পাওনা টাকা চাওয়ায় ভিক্ষুকের স্ত্রীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন
মৌলভীবাজারের সদর উপজেলায় পাওনা টাকা চাওয়ায় হামিদা বেগম নামে এক নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পুরুষ মিয়া নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) উপজেলার ১০ নম্বর নাজিরাবাদ ইউনিয়নের আগনসী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামিদা বেগম আগনসী গ্রামের ভিক্ষুক আবু হোসেনের স্ত্রী। পুরুষ মিয়া একই গ্রামের বাসিন্দা। হামিদা বেগম বলেন, এক বছর আগে প্রতিবেশি পুরুষ মিয়াকে ২০ হাজার টাকা আরেক আত্নীয়ের কাছ থেকে এনে ধার দিয়েছি। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও পুরুষ মিয়া টাকা পরিশোধ করেননি। বৃহস্পতিবার পুরুষ মিয়ার মাকে বিষয়টি জানাই। এতে তিনিক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে। বৃষ্টির মধ্যেও বাহিরে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে সে। জালাল মিয়া নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এর আগেও পুরুষ মিয়া বিভিন্ন কারণে হামিদা বেগমের বাড়িতে হামলা করেছে। আমরা কয়েকবার বিচার করেছি। আজকের হামিদা বেগমকে বাড়ি থেকে ধরে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছে। আইনিভাবে তার বিচার হওয়া প্রয়োজন।  স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সোহেল বলেন, আমি সকালে খবর পাই পুরুষ মিয়া হামিদা বেগমকে বেঁধে রেখে নির্যাতন চালাচ্ছে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি হামিদা বেগম গাছের সঙ্গে বাঁধা। এ সময় হামিদা বেগমের ভাই বোনকে উদ্ধার করতে গিয়ে পুরুষ মিয়ার সঙ্গে মারামারি লেগে যায়। তাদের থামিয়ে চেয়ারম্যনকে বিষয়টি জানাই এবং পুলিশকে খবর দেই। পরে পুলিশ এসে হামিদা বেগমকে উদ্ধার করে। পুরুষ মিয়াকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে জানতে পুরুষ মিয়ার মোবাইলে ফোন করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়। ১০ নম্বর নাজিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন আহমদ বলেন, আজ সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য আমাকে ঘটনাটি জানায়। ছোট একটি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পুরুষ মিয়া তিনি একটু খারাপ ধরনের মানুষ। পুরুষ মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুলতানুর রহমান কালবেলাকে বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম উদ্ধার করি। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুরুষ মিয়াকে আটক করা হয়েছে। আমি ভিকটিম হামিদা বেগমকে মুক্ত অবস্থায় পেয়েছি। আমরা যাওয়ার পূর্বে তার বাঁধন খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এলাকার লোকজন বলছে হামিদা বেগম গাছের সঙ্গে বাঁধা ছিল। ভিডিওতে বাঁধা অবস্থায় দেখেছি। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
০৭ জুন, ২০২৪

প্রেমের অপরাধে হাতীবান্ধায় প্রেমিক যুগলকে গাছে বেঁধে নির্যাতন
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় প্রেমের দায়ে প্রেমিক যুগলকে সাবেক ইউপি মহিলা সদস্য রাহেলা বেগমের বাড়িতে সুপারি গাছে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করেছেন স্থানীয় মতব্বরা। ইতোমধ্যে গাছে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।  বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সকালে উপজেলার সিংগিমারী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক ইউপি সদস্য রাহেলার বাড়ির সামনে তাদের বেঁধে রাখা হয়। তবে নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে এখন অবদি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পুলিশ। উল্টো ধর্ষণের মামলায় ওই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। আর ওই মেয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নির্যাতনের স্বীকার হলেন, উপজেলার সিংগিমারী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষ চন্দ্রের ছেলে তপন (২২) ও একই এলাকার নজরুল ইসলামের মেয়ে নুসরাত আক্তার (১৮)। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে তপন ও নুসরাতের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। এমতাবস্থায় বুধবার (৩০ আগস্ট) রাতে তপনের বাড়িতে আসেন নুসরাত। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি বুঝতে পেয়ে এলাকাবাসী তাদের আটক করে সিংগিমারী ইউপির সাবেক মহিলা সদস্য রাহেলা বেগমের বাড়ির সামনের সুপারি গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় নুসরাতের বাবা তপনের বিরুদ্ধে থানায় একটি ধর্ষণের মামলা করেন। সেই মামলায় তপনকে আটক দেখায় পুলিশ। আর ধর্ষণের আলামত সংগ্রহের জন্য নুসরাতকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত তপন বলেন, আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। তারা আমাকে অন্যায়ভাবে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেছেন। এ বিষয়ে জানতে নজরুল ইসলামের মোবাইলে কল করা হলে তিনি বলেন, আমি ব্যাস্ত আছি, পরে কথা হবে। এ বিষয়ে সিংগিমারী ইউপির সাবেক মহিলা সদস্য রাহেলা বেগম বলেন, আমরা বেঁধে রাখিনি। নুসরাত আক্তারের ভাই তাদের গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। সে সময় কেরামত চৌকিদার উপস্থিত ছিল। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে সিংগিমারী ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দুলু বলেন, বিষয়টি রাতে শুনেছি। তবে সকালে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহা আলম বলেন, ধর্ষণ মামলায় তপনকে আটক করা হয়েছে। আর নুসরাতকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের বিষয়টি আমার জানা নেই।  
৩১ আগস্ট, ২০২৩

বগুড়ায় যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতন
বগুড়ায় ঈদের আগে চুরি হওয়া টাকার জন্য এক যুবককে সন্দেহবশত বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে দফায় দফায় নির্যাতন করা হয়েছে। সর্বশেষ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে পেটানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যকে নির্দেশ দিয়েছেন। এলাকাবাসী জানায়, ধলমোহিনী মধ্যপাড়ার রফিকুল ইসলাম গরুর ব্যবসা করেন। হাসান আলী বিভিন্ন হাটে গিয়ে অন্যান্য ব্যবসায়ীর পাশাপাশি রফিকুলের গরুর পরিচর্যাসহ বিক্রির আগ পর্যন্ত গরু ধরে থাকতেন। গত কোরবানি ঈদের আগের দিন রফিকুলের গরু বিক্রির ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা চুরি হয়। বিষয়টি এলাকায় প্রচার না করে চুপচাপ ছিলেন তিনি। গত ৮ জুলাই রাতে কয়েকজন ব্যক্তি একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে হাসানের বাড়ির সামনে যায়। তারা হাসানকে বাড়ি থেকে ডেকে ওই অটোরিকশায় তুলে নিয়ে চলে যায়। মারধরের শিকার হাসান অভিযোগ করেন, দাড়িয়াল গ্রামে তাকে নিয়ে যাওয়ার পর ওইসব যুবক রফিকুলের টাকা বের করে দিতে বলে। এর আগ পর্যন্ত তিনি বুঝতেই পারেননি কেন তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি টাকা নেননি বলার পরপরই বেদম মারধর শুরু করা হয়। একপর্যায়ে রফিকুলকে ডেকে তার হাতে তুলে দেয় ওই যুবকরা। রফিকুল তাকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামে ফিরে একটি বাগানের ভেতরে নিয়ে গাছের সঙ্গে তার হাত-পা ঝুলিয়ে বেঁধে মারধর করে।
১৮ জুলাই, ২০২৩

লক্ষ্মীপুরে যুবককে উলঙ্গ করে গাছে বেঁধে নির্যাতন
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে বিরোধের জেরে তার ভাই সুমনকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে উলঙ্গ করে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ওই ইউপি সদস্যের নাম আব্দুর রহিম। গত বুধবার এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুমন নির্যাতনের বিষয়টি রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ও সাংবাদিকদের জানান। ভুক্তভোগী সুমন উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ রাজীবের বড় ভাই। তারা চরবাদাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশারের ছেলে। অভিযুক্ত আব্দুর রহিম উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও একই ইউনিয়নের যুবলীগের বিতর্কিত কমিটির সভাপতি। সুমন জানান, গত বুধবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে তাদের এলাকার পঞ্চায়েত বাড়ির জামে মসজিদের সামনের রাস্তায় দুটি সিএনজি অটোরিকশায় কয়েকজন লোক আসে। একপর্যায়ে পুলিশ পরিচয় দিয়ে মামলা আছে বলে তারা তাকে তুলে নিয়ে ভুলুয়া নদীর পাশে ফিরোজ মিয়ার প্রজেক্ট এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়। ওই লোকজন তার মোবাইলফোন থেকেই ইউপি সদস্য আব্দুর রহিমকে কল দেয়। এরপর আবদুর রহিম এসে তাকে উলঙ্গ করার নির্দেশ দেন। একপর্যায়ে তার শরীরে পিঁপড়া ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় আবদুর রহিমসহ তার লোকজন সুমনকে মারতে থাকেন। প্রায় তিন ঘণ্টা তাকে উলঙ্গ করে রাখা হয়। পরে তার মুখে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় কাদা। এতে তিনি বমি করে দেন। এ সময় ফের তার মুখে লতাপাতা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পরে মুখে কালো কাপড় বেঁধে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান আব্দুর রহিম ও তার লোকজন। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সুমনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নেওয়া হয়। সুমন বলেন, আমি বিভিন্নভাবে আব্দুর রহিম ও তার লোকজনের কাছ থেকে পানি চেয়েছি। তারা আমাকে পানি পর্যন্ত দেয়নি। তারা আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আব্দুর রহিম ঘটনাস্থল পৌঁছার পরই আমার ওপর নির্যাতন শুরু করা হয়। ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল মাজেদ রাজীব বলেন, রাজনৈতিক ঘটনা নিয়ে আব্দুর রহিমের সঙ্গে আমার বিরোধ রয়েছে। আমার সঙ্গে শত্রুতার জের ধরেই তিনি সুমনকে তুলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছেন। আমরা এ ঘটনায় বিচার চাই। ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম বলেন, এ ঘটনায় আমি কিছুই জানি না। পূর্বশত্রুতার জের ধরে আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অভিযোগ করা হচ্ছে। রামগতি উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন হেলাল বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। আব্দুর রহিম খারাপ প্রকৃতির লোক। রাজীবদের সঙ্গে তাদের পূর্বশত্রুতা রয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী চরবাদাম ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি স্থগিত রয়েছে। তিনি নিজেকে কেন যুবলীগের সভাপতি দাবি করছেন, তা আমি জানি না। এ ব্যাপারে রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
০৯ জুন, ২০২৩
X