নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে নিয়ে যা বললেন খামেনি
ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া সংস্কারপন্থি প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাসুদ পেজেশকিয়ানকে নিয়ে কথা বলেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে উপদেশ দেন। খবর আলজাজিরার শনিবার (৬ জুলাই) ফল ঘোষণার পর খামেনি জনগণের উদ্দেশ্যে এক বিবৃতি দেন। সেখানে তিনি বলেন, পেজেশকিয়ানকে একটি অবাধ ও স্বচ্ছ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়েছে। এ জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।  তিনি আরও বলেন, নির্বাচন বয়কট করার জন্য একটি পক্ষ হট্টগোল করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জনগণের কাছে তারা পরাজিত হয়েছে। এ কারণে ইরানের জনগণের শত্রুরা হতাশ। তারা অচলাবস্থা সৃষ্টি করতে পারেনি। খামেনি পেজেশকিয়ানকে উপদেশ দিয়ে বলেন, ‘উচ্চ ও উজ্জ্বল দিগন্তের (ভবিষ্যতের) দিকে তাকাতে হবে। প্রয়াত রাইসির দ্বারা নির্ধারিত পথে চলে দেশকে এগিয়ে নেবেন। নির্বাচনের সময় প্রতিযোগিতামূলক আচরণ থাকলেও তা বন্ধুত্বে পরিণত হয়। তাই পরে সবাই দেশের বস্তুগত ও আধ্যাত্মিক অগ্রগতির জন্য তার সর্বোত্তম ক্ষমতার চেষ্টা করেন।’ অর্থাৎ, পেজেশকিয়ানকে সবার সঙ্গে মিলেমিশে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তেমনি সব সময় মহান আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে দেশ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিতে পরামর্শ দেন।  দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের আগে খামেনি বলেছিলেন, প্রথম রাউন্ডে ভোটদান প্রত্যাশীতের চেয়ে কম ছিল। তবে যারা ভোট দেয়নি তারা নির্বাচনের বিরোধী বলে যে প্রচার চলছে; তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। মাসুদ পেজেশকিয়ান শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী কট্টরপন্থি সাইদ জালিলিকে হারিয়ে দ্বিতীয় দফার ভোটে বিজয় অর্জন করেন। শুক্রবার (৫ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়। গত ২৮ জুন প্রথম দফার ভোটে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় দেশটির নিয়ম অনুযায়ী এগিয়ে থাকা এ দুই প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। প্রথম দফায় পেজেশকিয়ান ৪২ শতাংশ এবং সাইদ জালিলি ৩৯ শতাংশ ভোট পান। দ্বিতীয় দফায় গণনা করা ৩০ মিলিয়নেরও বেশি ভোটের মধ্যে ৫৩.৩ শতাংশ ভোট পান পেজেশকিয়ান। অপর পক্ষে জালিলি পান ৪৪.৩ শতাংশ ভোট। অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পেজেশকিয়ান ১৬.৩ মিলিয়ন এবং জালিলি ১৩.৫ মিলিয়ন ভোট পেয়েছেন। এরপরই পেজেশকিয়ানের বিজয়ের খবর জানানো হয়। পেজেশকিয়ান ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সাবেক সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ খাতামির সরকারে এ পদে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া ইরানের পার্লামেন্টে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের শহর তাবরিজে ২০০৮ সাল থেকে প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন তিনি। সাবেক এ স্বাস্থ্যমন্ত্রী একজন স্বনামধন্য কার্ডিওলজিস্ট। তিনি তাবরিজ ইউনিভার্সিটি অব মেডিকেল সায়েন্সের সাবেক প্রধান ছিলেন। এটি ইরানের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রধান মেডিকেল প্রতিষ্ঠান। পেজেশকিয়ান এর আগে ২০১৩ এবং ২০২১ সালেও তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে ২০১৩ সালে তিনি হাসেমি রাফসানজানিকে সমর্থন দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন এবং ২০২১ সালে গার্ডিয়ান কাউন্সিল তার প্রার্থিতা বাতিল করে। এবার পেজেশকিয়ান নির্বাচনী প্রচারে পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আলোচনায় আসেন। কট্টরপন্থিরা তার সমালোচনায় মুখর হন। অপরদিকে বহির্বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্যের আশা জাগায় অনেক ইরানি তার সমর্থন করেন।
১৪ ঘণ্টা আগে

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট নিয়ে যা বললেন খামেনি
ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৮ জুন) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে এ ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এ দিন প্রথম প্রহরে ভোট দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।  শুক্রবার পার্স টুডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে আজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোটগ্রহণ শুরুর পর প্রথম প্রহরে ভোট দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।  ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, নির্বাচন একটি আনন্দের দিন। আজ জনগণ আগামী কয়েক বছরের জন্য তাদের সরকারপ্রধানকে নির্বাচন করবে। এ নির্বাচনের ওপর ইসলামী প্রজাতন্ত্রের শক্তিমত্তা ও সম্মান নির্ভর করছে।  জনগণকে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করব ইরানি জনগণ স্বতঃস্ফূতভাবে ভোট দেবেন। ভোটপ্রদান এমন কাজ যেখানে কোনো অর্থ খরচ করতে হয় না কিন্তু এর মাধ্যমে অনেক সুফল পাওয়া যায়। যে কাজে খরচ না করেই সুফল মেলে তা থেকে বিরত থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।  এর আগে  ইরানের সংবাদমাধ্যম জানায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে থাকা গার্ডিয়ান কাউন্সিল ছয় প্রার্থীর প্রার্থিতা অনুমোদন করেছে। তবে তাদের মধ্যে দুজন প্রার্থী নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ফলে এবার নির্বাচনে লড়ছেন চারজন প্রার্থী। নির্বাচন থেকে দুই প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন চারজন। তারা হলেন ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ, পরমাণু কর্মসূচিবিষয়ক সাবেক মধ্যস্থতাকারী সাইদ জালিলি, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তফা পোউর মোহাম্মাদি এবং পার্লামেন্ট সদস্য মাসুদ পেজেশকিয়ান। নির্বাচনে এসব প্রার্থীর মধ্যে রাইসির উত্তরসূরি হিসেবে সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে মোহাম্মদ বাকের কালিবাফের নাম। এর আগে ২০০৫, ২০১৩ ও ২০১৭ সালেও কালিবাফ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিলেন। তবে শেষবার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে তিনি রাইসিকে সমর্থন দেন। রাজনীতিতে আসার আগে কালিবাফ ইরানের অভিজাত বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের সদস্য ছিলেন। ১৯৯৭ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি তাকে রেভল্যুশনারি গার্ডের বিমানবাহিনীর প্রধান করেছিলেন। আর ২০০০ সালে পুলিশপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। বাকের কালিবাফের নাম ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১৯৯৯ সালের ছাত্র আন্দোলন কঠোর হাতে দমনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এদিকে, নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশে ৫৮ হাজার ৬৪০টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এর বাইরে ১০০টি দেশে প্রবাসী ভোটারদের জন্য ৩৪০টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র সরকারও তাদের মাটিতে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে।
২৮ জুন, ২০২৪

আহমেদিনেজাদের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
আবারও ইরানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে দুইবারের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য রোববার (২ জুন) তিনি নিবন্ধন করেছেন। এরপরই তার ফের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্বব্যাপী জোরেশোরে আলোচনা হচ্ছে। আগামী বছর ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত মে মাসে আকস্মিক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান রাইসি। এতে হঠাৎ ইরানের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে শূন্যতার সৃষ্টি হয়। সেই শূন্যতা পূরণে কে হবেন ইরানের পরবর্তী কাণ্ডারি সেই অপেক্ষায় রয়েছে বিশ্ববাসী। কারণ, তেহরানের মসনদ হচ্ছে একটি জ্বলন্ত উনুন, সেখানে যে-ই বসুক না কেন, তাকে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবিলা করতে হবে। আর আঞ্চলিক আরব শত্রুরা তো রয়েছেই। প্রেসিডেন্ট পদ শূন্য হওয়ার পর ইরানের আইনের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ২৮ জুন আগাম প্রেসিডেন্টের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি। এই নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। এ দৌড়ে নাম লিখিয়েছেন প্রায় ৪০ জন প্রার্থী। তবে ইরানের আইন খুব শক্ত ও জটিল। দেশটিতে কেউ সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না। তাকে গার্ডিয়ান কাউন্সিলের বাছাই পার হতে হয়। মূলত নিবন্ধনকারী সবার ভাগ্য ঝুলে আছে গার্ডিয়ান কাউন্সিলের হাতে। এ কাউন্সিলের অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তিই প্রেসিডেন্ট পদের জন্য চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামতে পারবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে ১১ জুন যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে কাউন্সিল। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্য সব প্রার্থীর মতো মাহমুদ আহমেদিনেজাদের ভাগ্যও গার্ডিয়ান কাউন্সিলের হাতে। তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হতে হলে তাকে এ কঠিন পথটি পাড়ি দিতে হবে। কিন্তু বর্তমানে জল্পনা চলছে, এবার অন্তত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি মিলবে তো? যদি না মিলে তবে নিবন্ধনের মধ্যেই আটকে যাবে আহমেদিনেজাদের ভাগ্য। এ আশঙ্কার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয় গার্ডিয়ান কাউন্সিল। তার ইশারা ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না প্রতিষ্ঠানটি। বিষয়টি স্পষ্ট করে যে, খামেনি যাকে প্রেসিডেন্ট পদে দেখতে চান তিনিই কাউন্সিলের বাছাই পার হতে পারেন। অর্থাৎ, খামেনির সঙ্গে ভালো সম্পর্কই আহমেদিনেজাদের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথ সুগম করবে, নয়তো নয়। ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রাক্তন সদস্য আহমেদিনেজাদ ২০০৫ সালে প্রথম দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। পরে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয় ২০১৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।  কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে আহমেদিনেজাদের দিনকাল সহজ ছিল না। তার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। দেশে ও দেশের বাইরে চাপে পড়েন তিনি। এ সময় ত্রাণকর্তার মতো আহমাদিনেজাদকে আগলে রেখেছিলেন খামেনি।  ২০০৯ সাল পরবর্তী ওই সময়ে আহমাদিনেজাদকে সমর্থন করেছিলেন খামেনি। আহমাদিনেজাদবিরোধী বিক্ষোভ দমাতে রেভল্যুশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি) মোতায়েন করা হয়। খামেনির নির্দেশে কঠোরভাবে ওই বিক্ষোভ দমানো হয়। দেশব্যাপী কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী নিহত হন।  কিন্তু ধীরে ধীরে আহমাদিনেজাদের সঙ্গে খামেনির দূরত্ব বাড়তে থাকে। বিভিন্ন বিষয়ে দুজনের মধ্যে মতবিরোধ প্রকট হয়। ইরানের ‘একনায়ক’ খ্যাত সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বিষয়টি ভালোভাবে নেননি।  এক পর্যায়ে ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে আহমাদিনেজাদকে দূরে থাকতে বলেন খামেনি। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করে প্রার্থী হতে নিবন্ধন করেন তিনি। ওই নিবন্ধন বাতিল করে গার্ডিয়ান কাউন্সিল। এতে খামেনির কাছে আহমাদিনেজাদের অপছন্দনীয় হয়ে উঠার প্রমাণ মেলে। কারণ, গার্ডিয়ান কাউন্সিল অলিখিতভাবে খামেনির প্রতিনিধি। খামেনি যাকে চান তাকে মনোনীত করাই কাউন্সিলের কাজ। এ কাউন্সিলের ওপর খামেনির আধিপত্য একচ্ছত্র। এরপর আহমাদিনেজাদের সঙ্গে খামেনির বিরোধের ফাটল আরও বাড়ে। বিভিন্ন বক্তব্যে আহমাদিনেজাদ ইরানের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাইকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। ২০১৮ সালে খামেনির সমালোচনায় সিদ্ধহস্ত হন আহমাদিনেজাদ। যা দেশটিতে বিরল। ওই সময় আহমেদিনেজাদ ‘মুক্ত’ নির্বাচনের দাবি তোলেন। এ বিষয়ে তিনি আহ্বান জানিয়ে খামেনিকে চিঠি লিখেছিলেন। এরপর দীর্ঘ সময় কাটলেও সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার সঙ্গে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের সম্পর্কের উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি। তাই ইরানেই ছড়িয়ে পড়েছে যে, এবারও প্রার্থী হওয়ার প্রাথমিক ধাপ পার করতে পারবেন না আহমেদিনেজাদ।  এ শঙ্কা থেকে সাংবাদিকরা আহমেদিনেজাদকে প্রশ্ন করেন, এবারও অযোগ্য ঘোষিত হলে কী করবেন তিনি? জবাবে হেসে দেন তিনি। বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবেন না। সারা দেশের মানুষের কাছ থেকে একটি আহ্বান শুনে এখানে এসেছি।’ নির্বাচিত হলে ইরানের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলো সমাধানে আত্মবিশ্বাসী বলে জানান তিনি।
০৩ জুন, ২০২৪

নতুন নেতা খুঁজতে কেন এত মরিয়া ইরান?
দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইব্রাহিম রাইসিকে শ্রদ্ধা জানাতে ৫ দিনের শোক চলছে ইরানে। তার দাফন শেষ হতে না হতেই নতুন প্রেসিডেন্ট পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তেহরান। অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের নাম পর্যন্ত ঘোষণা হয়ে গেছে রাইসির মরদেহ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে। এমনকি কবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে সেই তারিখও ঘোষণা হয়ে গেছে। এখন প্রশ্ন হলো নতুন নেতা খুঁজতে কেন এত মরিয়া ইরান? ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলছেন, রাইসির মৃত্যুর কারণে ইরানের যে গতি তাতে একটুও প্রভাব পড়বে না। ধারণা করা হচ্ছে ইসরায়েল এবং আমেরিকাকে সামাল দিতেই এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি। এ ছাড়া নিজেদের দুর্বলতাকে কোনোভাবেই বুঝতে দিতে চায় না তারা। যদিও ইরানে প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করার বিধান রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে। বলা হয়, আগামী ২৮ জুন নতুন করে প্রেসিডেন্টে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার দেশটির বিচার বিভাগ, আইনসভা এবং নির্বাহী কর্তৃপক্ষ এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ইরনার বরাতে তুর্কি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীদের নিবন্ধন শুরু হবে চলতি মাসের ৩০ মে এবং প্রচারণা চলবে আগামী ১২ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত।  রোববার একটি জলাধার উদ্বোধন শেষে ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় তাবরিজ শহরে যাওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বেল-২১২ হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। এতে রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়। এরপরই সংবিধান অনুযায়ী দেশটির ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবারকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খোমেনি।  ইব্রাহিম রাইসি তিন বছর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে তাকে মনে করা হয় একদিন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির উত্তরসূরি হবেন।
২১ মে, ২০২৪

ইরানের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ায় ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবারকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব পালনের নিযুক্ত করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। সোমবার মোখবারকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেন তিনি। এক বিবৃতিতে খামেনি বলেছেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী মোখবার নির্বাহী বিভাগের নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজনে তিনি আইন ও বিচার বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে কাজ করবেন। সোমবার দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মেলে। এরপর দেশটির বিভিন্ন বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি কেউই আর বেঁচে নেই। এর আগে গতকাল রোববার (১৯ মে) দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হেলিকপ্টারটি। বলা হচ্ছে, আজারবাইজানে একটি জলাধার প্রকল্প উদ্বোধনের পর পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে যাচ্ছিলেন তারা। ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের খবরে বলা হয়েছে, হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবর জানা গেছে সেটি থেকে আসা একটি জরুরি ফোনকলে। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তাদের কেউ ওই ফোন করেছিলেন। দুর্ঘটনার পরপরই প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের উদ্ধারে অংশ নেয় ৪০টি দল। উদ্ধাকারী দল এসেছে তুরস্ক ও রাশিয়া থেকেও। তবে দুর্ঘটনাস্থলে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। এ ছাড়া এ অঞ্চলটি পাহাড়-পর্বতে ভরপুর হওয়ায় দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাইসির হেলিকপ্টারের খোঁজ পান উদ্ধার কর্মকর্তারা। ইরানের সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো দুর্ঘটনায় যদি প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হয় তাহলে সেই পদে বসবেন প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট। সেই অনুযায়ী মোহাম্মদ মোখবারকে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর নিয়ম মেনে সেটির অনুমোদন দিয়েছেন সর্বোচ্চ নেতা খামেনি। ইরানে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে ভূমিকা পালন করেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তাকে সরকারের প্রধান এবং সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করার বিধান রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে।
২০ মে, ২০২৪

ইসরায়েলে হামলার মাধ্যমে বিশ্বকে শক্তি দেখিয়েছে ইরান : খামেনি
ইসরায়েলে হামলা চালানোর জন্য দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি। এ ছাড়া এই হামলার মাধ্যমে ইরান নিজেদের শক্তি দেখিয়ে বলেও জানান তিনি। রোববার (২১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। খামেনি বলেছেন, কতটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে, আর কতটি ইসরায়েলে আঘাত করেছে, তা এখন দেখার বিষয় নয়। আসলে যা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো ইরান এই অভিযানের মাধ্যমে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেছে। গত শনিবার রাতে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান। মূলত চলতি মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলি বোমা হামলার জবাবে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই পাল্টা হামলা করে তেহরান। এই পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে তখন থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের দুই চিরশত্রুর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এমনকি এই বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধ পর্যন্ত বেঁধে যেতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশ্লেষকরা। গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে দেশটির কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে একের পর এক হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল ইরান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই পাল্টা হামলা করে তেহরান।
২২ এপ্রিল, ২০২৪

‘শিগগিরই আল আকসা যাবে মুসলিমদের হাতে’
সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলের হামলা এবং তারপর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ইরানের পাল্টা আক্রমণ, সর্বশেষ ইসরায়েলের বদলা নেওয়ার হুমকি—এই ঘটনাপ্রবাহে উত্তপ্ত হয়ে আছে মধ্যপ্রাচ্য। হুমকি-ধমকি অব্যাহত থাকলেও অনেক বিশ্লেষক বলছেন, খেলা ইরানের পক্ষে ড্র হয়েছে। সুযোগ পেয়ে দেশটি তার শক্তিমত্তা জানান দিয়েছে ভালোভাবেই। ইসরায়েলে হামলা করার পর ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কণ্ঠে শোনা গেল আত্মবিশ্বাসের সুর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে হিব্রু ভাষায় দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, শিগগিরই আল আকসা মুসলিমদের হাতে যাবে এবং সেদিন ইসলামি বিশ্ব ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা উদযাপন করবে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে আগে থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে চরম দ্বন্দ্ব ইরানের। সেই দ্বন্দ্ব আরও ব্যাপকভাবে বেড়েছে গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে। এই বৈরিতার মধ্যেই গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। এতে ১৩ জন নিহত হন।  হামলার পরপরই এক বার্তায় খামেনি বলেছিলেন, এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই মূল্য দিতে হবে। এরপর গত শনিবার রাত ও রোববার সকালে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ৩ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরানের সামরিক বাহিনী। অবশ্য বেশিরভাগ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে দেশটির ৯টি স্থাপনায় ইরানি ড্রোন আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে। ফিলিস্তিন কিংবা আল আকসা ইস্যু নিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির বার্তা এটাই প্রথম নয়। গত জানুয়ারি মাসে এক বার্তায় তিনি বলেছিলেন, গাজায় ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠী যেসব অপরাধ করছে, তা কখনো ভুলতে পারবে না বিশ্ব। একদিন এই শাসকগোষ্ঠী পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে, কিন্তু তাদের অপরাধ এবং হাজার হাজার নারী ও শিশুকে হত্যার ঘটনা বইপত্রে অবশ্যই লিপিবদ্ধ থাকবে। এদিকে ভবিষ্যতে নিজেদের স্বার্থের ওপর আর কোন আঘাত বরদাস্ত করবে না বলে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে ইরান। ফের কোনো ধরনের আগ্রাসন চালানো হলে তাৎক্ষণিকভাবে তার সমুচিত জবাব দেবে তেহরান। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং দেশটির শীর্ষ সেনা কমান্ডাররা দফায় দফায় এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

বন্দুক হাতে ঈদের খুতবা দিলেন আয়াতুল্লাহ খামেনি
সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে ইসরায়েলি বিমান হামলাকে কেন্দ্র করে প্রতিশোধের নেশায় উত্তাল হয়ে আছে গোটা ইরান। তেহরানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এ হামলার জবাব দেওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। এমন হুমকিতে বেশ কাবু হয়ে আছে তেলআবিবও। ইতোমধ্যে ইসরায়েলকে লৌহবর্মের সুরক্ষা দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আমেরিকা। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই বন্দুক হাতে দেখা গেল ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে। গত বুধবার (১০ এপ্রিল) মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে উদযাপন হয়েছে ঈদুল ফিতর। এদিন রাজধানী তেহারনের গ্র্যান্ড মোসাল্লা মসজিদে ঈদের নামাজে ইমামতি করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ঈদের খুতবা দেওয়ার সময় আলী খামেনির বাম হাতে ছিল অত্যাধুনিক বন্দুক ও সামনে মাইক্রোফোন। এমন একটি ছবি প্রকাশিত হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এদিন ইরানের সর্বোচ্চ এ নেতার ঈদের খুতবার প্রধান আলোচ্য ছিল গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে হামলার বিষয়টি। খুতবায় তিনি বলেন, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে হামলা চালানোর জন্য ইহুদিবাদী ইসরায়েলকে শাস্তি পেতেই হবে। ইসরায়েল ইরানের দূতাবাসে হামলা চালিয়ে মূলত তারা ইরানের ভূখণ্ডেই হামলা চালিয়েছে। আলী খামেনী বলেন, পশ্চিমা সরকারগুলো কথিত পশ্চিমা সভ্যতার নষ্ট চরিত্র প্রকাশ করে দিয়েছে। তারা মায়ের কোলে থাকা সন্তানদের ও হাসপাতালে থাকা রোগীদের হত্যা করেছে। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে পেরে না উঠে তারা বয়স্ক ব্যক্তি, নারী ও শিশুসহ ত্রিশ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। গত ১ এপ্রিল দামেস্কে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের এলিট ফোর্স আইআরজিসির তিন শীর্ষ জেনারেলসহ অন্তত ৮ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। এরপর খামেনি জানান, এ হামলার জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। এমন হুমকির পর ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানান, ইরান যদি ইসরায়েলে আক্রমণ করে তাহলে ইসরায়েলও ইরানে আক্রমণ করবে। এদিকে এমন আশঙ্কায় ইসরায়েলকে লোহবর্মের মতো সুরক্ষা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জানান, ইসরায়েলকে রক্ষা করতে যা যা করা দরকার তার সবই করবে যুক্তরাষ্ট্র। ইরান এবং তার প্রক্সিদের কাছ থেকে যত হুমকি বা হামলা আসুক, ইসরায়েলকে সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র লৌহবর্ম হয়ে থাকবে। গাজা যুদ্ধ নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও, ইসরাইলের ওপর যে কোনো আক্রমণকে ইসরায়েলের হয়ে মোকাবিলা করবে যুক্তরাষ্ট্র।
১২ এপ্রিল, ২০২৪

ঈদের ভাষণে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি ইরানের
রমজান মাসে গাজা উপত্যকায় অপরাধের জন্য ইসরায়েল ও পশ্চিমা বিশ্বের নিন্দা জানিয়েছে ইরান। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি পবিত্র ঈদুল ফিতরের ভাষণে এ নিন্দা জানিয়েছেন। এ সময় তিনি সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ নেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।  বুধবার (১০ এপ্রিল) ইরানের রাজধানী তেহরানে হাজারো মানুষের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ প্র‌তিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বিদ্বেষপূর্ণ শাসকগোষ্ঠী ভুল করেছে। এর জন্য অবশ্যই তাদের শাস্তি পেতে হবে, শাস্তি পেতেই হবে...।  গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সমর্থন দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তীব্র সমালোচনা করেন ইরানের এ সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেন, আমেরিকার মৃত্যু হোক বলে বিপুল জনতা এখন স্লোগান দিচ্ছে। তারা আমাদের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়েছে। এর মানে তারা আমাদের মাটিতে হামলা চালিয়েছে।  ইরানের এমন হুমকির পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হিব্রু ও ফারসি ভাষায় এক্সে এক পোস্টে জানান, ইরান তার নিজ ভূখণ্ড থেকে যদি হামলা করে তাহলে ইসরায়েল এ হামলার জবাব দেবে। তারাও ইরানে আক্রমণ চালাবে।  উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। দেশটির এ হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কমান্ডার নিহত হন। এরপর থেকে খামেনিসহ ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা বারবার প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি জানিয়ে আসছেন।   
১০ এপ্রিল, ২০২৪

ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে নিষিদ্ধ আয়াতুল্লাহ খামেনি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম থেকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির অ্যাকাউন্ট অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মেটা। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, নীতিমালা লঙ্ঘনের দায়ে খামেনিকে ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে এনডিটিভি। প্রতিষ্ঠানটির একজন মুখপাত্র এএফপিকে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের নীতি বারবার লঙ্ঘনের জন্য আমরা এই অ্যাকাউন্টগুলো অপসারণ করেছি। তবে মেটার ওই মুখপাত্র এক্ষেত্রে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের কথা উল্লখ করেননি। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকে চাপে রয়েছে মেটা। এ যুদ্ধে হামাসের পক্ষ নিয়েছেন খামেনি। যদিও এ যুদ্ধের নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কখা অস্বীকার করেছে ইরান। প্রতিবেদনে বলা হয়, হামাসকে সমর্থন দিয়ে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালাচ্ছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। এতেও সমর্থন জানিয়েছেন খামেনি। দীর্ঘ সময় ধরে ইরানের ক্ষমতায় থাকা আয়াতুল্লাহ খামেনির ইনস্টাগ্রামে ৫০ লাখ ফলোয়ার ছিল। উল্লেখ্য, ইরানে ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুক ব্যবহার নিষিদ্ধ। তবে ভিপিএনের মতো বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশটির নাগরিকরা এসব সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করে।
০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X