ধুনটে ২৮ পরিবারের ভাগ্যে জোটেনি কোরবানির মাংস
বগুড়ার ধুনট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট নিয়ে সামাজিক বিরোধের জের ধরে দরিদ্র ২৮টি পরিবারের লোকজন কোরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ ঘটনায় বঞ্চিত পরিবারের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত সোমবার (১৭ জুন) ঈদের দিন উপজেলা সদরের পারধুনট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ জুন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট নিয়ে পারধুনট গ্রামে সমাজের মাতবরদের একটি অংশের মাঝে বিরোধের সৃষ্টি হয়। ওই সমাজে মোট পরিবারের সংখ্যা ৩৫০টি। সমাজের নিয়ম অনুযায়ী ঈদের দিন প্রতিটি পরিবার একই স্থানে পশু জবাই করে। সেখান থেকে কোরবানিদাতা নিজের ও আত্মীয়র অংশের মাংস বাড়িতে নিয়ে যান। আর অবশিষ্ট মাংস গরিব পরিবারের মাঝে সমহারে বণ্টন করা হয়। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবার ঈদের দিন ৩৫০টি পরিবারের ওই সমাজে ৮টি গরু ও ২৫টি ছাগল একই স্থানে জবাই করা হয়। হিসাব অনুযায়ী প্রতিটি গরিব পরিবারের প্রত্যেক সদস্যর জন্য ৮০০ গ্রাম করে মাংস পাওয়ার কথা। কিন্তু সমাজের দায়িত্ব থাকা ব্যক্তিরা কৌশলে অনেকে পরিবারকে ১ কেজি ১০০ গ্রাম করে মাংস দিয়েছে। এ কারণে দেওয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে মাংস শেষ হয়ে যাওয়ায় ২৮টি পরিবার তাদের অংশের মাংস পাননি। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই গ্রামে গেলে কোরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত আব্দুল আজিজ, রওশনারা খাতুন, আফছার আলী, রোকেয়া খাতুন ও হাসিনা বেগমসহ অনেকে জানান, কোরবানির মাংস না পাওয়ায় তাদের ঈদের আনন্দই মাটি হয়ে গেছে। তারা ঈদের দিন কোরবানির মাংস খেতে পারিনি। ভাগে মাংস কম পড়ায় সমাজের মাতবরা তাদের মাংস দেননি। এ ধরনের ঘটনা এর আগে কোনো দিন ঘটেনি। মাতবররা কৌশলে তাদের মাংস থেকে বঞ্চিত করেছেন বলে তারা দাবি করেন। পারধুনট গ্রামের মাতব্বর সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। অভাব অনটনের কারণে অনেক পরিবারের লোকজন প্রতি বছর একবারই (ঈদের দিন) মাংস খেয়ে থাকেন। গরিব-অসহায় পরিবারগুলো মাংস না পেয়ে অনেক আক্ষেপ করেছেন। গ্রামের মাতবরদের মতবিরোধের কারণে পরিবারগুলো মাংস থেকে বঞ্চিত হয়। আমি চেষ্টা করেও কয়েকজন মাতবরের কারণে তাদের মাংস দিতে পারিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের এক মাতবর জানান, উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট নিয়ে মাতবরদের মাঝে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ কারণে ২৮টি পরিবার কোরবানির মাংস পাননি। মূলত মাতবরদের বিরোধের বলি হয়েছেন অসহায় এসব পরিবারগুলো। ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈকত হাসান বলেন, এ বিষয়টি আমি লোকমুখে শুনেছি। এ ঘটনায় কেউ এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০ জুন, ২০২৪

অসহায় ও বঞ্চিতদের সঙ্গে নূরুল ইসলাম বুলবুলের ঈদ উদযাপন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডসহ পৌরসভা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্পটে অসচ্ছল ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণ করেছেন।  এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোহরুল ইসলামসহ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।  কোরবানির মাংস বিতরণকালে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.) তার জীবনে অনেকগুলো কঠিন পরীক্ষার সম্মুখিন হয়েছিলেন এবং সে সকল পরীক্ষায় তিনি সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন মহাগ্রন্থ আল কোরআনে তা বর্ণনা করা হয়েছে। ফলে তার স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় করে জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইমানি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্যেই আল্লাহ তা’য়ালা মুসলিম মিল্লাতের উপর কিয়ামত পর্যন্ত কোরবানিকে ওয়াজিব করে দিয়েছেন। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে শুধু জাতির পিতাই করা হয়নি বরং মানব সভ্যতার আদর্শ ও অনুকরণীয় নেতৃত্ব হিসেবে আমাদের সামনে রাখা হয়েছে। একজন মুমিন হিসেবে আমাদেরও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে সর্বাবস্থায় প্রস্তুত থাকতে হবে। এটাই ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা। তিনি বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আল আমিনের নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য আমরা কোরবানি করেছি। কোরবানির মাংস বা রক্ত কোনো কিছুই আল্লাহর কাছে পৌঁছে না বরং মানুষের তাকওয়া, পরহেজগারিই আল্লাহর দরবারে পৌঁছে। সুতরাং হৃদয়ে আল্লাহর ভয় লালন করে আমাদের তাকওয়া সম্পন্ন ও নিষ্ঠাবান মুসলিম হতে হবে। জীবনের সকল স্তরে অর্থাৎ পারিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে আল্লাহর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আদর্শে উজ্জীবিত ও ইমানি শক্তিতে বলীয়ান হয়ে শোষণমুক্ত সমাজ গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে।  তিনি আরও বলেন, দেশবাসী এবার এমন একটি সময়ে ঈদুল আজহা পালন করছে যখন আওয়ামী অপশাসনের যাঁতাকলে জনগণ তার নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। চাল, ডাল, গ্যাস সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে জনগণ আজ দিশেহারা। সীমাহীন লুটপাট, দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও অব্যবস্থাপনার ফলে দেশের অর্থনীতি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। দেশের এই ক্রান্তিকালে গণমানুষের সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। মানুষের প্রতি মমত্ববোধ ও ভালোবাসার জায়গা থেকে যেকোন বিপদ-আপদ ও উৎসবে নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে এদেশের মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর এই গণমুখী প্রয়াস অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। 
১৯ জুন, ২০২৪

স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে কোরবানির মাংস খাওয়ার সঠিক নিয়ম
ঈদুল আজহায় রেড মিট বা লাল মাংস খাওয়ার মাত্রা বেড়ে যায় বাংলাদেশে। এর স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রভাব নিয়ে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. খুরশিদ জাহান। স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে কোরবানির মাংস কী পরিমাণ বা কতটুকু খাওয়া উচিত তার সঠিক নিয়ম একটি সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে- কোরবানির ঈদে বাংলাদেশের মানুষ প্রচুর মাংস খেয়ে থাকে। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখেন? ড. খুরশিদ জাহান : কোরবানির ঈদ হলো মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই সময়ে বিভিন্ন পশু যেমন : গরু, ছাগল, মহিষ, উট, দুম্বা জবাইয়ের মাধ্যমে উৎসবটা পালন করা হয়। এগুলো কিন্তু রেড মিটের উৎস। আমি বলব, গরুর মাংস বা রেড মিট খাওয়ার আগে অবশ্যই নিজের স্বাস্থ্যগত দিক চিন্তা করতে হবে। বছরে একটা দিন আমরা কোরবানির মাংস খাব, এটা অনেকে আশা করে থাকে। কোরবানির মাংসকে অনেকে পবিত্রও মনে করে। এই গরুর মাংসের অনেক উপকারিতা আছে, কিন্তু বেশি খাওয়ার ঝুঁকিও রয়ে গেছে। মাংসের ক্ষতিকারক দিক মূলত চর্বি। খাওয়ার পর এই চর্বি বাসা বাঁধে রক্তে এবং এটা ক্ষতিকারক কোলস্টেরল বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেড়ে যায়। শরীরে আরও অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। মানবদেহের জন্য লাল মাংসের প্রয়োজনীয়তার দিকটি নিয়ে কী বলবেন? ড. খুরশিদ জাহান : পুষ্টির দিক থেকে রেড মিট কিন্তু অনেক গুণে গুণান্বিত। এটা হাই কোয়ালিটির প্রোটিনের উৎস। এর মধ্যে অনেক ভিটামিন-মিনারেল রয়েছে। আয়রন আছে, যেটা রক্তশূন্যতা দূর করে। রেড মিট আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হাড় ও দাঁতের গঠনে ভূমিকা রাখে, চুল-নখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তারপর বাচ্চা বয়স থেকে শুরু করে সবারই শরীরের বৃদ্ধি ও বুদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে। আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে, অতিরিক্ত অসারতা দূর করতে সহায়তা করে। এসব স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় ভালো উৎস হলো রেড মিট। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, কোলেস্টরেল বেশি, উচ্চ রক্তচাপ আছে- তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী? ড. খুরশিদ জাহান : তারা রেড মিট খেতে পারবেন কি না, কতটুকু খেতে পারবেন- এর জন্য অবশ্যই তাদের বিশেষজ্ঞ বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে। কোরবানির ঈদে সবাই মাংসটা খেতে চায়। যাদের কোনো সমস্যা নেই, তারা দিনে ৭০ গ্রাম পর্যন্ত খেতে পারবেন, যেটা সপ্তাহে সব মিলিয়ে ৩০০-৫০০ গ্রাম হতে পারে। কিন্তু যারা অসুস্থ, বিশেষ করে হৃৎপিণ্ডে সমস্যা আছে, যাদের কিডনির সমস্যা আছে, যাদের ওজন অনেক বেশি, আর্থরাইটিস আছে, তাদের বুঝেশুনে খেতে হবে, পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ বলেন, কোরবানির ঈদের সময় পাওয়া পশুর পাঁজর বা সিনার মাংসে চর্বি কম থাকে, সেখান থেকে কিছুটা হয়তো খাওয়া যাবে। কিন্তু বেশি খাওয়া যাবে না, সীমিত আকারে- সেটা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী। গরু ও খাসির মাংস যাদের বারণ, তারা সাধারণত মুরগির মাংস খেয়ে থাকেন। এই বিকল্প ঠিক কি না? ড. খুরশিদ জাহান : হাই কোলেস্টরেলের কারণে যাদের গরুর মাংস খাওয়া নিষেধ, তারা ঝুঁকি কমাতে মুরগির মাংস খেয়ে থাকেন। মুরগির মাংসেও কিন্তু গরুর মাংসের মতোই হাই কোয়ালিটির প্রোটিন থাকে। যাদের সমস্যা, তাদের প্রোটিন কম খাওয়া উচিত, কিডনি রোগীদের এমনিতেই কম খাওয়া উচিত। ‘ফুড ডাইভারজিফিকেশন’ বা খাদ্যে বৈচিত্র্যময়তা বলে কিন্তু একটা কথা আছে। আমরা প্রতিদিন যে খাবারগুলো খাই, সেসবের মধ্যে অনেক ধরনের খাবার যুক্ত করা উচিত। এই খাবারের সঙ্গে আমরা যদি শাকসবজি, ফলমূল, দানাদার খাবার যুক্ত করি- তাহলে আমাদের মাংসের পরিমাণটা কম হয়ে যায়। সব খাবার মিলিয়ে খেলে সমস্যা কমে যায়। আমিষের চাহিদা পূরণে মাছ-মাংস ছাড়া আর কোন কোন খাবার গ্রহণ করা যায়? ড. খুরশিদ জাহান : দুই রকম উৎস থেকে আমরা আমিষ পেতে পারি। একটা হলো প্রাণিজ উৎস যেমন : মাছ-মাংস। আরেকটা হলো ভেজিটেবল। দেশে আমরা যত জরিপ করেছি, সেখানে আমরা বেশির ভাগই পেয়েছি সিরিয়াল প্রোটিন। বিভিন্ন ধরনের ডাল হলো আমিষের ভালো উৎস। ডাল ও চাল মিলিয়ে যদি আমরা খাবার খাই, তাহলে কিন্তু হাই কোয়ালিটির প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। ডালে যে অ্যামিনো অ্যাসিড কম থাকে, সেটা চালে থাকে। আবার চালে যে অ্যামিনো অ্যাসিড কম থাকে, সেটা ডালে থাকে। এখন যদি মিলিত খাবারটা খাই, তাহলে এটা পরিপূর্ণ হাই ক্লাস অ্যামিনো অ্যাসিডযুক্ত খাবার হয়। ছোটবেলা থেকেই শাকসবজি খাওয়ার প্রতি কিছু অনীহা দেখা যায়। এর কারণ কী? সমাধান কীভাবে হতে পারে? ড. খুরশিদ জাহান : বাচ্চাদের যখন সাপ্লিমেন্ট ফুড দেওয়া হয়, তখন থেকে যদি আমরা এমন খাবারে অভ্যস্ত করি, যেটা তাদের উপযোগী এবং তাদের টেস্ট অনুযায়ী, যা ভেজিটেবলস ও অ্যানিমেল সোর্সের মিলিত খাবার। এমন খাবার দিলে বাচ্চারা এভাবেই অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। কিন্তু অনেক মাকেই দেখি, তারা এত ঝামেলার মধ্যে যান না। তারা বাচ্চাদের সিরিয়াল বা দানাদার জাতীয় খাবার দেন, যেটাতে হয়তো অনেক ভিটামিন মিক্সড থাকে। একটু বড় হতে হতেই দেখি, তাদের বাইরে থেকে প্রসেস ফুড কিনে এনে দেন। তারা আর কখনোই শাকসবজি খেতে চায় না। তারা প্রসেস ফুডেই ঝুঁকে যায়। আমাদের বড় ছাত্রদের মধ্যে দেখেছি একই অবস্থা। খাবারের তো একটা অভ্যাস গড়ে তুলতে হয় ছোটবেলা থেকে, সেটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হয় না। কোরবানির ঈদের সময় খাবার গ্রহণ নিয়ে আপনার পরামর্শ কী থাকবে? ড. খুরশিদ জাহান : ধর্মীয় উৎসব তো আমরা পালন করবই। যেভাবেই খাই, কিছু হলেও মাংস খাব। তবে এই সময়ে মাংস খাওয়ার ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত। প্রয়োজন বুঝে খেতে হবে। বেশি মাংস থাকলে, বেশি রান্না হলে অতিরিক্ত খাওয়া হয়। আমি বলব, মাংস রান্না করার আগে চর্বিযুক্ত অংশগুলো ফেলে দেওয়া উচিত। মাংস রান্নার সময় অতিরিক্ত তেল বা ঘি ব্যবহার না করাই ভালো। কোরবানির সময় মাংসটাই প্রধান থাকার হিসেবে না খেয়ে সঙ্গে যদি শাকসবজি, দানাদার খাবার, বিভিন্ন ধরনের সালাদ খাই, তাহলে কিন্তু মাংসের পরিমাণ কম হয়ে যায়। এ ছাড়া আঁশযুক্ত খাবার অতিরিক্ত খাওয়া উচিত। কারণ এই সময় দেখা যায়, অতিভোজনে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাসট্রিক সমস্যা ও ডায়রিয়াসহ অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। যাদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা আছে, তাদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। ঈদের আগে তাদের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করে নিতে হবে। যেহেতু রেড মিট হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, আর্থরাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়- সে জন্য আমাদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। সূত্র : ডয়চে ভেলে
১৮ জুন, ২০২৪

কোরবানির মাংস বিতরণ করল ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন
কোরবানি বঞ্চিতদের মাঝে মাংস বিতরণ করেছে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুরে পুরানা পল্টন এলাকায় কোরবানির মাংস বিতরণ করা হয়।  ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কোরবানির মাংস বিতরণ করেন।  কোরবানির মাংস বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সহসভাপতি হাফেজ মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা খলিলুর রহমান, এইচ এম রফিকুল ইসলাম, হাফেজ সৈয়দ ওমর ফারুক, হাজি শাহাদাত হোসাইন, মাওলানা শাহজামাল, হাফেজ মাওলানা মাসরুর তাসফিন, হাজি শাহিন আহমদ, হারুন অর রশিদ, আইয়ুব আলি চৌধুরী। হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ কোরবানি করার সামর্থ্য না থাকায় ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়। কোরবানির মাংস ছাড়া পুরো বছর গরুর মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই তাদের। সরকার বলে থাকেন, দেশ না কি উন্নয়নের মহাসড়কে। নিরপেক্ষ খোঁজখবর নিলে এমনই চিত্র প্রকাশ পাবে।  ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরের পক্ষ থেকে সমাজের গরিব, দুঃখী ও অসহায় মানুষের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণ করে ঈদের আনন্দে বঞ্চিতদের শামিল করার চেষ্টা করছে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন। 
১৮ জুন, ২০২৪

ফ্রিজ ছাড়াই কোরবানির মাংস সংরক্ষণের উপায়
এ বছর ঈদুল আজহায় সারা দেশে মোট ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮টি পশু কোরবানি হয়েছে। গত বছর কোরবানির এ সংখ্যা ছিল এক কোটি ৪১ হাজার ৮১২টি। গত বছরের তুলনায় এবার তিন লাখ ৬৭ হাজার ১০৬টি পশু বেশি কোরবানি হয়েছে। কোরবানির ঈদে একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে মাংস বাসায় চলে আসে। অনেকের ফ্রিজ থাকে না বা ফ্রিজেও জায়গার অভাব দেখা দেয়। সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায় মাংস। এ রকম পরিস্থিতিতে ফ্রিজ ছাড়াই মাংস সংরক্ষণের উপায় জেনে নিন। ১. মাংস লম্বা ফালি করে কেটে নিন। চর্বি বাদ দিন। লবণ ও হলুদ মাখিয়ে কড়া রোদে শুকান। ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে এয়ারটাইট বক্সে ভরে রেখে দিন। ব্যবহার করার আগপর্যন্ত বাটি খুলবেন না। মাঝে মাঝে বাটিটা রোদে দিতে পারেন। এভাবে মাংস অনেক দিন ভালো থাকবে। রান্নার আগে মাংস কুসুম গরম পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে তারপর রাঁধুন। ২. মাংস ভালোভাবে ধুয়ে নিন। পরিমাণমতো হলুদ ও লবণ মাখিয়ে পানি দিয়ে জ্বাল দিন। সেদ্ধ হলে জ্বাল বন্ধ করুন। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস আছে এ রকম স্থানে মাংসের হাঁড়িটা রাখুন। অবশ্যই ঢাকনা দিয়ে রাখবেন। এই মাংস দিনে অন্তত দুবার জ্বাল দিলে এক সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকবে। ৩. মাংসের বড় টুকরা নিন। পানি ঝরিয়ে ফেলুন। চর্বিজাতীয় অংশ বাদ দিন। এবার সেটা লবণ ও লেবুর রস মাখিয়ে কয়েক ঘণ্টা রাখুন। মাংসের মধ্যে লেবুর রস ভালোভাবে ঢুকেছে কি না, খেয়াল করুন। মাংসগুলো এয়ারটাইট বক্সে ভরে সংরক্ষণ করুন। এভাবে বেশ কয়েক দিন ভালো থাকবে। ৪. ফালি করে মাংস কেটে নিন। আদা, রসুন এবং পেঁয়াজবাটা দিয়ে মাংসগুলো ম্যারিনেট করে রাখুন। ডুবো তেলে মাংসগুলো ভেজে ফেলুন। ভাজা মাংস থেকে তেল সরিয়ে নিন। ঢাকনা যুক্ত বাটিতে ভরে মাংস সংরক্ষণ করুন। এই মাংস এক দিন পর পর গরম করতে হবে। এভাবে মাংস ১৫ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত ভালো থাকবে। ৫. চর্বিতে মাংস সংরক্ষণ করা যায়। মাংস মাঝারি সাইজে কেটে পানি ঝরিয়ে নিন। একটি পাত্রে বেশি পরিমাণে চর্বি দিয়ে তাতে মাংস দিন। চর্বি দেওয়ার সময় মনে রাখবেন মাংস যেন চর্বির অন্তত আধা ইঞ্চি নিচে ডুবে থাকে।
১৮ জুন, ২০২৪

কোরবানির মাংস গলায় আটকে যুবকের মৃত্যু
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে কোরবানির মাংস গলায় আটকে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৭ জুন) বিকেল ৪টার দিকে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।   মৃত্যু হওয়া ওই যুবকের নাম ইমরান হোসেন (২৭)। তিনি বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের বিলটাকাপোড়া আবুল কাসেমের ছেলে ও নারুয়া বাজারের ব্যবসায়ী।  স্থানীয় বাসিন্দা রিপন হোসেন বলেন, কোরবানির মাংস খেতে গিয়ে ইমরানের গলায় আটকে যায়। দ্রুত উদ্ধার করে বালিয়াকান্দি উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।    বালিয়াকান্দি থানার এসআই মো. নাসির উদ্দীন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে।
১৭ জুন, ২০২৪

কেজি দরে বিক্রি হয়েছে কোরবানির মাংস
ঈদুল আজহার দিনে কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে কেজি দরে বিক্রি হয়েছে কোরবানির মাংস। সোমবার (১৭ জুন) দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে ভিক্ষুক ও গরিব-অসহায় মানুষ এবং কসাইরা বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে সংগৃহ করা মাংসগুলো এনে এ স্থানে বিক্রি করেছেন। জানা যায়, এখানকার বেশির ভাগ ক্রেতা নিম্ন আয়ের মানুষ যারা কোরবানি দিতে পারেননি। এ ছাড়া এখান থেকে কম দামে মাংস সংগ্রহ করেন শহরতলি ও গ্রাম এলাকার হোটেল ব্যবসায়ীরাও। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে মাংস সংগ্রহ করে কান্দিরপাড় মোড়ে বিক্রি করতে এসেছেন কুমিল্লার লালমাই এলাকার মোহাম্মদ আতিক। তিনি জানান, ভালো মাংস হলে আটশ থেকে এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করা যায়। সর্বনিম্ন পাঁচশ টাকা দরেও এখান থেকে মাংস কিনে নিয়ে যান অনেকে। দাম নির্ভর করে মাংস দেখতে কেমন তার ওপর।  সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা দিনমজুর লাল মিয়া বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা ৩ কেজি মাংস বিক্রি করেছেন তিন হাজার টাকায়। তিনি বলেন, একজন পছন্দ করে মাংস কিনে নিয়ে গেছে। আমার প্যাকেটে ৩ কেজির ওপরে মাংস ছিল। যারা মাংস চেনে তারা টাকা দিয়েই কিনে নেয়। মাংস কিনতে আসা নগরীর পাথুরিয়া পাড়া এলাকার রহিমা বেগম (ছদ্মনাম) জানান, দিনমজুর আর পরিছন্নতাকর্মীর কাজ করে সংসার চলে। কোরবানি দেওয়ার সাধ্য নাই। তাই পরিবারের জন্য দু-এক কেজি মাংস কিনেছি। তাও ছয়শ টাকা করে রেখেছে।  কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা থেকে আসা আমির আলী নামে এক ব্যক্তি মাংস কিনেছেন অন্তত ১০ কেজি। হাড়, মাংস, চর্বি মিশ্রিত মাংস বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিভিন্ন দামে কিনেছেন বলে জানান তিনি। আমির আলী বলেন, কিছু মাংস বাসায় নিয়ে যাব। বাকিগুলো এলাকার হোটেলে বিক্রি করে দেব।      মাংস বিক্রেতা পেশাদার কসাই গফুর মিয়া জানান, নগরীর কান্দিরপাড়ে কসাইরাও মাংস আনে, দানের মাংসও বিক্রি হয়। ঈদের দিন অন্তত চার থেকে পাঁচশ কেজি মাংস এখানে বিক্রি হয়। এখানে কোনো নির্দিষ্ট দাম নাই। ইচ্ছামতো দামে মাংসের কেনাকাটা চলে এখানে।
১৭ জুন, ২০২৪

তথ্যমন্ত্রীর পক্ষে কোরবানির মাংস বিতরণ
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন এতিমখানা এবং দুস্থদের মধ্যে কোরবানির মাংস বিতরণ করা হয়েছে। তথ্যমন্ত্রীর পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এ মাংস দেওয়া হয়। গতকাল শনিবার উপজেলার মরিয়মনগর চৌমুহনী এলাকায় কোরবানির মাংস বিতরণ করেন মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব ইমরান শরীফ ইমু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মরিয়ম ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক হিরু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শওকত হোসেন সেতু, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি পারভেজ হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলী শাহ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক মুমিনুল হক ময়ুর, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক এমরান হোসেন, দপ্তর সম্পাদক নূর হোসেন জয়, সদস্য আরিফুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমাম উদ্দিন বাদশা, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. ইমতিয়াজ, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হোসেনসহ ইউনিয়ন-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতারা। তথ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এমরুল করিম রাশেদ জানান, মাংস বিতরণের জন্য উপজেলার বিভিন্ন জনাকীর্ণ স্থান পোমরা, পদুয়া ইউনিয়নের সোমবাইজ্জা হাট ও দশমাইল মুক্তিযোদ্ধা বাজার, রাণীরহাট, ধামাইরহাট, মরিয়মনগর চৌমুহনী, পৌরসভার মোহাম্মদপুর, সরফভাটা ইত্যাদি চত্বরকে নির্ধারণ করা হয়। পরে সেখানে গরু কোরবানি করে মাংস স্থানীয় দুস্থ ও অসহায়দের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
০২ জুলাই, ২০২৩
X