হামদহ-নারিকেলবাড়িয়া সড়ক / সড়কের খানাখন্দ যেন ডোবা-পুকুর
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের পাশে হামদহ-নারিকেলবাড়িয়া গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি জীর্ণদশায় পরিণত হয়েছে। জায়গায় জায়গায় দেখা দিয়েছে ফাটল, সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দের, যার কারণে এ সড়কে প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনা দেখা দিচ্ছে। ভাঙা রাস্তা দিয়ে চলাচলে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষের। সড়কটির দৃশ্য দেখলে অনেকেই মনে করবে ডোবা-পুকুর, নাকি এটি সড়ক। এলজিইডির উদাসীনতাকে দায়ী করে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, দেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে ধাবিত হচ্ছে, সেখানে এ সড়কটির দেখভাল করার যেন কেউ নেই। তারা অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার করে জনদুর্ভোগ লাঘব করতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে এলজিইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সামনে ডিসেম্বরের মধ্যেই এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি চলাচলের উপযোগী করা হবে। এদিকে সড়কের এমন পরিণতির জন্য জনপ্রতিনিধিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সূত্রমতে, ঝিনাইদহের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হামদহ সদর হাসপাতাল গেটের সামনে থেকে নারিকেলবাড়িয়া বাজার হয়ে টিকারি সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে থাকেন। তিন চাকার যানবাহন ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, আলমসাধু, স্কুটার থেকে শুরু করে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, ট্রাকসহ অন্যান্য যানবহন নিয়মিত চলাচল করে। এলজিইডির আওতাধীন ১৮ কিলোমিটার এ সড়কের মধ্যে চার কিলোমিটার দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে আছে। তার মধ্যে রয়েছে হামদহ হাসপাতাল গেট, ঘোষপাড়া, ইসলামপাড়া, গোবিন্দপুর, বালিয়াডাঙ্গা বাজার, মগরখালী। এ ছাড়াও হারানঘাট, নারিকেলবাড়িয়া বাজার নামক স্থানে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এমন খানাখন্দের কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে কালীচরণপুর, দোগাছি, ঘোড়শাল, সুরাট, ফুরসন্ধি ইউনিয়নের লোকজন চলাচল করে থাকেন। স্থানীয় ভুক্তভোগী আসলাম পারভেজ, আনিসুল ইসলাম বিপ্লব অভিযোগ করে জানান, ৮ বছর ধরে হামদহ থেকে নারিকেলবাড়িয়া পর্যন্ত এ সড়ক বেহাল থাকার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ সড়ক দিয়ে ৫টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চলাচল করলেও যেন দেখার কেউ নেই। সংস্কারের অভাবে এখন এ সড়কে ধান লাগানোর মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কে চলাচলরত চালক শাহিন উদ্দিন ও রাসেল জানান, আমরা এ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত ইজিবাইক ও থ্রি-হুইলার নিয়ে ভাড়া মেরে জীবিকা নির্বাহ করি। যাত্রীদের সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি না। কারণ রাস্তার যে বড় বড় গর্ত, তাতে আমাদের বাড়তি সময় লেগে যায়। তাছাড়া অনেক সময় অন্যান্য গাড়ি উল্টে পড়ে অনেক যাত্রী আহত হন। ঘোড়শাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পারভেজ মাসুদ মিল্টন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মিটিংয়ে জনগণের দুর্ভোগের কথা বলে এলেও এলজিইডি বিভাগ কোনো গুরুত্ব দেয় না। রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলেও সংস্কারের অভাবে মানুষ যাতায়াত করতে পারছে না। তারা অবিলম্বে এ সড়কটি সংস্কার করার দাবি জানান। এলজিইডি বিভাগের সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আহসান হাবিব আশ্বাস দিয়ে জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ হামদহ-টিকারি সড়কের যেসব স্থানে বেশি খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলো ডিসেম্বরের মধ্যেই টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ শেষ করা হবে। তখন মানুষের দুর্ভোগ দূর হবে।
০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

পানি নিষ্কাশনের নেই ব্যবস্থা, ব্রাহ্মণপাড়ায় সড়কজুড়ে খানাখন্দ
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর বাজার থেকে উপজেলা পরিষদ হয়ে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস পর্যন্ত এ সড়কে সংস্কারের অভাবে পিচ ঢালাই উঠে বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় গর্ত হয়ে আছে। এ সড়কে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে সড়কজুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে খানাখন্দের। এতে পথচারীসহ যানবাহনের যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনা। হরহামেশাই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও। সরেজমিনে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার সদর বাজার থেকে উপজেলা পরিষদ হয়ে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস পর্যন্ত সড়কের বেহাল দশা। অধিকাংশ জায়গা খানাখন্দে ভরা। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে সড়কে। ফলে এ সড়কে চলাচলকারী পথচারী ও যানবাহন যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। খানাখন্দের পাশাপাশি এ সড়কের ছোট-বড় গর্তের কারণে হরহামেশাই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ভাঙাচোরা এ সড়ক সার্বক্ষণিক কাদা পানিতে পরিণত হচ্ছে। এতে করে পিচ ঢালাই উঠে বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে আরও গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এই সড়ক দিয়েই প্রতিদিন ইউএনও অফিস, উপজেলা পরিষদ, প্রকৌশলী, উপজেলা প্রশাসনের অন্যসব অফিসে অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। প্রসূতি মাসহ অসুস্থ রোগীদেরও এই সড়ক দিয়েই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দের মধ্যেই চলাচল করার কারণে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় লোকজন ও এ সড়কে যাতায়াত করা জনসাধারণের মধ্যে। ভারি বৃষ্টি হলে এই ভাঙা স্থানগুলোতে জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায় বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। এ সড়কের কয়েকজন সিএনজি ও অটোরিকশাচালকের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, এই পথে চলতে গিয়ে আমাদের মাঝে মাঝে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়। যানবাহন প্রায়দিনই বিকল হয়ে যায়। ফলে গোটা দিনের রোজগারই চলে যায় তা মেরামত করতে। খুব ধীরে ধীরে গাড়ি চালাতে গিয়ে সময়েরও অপচয় হয়। ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, এই রাস্তা দিয়ে যেতে হলে যেন যুদ্ধ করতে হয়। কোনো গাড়িতে চড়ে যেতেও দুর্ঘটনার ভয় লাগে। আবার কাদাপানির মধ্য দিয়ে হাঁটাও বিড়ম্বনার। খুব বিপদে আছি আমরা। উপজেলার প্রধান সড়ক হওয়ায় বাধ্য হয়েই প্রতিনিয়ত আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে, কিন্তু এই রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি। মাঝে মাঝে ছোট-বড় দুর্ঘটনারও শিকার হতে হচ্ছে আমাদের। দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের দাবিও জানান তিনি।  স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ এলজিইডির ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ আবদুর রহিম কালবেলাকে বলেন, উপজেলা সদরের এ সড়কটির বিষয়ে দুবার প্রতিবেদন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি, সড়কটি সংস্কারের বিষয়টি অনুমোদিত হয়নি। তারপরও সড়কটি সংস্কারের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।   
০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি আঞ্চলিক মহাসড়ক / খানাখন্দ কাদা যানজটে সড়কে চলা দায়
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি আঞ্চলিক মহাসড়কের বিরিশিরি থেকে শান্তিপুর এলাকা পর্যন্ত বেহাল সড়কে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ। এই দুর্ভোগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়কের খানাখন্দ, কাদা ও যানজট। ভেজা বালুভর্তি ওভারলোড ট্রাক চলার কারণে সড়ক নষ্ট হয়ে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ আর বড় বড় গর্ত। এতে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকছে। অন্যদিকে এসব বালুর ট্রাক থেকে চুঁইয়ে পড়া পানিতে সবসময়ই সড়কটি কাদাপানিতে একাকার থাকে। এ সড়ক দিয়ে যেমন যেতে হয় জেলা শহর ও বিভাগীয় শহরে, অন্য পথে আসতে হয় উপজেলা সদর, হাসপাতাল, অফিস-আদালতসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তা ছাড়া সোমেশ্বরী নদী, সাদামাটির পাহাড় ও পাহাড়ি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে সারা বছরই বেড়াতে আসেন বিপুলসংখ্যক পর্যটক। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদেরও। সরেজমিন দেখা গেছে, এ পথে উপজেলার ১২ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কই খানাখন্দে আর গর্তে বেহাল। আর পুরো সড়কে কাদা আর কাদা। যেন পা ফেলাই দায়। ওই সড়কটি দিয়েই শত শত যানবাহনসহ মানুষ চরম দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে। এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) আওতায় সড়ক সংস্কারের অংশ হিসেবে ২ হাজার ৪০০ মিটার পৃথক পৃথক স্থানে আরসিসি সড়ক নির্মাণকাজ হচ্ছে। তবে সড়কের কিছু স্থানে এক পাশের কাজ শেষ হলেও ফেলে রাখা হয়েছে অন্য পাশের অংশটি। এতে সড়কের এক পাশ দিয়ে যানবাহন চলাচলে দীর্ঘ সময়ের যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অসংখ্য যানবাহন চলাচল থাকায় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রেখে এক সঙ্গে দুপাশের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভেজা ও অতিরিক্ত বালু বহন করায় সড়কের বারোটা বেজে গেছে। সব সময় কাদায় ডুবে এবং দীর্ঘ সময় যানজট লেগে থাকছে। এতে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, কাদা আর ট্রাকের জ্যামে অতিষ্ঠ সবাই। আমার বাড়ি লক্ষ্মীপুর থেকে দুর্গাপুর যেতে ২০ মিনিটের রাস্তা এখন ২ ঘণ্টাও বেশি লাগে। এই দুরাবস্থা যেন দেখার কেউ নেই। আরেক স্থানীয় আব্দুল আলী জানান, সড়কটি দিয়ে রোগী নিয়ে উপজেলা সদর হাসপাতালে যেতে হয়। তা ছাড়া, জরুরি রোগীদের ময়মনসিংহ নিতে হয়। কিন্তু বেহাল সড়কের কারণে সময় মতো পৌঁছানোই যায় না। এইচএসসি পরীক্ষার্থী উজ্জ্বল মিয়া জানায়, বাড়ি থেকে সকাল সাড়ে ৬টায় বের হই। সড়কের এই পরিস্থিতিতে অটোচালিত রিকশাও যেতে চায় না। যার কারণে খুব কষ্ট হচ্ছে। আর কতক্ষণে কেন্দ্রে পৌঁছাবো এই টেনশনে থাকি। নেত্রকোনা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আলনূর সালেহীন জানান, ওই সড়কে বালুর ট্রাক চলাচলে রাস্তা টিকিয়ে রাখায় মুশকিল হয়ে পড়েছে। মানুষের কষ্ট তো থাকছেই। সড়কের পৃথক স্থানে মোট ২ হাজার ৪০০ মিটার আরসিসির কাজ চলমান। তিনি আরও জানান, সড়কের এক পাশের কাজ শেষ করে ২৮ দিন পর অন্য পাশের কাজ ধরতে হচ্ছে। এ সড়কে অনেক গাড়ি চলাচল করছে। তাই সড়ক বন্ধ রেখে কাজ করা যায় না।
০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X