স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরামের ১৫০ দিনের কর্মসূচি
স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবস ও মাস উপলক্ষে ১৫০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরাম।  সোমবার (১ জুলাই) ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের গেরিলা কমান্ডার মেজর হায়দার বীর উত্তম মিলনায়তনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবসের ১০০ দিন গণনা শুরু ও ১৫০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা দেন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়কারী এবং গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যানসার হাসপাতালের প্রকল্প সমন্বয়কারী অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ফোরামের উদ্যোগে ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশে ১০ অক্টোবর ‘স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবস’ হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় ও সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণ এই কার্যক্রমের অন্যতম উদ্দেশ্য। ঢাকা ও সারা দেশের জেলা-উপজেলায় গোলাপি সড়ক শোভাযাত্রা ও সহজ বাংলা ভাষায় প্রয়োজনীয় তথ্যসমৃদ্ধ লিফলেট বিতরণ ইতোমধ্যে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।  আরও জানানো হয়, এ বছর ফোরামের ৪৬টি সংগঠন যৌথভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর বাইরে বিভিন্ন সংগঠন এককভাবে কর্মসূচি পালন করবে।  অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জন হপকিন’স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রখ্যাত প্রজনন ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. হালিদা হানুম আখতার, সিওসি ট্রাস্টের প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব আবুল কালাম আজাদ, নারী অধিকার নেত্রী ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি শিরীন পারভীন হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ প্রমুখ।
০১ জুলাই, ২০২৪

পাঁচ ক্যানসার সার্ভাইবার পেলেন সিসিসিএফ সম্মাননা
ক্যানসার সার্ভাইবার দিবস উপলক্ষে পাঁচজন সার্ভাইবারকে সম্মাননা প্রদান করেছে সেন্টার ফর ক্যানসার কেয়ার ফাউন্ডেশন (সিসিসিএফ)। মরণঘাতী ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় তাদের এই সম্মাননা দেওয়া হয়।  শনিবার (৮ জুন) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আর সি মজুমদার অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পাঁচজন সার্ভাইবারকে এই সম্মাননা তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি অধ্যাপক মাহফুজা খানম। সেন্টার ফর ক্যানসার কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি রোকশানা আফরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক জাহান ই গুলশান। সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন- মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, লেখক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, চলচ্চিত্র নির্মাতা মসিহউদ্দিন শাকের, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. এস এম শহীদুল্লাহ এবং অণুজীব বিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা। এরপর ‘এখানে থেমো না : ক্যানসার লড়াকু ও পরিচর্যাকারীদের বয়ান’ শিরোনামে বইয়ের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বইটিতে ২৮ জন ক্যান্সার সার্ভাইবার ও ৩৫ জন কেয়ারগিভার তাদের জার্নির কথা লিখেছেন।  এই সার্ভাইবার লেখকদের মধ্যে রয়েছেন- অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, ডা. সারওয়ার আলী, মসিহউদ্দিন শাকের, ড. সেঁজুতি সাহা, লেখক অদিতি ফাল্গুনি ও ডা. সালেহ মাহমুদ তুষার প্রমুখ।  এ ছাড়া কেয়ারগিভাদের মধ্যে লিখেছেন- ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক আনু মুহাম্মাদ, অধ্যাপক ড. সানজীদা আখতার ও শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ক্যান্সার জার্নি নিয়ে লিখেছেন চিত্রশিল্পী ও লেখক মাসুক হেলাল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে সিসিসিএফ’র সদস্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সাল জাতীয় ক্যানসার তহবিল গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।  অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী বলেন, ক্যানসারকে সিনেমা নাটকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা ঠিক নয়। ক্যানসারকে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে চলা যায়, বাঁচা যায়। ক্যানসারকে নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই।  সিসিসিএফ’র সভাপতি রোকশানা আফরোজ বলেন, আমাদের দেশের ক্যান্সার নির্ণয় সমন্বিত ও যথাযথ না হওয়ার ফলে দেশের বাইরের নির্ভরশীলতা বাড়ছে।  অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন অভিনেত্রী মুনিরা ইউসুফ মেমী, ঢাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির। এসময় বক্তাদের সবারই জাতীয় ক্যানসার তহবিল গঠনের আহ্বান জানান।
০৮ জুন, ২০২৪

ঢাকার পানিতে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান! 
রাজধানী ঢাকার নদী, লেক, টিউবওয়েলের পানি এবং পোশাকে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান পিএফএএস বা ‘চিরকালের রাসায়নিক’ এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে।  আন্তর্জাতিক দূষণকারী নির্মূল নেটওয়ার্ক (আইপিইএন) ও এনভায়রোনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)-এর যৌথ গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বুধবার (২৯ মে) ইএসডিও’র ঢাকা অফিসে এ গবেষণার তথ্য প্রকাশ করা হয়।  প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পিএফএএস রাসায়নিক পরিবেশে দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয়ে থাকে। এ ধরনের রাসায়নিক একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় থাকলে সমস্যা হয় না। কিন্তু পিএফএএস রাসায়নিক অতিরিক্ত মাত্রায় থাকলে এবং এর সংস্পর্শে আসলে ক্যানসারসহ অন্যান্য শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। গবেষকরা বলছেন, একটি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণে এ ধরনের রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসলে ক্যানসারসহ নবজাতকদের মধ্যে জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে। থাইরয়েডের হরমোনের কার্যক্রমও ব্যাহত হতে পারে। টিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ ও ২০২২ সালে এই গবেষণার জন্য ঢাকার মোট ৮টি এলাকা থেকে ৩১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ৩১টি নমুনার মধ্যে ২৭টি (৮৭ শতাংশ) নমুনার পৃষ্ঠ থেকে সংগৃহীত পানিতে পিএফএএসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৮টি নমুনায় (৫৮ শতাংশ) বিশ্বব্যাপী নিষিদ্ধ এক বা একাধিক পিএফএএস রাসায়নিক পিএফওএ, পিএফওএস এবং/অথবা পিএফএইচএক্সএস এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ১৯টি নমুনায় (৬১ শতাংশ) পিএফএএস এর মাত্রা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্ধারিত মাত্রা অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশে ইএসডিও-এর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেছেন, বাংলাদেশ একটি আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল উৎপাদন কেন্দ্র এবং এই খাত থেকে বিষাক্ত রাসায়নিক নির্গমনের প্রবণতা বাসিন্দাদের উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।  ইএসডিও-এর নীতি ও প্রযুক্তিবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা এবং গবেষণার প্রধান লেখক ড. শাহরিয়ার হোসেন জানান, আমাদের জলপথে ট্যাপ ওয়াটার এবং পোশাকে পিএফএএস-এর উপস্থিতি স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য গুরুতর হুমকি। তবুও শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং নীতিনির্ধারকরা এটি সমাধানে ধীর গতিতে কাজ করছে।  জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী পিএফএএস রাসায়নিকের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পিএফএএস রাসায়নিকগুলো মানবসাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। এগুলো যেহেতু ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় বেশি পাওয়া যায়, তাই ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে সাভারের কর্ণতলী নদীতে পিএফএএস রাসায়নিকের মাত্রা প্রস্তাবিত ইউ সীমার ৩০০ গুণেরও বেশি ছিল। নমুনাটিতে দুটি নিষিদ্ধ পিএফএএস রাসায়নিক সর্বোচ্চ মাত্রায় পাওয়া গেছে। বর্তমানে নির্ধারিত ডাচ নিরাপদ সীমার চেয়ে এগুলোর মাত্রা ১৭০০ থেকে ৫৪ হাজার গুণ বেশি ছিল। আর ২০২২ সালে হাতিরঝিল লেক থেকে সংগৃহীত আরেকটি নমুনাতে পিএফওএ এবং পিএফওএএস উভয় রাসায়নিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে যা বর্তমানে নির্ধারিত ডাচ নিরাপদ সীমার ১৮৫ গুণ বেশি। ২০১৯ সালে সংগৃহীত চারটি কলের পানির নমুনার মধ্যে তিনটিতে পিএফএএস পাওয়া গেছে এবং খাবার পানির জন্য ইউএস নির্ধারিত পিএফওএ মাত্রা থেকেও বেশি পরিমাণে রাসায়নিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এদিকে, গবেষণায় নমুনার জন্য নেওয়া পাঁচটি পোশাকে পিএফএএস শনাক্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে পুরুষদের জন্য তৈরি করা একটি জ্যাকেটে বিশ্বব্যাপী নিষিদ্ধ রাসায়নিক পিএফওএ-এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। 
৩০ মে, ২০২৪

নিজের উদ্ভাবিত চিকিৎসায় ক্যানসার থেকে বেঁচে ফিরলেন চিকিৎসক
নিজের উদ্ভাবিত নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করে ক্যানসার মুক্ত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এক চিকিৎসক। তিনি মস্তিষ্কের জটিল ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন, যাতে রোগীরা এক বছরের কম সময়ের মধ্যে মারা যান। তবে নিজের উদ্ভাবিত নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি ব্যবহার করে ওই চিকিৎসক এক বছরের বেশি সময় ধরে ক্যানসারমুক্ত আছেন।    রিচার্ড স্কোলিয়ার নামের ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, চিকিৎসার এক বছর পরও মরণঘাতি রোগটি নতুন করে আর তার শরীরে বাসা বাধেনি। খবর বিবিসির।  অধ্যাপক স্কোলিয়ার গ্লায়োব্লাস্টোমার নামে ক্যানসারের একটি জটিল ধরনে আক্রান্ত হয়েছিলেন যা খুব মারাত্মক। পরে তার নিজেরই গবেষণার ভিত্তিতে উদ্ভাবন করা একটি পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে তার শরীরে প্রয়োগ করা হয়।  গত বছর পোল্যান্ডে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন রিচার্ড স্কোলায়ার। এরপর জানা যায় তিনি গ্রেড-৪ ক্যানসারে আক্রান্ত। এই ক্যানসারটি গ্লিওব্লাসতোমা নামে পরিচিত। এটি এতটাই মারাত্মক যে, যে ব্যক্তি এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন তিনি খুব বেশি হলে এক বছর বা ১২ মাস বাঁচতে পারেন। ৫৭ বছর বয়সী এই চিকিৎসক মেলানোমা নিয়ে গবেষণা করেন। এটি এমন ক্যানসার যেটি শরীরের চামড়ার মাধ্যমে শুরু হয়। এ নিয়ে গবেষণা করে ক্যানসার চিকিৎসার একটি নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন তিনি। গতকাল সোমবার (১৩ মে) রিচার্ড স্কোলায়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি জানান, সর্বশেষ এমআরআইয়ে দেখা গেছে, ক্যানসার তার ব্রেনে ফিরে আসেনি। তিনি বলেছেন, ‘আমি খুবই খুশি।’ প্রফেসর স্কোলায়ার এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করেছেন তার সহকর্মী প্রফেসর জর্জিনা লংয়ের সঙ্গে। তারা দুজনই অস্ট্রেলিয়ার মেলানোমা ইনস্টিটিউটের সহ-পরিচালক হিসেব কাজ করছেন। তারা ইমিউনথেরাপির ওপর ভিত্তি করে উদ্ধাবিত পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। এরমাধ্যমে শরীরের ইমিউনকে (রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা) ক্যানসারের কোষকে হামলা করার জন্য শিক্ষা দেওয়া হয়। মেলানোমার ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে অস্ত্রোপচারের আগে ক্যানসারের কোষে বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করলে ইমিউনথেরাপি ভালো কাজ করে। প্রফেসর স্কোলায়ার বিশ্বের একমাত্র ব্রেন ক্যানসার আক্রান্ত হিসেবে অস্ত্রোপচারের আগে ইমিউনথেরাপির চিকিৎসা নিয়েছেন। বিশ্বব্যাপী প্রায় তিন লাখ মানুষ গ্লিওব্লাসতোমাতে আক্রান্ত বলে ধারণা করা হয়। প্রফেসর স্কোলায়ারের এই পদ্ধতির মাধ্যমে তার আয়ু বাড়বে সঙ্গে চিকিৎসার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।  
৩০ নভেম্বর, ০০০১

নিজের উদ্ভাবিত চিকিৎসায় ক্যানসার থেকে বেঁচে ফিরলেন চিকিৎসক
নিজের উদ্ভাবিত নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি প্রয়োগ করে ক্যানসারমুক্ত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এক চিকিৎসক। তিনি মস্তিষ্কের জটিল ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন, যাতে রোগীরা এক বছরের কম সময়ের মধ্যে মারা যান। তবে নিজের উদ্ভাবিত নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি ব্যবহার করে ওই চিকিৎসক এক বছরের বেশি সময় ধরে ক্যানসারমুক্ত আছেন।    রিচার্ড স্কোলিয়ার নামের ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, চিকিৎসার এক বছর পরও মরণঘাতী রোগটি নতুন করে তার শরীর আক্রান্ত করতে পারেনি। খবর বিবিসির।  অধ্যাপক স্কোলিয়ার গ্লায়োব্লাস্টোমার নামে ক্যানসারের একটি জটিল ধরনে আক্রান্ত হয়েছিলেন যা খুব মারাত্মক। পরে তার নিজেরই গবেষণার ভিত্তিতে উদ্ভাবন করা একটি পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে তার শরীরে প্রয়োগ করা হয়।  গত বছর পোল্যান্ডে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন রিচার্ড স্কোলায়ার। এরপর জানা যায় তিনি গ্রেড-৪ ক্যানসারে আক্রান্ত। এই ক্যানসারটি গ্লিওব্লাসতোমা নামে পরিচিত। এটি এতটাই মারাত্মক, যে ব্যক্তি এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন তিনি খুব বেশি হলে এক বছর বা ১২ মাস বাঁচতে পারেন। ৫৭ বছর বয়সী এই চিকিৎসক মেলানোমা নিয়ে গবেষণা করেন। এটি এমন ক্যানসার যেটি শরীরের চামড়ার মাধ্যমে শুরু হয়। এ নিয়ে গবেষণা করে ক্যানসার চিকিৎসার একটি নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন তিনি। গতকাল সোমবার (১৩ মে) রিচার্ড স্কোলায়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি জানান, সর্বশেষ এমআরআইয়ে দেখা গেছে, ক্যানসার তার ব্রেনে ফিরে আসেনি। তিনি বলেছেন, ‘আমি খুবই খুশি।’ প্রফেসর স্কোলায়ার এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করেছেন তার সহকর্মী প্রফেসর জর্জিনা লংয়ের সঙ্গে। তারা দুজনই অস্ট্রেলিয়ার মেলানোমা ইনস্টিটিউটের সহপরিচালক হিসেব কাজ করছেন। তারা ইমিউনথেরাপির ওপর ভিত্তি করে উদ্ধাবিত পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। এরমাধ্যমে শরীরের ইমিউনকে (রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা) ক্যানসারের কোষকে হামলা করার জন্য শিক্ষা দেওয়া হয়। মেলানোমার ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে অস্ত্রোপচারের আগে ক্যানসারের কোষে বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করলে ইমিউনথেরাপি ভালো কাজ করে। প্রফেসর স্কোলায়ার বিশ্বের একমাত্র ব্রেন ক্যানসার আক্রান্ত হিসেবে অস্ত্রোপচারের আগে ইমিউনথেরাপির চিকিৎসা নিয়েছেন। বিশ্বব্যাপী প্রায় তিন লাখ মানুষ গ্লিওব্লাসতোমাতে আক্রান্ত বলে ধারণা করা হয়। প্রফেসর স্কোলায়ারের এই পদ্ধতির মাধ্যমে তার আয়ু বাড়বে সঙ্গে চিকিৎসার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।  
১৪ মে, ২০২৪

তৃতীয় সমাজভিত্তিক ক্যানসার সম্মেলন / ক্যানসার শুধু চিকিৎসার নয়, রোগ নির্ণয় ও রোগ থেকে সুরক্ষার বিষয়
ক্যানসার শুধু চিকিৎসকদের বিষয় নয়, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য, বন্ধু, স্বজন- সবার বিষয়। ক্যানসার শুধু চিকিৎসার বিষয় নয়, রোগ নির্ণয় ও রোগ থেকে সুরক্ষার বিষয়। আবার, যাদের ক্যানসার নিরাময়ের পর্যায় পেরিয়ে গেছে, কিংবা ক্যানসারজনিত কষ্টের তীব্রতা থেকে বেঁচে থাকাকেও অসহনীয় করে ফেলেছে, তাদের জন্য প্রশমন সেবা নিয়েও ভাবতে হবে। শুক্রবার (১০ মে) কৃষিবিদ ইনস্টিউশনের চার তলায় থ্রি-ডি মিলনায়তনে বিকেলে কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টারের আয়োজনে ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ও তৃতীয় সমাজভিত্তিক ক্যানসার সম্মেলন অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট বক্তারা এসব কথা বলেন। বিশিষ্টজনেরা আরও বলেন, রোগীর চিকিৎসার খরচ সামলাতে গিয়ে পুরো পরিবার পথে বসল কি না, তাও ভাবতে হবে। ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে জীবন জয় করে এনেছেন যারা, তাদের অভিজ্ঞতার কথাও জানতে হবে। সবাই মিলে অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান করে ক্যানসার থেকে বাঁচার ও বাঁচানোর উপায় বের করতে হবে। এ সম্মেলনে বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ উপস্থাপনা ছাড়াও ক্যানসারের আর্থ-সামাজিক প্রভাব, ক্যানসার জয়ীদের অভিজ্ঞতা ও সমাজভিত্তিক ক্যানসার সেবার অভিজ্ঞতা এবং সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান,  সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আব্দুস সামাদ, সাবেক স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলাম খান, বারডেম এর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম নুরুন্নবী, প্রজনন ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আখতার, বিএসএমএমইউ উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, চিকিৎসা শিক্ষা সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আমিরুল মোর্শেদ খসরু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আব্দুল হামিদ, বিএসএমএমইউ গাইনি অনকোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন। এছাড়া বক্তব্য দেন সম্মেলন আয়োজন কমিটির সভাপতি ও কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন।
১০ মে, ২০২৪

শুক্রবার কেআইবিতে ক্যানসার সম্মেলন
ক্যানসার শুধু চিকিৎসকদের বিষয় নয়। ভুক্তভোগী, তাদের পরিবারের সদস্য, বন্ধু, স্বজন-সবার। ক্যানসার শুধু চিকিৎসার বিষয় নয়, রোগ নির্ণয় ও রোগ থেকে সুরক্ষার বিষয়। আবার, যাদের ক্যানসার নিরাময়ের পর্যায় পেরিয়ে গেছে, কিংবা ক্যানসারজনিত কষ্টের তীব্রতা বেঁচে থাকাকেও অসহনীয় করে ফেলেছে, তাদের জন্য প্রশমন সেবা নিয়েও ভাবতে হবে। রোগীর চিকিৎসার খরচ সামলাতে গিয়ে পুরো পরিবার পথে বসল কি না, তাও ভাবতে হবে। ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে জীবন জয় করে এনেছেন যারা, তাদের অভিজ্ঞতার কথাও জানতে হবে। সবাই মিলে অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান করে ক্যানসার থেকে বাঁচার ও বাঁচানোর উপায় বের করতে হবে। শুক্রবার (১০ মে)  বিকেল ৩টায় এই লক্ষ্য সামনে নিয়ে কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার কৃষিবিদ ইনস্টিউশনের চারতলায় থ্রি-ডি মিলনায়তনে আয়োজন করছে তৃতীয় সমাজভিত্তিক ক্যানসার সম্মেলন। কয়েকটি অধিবেশনে বিভক্ত এই সম্মেলনে বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ উপস্থাপনা ছাড়াও ক্যানসারের আর্থসামাজিক প্রভাব, ক্যানসার জয়ীদের অভিজ্ঞতা, সমাজভিত্তিক ক্যানসার সেবার অভিজ্ঞতা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়াও ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সমাজভিত্তিক কার্যক্রম উপস্থাপনা করবে কয়েকটি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টারের ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হবে একই সঙ্গে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অধিবেশনে অংশ নিবেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এনজিও বিষয়ক ব্যুরো মহাপরিচালক (গ্রেড-১) মো. সাইদুর রহমান, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আব্দুস সামাদ, সাবেক স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলাম খান, বারডেমের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম নুরুন্নবী, প্রজনন ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. হালিদা হানুম আখতার, বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আব্দুল হামিদ, বিএসএমএমইউ’র গাইনি অনকোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন। সম্মেলন আয়োজন কমিটির সভাপতি ও কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্ট্রের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন ধন্যবাদ জানান।
০৯ মে, ২০২৪

ক্যানসার প্রতিরোধে জাদু দেখাবে এআই
ক্যানসার গবেষণা ও চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞদের অন্যতম আশা-ভরসা হয়ে উঠেছে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম মেধা। সেই কথাই প্রতিধ্বনিত হলো আমেরিকার সর্ববৃহৎ ক্যানসারবিষয়ক সংগঠন ‘আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যানসার রিসার্চ’ (এএসিআর)-এর বার্ষিক সম্মেলনে। আমেরিকার সান দিয়েগো শহরে সম্প্রতি শেষ হয়েছে চার দিনব্যাপী সম্মেলন।  সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ক্যানসার রোগীর সম্ভাব্য চিকিৎসা সহজ করে দিতে পারে এআই-প্রযুক্তি। রোগীর দেহে ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (কোনো ওষুধ কাজ না করার কারণ) অনুমান করতে সাহায্য করবে এআই।  এএসিআর আয়োজিত ক্যানসার সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। চিকিৎসক, নার্স, গবেষক, ক্যানসার রোগী, রোগীর ‘কেয়ারগিভার’ সকলেই ছিলেন সেখানে। ছিলেন ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির প্রতিনিধি এবং ক্যানসার-সাংবাদিকেরাও। এই সম্মেলনের লক্ষ্য- একযোগে ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই। প্রশান্ত মহাসাগরের ধার ঘেঁষে সান দিয়েগো শহর। সুদূর বিস্তৃত সমুদ্রসৈকত, রৌদ্রোজ্জ্বল ভূমধ্যসাগরীয় আবহাওয়া, মেক্সিকান খাবার (মেক্সিকো সীমান্তের একেবারে কাছে এ শহর), স্পেনীয় ঔপনিবেশিক ইতিহাসের ছোঁয়া। এসবের টানে সারা বছরই পর্যটকের আনাগোনা লেগে থাকে।  বর্তমানে এই শহর আমেরিকার বায়োটেকনোলজি হাব-ও হয়ে উঠেছে। ‘ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফর্নিয়া, সান দিয়েগো’ (ইউসিএসডি), ‘সল্ক ইনস্টিটিউট’-এর মতো একাধিক নামজাদা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে এ শহরে। এ বছর তাই এমনই এক শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছিল এএসিআর-এর সম্মেলনের জন্য। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ক্যানসার চিকিৎসা ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। ক্যানসার এমন এক অসুখ, যাতে মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েও প্রিয়জনকে বাঁচাতে অক্ষম হন। ঘরকে ঘর উজাড় হয়ে যায়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থায় রোগীর মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ক্যানসার নিয়েই বহু রোগী দীর্ঘদিন বেঁচে থাকছেন, তাদের জীবনযাপনের মান উন্নত হয়েছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অরিন্দম বসু জানান, ‘প্রজেক্ট জিনি’ নামে একটি প্রকল্প শুরু হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছে বিশ্বের ১৯টি ক্যানসার সেন্টার। এই প্রকল্পের লক্ষ্যই হলো ক্যানসার সংক্রান্ত হাজার হাজার ক্লিনিক্যাল তথ্য ও জিনোমিক তথ্য এআই-এর সাহায্যে একত্র করা। অরিন্দম বলেন, প্রতিটি ক্যানসার রোগীর রোগ-চরিত্র ভিন্ন। এ হেন কর্কটরোগের বৈশিষ্ট্যগুলো যত বিশদে জানা সম্ভব হবে, তত ক্যানসারকে বাগে আনা সহজ হবে। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী মাইরিয়া ক্রিসপিন। তিনি ‘মেশিন লার্নিং’-এর ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ক্যানসার রোগীর সম্ভাব্য চিকিৎসা সহজ করে দিতে পারে এআই-প্রযুক্তি। ‘মেমোরিয়াল স্লোয়ান কেটেরিং’-এর কম্পিউটেশনাল অঙ্কোলজি বিভাগের প্রধান সোহরাব শাহ বলেছেন, রোগীর দেহে ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (কোনো ওষুধ কাজ না করার কারণ) অনুমান করতে সাহায্য করবে এআই।  হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের বিজ্ঞানী লোরেলেই মুচি জোর দিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য এআই-এর সাহায্যে সঠিকভাবে নথিভুক্তকরণে। কানাডার ‘প্রিন্সেস মার্গারেট ক্যানসার সেন্টার’-এর বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন হাইব-কেন্সের মতে, কার্সিনোজেনেসিস-কে বুঝতে সাহায্য করবে মেশিন লার্নিং। 
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

শাড়ি পরলেই হতে পারে ‌‘ক্যানসার’ 
শাড়ি পরলে যদি খুলে যায়, সেই ভয়ে কষে পেটিকোটের দড়ি বাঁধেন। যতক্ষণ শাড়ি পরে থাকেন, ততক্ষণ তেমন কিছু টের না পেলেও বাড়ি ফিরে যখন বাঁধন আলগা করেন, তখন জ্বালা করতে থাকে। কারও আবার দড়ির বাঁধনের জায়গাটা অসম্ভব চুলকায়। দীর্ঘসময় ধরে পেটিকোটের দড়ির বাঁধা থাকে বলে ওই অংশে কালশিটে পড়ে যায় কারও কারও। দীর্ঘদিন ধরে এমনটা হতে থাকলে ঘা পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণের কাছে যা ‘শাড়ি বা ধুতি ক্যানসার’ নামে পরিচিত। সোমবার (১৫ এপ্রিল) আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।  চিকিৎসকরা বলছেন, বিভিন্ন ধরনের ত্বকের ক্যানসারের মধ্যে এটিও একটি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে ‘স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা’ বা সংক্ষেপে ‘এসসিসি’বলা হয়। শল্য চিকিৎসক এবং ক্যানসার কেয়ার প্রোগ্রামের পরামর্শদাতা চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‌‘চামড়ায় যে কোষগুলো রয়েছে তাকেই বলা হয় স্কোয়ামাস সেল। সেই কোষগুলোতে কিছু মৌলিক পরিবর্তন ঘটলে এবং হঠাৎ করে এরা বংশবিস্তার করতে শুরু করলে ত্বকের ওপর ঘা হতে শুরু করে।’ ত্বকের যে কোনো রকম অস্বস্তি বা সংক্রমণ এই ক্যানসারের কারণ হতে পারে। কোমরের ভাঁজে দীর্ঘ ক্ষণ শক্ত করে দড়ি বা গার্ডার চেপে বসে থাকলে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। শুধু পেটিকোট পরলেই যে এমন সমস্যা হবে, তা নয়। শক্ত ইলাস্টিক দেওয়া প্যান্ট, অন্তর্বাস, ধুতি, লুঙ্গি— অর্থাৎ বাঁধন দিতে হয়, এমন পোশাক পরলেই ত্বকে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। দীপ্তেন্দ্রের কথায়, ‘শীতপ্রধান অঞ্চলে শরীর গরম রাখার জন্য সেখানকার বাসিন্দারা শরীরে হটপটের সেঁক দেন। সেখান থেকেও তো ত্বকে এক ধরনের ক্ষত তৈরি হয়। দীর্ঘদিন ধরে এমনটা চলতে থাকলে সেখান থেকেও কিন্তু ক্যানসার হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যা ‘কাংরি ক্যানসার’ নামে পরিচিত। আবার, ধরুন ছোটবেলায় কারও হাত পুড়ে গিয়েছিল। ক্ষত শুকিয়ে গেলেও সেই অংশটিতে মাঝে মধ্যেই কেমন যেন অস্বস্তি হয়, চুলকায়। দীর্ঘদিন ধরে এমনটা হতে থাকলে সেই ক্ষতস্থানে বেশ কিছু পরিবর্তন আসতে শুরু করে। যা আসলে মার্জোলিন আলসার। সেই কারণেই সানস্ক্রিন মাখতে বলা হয়।’ এ ছাড়া, ত্বকের যে অংশ অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে আসে, সেখানেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। রোদ লেগে ত্বকে যে ক্যানসার হয় তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘পেজাল ক্যানসার’ বলা হয়। এই অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করতেই খেলোয়াড়রা মুখে জিঙ্ক অক্সাইড মুখে মেখে খেলতে নামেন। দীপ্তেন্দ্র বলেন, ‌‌‘আবার শরীরে যদি হঠাৎ কোনো নতুন আঁচিল তৈরি হয়, তা আকারে বড় হতে শুরু করে কিংবা রক্ত বেরোতে শুরু করে, সেখান থেকেও কিন্তু ক্যানসার হতে পারে। চিকিৎসা পরিভাষায় যা ‘ম্যালিগন্যান্ট মেলানোমা’ নামে পরিচিত। তবে, জন্মগত জরুল বা আঁচিল থেকে এই ধরনের সমস্যা সাধারণত হয় না। স্কোয়ামাস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার কি কোনো লক্ষণ আছে? ১. শরীরের কোনো অংশে দীর্ঘ ক্ষণ রক্ত চলাচল বন্ধ হলে ত্বকের রং পাল্টে যায়। এক্ষেত্রেও তেমনটা হতে হতে পারে। বাঁধন আলগা হওয়ার পর ওই নির্দিষ্ট জায়গা অসম্ভব চুলকাতে পারে। ২. দীর্ঘদিন ত্বকের নির্দিষ্ট জায়গায় বাঁধন দিতে দিতে সেই জায়গায় ঘা হয়ে যেতে পারে। অন্তর্বাসের গার্ডার ত্বকের ওপর চেপে বসে থাকলেও একই রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। ৩. প্রথমে ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, ঘা হওয়া, সেখান থেকে সংক্রমণ হলে তা ক্যানসারে পরিণত হতে সময় লাগে না। অনেকের ক্ষেত্রে কোমরের আশপাশে টিউমারও হতে পারে। এই ধরনের সমস্যা নিরাময়ে কী কী করা যেতে পারে? ১. পেটিকোট পরলেও তার বাঁধন আলগা করে রাখতে হবে। ২. শরীরের নিম্নাঙ্গের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। দেহের সেই সব অংশে যাতে ঘাম না জমে, সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ৩. প্রয়োজনে পেটিকোটের তলায় শেপঅয়্যার পরতে পারেন। যাতে বাঁধনের দাগ ত্বকের ওপর না পড়ে। ৪. নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস কেনার সময়ে কোমরের স্ট্র্যাপ দেখে কিনবেন। লক্ষ্য করবেন, তা যেন খুব সরু না হয়। ৫. দীর্ঘক্ষণ কষে পেটিকোটের দড়ি বেঁধে রাখার পর বাড়ি ফিরে ওই অংশ ভালো করে পরীক্ষা করতে হবে। ত্বকের রঙে কোনো বদল এলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
১৫ এপ্রিল, ২০২৪

ক্যানসার আক্রান্ত অভিনেত্রীর পাশে ফারহান
ছোট পর্দার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান। ব্যক্তিজীবনে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মাঝেমধ্যেই প্রশংসিত হন তিনি।  উদার তারকা হিসেবে ভক্তদের মাঝে পরিচিত এই অভিনেতা। এবার ক্যানসার আক্রান্ত শিল্পীকে আর্থিক সহায়তা করেছেন ফারহান। গত দু’বছর ধরে জরায়ু মুখের ক্যানসারে আক্রান্ত ছোটপর্দার পরিচিত অভিনেত্রী আফরোজা হোসেন।  দেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নেওয়া হয়েছে অভিনেত্রীকে।  চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মেরুদণ্ডের নার্ভের জরুরি অপারেশন প্রয়োজন।  কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে পারছেন না আফরোজা। এমন অবস্থায় তার পাশে দাঁড়ালেন ফারহান।  অভিনেত্রীর চিকিৎসার জন্য নগদ ২ লাখ টাকা দিয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী মনিরা মিঠু্।  পোস্টে জানান, ফারহানের সঙ্গে শুটিং চলাকালীন আফরোজার অসুস্থতার কথা বলেন তিনি।  এতে আগেবপ্রবণ হয়ে পড়েন ফারহান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ২ লাখ টাকা ক্যাশ দিয়ে দেন এই অভিনেতা। 
১০ এপ্রিল, ২০২৪
X