আলোচিত সেই ১৫ লাখ টাকার ছাগল এখন সাভারে
সাদেক এগ্রোর আলোচিত সেই ১৫ লাখ টাকার ছাগলটির সন্ধান মিলেছে সাভারের সাদেক এগ্রোর খামারে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের ভাঙ্গাব্রিজ এলাকায় অবস্থিত খামারে দুদকের অভিযান পরিচালনা করার সময় ছাগলটির সন্ধান মিলে। দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বের ৯ সদস্যের একটি দল এই অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় আলোচিত সেই ছাগলটির পাশাপাশি ১০টি নিষিদ্ধ ব্রাহামা জাতের গরুর সন্ধান মেলে। এ সময় অভিযানে নেতৃত্ব প্রদানকারী দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আযাদ জানান, এখানে আসার পর একটি শেডে ৩টি ব্রাহামা জাতের গাভি ও সাতটি ব্রাহামা বাছুরের সন্ধান পেয়েছেন তারা। এ সময় কাপড় দিয়ে ঘিরে রাখা একটি ছোট কক্ষে ১৫ লাখ টাকা দামের আলোচিত সেই ছাগলটিরও দেখা মেলে। এ ছাড়া এখানে কিছু নথির খাতা পাওয়া গেছে। সেগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর যেহেতু ব্রাহামা জাতের গরু আমদানি ও উৎপাদন নিষিদ্ধ সেহেতু এ গরুগুলোর ব্যাপারে আমাদের কর্তৃপক্ষকে জানাবো এবং সেই মোতাবেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
০১ জুলাই, ২০২৪

ছাগল পাললেই মিলবে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ
দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঘোষিত পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ চার শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন কৃষক। একই সঙ্গে এ তহবিল থেকে এখন ছাগল, ভেড়া, গাড়ল পালন করতেও ঋণ নেওয়া যাবে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্যপণ্যের বৃদ্ধি পাওয়ায়, খাদ্য সংকটের আশঙ্কা আছে উল্লেখ করে ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে সময় ছাগল-ভেড়া ও গাড়ল পালনের জন্য এ তহবিলের বিধান ছিল না। নতুন জারি করা প্রজ্ঞাপনে এই বিধানটি যুক্ত করা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি খাতের জন্য গঠিত পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিমটির চাহিদা থাকায় ব্যাংক থেকে গ্রাহকপর্যায়ে ঋণ বিতরণের সময়সীমা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো। একই সঙ্গে অধিক সংখ্যক প্রকৃত চাষি ও খামারি যেন উপকৃত হয় সে লক্ষে ইতোমধ্যে স্কিমটির আওতাভুক্ত খাতগুলোর পাশাপাশি কন্দাল ফসল চাষ এবং ছাগল, ভেড়া, গাড়ল পালন খাত অন্তর্ভুক্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই তহবিলের অধীনে ব্যাংকগুলো নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করতে পারবে। ক্ষুদ্র, প্রান্তিক, বর্গাচাষি ও ফসল (ধান, শাকসবজি, ফুল ও ফল) চাষের জন্য সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করতে পারবে। তবে গরু-ছাগল পালনসহ প্রাণিসম্পদ খাতে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ঋণ পরিশোধে কৃষক বা গ্রাহক তিন মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৮ মাস সময় পাবেন।
২৭ জুন, ২০২৪

সরানো হলো ১৫ লাখ টাকার সেই ছাগল
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সাদেক এগ্রোর অবৈধ স্থাপনার উচ্ছেদ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃপক্ষ। অভিযানের একপর্যায়ে খামারের আবাসিক কয়েকজন কর্মচারী বাধা দেন। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।  বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুর ১২টার পর সাদেক এগ্রোর খামারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করে ডিএনসিসি। উচ্ছেদ অভিযানের সময় আলোচিত সেই ১৫ লাখ টাকার ছাগলটিসহ অন্যান্য গবাদিপশু সরিয়ে নেওয়া হয়। এই ‘উচ্চবংশীয়’ ১৫ লাখ টাকা দামের ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনায় আসেন এনবিআরের সদ্য সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ওরফে ইফাত। বৃহস্পতিবার ‌‘গরু মাফিয়া’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক কালবেলা। এ সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বেরিয়ে আসে সাদেক এগ্রোর মাফিয়াকাণ্ড। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রভাবশালীদের সঙ্গে ওঠাবসা তার। চোখধাঁধানো বিজ্ঞাপন আর নানা চমকের কারণে বারবার আলোচনায় আসে তার খামার। সেখানে নিজেই ক্রেতাদের হাসিমুখে অভ্যর্থনা জানান। দেখেশুনে মনে হয় এই ‘সাদেক এগ্রো’ ঘিরেই যেন পরিচালিত হয় তার সার্বিক কার্যক্রম। কিন্তু এই খামারের আড়ালে দিনে দিনে উত্থান ঘটেছে এক গরু মাফিয়ার, যার নাম শাহ ইমরান হোসেন। দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে রাজধানী পর্যন্ত বিস্তার করেছেন গরু চোরাচালানের সিন্ডিকেট। ভারত, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চোরাইপথে নানা জাতের গরু আনা হয়। সে জন্য স্তরে স্তরে রাখা হয় দালাল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে তোলা হয়েছে গরু রাখার গোপন ডেরা। ঢাকার বছিলায় খাল দখল করে গড়ে তুলেছেন এগ্রো ফার্ম। প্রয়োজনে ব্যবহার করেন তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের। এ খাতের অনিয়ম দেখার দায়িত্বে থাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরও তার হাতের মুঠোয়। কথামতো না চললে অন্য খামারিদের বিরুদ্ধে যখন তখন মামলা ঠুকে দেন। দাপট দেখিয়ে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদও দখলে নিয়েছেন মোহাম্মাদ ইমরান হোসাইন। কালবেলার দীর্ঘ অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। 
২৭ জুন, ২০২৪

খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় এতিমদের মাঝে ছাগল ছদকা
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনা করে এতিমের মাঝে দুটি ছাগল ছদকা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে রাজধানীর পশ্চিম মালিবাগের একটি এতিমখানায় দুটি ছাগল জবাই করে এতিমদের দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং, যুবদল নেতা সাঈদ ইকবাল মাহমুদ টিটু, শেখ আব্দুল হালিম খোকন, আহসান উদ্দিন খান শিপন, আসাদুজ্জামান পলাশ। আরও উপস্থিত ছিলেন- মেহেবুব মাসুম শান্ত, স্বেচ্ছাসেবক দলের সারোয়ার ভুইয়া রুবেল, গোলাম মোর্শেদ রাসেল, মেহের কায়সার রানা, ছাত্রদলের সহসভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, ছাত্রদলের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসানসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
২৭ জুন, ২০২৪

ছাগলকাণ্ডের দেশ এবং হাম্পটি ডাম্পটি ডিজঅর্ডার…
প্রয়াত আকবর আলি খান তার ২০১০ সালে প্রকাশিত ‘Humpty Dumpty Disorder and Reform Strategies in Bangladesh’ প্রবন্ধে বাংলাদেশে ১৯৯১-২০১০ এর মধ্যে সূচিত বিভিন্ন প্রশাসনিক ও নীতি সংস্কার (যা মূলত বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও দাতাগোষ্ঠীর চাপে হাতে নেওয়া)-এর তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন, ২৫টি কাঠামোগত সংস্কার উদ্যোগের মাত্র ৫টি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়েছে বলে ধরা যায়। সম্প্রতি ওই তালিকা ধরে পড়তে গিয়ে দেখলাম এর অনেকগুলোই আবার গত দশকে উলটো দিকে যাত্রা শুরু করেছে। এই প্রবন্ধে আকবর আলি খান তার দীর্ঘ প্রশাসনিক ও গবেষণার অভিজ্ঞতা থেকে যেসব ইশারা পাঠককে দিতে চেয়েছেন তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো এর শিরোনাম- Humpty Dumpty Disorder। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই ডিজঅর্ডার বলতে তিনি আমাদের স্কুলজীবনে পঠিত নার্সারি রাইমের উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়েছেন- ‘Humpty Dumpty sat on a wall Humpty Dumpty had a great fall All the king's horses and all the king's men Couldn't put Humpty Dumpty together again.’ বাংলাদেশের বাস্তবতায় প্রশাসনিক সংস্কার প্রশ্নে দীর্ঘ আমলাতান্ত্রিক অভিজ্ঞতা থেকে তার মূল্যায়ন হলো- এদেশের অনেক প্রতিষ্ঠানই সংস্কারের অতীত। তিনি যেন দিব্যদৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছেন, ‘All the king's horses and all the king's men, Couldn't put Humpty Dumpty together again.’ প্রতিষ্ঠান সংস্কারের সাফল্যের ব্যাপারে পাবলিক পলিসির নানা গবেষণা থেকে প্রাপ্ত চিন্তার আলোকে তিনি বলছেন – ‘Institutional development works only if there are enough good employees who can effectively tame the bad employees. If good employees constitute a minuscule portion of total employees, institutional reform strategy will not work.’ তিনি আরও দেখাচ্ছেন অকার্যকর প্রতিষ্ঠান তার দুর্নীতিবাজ কর্মীদের আওতাধীন রেখে সংস্কার করার বাস্তব সীমা (threshold) আছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব প্রচেষ্টা তারা ব্যর্থ করে দেয়। অতিমাত্রায় দুর্নীতিপ্রবণ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অনেক সময় ভালো সমাধান হলো তাকে ভেঙে ফেলা, বিলুপ্ত করে ফেলা এবং আবার নতুন করে শূন্য থেকে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সীমিত আকারে এমন নজির আছে তিনি দেখাচ্ছেন- যেমন দুর্নীতিগ্রস্ত পিডিবি থেকে রুরাল ইলেক্ট্রিফিকেশন বোর্ড করার উদাহরণ।  ২০১০ সালে এই প্রবন্ধ লেখার সময় তিনি সাম্প্রতিক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, টাকা পাচার ইত্যাদির মাত্রা দেখেননি। তখনো যথেষ্ট দুর্নীতি ছিল, তবে তা পনেরো লাখ টাকার ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচিত হওয়ার পর্যায়ে বোধহয় পৌঁছে যায়নি! আজকের ছাগলকাণ্ডের দেশে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার নিয়ে ভাবনার সময় একজন পাঠক হিসেবে দেখতে পাই বাংলাদেশের Humpty Dumpty রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর কখনোই বোধহয় কার্যকরভাবে সংস্কার করা যাবে না! আকবর আলি খান যে ইশারা রেখে গেছেন তা সত্য হয়ে উঠছে ক্রমেই- You can't put Humpty Dumpty together again! তার পরামর্শ অনুযায়ী যদি আমরা চেষ্টা করি- বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, বিআরটিএ ইত্যাদি সেবাদানকারী কিছু প্রতিষ্ঠান না হয় ভেঙে আবার নতুন করে শুরু করা গেল, কিন্তু জনপ্রশাসন-পুলিশ-সামরিক বাহিনী-কর বিভাগ ইত্যাদিতে যে বিস্তৃত রেন্ট সিকিং কোয়ালিশন তৈরি হয়েছে- সেগুলো ভেঙে দিয়ে বাস্তবে কোনো রাজনৈতিক ম্যান্ডেটওয়ালা সরকার কিংবা ম্যান্ডেটবিহীন সরকার কি আদৌ কোনোভাবে টিকে থাকতে পারবে? বাস্তবতা হলো- পারবে না! বাংলাদেশের রাজনৈতিক অর্থনীতি সেই সংস্কারের বাস্তবতা পেরিয়ে এসেছে। দুর্নীতি রোধে বেতন বাড়িয়ে, পূর্বাচল ধরনের প্রকল্পে সরকারি কর্মচারীদের সুলভে জমি, সহজ ঋণে গাড়ি এসব দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ক্ষুধা কি আর নিবারণ করা যাবে? যখন তাদের বাসনা হয়ে উঠেছে কানাডার বাড়ি, দুবাইতে কন্ডোমিনিয়াম, দেশে নিজ নিজ এলাকায় বিস্তৃত জমিদারি? বরং তাদের দুর্নীতিতে বাধা দিলে এরা যে কোনো সরকারকেই বেকায়দায় ফেলে দেবে!  যে কোনো বড় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারই প্রথমত রাজনৈতিক, এরপর আসে তার নীতিসংক্রান্ত নানা কৌশলের প্রশ্ন। কিন্তু Humpty Dumpty Disorder থেকে উদ্ধারের কোনো বাস্তবসম্মত রাজনৈতিক পথ আপাতত আমরা দেখি না। আরেক প্রয়াত লেখক শহীদুল জহিরের বইয়ের নাম থেকে ধার করে তাই বলতে হয়- এটাই আপাতত আমাদের ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা।’ গালিব ইবনে আনোয়ারুল আজীম : উন্নয়নকর্মী   
২৫ জুন, ২০২৪

আমি সেই ভাইরাল ছাগল বলছি
হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। আমিই সেই ভাইরাল হওয়া ছাগল, যাকে ঘিরে লেখা হয়নি এমন কোনো প্রিন্ট মিডিয়া নেই। এমন কোনো ইলেকট্রনিক মিডিয়া নেই, যারা আমাকে নিয়ে প্রতিবেদন করেনি। আর করবেই না কেন, আমি কি আর যেই-সেই ছাগল? আমার উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। আমার রয়েছে অতি উচ্চস্তরের বংশমর্যাদা। গায়ের রং মায়াবী হরিণের মতো। বেড়ে ওঠা দেশের সেরা খামারে। তবে শুধু এজন্যই যে, আমি ভাইরাল হয়েছি, তা কিন্তু নয়। আমাকে ভাইরাল করেছে একটি ছবি। দুর্ভিক্ষের দেশে রাস্তার কিনারে পড়ে থাকা মৃতপ্রায় শিশুর মাংস খেতে উদ্ধত শকুনের ছবি শিরোনাম হয়। আর প্রাচুর্যের দেশে ১৫ লাখ টাকা দামের ছাগলের ছবি শিরোনাম হয়। কেন ও কোন বিবেচনায় আমার দাম ১৫ লাখ আর আমার প্রতিবেশী গরুর দাম ১ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল, তা আমার জানার কথা নয়। আমাকে বলা হলো, ১৯ বছরের এক তরুণ আমাকে কিনেছে ১২ লাখে। কিন্তু আমি ১২ লাখ টাকার ছাগলের জন্য কত জনের ১২টা বাজবে, তা ছিল সবার অজানা। আমাকে আরও বলা হলো, এখন আমার ফটোসেশন হবে। এমন ফটোসেশন আমার জন্য নতুন কিছু নয়। আমার জুনিয়ররাও বহু ফটোসেশন করেছে। তাই দেরি না করে দাঁড়িয়ে গেলাম। সেই তরুণও আমাকে পাওয়ার আনন্দে গর্বের হাসি দিয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিল। ছাগলময় হয়ে উঠল বাংলার সাইবার জগৎ। তবে সেই আনন্দ বিষাদে পরিণত হতে সময় লাগল না। তরুণ বয়সী ক্রেতা জানত না যে, এই সমাজে বেহুদা কিছু দুপায়া ছাগল আছে, যারা মিডিয়ায় ম্যা ম্যা করেই মজা পায়। গোটা সমাজ যখন সব অন্যায় দেখেও কেবল ছাগলের মতো জবর কাটে আর ঝিমায়, তখন এই দুপায়া ছাগলরা নাকি বিবেকের টানে তিনপায়া ক্যামেরা নিয়ে মাঠে থাকে। কেনরে বাপ! তোদেরই কেবল বিবেক আছে, বাকিদের নেই? বাকিদের মাথায় কি কেবল গরুর গোবর? কই তারা তো কিছু বলে না! তোদের কি খেয়েদেয়ে কোনো কাজ নেই? এত রাসেলস ভাইপার, উরাধুরা গান, ক্রিকেটের কারবার—এসব নিয়ে থাক তোরা। আমি ছাগলকে নিয়ে তোদের এত আগ্রহ কেন? তোরা তো আর চারপায়া ছাগল না যে, আমাকে নিয়ে হিংসা করবি! আচ্ছা, আমাকে নিয়ে না হয় খবর করলি, অসুবিধা নেই। কিন্তু যে ১২ লাখে কেনার জন্য ১ লাখ টাকা বায়না দিল, তারে নিয়ে খবর করলি কেন? আমি উচ্চবংশীয় হলেও আমার বাপ কে, মা কে, সৎমা কে, সৎভাইবোন কে; এগুলো কোনো ব্যাপার না। কারণ আমরা ছাগল, আমাদের কোনো কাপড়চোপড় পরতে হয় না। কিন্তু যে কিনেছে, তার জন্য তো এটা একটা ব্যাপার, তাই না? এখন শুনছি এতদিন যিনি তার বাবা ছিলেন, একই রং ও ডিজাইনের পাঞ্জাবি পরে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিতেন, তিনি বলেছেন এটা আমার ছেলে না। আমি তাকে চিনিও না। আবার সেই ছেলেও বলল, আমি ছাগল কিনি নাই, মালিকের অনুরোধে ছবি তুলেছি শুধু। মালিক বলল, ওই ছেলে কি সেলিব্রেটি যে তাকে আমার ছাগলের সঙ্গে ছবি তুলতে বলব, আমি এত ছাগল না। আমার কাছে অগ্রিম ১ লাখ টাকা দেওয়ার প্রমাণ আছে। এসব দেখেশুনে দুপায়া কয়েক দল ছাগল মনের আনন্দে ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো লাফাচ্ছে আর নানা ফন্দি-ফিকির করছে। একদল নেমেছে সিনেমা বানাবে, নাম ‘ছেলে তুমি কার?’ নাটকের শুটিং শুরু হয়েছে, নাম ‘ছাগল তুমি কার?’ শীতকালের জন্য নতুন যাত্রার মহড়া চলছে, নাম ‘ছেলে বড় না ছাগল বড়?’ স্টুডিওওয়ালারা গান বাঁধছে ‘কী সাপে দংশিলো আমার ছাগলেরে, আমার দাইমা, দাইমা গো’। ওয়েব সিরিজ চলছে ‘মা-ছেলে বিদেশে!’ এসব ছাগলামির কোনো মানে আছে? কার্টুনওয়ালারা আবার কম যায় না। শুরু করেছেন নিত্যনতুন ফাজলামি। বাড়ির নিচে গাড়ির গ্যারেজে রাখা এক কোরবানির ছাগল কোন ফাঁকে টুক করে পাশের এক চেয়ারে উঠে বসে পড়ে। কেয়ারটেকার দৌড়ে আসে ছাগল নামাতে। বাড়ির মালিক বাধা দেয়, বলে, থাক—ওকে আর বিরক্ত করিস না। এর চেয়ে বড় বড় চেয়ারেও ছাগলরা বসে আছে। আমাদের ছাগল জাতির এমন স্বীকৃতিতে আমরা অহংকার বোধ করি। বিশাল ছাগল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন একজন। পথে দাম জিজ্ঞেস করলেই গর্বিত ক্রেতা উত্তর দিচ্ছেন ‘৩ লাখ’। এসব দেখে এক পথিক জিজ্ঞেস করলেন, ‘গরুর দাম কত?’ ক্রেতা থমকে দাঁড়ালেন। রেগে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি গরু চেনেন না?’ পথিক প্রতিউত্তর দিলেন, ‘গরু চিনি বলেই তো ছাগলকে জিজ্ঞেস করলাম, গরুর দাম কত?’ ক্রেতা আরও রেগে গেলেন, ‘এই কথার মানে কী?’ পথিক বললেন, ‘যাদের মাথায় গোবর তারা গরু, তারা এ কথার মানে বুঝবে না। যে ৩ লাখ টাকায় ছাগল কিনে আবার সেই ছাগলের রশি হাতে রাস্তা দিয়ে হাঁটে, সে এই সমাজে গরু নয়তো কী? তার দাম তো ছাগলের কাছেই জানতে হবে তাই না?’ না পথিক আর কথা বাড়াতে পারলেন না। তাড়া খেয়ে ভোঁ-দৌড় দিলেন। এমন এক বর্ষাকালে রাজা শিকার করতে জঙ্গলে যাবেন। আবহাওয়ামন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজ ও আগামী দুই-তিন দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে?’ অনেক গবেষণা করে মন্ত্রী বললেন, ‘খুব চমৎকার আবহাওয়া থাকবে রাজামশাই! আপনার শিকার ও ভ্রমণ শুভ হোক রাজামশাই।’ সাথীদের নিয়ে যাত্রা করলেন রাজা। পথে ছোট এক খরস্রোতা পাহাড়ি নদীতে কাপড় ধোয়ায় ব্যস্ত এক ধোপি। দেখলেন রাজা হাতি নিয়ে নদী পার হতে চলেছেন। ধোপি বাধা দিল। মিনতি করে বলল, ‘গুস্তাকি মাফ জাঁহাপনা! আপনি নদীর ওপারে যাবেন না। আজসহ সামনে কয়েক দিন প্রচণ্ড বৃষ্টি হবে। নদীর পানি বেড়ে যাবে, প্রচণ্ড স্রোত হবে। আপনি চাইলেও আর ফিরতে পারবেন না।’ ধুপির কথা শুনলেন না রাজা, বরং তিরস্কার করলেন। আবহাওয়ামন্ত্রীর কথায় আস্থা রেখে নদী পেরিয়ে জঙ্গলে ঢুকে গেলেন। কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি শুরু হলো, যা চলল টানা কয়েক দিন। বৃষ্টি থামার পর ক্ষুব্ধ রাজা প্রাসাদে ফিরলেন এবং প্রথমেই আবহাওয়ামন্ত্রীকে বরখাস্ত করে সেই ধোপিকে আবহাওয়ামন্ত্রী বানালেন। বৃষ্টি বিষয়ে এ ধোপির (বর্তমানে আবহাওয়ামন্ত্রী) পূর্বাভাস সবসময় মিলে যেত। এতে রাজা খুব খুশি থাকতেন। একদিন রাজা কৌতূহলবশত তার আবহাওয়ামন্ত্রীকে (ধোপি) এমন নির্ভুল পূর্বাভাস দেওয়ার রহস্য জানতে চাইলেন। মন্ত্রী কোনো ভণিতা না করেই বললেন, ‘আলমপনা, এ কৃতিত্ব আমার নয়, সব কৃতিত্ব আমার ছাগলের। প্রতিদিন সকালে আমি ছাগলটাকে মাঠে বেঁধে দিই ঘাস খাওয়ার জন্য। মনের আনন্দেই সে ঘাস খায়। তবে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আগে থেকেই টের পায়। তখন ঘরে নেওয়ার জন্য এই ছাগল ম্যায়ে ম্যায়ে করে চিৎকার করে। এতে আমি বুঝতে পারি বৃষ্টি হবে।’ রাজা সব শুনে বেজায় খুশি হলেন। সেইসঙ্গে আরেকটা কাজ করলেন, আবহাওয়ামন্ত্রী (ধোপিকে) অব্যাহতি দিয়ে সেই ছাগলকেই আবহাওয়া মন্ত্রী বানিয়ে দিলেন। তখন থেকেই ছাগলের শাসন কায়েম হলো রাজ্যজুড়ে। রাজাকে খুশি করতে প্রজারাও ন্যায্য কথা না বলে ছাগলের মতো ‘ম্যায়ে... ম্যায়ে...’ করা শুরু করল। তাই তো বলি, আমি যেই-সেই ছাগল নই, আমি ভাইরাল ছাগল। আমার সঙ্গে লাগলে খবর আছে! এখন দেশের যাবতীয় স্যাটেলাইট ও রাডারের কেন্দ্রবিন্দুতে আছি আমি! কে আমাকে এ খামারে কত টাকায় বিক্রি করেছে, তার তদন্ত হচ্ছে। সেই টাকার উৎস ও ছাগল বিক্রির টাকার ট্যাক্স ফাইলে তোলা হয়েছে কি না, সেটাও তদন্ত হচ্ছে। ভবিষ্যতে যে আমাকে কিনবে, তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কনটেন্ট তৈরি করতে প্রস্তুত লক্ষাধিক দুপায়া ছাগল, ট্যাক্স কর্মকর্তা, গোয়েন্দা বাহিনী, পাইকপেয়াদা, চাঁদাবাজ, রাজনৈতিক ফান্ড কালেক্টর, মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার মোয়াল্লেম, পাড়া-মহল্লার ক্লাবের কর্মকর্তা, ভিআইপি কসাইসহ আরও অনেকে। সবাই অপেক্ষা করছে, কে আমাকে কত টাকায় কিনবে, তা দেখার জন্য। তাই বড় দুশ্চিন্তায় আছি আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে! ভাইরাল হলে যে ভবিষ্যৎ এমন হবে, তা জানত কোন ছাগলে? তবে কানে কানে শিয়াল মামা নতুন কথা শুনিয়ে গেল। সমাজে দুপায়া ছাগলদের দেখানোর জন্য টেবিলের ওপর দিয়ে কাগজে-কলমে অল্প কিছু আর বাকিটা টেবিলের নিচ দিয়ে লেনদেন করে নাকি অনেক কিছু করা যায়। এ সময় দুপায়া ছাগলরা ছাগলের মতোই কেবল ঝিমায় আর জবর কাটে। কিচ্ছু দেখে না, কিছু শুনে না, কিচ্ছু বলে না, কিচ্ছু বোঝে না। অতএব নো টেনশন, ডু ফুর্তি। এতদিন দুপায়া ছাগলরা বলেছে, ‘পাগলে কি না বলে, ছাগলে কি না খায়।’ এখন দিন পাল্টে গেছে। এখন থেকে বলতে হবে, ‘ছাগলে কি না পারে, পাগলে যদি ঘুষ খায়।’ যাকে কেউ কোনো দিন পোস্টিং করার সাহসও করেনি, আমি ছাগল তাকে পোস্টিং করিয়ে দিয়েছি। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ থেকে সরিয়ে দিয়েছি। অতএব, ‘ডোন্ট আন্ডারস্টিমেট দ্য পাওয়ার অব এ ছাগল।’ লেখক: অবসরপ্রাপ্ত মেজর, গবেষক, বিশ্লেষক ও কলামিস্ট ইমেইল: [email protected]
২৫ জুন, ২০২৪

নওগাঁয় কৃষক লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে ছাগল চুরির অভিযোগ
নওগাঁর বদলগাছীতে চুরি করে ছাগল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে এক কৃষক লীগ নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ছানাউল হক হিরো উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি। ওই ঘটনায় গত শুক্রবার তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী জাহেরা বেগম। এর আগে ঈদের এক দিন আগে ১৫ জুন দুপুরে উপজেলার হঠাৎপাড়া (মাস্টারপাড়া) এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সদর ইউনিয়নের মাস্টারপাড়ার জাহেরা বেগমের সঙ্গে ছানাউল হক হিরোর পারিবারিক বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন ভুক্তভোগীর ২৬ হাজার টাকা দামের একটি খাসি হিরোর বাড়ির গেটের কাছে যায়। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সেটি পাওয়া যায়নি। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন, ছাগলটি অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন হিরো। ছানাউল হক হিরো জানান, শুনেছি পাশের বাড়ির এক নারী আমার বিরুদ্ধে ছাগল চুরির অভিযোগ দিয়েছেন। সবাই তদন্ত করে দেখুক, আমার কিংবা আমার পরিবারের কারও এ ধরনের কোনো রেকর্ড আছে কি না। বদলগাছী থানার ওসি মাহবুবুর রহমান মোবাইল ফোনে বলেন, গত শুক্রবার ছাগল চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেন এক নারী। পরে জেনেছি, তাদের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব আছে। তবে বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা দরকার।
২৩ জুন, ২০২৪

কৃষকলীগ নেতার বিরুদ্ধে ছাগল চুরির অভিযোগ
নওগাঁর বদলগাছীতে এক নারীর ছাগল চুরি করে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে এক কৃষকলীগ নেতার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২১ জুন) ভুক্তভোগী ওই নারী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। অভিযুক্ত কৃষকলীগ নেতার নাম সানাউল হক হিরো (৪০)। তিনি উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি। ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম জাহেরা বেগম। এর আগে গত শনিবার ঈদের দুই দিন আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার হঠাৎপাড়া (মাস্টার পাড়া) এলাকায় এমন ঘটনা ঘটে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা জাহেরা বেগমের সঙ্গে একই এলাকার ছামসুল আলমের ছেলে ছানাউল হোসেন হিরোর সঙ্গে পারিবারিক বিষয়ে মনোমালিন্য ও পূর্ব বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জের ধরে গত শনিবার ১৫ জুন দুপুরে জাহেরা বেগমের ২৬ হাজার টাকা মূল্যের একটি ছাগল (খাসি) বিবাদী হিরোর বাড়ির গেটে গেলে সে অসৎ উদ্দেশ্যে ছাগলটি বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়। এরপর ছাগলটি (খাসি) অনেক খোঁজাখুঁজি করে পায়নি ভুক্তভোগী ওই নারী। পরে বিভিন্নভাবে জানতে পারে ছাগলটি চুরি করে অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে হিরো। ভুক্তভোগী জাহেরা বেগমের অভিযোগ, পরবর্তীতে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে আমি ছাগলের বিষয়ে জানতে চাইলে হিরো অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং মারধরের হুমকি দেন। তাই আমি নিরুপায় হয়ে তাকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।  এদিকে ছাগল চুরির ঘটনায় হটাৎপাড়ার (মাস্টারপাড়া) স্থানীয় কয়েকজন নারী-পুরুষ জানান, ঈদের দুই দিন আগে জাহেরার খাসি ছাগল চুরি হয়েছে সত্য। কে বা কারা ছাগল চুরি করেছে এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। তবে হিরোর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছে জাহেরা। তাই আজকে এখানে পুলিশ আসছিল। এ বিষয়ে বদলগাছী উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ছানাউল হক হিরো জানান, আমি শুনেছি পাশের বাড়ির জাহেরা নামে এক মহিলা আমার বিরুদ্ধে ছাগল চুরির অভিযোগ দিয়েছে। সবাই তদন্ত করে দেখুক আমার এবং আমার পরিবারের কারো নামে এ ধরনের কোনো রেকর্ড আছে কিনা। বদলগাছী থানার ওসি মাহবুবুর রহমান কালবেলাকে বলেন, গত শুক্রবার ছাগল চুরির ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। তাদের মধ্যে পারিবারিক গন্ডগোল আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।
২২ জুন, ২০২৪

ছাগলকাণ্ড / ভাইরাল ছাগল বিক্রির আশা ২০ লাখে
লাখ টাকা বায়না করেও ছাগল নেয়নি সমালোচিত এনবিআর কর্মকর্তা ড. মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রথম সন্তান মুসফিকুর রহমান ইফাত। ১৫ লাখে কোরবানির ছাগল কিনছে এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। আর ছেলের ছাগলকাণ্ডে বিপাকেই পড়েন এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর। তাই ঈদের আগে সেটি আনতে যায়নি ক্রেতা। সে কারণে এখনো খামারেই আছে ছাগলটি। কোরবানির ঈদ ছাড়া এত দামে ছাগল বিক্রির সম্ভাবনা না থাকায় আগামী ঈদুল আজহার জন্য বুক বেঁধে আছেন বিক্রেতা। তবে, আগামী বছর ছাগলটি ২০ লাখ টাকায় বিক্রির আশা নিয়ে লালন-পালন করা হবে জানায় খামার কর্তৃপক্ষ। গতকাল দুপুরে সরেজমিন সাদেক এগ্রোতে গিয়ে দেখা যায়, বিটেল জাতের বিশালাকৃতির ছাগলটি ভেতরে মাচার ওপরে দাঁড়ানো। কয়েক গণমাধ্যমকর্মীকে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে ছবি তুলতেও দেখা যায়। পাশেই আরেকটি রুমে পাওয়া যায় খামারের ইনচার্জ মো. শরিফকে। তিনি কালবেলাকে বলেন, কোরবানির কয়েকদিন আগে যশোর থেকে কিনে এনেছি ছাগলটি। এই জাতটি পাঞ্জাব প্রদেশের। শরিফ আরও বলেন, এত বড় ছাগল এখন আর বিক্রি হবে না। আগামী কোরবানির ঈদে বিক্রি করতে হবে। সে পর্যন্ত এখানেই থাকবে। আগামী বছর ২০ লাখে বিক্রি করব। প্রয়োজনে বেচবই না, তাও কম দামে বিক্রি করব না। এদিকে আলোচিত ছাগলকাণ্ডের পরে লাপাত্তা মুশফিকুর রহমান ইফাত। ধানমন্ডির ৮ নম্বর রোডের ৪১ নম্বর বাড়ির পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে মা শাম্মি আক্তারের সঙ্গে থাকত সে। সেখানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল এনবিআর কর্মকর্তা মতিউরের। তবে ঘটনার পরে থেকেই ফ্ল্যাট ছেড়েছেন ইফাত ও তার মা। তবে, এখন কোথায় আছে সে তথ্য নেই কারও কাছে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ইফাতের ফেসবুক আইডি থেকে কারহাব বিডি নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে গাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। সেখানে সে লেখে, কানাডায় যাওয়ার কারণে এক মাসের মধ্যে আমার চারটি গাড়ি বিক্রি (প্রাডো, সিভিস, মাজেসস্তা, প্রিমিও) বিক্রি করতে চাই। বিস্তারিত জানতে ইনবক্স করুন। যদিও কিছুক্ষণ পরই পোস্টটি মুছে ফেলা হয়।
২২ জুন, ২০২৪

ইফাতের ছাগল কেনা নিয়ে নতুন তথ্য
কোরবানির পশুর হাটে একটি খাসির ছবিসহ ভাইরাল হওয়া যুবক মুশফিকুর রহমান ইফাতকে নিয়ে বিতর্ক যেন কাটছেই না। ইফাতের বাবা কে?- এমন কাণ্ডের পর এবার তার ছাগল কেনা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নতুন তথ্য জানালেন আবিদ নামে তারই কথিত এক মামা। যেখানে আমেরিকা প্রবাসী শিল্পপতি মামার জন্য ইফাত ছাগলটি ক্রয় করেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।  বুধবার (১৯ জুন) রাতে আবিদ তার নিজের ব্যবহৃত AX Abid নামে একটি ফেসবুক আইডিতে ইফাতকে নিয়ে পোস্ট করেন। কিন্তু পরবর্তী আবার নিজের আইডি থেকে পোস্টটি সরিয়ে নেন তিনি। ইফাতকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া পোস্টে আবিদ লেখেন, ‘মানুষের ভালো কাজ কেউ ভাইরাল করে না। ও অনেক পুরস্কার পেয়েছে পাখি পালন করে। কই তখন তো কেউ তাকে ভাইরাল করে নাই। এই ছেলের হাতের আইফোনটি আমি দিয়েছি কারণ আমি তাকে আদর করি। ওর দুটো আপন মামা আছে যাদের একজন দুবাইতে শত কোটি টাকার মালিক। তাদের ছেলে নেই বলে তার সব শখ মামা পূরণ করে। আর যে গাড়িগুলোর ছবি দিয়েছে সেগুলো একটা বিক্রি করে আরেকটা কিনছে। ওর মামাদের এত টাকা আছে যে সমস্ত জিনিসগুলো ব্যবহার করে তা কিছুই না। এর চেয়ে বেশি ওর মামারা যাকাত দেয়। মানুষ ওর বাবার যে ছবি দিয়েছে সে তার বাবা না, বাবার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নেই তিন বছর। তাই না বুঝে কারও ক্ষতি না করাই ভালো। ইফাতের আরেক মামা আছে আমেরিকায়। তিনিও শিল্পপতি। ছাগলটি ওর মামার জন্যই কিনেছে। অনুসন্ধান যদি করতে হয় তাহলে আমেরিকা ও দুবাই এসে করলে সবাই বুঝতে পারবে।’ স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইফাতের আপন কোনো মামা আমেরিকা অথবা দুবাই বসবাস করে না। ইফাতের মা শিবলী ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের আরু চেয়ারম্যান বাড়ির মিল্লাত মিয়ার মেজো মেয়ে। নানা মিল্লাত মিয়ার তিন মেয়ে ও এক ছেলেসন্তান রয়েছে। তাদের মধ্যে একমাত্র ছেলে নকিব মিয়া দেশে বসবাস করছেন।  অন্যদিকে পোস্টদাতা এএক্স আবিদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবিদ ইফাতের নিকটাত্মীয়। তার প্রকৃত নাম আবিদুল ইসলাম। তিনি ফেনী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান লায়লা জেসমিন বড়মনির ছেলে। সে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। হত্যাকাণ্ডের পরে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবর আমিরাতে পালিয়ে যান তিনি। এ ব্যাপারে সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল হক হিরন বলেন, ইফাতের মা শিবলী সোনাগাজীতে বাবার বাড়িতে আসা-যাওয়া ছিল। তার একমাত্র মামা নকিব পড়াশোনা শেষ করে চাকরি খুঁজছেন। এর বাইরে অন্য কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।  এদিকে ভাইরাল হওয়া যুবক মুশফিকুর রহমান ইফাত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য এবং কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমানের ছেলে বলে জানিয়েছেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে নিজাম হাজারী বলেন, ইফাত আমার মামাতো বোনের স্বামী মতিউর রহমানের দ্বিতীয় সংসারের ছেলে। মতিউর রহমান রাগ করে ইফাতের সঙ্গে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছেন বলে ধারণা করছি। কেননা তিনি (মতিউর রহমান) সব সময় আমার মামাতো বোনের সঙ্গে নানা পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এর আগে বুধবার (১৯ জুন) মুশফিকুর রহমান ইফাতের সঙ্গে নিজের কোনো আত্মীয়তার সম্পর্কও নেই বলে মন্তব্য করেন মতিউর রহমান। উল্লেখ্য, সাদিক অ্যাগ্রো বিটল প্রজাতির ওই খাসিটির দাম ১৫ লাখ টাকা চেয়েছিলেন। পরে ওই ক্রেতার সঙ্গে ১২ লাখ টাকায় বিক্রির চুক্তি হয় তাদের। তবে ‘বিশেষ একটি কারণে’ খাসিটির মূল্য ও এর ক্রেতাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে তার বাবা পরিচয় দিয়ে নেটিজেনরা বিভিন্ন স্ট্যাটাসে করছেন আলোচনা-সমালোচনা।
২১ জুন, ২০২৪
X