান পিন্টু বলেন, নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দল আসেনি। তাই ঘাটতি বাজেটের মতো কতটুকু ঘাটতি সেটা নিয়েই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে। সব দলের অংশগ্রহণ ও অবাধ নির্বাচন কামনা করেন তিনি। ৭১ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিনিয়র সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের তিনটি মানদণ্ডের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের পক্ষেই এই নির্বাচন হবে। দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, একেক জায়গায় স্থিতিশীলতার সংজ্ঞা একেক রকম। আমাদের স্থিতিশীলতা বলতে বোঝায় স্বাধীনতার পক্ষে সাম্প্রদায়িকতামুক্ত থাকবে সমাজ ও দেশ। বিএনপি আসলে হয়তো আবার গ্রেনেড হামলা দেখতে হতে পারে। এখন আমাদের দেশে ভোটার এমপাওয়ারমেন্ট হচ্ছে। পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় আইসিএলডিএসকে যুগোপযোগী আলোচনার ব্যবস্থা করে দেওয়ায় ধন্যবাদ দিয়ে শুরু করেন। নির্বাচন হবে আর শান্ত নদীর মতো থাকবে সেটা সম্ভব নয়। আমরা অসাম্প্রদায়িক ও শান্তি নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। মাইনরিটি যেন ভোটের ভয়ে না থাকে। ভোটারদের আনতে হবে কেন? তারা আসবেন, তাদের আনার ব্যবস্থা করতে হবে। আমি মনে করি তরুণ ভোটাররা এবারও আসবে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন বলেন, নির্বাচন হয়তো শতভাগ অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না। তবে একটা বড় অংশ নির্বাচনে আসছে, লড়াই করবে ভোটে। আগের তুলনায় বর্তমান নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত কর্মতৎপর। অপরদিকে ড. জিনাত হুদা জোর গলায় বলেন, ভোট বর্জন যারা করবে জনগণই তাদের বর্জন করবে। বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচব সম্ভব। দু’চারজনের মদদে নির্বাচন বাতিল হবে সেটা সম্ভব না। জনগণই চয়েজ করবে এবং আগুনসন্ত্রাস দিয়ে জনগণের মতামত ও ভোট আটকে রাখতে পারবে না। গোলটেবিল বৈঠকে আলোচকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা, সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল, আবু সাঈদ খান, নঈম নিজাম, ড. সাদেকা হালিম, ড. হাসান মাহমুদ খন্দকার, আশরাফ উদ্দিন চুন্নু, আবুল হোসেন চৌধুরী, সাবেক ক্রিকেটার রকিবুল হাসান, ফারুক ফয়সাল ও এয়ার কমোডর (অব.) ইশফাক এলাহী চৌধুরীসহ সমাজের বিশিষ্টজনরা।
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

এবার আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে শোকজ
নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী নজরুল ইসরাম বাবুর পক্ষে প্রচারে অংশ নেওয়ায় এবার আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সায়মা আফরোজকে শোকজ করা হয়েছে। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি ও সিনিয়র সহকারী জজ ধীমান চন্দ্র মণ্ডল তাকে শোকজ করেন। এর আগে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট চাওয়ায় চৌহালী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তলব করে অনুসন্ধান কমিটি। এছাড়া নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনে আরও ২ শতাধিক প্রার্থী ও সমর্থককে শোকজ, তলব ও মামলার আওতায় আনে নির্বাচন কমিশন। ডা. সায়মা আফরোজকে করা শোকজ নোটিশে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সচিত্র প্রতিবেদন সূত্রে নিম্ন স্বাক্ষরকারীর গোচরীভূত হয়েছে যে, আপনি বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী নজরুল ইসলাম ওরফে বাবুর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ করেছেন। আপনি বর্তমানে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) হিসেবে কর্মরত আছেন। স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা হয়েও আপনার নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৭৭(১)ঙ এবং ৮৬ অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক। আপনার উপর্যুক্ত কর্মকাণ্ডের জন্য আপনার বিরুদ্ধে উক্ত আইন ভঙ্গের দায়ে বিধি মোতাবেক পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্বাচন কমিশনের বরাবরে কেনো সুপারিশ করা হইবে না সে মর্মে ২৫/১২/২০২৩ খ্রি. দুপুর ১২টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনে স্বাক্ষরকারীর কার্যালয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়ে অথবা কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো। মাহিকে জুতাপেটার হুমকি দেওয়া যুবককে শোকজ এদিকে রাজশাহী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে জুতাপেটার হুমকি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করার ঘটনায় মাহাবুর রহমান মাহাম নামের এক যুবককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। মাহাম তনোরের তালন্দের কালনা পূর্বপাড়ার মৃত ছদের আলীর ছেলে। রোববার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ, ২য় আদালত এবং নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি আবু সাঈদের দেওয়া এ নোটিশে আগামী বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় সশরীর হাজির হয়ে মাহামকে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। এ ছাড়া ২১টি গরু জবাই দিয়ে ভোটারদের ভূরিভোজের ব্যাখ্যা দিতে সিলেট-৩ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমানকে তলব করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। তাকে রোববার বেলা ১১টায় অনুসন্ধান কমিটির সভাপতির কার্যালয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয় নোটিশে।
২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩

ঢাকা-৫ / স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টকে নৌকার সমর্থকের হত্যার হুমকির অভিযোগ
ঢাকা-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান রিপনের নির্বাচনী এজেন্ট মোহাম্মদ সুজন প্রধানকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারুনর রশীদ মুন্নার সমর্থক ও ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সালাউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় সুজন প্রধান ডেমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। জানা গেছে, ডেমরা থানাধীন রাজাখালীতে ঈগল মার্কার নির্বাচনী ক্যাম্প করতে নিষেধ করে ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সালাউদ্দিন আহমেদ। এরপরও কামরুল হাসান রিপনের সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচারণা ক্যাম্প করতে গেলে সুজন প্রধানকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান দেন সালাউদ্দিন আহমেদ। ডেমরা থানায় দায়ের করা অভিযোগনামায় সুজন প্রধান উল্লেখ করেন, গত ২১ ডিসেম্বর রাত ১০টার একটু পরে ৬৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সালাউদ্দিন আহাম্মেদ আমাকে কল করে ডেমরা থানাধীন রাজাখালী মসজিদ সংলগ্ন তার গরুর খামারে যেতে বলেন। তার কথামতো সেখানে গিয়ে দেখি তিনিসহ আরও কয়েকজন জুয়া খেলছেন। তখন সালাউদ্দিন আহমেদ আমাকে দেখে বলে তুই আমার সাথে ছাড়া আওয়াল ও রিপনের সাথে রাজনীতি করতে পারবি না। ঈগলের পক্ষে কোনো ধরনের ক্যাম্প দিবি না ও প্রচার করবি না। যদি দিস তাহালে তোর বুকে পাড়া দিয়া গলায় ছুরি চালাইয়া তোর মাথা আলাদা করে দিব। আমি যদি শুনি তুই ঈগল মার্কার পক্ষে কাজ করছিস তাহলে চাকু দিয়ে তোর ভুড়ি বের করে দেব। সুজন প্রধান আরও অভিযোগ করেন, এরপর সালাউদ্দিন আহমেদ আমার নিকট চাঁদা দাবি করেন এবং চাঁদা না দিলে আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। এমন হুমকিতে আমি এবং আমার পরিবার আতঙ্কিত আছি। এ বিষয়ে মোহাম্মদ সুজন প্রধান কালবেলাকে বলেন, এই ঘটনার পর চরম আতঙ্কে আছি। গভীর রাতেও বাসার নিচে কিছু ছেলেপেলেকে অবস্থান করতে দেখি। যে কারণে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। তবে, মামলার আবেদন জানালেও ওসি মো. জহিরুল ইসলাম মামলা নেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ওয়ার্ড কাউন্সিলর সালাউদ্দিন আহমেদ অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে কালবেলাকে বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী আমিও চাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হোক। সেখানে তাকে (সুজন প্রধান) হত্যার হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এ বিষয়ে ঢাকা-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান রিপন কালবেলাকে বলেন, যেখানে শেখ হাসিনা নিজে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন করতে দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন, সেখানে এভাবে হত্যার হুমকি নির্বাচনে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করবে। একই সাথে এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনা চ্যালেঞ্জ হতে পারে। দলের নেতাকর্মীদের শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন আয়োজনে সহযোগিতার আহ্বান জানাই। ডেমরা থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, তারা আগ থেকেই পরিচিত। নিজেদের মধ্যে একটু সমস্যা হয়েছিল সেটা গতকাল মিটমাট হয়ে গেছে। এখন আর সমস্যা নেই। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার কল ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও ঢাকা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারুনর রশীদ মুন্নাকে পাওয়া যায়নি।
২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

ভোটকেন্দ্র পাহারায় থাকবে ১৫-১৭ জন নিরাপত্তারক্ষী
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ১৫ থেকে ১৭ জন নিরাপত্তা রক্ষাকারী সদস্য নিয়োজিত থাকবে। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক-৬ পরিপত্রে এ কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে ১৩ দিনের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। এ সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্য বাহিনীগুলোও মাঠে থাকবে। পরিপত্র বলা হয়েছে, নির্বাচনের দিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্র ১৫ থেকে ১৭ জন নিরাপত্তা রক্ষাকারী সদস্য নিয়োজিত থাকবে। নির্বাচনকালীন পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আর্মড পুলিশ, আনসার ব্যাটালিয়ন ও কোস্টগার্ড এবং সশস্ত্র বাহিনী ভোটের আগে-পরে ১৩ দিনের জন্য মোতায়েন থাকবে। ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলাবাহিনী রক্ষাকারী বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনী মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া পুলিশ, আনসার-ভিডিপিসহ ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা রক্ষাকারী সদস্যরা পাঁচ দিনের জন্য মোতায়েন থাকবে। ভোটের আগের দুদিন থেকে তাদের মোতায়েন করা হবে। মেট্রোপলিটন এলাকার সাধারণ ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ তিনজন, অঙ্গীভূত আনসার ১২ জন থাকবে, আর গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ ও অঙ্গীভূত আনসার থাকবে ১২ জন। বিশেষ এলাকার ভোটকেন্দ্রে (পার্বত্য ও দুর্গম এলাকায়) অস্ত্রসহ পুলিশ ২ জন, অঙ্গীভূত আনসার ১২ জন থাকবে, আর গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ ও অঙ্গীভূত আনসার ১২ জন, গ্রাম পুলিশ থাকবে ২ জন। অন্যদিকে এসব এলাকার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ ৩ জন, অঙ্গীভূত আনসার ১২ জন আর গ্রাম পুলিশ থাকবে ২ জন। পরিপত্রে বলা হয়, ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভোটগ্রহণের আগের দুদিন, ভোটগ্রহণের দিন, ভোটগ্রহণের পরে একদিন এবং যাতায়াত ও অন্যান্য প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য একদিনসহ মোট পাঁচদিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে। গ্রাম পুলিশ-দফাদার বা মহল্লাদার প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রে একজন ক্ষেত্রবিশেষে দুজন করে পাঁচদিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে। তবে অঙ্গীভূত বা সাধারণ আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষণের জন্য একদিনসহ মোট ছয়দিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে। এতে আরও বলা হয়, পুলিশ কমিশনার বা পুলিশ সুপার স্থানীয়ভাবে গুরুত্ব বিবেচনায় রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োজন অনুসারে ভোটকেন্দ্রে পুলিশ এবং আনসার ও ভিডিপির সদস্য সংখ্যা কম-বেশি করতে পারবেন। যতদূর সম্ভব নারী ভোটকেন্দ্রে দক্ষ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নারী অঙ্গীভূত আনসার ও পুরুষ ভোটকেন্দ্রে পুরুষ অঙ্গীভূত আনসার নিয়োগ করতে হবে। পরিপত্রে বলা হয়, নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, র‍্যাব, পুলিশ, আর্মড পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়ন নিয়োগ করা হবে। আনসার ব্যাটালিয়ন সহযোগী ফোর্স হিসেবে পুলিশের সঙ্গে মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করবে। বাহিনীসমূহ আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১৩ দিন নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া বিজিবি বা আর্মড পুলিশ অথবা আনসার ব্যাটালিয়ন জেলা বা উপজেলা বা থানাসমূহে এবং কোস্ট গার্ড উপকূলীয় এলাকাসমূহে দায়িত্ব পালন করবে। আনসার ব্যাটালিয়ন সেকশন ফরমেশন অনুযায়ী সহযোগী ফোর্স হিসেবে পুলিশের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মোতায়েনকৃত আইনশৃঙ্খলাসহ সব বাহিনী রিটার্নিং অফিসারের কাছে রিপোর্ট করবে এবং রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্ত ও পরামর্শক্রমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবে বলে পরিপত্রে জানানো হয়েছে।
২২ ডিসেম্বর, ২০২৩
X