জাতিসংঘে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  
জাতিসংঘ পুলিশের কার্যক্রমে ফলপ্রসূ অবদান রাখার বিষয়ে বাংলাদেশের অঙ্গীকার ও প্রস্তুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।  বৃহস্প‌তিবার (২৭ জুন) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জাতিসংঘ পুলিশপ্রধানদের চতুর্থ সম্মেলনে প্রধান সেশনে এ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে প্রাসঙ্গিক ও নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক বিশেষায়িত পুলিশিং-এর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে মহিলা পুলিশ সদস্য প্রেরণ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।  তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে নানাবিধ অপপ্রচার রোধে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অবদান তুলে ধরেন। পাশাপাশি শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের গুরুত্ব বর্ণনা করে, এ ধরনের প্রযুক্তির দায়িত্বশীল ব্যবহারের বিষয়ে জোর দেন। সম্মেলন চলাকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদৌলে সানিয়াং, জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল ফর পিস অপারেশনস জ্যঁ পিয়েরে লাখোয়া এবং আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল ফর অপারেশনাল সাপোর্ট অতুল খারের সাথে তিনটি পৃথক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
২৮ জুন, ২০২৪

জাতিসংঘে বাংলাদেশের নতুন স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক 
শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলামকে জেনেভায় জাতিসংঘ অফিসে বাংলাদেশের নতুন স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি এই পদে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন।  বুধবার (২৬ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। পেশাদার কূটনীতিক তারেক বিসিএস (পররাষ্ট্র) ক্যাডারের ১৭তম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা। তিনি ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন। ২০২০ সালের নভেম্বরে বর্তমান পদ গ্রহণের আগে তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি নিউ ইয়র্কের স্থায়ী মিশনে প্রাথমিকভাবে প্রথম সচিব হিসেবে এবং পরবর্তী সময়ে কাউন্সেলর হিসেবে কাজ করেন। এরপর তিনি ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনে (২০০৯-২০১২) কাউন্সেলর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়াও তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া উইং) হিসাবে এবং তার আগে পরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া উইং), পরিচালক (পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়) পাশাপাশি পার্সোনেল উইং এবং পররাষ্ট্র সচিবের অফিসসহ অন্যান্য বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। রাষ্ট্রদূত তারেক অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড ট্রেড ডিগ্রি এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (বুয়েট) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
২৬ জুন, ২০২৪

জাতিসংঘে পাস হওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি ফিলিস্তিনিরা
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবে রাজি হয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রস্তাবটি বাস্তবায়নে মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তা করতে সম্মত তারা। হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরিও বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে তাদের সম্মতির কথা নিশ্চিত করেছেন।  হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে যে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেগুলোকে স্বাগত জানায় হামাস। এ ব্যাপারে আলোচনায়ও একমত তারা।   ওই প্রস্তাবে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়া, বন্দিবিনিময়, গাজা পুনর্গঠন, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের নিজেদের এলাকায় ফিরিয়ে আনা এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহের কথা বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পক্ষ থেকে গত ৩১ মে নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির ওই প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছিল। ওই প্রস্তাবের ওপর গতকাল সোমবার ভোটাভুটি হয়। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় পরিষদের ১৫ সদস্যদেশের মধ্যে ১৪টি। ভোটদানে বিরত ছিল শুধু রাশিয়া।  গাজায় আট মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার ১৬৪ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আহত প্রায় ৮৫ হাজার। ইসরায়েলের নৃশংসতা বন্ধে এর আগেও কয়েকবার নিরাপত্ত পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আনা হয়েছিল। তবে দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করায় তা আলোর মুখ দেখেনি। এরই মধ্যে গত মাসে গাজার রাফা এলাকায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির বিষয়ে তৎপর হয়ে উঠেছিলেন বাইডেন। সোমবার নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটির পর জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, আজ যুক্তরাষ্ট্র শান্তির পক্ষে ভোট দিয়েছে। ইসরায়েল এরই মধ্যে প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। হামাসও একই পথে হাঁটলে এখনই যুদ্ধ বন্ধ হবে।  প্রস্তাবে ইসরায়েলের সায় আছে—এ কথা জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বললেও এ নিয়ে এখনো খোলাখুলিভাবে কিছু জানায়নি ইসরায়েল সরকার।  যা রয়েছে নিরাপত্তা পরিষদে পাশ হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে:  নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবটিতে তিনটি ধাপ রয়েছে। প্রথম ধাপে গাজায় ছয় সপ্তাহ যুদ্ধবিরতি চলবে। এ সময় হামাসের হাতে বন্দী থাকা জিম্মিদের একাংশকে মুক্তি দেওয়া হবে। বিনিময়ে কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। একই সঙ্গে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হবে এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের নিজেদের এলাকায় ফেরার সুযোগ দেওয়া হবে। প্রথম ধাপে গাজার সব এলাকায় বাধাহীনভাবে প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা সরবরাহের সুযোগ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। বাইডেনের ভাষ্যমতে, প্রতিদিন গাজায় সর্বোচ্চ ৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশ করতে পারে। এসময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজাবাসীর জন্য হাজারো সাময়িক আবাসনের ব্যবস্থা করবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বাদবাকি জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। তাদের মধ্যে জিম্মি পুরুষ সেনারাও থাকবেন। সেই সঙ্গে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ সেনাকেও সরিয়ে নেওয়া হবে। যুদ্ধবিরতিকে ‘স্থায়ীভাবে শত্রুতা বন্ধে’ উন্নীত করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে জিম্মি ফেরানোর প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ করা হবে। গাজার জন্য বড় ধরনের একটি ‘পুনর্গঠন পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। এর আওতায় মার্কিন ও আন্তর্জাতিক সহায়তায় গাজা উপত্যকায় বাড়ি, বিদ্যালয় ও হাসপাতাল পুনর্নির্মাণ করা হবে।    
১১ জুন, ২০২৪

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সমন্বিত প্রচেষ্টা নিন : জাতিসংঘে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশে আশ্রিত প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গার নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন, সে দেশের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাত নিরসন ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো এবং অন্যান্য অংশীদারদের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে জোর আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।  নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩১ মে) বিকেলে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের সভাপতি, মিয়ানমার বিষয়ে মহাসচিবের বিশেষ দূত, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার এবং জাতিসংঘের ৬ উন্নয়ন সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে পৃথক চার বৈঠকে সরকারি দায়িত্বে যুক্তরাষ্ট্র সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।  জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিসকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০১৭ সালে যখন প্রায় ১০ লাখ মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের মানুষ তাদের মমতা দিয়ে গ্রহণ করেছিল। কিন্তু ক্রমেই রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন স্থানে কর্মসংস্থান করছে আর ক্যাম্পগুলো মানুষ পাচার, মাদক চোরাচালান, জঙ্গি নিয়োগসহ নানা অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ফলে স্থানীয়দের জীবন অতিষ্ঠপ্রায়। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে বৈঠকে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের পাশাপাশি গত ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রায় ৭৫০ সদস্য বিভিন্ন সময়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের বেশিরভাগকেই ফেরত পাঠানো হয়েছে, বাকিরাও ফেরত প্রক্রিয়ায় আছে। শুধু তাই নয়, মিয়ানমারে বিবদমান গোষ্ঠীর শেল বাংলাদেশ অংশে পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এসবের পুনরাবৃত্তি রোধ একান্ত প্রয়োজন।  মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশপের সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতি কোনো নতুন ঘটনা নয় এবং এটিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিপক্ষে ব্যবহারের অজুহাত তৈরির সুযোগ দেওয়া অনুচিত। এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘ক্রাইসিস, কনফ্লিক্টস অ্যান্ড ইন্টার-এজেন্সি কোলাবরেশন : নেক্সাস এপ্রোচ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন। জাতিসংঘের ৬ সংস্থা- ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ, ইউএনওপিএস, ইউএন উইমেন প্রধান এবং ইউনিসেফ ও ডব্লিউএফপির উপপ্রধান এতে অংশ নেন।  মন্ত্রী ড. হাছান বিশেষ করে বিশ্বে সংঘাত প্রভাবিত অঞ্চলগুলোতে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর নেক্সাস বা সম্মিলিত উদ্যোগের সুবিধাগুলো তুলে ধরেন। তিনি রাখাইন ও কক্সবাজারের পরিস্থিতির কথা করেন এবং উদ্বাস্তু সংকট নিরসন ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উন্নতির লক্ষ্যে জাতিসংঘের সব সংস্থা, তহবিল এবং কর্মসূচিকে সুসংহতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ এ মুহিত, মন্ত্রণালয় ও মিশনের অন্যান্য সদস্যরা বৈঠকগুলোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
০১ জুন, ২০২৪

জাতিসংঘে ইব্রাহিম রাইসিকে সম্মান
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ অন্যান্য নিহতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠানে এই শ্রদ্ধা জানানো হয়।  বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেসের উপস্থিতে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা ইরানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিস এই অনুষ্ঠানে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো আমার কর্তব্য, যিনি ১৯ মে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ইরানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অন্যান্য শহীদের প্রতি স্মরণ অনুষ্ঠানে বলেছেন, ইব্রাহিম রাইসি দেশ ও অঞ্চলের জন্য অত্যন্ত কঠিন সময়ে ইরানের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ ছাড়া জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের দেশগুলোর প্রতিনিধিরাও এই অনুষ্ঠানে ইরানের সরকার ও জনগণের প্রতি তাদের সহানুভূতি প্রকাশ করে বলেছেন, ইরানের শহীদ প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাদের নেতৃত্বে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জাতিসংঘে আফ্রিকান দেশগুলোর গ্রুপ ইরানের সরকার ও জাতির প্রতি তাদের সহানুভূতি প্রকাশ করেছে এবং ঘোষণা করেছে, রাইসি ও আমির আবদুল্লাহিয়ান ইরান ও আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে এবং এ দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা ও বোঝাপড়া জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।  এদিকে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য দেশগুলোর পক্ষ থেকে জাতিসংঘে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত এবং স্থায়ী প্রতিনিধি ইরানের শহীদ প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রচেষ্টাকে সম্মান জানান।  সূত্র: পার্স টিভি
০১ জুন, ২০২৪

মানবাধিকার বিষয়ে করবে সংবাদ সম্মেলন / তিন ইস্যুতে জাতিসংঘে চিঠি দেবে বিএনপি
দেশে ব্যাংকিং খাতসহ অর্থনীতির নানা সংকট, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে বিদেশিদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায় বিএনপি। এরই মধ্যে অর্থনৈতিক সংকট ও সরকারের বিভিন্ন খাতের দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে দলটি। এ লক্ষ্যে গঠিত একটি কমিটি কাজ করছে। যত দ্রুত সম্ভব কাজটি সম্পন্ন করে তা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরা হবে। সেইসঙ্গে সরকারকে চাপে ফেলতে এসব তথ্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছেও পৌঁছানো হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে। বিএনপি মনে করে, ক্ষমতাঘনিষ্ঠদের লাগামহীন লুটপাট, অব্যবস্থাপনা এবং অযোগ্যতার কারণে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। দলটির দাবি, সেবা খাতসহ প্রায় সব ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। দলটির নেতারা বলছেন, সরকারের লুটপাট, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে তারা আগে থেকেই সোচ্চার। বিষয়টিতে বিদেশিরাও অবগত। দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া আদালত সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তথ্যচিত্র প্রচারিত হয়েছে। এসব বিষয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলে আরও স্পষ্ট তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরতে চায় বিএনপি। এরই মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন বিচার-বিশ্লেষণ করছে বিএনপি। বিষয়টি নিয়ে গত শুক্র ও শনিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করে বিএনপির হাইকমান্ড। বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। সেখানে পর্যালোচনা শেষে মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে জাতিসংঘে চিঠি দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনও করবে বিএনপি। আলোচনা হয়েছে একটি সেমিনার করার বিষয়েও। সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য ও চিঠির খসড়া তৈরি করতে দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির কোনো নেতাই জাতিসংঘে চিঠি দেওয়ার উদ্যোগের বিষয়টি স্বীকার করেননি। দলটির মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ কালবেলাকে বলেন, এমন কিছু সম্পর্কে তিনি অবগত নন। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে তাকে এ বিষয়ে এখনো কিছু জানানো হয়নি। জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল কালবেলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে সে ব্যাপারে দল বিভিন্ন সময় দেশবাসীকে জানিয়েছেন। এ ছাড়া ‘মায়ের ডাক’ নামে একটি সংগঠন আছে—তারাও গুম হওয়াদের ব্যাপারে বিভিন্ন দেশের বুদ্ধিজীবী ও মানবাধিকার কমিশনের কাছে তথ্য তুলে ধরেছে। সেটা সারা পৃথিবী যাচাই করছে। সুতরাং এ ব্যাপারে সারা বিশ্ব অত্যন্ত সচেতন। এর পরও নতুন করে আমাদের আর কোনো ডকুমেন্টারি দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’ জাতিসংঘে চিঠি দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না—সে সম্পর্কে তিনি অবগত নন বলে আলাল জানান। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন, অত্যাচার-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমাতে অনেককে গুম করা হয়েছে। এম ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, চৌধুরী আলম, হুমায়ন পারভেজ, সাজেদুল ইসলাম সুমন, জাকিরসহ অনেক নেতাকর্মী গুমের শিকার হয়েছেন। গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহ উপলক্ষে গতকাল এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সবার চোখের সামনে থেকে ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গুম করা হলেও আওয়ামী লীগ সরকার বরাবরই বিষয়টি সব আন্তর্জাতিক ফোরামে নির্লজ্জের মতো অস্বীকার করে আসছে। অথচ বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে এর সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।’ তিনি গুম নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার হিসাব তুলে ধরে বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০২৪-এর মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে প্রায় ৬৬৬ জন ব্যক্তি গুম হয়েছেন। এদের মধ্যে কাউকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে, কাউকে অনেকদিন পর গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, আবার অনেকের কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারকে গুমের ঘটনা বন্ধ করতে এবং গুমের শিকার সবার ভাগ্য ও অবস্থান সম্পর্কে তাদের পরিবারকে তথ্য দেয় ও ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করে।’
২৭ মে, ২০২৪

ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্য করার প্রস্তাব জাতিসংঘে পাস
যুদ্ধবিরতির চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে মিশরের কায়রোর আলোচনা। আর এ আলোচনা শেষ হওয়ার পরপরই গাজার দক্ষিণে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ড্রোন ও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে আকাশপথে হামলার পাশাপাশি চলছে কামানের গোলা নিক্ষেপ। রাফাহর প্রায় প্রতিটি জায়গায় এসে পড়ছে কামানের গোলা। গতকাল শুক্রবারের হামলায় রাফাহর অনেক ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। হামলার মুখে রাফাহ থেকে সরে যাওয়ারও সুযোগ পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। তারপরও অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাফাহ ছেড়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনীর স্থান ত্যাগের নির্দেশের পর গত সোমবার থেকে এ পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার মানুষ রাফাহ ছেড়েছে বলে জানা গেছে। রাফাহর মাত্র তিনটি হাসপাতাল রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং অধিক চিকিৎসা সুবিধাসম্পন্ন হাসপাতালটি খালি করে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে বাকি দুটি হাসাপাতালে রোগীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা দিয়েছে। তবে জ্বালানি তেলের সংকটে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ দুটি হাসপাতালও বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাবে শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভোটাভুটি হয়। ১৪৩ ভোটে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। প্রস্তাব অনুসারে ফিলিস্তিন জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার যোগ্য। সাধারণ পরিষদ ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা পরিষদকে সুপারিশ জানায়। উল্লেখ্য, কোনো দেশকে পূর্ণ সদস্যপদ পেতে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন লাগে। গত মাসে এরকম এক প্রস্তাব ভেটো দিয়ে আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার। শুক্রবার সকাল থেকেই রাফাহতে কামানের গোলাবর্ষণ করছে ইসরায়েল। রাফাহর এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে কামানের গোলা এসে পড়ছে না বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। আর আকাশপথে হামলা তো চলছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নগরীর হাসপাতালগুলোতে রোগী উপচে পড়ছে। চিকিৎসকরা জানান, রাফাহতে ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়ে আছে। রাফাহর পূর্বাংশে গত সোমবার থেকে আকাশ হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। সেখানে তিনটি হাসপাতাল রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় আবু ইউসেফ আল-নজর হাসপাতালের বেশিরভাগ কার্যক্রম বন্ধ রেখে সেটি খালি করে দিতে হয়েছে। কারণ, ইসরায়েলি বাহিনীর সেখানকার কর্মীদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে। তা ছাড়া, হাসপাতালটির কাছেই লড়াই চলছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাবে ভোট : জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে শুক্রবার ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদের আবেদন নিয়ে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদে ১৪৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। বিপক্ষে ভোট দেয় যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েলসহ ৯টি দেশ। আর ভোটদানে বিরত থাকে ২৫টি দেশ। পাসকৃত প্রস্তাব অনুসারে ফিলিস্তিন জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ পাওয়ার যোগ্য বলে উল্লেখ করা হয়। ভোটাভুটির পর ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ জানায় সাধারণ পরিষদ। শুক্রবারের এ ভোটাভুটির মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিন একটি বাড়তি সুবিধা পাবে। জাতিসংঘের পূর্ণাঙ্গ সদস্যদের মতো আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ফিলিস্তিন সাধারণ পরিষদের অধিবেশন কক্ষে একটি আসন পাবে। কিন্তু ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না। উল্লেখ্য, ফিলিস্তিন বর্তমানে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক সদস্য হিসেবে রয়েছে। ২০১২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে কার্যত রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেয়েছিল ফিলিস্তিন। তবে পূর্ণ সদস্য পদ পেতে নিরাপত্তা পরিষদ এবং সাধারণ পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন। সাধারণ পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য এরই মধ্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের মিশন জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোকে পাঠানো এক চিঠিতে জানিয়েছে, এই খসড়া প্রস্তাব পাস করলে তা দীর্ঘদিন ধরে দীর্ঘ প্রত্যাশিত দুই-রাষ্ট্র নীতি বাস্তবায়নের পথে বড় অবদান রাখবে। রাফাহ অভিযানেও হামাসকে হারাতে পারবে না ইসরায়েল : গাজার রাফাহ নগরীতে বড় ধরনের অভিযান চালিয়েও ইসরায়েল হামাসকে পরাস্ত করতে পারবে না। এমনটাই বিশ্বাস করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি। তিনি বলেন, ‘তার (বাইডেন) মতে, রাফাহ ধ্বংস করে হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য সাধনে ইসরায়েল এগোতে পারবে না। ইসরায়েল হামাসকে অনেকটাই চাপে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। নতুন করে রাফাহ অভিযান কেবল বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকিই বাড়াবে।’
১১ মে, ২০২৪

স্বাধীন ফিলিস্তিন গঠনের পক্ষে জাতিসংঘে ১৪৩ দেশ
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে জাতিসংঘে ভোটাভুটি হয়েছে। এতে দেশটির পক্ষে বাংলাদেশসহ ১৪৩ দেশ ভোট দিয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে শুক্রবার (১০ মে) এ বিষয়ে ভোটাভুটি হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এ প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, স্বাধীন ফিলিস্তিন গঠনের পক্ষে আবারও নিরাপত্তা পরিষদে ভোট নেওয়া হোক। এতে আপনাদের সমর্থন আছে কিনা।  সাধারণ পরিষদের এ প্রস্তাবে ১৪৩ দেশ পক্ষে ভোট দিয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলসহ ৯টি দেশ বিপেক্ষে ভোট দিয়েছে। এছাড়া প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল ২৫ দেশ।  সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এ প্রস্তাব ফিলিস্তিনিকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দেয় না, তবে কেবল তাদের যোগদানের যোগ্য হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। ২০১১ সালে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ পেতে আবেদন করেছিল ফিলিস্তিন। সেই আবেদন এখনো পড়ে আছে। গত মাসে নিরাপত্তা পরিষদে ভোটের আয়োজন করা হয়। সেখানে ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘে পূণ সদস্যপদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ১২টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ায় তা আর পাস হয়নি। তবে পূর্ণ সদস্যপদের আবেদন আবারও সচল করার চেষ্টা করছে ফিলিস্তিন। সাধারণ পরিষদে আজ এই প্রস্তাব পাস হলে কার্যকরভাবে তা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। কোনো দেশকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ পেতে হলে অবশ্যই নিরাপত্তা পরিষদের ছাড়পত্র লাগবে। নিরাপত্তা পরিষদ ছাড়পত্র দিলে বিষয়টি উঠবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। ১৯৩ সদস্য বিশিষ্ট এই পরিষদের কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট দিলেই তবে ওই দেশটি জাতিসংঘে প্রবেশ করতে পারবে। ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দিতে না পারলেও শুক্রবারের প্রস্তাব পাস হলে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে কিছু বাড়তি সুবিধা পাবে দেশটি। যেমন সাধারণ পরিষদে অন্যান্য সদস্য দেশের মতো ফিলিস্তিনের জন্য সিট বরাদ্দ থাকবে। তবে তারা কোনো প্রস্তাবে ভোট দিতে পারবে না। সাত মাসের বেশি সময় ধরে গাজা যুদ্ধ চলছে। ইসারয়েলি হামলায় সেখানে ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অন্যদিকে হামাসের হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত নিরসনে এই যুদ্ধের মধ্যে আবারও দ্বিরাষ্ট্রীয় সমধানের বিষয়টি আলোচনায় আসছে। দ্বিরাষ্ট্রীয় সমধানের মূল কথা হলো ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র পাশাপাশি অবস্থান করবে।
১০ মে, ২০২৪

জাতিসংঘে উঠছে ফিলিস্তিনের সদস্যপদের আবেদন, আসতে পারে সুখবর
যুগের পর যুগ ধরে জাতিসংঘের সদস্যপদ পেতে চেষ্টা-তদবির করে আসছে ফিলিস্তিন। বিশ্বের বড় বড় দেশ ও নেতাদের অনুরোধ করে আসছেন ফিলিস্তিনি নেতারা। তবে এত বছর পার হলেও শুধু জাতিসংঘের স্থায়ী পর্যবেক্ষকের মর্যাদা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে দেশটিকে। বছরের পর বছর ধরে বৈশ্বিক সংস্থাটির নিরাপত্তা পরিষদে আটকে আছে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদের আবেদন। এমনকি গত মাসে নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনি আবেদনের পক্ষে অধিকাংশ দেশ ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্রের ভোটের কারণে তা পাস হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা পরিষদ যেন ফিলিস্তিনি আবেদনের বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করে সে বিষয়ে আজ শুক্রবার ভোটের আয়োজন করা হয়েছে বৈশ্বিক সংস্থাটির সাধারণ পরিষদে। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফিলিস্তিন যে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হওয়ার যোগ্য তার স্বীকৃতি দিতে শুক্রবার সাধারণ পরিষদে ভোট হবে। এই ভোটাভুটিতে ফিলিস্তিনের পক্ষেই ভোট দেবে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ। একই সঙ্গে গত মাসে মার্কিন ভেটোর কারণে ফিলিস্তিনি সদস্যপদের আবেদন আটকে যাওয়ার বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করতে নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আহ্বান জানানো হবে। ২০১১ সালে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ পেতে আবেদন করেছিল ফিলিস্তিন। সেই আবেদন এখনো পড়ে আছে। গত মাসে নিরাপত্তা পরিষদে ভোটের আয়োজন করা হয়। সেখানে ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘে পূণ সদস্যপদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ১২টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ায় তা আর পাস হয়নি। তবে পূর্ণ সদস্যপদের আবেদন আবারও সচল করার চেষ্টা করছে ফিলিস্তিন। সাধারণ পরিষদে আজ এই প্রস্তাব পাস হলে কার্যকরভাবে তা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। কোনো দেশকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ পেতে হলে অবশ্যই নিরাপত্তা পরিষদের ছাড়পত্র লাগবে। নিরাপত্তা পরিষদ ছাড়পত্র দিলে বিষয়টি উঠবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। ১৯৩ সদস্য বিশিষ্ট এই পরিষদের কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট দিলেই তবে ওই দেশটি জাতিসংঘে প্রবেশ করতে পারবে। ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দিতে না পারলেও শুক্রবারের প্রস্তাব পাস হলে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে কিছু বাড়তি সুবিধা পাবে দেশটি। যেমন সাধারণ পরিষদে অন্যান্য সদস্য দেশের মতো ফিলিস্তিনের জন্য সিট বরাদ্দ থাকবে। তবে তারা কোনো প্রস্তাবে ভোট দিতে পারবে না। সাত মাসের বেশি সময় ধরে গাজা যুদ্ধ চলছে। ইসারয়েলি হামলায় সেখানে ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অন্যদিকে হামাসের হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত নিরসনে এই যুদ্ধের মধ্যে আবারও দ্বিরাষ্ট্রীয় সমধানের বিষয়টি আলোচনায় আসছে। দ্বিরাষ্ট্রীয় সমধানের মূল কথা হলো ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র পাশাপাশি অবস্থান করবে।
১০ মে, ২০২৪

জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব গৃহীত
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক রেজ্যুলেশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার ১১২টি দেশ এই রেজ্যুলেশনটিতে কো-স্পন্সর করেছে, যা রেজ্যুলেশনটির প্রতি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অব্যাহত সমর্থনের সাক্ষ্য বহন করে। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত এটি উত্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদে সরকার পরিচালনার সময় ১৯৯৯ সালে প্রথম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ-বিষয়ক কর্মসূচি গৃহীত হয়। এ বছর যা ২৫তম বছরে পড়েছে। প্রতি বছর বাংলাদেশ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজ্যুলেশনটি জাতিসংঘে উপস্থাপন করে। এ ছাড়া সাধারণ পরিষদের সভাপতির নেতৃত্বে ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ক একটি উচ্চপর্যায়ের ফোরামের আয়োজন করে আসছে। প্রস্তাবটি উপস্থাপনের সময় রাষ্ট্রদূত মুহিত বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে শান্তির সংস্কৃতির প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিশ্ব ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব ও মানবিক মর্যাদা অবজ্ঞার মুখোমুখি। এই সংঘাত-সহিংসতা উত্তরণে সম্প্রীতি ও সহমর্মিতা পুনরুজ্জীবিত করতে হবে, মানুষের সমমর্যাদার চেতনাকে সমুন্নত করতে হবে এবং যুদ্ধের চেয়ে শান্তিকে অনেক বেশি লাভজনক করে তুলতে হবে। এবারের রেজ্যুলেশনটিতে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ-বিষয়ক কর্মসূচির ২৫তম বার্ষিকী পালন ও উদযাপনের জন্য সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে দিনব্যাপী একটি উচ্চপর্যায়ের ফোরাম আহ্বানের অনুরোধ জানানো হয়। এ ছাড়া সাধারণ পরিষদের সদস্য রাষ্ট্র, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থা, নাগরিক সমাজ, বেসরকারি খাত, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মিডিয়াসহ অন্য অংশীজনের শিক্ষা ও জনসচেতনতা সম্প্রসারণসহ নানা আয়োজনের মাধ্যমে বার্ষিকীটি পালনের আমন্ত্রণ জানানো হয়। রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, ‘জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণা প্রবর্তনে বাংলাদেশের উদ্যোগটি নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত। তিনি আরও বলেন, ‘বৈষম্য, বর্ণগত অসহিষ্ণুতা ও পরাধীনতা আমাদের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করেছিল। এ কারণেই শান্তির প্রসারকে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক নীতিতে পরিণত করেছি।’ রেজ্যুলেশনটির বিবেচনার আগে শান্তির সংস্কৃতির ওপর সাধারণ পরিষদে সাধারণ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অনেক সদস্য রাষ্ট্র এ-বিষয়ক কর্মসূচি বাস্তবায়নে তাদের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে।
০৪ মে, ২০২৪
X