গাছে গাছে ঝুলছে পাকা খেজুর কাঁদি
‘কাঁদি ভরা খেজুর গাছে, পাকা খেজুর দোলে, ছেলে-মেয়ে আয় ছুটে যাই, মামার দেশে চলে’। পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের কবিতার এ লাইনগুলোর কথা মনে পড়ে যায় খেজুর গাছে ঝুলে থাকা হলুদ রঙের কাঁদি ভরা খেজুর দেখে। বলা হয়ে থাকে, বছরে দুই ফলন আসে খেজুর গাছে, শীতকালে মিষ্টি সুস্বাদু রস আর গরমকালে খেজুর ফল।  নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার গ্রামীণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাস্তার ধারে খেজুর গা‌ছে দোল খা‌চ্ছে পাকা খেজু‌র। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খেজুর গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে খেজুর কাঁদি। প্রাচীনতম ফলের মধ্যে অন্যতম এ দেশি খেজুর স্বাদ অনন্য হওয়ায় গাছে ফল পাকলেই কিশোরদের দুরন্তপনার বেড়ে যায়। পাকা শুরু করেছে খেজুর। কিশোরদের পাশাপাশি গাছে পাকা খেজুর খেতে গাছে গাছে ঘুরছে বিভিন্ন ধরনের পাখি। জানা গেছে, খেজুর শুষ্ক ও মরু অঞ্চলের উদ্ভিদ হওয়ায় বাংলাদেশের খেজুর গাছে যথেষ্ট শাঁসযুক্ত উৎকৃষ্ট মানের খেজুর হয় না। তবে এ গাছের রস সুমিষ্ট। দেশি খেজুরকে গ্রামাঞ্চলে কেউ কেউ বুনো খেজুর নামেও ডাকেন। দেশি খেজুর এ দেশের একটি অন্যতম প্রাচীন ফল।  চৈত্র মাসে ফুল ফোটে। কাঁদিতে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল আসে। পুরুষ ফুল সাদা ক্ষুদ্রাকার। ফল হয় গ্রীষ্মকালে। ফল প্রায় ডিম্বাকৃতি, হলুদ রঙের, লম্বায় প্রায় ২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার হয়। ভেতরে হালকা বাদামি রঙের একটি বীজ থাকে। বীজের ওপরে পাতলা আবরণের মতো শাঁস থাকে। কাঁচা শাঁস কষ লাগলেও পাকলে তা মিষ্টি হয়। খেজুর গাছ প্রতিকূল পরিবেশেও এটি টিকে থাকতে পারে। রাস্তার দুধারে, পুকুর পাড় কিংবা বসতভিটায় এ গাছ বেশি দেখা যায়। পাকা খেজুর দোয়েল, বুলবুলি, শালিক পাখিসহ অন্যান্য পাখিদের খুব প্রিয়। পিঁপড়া ও মৌমাছিরাও এ পাকা খেজুরের স্বাদ নিতে দেখা যায়। উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা বাবু রহমান বলেন, খেজুরের রস সংগ্রহ এবং খেজুর উৎপাদন এটি একটি গ্রামবাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্য। একসময় এ গ্রামে অনেক দেশিয় খেজুর গাছ ছিল। বাল্যকালের কথা মনে পড়ে, সকাল হলেই খেজুর সংগ্রহে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে বেশ আনন্দমুখর আয়োজন দেখা যেতো। খেজুর গাছ ক‌মে যাওয়ায় এখন আর‌ সে দৃশ্য চো‌খে প‌ড়ে না। উপজেলার আরেক প্রবীণ ব্যক্তি রমজান মিয়া বলেন, হারিয়ে যাচ্ছে রূপসী বাংলার সেই ঐতিহ্য। যদি সকলের উদ্যোগে এসব খেজুর গাছ টিকিয়ে রাখা যায় এবং নতুন ক‌রে খেজুর গাছ রোপণ যায় তাহলে পুরোনো ঐতিহ্যকে ধরে রাখা যাবে। খেজুর রস ও গুড়ের তৈরি পিঠাতো বাঙালির ঐতিহ্যের অংশ। খেজুর গাছের পাতা দিয়ে পাটি ও কাঁচা ঘরের বেড়া তৈরি করা হয়। এ ছাড়া খেজুর পাতা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
২৪ জুন, ২০২৪

হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় খেজুর
দেশি খেজুর একটি অত্যধিক পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ফল। এই ফলে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিনসহ স্বাস্থ্যকর নানা উপাদান বিদ্যমান। তবে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এবং গাছ থেকে রস বের করার ফলে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থেকে দিন দিনই হারিয়ে যাচ্ছে ফলটি। এতে মৌসুমি এ ফলের উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা। জানা গেছে, দেশি প্রজাতির মৌসুমি এই ফলে রয়েছে ক্যালসিয়াম, বিটা-ক্যারোটিন, আয়রন, ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ ও ‘কে’ সহ স্বাস্থ্যকর বিভিন্ন উপাদান। দেশি এই ফলটি মানবদেহের ঋতু পরিবর্তনকালীন রোগ প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর। তা ছাড়া এই ফল মানবদেহের রক্ত উৎপাদনে সহায়ক। হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে ও হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে, পাকস্থলী ও যকৃতের শক্তি বাড়াতে এ ফল কার্যকরী ভূমিকা রাখে।  ফুল শেষে শীতের শেষভাগে খেজুর গাছে ফল ধরে। কাঁচা অবস্থায় খেজুর ফলের রং সবুজ হয়, আর এ ফলটি পরিপক্ব হলে হলুদ বর্ণ ধারণ করে। তারপর পাকা খেজুরের কাঁদি পানিতে কয়েক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে ফলটি নরম হয়ে খাওয়ার উপযুক্ত হয়ে ওঠে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি বছরই শীতকালে খেজুর গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করার কারণে অধিকাংশ গাছেই ফল আসেনি। এতে রসের চাহিদা মিটলেও দেখা দিয়েছে দেশীয় খেজুরের সংকট। ফলে দেশি খেজুরের পুষ্টিগুণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সিংহভাগ মানুষ। এ ছাড়াও এই উপজেলায় খেজুর গাছের সংখ্যাও আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। একসময় গ্রামীণ জনগোষ্ঠী শখ করে এ ফল গাছ রোপণ করলেও গত দেড় দশকে এই গাছ নতুন করে তেমন একটা রোপণ করা হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা। আর এ কারণেই দিন দিন এই গাছ উপজেলার প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।  স্থানীয় এক বাসিন্দা নুরুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, একসময় এই অঞ্চলে মৌসুমি ফল হিসেবে আম, কাঁঠাল, লিচুর মতো দেশি খেজুরেরও একটা আধিপত্য ছিল। দিন দিন খেজুর গাছ কমে যাওয়া আর অপরিকল্পিতভাবে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কারণে এ ফলটির উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। যে কারণে এ অঞ্চলে মৌসুমি ফল হিসেবে দেশি খেজুর সহজলভ্যতা হারাচ্ছে। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা রেয়াসত আলী কালবেলাকে বলেন, এখন দেশি খেজুর চোখে পড়ে না বললেই চলে। খেজুর গাছ কমে গেছে, আর যেসব গাছ আছে সেসব গাছে শীত আসলে খেজুর রসের জন্য গাছ তাড়ি দেয় গাছিরা। এ কারণে এসব গাছে খেজুর উৎপাদন হয় না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ কালবেলাকে বলেন, মৌসুমি ফল হিসেবে একসময় দেশি খেজুরের চাহিদা ছিল, তবে বর্তমান এ ফলটি তেমন একটা দেখা যায় না। অপরিকল্পিতভাবে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গাছ মরে যাওয়া ও নতুন করে খেজুর গাছ রোপণ না করায় পুষ্টিগুণে ভরা মৌসুমি এ ফলটি হারাতে বসেছে। এ ফলটি টিকিয়ে রাখতে ব্যক্তিগত থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ জরুরি হয়ে পড়েছে।  ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. শঙ্খজিৎ সমাজপতি কালবেলাকে বলেন, দেশি খেজুর একটি মৌসুমি ফল। এ ফলে যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে। এই ফলে আছে নানাপ্রকার ভিটামিনস ও স্বাস্থ্যকর উপাদান। ফলটিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, সালফার, ফলিক অ্যাসিড, পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম, সালফারসহ উপকারী নানা উপাদান। তবে বর্তমান সময়ে অন্যান্য মৌসুমি ফলের মতো এই ফলটি সচরাচর চোখে পড়ছে না। তিনি আরও বলেন, নতুন করে খেজুর চারা রোপণ করে প্রকৃতিতে এই গাছের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। আর যেসব গাছ আছে সেসব গাছের সবগুলো থেকে সমানে খেজুর রস সংগ্রহ না করে কিছু কিছু গাছ ফলের জন্য রাখা উচিত। এতে খেজুর রস ও খেজুর দুটোই পাওয়া যাবে।
২৩ জুন, ২০২৪

মরুর খেজুর চাষে জাকির হোসেনের সাফল্য
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকার স্বজনপুকুর গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন। জীবিকার তাগিদে সৌদি ও কুয়েতে পাড়ি দিয়ে প্রায় ২০ বছর প্রবাসজীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে আসেন। মধ্যপ্রাচ্যে থাকাকালীন মরুর ফল চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে সম্যকজ্ঞান ও কারিগরি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। দেশে ফেরার সময় ১২ কেজি পাকা খেজুর নিয়ে আসেন। সেই খেজুরগুলো থেকে চারা তৈরি করেন নিজেই। প্রথম পর্যায়ে ২০ শতক জমিতে আজওয়া, মরিয়ম, খলিজি, মেডজুল, বারহি ও আম্বার জাতের খেজুর বাগান গড়ে তোলেন। এখন খেজুর গাছগুলোর বয়স চার থেকে ছয় বছর। ২০২২ সালে তার বাগানে প্রথম তিনটি গাছে ফল এসেছিল। সেই চারা গাছগুলো এখন পরিপূর্ণ গাছে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেকটি গাছেই থরে থরে ঝুলে পড়েছে খেজুর ফল। সেই খেজুর ফলের মিষ্টি স্বাদ এখন দিনাজপুরসহ সারা দেশে ছড়িয়েছে। মরুর এ খেজুর গাছ ও ফল দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন উৎসুক নারী ও পুরুষ। তার সফলতার প্রশংসা এখন দেশজুড়ে।  উদ্যোক্তা জাকির হোসেন বলেন, জীবিকার তাগিদে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি দিয়েছিলাম। সেখানে চাষ হওয়া খেজুর দেখে নিজ দেশের মাটিতে খেজুর চাষের স্বপ্ন জাগে। সেই স্বপ্নকে ধারণ করে পাকা খেজুর এনে পরীক্ষামূলক চারা তৈরি এবং ইউটিউবের সহায়তায় ২০ শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ১৯টি খেজুর গাছের চারা রোপণ করি। বর্তমানে দুই একর জমিতে গড়ে তুলেছি খেজুর বাগান। অনেকে চারা গাছ কিনতে অগ্রীম অর্থ দিয়ে রাখছেন। গাছে ফল আসলেই প্রতিবছর ভিড় জমছে দর্শনার্থীদের। তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে তিনটি গাছে প্রচুর পরিমাণে খেজুর আসে। তারপর সে ফলগুলো স্থানীয়দের খাওয়ানোসহ কিছু চারা তৈরি করি। এ বছর ৯টি গাছে ফল এসেছে। প্রতিটি গাছের ৮ থেকে ৯টি কাঁদিতে (গোছায়) খেজুর ধরেছে। ৫০ থেকে ৫৫টি খেজুরের ওজন এক কেজি হবে। খেজুরের বীজ থেকে চারা গাছ হতে প্রায় দেড় থেকে দুই বছর সময় লাগে। এ খেজুর বাগান করতে প্রয়োজন উঁচু জমি।  এ উদ্যোক্তা আরও বলেন, চারাগাছ রোপণের কয়েক বছরেই ফল আসতে শুরু করে। বর্তমানে প্রতিটি চারা বিক্রি করছি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। শুধু উত্তরবঙ্গই নয়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে চারাগাছ সংগ্রহ করছেন লোকজন। একটি খেজুর গাছ ৭০ থেকে ৮০ বছর ধরে ফল দেয়। বর্তমানে বাগানে উৎপাদিত খেজুর ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। ইতোমধ্যে দেড় হাজার চারা প্রায় ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, বাড়ির কাছেই এখন সৌদির খেজুর বাগান। ছোট্ট এ গাছগুলোতে এতো খেজুর হতে পারে সেটি না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। স্থানীয়রা সকলেই জাকির হোসেনের বাগানের উৎপাদিত খেজুরের স্বাদ নিয়েছেন, স্বাদে অত্যন্ত সুস্বাদু। মরুর খেজুর ফুলবাড়ীতে চাষ হচ্ছে এমন সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচারের পর থেকে এ বাগান দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ বাগানে ভিড় করছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার কালবেলাকে বলেন, দিনাজপুর জেলা চাল ও লিচুর জন্য দেশব্যাপী খ্যাতি রয়েছে। জাকির হোসেন মধ্যপ্রাচ্য থেকে খেজুর এনে সেটি চারা করে গাছ রোপণের মাধ্যমে খেজুর উৎপাদন করে সাফল্য দেখিয়েছেন। মরুর খেজুর ফুলবাড়ীতে উৎপাদিত হচ্ছে এটি একটি গর্বের বিষয়। কৃষি বিভাগ থেকে ওই খেজুর বাগান পরিদর্শন করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মরুর এ খেজুর দেশের চাহিদা মিটাতে ভূমিকা রাখবে। দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নূরুজ্জামান বলেন, প্রবাসী জাকির হোসেন মরুর খেজুর ফুলবাড়ীর মাটিতে ফলিয়ে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তার উৎপাদিত খেজুর ও খেজুর চারা বাজারজাত করণের বিষয়ে কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।
০২ জুন, ২০২৪

‘বীর বাহাদুর’ খায় বেগুন, খেজুর ও ছোলা
গরুটির নাম বীর বাহাদুর। দেশি গরু হলেও তার খাবার ও চলন বিদেশিদের মতই। বেশির সময় ঘাস, ভূষি খেলেও মূলত তার পছন্দ বেগুন, খেজুর ও ছোলা। তিন বছর আগে স্ত্রীর কথায় কিস্তিতে একটি গরুর বাছুর কিনে আনেন অটোরিকশা চালক আজাদ মিয়া। এর পর শুরু করেন লালন-পালন। বছর ঘুরতেই গরুটির আকার আকৃতি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তার এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরুতে পরিণত হয় এটি। ক্ষিপ্রতা ও সুঠাম দেহের কারণে তার স্ত্রী এর নাম রেখেছেন বীর বাহাদুর। ১০ মণেরও বেশি ওজনের বীর বাহাদুরের দাম হাঁকানো হয়েছে ৭ লাখ টাকা। তবে এখন পর্যন্ত এর দাম উঠেছে তিন লাখ টাকা। আসন্ন কোরবানির ঈদের বাজারে আলোচনায় রয়েছে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার বাউরিয়ার গাজী গ্রামের আজাদ মিয়ার ‘বীর বাহাদুর নামের বিশালাকৃতির এই গরুটি। গরুর ভালোবাসায় রাতে তার সাথেই ঘুমান আজান মিয়া। গরুটিকে লালন-পালনে সহযোগিতা করেন তার স্ত্রী। প্রতিবছরই কোরবানির সময় বড় গরুতে মানুষের আগ্রহ থাকে। দামও পাওয়া যায় বেশি। পারিবারিকভাবে লালন-পালন করা গরুতে মানুষের চাহিদা থাকে। তাই কোররবানির ঈদকে সামনে রেখে সারাদেশে আলোচনায় থাকে বড় আকারের ষাঁড়।
২৫ মে, ২০২৪

ইসরাইলি খেজুর বয়কট দুই মুসলিম দেশের 
পবিত্র রজমান উপলক্ষে মুসলিম দেশগুলোতে ইসরাইলি পণ্য বর্জনের প্রবণতা বেড়েছে কয়েকগুন। ইন্দোনেশিয়ার সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা এমইউআই এবং বৃহত্তম মুসলিম গণসংগঠন নাদহাতুল উলেমা ইসরাইল থেকে আমদানি করা খেজুরের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।  সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, রমজান মাসে অনেক মুসলিম দেশ ইসরাইলি পণ্য বর্জন করছে। এ তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। দেশ দুটির বেশির ভাগ মানুষই ইসরাইল থেকে আমদানি হওয়া খেজুর কেনা বর্জন করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় এক ব্যক্তিকে ভুল লেবেলে ইসরাইলের খেজুর বিক্রির অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির কাস্টমস বিভাগ। অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়ার মুসলিম নেতারা দেশটির জনগণকে ইসরাইলি পণ্য আমদানি বর্জন করার নির্দেশ দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের ফলে মালয়েশিয়ায় ইসরাইলি পণ্য বর্জন ব্যাপক মাত্রা পেয়েছে। ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন অনেক কোম্পানির বিক্রিতে ধস নেমেছে। ইন্দোনেশিয়াতেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ইসরাইলি খেজুর বর্জনে প্রচার চলছে। দেশটির সামাজিক চ্যাট গ্রুপগুলোতে অভিযোগ করা হচ্ছে, ইন্দোনেশিয়ায় ইসরাইলের খেজুর বেনামে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব খেজুর বর্জন করুন। গত বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গরের ক্লাং পোর্টে একটি খাদ্য গুদামে অভিযান চালিয়ে একজনকে আটক করা হয়। সেই সময় দেশটির অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও জীবনযাত্রার ব্যয়বিষয়ক মন্ত্রী আরমিজান মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘যারা ইসরাইলি পণ্য বিক্রি করে ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’   অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়ার সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা ইন্দোনেশিয়ান কাউন্সিল অব ওলেমা (এমইউআই) এবং বৃহত্তম মুসলিম গণসংগঠন নাদহাতুল উলেমা ইসরাইল থেকে আমদানি করা খেজুরের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। নাদহাতুল উলেমার চেয়ারম্যান আহমেদ ফাহরুর রোজি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সংহতি দেখানোর এটাই (ইসরাইলি পণ্য বর্জন) সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ পথ।’
১৭ মার্চ, ২০২৪

বেশি দামে খেজুর বিক্রি, জরিমানা গুনলো তিন প্রতিষ্ঠান
রংপুরে বেশি দামে খেজুর বিক্রির অভিযোগে তিন দোকানিকে জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। শনিবার (১৬ মার্চ) সকালে নগরীর সিটি বাজারে অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করা হয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি এবং ক্রয়-বিক্রয় ভাউচার না থাকায় তিন খেজুর বিক্রেতাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেইসঙ্গে তাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক আজাহারুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন থেকে বাজার মনিটরিং ও অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় রংপুর সিটি বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রথম দিন হওয়ায় সতর্কতামূলক জরিমানা করা হয়েছে। এরপর অভিযান পরিচালনায় এরকম অভিযোগ পাওয়া গেলে ভোক্তার ধারা অনুযায়ী যা জরিমানা এবং দণ্ড দেওয়া হবে। তিনি বলেন, অভিযানের সময় বিভিন্ন দোকানে গিয়ে ভাউচারসহ অন্য কাগজপত্র চেক করা হয়েছে।
১৭ মার্চ, ২০২৪

বাজার পরিস্থিতি / বেঁধে দেওয়া দামে খেজুর মিলছে না
সরকার সাধারণ ও জাইদি খেজুরের কেজি ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে এ দামে খেজুর কিনতে পারছেন না ভোক্তারা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারিত মূল্যে খেজুর বিক্রির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বললেও সাধারণ মানের প্রতি কেজি খেজুর ২২০ থেকে শুরু করে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মাঝারি মানের খেজুরের কেজি ৬০০ থেকে হাজার টাকার বেশি। গতকাল বুধবার রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের দেয়াল ঘেঁষে বসা এক খণ্ডকালীন খেজুর ব্যবসায়ী বলেন, ইরাক-ইরানের জাইদি খেজুর যে দামে বিক্রি করতে বলেছে সরকার, তা সম্ভব নয়। সেজন্য অন্য খেজুর বিক্রি করছি। জাইদি খেজুরের কেজি আড়তেই সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। একই তথ্য শান্তিনগর, কাকরাইল, পুরানা পল্টন এলাকায়ও। রামপুরা বাজারে খেজুর ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন বলেন, সরকার যদি নির্ধারণ করে দেয়, তবে সরকার সে দামে বিক্রি করুক। আমরা বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করতে পারব না। রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, গতকাল খুচরা পর্যায়ে সাধারণ মানের খেজুরের কেজি বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। আর গত বছর এ সময়ে খেজুর বিক্রি হয়েছিল ১৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়।
১৪ মার্চ, ২০২৪

১৪ টন মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর জব্দ
নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে স্টার কোল্ডস্টোরেজ নামে একটি হিমাগার থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ১৪ টন খেজুর জব্দ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় মজুত করে রাখা আরও ৫৯১ বস্তা খেজুর দ্রত বাজারজাত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের সমন্বয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এ অভিযান চালান। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযান শেষে অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রোপলিটনের সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম জানান, দেশব্যাপী মজুতদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এর অংশ হিসেবে গতকাল কাঁচপুরের স্টার কোল্ডস্টোরেজে অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় মেসার্স মৌসুমি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন মজুত করে রাখা মেয়াদোত্তীর্ণ ১৪ টন খেজুর জব্দ করে তা সিলগালা করে দেওয়া হয়। এই খেজুরের আনুমানিক বাজারমূল্য ২১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। তিনি আরও জানান, বাজারে খেজুরের সংকট সৃষ্টি করে তারপর এই খেজুর বস্তায় ভরে মেয়াদ বাড়িয়ে বাজারজাত করা হয়। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  
১৩ মার্চ, ২০২৪

খেজুর ও চিনির দাম বেঁধে দিল সরকার
পবিত্র রমজানের অন্যতম অনুষঙ্গ খেজুর। রমজান এলে বাজারে খেজুরের চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণ। বাজারে জাত ও মানভেদে নির্ধারণ হয় খেজুরের দাম। তবে এবার সব ধরনের খেজুরই বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। দেশের বাজারে খেজুরের দাম নিয়ে চলছে অস্থিরতা। ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ক্রেতাদের মাঝে এ নিয়ে রয়েছে নানা প্রতিক্রিয়া। এবার খেজুরের দাম বেঁধে দিল সরকার। একই সঙ্গে চিনির দামও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।  অতি সাধারণ বা নিম্নমানের খেজুরের প্রতি কেজির দাম ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা এবং বহুল ব্যবহৃত জায়দি খেজুরের দাম ১৭০ থেকে ১৮০ নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে প্রতি কেজি চিনির মূল্য ১৪০ টাকা। প্যাকেটজাত চিনির সর্বোচ্চ দাম হবে ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই নির্ধারিত মূল্যের আলোকে খুচরা দাম নির্ধারণ করে ব্যবসায়ীদের বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী হাসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এই খেজুরের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে দামি খেজুরের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়নি মন্ত্রণালয়।  তিনি আরও বলেন, সরকার নিত্য পণ্যের দাম নিয়ে স্বস্তিতে আসার চেষ্টায় আছে। বাজারে নিত্যপণ্যের কোনো স্বল্পতা নেই। চালের দাম নিয়েও কোনো অস্বস্তি নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে মনিটরিং হচ্ছে। ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির প্রক্রিয়া চলমান। খুব শিগগিরই তা দেশে আসবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
১২ মার্চ, ২০২৪
X