সড়ক দুর্ঘটনায় জরুরি চিকিৎসা
প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত হচ্ছেন অনেকে। আহতদের বেশিরভাগেরই প্রাথমিক জরুরি চিকিৎসা দেওয়া যায় না। তবে কিছু বিষয় জানা থাকলে অনেক ক্ষেত্রে রোগীকে বাঁচানোও সম্ভব। নিজেকে পরীক্ষা করুন নিজে দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর যদি জ্ঞান থাকে তবে আতঙ্কিত না হয়ে আগে দ্রুত সব পরীক্ষা করুন। হাত-পা ঠিকমতো নাড়াতে পারছেন কি না, সেটাও দেখুন। মাথাঘোরা, বমির মতো উপসর্গ অনুভব করলে দ্রুত সাহায্যের আহ্বান জানান ও হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে বলুন। অন্যদের ক্ষেত্রে কেউ দুর্ঘটনায় পড়ার পর তার মাথা, ঘাড়, হাত-পা, পেট ইত্যাদি চেক করুন। লোকটি সঠিকভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারছেন কি না দেখুন। তাকে তার নাম জিজ্ঞেস করুন, সাহস দিন। যদি ঠিকঠাক সাড়া দিতে পারেন তবে বুঝতে হবে তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পাননি এবং পরিস্থিতি বুঝতে সক্ষম। সাহায্যের জন্য ডাকুন প্রয়োজন মনে হলে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন বা চলমান কোনো গাড়ি থামিয়ে ওই ব্যক্তিকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। রোগীর অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসককে সঠিক তথ্য দিন। মুখ ও গলার বাধা পরীক্ষা কেউ আহত হয়ে কাতরাতে থাকলে আগে দেখুন তিনি শ্বাস নিতে পারছেন কি না। নড়াচড়া না করে থাকলে নাড়ি পরীক্ষা করুন। শ্বাসের শব্দ শোনা না গেলে গলার ভেতর কোনো বাধা আছে কি না, তা দেখতে মুখ পরীক্ষা করুন। শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিরোধে কিছু থাকলে মধ্যম আঙুল ঢুকিয়ে তা পরিষ্কার করার চেষ্টা করুন। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সংকোচ করবেন না। যদি নাড়ির স্পন্দন না থাকে তাহলে সিপিআর (কার্ডিও ফুসফুসের পুনর্বাসন) বা এয়ার (বাহ্যিক এয়ার রিসাসক্যাটিকেশন) শুরু করুন। এর জন্য আহত ব্যক্তির ঘাড় সোজা রাখুন। যদি বমি হয় বা মুখ দিয়ে রক্ত বের হয় তবে আহতকে পাশ করে শোয়ান। এতে তার হিক্কা থামবে। এরপর একটি হাত ব্যক্তির পিঠের নিচে এবং অন্য হাত বুকের ওপর সামান্য চেপে ধরুন, বাহু সোজা বুক বরাবর রাখুন। যদি বেশি ক্ষত থাকে, তবে কাপড় দিয়ে স্থানটি শক্তভাবে বেঁধে রক্তপাত বন্ধ করার চেষ্টা করুন। ফ্র্যাকচার হয়েছে বা হাড় ভেঙে গেছে মনে হলে, সতর্কভাবে কাঠের বা শক্ত সমান বস্তু ভাঙা অংশের দুই পাশে দুটি এবং নিচে একটি অংশ রেখে টাইট করে ব্যান্ডেজ দিয়ে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। মেরুদণ্ড যদি ব্যক্তির ঘাড় অসুবিধাজনক বা অস্বাভাবিক অবস্থায় থাকে বা ব্যক্তি অজ্ঞান হয়, তাহলে তাকে নাড়াবেন না। হতে পারে যে ঘাড় ভেঙে গেছে। তখন দ্রুত হাসপাতালেই নিতে হবে। দাঁত যদি ব্যক্তির দাঁত ভেঙে যায়, তবে দাঁতের ক্রাউন বা সাদা অংশটি ধরে পড়ে যাওয়া দাঁতটি খুঁজে বের করুন, তবে দাঁতের শিকড়ের গায়ে হাত দেবেন না। দাঁতে ময়লা লেগে গেলে তা ধোয়ার জন্য একটি বাটিতে নরমাল স্যালাইন অথবা দুধ নিয়ে তাতে দাঁতটি রাখুন। এরপর দাঁতের ক্রাউন অংশটি ধরে মুখের মধ্যে চোয়ালের জায়গামতো অর্থাৎ আগে যেখানে ছিল সেখানে বসিয়ে দিন। এরপর কামড় দিয়ে আলতো চাপে তা ধরে রাখতে বলুন। এক ঘণ্টার মধ্যেই যদি চিকিৎসকের সহায়তায় দাঁতটি তার আগের জায়গায় বসিয়ে দেওয়া যায়, তবে তা লেগে যায়। উষ্ণ রাখুন দুর্ঘটনায় আহতরা শকের কারণে ভয় পেতে পারে। হতাশও হয়ে পড়ে। সুতরাং বেঁচে থাকার জন্য তাদের উষ্ণ রাখার চেষ্টা করুন। এজন্য শার্ট, টি-শার্ট, জ্যাকেট ইত্যাদি তার গায়ে চাপান। খাওয়া বন্ধ এ অবস্থায় আহতকে কোনো খাদ্য বা তরল দেবেন না। এতে রোগীর ঢেকুর উঠে বিপদ বাড়তে পারে। রক্তক্ষরণ হতে থাকলে আঘাতের অংশটি ওপরে তুলে ধরে হাসপাতালে পৌঁছানো পর্যন্ত রুমাল, গামছা জাতীয় বস্তু দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিতে হবে।
০৫ মে, ২০২৪

চাঁদপুরে নির্বাচনী জরুরি সেবা দেবে ৩০০ চিকিৎসা কেন্দ্র
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন ও এর আগে পরে চাঁদপুর জেলায় যে কোনো ধরনের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় চিকিৎসাসেবা দিতে প্রস্তুত প্রায় ৩০০ চিকিৎসা কেন্দ্র। শনিবার (৬ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি ডা. এসএম সহিদ উল্লাহ্। তিনি বলেন, ৬ জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনকেন্দ্রিক জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলায় বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ চাঁদপুরের সব মিলিয়ে মোট তিন শতাধিক চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। তবে যে কোনো রোগীকে সরকারি হাসপাতালে রেফার করার ক্ষেত্রে রোগীকে অবশ্যই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে যোগাযোগ করে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। এমনকি ব্যবস্থাপত্রের সঙ্গে দায়িত্বরত চিকিৎসকের পূরণ করা রেফারেন্স ফরম যুক্ত করে রেফার করতে হবে। এক তথ্যে দেখা যায়, চাঁদপুর জেলায় স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবার জন্য রয়েছে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ১টি জেনারেল হাসপাতাল, ৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র আইসিডিডিআর ১টি, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ১টি, ডায়াবেটিক হাসপাতাল ১টি, রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল ১টি, রেলওয়ে হাসপাতাল ১টি, মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র ৭টি, চক্ষু হাসপাতাল ৪টিসহ শতাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ১শ এর মতো বেসরকারি হাসপাতাল ও বেশ কয়েকটি ডেন্টাল ক্লিনিক রয়েছে। চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা নির্বাচনকালীন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। এর মধ্যে ৩টা কেবিন, ১০টা বেড, ওয়ান স্টপ সেন্টারে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ, ইমারজেন্সি মেডিকেল টিম, পর্যাপ্ত জ্বালানি ও অক্সিজেনসহ অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, অপারেশন থিয়েটার সার্বক্ষণিক প্রস্তুতসহ আরও অন্যান্য প্রস্তুতি নিয়েছি। এমনকি ভোট দেয়া শেষে সকল চিকিৎসককে হাসপাতালে অবস্থানের নির্দেশনা দিয়েছি। এ বিষয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রুটিন কাজের অংশ হিসেবে বেসরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজগুলোর পক্ষ থেকেও এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
০৭ জানুয়ারি, ২০২৪

মধ্যরাতে বিমান থেকে গাজায় জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম ফেলল জর্ডান
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বিমান থেকে জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম ফেলেছে জর্ডান। রোববার মধ্যরাতে গাজায় জর্ডানের ফিল্ড হাসপাতালে এসব জরুরি চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে জর্ডানের বিমানবাহিনীর সদস্য। জর্ডানের রাজা ও রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। জর্ডানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি সূত্রের বরাতে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, জর্ডানের বিমানবাহিনী বিমান থেকে গাজায় ফিল্ড হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে। গাজায় মিসরের রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে ত্রাণসহায়তা প্রবেশে দেরি হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসা সরঞ্জাম শেষের পথে ছিল। এ জন্য জর্ডানের বিমানবাহিনী বিমানে করেই এসব চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। এক এক্সবার্তায় জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ বলেছেন, তার দেশের বিমানবাহিনী গাজায় জর্ডানের ফিল্ড হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা ও ফার্মাসিউটিক্যাল সহায়তা পাঠাতে সক্ষম হয়েছে। গাজায় আহতদের সাহায্য করা তার সেনাবাহিনীর দায়িত্ব। তিনি বলেন, জর্ডান তাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের শক্তিশালী সমর্থক হিসেবে সব সময় পাশে থাকবে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। এর আগে গাজায় নির্বিচারে ইসরায়েলি বোমা হামলার প্রতিবাদে ইসরায়েল থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নেয় জর্ডান। একই সঙ্গে আম্মানে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে জর্ডানে প্রবেশে নিষেধ করে দেয় দেশটি। এ ছাড়া গত ২৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মানবিক কারণে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ২২টি আরব দেশের পক্ষে প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল জর্ডান। পরে সেই প্রস্তাব ১২০-১৪ ভোট পেয়ে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে পাস হয়।   Our fearless air force personnel air-dropped at midnight urgent medical aid to the Jordanian field hospital in Gaza. This is our duty to aid our brothers and sisters injured in the war on Gaza. We will always be there for our Palestinian brethren pic.twitter.com/HOWI2VL7hL — عبدالله بن الحسين (@KingAbdullahII) November 5, 2023
০৬ নভেম্বর, ২০২৩
X