বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই ২০২৪, ৩ শ্রাবণ ১৪৩১
শ্রেণিকক্ষে ঝুলছিল ছাত্রীর মরদেহ
ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ থেকে গতকাল সোমবার সকালে আফিয়া আক্তার (১৪) নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আফিয়া সদর উপজেলার গাভারামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা সুগন্ধা পৌর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক এস এম ওবায়দুল্লাহ আমিন ও মা সদর জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের স্বাস্থ্য সহকারী কুরছিয়া খাতুন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, নাশতার বিরতির সময় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই ছাত্রী স্কুলের পূর্বদিকে চারতলা ভবনের একটি কক্ষে গলায় ফাঁস দেয়। ওই রুমটা তালাবদ্ধ ছিল। তবে রুমে দুটি দরজা থাকায় একটি ভেতর থেকে আটকানো ছিল। হয়তো লাথি দিয়ে দরজা খুলে ওখানে ঢুকেছে। আত্মহননের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা জেনেছি ওই ছাত্রী স্কুলের বাইরের কোনো ব্যক্তিগত কারণে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, মেয়ের বাবা স্কুলে এসেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন তাদের পারিবারিক একটা সমস্যার কারণে এটা হয়ে থাকতে পারে। এ ব্যাপারে তিনি কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক নন এবং তার মেয়ের মরদহ যাতে ময়নাতদন্ত করতে না হয়, সেই অনুরোধ জানিয়েছেন। অন্যদিকে ওই ছাত্রীর পরিবার স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের দায়িত্বহীনতা দায়ী করে এর বিচার দাবি করেছে। তার মা কুরছিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার মেয়ে সকালবেলা সুস্থ অবস্থায় স্কুলে গেল। স্কুলে কী এমন ঘটল যে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করবে। স্কুলের শিক্ষকদের আমার মেয়েকে ফেরত দিতে হবে।’ ওই ছাত্রীর সহপাঠীরা জানিয়েছে, ঝালকাঠি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির এক ছাত্রের সঙ্গে আফিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিছুদিন ধরে ছেলেটি তাকে এড়িয়ে যাচ্ছিল। এতে আফিয়া অভিমান করে আত্মহত্যা করতে পারে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিতুল ইসলাম জানান, ওই ছাত্রীর মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। স্কুলটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফারহা গুল নিঝুম বলেন, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তা তদন্ত করার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিককে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
০২ জুলাই, ২০২৪

ঢাবির কোয়ার্টার থেকে ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফুলার রোড এলাকার আবাসিক কোয়ার্টারে আদ্রিতা বিনতে মোশারফ নামে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। গতকাল রোববার ভোরে দক্ষিণ ফুলার রোডের ১৯ নম্বর ভবনের তৃতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া নাটোর ও যশোরে দুই ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঢাবি প্রতিনিধি জানান, আদ্রিতা ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী এবং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোশারফ হোসেনের মেয়ে। প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদূর রহমান কালবেলাকে বলেন, অধ্যাপক মোশারফ হোসেনের মেয়ে আদ্রিতা মোশারফ নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেছে। সাড়ে ৩টা বা ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আমি জানতে পেরেছি। পরে পুলিশের সহায়তায় লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া হয়। এ বিষয়ে জানতে শাহবাগ থানার ওসি মোস্তাজিরুর রহমানকে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি। নাটোর প্রতিনিধি জানান, শনিবার রাত ১১টার দিকে শহরের উত্তর বড়গাছা জোলারবাতা এলাকার হাফসা ছাত্রী নিবাস থেকে নুসরাত জাহান মারিয়া বৈশাখী নামে এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বৈশাখী সিংড়া উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের রাকিবুল ইসলামের মেয়ে এবং জেলা ব্যাডমিন্টন দলের সদস্য। সে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। নাটোর সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছিল সে। ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় দরজা ভেঙে তার মরদেহ নামিয়ে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, বৈশাখীর বাবার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে তাদের কথা হয়। সে সময় বাবা কোনো এক কারণে তাকে বকাঝকা করেন। তারপর বিকেল ৪টা থেকে তার বাবা তাকে ফোন দিলেও সে ফোন রিসিভ করেনি। ধারণা করা হচ্ছে, অভিমান করেই সে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি জানান, মনিরামপুরে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছে দ্বাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। ওই শিক্ষার্থীর নাম সাবিহা খাতুন। সে উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল জলিলের ও গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। শনিবার দুপুরে বাগডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের ভাই রাকিব হোসেন বলেন, সকালে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষার সময় সাবিহার কাছে থাকা কাগজের টুকরা দেখে ফেলেন কক্ষ পরিদর্শক। পরে প্রায় দেড় ঘণ্টা তার খাতা আটকে রাখা হয়। কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয় সে। পাশে ফেলে রাখা একটি চিরকুটে পরীক্ষার হলের ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়। মনিরামপুর থানার ওসি এবিএম মেহেদী মাসুদ কালবেলাকে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। তবে কাগজে মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করা হয়নি। চিরকুটে সাবিহা লিখেছে, আমার কিছু মনে থাকে না বলে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগে অল্প একটু কাগজে তথ্য অংশ করে নিয়ে যাই পড়তে পড়তে। পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় তা ফেলে দিতে মনে ছিল না। পরীক্ষার মধ্যে গোপালপুর কলেজের সমাজবিজ্ঞান শিক্ষক তা দেখে ফেলেন। আমি তার কাছে ভুল স্বীকার করলাম। তিনি আমার খাতা নিয়ে দেড় ঘণ্টা বসিয়ে রাখলেন, তাও খাতাটা দিলেন না। তাসলিমা মেডাম এবং ইসমাইল স্যার আমাকে তাড়িয়ে দিলেন। তাই আমি অবশেষে লজ্জায় মুখ দেখাতে না পেরে…। কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল করিম বলেন, সাবিহা খাতুনের আত্মহত্যার বিষয়টি দুঃখজনক। এ ঘটনার পর শিক্ষক ও কমিটিকে নিয়ে জরুরি সভা করা হয়েছে।
০১ এপ্রিল, ২০২৪

এবার ওড়না কেটে নামানো হলো পাবিপ্রবি ছাত্রীর মরদেহ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। সারভিন সুলতানা (২৬) বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ওই শিক্ষার্থী। সোমবার (২৫ মার্চ) মনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার ৫ নাম্বার রোডের গ ব্লকের একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ওই ছাত্রী মেহেরপুরের জেলার গাংনী থানার সালদা গ্রামের আজিজুল ইসলামের কন্যা। বাড়ির মালিকের স্ত্রী মেরিনা ইসলাম কালবেলাকে জানান, ২ মাস আগে ওই ছাত্রীর স্বামী এই বাসাটি ভাড়া নেন। তবে তারা সেখানে নিয়মিত থাকতেন না। গতকাল রাতে নিহতের স্বামী বাসায় ছিলেন না, তিনি ঢাকায় ছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টায় তার স্বামী ঢাকা থেকে আসলে এক সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে যান। ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন দরজা বন্ধ। দরজা ধাক্কাধাক্কির পরেও না খুললে সবার সন্দেহ হয়। পরে পুলিশকে ফোন দিলে তারা ফায়ার সার্ভিসকে নিয়ে এসে দরজা ভাঙলে নিহতকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহতের স্বামীর নাম আসিফ মোর্শেদ (২৬) তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার পূর্ব এখলাসপুরের আবদুল মালেকের ছেলে। তিনি কালবেলাকে জানান, গতকাল বিকেল ৪টার সময় সারভিনের সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ দেখাচ্ছিল। সেহরির সময় ফোন দিলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে আমি ঢাকা থেকে রওনা হই। বাসায় এসে বাড়ীওয়ালাকে সাথে নিয়ে ফ্ল্যাটে গেলে ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ দেখি। এরপর পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে খবর দিলে তারা এসে দরজা খুললে তাকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখি। নিহতের সহপাঠীরা জানান, নিহত ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের ৪০৯ নাম্বার রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। বিয়ের পর থেকে সে কখনো হলে থাকতেন কখনো স্বামীর সঙ্গে মনসুরাবাদে থাকতেন। বিয়ের পর কারও সঙ্গে তেমন কিছু শেয়ার করতেন না। হঠাৎ এ ঘটনায় তারা বিস্মিত হয়েছেন। এই ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু প্রশাসনকে সেটি তদন্ত করে বের করার অনুরোধ জানান  তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা বেলা ১১টায় খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাই। তখন দেখি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস চলে এসেছে। এরপর দরজা ভাঙলে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, আমরা খবর পেয়ে পুলিশ পাঠাই। সেখানে পুলিশ গিয়ে ফ্ল্যাটে ঝুলন্ত অবস্থা পাওয়া যায়। মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত বলা যাবে।
২৫ মার্চ, ২০২৪
X