জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা সেই বাড়িতে অভিযান শুরু
নেত্রকোনার সদর উপজেলায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িতে অভিযান শুরু করেছে পুলিশের বিশেষায়িত দল কাউন্টার টেররিজম, অ্যান্টিটেররিজম ও সোয়াট ইউনিটের বিশেষজ্ঞ দল। রোববার (৯ জুন) সকালে সদর উপজেলার কাইলাট ভাসাপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের বাড়িতে অভিযান শুরু হয়। অ্যান্টিটেররিজম ইউনিটের বোমা বিশেষজ্ঞ পুলিশ সুপার সানোয়ার হোসেন ওই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিশেষ ওই অভিযানে রয়েছেন নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, অ্যান্টিটেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহেদ আহমেদ। ওই বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কাউকেই ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এর আগে সদর উপজেলার কাইলাট ভাসাপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা রয়েছে- এমন সন্দেহে শুক্রবার (৭ জুন) সন্ধ্যা থেকে ওই বাড়িটি নজরদারিতে রাখে নেত্রকোনা জেলা পুলিশ। পরে শনিবার (৮ জুন) দুপরের পর ওই বাড়িটি ঘিরে রাখে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। আর বিকেলে পুলিশ ও ময়মনসিংহ এন্টিটেররিজম ইউনিটের সদস্যরা বাড়ির মূল ফটক ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে সেখান থেকে জঙ্গি তৎপরতা ও প্রশিক্ষণের নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করে।  এদিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি শাহ আবিদ হোসেন। তবে উদ্ধার অভিযান নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
০৯ জুন, ২০২৪

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে নেত্রকোনায় বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ
নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটী ইউনিয়নের ভাসাপাড়া গ্রামের একটি বাড়ি জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ওই বাড়িতে জঙ্গিদের অবস্থান, মহিলা ও শিশুসহ জঙ্গি থাকায় বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়েছে।  শনিবার (৮ জুন) দুপুরে প্রাথমিক তল্লাশি চালায় পুলিশের একটি বিশেষ টিম। এ সময় একটি ভারতীয় পিস্তল, ১৭ রাউন্ড গুলি ও একটি ডামি একে ৪৭ বন্দুক উদ্ধার করে। এর আগে শুক্রবার (৭ জুন) রাতেই গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে শনিবারের এ অভিযান চালায় পুলিশ সদস্যরা। তবে বাড়ির ভেতরে বোমা থাকতে পারে ধারণায় ময়মনসিংহ থেকে বোমা ডিসপোজাল টিম এসেছে। স্থানীয় লোকজন জানায়, ওই বাড়িতে মহিলা ও শিশু রয়েছে। পুরুষ জঙ্গি থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান, পুলিশ আসার খবর টের পেয়ে জঙ্গিরা হয়তো পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারে। গত তিন বছর ধরে এই বাড়িটিতে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হতো না। নেত্রকোনার পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ ঘটনাস্থল থেকে জানান, বাড়ির মালিক হচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার ড. আব্দুল মান্নান। তার বাড়ি নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার স্বরমশিয়া ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামে। তবে তিনি গাজীপুরে থাকেন। তিনি আরও জানান, দুই বছর আগে বাড়িটি আরিফ নামের এক ব্যক্তিকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তবে তাকে পাওয়া যায়নি। এন্ট্রি টেরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত ডিআইজি আসাদুল্লাহ চৌধুরী জানান, প্রাথমিকভাবে কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে, তদন্ত চলছে। ঢাকা থেকে এক্সপার্ট টিম আসছে, পরে আরও বিস্তারিত বলা যাবে। 
০৮ জুন, ২০২৪

কুলাউড়ার কালাপাহাড়ে মিলল জঙ্গি আস্তানা
এবার মৌলভীবাজারের কুলাউড়া কর্মধার কালাপাহাড়ের ছাতাচূড়া এলাকায় মিলল জঙ্গি আস্তানা। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা থেকে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা এ অভিযান চালান। গহিন ওই পাহাড়ে তিনটি ঘরে আস্তানা গড়ে তুলেছিল জঙ্গিরা। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে অন্তত ৫ থেকে ৬ কেজি বিস্ফোরক ও মাটির নিচের পুঁতে রাখা পিস্তলের ১৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। সিটিটিসি জানায়, এ আস্তানাটিও ইমাম মাহমুদের কাফেলার জঙ্গিদের। এর আগে গত সোমবার অভিযানে আটক জঙ্গি জামিলের স্বীকারোক্তিতে ওই আস্তানার সন্ধান মেলে। সেখানে জঙ্গল পরিষ্কার করে আরও কয়েকটি ঘর তৈরির প্রস্তুতি চলছিল বলে জানা গেছে। গত শনিবার কুলাউড়ায় গহিন অরণ্যের ভেতর টিলায় ইমাম মাহমুদের কাফেলার জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। এরপর গত সোমবার ওই এলাকার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে অপরিচিত ১৭ ব্যক্তি অটোরিকশায় পালানোর চেষ্টা করলে লোকজন তাদের আটক করে। পরে ঢাকা থেকে সিটিটিসি কর্মকর্তারা গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন, তারাও ইমাম মাহমুদের কাফেলার জঙ্গি। গ্রেপ্তার ১৭ জন হলো—নাটোরের গাঁওপাড়ার জুয়েল মাহমুদ (২৮), সিরাজগঞ্জের পুরাবাড়ির সোহেল তানভীর রানা (৩০), কক্সবাজারের রামুর সাদমান আরেফিন ফাহিম (২১) ও মো. ইমতেজার হাসসাত নাবীব (১৯), যশোরের মোল্লাপাড়ার ফাহিম খান (১৭), পাবনার আতাইকোলার মো. মামুন ইসলাম (১৯), গাইবান্ধার চাঁদপাড়ার রাহাত মণ্ডল (২৪), জামালপুরের সোলাইমান মিয়া (২১), নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আরিফুল ইসলাম (৩৪), বগুড়ার হাটশিপুরের মো. আশিকুল ইসলাম (২৯), ঝিনাইদহের ছয়াইলের তানভীর রানা (২৪), সাতক্ষীরার তালার জুয়েল শেখ (২৫), পাবনার আতাইকুলার রফিকুল ইসলাম (৩৮), সাঁথিয়ার মো. আবির হোসেন (২০), মাদারীপুরের মেহেদী হাসান মুন্না (২৩) ও টাঙ্গাইলের কোয়েল (২৫)। তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে ৯৫টি ডেটোনেটর, তিনটি দা (বঁটি) ও ২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার নতুন আস্তানার সন্ধানে কালাপাহাড়ের ভেতরে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ভোর ৫টায় রওনা হয়ে দুপুর ১২টায় সেখানে পৌঁছানো সম্ভব হয়। অন্তত ৪ ঘণ্টা হেঁটে প্রায় ২০টি উঁচু টিলা বেয়ে কালাপাহাড়ে গিয়ে নতুন জঙ্গি আস্তানার সন্ধান মেলে। আস্তানা থেকে আটক জঙ্গি জামিল তার স্বীকারোক্তিতে জানায়, তারা পূর্ব টাট্টিউলী এলাকার বাইশালী টিলার জঙ্গি আস্তানায় যাওয়া-আসা করত। সিটিটিসি প্রধান বলেন, আটক জঙ্গি সদস্যদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন চিকিৎসক ও চীনে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুজন ইঞ্জিনিয়ার ও নটর ডেম কলেজের ছাত্র রয়েছে।
১৬ আগস্ট, ২০২৩

মৌলভীবাজারে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে অভিযান, আটক ৮
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। এরই মধ্যে বাড়িটি থেকে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাত ৮টার পর থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখা হয় বলে জানান কুলাউড়ার কর্মদা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ। শনিবার (১২ আগস্ট) সকালে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুছ ছালেক ঘটনাস্থল থেকে জানান, অভিযানে ৪ জন পুরুষ ও ৪ জন নারীকে আটক করা হয়েছে। অভিযান এখনও চলছে। বিস্তারিত প্রেস কনফারেন্সে জানানো হবে।  তিনি জানান, তার ইউনিয়নের পূর্ব টাট্টি উলি গ্রামের বাইশালী বাড়ি নামক এলাকায় একটি টিলার ওপর নতুন স্থাপিত একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা থেকে আসা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি টিমের পাশাপাশি মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ ও কুলাউড়া থানা পুলিশও রয়েছে ঘটনাস্থলে। নিরাপত্তাজনিত কারণে কোনো মানুষকে ওই এলাকায় যেতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সকালে প্রশাসন এ বিষয়ে ব্রিফিং করবে বলেও জানান তিনি। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াকূব আলী জানান, প্রায় এক মাস আগে ওই টিলায় অপরিচিত প্রায় ১২ জন বহিরাগত লোক এসে বাড়ি বানিয়ে বসবাস শুরু করেন।   
১২ আগস্ট, ২০২৩

পাহাড়ের জঙ্গি আস্তানা থেকে ফিরল কিশোর
ছেলের গৃহশিক্ষকের উসকানিতে উগ্রবাদের অন্ধকার পথে পা দিয়েছিলেন মা। এরপর অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলেকেও নেন সেই পথে। কথিত হিজরতের নামে ঘর ছেড়ে পাহাড়ে যান নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামা’আতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে। মা ভুল বুঝতে পেরে র‌্যাবের ডি-রেডিক্যালাইজেশনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন। এরপর ছেলেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আকুতি জানান ওই মা। শেষ পর্যন্ত গত মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জ র‌্যাব-১১-এর কার্যালয়ে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে সেই কিশোর। সঙ্গে আরও তিন তরুণ ‘আত্মসমর্পণ’ করেছে। র‌্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, পাহাড়ে জঙ্গি সংগঠন শারক্বীয়ার আস্তানা থেকে তারা পালিয়ে এসে আত্মসমর্পণ করেছে। ওই চারজনের মধ্যে তিন তরুণ হলো সিলেটের হাসান সাইদ (২৬) ও শেখ আহমেদ মামুন (২৩) এবং মাদারীপুরের মো. ইয়াছিন (২১)। তবে নারায়ণগঞ্জের ওই স্কুলছাত্র কিশোর হওয়ায় তার নাম প্রকাশ করা হলো না। তার বয়স ১৬ বছর। ২০২১ সালে র‌্যাব ঘরছাড়া যে ৫৫ তরুণের নাম জানিয়েছিল, ওই তালিকায় তাদের নাম রয়েছে। ওই কিশোরের মা গত ৯ নভেম্বর র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ওই সময় তিনি ছেলেকে ফিরে আসার আকুতি জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আব্বু যদি তুমি আমার মেসেজ পেয়ে থাক, বলতে চাই, তুমি চরম একটা ভুল পথে আছ। তুমি তোমার এই মাকে বিশ্বাস করতে পার। তোমার কাছে আমার অনুরোধ, তুমি যদি কখনো তোমার এই মাকে ভালোবেসে থাক, তাহলে তুমি দেশের জন্য কোনো ধরনের হুমকির কাজ করবে না, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা, নৃশংসতা, অন্যায় কাজে শামিল হবে না। আমি অনুরোধ করছি, তুমি আত্মসমর্পণ করো। প্রশাসন সদয় হবে।’ গতকাল বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই চারজনের আত্মসমপর্ণের তথ্য জানান সংস্থাটির কর্মকর্তারা। সেখানে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মঙ্গলবার রাতে ওই চারজন র‌্যাব-১১-এর ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে স্বেচ্ছায় হাজির হয়। তারা নিজেদের ‘জামা’তুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ থেকে পালিয়ে আসা সদস্য হিসেবে পরিচয় দেয় এবং র‌্যাবের কাছে আইনগত সহযোগিতা চায়। পরে র‌্যাব-১১ তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন জেলা থেকে নিখোঁজ ৫৫ তরুণের নামীয় তালিকা যাচাই করে। তাতে তাদের নাম পাওয়া গেলে চারজনকেই আটক করা হয়। তিনি জানান, ২০২১ সালে ভুল একটি পথকে সঠিক মনে করে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন এক মা। তিনি নিজেই তার একমাত্র ছেলেকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করে প্রশিক্ষণের জন্য পাহাড়ে পাঠিয়েছিলেন। তিনি র্যাবের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে অনুতপ্ত হয়ে ছেলেকে ফিরে পেতে গত ৯ নভেম্বর গণমাধ্যমের সামনে হাজির হয়ে তার সন্তানসহ অন্য তরুণদের ফিরে আসার আকুতি জানান। মায়ের আত্মসমর্পণের প্রায় আট মাস পর র্যাবের হাতে আত্মসমর্পণ করছে ছেলেও। আত্মসমর্পণ করা চারজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে র্যাব মুখপাত্র বলেন, আত্মসমর্পণ করা চারজনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের কিশোর একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। ২০২১ সালে তার শিক্ষক আল আমিনের মাধ্যমে উগ্রবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে জঙ্গি সংগঠন শারক্বীয়ায় যোগ দেয়। পরের বছরের ফেব্রুয়ারিতে ১২ জনের দলের সঙ্গে তৃতীয় ব্যাচে পাহাড়ে কথিত হিজরতের উদ্দেশ্যে গমন করে। হাসান সাঈদ সিলেটের স্থানীয় মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করে। ২০২১ সালে শারক্বীয়ার শূরা সদস্য মায়মুনের মাধ্যমে উগ্রবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে ওই সংগঠনে যোগ দেয়। ওই বছরের নভেম্বরে কথিত হিজরতের উদ্দেশ্যে শূরা সদস্য রাকিবের মাধ্যমে পাহাড়ে যায়। শেখ আহমেদ মামুন সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার প্রকৌশল বিষয়ের ছাত্র। ২০২১ সালে সে সাঈদের মাধ্যমে সংগঠনে যোগ দেয়। ওই বছরের নভেম্বরে সাঈদের সঙ্গে কথিত হিজরতের উদ্দেশ্যে পাহাড়ে যায়। ইয়াসিন নিজ এলাকায় ঘড়ি মেকানিক হিসেবে কাজ করত। ২০২১ সালে সে সিরাজ নামে একজনের মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনটিতে যোগ দিয়ে ওই বছরের নভেম্বরে কথিত হিজরতের উদ্দেশ্যে পাহাড়ে যায়। যেভাবে পাহাড় থেকে পালিয়ে সমতলে তারা: আত্মসমপর্ণের পর স্কুলছাত্র ওই কিশোর র্যাবকে জানিয়েছে, পাহাড়ে যাওয়ার পর সে তার ভুল বুঝতে পারে। এরপর বাড়িতে ফেরার জন্য পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলেও জঙ্গি প্রশিক্ষণের দায়িত্বে থাকা সদস্যরা তাকে যোগাযোগ করতে দেয়নি। অন্য তিনজনও জানিয়েছে, পাহাড়ে যাওয়ার পর তারা তাদের ভুল বুঝতে পারে। তারা দুবার পালাতে চাইলেও ধরা পড়ে যায়। এরপর তাদের বন্দি করে বেত দিয়ে পেটানোসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হতো। র্যাব মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আত্মসমপর্ণকারীরা পার্বত্য অঞ্চলে যাওয়ার পর বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সহযোগিতায় সংগঠনটির সশস্ত্র প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও চিন্তাভাবনা দেখে তাদের ভুল ভাঙে। পরে ওই চারজনসহ বেশকিছু সদস্য সমতলে ফিরতে চাইলেও তাদের বন্দি রেখে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে তাদের জোর করে রসদ পরিবহন, রান্নাবান্না, প্রশিক্ষণের গর্ত করা, ঘর বানানোসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করানো হতো। তিনি আরও জানান, গত বছরের জুনে সিপ্পি পাহাড় থেকে পালিয়ে রনিপাড়া এসে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে যাওয়ার রাস্তা খোঁজার সময় তারা কেএনএফ সদস্যদের হাতে ধরা পড়ে। এ সময় তাদের বন্দি রেখে আবারও নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। এরপর কখনো পালানোর চেষ্টা করলে গুলি করে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। পাহাড়ে র্যাবের অভিযান শুরু হলে তারা পালানোর পথ খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে পালিয়ে গত মার্চে সমতলে চলে আসে। চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকা শুরু করে। এরই মধ্যে বিভিন্ন সময়ে র্যাবের কাছে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ ও ভুল বুঝতে পারা জঙ্গিদের আইনগত সহযোগিতার বিষয়টি তারা জানতে পারে। এরপর গত মঙ্গলবার র্যাব-১১ ব্যাটালিয়নে হাজির হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নতুন ওই জঙ্গি সংগঠনের আমিরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের মোট ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি পাহাড়ে অবস্থান, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে ওই জঙ্গিদের সহায়তার জন্য পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের ১৭ নেতা ও সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১০ আগস্ট, ২০২৩
X