ভোলায় বাঁধ ভেঙে ১৫ গ্রাম প্লাবিত
ভোলায় ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ১০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সদর উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর বেশ কয়েকটি স্থান দিয়ে পানির তীব্র স্রোতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধসে পড়েছে। এ ছাড়া ১২টি পয়েন্ট দিয়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে ১০ থেকে ১৫টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় চলে গেলেও এখনো দিনে দুবার ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে। এতে কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের জন্য রাখা সিমেন্ট, বালুসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে। ফলে নদীর তীর সংরক্ষণ নির্মাণ কাজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে ইলিশা লঞ্চঘাট থেকে হারিয়ে যাওয়া ৩০০ টনের একটি বিকে বার্জের সন্ধান আজও পাওয়া যায়নি। যার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। সরেজমিন দেখা যায়, বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসাননগর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের নির্মাণসামগ্রী জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তীর সংরক্ষণ কাজে দুটি প্যাকেজের প্রায় চার হাজার ব্যাগ সিমেন্ট পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে এবং ৫০ হাজার ঘনফুট সিলেট সেন্ড ও ১০ হাজার ঘনফুট পাথরসহ বালু নদীতে ভেসে গেছে। সেখানে থাকা নির্মাণকাজের মিকশ্চার মেশিনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ভোলার সাত উপজেলায় প্রায় ১০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১-এর ৫ কিলোমিটার ও ডিভিশন-২-এর ৫ কিলোমিটার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরায়। সেখানে প্রায় ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ উপজেলার ১২টি পয়েন্ট দিয়ে বাঁধ ছুটে গিয়ে ৮ থেকে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ওই এলাকাগুলো এখনো দিনে দুইবার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অলি উল্লাহ কাজল জানান, ঘূর্ণিঝড়ে তার এলাকার বেড়িবাঁধের চারটি স্থান ভেঙে ইউনিয়নের দক্ষিণ সাকুচিয়া ও রহমানপুর গ্রামসহ ২, ৩, ৫, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। বন্যা চলে গেলেও বাঁধগুলো সংস্কার না করায় এখনো প্রতিদিন দুইবার এ এলাকাগুলোয় পানি ওঠে। এতে করে দুই থেকে তিন হাজার মানুষ পানিবন্দি থাকে। এ ছাড়া উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের সোনারচর ও চরযতিন এলাকার পূর্বপাশে বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। এতে ওই এলাকায় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেন ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন হাওলাদার। তিনি জানান, আধা কিলোমিটারের ওপরে বেড়িবাঁধ ভেঙে ওই এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ জোয়ারের সময় পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসাননগর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর তীরবর্তী এস-এম জয়েন ভেঞ্চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা এ জেড এম মনিরুল ইসলাম জানান, ওই এলাকায় তাদের ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি প্যাকেজে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ চলছিল। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে তারা কাজ শুরু করেন। এরই মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সেই কাজের জন্য সাইডে রাখা সিমেন্ট, বালু, পাথরসহ নির্মাণ সামগ্রী ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৮ থেকে ১০ ফুট পানিতে সব তলিয়ে যায়। ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসান মাহমুদ জানান, ঘূর্ণিঝড়ে তার নিয়ন্ত্রণাধীন চারটি উপজেলায় ৫ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ২০০ মিটার হলো মনপুরা উপজেলায়। এ উপজেলায় ১২টি পয়েন্ট দিয়ে ১৬৫ মিটার বাঁধ ছুটে গেছে। তারা এ বাঁধগুলো মেরামতের কাজ করছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বাঁধগুলো সংস্কার করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান, তার আওতাধীন তিনটি উপজেলায় পাঁচ কিলোমিটার বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। বেশি ক্ষতি হওয়া বাঁধ সংস্কারে তারা কাজ করছেন। বাকি জায়গাগুলোও পর্যায়ক্রমে সংস্কার করবেন। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হওয়া নির্মাণসামগ্রীর বিষয়ে এ মুহূর্তে তাদের কিছু করণীয় নেই।
০৩ জুলাই, ২০২৪

দোয়ারাবাজারে বাঁধ ভেঙে ৫ গ্রাম প্লাবিত
সুনামগঞ্জের সীমান্ত নদী পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে। কোথাও কোথাও বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। গতকাল শনিবার জেলার দোয়ারাবাজার সীমান্তের লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া-লক্ষ্মীপুরের মধ্যস্থলের বেড়িবাঁধ ভেঙে লক্ষ্মীপুর, নোয়াপাড়া, রসরাই, সুলতানপুর, হাছনবাহার গ্রামের বাসিন্দারা বেকায়দায় পড়েছেন। তাদের বসতঘরেও তিন থেকে চার ফুট সমান পানি উঠেছে। খাসিয়ামারা নদীর রাবারড্যামের পাশের বাংলাবাজার সড়কও প্লাবিত হয়েছে। লক্ষ্মীপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা হেলাল-খসরু হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারুক আহমদ জানান, সকাল থেকে প্রবল বেগে পাহাড়ি ঢল নামা শুরু হয়। সাড়ে ৯টায় ঢলের চাপে খাসিয়ামারা নদীর নোয়াপাড়া-লক্ষ্মীপুরের বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। পাহাড়ি ঢলে লক্ষ্মীপুরের তাছির উদ্দিনের বসতঘর, মুখশেদ আলীর পোলট্রি ফার্ম ও আশরাফ আলীর দোকানঘর ভেসে যায়। এ ছাড়া এলাকার পাঁচটি গ্রামের ঘরবাড়িতে দুই থেকে তিন ফুট পানি ওঠে। নোয়াপাড়া থেকে চকবাজার যাওয়ার সড়কও ডুবে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও পাহাড়ি ঢলে নদীতে পানি বেড়েছে। ওপারের পানি প্রবল বেগে নেমে সুরমা নদীতে মিশছে। সুরমা নদীর পানিও কিছুটা বেড়েছে। তবে সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে পানি দুপুর ১২টায় বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার ছাতকে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। নদীর পানির উচ্চতা কমতে শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
১৬ জুন, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে মির্জাগঞ্জে বেড়িবাঁধ ভেঙে ১৫ গ্রাম প্লাবিত
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে পায়রা ও শ্রীমন্ত নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের মধ্যে রয়েছে রামপুর, সুন্দ্রা, পিপড়াখালী, দক্ষিণ মির্জাগঞ্জ, গোলখালী, চরখালী, ভয়াং, মেন্দিয়াবাদ ও হাজিখালী পায়রা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে অনন্ত ১৫টি গ্রাম তলিয়ে গেছে। সোমবার (২৮ মে) সকাল থেকেই একটানা বৃষ্টিতে ও জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ২০ সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে এবং তলিয়ে গেছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পানি বৃদ্ধি পেলে পায়রা ও শ্রীমন্ত নদীর বাঁধের বাইরে বসবাসরত পরিবারদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কাঁচাঘর-বাড়ি, মসজিদ এবং উপজেলায় বিভিন্ন পয়েন্টের বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। মির্জাগঞ্জ গ্রামে বসতঘরের ওপর গাছচাপা পড়ে একজন আহত হয়েছেন। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কে সমস্যা দেখা দিয়েছে। চারদিকে অন্ধকার আর জলোচ্ছ্বাসের পানিতে ভাসছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উপজেলার ৪১ হাজার গ্রাহক। মির্জাগঞ্জ সাবস্টেশন পল্লী বিদ্যুতের এ জি এম মো. মেহেদী হাসান জানান, মির্জাগঞ্জ নয় পটুয়াখালী জেলা থেকে পল্লী বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। ঝড়-বাদল কমলে লাইন চেক করে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করা হবে। পানিতে প্লাবিত হওয়ায় অনেক পরিবারের উনুনে আজ হাঁড়ি ওঠেনি বলে জানান অনেকেই। উপজেলা সদরে নেই ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ। জোয়ারের পানি বেড়ে সুবিদখালী বাজার, কাকড়াবুনিয়া বাজার, মহিষকাটা বাজার, কাঁঠালতলী বাজারসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাটের পন্টুনের গ্যাংওয়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালী বাজারে তিন থেকে সাড়ে তিন ফুট পানি হওয়ার কারণে প্রত্যেকটা ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২নং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের শ্রীমন্ত নদীর পানির চাপে কয়েক জায়গায় বেড়িবাঁধ ছুটে গিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে, অনেক ঘর বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে, গাছপালা পরে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পূর্ব সুবিদখালী, পশ্চিম সুবিদখালী টিএনটি রোডের বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে ক্ষতি হয়। ঝড়ের কারণে সড়কে গাছপালা ভেঙে পড়ে। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মির্জাগঞ্জ উপজেলার দলনেতা মো. রাব্বি মল্লিক বলেন, সকাল থেকেই বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা আটকে থাকা লোকজনদের উদ্ধার করা হয়েছে। রাস্তা পারাপারের জন্য ফ্রি গাড়ির ব্যবস্থা করেছি। আমরা সব সময়ে অসহায় মানুষের পাশে আছি। মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালে প্রভাবে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন আশ্রয় নিয়েছে। ৪টি মেডিকেল টিম ও একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
২৮ মে, ২০২৪

পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটিতে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে অতিবৃষ্টিতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার ৩ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ সময় গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।  মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  টানা ও অতিবর্ষণে পাহাড়ি ঢল নেমে কাঁচালং নদীর পানি বেড়ে উপজেলার মধ্যমপাড়া, মাস্টারঘোনা, লাইনাপাড়ার প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়াও মারিসা বাঘাইছড়ি সড়কের ৪ কিলো, ৮ কিলো ও ১২ কিলো এলাকায় গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ যায়। তবে তা সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।  দীঘিনালা সাজেক সড়কের কবাখালি এলাকায় পাহাড়ি ঢলের বন্যায় সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে এবং যানচলাচল বন্ধ থাকার খবর পাওয়া গেছে।  রাঙামাটিতে ঝোড়ো হাওয়ার কারণে ইন্টারনেট ও মোবাইল সংযোগ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এতে বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির খবর পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। এ ছাড়াও জেলা শহরে মধ্যরাত থেকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন থাকার পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংযোগ চালু হয়, যা আধা ঘণ্টার মধ্যে আবার এলাকাভেদে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সোমবার (২৭ মে) সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার (২৮ মে) ভোর ৬টা পর্যন্ত ১৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাঙামাটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র।  বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার বলেন, মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিকমতো পাচ্ছি না, যার কারণে সার্বিক পরিস্থিতির খবর পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলে উপজেলার কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি এখন কমেছে। যদি বৃষ্টি বাড়ে আরও গ্রাম প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও কয়েকটি স্থানে গাছ পড়ে উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
২৮ মে, ২০২৪

বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বহু গ্রাম প্লাবিত
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় উপজেলা বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌরসভাসহ বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রোববার (২৬ মে) বেলা ১২টার দিকে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হওয়ায় পৌরসভাসহ কয়েকটি ইউনিয়নের কমপক্ষে ২৫টি গ্রাম স্থানভেদে ২ থেকে ৩ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে।  এ ছাড়া খাউলিয়া ইউনিয়নে চালের গুদামে পানি ঢুকে ৩ টন চাল ভিজে নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাস্টার সাইদুর রহমান। এখন পর্যন্ত সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে ২ হাজার লোক ও ৩ শতাধিক গবাদি পশু আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাট থেকে বহরবুনিয়া ইউনিয়নের সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী রাস্তাটি ধসে পড়েছে। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে শত শত মানুষের। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ৮৬টি সাইক্লোন শেল্টারে খাবার সরবরাহের কাজ শুরু হয়েছে। কিছু কিছু সাইক্লোন শেল্টারে গবাদি পশু ও বিপদাপন্ন লোকজন আশ্রয় নিয়েছে।  ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারি হওয়ার পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম তারেক সুলতান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বদরুদ্দোজা, থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুদ্দীন আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেছেন। পানগুছি নদীর ফেরিসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার সরবরাহের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল জাবি। তিনি বলেন, এরইমধ্যে নদীর তীরবর্তী সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে প্রায় ২ হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছেন।
২৬ মে, ২০২৪

ফেনীতে পাহাড়ি ঢলে ২০ গ্রাম প্লাবিত
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামে মুহুরী ও কহুয়া নদীর তিনটি স্থানে ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। এতে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) ২০টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি, ভেসে গেছে মাছের ঘের। এদিকে পরশুরাম পয়েন্টে বর্তমানে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। তবে ভাঙ্গা অংশ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। এতে নতুন নতুন এলাকায় পানি ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ফুলগাজী ও পরশুরামে ক্ষতিগ্রস্ত ও বানভাসী মানুষের ঘরবাড়ি পরিদর্শন ও ত্রাণসামগ্রী বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেন ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরীন আখতার। এ সময় ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আলিম, নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূঞাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ ও জাসদ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় ও এলাকাবাসী জানান, ফেনীর ফুলগাজীর সদর ইউনিয়নের উত্তর বরইয়া, উত্তর দৌলতপুর গ্রামের বেড়িবাঁধের দুটি স্থানে এবং পরশুরামের চিথলিয়া ইউনিয়নের অলকা গ্রামে একটি স্থানে ভাঙনের কবলে পড়ে। এতে প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানির প্রচণ্ড বেগে বাঁধের আশপাশের ফুলহাজির উত্তর বরইয়া, বণিকপাড়া, বিজয়পুর, কিসমত বিজয়পুর, বসন্তপুর, জগতপুর এবং পরশুরামের পশ্চিম অলকা, পূর্ব অলকা, নোয়াপুর, অনন্তপুর, চিথলিয়া, ধনীকুণ্ডা, রামপুর, রতনপুর, দুর্গাপুর, জয়পুর, ঘনিয়ামোডা, সাতকুচিয়াসহ বেশ কিছু  গ্রামে বানের পানি ঢুকে পড়ে। এতে তলিয়ে গেছে আমনের কয়েক হাজার হেক্টর জমি। ভেসে গেছে মাছের ঘের। গ্রামবাসীরা জানান, সোমবার ভোরে বাঁধের অংশে ভাঙন দেখা দিলে গাছ কেটে, মাটি দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করেও রুখতে পারেনি তারা। অপরদিকে ঝুঁকিতে রয়েছে ১২২ কিলোমিটারের বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থান। নদীর উভয় পাড়ের ১২২ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের তীরবর্তী এলাকার শতশত পরিবারের হাজার হাজার মানুষের দিন আর রাত কাটছে বন্যার কবলে পড়ে মানবেতর জীবন। দৌলতপুর এলাকার মো. জামাল উদ্দিন জানান, গত চার পাঁচ দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে, মহুরি নদীর দুই পাশে দুটি ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে করে অনেক পুকুর পানির নিচে ডুবিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে কৃষি জমি। আনুমানিক ৪ থেকে ৫শ পরিবার পানিবন্দি। তিনি জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলার কারণে প্রতি বছর তাদের এই দুঃখ-দুর্দশা লেগেই থাকে। তারা বর্ষার সময় বাঁধ ভাঙলে দৌড়ে আসে, কিন্তু এরপর আর আসে না।  ফুলগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা জানান, এই পর্যন্ত উপজেলার প্রায় ৭০০ হেক্টর আমন ধান পানির নিচে নিমজ্জিত। যদি পানি নেমে যায় দুই এক দিনের মধ্যে তাহলে ফসলের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। এ বিষয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপপ্রকৌশলী  মো. আরিফুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গত কিছু দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে মুহুরী ও কহুয়া নদীর তিনটি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে নদীর পানি বিপৎসীমার ২৮ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নামার পর ভাঙনস্থানগুলো মেরামত করা হবে। তিনি আরও জানান, এ বাঁধ ৭৩১ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাশের অপেক্ষায় আছে। পাস হলেই টেকসই বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব হবে।
০৯ আগস্ট, ২০২৩

ফেনীতে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত
ভারি বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজীতে মুহুরী নদী রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে সদর ইউনিয়নের ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, ফসলি জমি ও মাছের ঘের। ইউনিয়ন পরিষদ ও কাঁচাবাজারেও পানি উঠেছে। রোববার (৬ আগস্ট)  ভোর রাতে উপজেলার ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের বরইয়া গ্রামের এনাম মিয়ার বাড়ির পাশে এ ভাঙন দেখা দেয়। এতে লোকালয়ে বন্যার পানি ঢুকে পড়ে। সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম  বলেন, রাতে বরইয়া গ্রামের এনাম মিয়ার বাড়ির পাশে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি।  দুর্গত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূঞা বলেন, মুহুরী নদীর পানির চাপ এখনো কমেনি। নদীর আশপাশের মানুষের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক বাড়ছে। দুর্গত এলাকায় বিতরণের জন্য শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।  বিগত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে ফুলগাজীর মুহুরী এবং পরশুরামের কহুয়া নদী রক্ষা বাঁধে ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছেন কৃষকরা। কিন্তু এর জন্য স্থায়ী কোনো সমাধান নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন নদীর পাড়ের মানুষজন।  ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন বলেন, নদীর পানিপ্রবাহ কমলে বাঁধের ভাঙন স্থান জরুরিভাবে মেরামত করা হবে।
০৭ আগস্ট, ২০২৩

ফেনীতে টানা বর্ষণে বাঁধ ভেঙে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত
কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টি ও উজানের ঢলে ফেনীর ফুলগাজীতে মুহুরী নদীর উত্তর বরইয়া ও উত্তর দৌলতপুর দুটি স্থানে বাঁধ ভেঙে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বর্তমানে বিপৎসীমার ১২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড উপসহকারী প্রকৌশলী মনির আহমদ জানান, সোমবার (৭ আগস্ট) সকাল ১০টা পর্যন্ত মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত ও নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় সীমান্তবর্তী ফুলগাজী উপজেলায় নদীভাঙন দেখা দেয়। এতে নষ্ট হয় ফসলি জমি, মাছের ঘের ও সবজিক্ষেত।  উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে। কিন্তু অবিরাম বৃষ্টিতে ফসল ও মাছের ঘের প্লাবিত হওয়ার দুশ্চিন্তায় কৃষক আর মাছ চাষিরা। ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঞা বলেন, বেড়িবাঁধে মুহুরী নদীর পানি বাড়ায় দুটি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাও হয়েছে।
০৭ আগস্ট, ২০২৩
X