কিছু লোকের দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির চেষ্টা আছে
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পটভূমি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের খুব তিক্ত অভিজ্ঞতা ১৯৭৪ সালে। নগদ টাকা দিয়ে কেনা খাদ্য আসতে দেয়নি। কৃত্রিমভাবে একটা দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেভাবে হোক মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা। সেটাও যখন সফল হয়নি তখনই ১৫ আগস্ট ঘটাল। এখনো কিছু লোকের কিন্তু সেই চেষ্টাই আছে। গতকাল শনিবার গণভবনে আষাঢ় মাসের প্রথম দিনে কৃষক লীগের তিন মাসব্যাপী বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। বৃক্ষ রোপণ অভিযানে অবদানের জন্য কৃষক লীগের কয়েকজন নেতাকে পুরস্কৃতও করেন তিনি। অধিক পরিমাণে গাছ লাগিয়ে সবুজ বাংলাদেশ গড়তে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, গাছ আমাদের প্রাণ, এটি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেন দেয়। কাজেই যতবেশি বৃক্ষ লাগাতে পারবেন—এটি আপনাকে ফল দেবে, খাদ্য দেবে আবার অর্থ উপার্জনের পথও সুগম করবে। শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্য মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় চাহিদা। তাই এই খাদ্যের জন্য কারও কাছে যেন হাত পাততে না হয়। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ুর অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। যদিও জলবায়ুর ক্ষতি সাধনে বাংলাদেশের কোনো ভূমিকা নেই; কিন্তু বাংলাদেশ এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত। সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই দক্ষিণাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি উন্নয়নের কর্মসূচি নিয়ে আমরা ওই অঞ্চলের মানুষকে সুরক্ষিত করেছি এবং এটা আরও সুন্দরভাবে আমাদের করতে হবে। প্রত্যেককে একটি করে ফলদ, বনজ ও ওষুধি গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এভাবে দেশকে যদি সবসময় সবুজ করে রাখতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না। একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে, ফসলি জমি যেন নষ্ট না হয়। তিনি বলেন, বহুতল ভবন আর উন্নয়নের নামে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে শুরু করে গুলশান-বনানী এলাকায় অতীতে যেসব বড় বড় গাছ ছিল সেগুলো সবই উজাড় হয়েছে। এখন অবশ্য ছাদ বাগান হচ্ছে, সবাই এদিকে ঝুঁকছে। এতে বাড়িটাও ঠান্ডা থাকবে, তেমনি নিজের হাতে বাগান করে গাছের তরিতরকারি খাওয়ার স্বাদই আলাদা। অতীতের সরকারগুলোর নির্বিচারে গাছ কাটার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ছোটবেলায় দেখেছি এয়ারপোর্ট থেকে বাংলা একাডেমি হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আইল্যান্ডে থাকা কৃষ্ণচূড়া গাছে যখন ফুল ফুটতো তখন অপরূপ রূপে এই শহরটা জেগে উঠত। জিয়াউর রহমান এক এক করে সব গাছ কেটে ফেলেন। তিনি আরও বলেন, বিএনপি শুধু ক্ষমতায় থাকাকালেই নয়, বিরোধী দলে থাকাকালেও আন্দোলনের নামে গাছ কেটেছে। বিএনপি-জামায়াত ২০১৩ সালে কেবল আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়নি, আন্দোলনের নামে হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলেছিল। বৃক্ষ নিধন করাই বিএনপির চরিত্র। জাতির পিতার সবুজ বিপ্লবের ডাক, কক্সবাজারসহ উপকূলীয় অঞ্চলে বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে পরিবেশ-প্রতিবেশকে রক্ষার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে পরিবেশ রক্ষায় আওয়ামী লীগ ১৯৮৪ সাল থেকে গাছ লাগানোর কর্মসূচি হাতে নেয়। যখন দেশে সংসদও ছিল না। এমনকি সমগ্র বিশ্বেও এভাবে পরিবেশের কথা আসেনি। বিএনপির চিন্তার দৈন্যতার একটি উদাহারণ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, বিদেশি সহায়তা আসবে না বলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া এই দলটি ভালোভাবে নেয়নি। বিএনপি টিসিবিও বন্ধ করে দিয়েছিল। এখন আমরা আবারও কার্যকর করছি। দুর্যোগকালীন কৃষকরা যেন উদ্বৃত্ত ফসল সংরক্ষণ করতে পারেন, সেজন্য সাইলো নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। গণতন্ত্রের কথা বিএনপির মুখে মানায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের ভোট চুরি করে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ এ বিষয়ে খুব সচেতন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন তার প্রমাণ। জনগণের আন্দোলনের মুখে খালেদা জিয়াকে ৩০ মার্চ পদত্যাগ করে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়। ভোট চুরির অপরাধেই তাকে ক্ষতাচ্যুত করা হয়। গতকাল কর্মসূচি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু।
১৬ জুন, ২০২৪

দেশে দুর্ভিক্ষ সম্প্রসারিত হচ্ছে : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অবৈধ সরকারের লুটপাটের অর্থনীতির কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ ক্রমসম্প্রসারিত হচ্ছে। বাকস্বাধীনতা প্রয়োগের জন্য অনেক মানুষকে জুলুম ভোগ করতে হচ্ছে। সভা-সমাবেশ-মিছিল করার অধিকার আওয়ামী লীগ এখন এককভাবে ভোগ করছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য হচ্ছে ক্ষমতায় এসেই গণতন্ত্রের লাশ ফেলে দেওয়া। অত্যাচার, লুটতরাজ সর্বক্ষেত্রেই বিদ্যমান। এরা ক্ষমতাসীন হয়ে রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা ও গায়েবি মামলা, হামলা, জেল, জুলুম ও দুঃশাসন চালিয়ে আসছে। রোববার (৭ এপ্রিল) দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।  রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের মূল নীতিকে সমাধিস্থ করে এক সর্বগ্রাসী অত্যাচারী রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের মনে ঈদের কোনো আনন্দ নেই। বিশেষ করে মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য এবারের ঈদ সবচেয়ে নিরানন্দ ও বেদনাদায়ক। তিনি বলেন, জবরদস্তিমূলক ক্ষমতা ধরে রেখে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী গত প্রায় ১৬ বছরে দেড় লাখের বেশি হয়রানিমূলক মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানসহ প্রায় ৫০ লাখের অধিক নেতাকর্মীকে আসামি করেছে। রাজনৈতিক আচরণের রীতি ও শালীনতাকে উপেক্ষা করে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে সাবেক চারবারের প্রধানমন্ত্রীকে আদালতের মাধ্যমে সাজা দিয়েছে, এখনো তিনি মুক্ত নন।  বিএনপির এই নেতা বলেন, ডামি নির্বাচনের পর অনেককে জামিন দিলেও আবারও নতুন নতুন মামলায় কারাগারে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত কেউই এই গায়েবি মামলা ও সরকারি নির্যাতন—নিপীড়ন থেকে রেহাই পায়নি।  এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. শাহিদা রফিক, তাহসিনা রুশদির লোনা, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, সহ দফতর মো. মুনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ।
০৭ এপ্রিল, ২০২৪

গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণায় দেরি হয়ে যাচ্ছে : জাতিসংঘ ত্রাণ প্রধান
গাজায় ত্রাণ অব্যাহত রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির ত্রাণ কার্যক্রমের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস জানিয়েছেন, গাজায় গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করতে অনেক দেরি হয়ে গেছে। শনিবার (২৩ মার্চ) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস গাজার দুর্ভিক্ষের বিষয়টি উল্লেখ করে ত্রাণ কার্যক্রম জোরদারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে ত্রাণ কার্যক্রমের প্রধান বলেছেন, অবরুদ্ধ এ উপত্যাকায় দুর্ভিক্ষ আসন্ন।  তিনি বলেন, আমরা জানি যে যখন দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হবে তখন এটি অনেক দেরি হয়ে যাবে। আমরা এটাও জানি যে সদিচ্ছা ও পদক্ষেপের মাধ্যমে এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সম্ভব।  মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, আমাদের অবশ্যই গাজায় খাদ্য ও অন্যান্য জীবনরক্ষাকারী সহায়তা বাড়াতে হবে। এখন নষ্ট করার মতো সময় নেই। আমি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে মানবিক ত্রাণের নিরবচ্ছিন্ন প্রবেশাধিকারের জন্য পুনরায় আহ্বান জানাচ্ছি।  এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা চালালে ইসরায়েল বিশ্ব থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। শুক্রবার (২২ মার্চ) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছেন তিনি। ব্লিঙ্কেন বলেন, হামাসকে পরাজিত করার জন্য ইসরায়েলের লক্ষ্যের সঙ্গে আমরা আছি। তবে তা অর্জনের উপায় রাফায় বড় ধরনের সামরিক স্থল অভিযান হতে পারে না। তিনি বলেন, এতে আরও বেসামরিক মানুষ মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়বেন। মানবিক ত্রাণসহায়তা বিতরণে বড় ধরনের বাধা তৈরির ঝুঁকি দেখা দেবে। এই হামলা চালালে বিশ্বজুড়ে ইসরায়েল আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এর দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা ও অবস্থান হুমকির মুখে পড়বে।
২৩ মার্চ, ২০২৪

দেশে আংশিক দুর্ভিক্ষ চলছে
দেশে আংশিকভাবে দুর্ভিক্ষ চলছে মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের বলেছেন, সরকারি হিসাবেই দেশের প্রায় ২৬ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ বিশাল অংশ ধার করে খাবার কিনছে। খাদ্যদ্রব্য তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ১ থেকে দেড় কোটি পরিবার বা ৪ কোটি মানুষ এমন বাস্তবতা মোকাবিলা করছে। গতকাল বুধবার জাপা চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে দলটির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের বেশিরভাগ মানুষ অর্থ কষ্টে আছে। সরকার যদি না বোঝে দেশের মানুষ কষ্টে আছে, তাহলে সমাধান হবে কীভাবে? জাতীয় পার্টি যখন দেশ পরিচালনা করেছে, তখন বিরোধীদের ওপর কোনো অন্যায় হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে আদালতে গেলে সবাই ন্যায়বিচার পেয়েছেন। এরশাদ কখনোই দলীয়করণ করেননি, তাই তার কোনো গোষ্ঠী সৃষ্টি হয়নি। বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও দলের মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, যারা বলছেন, জাতীয় পার্টি ভেঙে যাচ্ছে, তারা ভুল বলছেন। জাতীয় পার্টি ভেঙে যাচ্ছে না। এর আগে সকালে মহাসচিবের নেতৃত্বে কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে এদিন রওশন অংশও এরশাদের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।
২১ মার্চ, ২০২৪

দেশে আংশিকভাবে দুর্ভিক্ষ চলছে : জি এম কাদের 
‘দেশে আংশিকভাবে দুর্ভিক্ষ চলছে’ এমন মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলের নেতা জি এম কাদের বলেছেন, সরকারি হিসাবেই দেশের প্রায় ২৬ ভাগ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই বিশাল অংশ ধার করে খাবার ক্রয় করছে। খাদ্যদ্রব্য তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ১ থেকে দেড় কোটি পরিবার বা ৪ কোটি মানুষ এমন বাস্তবতায় মোকাবিলা করছে। যারা পরিবারভুক্ত নয় তারা এই হিসাবের বাইরে। তারা বছরে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা ঋণ করছে খাবার কিনতে। বুধবার (২০ মার্চ) জাপা চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সরকারই স্বীকার করছে প্রায় ৪ কোটি মানুষের খাদ্যক্রয় ক্ষমতা নেই একথা উল্লেখ করে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশ এখন আংশিকভাবে দুর্ভিক্ষ আক্রান্ত। যারা ধার পরিশোধ করতে পারে, তাদেরই মানুষ ধার দেয়। প্রায় চার কোটি মানুষ খাদ্য কিনতে ধার করছে কিন্তু হতদরিদ্ররা তো কারও কাছে ধার পায় না, তারা কী তিন বেলা খেতে পাচ্ছে? যারা কারও কাছে ধার পায় না, এমন অন্তত আরও ১০ কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, অথচ সরকার বলে বেড়ায়- দেশে নাকি রুগণ মানুষ দেখা যায় না। এটা কী সত্য কথা? আমাদের বেশির ভাগ মানুষ অর্থ কষ্টে আছে। সরকার যদি না বোঝে দেশের মানুষ কষ্টে আছে, তাহলে সমাধান হবে কীভাবে? মানুষ যখন মোটেও খাদ্য কিনতে পারবে না, না খেয়ে মারা যাবে- সে অবস্থা এখনো আসেনি। তবে, সে দিকেই তো দেশ যাচ্ছে। জাতীয় পার্টি যখন দেশ পরিচালনা করেছে তখন বিরোধীদের ওপর কোনো অন্যায় হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে আদালতে গেলেই সবাই ন্যায় বিচার পেয়েছে। তাই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাজনীতিতে শক্তিশালী হয়ে আমাদের দল নষ্ট করতে চেষ্টা করছে। এরশাদ কখনোই দলীয়করণ করেননি, তাই তার কোনো গোষ্ঠী সৃষ্টি হয়নি। কাদের বলেন, কোনো দল তাদের নীতি আদর্শ নিয়ে রাজনীতিতে টিকতে না পারলে সামনের দিকে অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। অস্বাভাবিক রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তাই স্বাভাবিক রাজনীতি চলতে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। বিরোধীদলকে কাজ করতে দেওয়া সরকারেরই দায়িত্ব। এসময় বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, যারা বলছেন, জাতীয় পার্টি ভেঙে যাচ্ছে- তারা ভুল বলছেন। জাতীয় পার্টি ভেঙে যাচ্ছে না। রাজনীতি হচ্ছে একটি চলন্ত ট্রেনের মতো। চলার পথে কেউ নেমে যাবে আবার কেউ নতুন করে উঠবে, এভাবেই রাজনীতি চলছে। আমরা গুটি কয়েক লোক চলে গেলেও জাতীয় পার্টির ক্ষতি হবে না। এর আগে, সকালে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে কাকরাইলস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে রওশন অংশও এরশাদের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
২০ মার্চ, ২০২৪

দুর্ভিক্ষ থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে গাজার ৬ লাখ মানুষ : জাতিসংঘ
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ত্রাণসহায়তা প্রবেশে পরিকল্পিতভাবে বাধা দিয়ে আসছে ইসরায়েল। এই কারণে সেখানে ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি এতই ভয়াবহ, গাজার মোট জনসংখ্যার অন্তত এক-চতুর্থাংশ অর্থাৎ প্রায় ছয় লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষ থেকে এক ধাপ দূরে রয়েছেন। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থার (ওসিএইচএ) উপপ্রধান রমেশ রাজাসিংহাম বলেছেন, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে এসে গাজায় অন্তত ৫ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষ থেকে এক ধাপ দূরে অবস্থান করছেন। মঙ্গলবার গাজায় খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানে রমেশ আরও বলেন, উত্তর গাজায় দুই বছরের কম বয়সী ছয়জনের মধ্যে একজন শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। কার্যত ফিলিস্তিনি এই উপত্যকার ২৩ লাখ মানুষ দুঃখজনকভাবে অপর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছেন। তিনি বলেন, যদি কিছু করা না হয় তাহলে আমরা আশঙ্কা করি গাজায় ব্যাপক দুর্ভিক্ষ প্রায় অনিবার্য। সংঘাতে আরও অনেক মানুষ হতাহত হবে। অন্যদিকে জেনেভায় ওসিএইচএর আরেক মুখপাত্র জেনস লায়েরকে সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের কারণে গাজায় ত্রাণসহায়তা সরবরাহ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ত্রাণবাহী গাড়ি বহর হামলার শিকার হচ্ছে। ইসরায়েলি সেনারা পরিকল্পিতভাবে যাদের ত্রাণসহায়তা প্রয়োজন তাদের কাছে সেগুলো পাঠাতে বাধা দিচ্ছে। মানবিক কর্মীদের হয়রানি, ভয়-ভীতি ও আটক করছে ইসরায়েলি বাহিনী।
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

জন্মদিন / তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষ ও জয়নুল আবেদিনের অনন্য চিত্রমালা
আজ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১১০তম জন্মদিন। এ বছর বাংলার ’৪৩ (১৯৪৩)-এর দুর্ভিক্ষের ৮০তম বর্ষ শেষ। একই সঙ্গে জয়নুল আবেদিনের তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষ চিত্রমালারও ৮০তম বর্ষপূতি। উপমহাদেশ তথা বিশ্ব চিত্রমালার এক অক্ষয় শিল্পকর্ম এ চিত্রমালা। তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষ ও জয়নুলের দুর্ভিক্ষ চিত্রমালার ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের পুণ্যস্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। দশেক তিনেক আগে নেদারল্যান্ডসের এক খ্যাতনামা প্রকাশনা সংস্থা থেকে ভূগোলবিদ ব্রুস কারি ও গ্রেইম হুগোর সম্পাদনায় Famine: A Geographical Phenomenon নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ বই প্রকাশিত হয়। এ বইয়ের একটি প্রবন্ধে জয়নুল আবেদিনের ‘৪৩-এর দুর্ভিক্ষের চিত্রমালার দুটো চিত্র ব্যবহার করা হয়েছে দুর্ভিক্ষেরই প্রতীক হিসেবে। আর কোনো শিল্পীর আঁকা ছবির কোনো প্রতিলিপি বইটিতে ব্যবহৃত হয়নি। আলোকচিত্র আছে অবশ্য বেশ কিছু। আবার ১৯৯৩ সালে দেখা গেছে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘Global Forum on Environment and Poverty’ শীর্ষক এক বিরাট আন্তর্জাতিক ওয়ার্কশপের পোস্টারে ব্যবহার করা হয়েছে জয়নুল আবেদিনের তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষের একটি ছবি। এভাবে জয়নুলের দুর্ভিক্ষের ছবি সারা বিশ্বেই যেন দুর্ভিক্ষের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। বাংলার দুর্ভিক্ষ অবশ্যই কোনো সুখস্মৃতি নয়। কিন্তু সেই মর্মান্তিক পরিস্থিতিই যে তখনকার এক অত্যন্ত সংবেদনশীল তরুণ শিল্পীকে চিরন্তন শিল্প সৃষ্টিতে বাধ্য করেছিল, এক অনাকাঙ্ক্ষিত বিবেচনায় আজ মনে হয়, সে ছিল আমাদের জন্য এক পরম ভাগ্য। বাংলার বাইরেও পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময়ে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। এখনো বিশ্বের কোথাও না কোথাও দুর্ভিক্ষ চলছে। দুর্ভিক্ষ নিয়ে নানা ধরনের শিল্পকর্ম হয়েছে, তবে চিত্রকলায় জয়নুলই অনন্য। ’৪৩-এর দুর্ভিক্ষের রূঢ় বাস্তবতা তিনি তার ছবিতে এমনভাবে কাজে লাগিয়েছেন যে, তা সব দুর্ভিক্ষে এখন প্রতীক হয়ে গেছে যেন। অসংখ্য ছবি তিনি এঁকেছেন বাংলার দুর্ভিক্ষের। তার মধ্যে প্রায় ২৫টির মতো শেষ পর্যন্ত সংরক্ষিত হয়েছে। ১৯৪৪ সালে কলকাতায় আয়োজিত এক প্রদর্শনীতে জয়নুলের দুর্ভিক্ষের চিত্রমালা দেখে সরোজিনী নাইডু রীতিমতো অভিভূত হয়েছিলেন। তৎকালীন স্বনামধন্য শিল্প-সমালোচক ও.সি. গাঙ্গুলী লিখেছেন, ‘আবেদিনের ছবিগুলো অমূল্য সম্পদ।’ পরবর্তীকালে ব্রিটিশ সমালোচক স্যার এরিখ নিউটন আবেদিনের এসব ছবিকে চিহ্নিত করেছেন ‘অত্যন্ত চমৎকার ড্রইং’ বলে। এগুলোর নান্দনিকতার বিচার করে তিনি লিখেছেন, ‘এসব ড্রইংয়ের মধ্যে প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের অভাবনীয় সমন্বয় পাওয়া যায়।’ আজ ঠিক ৮০ বছর পর জয়নুলের সেসব দুর্ভিক্ষের ড্রইং দেখে একই ধরনের অনুভূতি জাগে, একইভাবে আন্দোলিত করে দর্শকের মন। অথচ ছবিগুলো পরিমাপে ছোটই। নেহাতই ড্রইং। একটি মাত্র রঙে (কালো), সাদামাটা কাগজে তুলির টানে আঁকা। পরিস্থিতির তীব্রতা নিজের মধ্যে পুরোপুরি অনুভব না করে এরকম শিল্প সৃষ্টি হয়তো সম্ভব হতো না। যেমন বিষয়ের সুপরিকল্পনা, সংক্ষেপকরণ, তেমনি কম্পোজিশনের সুষমতা ও রেখার অসাধারণ শক্তি। এসব ছবি সহজেই কার্টুন হয়ে যেতে পারত, কিন্তু জয়নুলের আশ্চর্য হাতে এগুলো উন্নীত হয়েছে উচ্চমার্গের চিত্রকলায়। এরকম শৈল্পিক উৎকর্ষের পাশাপাশি জয়নুলের দুর্ভিক্ষের ছবির সামাজিক-রাজনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। এ শিল্পকর্ম তার ব্যক্তিগত আদর্শগত বিশ্বাসের পরিচয় বহন করে নিশ্চয়ই। তার এই চিত্রকলা তৎকালীন ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে এক দুর্দান্ত প্রতিবাদ। ’৪৩-এর দুর্ভিক্ষ ছিল মূলত মানুষেরই সৃষ্টি। জয়নুলের দুর্ভিক্ষ চিত্রমালা ঔপনিবেশিক শোষণ এবং মানুষে মানুষে দুস্তর দূরত্বের প্রতি স্পষ্ট ইঙ্গিত। আজকের নারীবাদী গবেষক সহজেই আবার জয়নুলের ছবিতে আবিষ্কার করেন, মানুষের চরম দুঃসময়ে মাতৃজাতির দায়িত্ববোধ এবং শিশুর অসহায়ত্বের বাস্তবতা। দুর্ভিক্ষ চিত্রমালার অধিকাংশ ছবিতে পিতা-পুরুষটি অনুপস্থিত, বরং মা একাই পড়ে থাকে শিশুকে নিয়ে, তার মুখে অন্ন তুলে দেয়, তিনিও এ মা। জয়নুলের ‘ম্যাডোনা’ তার শিশু সন্তানকে বাঁচিয়ে রেখে নিজে ঢলে পড়েছে অস্তিম নিদ্রায়। অন্যদিকে একটি ছবিতে আমরা পুরুষকে দেখি একা উচ্ছিষ্ট চেটে জীবন বাঁচাবার চেষ্টা করছে, আশপাশে কান শিশু নেই। অথচ আরেকটি ছবিতে বড় বোনটি ছোট্ট ভাইকে খেতে দিচ্ছে। তার খাবার ক্ষুধার যন্ত্রণাতেও কেড়ে নিচ্ছে না। মেয়ে বলেই কি তার এই সহনশীলতা? এভাবে কি বিষয় বিশ্লেষণে, কি নান্দনিক বিচারে, জয়নুল আবেদিনের তেতাল্লিশের চিত্রমালা বিশ্ব-চিত্রকলা ভান্ডারে এক অমূল্য সম্পদ, সন্দেহ নেই।
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

দুর্ভিক্ষ ঘটানোর পরিকল্পনায় বিএনপি
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী মার্চ মাসের মধ্যে দেশের এমন একটি অবস্থা করবে, যাতে দুর্ভিক্ষ হয়। এটি হচ্ছে বিএনপির পরিকল্পনা। শুধু দেশের নয়, বাইরের দেশেরও পরিকল্পনা আছে। যেভাবেই হোক দুর্ভিক্ষ ঘটাতে হবে। গতকাল শুক্রবার গোপালগঞ্জ সফরে গিয়ে নিজ নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়ায় দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল ১০টার দিকে কোটালীপাড়া পৌঁছে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে সেখান থেকে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় ফিরে যান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সামনে নির্বাচন। বিএনপি চিন্তা করেছিল নির্বাচন হবে না। এখন নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে। একসময় বলেছিল, নির্বাচন হতে দেবে না। উসকানি আছে নির্বাচন ঠেকাও। নির্বাচনের শিডিউল হয়ে গেছে। এখন তারা মনে করছে নির্বাচন হয়েই যাবে। তাই তারা মার্চের দিকে দেশে দুর্ভিক্ষ ঘটাবে। নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তারা (বিএনপি) কে, যে ভোটারদের অধিকার কেড়ে নেবে। ভোটারদের অধিকার কাড়ার ক্ষমতা তাদের নেই। নির্বাচনে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। যারা আগুন দিতে যাবে, তাদের ধরে পুলিশে সোপর্দ করতে হবে। প্রত্যন্ত এলাকায় সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। যদি আগুন সন্ত্রাসী বেশি হয়, তাহলে তাদের আগুনেই ফেলে দিতে হবে। কোটালীপাড়াবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বাবা-মা, ভাইবোন সবাইকে হারিয়েছি। আপনাদের ভালোবাসা, আস্থা, বিশ্বাস সবচেয়ে বড় পাওয়া। যাদের নমিনেশন দিয়েছি তারা আসন পায় একটি। আমার ৩০০ আসনের দায়িত্ব। তাই আমি বলতে পারি আমার মতো সৌভাগ্য কারও নেই। আমার মতো এলাকা নিয়ে ভাবতে হয় না, চিন্তাও করতে হয় না তাদের। আমি জানি না আর কোনো প্রার্থী সৌভাগ্যবান কি না, যতটা আমি। একটা দায়মুক্ত করে রেখেছেন। আমি স্বাধীনভাবে সারা দেশের মানুষের জন্য চিন্তা করতে পারি, কাজ করতে পারি, যার সুফল সবাই পায়। বিএনপিকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, এখনো যারা জ্বালাও-পোড়াও করছে, তাদের শিক্ষাটা বোধহয় ইসরায়েলের কাছ থেকে পাওয়া, যারা ফিলিস্তিনের ওপর আক্রমণ করছে। নিজেরাই ক্ষমতায় থেকে সমানে অর্থ কামিয়েছে। অর্থ-সম্পদের পাহাড় গড়েছে। কিন্তু তারা মানুষকে কোনোদিন শান্তিতে থাকতে দেবে না। এটিই তাদের চরিত্র। শেখ হাসিনা আরও বলেন, এখন তারা নির্বাচন করবে না। ২০১৪ সালে একই কথা বলেছিল। আসলে তারা নির্বাচন করবে কীভাবে। বাস্তব কথাটা কী? বাস্তব হলো ২০০৮ সালের নির্বাচন। এ নির্বাচন নিয়ে তো কেউ কোনো প্রশ্ন তোলে না। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছিল। মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খোন্দকার, পরিবারের সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ও শেখ সারহান নাসের তন্ময় উপস্থিত ছিলেন।
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

যেভাবেই হোক তারা দুর্ভিক্ষ ঘটাবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি চিন্তা করেছিল নির্বাচন হবে না। নির্বাচনের শিডিউল হয়ে গেছে। এখন তারা মনে করছে নির্বাচন হয়েই যাবে। তাই তারা মার্চ মাসের দিকে দেশের এমন অবস্থা করবে, দুর্ভিক্ষ ঘটাবে। এটা হচ্ছে তাদের পরবর্তী পরিকল্পনা। এটা শুধু দেশের নয়, বাইরের দেশেরও পরিকল্পনা আছে, যেভাবেই হোক দুর্ভিক্ষ ঘটাতে হবে। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) নিজ নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। যারা আগুন দিতে যাবে, তাদের ধরে পুলিশের সোপর্দ করতে হবে। প্রত্যন্ত এলাকায় সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। যদি আগুনসন্ত্রাসী বেশি হয়, তাহলে তাদের আগুনেই ফেলে দিতে হবে। তিনি বলেন, আমি মা-বাবা, ভাই-বোন সবাইকে হারিয়েছি। আপনাদের ভালোবাসা, আপনাদের আস্থা, বিশ্বাস সবচেয়ে বড় পাওয়া। যাদের নমিনেশন দিয়েছি তারা আসন পায় একটি। আমার হলো ৩০০ আসনের দায়িত্ব। তাই আমি বলতে পারি, আমার মতো সৌভাগ্য কারও নেই। আমার এলাকা নিয়ে ভাবতে হয় না, চিন্তাও করতে হয় না- যেটা আপনারা করেন। আমি জানি না আর কোনো প্রার্থী সৌভাগ্যবান কিনা, যতটা আমি। একটা দায়মুক্ত করে রেখেছেন। আমি স্বাধীনভাবে সারা বাংলাদেশের মানুষের জন্য চিন্তা করতে পারি, কাজ করতে পারি যার সুফলটা সবাই পায়। শুক্রবারের সভায় আগামী নির্বাচন নিয়ে নানা দিকনির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খোন্দকার, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এমপি, শেখ সারহান নাসের তন্ময় এমপিসহ কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এর আগে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ১০টার দিকে টুঙ্গিপাড়া থেকে কোটালীপাড়ায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর সেখান থেকে ফিরে যান টুঙ্গিপাড়ায়।
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

রাজনীতিতে ভালো মানুষ কোণঠাসা, চলছে নীতির দুর্ভিক্ষ
‘রাজনীতিতে ভালো মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে’ বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর (শনিবার) কালবেলার ফেসবুক পেজে (Kalbela Online) পাঠকের মতামত জানতে চাওয়া হয়। সেখান থেকে বাছাইকৃত ২০টি মতামত প্রকাশ করা হলো। ‘খারাপ টাকা ভালো টাকাকে বাজার থেকে হটিয়ে দেয়’- ইংরেজ অর্থনীতিবিদ স্যার টমাস গ্রেশামের এ বিধিকে বর্তমান দেশের রাজনীতির সঙ্গে মিলিয়ে মন্তব্য করেছেন পাঠকরা। তারা বলতে চেয়েছেন, রাজনীতিতে ভালো মানুষ রয়েছেন। তারা নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ারও চেষ্টা করেন। কিন্তু রাজনীতিতে স্বার্থবাদী, সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী, দুর্নীতিবাজরা আধিপত্য বিস্তার করেছেন। তাদের ভিড়ে ‘ভালো মানুষ’ হারিয়ে যাচ্ছেন। নতুন করে নিঃস্বার্থ মানুষ রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছেন না। আবার এ সুযোগটিও নিচ্ছেন সুযোগ সন্ধানীরা। আলী আকবর সাগর লেখেন, ‘আমাদের দেশে এমনকি বিশ্ব রাজনীতিতে গ্রেশামের মুদ্রানীতি যেন একাকার হয়ে মিশে গেছে। যাকে অনেকটা এভাবেই ব্যাখ্যা করা যায়, খারাপ মানুষ ভালো মানুষকে রাজনীতি থেকে কোনো নোটিশ ছাড়াই বিতাড়িত করে। যেভাবে খারাপ মুদ্রা ভালো মুদ্রাকে বাজার থেকে বিতাড়িত করে। কালের ক্রমধারায় কিছু স্বার্থপর রাজনীতিবিদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ধীরে ধীরে আজ রাজনীতিতে খারাপ বা অসৎ লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাদের দাপটের কারণে সৎ, নীতিবান, ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ও মেধাবী রাজনীতিবিদরা বিবেকের দ্বারা তাড়িত হয়ে বা মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে কোনো পূর্ব নোটিশ ছাড়াই নিজেদের অজান্তেই রাজনীতির ময়দান ছেড়ে দিয়ে আজ ঘরমুখো হয়ে আছেন।’ ইয়াসিন সোহাগ লেখেন, ‘রাজনীতিতে ভালো মানুষ কমে যাচ্ছে। এ জন্য বর্তমান সময়ের রাজনীতিবিদরাই দায়ী। বর্তমান রাজনীতিবিদদের বক্তব্যের ভাষার কারণে অনেক তরুণ প্রজন্ম রাজনীতি বিমুখ হয়ে গেছে। বর্তমান রাজনীতির ব্যবহৃত ভাষা অত্যন্ত নিম্নমানের। যেমন : ‘খেলা হবে, আসুন কবে খেলবেন, খেলার জন্য প্রস্তুত হন, খেলার জন্য অমুককে পাঠাব তমুককে পাঠাব’। রাজনীতি সুবিধাভোগীদের হাতে চলে গেছে বলে মনে করেন জেএম সফিক। তিনি লেখেন, ‘সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীদের হাতে রাজনীতি তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই তো তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন, ‘রাজনীতি আর রাজনীতিবিদের হাতে নাই’। কেন বললেন তিনি এই কথা! কারণ, সরকারি দল পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভর করে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পুলিশ এবং টাকা কামাতে, পাচার করতে ব্যবসায়ীদের প্রয়োজন। রবিন আল হাসান লেখেন, ‘বর্তমানে যারা রাজনীতি করছেন, তারা দেশের স্বার্থের জন্য নয় বরং নিজেদের স্বার্থে করছেন। তাদের দেশপ্রেম নেই। তাদের জন্য রাজনীতিতে ভালো মানুষের জায়গা হচ্ছে না। পাঠকরা ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। সে সঙ্গে ভালো মানুষের সংখ্যা কমার কারণও নিজেদের মতো ব্যাখ্যা করেন। পাঠকরা লেখেন, মাহমুদুল হাসান : বেশ ভালো একটি মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গত প্রায় দেড় দশক ধরে জনসাধারণের ওপর বিশেষ করে যারা বিরোধী রাজনীতি করে তাদের ওপর যে নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়েছে, সেটিতো তিনি সরাসরিই দেখেছেন। এর আগে বিএনপির আমলে যে দমনপীড়ন চালিয়েছে সেটিও মানুষ ভুলেনি। বলা চলে যখন যে দল সরকারে থাকে সে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে বিরোধী মতকে একেবারে নিঃশেষ করে দিতে চায়। এমতাবস্থায় শুধু সুবিধাভোগী, টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ ও ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা ছাড়া খুব কম মানুষই রাজনীতির সঙ্গে থাকতে চান। এ ছাড়া রাজনীতির বাণিজ্যকরণ ঘটেছে। এখন দেখা যায়, তৃণমূল থেকে উঠে আসা কোনো রাজনীতিবিদ বা ছাত্র রাজনীতি করে আসা কোনো ব্যাক্তি পরবর্তীতে সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন পান না। বরং ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, শীর্ষ সন্ত্রাসী ও শীর্ষ টেন্ডারবাজের কাছে চলে যায় মনোনয়ন। কিছু ক্ষেত্রে আবার দেখা যায় সাবেক আমলারাও প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হচ্ছেন। আরেকটি দিকে লক্ষ্য করলে দেখবেন, ক্ষমতার দ্বন্দ্বে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের মধ্যেই রক্তারক্তি করে। বলা যায়, ভাইয়ের রক্তে নিজ হাত রাঙিয়ে তোলে। জবর দখলের কথা নাই-বা বললাম। গুম-খুন-মামলা-হামলার কথাতো সবার জানা। আসলে আমাদের দেশের ক্ষমতাসীনরাই এ জন্য দায়ী। হোক সে সরকার ১৯৯৬ বা ২০০২ অথবা ২০০৯ এর পরবর্তী। তিন দশক ধরেই এই অবস্থা হচ্ছে। একটা কথা আছে, ‘শয়তান আগেরটাই, খোলস পাল্টেছে’। এ দেশের সরকারের অবস্থাও তাই মনে হচ্ছে। হয়তো-বা গত দেড় দশক ধরে বিরোধী মতের ওপর পীড়নটা বেশিই হচ্ছে। বিরোধী মতদের শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এগুলো নোংরা রাজনীতি। কিন্তু এর আগেও একই দমনপীড়ন হয়েছিল। কখনো যদি এসব বন্ধ হয়, রাজনীতি করার মতো পরিস্থিতি ফিরে আসে তখন ভালো মানুষের দেখা মিলবে। নয়তো রাজনীতিতে আর ভালো মানুষের দেখা পাওয়া যাবে না। যে মুষ্টিমেয় মানুষ এখনো রাজনীতির প্রতি আস্থা রাখছেন, দিন দিন এর সংখ্যাও কমে যাবে বলে আমি মনে করি। মো. মোনায়েম খান : রাজনীতিতে ভালো মানুষই আসে। ক্ষমতা সেই মানুষের মনুষ্যত্ব নষ্ট করে দেয়। এ কারণে দিন দিন রাজনীতি থেকে ভালো মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। তিনি ঠিক বলেছেন। মাসুদ খান : ওবায়দুল কাদের ঠিকই বলেছেন। তিনি একসময় ভালো ছিলেন। এখন আয়নায় সামনে দাঁড়িয়ে বুকে হাত রেখে বলুক, এই রাজনীতি পচানোর জন্য তিনি কেমন দায়ী? এর কারণ, ক্ষমতার লোভ। তিনি যখন দেখলেন ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আসা অনেক সহজ তখন তিনি সহজ পথটাই বেছে নিলেন। নিজেকে একজন খারাপ মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করলেন। যদি ভালো হতেন তাহলে তিনি একরোখা নির্বাচনে না লড়ে সরে দাঁড়ালে একটা ভালো মানুষের উদাহরণ সৃষ্টি হতো। আমিরুল ইসলাম : বাংলাদেশে রাজনীতি বলতে কিছু নেই। রাজনীতি প্রতিহিংসায় পরিণত হয়েছে। ক্ষমতায় আসার জন্য তারা সবাই মরিয়া। সাধারণ জনগণ কীভাবে চলবে, কী খাবে তা নিয়ে কারও কোনো টেনশন নেই। সবারই একই চিন্তা আমাদের ক্ষমতা লাগবে। রমজান বিন আইয়ুব : ওবায়দুল কাদের সত্য বলেছেন। বর্তমানে রাজনীতিতে ভালো মানুষের সংখ্যা নেই বললেই চলে। আমাদের মতো সাধারণ জনগণের ধারণা, যারা সরকারে থাকে তারা সব সময় মিথ্যা বলেন। যারা বিরোধী দলে থাকেন তারা খুব সত্যবাদী হওয়ার ভান করেন। কিন্তু এ বিরোধী দলই যখন সরকারে আসে তখন তাদের অবস্থাও একই হয়। মানে, সব দলই যা করে ক্ষমতার জন্য করে। প্রকৃত অর্থে কেউই নিঃস্বার্থভাবে সাধারণ জনগণ তথা দেশের স্বার্থে কাজ করে না। এই অর্থে ওবায়দুল কাদেরের কথাই সত্য। রাজনীতিতে ভালো মানুষের সংখ্যা কমতে কমতে এখন প্রায় শূন্যের কোঠায় চলে এসেছে।  মো. স্বাধীন মালিক : রাজনীতি হচ্ছে পচা নর্দমার মতো। সবাই রাজনীতিতে জড়াতে চান না। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাজনীতির মহত্ব হারিয়ে গেছে। এ জন্য ধীরে ধীরে রাজনীতি থেকে ভালো মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। মোহাম্মদ আফসার উদ্দিন : তিনি কথাটা ঠিক বলেছেন। তবে সব দলের রাজনীতিবিদরা খারাপ নন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে খারাপ মানুষের সংখ্যা বেড়ে গেছে! কথাটা তিনি এভাবে বলতে পারতেন। যমুনা : রাজনীতিতে এখন ভালো ও জ্ঞানী মানুষকে বোকা ভাবা হয়। খারাপ এবং দুশ্চরিত্র লোকদের যোগ্য নেতা বলা হয়। আর এই কারণেই খারাপ মানুষের ভিড়ে ভালো মানুষ নিজেদের সম্মান ধরে রাখতে সব সময় নিজেকে পিছিয়ে রাখে। এ কারণেই রাজনীতিতে আর ভালো মানুষ পাওয়া কঠিন। জহুরুল ইসলাম মণ্ডল : গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে এক দলের সঙ্গে অন্যজনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা অত্যন্ত স্বাভাবিক। একজন অন্যজনকে আক্রমণ করবে, এটাও স্বাভাবিক। কিন্তু আক্রমণের ধরন হতে হবে রাজনৈতিক, সমালোচনাটা হবে নীতির প্রশ্নে। কিন্তু রুচি বহির্ভূত আক্রমণের তীর ছুটছে চার দিকে। তাই রাজনীতিতে ভালো মানুষ আর আসতে চান না। মো. আনোয়ার হোসাইন : বাংলাদেশের রাজনীতির যে অবস্থা তাতে করে যুবসমাজ রাজনীতি থেকে নিজেকে দূরে রাখাই ভালো মনে করছেন। বর্তমানে নীতিবান রাজনীতিবিদদের সে রকমভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। বর্তমান রাজনীতি মানে মারামারি-হানাহানি। প্রতিহিংসার কারণে দেশ ও জাতির কল্যাণ হচ্ছে না। অভ্যান্তরীণ রাজনীতি যত খারাপ থাকবে তত দেশের জন্য তা অমঙ্গল বয়ে আনবে। তাই আমরা সাধারণ মানুষ কামনা করি, এসব প্রতিহিংসা হানাহানির রাজনীতি বাদ দিয়ে দেশের কল্যাণে, জনগণের কল্যাণে রাজনীতিবিদরা কাজ করুক। দেশে রাজনীতি করার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকুক। বর্তমান রাজনীতিবিদরাই পারেন বাংলাদেশকে একটি বসবাসযোগ্য শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে। বেলাল ম্রিসিক : বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সত্য বাণী হলো ‘কোনো দেশপ্রেমিক রাজনীতি করতে পারেন না। অপরদিকে কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি দেশপ্রেমিক হতে পারেন না।’ রিয়াদ হোসাইন : বর্তমান প্রেক্ষাপটে ‘রাজনীতি ও ভালো মানুষ’ ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত দুটি বিষয়। মো. এনায়েত : আপনাদের মতো সিনিয়রদের কাছে তো ভালো কিছু পায় না, তাই ভালো মানুষ রাজনীতিতে আসতে চায় না। সত্য কথা বলার জন্য ধন্যবাদ।  মো. আব্দুল হামিদ : ওবায়দুল কাদের যদি ভালো মানুষের সংজ্ঞাটা বুঝিয়ে বলতেন ভালো হতো। আপনি করেন রাজনিতি। আপনার মুখ দিয়ে বলেন আগুন দিতে এলে আগুন লাগিয়ে দেব। এটা কেমন ভালো মানুষের কথা। আপনার বলা উচিত ছিল, ‘পানি নিয়ে বা জনগণ নিয়ে দাঁড়াব’।  আমিনুল ইসলাম : শুধু রাজনীতিতে ভালো মানুষ কমে যায়নি। সব ক্ষেত্রেই ভালো মানুষ কমে গেছে। মন্ত্রী থেকে শুরু করে চৌকিদার পর্যন্ত ভালো মানুষ খুঁজে পাবেন না। প্রশাসন থেকে শুরু করে দফাদার পর্যন্ত খারাপ মানুষে ভরে গেছে। যে কোনো কাজে গেলেই বাড়তি টাকা দাবি করা হয়। দেশের অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে গেছে। আব্দুল কাইয়ুম রাকিব : একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক দল দরকার। আর রাজনৈতিক দল সৃষ্টি হয় সৎ, নিষ্ঠাবান, নীতিবান নেতার সমন্বয়ে। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে সৎ, নীতিবান, নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক নেতা নেই বললেই চলে। কারণ, বড় দলগুলো কিছু ব্যবসায়ী, আমলাদের দখলে চলে গেছে। তাই তারা নিজেদের ব্যবসা বা চেয়ার টিকিয়ে রাখার জন্য যে কোনো হীন কাজ করতেও দ্বিদ্বাবোধ করেন না। সাধারণ শিক্ষিত সমাজ থেকে কোনো নেতা তৈরি হচ্ছে না। অশিক্ষিত লোকরা সেই সুযোগটি নিয়ে তারাই নেতা বনে গেছে। এ অশিক্ষিত লোকদের টাকার জোরের কাছে শিক্ষিত লোকরা রাজনীতিতে আসতে চায় না। এম এ বাকী বিল্লাহ : রাজনীতি এখন মারাত্মক পর্যায়ের ব্যবসায়ে পরিণত হয়েছে। রাজনীতির আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, নীতির রাজা, রাজনীতিবিদ মানেই তিনি হবেন নীতির রাজা। এখন সেই নীতির দুর্ভিক্ষ চলছে রাজনীতির সর্বত্রে। রাজনীতির রাজ বা রাজা অথবা নেতা ঠিকই রয়েছেন, কিন্তু নীতি নেই। অপরাজনীতির জয়জয়কার, প্রতিহিংসার রাজনীতির সয়লাব এবং রাজনীতিতে অর্থের নগ্ন আধিপত্যের জন্য ভালো মানুষ রাজনীতির প্রতি বিমুখ। তাই বলা যায়, তিনি মন্দ বলেননি। আসলেই ভালো মানুষ ও যোগ্যরা রাজনীতি থেকে দূরে সরে রয়েছেন। তাই রাজনীতির এই অচলাবস্থা দূরীকরণে তরুণদের মধ্যে রাজনৈতিক উৎসাহ বাড়াতে হবে। পরিশুদ্ধ গণতন্ত্র চর্চার প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি করতে হবে এবং যতদূর সম্ভব ব্যবসায়ী, নায়িকা-গায়িকা, ব্রোকার-জোকারদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ নিরুৎসাহিত করতে হবে। গ্রন্থনা : আব্দুল্লাহ আল মাছুম
০১ অক্টোবর, ২০২৩
X