গবেষণা প্রকল্পে বরাদ্দ পেলেন চুয়েটের ৩ শিক্ষক
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ শিক্ষা খাতে উচ্চতর গবেষণা সহায়তা কর্মসূচির আওতায় দাখিলকৃত গবেষণা প্রস্তাব ও আর্থিক বিভাজন শিক্ষাখাতে উচ্চতর গবেষণা সহায়তা কর্মসূচির জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।  গত ২৩ জুন বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) ওয়েবসাইটে এ বিষয়ক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।  এতে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) তিন শিক্ষকের তিনটি আলাদা গবেষণা প্রকল্প চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়েছে এবং গবেষণা কাজে ৩৮ লাখ টাকা সরকারি অর্থ বরাদ্দ পেয়েছেন।  বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষকরা হলেন, পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসলাম মিয়া, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সুমিত মজুমদার এবং রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এম কে মো. জিয়াউল হায়দার। প্রকল্প তিনটির গবেষণাকর্ম আগামী ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে সম্পাদনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।  পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসলাম মিয়ার নেতৃত্বে প্রস্তাবিত গবেষণা প্রকল্পটির শিরোনাম ‘Hybrid Computational Intelligent Models for Real-Time Prediction of Drilling Rate of Penetration in Unconventional Gas Exploration, Bengal Basin’।  প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক গ্যাস/তেল অনুসন্ধান ও উৎপাদনের জন্য প্রায় ১০-১১ হাজার ফুট শিলাস্তরে খনন করতে হয়। উক্ত খননকার্য টেকসই ও নিরাপদভাবে করার জন্য শিলাস্তরে খনন অনুপ্রবেশের হার নির্ধারণ করার প্রয়োজন। বাংলাদেশের  গভীরতম বিভিন্ন পাললিক শিলা স্তরের অনুপ্রবেশের হার (আরওপি) সম্পর্কে কোন মডেল ডেভেলপমেন্ট হয়নি ও পূর্বে কোন গবেষণাকর্মও সম্পাদিত হয়নি। তাই দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার লক্ষ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস মজুত অনুসন্ধানে এবং খননকার্যে ঝুঁকি কমানো ও বাংলার অববাহিকার গঠন বৈশিষ্ট্য মূল্যায়নে ভূতাত্বিক ও খনন তথ্য/উপাত্ত নিয়ে মেশিন লার্নিং পদ্ধতি ব্যবহার করে আরওপি মডেল তৈরি করা হবে এই গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমে। এই প্রকল্পের মেয়াদকাল দুই বছর। বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সুমিত মজুমদারের নেতৃত্বে প্রস্তাবিত গবেষণা প্রকল্পটির শিরোনাম  ‘Non-Invasive and Continuous Monitoring of Foetal Heart Rate using Acoustic Sensing Technology’।  প্রকল্পটির বিষয়ে তিনি বলেন, মাতৃগর্ভে ভ্রূণের হৃৎস্পন্দন পরিমাপ, ভ্রূণের হৃৎপিণ্ডের অবস্থা ও গতিবিধি এই প্রজেক্টির মাধ্যমে খুব সহজেই নির্ণয় করা যাবে। এ প্রযুক্তির সব থেকে বড় সুবিধা হলো, এটি যেকোনো সময়-যেকোনো জায়গা থেকেই ব্যবহার করা যাবে। তারবিহীন প্রযুক্তি হওয়ায় এর জন্য আলাদা কোনো ঝামেলার প্রয়োজন নেই। এটির সাহায্যে ভ্রূণের হৃৎস্পন্দন সার্বক্ষণিক পর্যালোচনা করা যায় বলে, শিশুর হৃৎপিণ্ডের সুস্থতা সম্পর্কে আগাম ধারণা পাওয়া সম্ভব।  অনুভূতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ড. সুমিত মজুমদার বলেন, আমরা আসলে চুয়েটের নামকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে চাই। এটা কেবল শুরু। প্রকল্পটি সফলভাবে সম্পন্ন হলে সামনের দিনে আমাদের জন্য এক নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। হয়ত আরো অনেক প্রকল্পের অনুমোদন পাওয়া যাবে।  এ তালিকায় চলমান আরেকটি প্রকল্পে নেতৃত্বে দিচ্ছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এম কে মো. জিয়াউল হায়দার। তার প্রস্তাবিত গবেষণা প্রকল্পটির শিরোনাম 'Fabrication of Biometric Artificial Membrane for the Desalination of Sea Water’। 
২৯ জুন, ২০২৪

উচ্চশিক্ষার জন্য নরওয়েতে যাচ্ছেন চুয়েটের ৮ শিক্ষার্থী
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর সঙ্গে নরওয়ের এগডার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চলমান পাঁচ বছর মেয়াদি কেয়ার প্রকল্পের আওতায় ২০২২ সাল থেকে পূর্ণ শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে শিক্ষার্থীরা নরওয়েতে গিয়ে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার চতুর্থ ধাপে উচ্চশিক্ষা অর্জনে নরওয়ের এগডার বিশ্ববিদ্যালয় যাচ্ছেন ৮ শিক্ষার্থী।  চুয়েটের ‘কেয়ার’ প্রকল্পের আওতায় পূর্ণ শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে ২ বছরের মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য তিনজন। তারা হলেন রাকিব বিন নাসির, প্রমিত পাল, আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ জোবায়ের। ৫ মাসের মাস্টার্স থিসিস প্রোগ্রামের জন্য পাঁচজন শিক্ষার্থী আগামী আগস্ট মাসে নরওয়ে যাবেন। এরা হলেন আদিত্য চৌধুরী জয়, মো. ইয়াসির ভুঁইয়া, মো. আমিরুল মোমিনিন, আহমেদ আব্দুল্লাহ মুজাহিদ, শীতল রায়। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সিন্ডিকেট কক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সঙ্গে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ওই আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়েটের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দীন আহাম্মদ, যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কাজী আফজালুর রহমান, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির প্রমুখ। সার্বিকভাবে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কেয়ার প্রকল্পের পরিচালক ও সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. আবু সাদাত মুহাম্মদ সায়েম।  এ বছর নির্বাচিত হওয়া শিক্ষার্থী আদিত্য চৌধুরী জয় বলেন, নরওয়ের ইউনিভার্সিটি অব অ্যাগডারে মাস্টার্স এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়েছি বলে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। নরওয়ের এগডারের সঙ্গে চুয়েটের কেয়ার প্রকল্পটি নবায়নযোগ্য শক্তিতে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করবে। এসব বিষয় বিশেষজ্ঞ ও প্রফেসরদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমি চুয়েট কর্তৃপক্ষের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।  যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এবং চুয়েটে কেয়ার প্রকল্পের পরিচালক ও সমন্বয়ক ড. আবু সাদাত মুহাম্মদ সায়েম বলেন, বর্তমানে কেবল যন্ত্রকৌশল বিভাগ, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ এবং ইনস্টিটিউট অব এনার্জি টেকনোলজিতে অধ্যয়নরত পিএইচডি/মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষার্থীরাই এ প্রকল্পের আওতায় আবেদন করতে পারে। তবে খুব শিগগিরই আরও কিছু বিভাগের পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা চলছে। আশা করি সে প্রচেষ্টা সফল হবে।   চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম তার বক্তব্যে বলেন, যারা পড়াশোনা শেষ করে ফিরেছে, তাদের অভিনন্দন জানাই। আর যারা নতুন যাচ্ছে, তাদের জন্য রইলো শুভকামনা। আশা করছি, নতুনরা তাদের গবেষণা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে আমাদের দেশের নাম উজ্জ্বল করবে। এই প্রকল্পটিকে আরও দীর্ঘমেয়াদি করা এবং তার পরিধি বৃদ্ধির জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
১৬ মে, ২০২৪
X