ফেসবুকে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তির ছড়াছড়ি শুধুই গুজব
হঠাৎ করেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শিশু নিখোঁজের খবর ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে বলা হয়, ‘গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাসহ চট্টগ্রামে ৩৫ শিশু নিখোঁজ!’ এসব তথ্য দেখে সাধারণ লোকজনও তাদের আইডিতে তা শেয়ার করতে থাকেন। তবে এই ‘গত ৪৮ ঘণ্টা’ সময়টা কোন সপ্তাহ বা মাসের, তা থাকে না এসব ফেসবুক স্ট্যাটাসে। পুলিশ কর্মকর্তারাও বলছেন, এ ধরনের ফেসবুক পোস্ট মূলত গুজব। কারণ নিখোঁজের যে সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে, মাস বা সপ্তাহ হিসাবে এ ধরনের নিখোঁজের জিডি আরও বেশি রেকর্ড হয়। জিডির পর প্রায় সবাই ফিরে আসে বা পুলিশ তাদের উদ্ধারও করে। গতকাল রোববার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক বার্তায় জানানো হয়েছে, ‘সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘শিশু নিখোঁজ’ সংক্রান্ত পোস্ট পুলিশ সদর দপ্তরের নজরে এসেছে। এ ধরনের গুজবে বিভ্রান্ত বা আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, একটা বিষয় নিশ্চিত করে বলতে চাই, আমাদের কাছে মানুষ নিখোঁজ হওয়ার অস্বাভাবিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। স্বাভাবিক যেসব সাধারণ ডায়েরি হয়, ডিএমপির প্রত্যেকটি থানায় গত কয়েক মাসে সেরকমই হয়েছে। হুট করে মানুষ নিখোঁজের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার তথ্যটি সঠিক নয়। কারণ আমাদের কাছে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট পরিসংখ্যান রয়েছে। তিনি বলেন, কেউ বা কোনো গোষ্ঠী এই বিষয় নিয়ে গুজ ছড়িয়ে থাকলে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া শাখার এসপি ইনামুল হক সাগর বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। কেউ এ ধরনের গুজব ছড়ালে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ঘেঁটে দেখা গেছে, একটি আইডি থেকে পোস্ট দেওয়া হয়, ‘গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাসহ চট্টগ্রামে ৩৫ শিশু নিখোঁজ! সারা দেশে এগুলো কী শুরু হলো হঠাৎ! একটানা এত ছেলেমেয়ে নিখোঁজের সংবাদে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ছেলেধরার মতো, কোনো একটা সক্রিয় চক্র মাঠে নেমেছে। সবাই সাবধান হন। এ ব্যাপারে প্রশাসন অর্ধমৃত। আপনার সন্তানের নিরাপত্তায় আপনি সচেতন হন। নিউজটি দ্রুত শেয়ার করে সবাইকে অ্যালার্ট করে দিন।’ ইংরেজি অক্ষরে লেখা ‘এনটিআরসিএ শিক্ষক নিবন্ধন (প্রস্তুতি)’ নামের পেজ থেকে গত শনিবার রাতে লেখা হয়েছে, ‘ব্রেকিং নিউজ! গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাসহ চট্টগ্রামে ৩৫টি বাচ্চা নিখোঁজ। সতর্ক থাকুন।’ অবশ্য ডিএমপির কাছ থেকে পাওয়া পরিসংখ্যানে দেখা যায়, শুধু রাজধানীর ৫০ থানাতেই প্রতি মাসে গড়ে ২০০ এর বেশি নিখোঁজ জিডি হয়ে থাকে। অর্থাৎ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এই সংখ্যংক লোক নিখোঁজ হন। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নিখোঁজ জিডি হলেও তারা প্রায় সবাই ফিরে আসেন বা তাদের অবস্থান শনাক্ত করা যায়। পরিসংখ্যান বলছে, গত জানুয়ারি মাসে রাজধানীর ৫০ থানায় ২১০টি, ফেব্রুয়ারি মাসে ২১৭টি, মার্চ মাসে ২১৩ টি, এপ্রিলে ২২১টি, মে মাসে ১৯৯টি এবং জুনে ২৬০টি নিখোঁজ জিডি হয়। চলতি জুলাই মাসে গতকাল পর্যন্ত ৭৬টি নিখোঁজের জিডি হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, পারিবারিক কলহ, পথ হারিয়ে বা অন্য কোন কারণে অনেকেই নিখোঁজ হয়ে থাকে। পড়ালেখার চাপে অনেক মাদ্রসাছাত্র নিখোঁজ হয়। অনেকে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে পালিয়ে যান। এসব ঘটনাতেও নিখোঁজ জিডি হয়। তবে এর প্রায় সবার অবস্থানই শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
৮ ঘণ্টা আগে

খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিএনপি গুজব ছড়াচ্ছে
বিএনপি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণকে উসকানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দলটি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে জনগণের কাছ থেকে করুণা আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে বিএনপি খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি এবং সে সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপির বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি জনগণ বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে এবং তারা আজ একটি ব্যর্থ রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। এখন তাদের তথাকথিত আন্দোলনের বিষয় দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত অসুস্থ নেত্রী খালেদা জিয়া। ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে নিজ বাসায় থেকে দেশের সর্বাধুনিক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছেন। সেখানে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির মুক্তভাবে এভাবে চিকিৎসাসেবা গ্রহণের কোনো নজির নেই। তবে বিএনপি কয়েক বছর ধরে আইনি পদ্ধতি ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করছে। আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সংবিধান ও আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামির মুক্তির দাবি ধৃষ্টতা ছাড়া কিছু নয়। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে কোনো সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির দেশ ত্যাগ করার কোনো বিধান নেই। মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী ক্ষমতাবলে সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, উচ্চ আদালতে না গিয়ে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। ঐতিহ্যগতভাবে বিএনপি কখনো আইনের শাসনে বিশ্বাস করে না এবং চিরাচরিতভাবে আইন, বিচার ব্যবস্থা, সংবিধান ও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। আওয়ামী লীগ দেশে সংবিধান ও আইনের শাসন বজায় রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো ধরনের বেআইনি, অযাচিত ও অযৌক্তিক দাবি কোনো গণতান্ত্রিক সরকার মানতে পারে না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অতীতের মতো আন্দোলনের নামে যে কোনো সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করবে।
০১ জুলাই, ২০২৪

সেন্টমার্টিন নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে
সেন্টমার্টিনের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ উল্লেখ করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, যে কোনো মূল্যে দেশের অখণ্ডতা রক্ষা ও সীমান্তে নিরাপত্তায় বিজিবি বদ্ধপরিকর। সেন্টমার্টিনকে কেন্দ্র করে যতটুকু কানে এসেছে কিংবা অনেকেই বলছে, সেগুলো আসলেই গুজব। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজে (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) প্যারেড গ্রাউন্ডে ১০১তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মহাপরিচালক বলেন, সেন্টমার্টিন নিয়ে অপপ্রচার করার চেষ্টা করছে অনেকেই। আমি নিজেও সেখানে গিয়েছি। সেখানে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সাবধান করে এসেছি। তিনি বলেন, মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও বিদ্রোহী দলের মধ্যে নাফ নদের তীরবর্তী এলাকায় তুমুল যুদ্ধ চলছে। যখন একটি-দুটি দলের মধ্যে যুদ্ধ চলে তখন এর পাশাপাশি এদিক-ওদিক গোলাগুলি হতে পারে। কিছু গোলা এদিক-ওদিক গেছে, কিছু ট্রলারে গেছে। আমরা মিয়ানমারের দুপক্ষকে জানিয়েছি, আমাদের ট্রলারের মধ্যে পরবর্তী সময়ে যেন কোনো ঘটনা না ঘটে। এরপর কিন্তু আর গোলাগুলি হয়নি। তবুও সেন্টমার্টিনে যেসব ট্রলার চলাচল করে তাদের বাংলাদেশের পতাকা উঁচু করে বেঁধে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হবে না। তার পরও সাবধানতা অবলম্বন করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিকল্প পথে কক্সবাজার থেকে জাহাজ, ট্রলার গমনাগমন করছে। শুধু ঝুঁকিপূর্ণ যে এলাকাটুকু ওই এলাকা এভোয়েড (বাদ দিয়ে) চলাচলের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। সাংবাদিকরা পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) অপতৎপরতার প্রতিরোধের বিষয়েও জানতে চান বিজিবি মহাপরিচালকের কাছে। তিনি বলেন, সর্বশেষ পরিস্থিতি হলো এখনো যৌথ বাহিনীর অপারেশন চলছে। এর মধ্যে অনেক সফলতা এসেছে। থানচি, রুমাসহ বিভিন্ন এলাকা সম্পূর্ণভাবে বিপদমুক্ত ও জনসাধারণের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ না করার পর্যন্ত অপারেশন চলমান থাকবে। এর আগে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নবীন সৈনিকদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দেন তিনি। এ সময় বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় অসামরিক প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও আমন্ত্রিত গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
২৮ জুন, ২০২৪

পিরোজপুরে রাসেলস ভাইপার সাপ মারার গুজব
দেশব্যাপী এখন আতঙ্ক ও আলোচনায় বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার। দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষের মধ্যে এই সাপের আতঙ্ক বিরাজ করছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সাপ নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। কিন্তু এবার পিরোজপুরের নেছারাবাদে রাসেলস ভাইপার সাপ মেরেছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুক গুজব ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার (২২ জুন) সন্ধ্যা থেকে একাধিক ফেসবুক আইডিতে নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের জিলবাড়ি গ্রামে রাসেলস ভাইপার সাপের দেখা মেলার ছবি ও লেখা প্রচারিত হয়। এসব পোস্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুকে এসব ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সরেজমিনে জানার যায়, নেছারাবাদ উপজেলার ১নং বলদিয়া ইউনিয়নের জিলবাড়ী গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডে বসবাসরত ইব্রাহিম নামের এক যুবকের মাছ ধরার জালে আটকা পরে এই সাপটি। তাৎক্ষণিক জিরবাড়ি বাজারের ফার্মেসি ব্যবসায়ী মো. মহসিন রেজার কাছে সাপটি চিহ্নিত করার জন্য নিয়ে আসে। তিনি নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. ফিরোজ কিবরিয়ার কাছে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মৃত সাপটির ছবি পাঠিয়ে দেয়। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়ে দেন এটি রাসেলস ভাইপার সাপ নয়। এরই মধ্যে কিছু যুবক সাপটির ছবি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ও ফেসবুকের মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বলছে, ফেসবুকে ছড়ানো রাসেলস ভাইপার নামের সাপটি মূলত অন্য প্রজাতির সাপের ছবি। অন্য একটি ছবি রাসেলস ভাইপার সাপের হলেও ঘটনাটি গুজব। উপজেলা প্রশাসন বলছে, গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জিলবাড়ী গ্রামের একাধিক বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের গ্রামে রাসেলস ভাইপার সাপ ধরা পড়েছে এমন ঘটনা কেউ শোনেননি। তবে সন্ধ্যায় যে সাপটি ধরা হয়েছে সেটি আমারা কোন জাতের তা শনাক্ত করতে পারেননি। অফিশিয়াল ও আঞ্চলিক নামও তারা জানেন না বলে জানিয়েছেন। এই সাপ সর্বদা জলে বাস করে এবং মাছ খেয়ে জীবনধারণ করে তাই মাছ ধরার কারেন্ট জালে প্রায়শই ধরা পড়তে দেখা যায়। স্থানীয় পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী রক্ষা কমিটির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাব্বির আহমেদ নামের একটি ফেসবুক আইডির পোস্টে রাসেলস ভাইপারের হত্যার বিষয়টি নজরে এলে যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও গুজব। নেছারাবাদে এখন পর্যন্ত রাসেলস ভাইপার সাপের দেখা মেলেনি। গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন বলেন, আমি স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি, ওই এলাকায় রাসেলস ভাইপার সাপ ধরার কথা সত্যি না। ঘটনাটি গুজব। যে সাপটি ধরেছে সেটি অন্য কোনো প্রজাতির সাপ হবে। যাচাই-বাছাই করে সাপের নামটি জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বন কর্মকর্তা। এ প্রসঙ্গে নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক জানান, নেছারাবাদ উপজেলায় রাসেলস ভাইপার সাপের দেখা মেলার ঘটনাটি সঠিক নয়। যারা এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে তাদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৩ জুন, ২০২৪

এক পেজ থেকেই ছড়াচ্ছে যত গুজব
বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল করে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কয়েকটি এমন ভুয়া ফটোকার্ডের প্রমাণ মিলেছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও বিনোদন জগতের তারকাদের নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে। দেখা গেছে, একটি নির্দিষ্ট ফেসবুক পেজ থেকে ভুয়া ফটোকার্ড প্রথম প্রচারিত হয় এবং পরে তা দ্রুত ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশের একটি ফ্যাক্টচেক সংস্থা রিউমর স্ক্যানারের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এসব ফটোকার্ড ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তি ও ভুক্তভোগীরা সামাজিকভাবে বিব্রত হয়েছে। রিউমর স্ক্যানার জানায়, গত ৪ জুন, চ্যানেল আইয়ের লোগো সম্বলিত একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফটোকার্ডে লেখা ছিলো কণ্ঠশিল্পী ও সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম এইডস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সংস্থাটির অনুসন্ধানে জানা গেছে, চ্যানেল আই এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। দেশের অন্যান্য কোনো গণমাধ্যমও এ ধরনের খবর প্রচার করেনি। চ্যানেল আইয়ের ফটোকার্ড নকল করে মমতাজ বেগমের নামে এই গুজব ছড়ানো হয়েছে। পরে খোদ মমতাজ এটি ভুয়া জানিয়ে মন্তব্য করেন এবং এর ফলে তিনি বিব্রত হয়েছেন বলেও জানান।। সংস্থাটি আরও জানায়, এই গুজবের নেপথ্যে আছে ‘Tanha’ (বর্তমানে Joni Sing) নামের একটি ফেসবুক পেজ। ওই পেজটি এর আগেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের ভুয়া ফটোকার্ড বানিয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিদের নামে প্রচার করেছে। গত ০১ জুন ‘পায়ুপথে ১ কেজি স্বর্ণ নিয়ে ধরা ছাত্রলীগ নেত্রী’ শিরোনামে যমুনা টিভির লোগো সম্বলিত একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ফটোকার্ডে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি তিলোত্তমা শিকদারের ছবি ব্যবহার করা হয়। এ খবরের পরেই রিউমর স্ক্যানার ফ্যাক্টচেক করে জানায়, যমুনা টিভি এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি; গণমাধ্যমটির ভিন্ন ফটোকার্ড সম্পাদনা করে এই গুজব ছড়ানো হয়। ওই একই দিনে Tanha (বর্তমানে Joni Sing)। নামের পেজটিতেও এ ভুয়া ফটোকার্ডটি প্রচার করা হয়েছিল। এছাড়া বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনিকে জড়িয়ে ২ জুন ছড়িয়ে পড়া একটি গুজবও একই পেজে প্রচার করা হয়। অনলাইন গণমাধ্যম জুম বাংলার একটি ফটোকার্ড সম্পাদনা করে ‘পরীমনির বাসা ভর্তি বিদেশি কনডম’ শিরোনামে এ গুজব ছড়ানো হয়। অর্থাৎ, বিভিন্ন অঙ্গনের পরিচিত ও জনপ্রিয় ব্যক্তিদের টার্গেট করে এ পেজ থেকে বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। যেসব ব্যক্তি এ পেজের গুজবের শিকার হয়েছেন গত ৩১মে থেকে গত ২০ জুন পর‌্যন্ত পেজটি থেকে অন্তত ১৭ টি গুজব ছড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ দুবার করে গুজবের শিকার হয়েছেন চিত্র নায়িকা পরীমনি, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং ভারতের কোলকাতায় খুন হওয়া সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার।  এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি তিলোত্তমা শিকদার, নায়িকা মাহিয়া মাহি এবং সম্প্রতি ছাগলকাণ্ডে ভাইরাল মুশফিকুর রহমান ইফাতকে নিয়ে একবার করে গুজব ছড়ানো হয়েছে পেজটি থেকে।
২২ জুন, ২০২৪

সেন্টমার্টিনের নিরাপত্তা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে : আইএসপিআর
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেন্টমার্টিনের নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহলের গুজবে বিভ্রান্ত না হতে অনুরোধ জানিয়েছে আইএসপিআর। রোববার (১৬ জুন) আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যৌথ অপারেশন পরিচালনা করছে। খবর বাসসের।  মিয়ানমার সামরিক বাহিনী এবং আরাকান আর্মির এই সংঘর্ষের কারণে নাফ নদী এবং নদী সংলগ্ন মোহনা এলাকায় বাংলাদেশী বোটের উপর অনাকাঙ্খিত গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এবিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গত ১২ জুন প্রতিবাদ জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় মিয়ানমার নৌবাহিনী সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে মিয়ানমারের সমুদ্রসীমায় এবং নাফ নদীর মিয়ানমার সীমানায় অবস্থান করে মিয়ানমারের দিকে আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করছে। একই সঙ্গে আরাকান আর্মিও মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ ও বোট লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্তমানে মিয়ানমার সীমান্তে মিয়ানমার নৌবাহিনীর একাধিক যুদ্ধজাহাজ অপারেশন পরিচালনা করছে। মিয়ানমার নৌবাহিনী সেন্টমার্টিনের অদূরে মিয়ানমারের সমুদ্রসীমায় অবস্থানের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে অবহিত করছে।  উল্লেখ্য যে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ মিয়ানমারের মূল ভূখন্ড এবং তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় চলমান রয়েছে। আরও উল্লেখ্য যে, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের কাছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের একাধিক জাহাজ মিয়ানমারের জাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণসহ বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় থেকে নিয়মিত টহল দিচ্ছে। মিয়ানমারের চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ সেন্টমার্টিনের নিকটবর্তী হওয়ায় এই সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেন্টমার্টিনের নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন স্বার্থান্নেষী মহল কর্তৃক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সকলকে এ ধরনের গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
১৬ জুন, ২০২৪

ইউটিউবের এক চ্যানেলেই জয়কে নিয়ে ১০ বার গুজব
এক ইউটিউব চ্যানেল থেকেই চলতি বছর ১০ বার সজীব ওয়াজেদ জয়ের গ্রেপ্তার হওয়ার গুজব রটিয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি ফ্যাক্টচেক সংস্থা রিউমর স্ক্যানার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গহীনের বার্তা নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার হয়েছেন এমন দাবিতে চলতি বছর ১০টি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ জয়ের গ্রেপ্তারের কোনো তথ্য গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রেই আসেনি।  এসব ভিডিওতেও এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। থাম্বনেইলে জয়ের গ্রেপ্তারের এডিটেড ছবি এবং ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিদের অপ্রাসঙ্গিক আলোচনার ফুটেজ সংগ্রহ করে এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।  জয়ের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে যে ১০টি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে দুটি জানুয়ারিতে, ৪টি ফেব্রুয়ারিতে, ৩টি মার্চে এবং একটি চলতি মাসে প্রকাশিত হয়েছে। এসব ভিডিও বিশ্লেষণ করে স্বতন্ত্র কোনো ব্যক্তিকে ভিডিওগুলোতে দেখা যায়নি।  চ্যানেল কর্তৃপক্ষ এসব ভিডিওতে নিজেদের কোনো মতামতও দেননি। ইউটিউবের বিভিন্ন চ্যানেলের ভিন্ন ভিন্ন বক্তার ভিডিও সংগ্রহ করে এসব ভিডিওতে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে ইউটিউবের ৯টি চ্যানেলের ১৫টি ভিডিওকে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিডিও নেওয়া হয়েছে নাগরিক টিভি নামের একটি চ্যানেল থেকে।  সংগৃহীত ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিট দেখেছে, এসব ভিডিওর কোনোটিতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ এবং এফবিআইয়ের এক কর্মকর্তার এ-সংক্রান্ত কথিত একটি নথি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, কোনোটিতে শেখ হাসিনার গত বছরের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে আলোচনা হয়েছে।  কোনো ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে এফবিআই তদন্ত করছে জয়ের বিষয়ে, কোনোটিতে বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যসহ অপ্রাসঙ্গিক বিভিন্ন ভিডিওর মাধ্যমে শিরোনাম এবং থান্বনেইলে দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।  তবে একটি ভিডিওতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বক্তা জ্যাকব মিল্টনকে বলতে শোনা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে জয় ১৪ বার গ্রেপ্তার হয়েছেন।  এই ভিডিওটি সংগ্রহ করা হয়েছে ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর নাগরিক টিভির ইউটিউবে প্রকাশিত একটি ভিডিও থেকে। যদিও এই দাবির পক্ষে প্রায় দেড় বছরের পুরোনো এই অনুষ্ঠানে কোনো তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।  আরেকটি ভিডিও যেটিও নাগরিক টিভির গত ৩ মে এর একটি অনুষ্ঠান থেকে নেওয়া হয়েছে, সেখানে উপস্থাপক নাজমুস সাকিবকে দাবি করতে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র এবং কাতার এই দুই দেশে জয় আইনি ঝামেলায় পড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাকে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে আসতে হয়েছে এমন দাবিও উপস্থাপন করতে দেখা গেলেও জনাব সাকিব এসব বিষয়ে কোনো প্রমাণ দেখাননি তার অনুষ্ঠানে। অর্থাৎ, চলতি বছরে প্রকাশিত গহীনের বার্তা চ্যানেলটির ভিডিওগুলোতে কোনো তথ্যপ্রমাণই ছাড়াই জয়ের গ্রেপ্তার হওয়ার দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।  গহীনের বার্তা নামের চ্যানেলটিতে চলতি বছর যে কয়টি ভিডিওর মাধ্যমে সজীব ওয়াজেদ জয়ের গ্রেপ্তারের দাবি প্রচার করা হয়েছে তার মধ্যে প্রথম প্রকাশিত ভিডিওটি পাওয়া যায় ৫ জানুয়ারি। রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন এসব ভিডিও সম্পর্কে অনুসন্ধান করে জানায়, ‘জেল বন্দি জয় চোরা ওয়াশিংটন ডিসিতে’ শিরোনামে প্রকাশিত এই ভিডিওটি সংগ্রহ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এম রহমান মাসুমের ইউটিউব চ্যানেল Channel US Bangla থেকে। মাসুমের চ্যানেলে ভিডিওটি এখন আর নেই। তবে তিনি ভিডিওটির লিংক তার ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছিলেন যা এখনো সচল রয়েছে।  তার ভিডিওটি ডাউনলোড করে সেদিনই ইউটিউবের আরেকটি চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়েছে। মাসুম তার ভিডিওতে দেওয়া বক্তব্যে দাবি করেন, জয়ের বাজেয়াপ্ত হওয়া ৩০০ মিলিয়ন ডলার মামলার নথি প্রকাশ করা হয়েছে সেদিন অর্থাৎ ৫ জানুয়ারি।  তিনি বলেন, এটি প্রকাশ করেছেন New York Voice-নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলের মালিক নাজমুল হাসান বাবু নামে এক ব্যক্তি।  একইদিন নিউইয়র্ক ভয়েস চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিওটিতে দেখা যায়, নাজমুল হাসান একটি নথির ছবি দেখান, দাবি করেন শেখ হাসিনা ও জয়ের বাজেয়াপ্ত হওয়া ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বিষয়ে ওয়াশিংটনে হওয়া মামলার নথি এটি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, একই নথির ছবি অন্তত ৪ জানুয়ারি থেকেই ফেসবুকে পোস্ট হচ্ছিল।  শিরোনামের এই নথিটি ডেবরা লাপ্রেভোট্টে নামে এক নারী প্রস্তুত করেছেন। কেস আইডি উল্লেখ করা হয়েছে, 275-WF-237566। নথিটি পড়ে জানা যাচ্ছে, ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে ডেবরা লাপ্রেভোট্টের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের (ডিওজে) সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলস যোগাযোগ করেছিলেন।  লিন্ডা বাংলাদেশ থেকে চুরি হওয়া ফান্ড যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে পাচারের সঙ্গে জড়িত একটি অভিযোগের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) ওয়াশিংটন ফিল্ড অফিসকে সহায়তার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। লিন্ডা জানান, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০০৭ সালের জুলাই মাসে দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং শেখ হাসিনার চুরি করা বা চাঁদাবাজির কিছু অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে বা তার মাধ্যমে পাচার করা হয়েছিল। এর পাশাপাশি তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ও যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচার করেছেন।  নথিতে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনা ৩০০,০০০,০০০ ডলারের বেশি চুরি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মার্কিন বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে তদন্তের জন্য এফবিআইয়ের ওয়াশিংটন ফিল্ড অফিসকে অনুরোধ করার তথ্য উল্লেখ রয়েছে এই নথিতে।  এর প্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ৪ জানুয়ারি ডেবরা লাপ্রেভোট্টের সঙ্গে ডিওজের একটি মিটিং নির্ধারিত রয়েছে বলেও জানানো হয় নথিতে।  এই নথি থেকে জানা যায়, এটি সাম্প্রতিক সময়ের কোনো নথি নয়। বিশেষ করে, এই নথিতে থাকা অন্তত দুটি তথ্য এই সন্দেহের পক্ষেই যায়। যেমন : নথিতে শেখ হাসিনাকে ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে, এও উল্লেখ আছে- ২০০৭ সালের জুলাইয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার হন শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালের ১১ জুন তিনি মুক্তি পান। অন্যদিকে, নথিতে ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে নির্ধারিত একটি মিটিংয়ের বিষয়েও বলা হয়েছে। এই বিষয়গুলো থেকে প্রতীয়মান হয়েছে, নথিটি ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে প্রস্তুত করা হয়েছিল।  নথিতে দুজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ আছে, ডেবরা লাপ্রেভোট্টে এবং মার্কিন বিচার বিভাগের (ডিওজে) সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলস। জানা গেছে, লিন্ডা স্যামুয়েলস ২০১৩ সালে মারা গেছেন। অন্যদিকে, ডেবরা লাপ্রেভোট্টে ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এফবিআইয়ের সুপারভাইসরি স্পেশাল এজেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।  রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের পক্ষ থেকে ডেবরা লাপ্রেভোট্টের কাছে এই নথির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মার্কিন বিচার বিভাগ (ডিওজে) কর্তৃক ২০০৯ সালের ৯ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠান। এই বিজ্ঞপ্তিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর কয়েকটি ব্যাংক হিসাবের বিরুদ্ধে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানানো হয়। এই ব্যাংক হিসাবগুলোতে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জমা ছিল। এ বিষয়ে মামলার নম্বর 1:09-cv-00021(JDB)।  ডেবরা রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিটকে বলেছেন, জয় এবং শেখ হাসিনার নামে থাকা নথিতে যে অভিযোগ উল্লেখ আছে তার বিপরীতে কোনো তথ্যপ্রমাণ তারা সে সময় পাননি। জয় ২০১৬ সালে এক ফেসবুক পোস্টেও একই তথ্য জানান।  অর্থাৎ, সজীব ওয়াজেদ জয় এবং শেখ হাসিনার বিষয়ে প্রচারিত নথিটি কোনো মামলার নথি নয়, এটি শুধু একটি অভিযোগপত্র ছিল।
১৮ মে, ২০২৪

গুজব প্রতিরোধে সচেতনতা দরকার: পিআইবি মহাপরিচালক
প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেছেন, গুজব প্রতিরোধে প্রথমত সচেতনতা দরকার। কারণ সবচেয়ে বেশি গুজব ছড়ানো হয় সামাজিক মাধ্যমসমূহে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অসম্পাদিত মাধ্যম। একে সংবাদ মাধ্যম হিসেবে গণ্য করা যায় না। তাই গুজব প্রতিরোধে সচেতনতার গুরুত্ব অপরিসীম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তির কারণে শিশুদের সুকুমারবৃত্তি প্রস্ফুটিত হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় পত্রিকাসমূহ ফ্যাক্টচেক বিষয়টি সম্পর্কে এখনো তেমন একটা অবগত নয়।  মঙ্গলবার (১৪ মে) পিআইবি’র সেমিনার কক্ষে ‘গুজব প্রতিরোধে প্রচারাভিযান: তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ উপকরণ পর্যালোচনা বাংলাদেশের তিন জেলায় পরিচালিত গবেষণার তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্ট (সাকমিড) ও পিআইবির যৌথ আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।  গোলটেবিল আলোচনায় সরকারি কর্মকমিশনের সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পান্ডে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিবর্তনশীল। বর্তমান সময়ের মতো ফেক নিউজ, মিস ইনফরমেশন, ম্যাল ইনফরমেশনের মতো শব্দ নতুন সংযোজিত হলেও পূর্বেই সেটা ভিন্ন নামে- যেমন তথ্য ও অপতথ্য নামে পরিচিত ছিল। তিনি সংবাদ বলতে অনেক তথ্যের সমষ্টিকে বুঝিয়েছেন। এছাড়া তিনি অনলাইনে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে গুজব রটানোর কিছু বাস্তব তথ্য উপস্থাপন করেন। সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্ট (সাকমিড) এর অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপক সৈয়দ কামরুল হাসান আলোচনায় অংশ নেন। তিনি বলেন, গুজব প্রতিরোধে মাল্টিস্টেক হোল্ডার সৃষ্টি করতে হবে। অন্যথায় সমাজে মানুষের ব্যবহার পরিবর্তন হয়ে যাবে। সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্টের (সাকমিড) কনসালটেন্ট ড. শেখ শফিউল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, সরকারের পাশাপাশি সাকমিডের মতো কয়েকটি দায়িত্বশীল সংস্থা যেমন তথ্য মন্ত্রণালয়, পুলিশ, পিআইবি সমাজের নানাস্তরে গুজব প্রতিরোধের জন্য অংশগ্রহণমূলক নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করছে। কয়েকটি দাতা সংস্থাও এ ব্যাপারে তাদের সাহায্যের হাত প্রসারিত করেছে। গোলটেবিলে পিআইবি’র সহকারী প্রশিক্ষক জিলহাজ উদ্দীন বলেন, ফেইসবুক, ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমসমূহ মানুষের মনস্তাত্বিক বিশ্লেষণ করে। সেখানে সেভাবে কন্টেন্ট সরবরাহ করে। তাছাড়া মানুষের মনস্তাত্বিক দিক আলোচনা করে বলেন, মানুষ একটি ইতিবাচক দিক শুনতে কিংবা দেখতে চাইলে অন্ততপক্ষে ১৭টি নেতিবাচক বিষয় শুনতে বা দেখতে চাই। বৈঠকে ঢাকা মেইলের সিনিয়র প্রতিবেদক মো. বুরহানউদ্দীন বলেন, ডিজিটাল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য এই মাধ্যমসমূহ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভাষা প্রয়োগ, ছবি ও ভিডিও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সংবেদনশীল হওয়া বাঞ্ছনীয়। আর ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য থেকে উত্তোরণের জন্য সচেতনতার পাশাপাশি, মানসিকতা পরিবর্তন জরুরি। দৈনিক কালের কণ্ঠের সিনিয়র সাংবাদিক নিখিল ভদ্র বলেন, ফেক নিউজ যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা সত্য যাচাই করার অন্যতম মাধ্যম। বুম বাংলাদেশের সম্পাদক আমির শাকির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার ও তার প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমের পার্থক্য তুলে ধরেন। কীভাবে তথ্যকে বাছাই করা এক কথায় ফিল্টারিং করা যায় সেটা নিয়ে আলোকপাত করেন। ফেসবুক বাংলাদেশের মুখপাত্র শুভাশিস দ্বীপ বলেন, গুজব প্রতিরোধে আমাদের সবচেয়ে বেশি করা উচিত গ্রামীণ এলাকায়। কারণ সেখানে সবচেয়ে গুজব ডালপালা মেলে ধরে। গোলটেবিল বৈঠকে তিনটি জেলার ওপর চালানো জরিপের ফল নিয়ে আলোচনা করেন মাহবুবা আহমেদ রোজি। তিনি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের সংখ্যা, ব্যবহারের পদ্ধতি ও অন্যান্য বিষয় তুলে ধরেন। আলোচনায় রিউমার স্ক্যানের সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ বা গ্লোবাল মিডিয়া মনিটরিং ১৯৯৫ সালে শুরু হলেও বাংলাদেশে এর যাত্রা শুরু হয় ২০০৫ সালে। যদিও বাংলাদেশে গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ খুব একটা ফলপ্রসূ নয়, তারপরও কিছু নীতিমালার বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সামাজিক মাধ্যমে তথ্য উপস্থাপনে পাঠক, দর্শক বা শ্রোতাকে যেমন জেন্ডার সহিংসতাকে উসকে দিতে পারে, তেমনি নতুন কিছু ইতিবাচক ধারণাও সৃষ্টি করতে পারে। তাছাড়া তিনি টিকটকের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেন। উল্লেখ্য, সাকমিড সম্প্রতি দেশের ঢাকা, ময়মনসিংহ ও ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার মোট ৪০০ জনের ওপর জরিপ, ৩০ জনের নিবিড় সাক্ষাৎকার ও ৬টি দলগত আলোচনার মাধ্যমে সম্পন্ন করছে। ঢাকা, ময়মনসিংহ ও ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলায় এবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তথ্য, অপতথ্য এবং কীভাবে গুজব ছড়ায়, কারা গুজব ছড়ায়, কী ধরনের গুজব ছড়ায় এবং এসব থেকে পরিত্রাণের বিষয়ে সাকমিড কাজ করবে।  সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্ট (সাকমিড) বাংলাদেশের গণমাধ্যমের উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি বেসরকারি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে গণমাধ্যম সাক্ষরতা বৃদ্ধি, নারী উন্নয়ন ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ নানা উন্নয়নমূলক কর্মসূচি সম্পাদন করেছে। গোলটেবিলে সাংবাদিক, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক, আইনজীবী, মসজিদের ইমাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ ৩৪ জন অংশগ্রহণ করেন। 
১৪ মে, ২০২৪

পুঁজিবাজারে গুজব প্রতিরোধে সতর্কতা জারি
পুঁজিবাজার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়ানো নিয়ে সতর্ক করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গতকাল রোববার বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করতে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন বিষয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কিছু ভিত্তিহীন গুজব ও অসত্য তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। বিএসইসি দেশের পুঁজিবাজার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় নিয়মিতভাবে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভুয়া ও অসত্য তথ্য বা গুজব প্রকাশ অথবা প্রচারের বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ইন্টারনেটে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অপ্রকাশিত তথ্য প্রকাশ, শেয়ারদরের পূর্বাভাস বা ভবিষ্যতবাণীসহ যে কোনো ধরনের অসত্য তথ্য ও গুজব প্রকাশ বা প্রচার আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অতএব, পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে এ ধরনের ভুয়া ও অসত্য তথ্য বা গুজব প্রকাশ অথবা প্রচার থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে সতর্ক করা হলো। অর্থনীতি ও পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করতে গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব কাজে যারা জড়িত রয়েছেন কিংবা আগামীতে থাকবেন তাদের তাৎক্ষণিকভাবে আইনের আওতায় আনা হবে।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

গুজব এড়াতে বিএসইসি, ডিএসইসি বৈঠক
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শীর্ষ কর্মকর্তার মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংক্রান্ত বিষয়টিকে গুজব বা গল্প রটানো হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে। সম্প্রতি এবিষয়ে বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান জরুরি বৈঠক করেছেন।  তাদের মতে, বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের ইস্যুকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়িয়ে একটি চক্র বাজারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এতে পুঁজিবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার প্রভাব পড়ে বিনিয়োগকারীদের ওপর। সব সময় চক্রটি ফায়দা লুটে নেয়। এমন গুজব থেকে পুঁজিবাজারকে রক্ষা করতে গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।  বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, যে কোনো ধরনের গুজব সৃষ্টির প্রচেষ্টা বিএসইসি ও ডিএসইসি যৌথভাবে প্রতিহত করবে। উভয় প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারকে গতিশীল করতে এবং বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ স্বার্থ সংরক্ষণে দৃ্ঢ়  প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) দ্বন্দ্ব-সংক্রান্ত বিভিন্ন গল্প রটানো হচ্ছে। এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, এটি ভিত্তিহীন ও গুজব। একই মত দিয়েছেন, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এ টি এম তারিকুজ্জামানও। সম্প্রতি দেশের শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে দেয়া গুজবের কারণে। কয়েক দিন আগে ফ্লোর প্রাইস নিয়ে গুজব ছড়িয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছিল কারসাজি চক্র। তারপর জেড ক্যাটাগরির শেয়ার নিয়ে গুজব ছড়িয়ে অস্থিতিশীল করে তুলে একটি চক্র। তা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এবার নতুন গুজব ছড়িয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও ডিএসই মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিএসইসির চেয়ারম্যান কমিশনে থাকছে না বলেও গুজব উঠেছে। এমন গুজব ছড়িয়ে বাজার অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়টিও বরাবরের মতই গুজব বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্টরা।  এদিকে রমজানে শেয়ারবাজারে লেনদেনের সময় নিয়েও এক ধরনের গুজব ছড়ানো হয়। সাধারণত স্টক এক্সচেঞ্জই লেনদেনের সময় নির্ধারণ করতে পারে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে অবহিত করতে হয়। যেহেতু দেশে দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ সেহেতু দুটির লেনদেনের সময় একই হওয়া সুবিধাজনক। তা না হলে লেনদেন, সূচক ও মূল্যে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য সমম্বয় করেই লেনদেনের সময় কমিশন ঠিক করা দেয়।  এ বিষয়ে ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বাজারের সার্বিক স্বার্থে কাজ করি। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সর্বোচ্চ। করোনার মধ্যে গত তিন বছর কঠিন সময় পার করেছি। সবকিছু বন্ধ ছিল। এ সময় আমরা চেষ্টা করে বাজার চালু রেখেছি।  তিনি বলেন, কাজ করতে গেলে মতের ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে আইন সঙ্গতভাবে আমাদের কাজ করতে হয়। তিনি আরও বলেন, ডিএসইর সঙ্গে আমাদের কোনো দূরত্ব নেই। কমিশন এবং এক্সচেঞ্জ পুঁজিবাজারের জন্য একই উদ্দেশ্যে নিয়ে কাজ করে। বাজারের স্বার্থে গুজব গ্রহণ করা হবে না। দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। উভয় প্রতিষ্ঠান যুগপথভাবে নিরলস কাজ করছে।
১৬ মার্চ, ২০২৪
X