কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ডেপুটিদের কর্মসূচি বর্জন করবে ইআরএফ
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিয়ে ডেপুটি গভর্নর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মিথ্যাচার-প্রোপাগান্ডার প্রতিবাদ এবং গর্ভনরসহ তাদের কমর্সূচি বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল সোমবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা বলেন, প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছরে কোনো বিষয় নিয়ে মাঠে নামেনি ইআরএফ। যদি দাবি না মানা হয় তাহলে কঠোর আন্দোলনে মাঠে নামা ছাড়া উপায় নেই। বিশ্বের কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারে কি না—এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের জানতে হবে অন্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইট অনেক সমৃদ্ধ। সেখানে অর্থনীতির সব সূচকের নিয়মিত আপডেট ছাড়াও বোর্ড মিটিংয়ের কার্যবিবরণী, বিভিন্ন ব্যাংকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ সব ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়। কোনো সাংবাদিক প্রশ্ন করলে দ্রুত সাড়া দেওয়া হয়। এসব দেশের আর্থিক খাতের সুশাসনের মাত্রা অনেক উঁচুতে। পদ্ধতিগত কারণে সেখানে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য আড়াল করা কঠিন। এ ছাড়া বেনামি ঋণ, ঋণখেলাপি, অর্থ পাচারকারী বা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কেউ কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারে বলে আমাদের জানা নেই। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক সবার জন্য উন্মুক্ত রেখে কেবল সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আসলে কী তথ্য আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে, সে প্রশ্ন রাখতে চাই। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম জানান, জাতীয় বাজেটের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা না হলে বাজেটের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সামনে অবস্থান ও সমাবেশ করা হবে। দাবি না মানা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর ও মুখপাত্রের সব প্রোগ্রাম বর্জন করা হবে। ২১ মার্চ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক অলিখিতভাবে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হঠাৎ এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় নানা গুজব ডালপালা মেলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে কি না, সে প্রশ্ন উঠছে। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, সালেহ উদ্দিন আহমেদ ও আতিউর রহমান অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কীভাবে গণমাধ্যমের সহায়তা নিয়ে সফল হয়েছেন তাদের সাম্প্রতিক বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক বক্তব্যে উঠে এসেছে। বর্তমান গভর্নর কার স্বার্থে কেবল গণমাধ্যমের কাছে তথ্য আড়াল করার চেষ্টা করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কোনো ভুল নীতির কারণে অর্থনীতিতে আরও বড় চাপ তৈরি হলে তার দায়ভার আমাদের সবার ওপর পড়বে। এ রকম অবস্থায় আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা আগের মতোই অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত হোক।
২১ মে, ২০২৪

গভর্নর, ডেপুটি গভর্নরদের সব প্রোগ্রাম বর্জন / প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে মাঠে নেমে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অর্থনৈতিক সংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবেশাধিকার নিয়ে ডেপুটি গভর্নর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে মিথ্যাচার-প্রপাগান্ডার জোর প্রতিবাদ করেছে সংগঠনটি। সোমবার (২০ মে) রাজধানীর পুরান পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। ইআরএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের আগের মতো অস্থায়ী পাস নিয়ে নির্বিঘ্ন প্রবেশাধিকার চাই। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা ও একাধিকবার চিঠি চালাচালি করা হয়েছে কিন্তু সমাধান হয়নি। যদি নিয়মতান্ত্রিক আলোচনায় প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া না হয় তাহলে কঠোর আন্দোলন করা হবে। ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা বলেন, প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছরে কোনো বিষয়ে মাঠে নামেনি ইআরএফ। যদি দাবি না মানা হয় তাহলে কঠোর আন্দোলনে মাঠে নামা ছাড়া উপায় নেই। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, এখন দাবি না মানলে আন্দোলন ছাড়া উপায় দেখছি না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারে কি না তা নিয়ে কেউ–কেউ প্রশ্ন তুলেছেন জানিয়ে ইআরএফ সভাপতি বলেন, আমাদের জানতে হবে অন্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইট অনেক সমৃদ্ধ। সেখানে অর্থনীতির সব সূচকের নিয়মিত আপডেট ছাড়াও বোর্ড মিটিংয়ের কার্যবিবরণী, বিভিন্ন ব্যাংকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ সব ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়। কোনো সাংবাদিক প্রশ্ন করলে দ্রুত সাড়া পাওয়া যায়। আবার এসব দেশের আর্থিক খাতের সুশাসনের মাত্রা অনেক উঁচুতে। পদ্ধতিগত কারণে সেখানে কোনো অনিয়ম–দুর্নীতির তথ্য আড়াল করা কঠিন। এছাড়া বেনামি ঋণ, ঋণখেলাপি, অর্থ পাচারকারী বা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কেউ কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারে বলে আমাদের জানা নেই। এখন বাংলাদেশে সবার জন্য উন্মুক্ত রেখে কেবল সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আসলে কি তথ্য আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে, আমরা সে প্রশ্ন রাখতে চাই। দাবি না মানলে কী কর্মসূচি হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, আগামী জাতীয় বাজেটের আগে যদি বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে বাজেটের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সামনে অবস্থান ও সমাবেশ করা হবে। এছাড়া দাবি না মানা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর ও মুখপাত্রের সবধরনের প্রোগ্রাম বর্জন করা হবে। লিখিত বক্তব্যে ইআরএফ সভাপতি জানান, গত ২১ মার্চ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক অলিখিতভাবে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ বিষয়ে সমাধান চেয়ে ইআরএফের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়েছে এবং দু’দফা চিঠিসহ বিভিন্নভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রায় দু’মাস হলেও সমস্যার সমাধান না করে এখন বিভিন্ন ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এ রকম বাস্তবতায় আজকের এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। এখানে আমি একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই। সাংবাদিকরা এর আগে নিজের কার্ড প্রদর্শন করে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারতেন। এখন তা বন্ধ করা হয়েছে। হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় নানা গুজব ডালপালা মেলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে কিনা সে প্রশ্ন উঠছে। সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে পাঠক, গবেষক, সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে প্রকৃত তথ্য জানার সুযোগ তৈরি হয়। সাংবাদিকরা অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক পর্যালোচনার মাধ্যমে সরকারের নীতি নির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা রাখেন। বিশেষ করে কৃষি উৎপাদন, খাদ্য মজুদ ও আমদানি পরিস্থিতি, বাজার ব্যবস্থাপনা, মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভের প্রকৃত অবস্থা, সুদহার, রাজস্ব পরিস্থিতি, সরকারি-বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। আবার খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি, ব্যাংক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি, অর্থপাচারসহ বিভিন্ন সমস্যার তথ্য তুলে ধরলে সরকার তাতে উপকৃত হয়। নিতে পারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। এসব ক্ষেত্রে বেশিরভাগ তথ্যের উৎস কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন হঠাৎ করে তথ্যপ্রবাহ বন্ধ করার ফলে ভুল তথ্য, অর্ধ সত্য তথ্য ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আবার একটি তথ্য পাওয়ার পর ডেস্ক অফিসারের মাধ্যমে বুঝে প্রকৃত তুলে ধরার সুযোগ সীমিত হয়ে আসছে। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা চাইলেও অনেক সময় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। বর্তমান গভর্নর কার স্বার্থে কেবল গণমাধ্যমের কাছে তথ্য আড়াল করার চেষ্টা করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কোনো ভুল নীতির কারণে অর্থনীতিতে আরও বড় চাপ তৈরি হলে তার দায়ভার আমাদের সবার ওপর পড়বে। এ রকম অবস্থায় আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা আগের মতোই অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত হোক। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
২০ মে, ২০২৪

গভর্নরের সঙ্গে পিটার হাসের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক 
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সোমবার (১৩ মে) বিকেল ৩টার দিকে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ভবনে প্রবেশ করেন। এ সময় পিটার হাসকে স্বাগত জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা।  জানা যায়, প্রায় ১ ঘণ্টা গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করেন পিটার হাস। এ সময় বিদায়ী সাক্ষাৎ ছাড়াও আর্থিক খাতের বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি। বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার ও ড. মো. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তবে বৈঠক নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করতে রাজি হননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু মঙ্গলবার (১৪ মে) ঢাকায় আসছেন। এ সফরে তিনি ব্যবসা-বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, নাগরিক অধিকারসহ দুই দেশের অগ্রাধিকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আলোচনা করবেন। আর তাই আর্থিক খাতের বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে আসেন।
১৩ মে, ২০২৪

রাজনীতি ঠিক না থাকায় অর্থনীতি ভয়ংকর : সাবেক গভর্নর
‘দেশের রাজনীতি ঠিক নেই বলেই অর্থনীতির ভয়ংকর অবস্থা’- এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, শুধু অর্থনীতির বিষয়ে কথা বললে বাংলাদেশের সমস্যার সমাধান হবে না। এখানে রাজনীতির বিষয়টা সবচেয়ে বড়। রাজনীতি ঠিক না হলে অর্থনীতি ঠিক হবে না; এটা তো আপনারা দেখতেই পারছেন... ভয়ংকর অবস্থা। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত যদি সঠিক না হয় অর্থনীতি ঠিক হবে না। রাজনীতিটা মেইন। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে গ্রন্থ প্রকাশনার এক অনুষ্ঠানে দেশের বর্তমান অবস্থার প্রসঙ্গ টেনে তিনি এরকম মন্তব্য করেন।  জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাহফুজ উল্লাহর লেখা আত্মজীবনী গ্রন্থ ‘আমার জীবন আমার সংগ্রাম’-এর প্রকাশনা উপলক্ষে এই সভা হয়। ৫৯২ পৃষ্ঠার গ্রস্থটির প্রকাশ করেছে ‘বাঙ্গালা গবেষণা’। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অর্থনীতির এই টেকনিক্যাল কথাবার্তা গ্রোথ রেইট ৫ পয়েন্ট ৫ হলো না ৫ পয়েন্ট ৭ হলো, তারপরে ইনফ্ল্যাশন ৮ দশমিক ২ হলো না ৮ দশমিক ৩ হলো এগুলো ভেতরে কচকচালি করলে তো সমস্যার সমাধান হবে না। মূল সমস্যা হলো, আমাদের ইনস্টিটিউশনগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে, রাজনীতিটাও অনেকটা ধ্বংসের পথে এবং সেখানে অর্থনীতি কীভাবে ঠিক থাকবে? ছাত্রজীবনে ভালো রাজনীতি ও মানুষের কল্যাণে রাজনীতি না করলে কিন্তু ভবিষ্যতে ভালো মানুষও হবেন না। মূল্যবোধ কিছু থাকতে হয়। আমাদের সময়ে সেসবের কিছু ছিল। মাহবুব উল্লাহ ভাইয়ের তো ছিল সৎভাবে জীবনযাপন করেছেন, অনেক কিছু হতে পারতেন। আমরাও করেছি, আমার বন্ধু আলমগীরও (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) সৎভাবে জীবনযাপন করেছেন... একেবারে করেছেন। কিন্তু আমাদের মধ্যে মূল্যবোধগুলো বারবার তাড়া করত... এখনো আমাদের এটা তাড়িত করে মানুষের জন্য চিন্তা, সাধারণ মানুষের জন্য চিন্তা এসব চিন্তার জন্য এখনো আমাদের তাড়িত করে। ওই সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, অপরদিকে ওই সময়ে আমাদের অনেক বন্ধু-বান্ধব ছিল যারা আমাদের মার দিয়েছে আমাকেও একবার উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিল এনএসএফ নিয়ে গেছে... তাদের সহযোগী যারা তারা এখন প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ, তারা এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন নাম বলব না। আপনারা অনেকেই জানেন। তারা এখন আমাদের সঙ্গে তর্ক করে তোমরা কী করেছ? অত্যন্ত দুঃখ লাগে বন্ধু মানুষ তো। কিন্তু ইতিহাস তাদের ক্ষমা করেছে কি না জানি মনে হয় না ক্ষমা করেছে। মানুষ নিশ্চয়ই তাদের ক্ষমা করে নাই। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী। অনুষ্ঠানে দর্শক সারিতে বসে আলোচনা শোনেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, নাজমুল হক নান্নু, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, জহির উদ্দিন স্বপন, আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়াম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মীসহ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা। কবি আবদুল হাই শিকদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নারী নেত্রী শিরিন হক, নিউ এজের সম্পাদক নুরুল কবির, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান এবং বাঙ্গালা গবেষণা‘র প্রকাশক আফজালুল বাসার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে লেখক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর ছোট ভাই প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অধ্যাপক আখতার হোসেন খান। অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, দেশ আজকে একটা কঠিন সংকটে পড়েছে। এই সংকট থেকে উত্তরণ কীভাবে হবে সেটা নিঃসন্দেহে ৮/১০টা দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দেখে আমরা নিরূপণ করতে পারব না। আমাদেরই আমাদের পথ চয়ন করতে হবে, নিরূপণ করতে হবে, খুঁজে বের করতে হবে এবং এজন্য প্রয়োজন। ১৯০৫ সালে রাশিয়াতে পাঠ্য বিপ্লবের পরে লেনিন বলেছিলেন, এখন প্রয়োজনে প্রতিক্রিয়াশীলদের মধ্যে ঢুকেও আমাদেরকে কাজ করতে হবে। ওই সময়ের জন্য ওটা ছিল একটা মোক্ষম একটা কৌশল যে কারণে ১৯১৭ সাল (রুশ বিপ্লব) হতে পেরেছে। এগুলো আমাদের বুঝতে হবে। তবে এই মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য খুব সীমিত। লক্ষ্যটা হচ্ছে একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই, যেই বাংলাদেশে আমরা কথা বলতে পারব, মুক্তভাবে আমাদের মতপ্রকাশ করতে পারব এবং আমাদের দেশের যে সার্বভৌমত্ব যেটা নানা কারণে সেটা কমপ্রোমাইজড হচ্ছে আমি যেটাকে বলি, নিম সার্বভৌম অবস্থা সেই নিম সার্বভৌম অবস্থা থেকে কীভাবে মুক্তি পাবৃএই সবকিছু নিয়ে আমাদেরকে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে এবং শুধু চিন্তার মধ্যেই নিবিষ্ট থাকলে হবে না আমাদের পথ বের করে নিতে হবে, আমাদের সেই পথে চলতে হবে সেই পথ হচ্ছে সংগ্রামের, আত্মদানের এবং মানুষ ও দেশকে ভালোবাসার। আজকে আমরা যদি সবাই সেই স্বাধীনতা ও দেশকে ভালোবাসার মঞ্চে কিছু অবদান রাখতে পারি সেটাই যথেষ্ট। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যাংককের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির এমিরেটস অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন দেশের বর্তমান ভোট ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বলেন, এই বাংলাদেশ আমরা ছোট বেলা থেকে দেখছি ভোটের দিনটা ছিল উৎসবের দিন। ’৫৪ সালে আমি ছোট কিন্তু যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের কথা কিছু কিছু যেন মনে আছে এখন এবং অন্যান্য ইলেকশন। আমার বাবা ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ছিলেন, হাইস্কুলের হেড মাস্টার ছিলেন। ভোটের দিনগুলো আমরা দেখতাম ইউনিয়ন পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায়ে এটা যে কীভাবে এখন হারিয়ে গেল? নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার ফলেই বর্তমানে রাজনৈতিক ও ভোট ব্যবস্থায় এই দুরবস্থা বলে মন্তব্য করেন এই অধ্যাপক। সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, মাহবুব উল্লাহ ভাইয়ের বইটি একটা রাজনৈতিক দলিল। সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়া, আশা-আকাঙ্ক্ষা এই বইতে আছে। আমি মনে করি এই বইটা লেখকের একটা বিরাট অবদান। সবাই বইটি পড়বেন।    
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

দেশে দিনে ২০০ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হচ্ছে : গভর্নর
যারা এক্সপোর্টার আছে তারাও মানি লন্ডারিংয়ে জড়িত। এ জন্য অবৈধ অর্থ লেনদেন প্রতিরোধে সরকারি সব সংস্থাকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। সোমবার (১১ মার্চ) পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদর দপ্তরে প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি। দেশ থেকে অর্থপাচার ঠেকাতে হুন্ডির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। এ ধরনের অপরাধে যুক্ত হওয়ায় প্রতিদিনই এক থেকে ২শ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।  মানি চেঞ্জারের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে বছরে মানি চেঞ্জারের মাধ্যমে লেনদেন হয় ৪৫ থেকে ৫০ মিলিয়ন। আর ব্যাংকিং চ্যানেলে হয় ২৭০ বিলিয়ন। কিন্তু ছোট একটি অংশের লেনদেন সত্ত্বেও মানি চেঞ্জাররা যখন ডলারের রেট ২ টাকা বাড়িয়ে দেন, তখন অনেক প্রবাসীই রেমিট্যান্সের অর্থ ধরে রাখার চেষ্টা করেন। এভাবেই ডলার সংকট তৈরি হয়। এ জন্য মানি চেঞ্জারের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। অন্যদের মধ্যে সিআইডি প্রধান মো. আলী বলেন, মাদক, মানি লন্ডারিং মামলায় শুধু বাহক বা ব্যবহারকারী নয়, গডফাদারদের খোঁজা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে তদন্ত কর্মকর্তাদের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য করে গড়ে তোলা হচ্ছে।  
১১ মার্চ, ২০২৪

দুই ডেপুটি গভর্নর পেল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক খুরশীদ আলম ও প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. হাবিবুর রহমান ডেপুটি গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। গতকাল বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে পৃথক দুটি আদেশে তাদের আগামী তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গত ২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি দুই ডেপুটি গভর্নরের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা এ নিয়োগ পেয়েছেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি একেএম সাজেদুর রহমান খান এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি আবু ফরাহ মো. নাছেরের ডেপুটি গভর্নর হিসেবে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। তাদের স্থলাভিষিক্ত হলেন খুরশীদ আলম ও হাবিবুর রহমান। এর আগে খুরশীদ আলম বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক-১ ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের স্নাতকোত্তর। পরে এমবিএ করেন। তিনি ১৯৮৮ সালে সহকারী পরিচালক পদে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দেন। ড. হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ছিলন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন। ড. রহমান ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা বিভাগে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএইড) বৃত্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের ইস্টার্ন ও ওয়েস্টার্ন মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায়োগিক অর্থনীতিতে যথাক্রমে মাস্টার্স এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

খুরশীদ আলম ও ড. হাবিব হচ্ছেন ডেপুটি গভর্নর
এ কে এম সাজিদুর রহমান ও আবু ফরাহ মোহাম্মদ নাসের অবসরে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরের দুটি পদ শূন্য হয়েছে। ওই দুই পদে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. খুরশীদ আলম ও প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মো. হাবিবুর রহমান। দুই শূন্য পদের বিপরীতে তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়োগসংক্রান্ত নথিতে সই করে আদেশ জারির জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। খুরশীদ আলম বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক-১ হিসেবে কর্মরত আছেন। ড. হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীবিদ। এখন দুজনকেই নিয়মিত চাকরি থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে ডেপুটি গভর্নরের চুক্তিভিত্তিক পদে যোগদান করতে হবে। চলতি মাসের ২ ফেব্রুয়ারি এ কে এম সাজেদুর রহমান খান এবং গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আবু ফরাহ মো. নাছেরের ডেপুটি গভর্নর হিসেবে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। এরপর এ দুটি পদ খালি হয়। আবু ফরাহ মো. নাছের পলিসি অ্যাডভাইজার হিসেবে আগামী এক বছরের জন্য নিয়োগ পাচ্ছেন।
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

মূল্যস্ফীতি নিয়ে ঝামেলায় আছি, এখনই নতুন ফান্ড নয়: গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এখন আর নতুন ফান্ড বা তহবিল দেওয়া যাবে না। কারণ এ মুহূর্তে মূল্যস্ফীতি নিয়ে খুবই ঝামেলায় আছি। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক কাউকে টাকা দিলে মানি ক্রিয়েশন হয়। ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মাইক্রো ফাইন্যান্স ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। গভর্নর বলেন, আমরা ধীরে ধীরে ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ২০২৬ সালের মধ্যে আমাদের ৭৫ শতাংশ লেনদেন ক্যাশলেস হয়ে যাবে। তাই তথ্যের জন্য অনলাইনভিত্তিক ব্যবস্থায় যাওয়া খুবই জরুরি। ক্ষুদ্র ঋণদাতা এক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর অনুরোধের ওপর ভিত্তি করে গভর্নর বলেন, এ মুহূর্তে ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আলাদা তহবিল দেওয়া সম্ভব নয়। ঋণ দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের প্রতি সর্বজনীন পেনশনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। পিপলস ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশনের (পপি) নির্বাহী পরিচালক মোরশেদ আলম সরকার বলেন, বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান যাদের ঋণ দিতে চায় না, আমরা তাদের নিয়েই কাজ করি। আমরা তাদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলছি। আমরা নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করছি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও আইসিটি বিভাগের প্রধান দেবদুলাল রায় এবং সাজেদা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জাহেদা ফিজ্জা কবির প্রমুখ।
০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

মূল্যস্ফীতি নিয়ে ঝামেলায় আছি : গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এখন আর নতুন ফান্ড বা তহবিল দেওয়া যাবে না। কারণ এ মুহূর্তে মূল্যস্ফীতি নিয়ে খুবই ঝামেলায় আছি। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক কাউকে টাকা দিলে মানি ক্রিয়েশন হয়। ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়ে।  বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত মাইক্রো ফাইন্যান্স ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা ধীরে ধীরে কেয়ারলেস সোসাইটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ২০২৬ সালের মধ্যে আমাদের ৭৫ শতাংশ লেনদেন ক্যাশলেসভিত্তিক হয়ে যাবে। তাই তথ্যের জন্য অনলাইনভিত্তিক ব্যবস্থায় যাওয়া খুবই জরুরি।  ক্ষুদ্র ঋণদাতা এক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহের অনুরোধের ওপর ভিত্তি করে গভর্নর বলেন, এই মুহূর্তে ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আলাদা কোনো তহবিল দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ আমরা এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ে ঝামেলায় আছি। বাংলাদেশ ব্যাংক কাউকে টাকা দিলে মার্কেটে মানি ক্রিয়েশন হয়। এর ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। কোনো সিস্টেমকে ডিজিটাল করলেই তার কাজ শেষ হয়ে যায় না সিস্টেমকে মেইনটেইন্যান্স করাটা প্রধান সমস্যা বলে উল্লেখ করেন গভর্নর। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের প্রতি সার্বজনীন পেনশনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান আব্দুর রব তালুকদার। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং আইসিটি বিভাগের প্রধান দেবদুলাল রায় বলেন, এই পুরো সিস্টেমটি এনআইডিভিত্তিক। এই মুহূর্তে ৫০টি প্রতিষ্ঠানে ডাটা আপলোড করা আছে। কাল থেকে সবগুলো প্রতিষ্ঠান এনআইডিভিত্তিক ঋণ গ্রহীতার তথ্যযুক্ত করে দিতে পারবেন। তবে কাছে সহজ করার জন্য নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষিত করে তোলার আহ্বান জানান তিনি। পিপলস ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশনের (পপি) নির্বাহী পরিচালক মোরশেদ আলম সরকার বলেন, বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান যাদের ঋণ দিতে চায় না আমরা তাদের নিয়েই কাজ করি। আমরা তাদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলছি। আমরা নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করছি। আমাদের ঋণে ৯৬ শতাংশই ফেরত এসেছে। আমাদের গ্রাহকরা অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত নয়। সুতরাং এমআরএ প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করতে এর জন্য গভর্নরের কাছে আলাদা তহবিল দাবি করলেন পপির এই শীর্ষকর্তা।   তিনি আরও বলেন, যেসব গ্রাহক ব্যাংকের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাই রাখেনা তাদেরই আমরা গ্রাহক হিসেবে গড়ে তুলছি। কিন্তু আমানত সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে আমাদের বিভিন্ন শর্ত দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সব ধরনের শর্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। এ ছাড়া এমআরএফ প্রতিষ্ঠানগুলোতে কীভাবে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আনা যায় সে বিষয়ে নীতিমালা দাবি জানিয়েছেন তিনি। সাজেদা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জাহেদা ফিজ্জা কবির বলেন, এমআরএ প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের আর্থিক খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু আমাদের এখানে তথ্যের ব্যাপক অভাব রয়েছে। এজন্য আমাদের তথ্য আরও সমৃদ্ধ করা দরকার। বর্তমানে শীর্ষ ১০ এমআরএ প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্রঋণ বাজারের ৮০ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করছে। এক্ষেত্রে অন্ততপক্ষে এই ১০ প্রতিষ্ঠানের তথ্যকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করা দরকার। এ ছাড়া ক্ষুদ্রঋণের বিতরণের ক্ষেত্রে এবং টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো গবেষণা নেই। এজন্য গবেষণার প্রতিও গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গ্রাহক/ঋণগ্রহীতার এনআইডি যাচাই করে এমএফ-সিআইবি প্রস্তুত করা হচ্ছে। এপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেসের মাধ্যমে এনআইডি তথ্যভাণ্ডার থেকে লিংক নিয়ে গ্রাহকের তথ্য যাচাই করা হবে। এজন্য এমআরএ ও এনআইডি অথরিটির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। এমএফ-সিআইবি বাস্তবায়নের ফলে যথাযথ গ্রাহক নির্বাচন, গ্রাহকের ঋণ যোগ্যতা যাচাই ও ইতিহাস জানা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে, গ্রাহকের আর্থিক সেবাভুক্তি সহজতর করা, মাইক্রোফাইন্যান্স সেক্টরের সচ্ছতা আনয়ন এবং গ্রাহকের ঋণ প্রাপ্তির প্রতিবন্ধকতা দূর করা সহজ হবে। উদ্যোক্তা সৃষ্টির পথ সুগম করা তথা প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক খাতের সঙ্গে ক্ষুদ্র উদ্যোগ ঋণের সংযোগ আপনের পথ আরও সুগম হবে। এমআরএ আরও জানায়, স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা নিশ্চিত করে টেকসই জনবান্ধব ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এমআরএ প্রতিষ্ঠা করা হয়। জুন ২০২৩ অনুযাযী এমআরএ এর সনদ প্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭৩১টি, গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ৮ লক্ষ, বিতরণকৃত ঋণ ১ লক্ষ ৯১ হাজার কোটি টাকা, ঋণস্থিতি ২ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা, শাখার সংখ্যা ২৫,৩৩৬টি। বর্তমানে এ খাতে ২ লক্ষ ৬ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে সরাসরি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের ৪ কোটি ৮০ লাখের বেশি পরিবার ক্ষুদ্রঋণ পরিষেবার আওতায় রয়েছে। গ্রামীণ অর্থায়নের প্রায় ৭৩ শতাংশ জোগান আসে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে। বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৫০ শতাংশ কৃষি এবং ৩০ শতাংশ বিনিয়োগ হয় ক্ষুদ্র উদ্যোগ খাতে।
০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

‘আমার চেয়ার ছাড়ার ভয় নাই’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, আমার চেয়ার ছাড়ার ভয় নাই। আমি কাউকে ভয় পাই না। ভয়-টয় দেখাইয়ে লাভও নাই। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) এ মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে চট্টগ্রামভিত্তিক একটি ব্যাংকের গ্রুপের হাতে থাকা ইসলামী ব্যাংকের সংকটময় পরিস্থিতি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর, প্রধান অর্থনীতিবিদ ও সংশ্লিষ্ট নির্বাহী পরিচালক। গভর্নর বলেন, আমি সচিব ছিলাম, এক বছরের বেশি সময় চাকরি ছিল। এখন গভর্নর হয়েছি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে। আমি চাইলে চাকরি ছেড়ে দিতে পারব আবার সরকার চাইলেও আমাকের সরিয়ে দিতে পারে। তবে চেয়ার হারানোর ভয় নাই, কোনো হুমকিও নাই। ভয় দেখাইয়েও লাভ নাই। তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংকগুলোর কাঠামোতে সমস্যা ছিল। সেখানে তারল্য সংকট হয়েছে অন্য কারণে। তাদের সুকুক বন্ড রয়েছে টোটাল ইসলামী ব্যাংকের দুই শতাংশ। অন্য ব্যাংকগুলোও তারল্য সংকট ছিল, তবে তাদের বন্ডে বিনিয়োগ থাকায় টাকা তারা পেয়েছে। আর্থিক খাতের দুর্বলতা বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আগেই দুর্বল ব্যাংকগুলোকে চিহ্নিত করেছিলাম। দেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে কোনো ব্যাংক বন্ধ হয়নি, হবেও না। তবে ওই দুর্বল ব্যাংকগুলোর দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগে। তারা খারাপের দিকে যায়নি আর দুর্বলতা কাটিয়ে উঠবে।
১৭ জানুয়ারি, ২০২৪
X