বিশ্বজুড়ে গড় আয়ু কমেছে প্রায় ২ বছর
করোনা মহামারির সমাপ্তি ঘটলেও তার জের এখনো শেষ হয়নি। ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চলা এই মহামারির জেরে বিশ্বজুড়ে গড় আয়ু অন্তত ১৮ মাস হ্রাস পেয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক অঙ্গ সংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। শুক্রবার নিজেদের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য পরিসংখ্যানগত বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ডব্লিউএইচও। খবর এএফপির। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮ মাস হ্রাস পাওয়ার কারণে বিশ্বে বর্তমানে মানুষের গড় আয়ু ৭১ বছর ৪ মাস। গড় আয়ু কমার পাশাপাশি এক বছর পাঁচ মাস হ্রাস পেয়েছে শারীরিকভাবে সুস্থ-সক্ষম থাকার গড় বয়সসীমাও। ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুসারে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে শারীরিকভাবে সুস্থ-সক্ষম থাকার গড় বয়স নেমেছে ৬১ বছর ৯ মাসে। এই হ্রাসের মধ্যে দিয়ে বিশ্ব আবার ফিরে গেছে ২০১২ সালে। ওই বছর বিশ্বজুড়ে মানুষের গড় আয়ু ৭১ বছর ৪ মাস এবং গড় সুস্থ-সক্ষম থাকার বয়সসীমা ৬১ বছর ৯ মাস ছিল। গত জানুয়ারিতে এ সম্পর্কিত একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল বিশ্ববিখ্যাত চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটে। সেখানে বলা হয়েছিল, করোনা মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে গড় আয়ু কমেছে ১ বছর ৬ মাস। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের গড় আয়ুর ওপর যে গভীর প্রভাব রেখে গেছে করোনা মহামারি, তা বিগত ৫০ বছরে অন্য কোনো রোগের বেলায় ঘটেনি। শুক্রবার এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গ্যাব্রিয়াসুস বলেন, ‘গড় আয়ু হ্রাস পাওয়া এই তথ্য আমাদের বার্তা দিচ্ছে যে শিগগিরই আমাদের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর একটি মহামারি নিরাপত্তা চুক্তিতে আসা উচিত। এমন একটি চুক্তি যা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে শক্তিশালী করবে, স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ নিশ্চিত করবে এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সমতা নিশ্চিত করবে।’
২৬ মে, ২০২৪

মহামারিতে বিশ্বব্যাপী মানুষের গড় আয়ু কমেছে দুই বছর
বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে স্থবির হয়ে পড়ে সারাবিশ্ব। যার ধকল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি অনেক দেশ। সেই মহামারি নিয়ে এবার ভয়াবহ দুঃসংবাদ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। শনিবার (২৫ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চলা করোনা মহামারির জেরে বিশ্বব্যাপী মানুষের গড় আয়ু অন্তত ১৮ মাস কমেছে।  শুক্রবার ডব্লিউএইচও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য পরিসংখ্যনগত বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মানুষের গড় আয়ু ১৮ মাস কমেছে। ফলে বর্তমানে গড় আয়ু ৭১ বছর ৪ মাসে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।  গড় আয়ু কমার পাশাপাশি মানুষের শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার বয়সও ১৭ মাস কমেছে। সংস্থাটির তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে মানুষের শারীরিক সুস্থ থাকার বয়সসীমা ৬১ বছর ৯ মাসে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।  বর্তমানে আয়ু কমার কারণে এ অবস্থা ২০১২ সালের সঙ্গে মিলে গেছে। ওই সময় বিশ্বব্যাপী মানুষের গড় আয়ু ছিল ৭১ বছর ৪ মাস আর সুস্থ থাকার বয়সসীমাও ছিল ৬১ বছর ৯ মাস।  এর আগে জানুয়ারিতে চিকিৎসাবিষয়ক বিশ্ববিখ্যাত সাময়িকী ল্যানসেটে এ সম্পর্কিত একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে মানুষের গড় আয়ু দেড় বছর কমেছে।  বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারি মানুষের গড় আয়ুর ওপর যে প্রভাব ফেলেছে তা গত ৫০ বছরে অন্যকোনো রোগের বেলায় ঘটেনি।  শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটির মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, গড় আয়ু হ্রাসের ব্ষিয়ে আমাদের সদস্য দেশগুলোরে মধ্যে শিগগিরই মহামারি নিরাপত্তা চুক্তিতে আসা উচিত বলে বার্তা দিচ্ছে। যা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে শক্তিশালী করবে। 
২৫ মে, ২০২৪

বৈশ্বিক গড় আয়ু বাড়বে ৫ বছর, রোগও বাড়বে কয়েকটি
২০৫০ সালের মধ্যে মানুষের বৈশ্বিক গড় আয়ু পাঁচ বছর বাড়বে। তবে একই সঙ্গে মোটা হওয়া ও উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগও বাড়বে। নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। গবেষণায় একদিকে যেমন গড় আয়ু বাড়ার বিষয়ে ভালো খবর দেওয়া হয়েছে, তেমনি কয়েকটি রোগ বাড়ায় মানুষকে ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে বলেও জানানো হয়েছে। এই রোগের মধ্যে অন্যতম হলো মোটা হওয়া ও উচ্চ রক্তচাপ। খবর ডয়চে ভেলের। দ্য ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে বর্তমান জীবনধারার সঙ্গে ভবিষ্যতের জীবনযাপনের অনেকটাই পরিবর্তন হবে। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যাট্রিকস অ্যান্ড অ্যাডিকশনের প্রধান গবেষক ও বৈজ্ঞানিক লিয়ানে ওং জানান, মানুষের মধ্যে আসক্তি ও মোটা হওয়ার প্রবণতা দুই-ই বাড়বে। গবেষক দলের মতে, বিশ্বজুড়েই মানুষের আয়ু বাড়বে। পুরুষদের গড় আয়ু ৭১ দশমিক এক থেকে ৭৬ দশমিক দুই হবে ও নারীদের গড় আয়ু ৭৬ দশমিক দুই থেকে ৮০ দশমিক পাঁচ হবে। গবেষক সংস্থার ডিরেক্টর ক্রিস মারে জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি আয়ের দেশ ও কম আয়ের দেশের মধ্যে বৈষম্য থাকবে, তবে ব্যবধান কমবে। সাব সাহারান-আফ্রিকায় মানুষের গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি বাড়বে। গবেষকরা বলেছেন, মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তার ফলেই আয়ু বাড়বে। কভিড ১৯, সংক্রামক রোগ, মাতৃত্বকালীন রোগ, বাচ্চাদের রোগ, অপুষ্টিজনিত সমস্যা কাটানোর জন্য নেওয়া উদ্যোগের ফলে আগামী তিন দশকে মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যাবে বলে গবেষকরা মনে করছেন। গবেষকরা এটাও দেখেছেন, ২০০০ সাল থেকে উচ্চ রক্তচাপ, সুগার, মোটা হওয়ার প্রবণতা প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। বায়ুদূষণ, ধূমপানের প্রভাব মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর পড়ছে।
১৮ মে, ২০২৪

দেশের মানুষের গড় আয়ু কত, কী বলছে জরিপ
বছর পেরিয়ে গেলেও দেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়েনি। ২০২২ সালে দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৭২.৩ বছর। ২০২৩ সালেও ঠিক একই অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে। রোববার (২৪ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁও পরিসংখ্যান ভবনে প্রকাশিত বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস- ২০২৩ জরিপ প্রতিবেদন এ তথ্য তুলে ধরেছে বিবিএস। প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমানে ১৭ লাখ বেড়ে দেশের মোট জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ১৫ লাখ। মোট জনসংখ্যার মধ্যে নারী ৮ কোটি ৭৩ লাখ এবং পুরুষ ৮ কোটি ৪২ লাখ। অর্থাৎ দেশের পুরুষের চেয়ে ৩১ লাখ বেশি নারী। এর আগে ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৯৮ লাখ। সেই হিসেবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দেশের জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি ১৫ লাখ। তবে ২০১১ সালের আদমশুমারি ভিত্তিতে দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৩৫ লাখ। সংস্থাটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে সর্বশেষ চূড়ান্ত জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। ফলে দেশে নতুন করে দেশে জনসংখ্যা বেড়েছে ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৮৯ জন। বয়সভিত্তিক জনসংখ্যার বিন্যাস মধ্যে: ০-৪ বছর বয়সী ১০.২২ শতাংশ, ৫-১৪ বছর বয়সী ১৮.৫৬ শতাংশ, ১৫-২৪ বছর বয়সী ১৮.৬৭ শতাংশ, ২৫-৩৯ বছর বয়সী ২২.২৮ শতাংশ, ৪০-৪৯ বছর বয়সী ১১.৮৭ শতাংশ, ৫০-৫৯ বছর বয়সী ৮.৯৩ শতাংশ, ৬০-৬৪ বছর বয়সী ৩.৩৩ শতাংশ এবং ৬৫+ বছর বয়সী ৬.১৪ শতাংশ। ২০২৩ সালে জন্মের সময় প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল পরিসংখ্যানিকভাবে অপরিবর্তিত রয়েছে, যা ৭২.৩ বছর। জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার (RNI) ১.৩৩ শতাংশ যা ২০২২ সালে ছিল ১.৪০ শতাংশ। লিঙ্গ অনুপাত কিছুটা নিম্নমুখী যা ২০২৩ সালে দাঁড়িয়েছে ৯৬.৩ শতাংশ এবং নির্ভরশীলতার অনুপাত ৫৩.৭ শতাংশ। দেশে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১,১৭১ জন। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় স্থূল জন্মহার ১৯.৪, যা ২০২২ সালে ছিল ১৯.৮। স্বাভাবিক পদ্ধতিতে সন্তান প্রসবের হার ২০২২ সালের ৫৮.৬ শতাংশ সেই তুলনায় হ্রাস পেয়ে ২০২৩ সালে হয়েছে ৪৯.৩ শতাংশ এবং অস্ত্রোপচার পদ্ধতিতে প্রসবের হার ২০২২ সালের (৪১.৪%) তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে হয়েছে ৫০.৭ শতাংশ। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় স্থূল মৃত্যুহার ৬.১ শতাংশ যা ২০২২ সালে ছিল ৫.৮শতাংশ। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজারে ৩৩ এবং প্রতি লাখ জীবিত জন্ম শিশুর বিপরীতে মাতৃমৃত্যুর অনুপাত ১৩৬ জন, যা ২০২২ সালে ছিল ১৫৩ জন। মৃত্যুর শীর্ষ দশ কারণের ১ম কারণ-হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর হার ১.০২% এবং ২য় কারণ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মৃত্যুর হার ০.৬৪%। পুরুষদের প্রথম বিবাহের গড় বয়স ২৪.২ বছর এবং নারীদের ১৮.৪ বছর। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পল্লিতে আগমনের হার ২০.৪ এবং শহরে আগমনের হার ৪৩.৪। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অভিগমন প্রতি হাজারে ৬.৬১ জন থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮.৭৮ জন। আন্তর্জাতিক আগমন/বহিরাগমন প্রতি হাজারে ২৯৭ থেকে হ্রাস পেয়ে হয়েছে ২.৩৭ জন। ২০২৩ সালে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০২২ সালের (৬৩.৩%) তুলনায় কিছুটা হ্রাস পেয়ে ২০২৩ সালে হয়েছে ৬২.১ শতাংশ। জন্মনিয়ন্ত্রণের অপূর্ণ চাহিদা ২০২২ সালের (১৬.৬২%) তুলনায় হ্রাস পেয়ে ২০২৩ সালে ১৫.৫৭ শতাংশ হয়েছে। খানার আকার ২০২২ সালের ন্যায় ২০২৩ সালেও অপরিবর্তিত রয়েছে যা ৪.২ জন। তবে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে নারী খানাপ্রধানের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে এটি ছিল ১৭.৪%, যা ২০১৩ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৮.৯%। অপরদিকে, পুরুষ খানাপ্রধান ২০২২ সালে ছিল ৮২.৬%, ২০২৩-এ হার হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৮১.১ শতাংশ। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭.৫৩ শতাংশে। সাত বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনসংখ্যার সাক্ষরতার হার ২০২৩ সালে হয়েছে ৭৭.৯ শতাংশ এবং ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ক্ষেত্রে এ হার ২০২২ সালের (৭৪.৪) তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৫.৬ শতাংশ। অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, পরিসংখ্যান অধিদপ্তরের মমহাপরিচালক সাহান আরা বানু। 
২৪ মার্চ, ২০২৪

গড় আয়ু বাড়াতে নিরাপদ খাদ্য খেতে হবে : গণপূর্তমন্ত্রী
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশের গড় আয়ু বাড়াতে হবে। সেটা করতে হলে নিরাপদ খাদ্য খেতে হবে। তৈলাক্ত খাবার পরিহার করার চেষ্টা করতে হবে।   শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সেইফ ফুড কার্নিভালের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমার শ্বশুরবাড়ি পুরান ঢাকায়। তারা যে কত রকমের খাবার খায়। আমি নিশ্চিত একটা খাবারও নিরাপদ নয়, সব অনিরাপদ। সেখান থেকে তোমরা যারা যুবক তাদের বেরিয়ে আসা উচিত। শেখ হাসিনার বদৌলতে আমরা এখন দেশে গড় আয়ু ৭২-৭৩ বছরে পৌঁছেছি। এটা ধরে রাখতে হবে এবং এগিয়ে নিতে হবে।  মন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির বলেন, আমরা এখন স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের অধিকারী। এই দেশটা আমাদের ছিল না। ডাকাতেরা, লুটেরা জন্মলগ্ন থেকে দেশটাকে দখল করে রেখেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সাল থেকে নয়, ১৯৪৬ সাল থেকেই ভাষা সংগ্রামের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করছিলেন। তিনি বুঝতে পারেন পাকিস্তান না, বাঙালিদের নিজস্ব রাষ্ট্র দরকার। সেই নিজস্ব রাষ্ট্র গঠন করার জন্যে তিনি সমগ্র জীবনকে বাজিয়ে রেখেছিলেন। তিনি সবাইকে এক পাল্লায় উঠিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের ডাক দিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকারের সভাপতিত্বে সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

গড় আয়ু বাড়লেও শঙ্কা শিশুমৃত্যু হারে
দেশের মানুষের গড় আয়ু কিছুটা বাড়লেও শঙ্কা জাগিয়েছে মৃত্যুহার ও তালাকের প্রবণতা সূচক। গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ছিল সাধারণ মৃত্যুহার ও শিশুমৃত্যু হার। সেইসঙ্গে বেড়েছে বিবাহবিচ্ছেদের হারও। তবে এ সময়ে কমেছে মাতৃমৃত্যু হার। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ভবনে ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস (এসভিআরএস) ২০২২-এর প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতেই উঠে এসেছে এসব তথ্য। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। সভাপতিত্ব করেন বিবিএসের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) পরিমল চন্দ্র বসু। প্রতিবেদন বলছে, দেশে প্রত্যাশিত গড় আয়ু ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে সামান্য বেড়েছে। ২০২২ সালের হিসাবে গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৪ বছর, যা ২০২১ সালে ছিল ৭২ দশমিক ৩ বছর। ২০২২ সালে দেশের পুরুষের গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ দশমিক ৮ বছর। ২০২১ সালে ছিল ৭০ দশমিক ৬ বছর। ২০২২ সালে নারীর গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ দশমিক ২ বছর, যা ২০২১ সালে ছিল ৭৪ দশমিক ১ বছর। গড় আয়ু বাড়লেও শঙ্কা জাগিয়েছে মৃত্যুহার। ২০২২ সালে সাধারণ এবং শিশুমৃত্যু হার বেড়েছে। গত বছর সাধারণ মৃত্যুহার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি হাজারে ৫ দশমিক ৮ জনে। ২০২১ সালে যা ছিল ৫ দশমিক ৭। এ সময় মৃত্যুহার গ্রামে না বাড়লেও বেড়েছে শহরে। শহরে ২০২১ সালে মৃত্যুহার ছিল হাজারে ৪ দশমিক ৮ জন। সেখানে ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ১ জন। এ ছাড়া দেশে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ শিশুর মৃত্যু হয়েছে ২০২২ সালে। সে বছর প্রতি হাজারে জীবিত জন্ম নেওয়া শিশুর বিপরীতে মারা গেছে ৩১ জন। এর আগের তিন বছরে প্রতি হাজারে মারা গিয়েছিল ২৮ শিশু। ২০১৮ সালে ছিল ২৯ জন। এদিক থেকে এগিয়ে আছে পুরুষ শিশু। বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে প্রতি হাজারে ২৫ জন এক বছরের নিচের শিশু মারা গেছে, যা ২০২১ সালে ছিল ২২ জন। এক মাসের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুও ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে বেড়েছে। ১ থেকে ৪ বছর বয়সের শিশুমৃত্যু হার প্রতি হাজারে ১ দশমিক ৮ শতাংশ, যা ২০২১ সালে ছিল ১ দশমিক ৬। তবে গত পাঁচ বছরের মধ্যে মাতৃমৃত্যু সবচেয়ে কম হয়েছে ২০২২ সালে। ২০২২ সালে জীবিত জন্ম নেওয়া শিশুর বিপরীতে প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যু হয়েছে ১৫৬ মায়ের, যা ২০২১ সালে ছিল ১৬৮ জন। এর আগের তিন বছরে ছিল যথাক্রমে ১৬৩, ১৬৫ ও ১৬৯ জন। এদিকে দেশে তালাকের হারও বেড়েছে। ২০২২ সালে তালাক হয়েছে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২১ সালে জাতীয়ভাবে তালাকের হার ছিল প্রতি হাজারে শূন্য দশমিক ৭ জন, যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৪ জন। এর মধ্যে ২০২২ সালে শহরের তুলনায় গ্রামে তালাকের হার ছিল বেশি। এ সময়ে শহরে প্রতি হাজারে তালাকের হার ১ এবং গ্রামে ১ দশমিক ৫ জন। ২০২১ সালে এই হার ছিল গ্রামে শূন্য দশমিক ৮ এবং শহরে শূন্য দশমিক ৫। গড় আয়ু এবং মৃত্যুহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশে বেড়েছে বিবাহ এবং জন্মহার। ২০২১ সালের চেয়ে ২০২২ সালে জন্মহার বেড়েছে প্রতি হাজারে শূন্য দশমিক ৫ এবং বিয়ের হার বেড়েছে ৪ দশমিক ৬। বিয়ের হারে শহরের থেকে এগিয়ে গ্রাম। এ ধরনের জরিপ কাজ প্রকল্পের আওতায় না করে নিয়মিত কাজ হিসেবে করা উচিত বলে মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এসভিআরএসের কার্যক্রম সরকারের রাজস্ব বাজেটের অধীনে নিয়ে আসা উচিত। শিশুমৃত্যু হার বৃদ্ধি পাওয়া কাম্য নয় উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে আরও সঠিকভাবে তথ্য উঠে আসছে। সে কারণে অতীতের চেয়ে বেশি আসতে পারে। তবে আমরা এ হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।
১৪ জুন, ২০২৩
X