ঘূর্ণিঝড় রিমাল : প্রস্তুতির পরও ব্যাপক ক্ষতি চট্টগ্রামে
আবওহাওয়ার পূর্বাভাসে অগ্রিম প্রস্তুতি নেওয়ার পরও বন্দর নগরী চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে এড়ানো যায়নি ক্ষয়ক্ষতি। ডুবে গেছে নগরী, সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নিম্নাঞ্চলের কোথাও উঠেছে হাঁটু পানি, কোথাও কোমর সমান। এমন পরিস্থিতি মানুষকে ফেলেছে বিপাকে। ডুবে গেছে খোদ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর বাড়িও। পানিবন্দি হয়ে পড়েন তিনি। শুধু মেয়রই নন, দিনভর এই দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। তিন চাকা ও চার চাকার পরিবহন চলাচল করতে না পারায় সড়কে চলেছে নৌকা। দাপট দেখায় রিকশাও। ২০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হয়েছে যাত্রীদের। পানি ঢুকেছে দোকানপাট ও বাসাবাড়িতে। এতে নষ্ট হয়েছে দোকানের মালামাল ও বাড়ির আসবাবপত্র। সুনির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও অনুমান করে বলা যায়, এই ক্ষতি পৌঁছাবে কোটি টাকায়। অন্যদিকে টানা বাতাস ও থেমে থেমে বৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পাহাড়। ধসের শঙ্কা রয়েছে যে কোনো মুহূর্তে। ইতোমধ্যে তাদের উদ্ধারে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টরা। উদ্ধার করা হয়েছে ১২ হাজারেরও বেশি মানুষকে। দুর্গত মানুষের জন্য খোলা হয় এক হাজার ৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র। প্রস্তুত করা হয় ২২১টি মেডিকেল টিম। ১৮ ঘণ্টা পর খুলল টানেল দীর্ঘ ১৮ ঘণ্টা পর যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে কর্ণফুলী নদীতে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। সোমবার দুপুর ১২টায় টানেল পুনরায় উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে রোববার সন্ধ্যা ৬টায় টানেলে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের টোল ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে টানেলে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস দেখে সোমবার দুপুর ১২টায় খুলে দেওয়া হয়েছে। উদ্বোধন হওয়ার পর এবারই প্রথম বিরূপ আবহাওয়ার কারণে টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ১৮ ঘণ্টা পর আবারও খুলে দেওয়া হয়। শাহ আমানতে ১৭ ঘণ্টায় ১৬ ফ্লাইট বাতিল ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে বৈরী আবহাওয়ায় প্রায় ১৭ ঘণ্টা চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বন্ধ ছিল বিমান ওঠা-নামা। এ সময় বাতিল হয় মোট ১৬টি ফ্লাইট। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক ৭টি এবং অভ্যন্তরীণ ৯টি ফ্লাইট ছিল। তবে আবহাওয়া পরিস্থিতি উন্নত হওয়ায় সোমবার ভোর ৫টা থেকে এ বিমানবন্দর দিয়ে ফ্লাইট ওঠানামা শুরু হয়েছে। বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল বলেন, রোববার ১২টা থেকে ফ্লাইট বন্ধ হয়। প্রাথমিকভাবে এদিন রাত ৮টা পর্যন্ত রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে এটি সোমবার ভোর ৫টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরপর থেকে বিমানবন্দর দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হয়। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ২০ শতাংশ গ্রাহক ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরের একটি বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। এতে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন আছেন চট্টগ্রামের ২০ শতাংশ গ্রাহক। যার কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ওইসব এলাকার বাসিন্দারা। নগরের চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, ভোর থেকে বিদ্যুৎ নেই। এতে সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টের মধ্যে আছি। এ নগরে বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ চলে যাবে, এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়। অন্তত রাতে বিদ্যুৎটা পেলে ঘুমানো যাবে। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ চট্টগ্রাম দক্ষিণের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম। কালবেলাকে তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমাল ও ভারি বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর বেশকিছু এলাকা সকাল থেকে বিদ্যুৎহীন রয়েছে। অতিবৃষ্টিতে বিভিন্ন ভবনের নিচতলা এবং মিটার ইউনিট পানিতে ডুবে যাওয়ায় এসব এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে রাতে দুর্যোগের কারণে আমাদের লোড ৩৫০ মেগাওয়াটে নেমে এসেছিল। এখন সেটি ৬০০ মেগাওয়াটে উত্তীর্ণ হয়েছে। তবে এখনো প্রায় ২০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন আছেন।’ তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরে বিদ্যুৎ অফিস ও সাব-স্টেশনে পানি ঢুকে পড়ায় সকাল থেকে হালিশহর, রঙ্গিপাড়া, শান্তিবাগ, রমনা ও শ্যামলী আবাসিক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। একইভাবে গাছ উপড়ে পড়ায় ও পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নগরীর বেশকিছু এলাকায় সকাল থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। ডুবেছে চট্টগ্রাম নগরী, দুর্ভোগে মানুষ ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে ডুবে গেছে চট্টগ্রাম নগরীর বেশিরভাগ এলাকা। ডুবেছে সড়ক, অলি-গলি। জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক যানজট। পানি ঢুকেছে বাসাবাড়ি, দোকানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এতে নগরীর বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, বাদুরতলা, চকবাজার, বাকলিয়া, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, জিইসি মোড়, পুরাতন চান্দগাঁও থানাসহ নগরীর বেশিরভাগ এলাকা হাঁটু থেকে গলা সমান পানিতে তলিয়ে গেছে। সকাল থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে একাধিক সড়কে। হাজার হাজার যানবাহন সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছে। বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা নুরুল আবছার জানান, পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় নগরী ডুবে গেছে। বহদ্দারহাট এলাকার মূল সড়ক থেকে শুরু করে ডুবেছে অলি-গলি। অনেক বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকেছে। বাসার রান্না ঘরের চুলাও জ্বলছে না। মুরাদপুর এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের ওপর যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। সড়কে কোমর থেকে গলা সমান পানি। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া লোকজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কাউকে কাউকে ভ্যানে মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট যেতে দেখা গেছে। এতে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। এদিকে যেসব সড়কে পানি নেই জলাবদ্ধতার অজুহাতে সেগুলোতেও বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। বৃষ্টিতে দেয়াল চাপা পড়ে যুবকের মৃত্যু সকালে বৃষ্টিতে হাঁটার সময় পাশের নির্মাণাধীন একটি ভবনের দেয়াল চাপা পড়ে সাইফুল ইসলাম হৃদয় নামে এক যুবক মারা গেছেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান। সোমবার সকালে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন টেক্সটাইল জেড আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত হৃদয় নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার আবুল হোসেনের ছেলে। থাকতেন নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায়।  বন্ধ ছিল চসিকের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার জেলার সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক ও সমপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এছাড়া চসিক পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ ছিল। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রস্তুত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। সোমবার বিকেলে নগরের বায়েজিদ থানার আমিন জুট মিল এলাকার অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, কাউন্সিলর মোবারক আলী, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা লতিফুল হক কাজমী, প্রধান প্রকৌশলী শাহিন-উল-ইসলামসহ আরও অনেকে। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে নগরজুড়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ২০৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা এমএইচএম মোসাদ্দেক জানান, রোববার রাত ৮টার দিকে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত করে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এরপর এটি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে টানা বৃষ্টি হচ্ছে।
২৭ মে, ২০২৪

ঢাকা অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে গতকাল রোববার রাত থেকেই রাজধানীতে থেমে থেমে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া শুরু হয়। আজ সোমবার ভোর থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ ও ঝোড়ো হাওয়া বাড়তে থাকে। তবে দুপুরের পর রাজধানীতে ব্যাপক বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এর আগে আবহাওয়া অফিস জানায়, সোমবার দুপুর ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় রিমালের কেন্দ্রভাগ ঢাকা অতিক্রম শুরু হবে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার, বৃষ্টি আরও বাড়বে। এদিকে রাজধানীতে ব্যাপক বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওযায় বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো মানুষ। সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানিয়েছিলেন, উপকূলে ঝড়, বৃষ্টি, জোয়ার আর জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডব চালিয়ে ঘূর্ণিঝড় রিমালের কেন্দ্রভাগ দুপুরের পর ঢাকায় ঢুকবে। রিমালের কেন্দ্রভাগ বিকেল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে ঢাকার দিকে এসে অতিক্রম শুরু করবে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার, বৃষ্টি আরও বাড়বে। তিনি বলেন, ঢাকার ওপর দিয়ে এটা পর্যায়ক্রমে সিলেট দিয়ে বাংলাদেশের বাইরে যাবে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে এ পর্যন্ত ১০ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তিনি এ কথা জানান। এসব জেলা হলো- খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও চট্টগ্রাম। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি জানান, ১৯ জেলায় ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ১ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৫ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত। ঘূর্ণিঝড় রিমাল গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টার পরপরই মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।
২৭ মে, ২০২৪

খুলনার কয়রা অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম করে বর্তমানে খুলনার নিকট কয়রায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশঃ বৃষ্টিপাত ঝরিয়ে পরবর্তী দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে কিছুটা দুর্বল হয়ে ঘুর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। সোমবার (২৭ মে) সকাল পৌনে ৯টায় আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ জানান, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের কেন্দ্র উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে কয়রা, খুলনার নিকট অবস্থান করছে। কিন্তু এর শরীর এখনো সাগরেই রয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড়টি পুরোপুরি ক্লিয়ার হতে আরও ১-২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া সহ ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশংকা রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
২৭ মে, ২০২৪

২ ঘন্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করবে ঘূর্ণিঝড় রিমাল
ঘূর্ণিঝড় রিমাল ক্রমশ উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে মোংলার দক্ষিণপশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-খেপুগাড়া উপকূল অতিক্রম করছে। ঘূর্ণিঝড়টি পরবর্তী ২ থেকে ৩ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।  রোববার (২৬ মে) দিবাগত রাতে আবহাওয়ার ১৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ১৬ জেলার উপকূল ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারেও বলে জানিয়েছেন তিনি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসময় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালে প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ৮-১২ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-১৩) এ তথ্যানুসারে, ঘূর্ণিঝড়টির আকার ৪০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার হতে পারে। আর ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ৮ থেকে ১২ ফুট জলোচ্ছ্বাসেরও আশঙ্কা রয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতিভারী (৮৯ মিমির বেশি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতিভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক।
২৭ মে, ২০২৪

৪ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল ছাড়বে ঘূর্ণিঝড় রিমাল
ঘূর্ণিঝড় রিমাল বর্তমানে মোংলার দক্ষিণপশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম অব্যাহত রেখেছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে পরবর্তী ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।  সোমবার (২৭ মে) রাতে ১৬ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসময় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালে প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ৮-১২ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-১৩) এ তথ্যানুসারে, ঘূর্ণিঝড়টির আকার ৪০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার হতে পারে। আর ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ৮ থেকে ১২ ফুট জলোচ্ছ্বাসেরও আশঙ্কা রয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতিভারী (৮৯ মিমির বেশি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতিভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক।  
২৭ মে, ২০২৪

১২০ কিমি বেগে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল
ঘূর্ণিঝড় রিমাল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে স্থলভাগে আঘাত হেনেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সন্ধ্যা ৬টার পরপরই রিমালের কেন্দ্র উপকূল অঞ্চল ছুঁয়েছে। রোববার (২৬ মে) রাতে আবহাওয়ার বিশেষ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ড. শামিম হাসান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, রিমাল স্থলভাগে উঠতে শুরু করেছে। এর অগ্রভাগ উপকূল ছুঁয়েছে। এর কেন্দ্র আগামী দেড় থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে পুরোপুরি উপকূলে প্রবেশ করবে। তিনি আরও বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় নেবে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (২১.২° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.২° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ (২৬ মে) সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিমি পশ্চিম, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৪৫ কিমি দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৫০ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। সংস্থাটি আরও জানায়, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ১ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করে সম্পূর্ণ ঘূর্ণিঝড়টি পরবর্তী ৫ থেকে ৭ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালে প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ৮-১২ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-১৩) এ তথ্যানুসারে, ঘূর্ণিঝড়টির আকার ৪০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার হতে পারে। আর ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ৮ থেকে ১২ ফুট জলোচ্ছ্বাসেরও আশঙ্কা রয়েছে। একই সঙ্গে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত বহাল রয়েছে। ‘রিমাল’-এর অগ্রভাগের প্রভাবে ইতোমধ্যে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা বাতাস বইছে, সঙ্গে আছে বৃষ্টি। বাতাসসহ বৃষ্টি হচ্ছে ঢাকায়ও। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতিভারী (৮৯ মিমির বেশি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতিভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলেও জানিয়েছেন ওমর ফারুক। তিনি আরও জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হলো।  
২৬ মে, ২০২৪

যেসব জেলায় তাণ্ডব চালাতে পারে ঘূর্ণিঝড় রিমাল
বাংলাদেশের উপকূলের দিকে খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। ঘূর্ণিঝড়টি মোংলার পাশ দিয়ে খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ভয়াবহ এই ঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা ৮-১২ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। আবহাওয়ার ১৩ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাত ১০টার মধ্যে মোংলার নিকট দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ)- খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র অতিক্রমের পর এর নিম্নভাগ অতিক্রম অব্যাহত থাকবে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।  বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপৎসংকেত (পুনঃ) ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।  কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ০৯ (নয়) নম্বর মহাবিপৎসংকেত (পুনঃ) ০৯ (নয়) নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ০৯ (নয়) নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।  খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরসমূহকে ০৪ (চার) নম্বর নৌ মহাবিপৎসংকেত (পুনঃ) ০৪ (চার) নম্বর নৌ মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।  বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (২৮৯ মিমি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।  উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।    
২৬ মে, ২০২৪

বাংলাদেশের দিকে আরও এগোল ঘূর্ণিঝড় রিমাল
বাংলাদেশের উপকূলের ১৮০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’। এটি সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে মোংলার কাছ দিয়ে ভারতের সাগর আইল্যান্ড-খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়টির আকার ৪০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার হতে পারে। আর ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ৮ থেকে ১২ ফুট জলোচ্ছ্বাসেরও আশঙ্কা রয়েছে। রোববার (২৬ মে) দুপুরে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-১৩) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। একই সঙ্গে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত বহাল রয়েছে। ‘রিমাল’-এর অগ্রভাগের প্রভাবে ইতোমধ্যে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা বাতাস বইছে, সঙ্গে আছে বৃষ্টি। বাতাসসহ বৃষ্টি হচ্ছে ঢাকায়ও। বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি রোববার বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কিমি দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৮০ কিমি দক্ষিণে অবস্থান করছিল। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ)-খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র অতিক্রমের পর এর নিম্নভাগ অতিক্রম অব্যাহত থাকবে। এতে আরও বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিমি, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতিভারী (৮৯ মিমির বেশি/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতিভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলেও জানিয়েছেন ওমর ফারুক। তিনি আরও জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হলো। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় উপজেলা বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌরসভাসহ বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রোববার দুপুর ১২টার দিকে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হওয়ায় পৌরসভাসহ কয়েকটি ইউনিয়নের কমপক্ষে ২৫টি গ্রাম স্থানভেদে ২ থেকে ৩ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে ২ হাজার লোক ও ৩ শতাধিক গবাদি পশু আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাট থেকে বহরবুনিয়া ইউনিয়নের সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী রাস্তাটি ধসে পড়েছে। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে শত শত মানুষের। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ৮৬টি সাইক্লোন শেল্টারে খাবার সরবরাহের কাজ শুরু হয়েছে। কিছু কিছু সাইক্লোন শেল্টারে গবাদি পশু ও বিপদাপন্ন লোকজন আশ্রয় নিয়েছে।
২৬ মে, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় যশোরে ব্যাপক প্রস্তুতি
ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলার জন্য যশোরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলার অন্তত ২২৪৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। একইসঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিসসহ স্বেচ্ছাসেবক টিম প্রস্তুত রয়েছে। যশোর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রিজিবুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলার জন্য জেলার ১২৮৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৯৫৬টি মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কলেজকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে পর্যাপ্ত চাল, শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ রাখা হয়েছে। যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক জানান, জেলার সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে একটি করে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলা হাসপাতালসহ ৮ উপজেলায় ৮টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। একইসঙ্গে সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত ১ থেকে দুজন করে জনবল নিযুক্ত করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে জেলার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। ডেপুটি সিভিল সার্জন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে খাবার স্যালাইনসহ জরুরি প্রতিরোধ ও প্রতিষেধক ওষুধ ও উপকরণ পর্যাপ্ত মজুত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং সাপে কামড় দেওয়া রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক অ্যান্টিভেনম মজুত রাখতে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারীসহ অন্যান্য মাঠকর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় সতর্কভাবে অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং যে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চলমান সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। যে কোনো স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বা সমস্যায় নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রের সহযোগিতা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।  এদিকে যশোর রেড ক্রিসেন্টের সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টোকন জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে রেডক্রিসেন্ট যশোর টিম সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জেলাজুড়ে ১০০ জন ভলান্টিয়ার প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হয়েছে। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনিট লেভেল অফিসার মোক্তার হোসেনসহ রেড ক্রিসেন্টের সদস্য। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২০ সালে ২০ মে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ঘরের ওপর গাছ পড়ে যশোরে মা-মেয়েসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যশোরের বিভিন্ন উপজেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে যশোরের শার্শা উপজেলায় চারজন, চৌগাছায় দুজন, বাঘারপাড়ার একজন ও মণিরামপুর উপজেলার পাঁচজন ছিলেন।
২৬ মে, ২০২৪

রাঙামাটিতে ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে প্রস্তুতি সভা
রাঙামাটিতে ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৬ মে) সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসনে খানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহমেদ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বিদ্যুৎ ও এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীরা। সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসনে খান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাঙামাটিতে বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি পাহাড় ধসেরও সম্ভাবনা রয়েছে। যার কারণে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করা ছাড়াও রাঙামাটি পৌর এলাকায় ২৯টি এবং ১০ উপজেলায় ৩২২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা সদরসহ প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এ ছাড়াও পুলিশ, আনসার, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সংগঠন সমূহকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কোন সংকেতের কী মানে? ঝড়ের সময় আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ১১টি সংকেত নির্ধারিত আছে। এই সংকেতগুলো সমুদ্রবন্দরের ক্ষেত্রে ভিন্ন বার্তা বহন করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সংকেতগুলোর বিস্তারিত- ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত : জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে। ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত : গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে। ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত : বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগকবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার হতে পারে। ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত : বন্দর ঘূর্ণিঝড়কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় হয়নি। ৫ নম্বর বিপদৎসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৬ নম্বর বিপৎসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৭ নম্বর বিপৎসংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরের ওপর বা এর কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে। ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে। ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে। ১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত : আবহাওয়ার বিপদসংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।
২৬ মে, ২০২৪
X