শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১
ইউএনওর গোপন ভিডিও নিয়ে ব্ল্যাকমেইল, অতঃপর
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিমেষ বিশ্বাসের দেহরক্ষী আকাশ বিশ্বাসকে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার আকাশ বিশ্বাস (২৭) খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর গ্রামের মৃত নিহার বিশ্বাসের ছিলে। গত দুই বছর ধরে সে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করছিল। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাতে লোহাগড়া থানা পুলিশের ওসি কাঞ্চন কুমার রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, অশ্লীল ভিডিওর ভয় দেখিয়ে ইউএনও অনিমেষ বিশ্বাসের কাছ থেকে কয়েক দফায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন অজ্ঞাতরা। এ ঘটনায় ইউএনওর স্ত্রী বিপাশা বিশ্বাস চাঁদাবাজির অভিযোগ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে লোহাগড়া থানায় মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে ইউএনওর ওই দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ওসি কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, চাঁদাবাজি মামলায় সম্পৃক্ততার কারণে আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে জানতে পেরেছি, তিনি আনসার সদস্য ও ইউএনওর দেহরক্ষী। তাই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হবে। এছাড়া চাঁদাবাজ চক্রকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ব্যবহৃত নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে কল করে জানান, একটি অশ্লীল ভিডিও আছে, যেটির জন্য ১০ লাখ টাকা না দিলে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়া হবে। একাধিকবার অজ্ঞাতনামা চাঁদাবাজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর মুঠোফোনে হুমকি দেন। ভয়ে বিপাশা বিশ্বাস তার স্বামীর সম্মান ও জীবনের নিরাপত্তায় পর্যায়ক্রমে হুমকিদাতার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা দেন। হুমকিদাতার নির্দেশনায় টাকা পাঠানোর দিনে ইউএনওর গাড়িতে থাকা তার দেহরক্ষী আনসার সদস্য আকাশ পরামর্শ দেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথ থেকে অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো যায়। এ কথার সূত্র ধরে আনসার সদস্য আকাশকে সন্দেহ করেন ইউএনওর স্ত্রী। পরে গত সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে খুলনার ডুমুরিয়া থেকে ছুটি শেষে কাজে যোগদানের উদ্দেশে আকাশ লক্ষীপাশা বাসস্ট্যান্ডে নামলে পুলিশ তাকে আটক করে। এরপর মঙ্গলবার (১২ মার্চ) মামলা রুজুর মাধ্যমে পরদিন বুধবার (১৩ মার্চ) গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে ইউএনও অনিমেষ বিশ্বাসের স্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ইউএনওর দাবি, তার স্ত্রীর করা চাঁদাবাজি মামলার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। তাকে মামলার বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। অভিযুক্ত দেহরক্ষী আকাশের ভাই সমর বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা হোক। তাতে যদি আকাশ অপরাধ করে থাকে, তবে তার শাস্তি হোক। কিন্তু সঠিক তদন্তের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
১৫ মার্চ, ২০২৪
X