স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাগানে নজর কাড়ছে গোলাপি জবা
অতি পরিচিত একটি ফুল জবা। শোভাবর্ধনকারী ফুল হিসেবে জবার নিজস্ব সক্রিয়তা রয়েছে। জবার সৌন্দর্যে দৃষ্টি আটকায় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। এমনই দৃষ্টি আটকানো গোলাপি জবা নজর কাড়ছে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফুল বাগানে। গোলাপি জবার মন ভোলানো সৌন্দর্যে বিমোহিত হচ্ছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা রোগীসহ স্থানীয়রা।  সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের পাশের ফুল বাগানে নিজেদের সৌন্দর্যের জানান দিচ্ছে গোলাপি জবা। এ ফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনরা। নয়নাভিরাম এ ফুলের সৌন্দর্য ক্যামেরাবন্দি করছেন অনেকেই। আবার কেউ কেউ এ ফুলের সঙ্গে তুলছেন সেলফি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবেশে গোলাপি জবা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ফুলপ্রেমীদের কাছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফুলবাগান এখন দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।  জানা গেছে, জবার অনেক প্রজাতি রয়েছে। এদের মধ্যে রক্তজবা, ঝুমকাজবা, জবা কুসুম, গোলাপি জবা ও মরিচা জবা উল্লেখযোগ্য। তবে সাধারণত গোলাপি জবা খুব একটা দেখা যায় না। গোলাপি জবা হাইব্রিড জাতের জবা। এর ইংরেজি নাম হিবিসকাস। জবা ফুল আকারে বড় হয়। এ ফুল পঞ্চমুখি ও থোকা আকারের হয়ে থাকে। জবা মালভেসি গোত্রের অন্তর্গত চিরসবুজ পুষ্পধারী গুল্ম। এর আদি নিবাস পূর্ব এশিয়াতে। এটিকে চিনা গোলাপও বলা হয়। এর নানা রঙের ফুলের জন্য বাগানের শোভাবর্ধনে লাগানো হয়। তবে শুধু শোভাবর্ধনই নয়, জবার রয়েছে ভেষজ গুণ। আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় জবার ভূমিকা অপরিসীম। মানবদেহের নানা রোগ নিরাময়ে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।  আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে, চুল দীর্ঘ ও উজ্জ্বল করতে জবার কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে। শরীরের ক্ষত নিরাময়ে জবা ব্যবহার করা হয়। জবার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও প্রদাহ বিরোধী ধর্ম থাকায় এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। জবা অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে।  স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা তানভীর হাসান রাসেল কালবেলাকে বলেন, ‘এ উপজেলায় আমরা সচরাচর রক্তজবা ও ঝুমকা জবা দেখতে পাই। গোলাপি জবা খুব একটা দেখা যায় না। হাসপাতালের বাগানে ফোটা গোলাপি জবা তাই মানুষকে আকৃষ্ট করছে।’ স্থানীয় বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন অনিক কালবেলাকে বলেন, ‘হাসপাতালে আসা রোগীরা ছাড়াও এই গোলাপি জবা দেখতে অনেকেই আসছেন। এই ফুলের সৌন্দর্য মানুষকে সহজেই আকৃষ্ট করছে। অনেকেই এই গোলাপি জবা ফুলের ছবি তুলে নিচ্ছেন নিজেদের মোবাইলে।' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউনানি চিকিৎসক সোহেল রানা কালবেলাকে বলেন, ‘আমাদের বাগানে ফোটা নয়ন জুড়ানো গোলাপি জবার সৌন্দর্য উপভোগ করছেন অনেকেই। তবে জবা শুধু সৌন্দর্যই বিলায় না, এর রয়েছে ভেষজ গুণ। বিশেষ করে এ গাছের ফুল মানবদেহের নানা রোগে বহু আগে থেকেই ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। জবার অনেক প্রজাতি রয়েছে।’ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মো. মহিউদ্দিন মুবিন কালবেলাকে বলেন, ‘আমাদের ফুল বাগানে বিভিন্ন ধরনের ফুলের আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে গোলাপি জবার চারাও বপন করা হয়েছিল। এসব গাছে ফুল এসেছে। ই জবার সৌন্দর্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবেশেও পরিবর্তন এসেছে। এসব ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন নানা বয়সী মানুষ।’
১৫ মে, ২০২৪
X