কোটা আন্দোলন / শেকৃবি শিক্ষার্থীদের আগারগাঁও মোড়ে অবরোধ
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি)। বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।‌ এ সময় মিরপুর-ফার্মগেট এবং মহাখালী-শিশুমেলা সড়ক দুই ঘণ্টার বেশি সময় অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। ফলে এ রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে প্রায় ২ ঘণ্টা। পরে বিকেল ৫টার পরে অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে। রোববার (৭ জুলাই) দুপুর ৩টা পরপর বিশ্ববিদ্যালয়টির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান-মিছিল দিয়ে আগারগাঁও আট রাস্তার মোড়ে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। পরে শত শত শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে ওঠে।  শিক্ষার্থীদের দাবি, ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা, ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে মেধাভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া।
১০ মিনিট আগে

কোটা আন্দোলন নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
সরকারি চাকরিতে বেতন কাঠামোর ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির) মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহালে উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতিবাদে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের পক্ষ থেকে ঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির কারণে রাজধানী ঢাকায় এক অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এমতবস্থায়, এই আন্দোলনের তিন সমন্বয়কের সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেছেন বলে জানা গেছে। রোববার (৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টায় এ তথ্য কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব আল ইসলাম। তিনি বলেন, আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহর সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর মহল। তারা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা শাহবাগে অবস্থান করব।
৩৬ মিনিট আগে

কোটাবিরোধী আন্দোলনে সায়েন্সল্যাবে আটকা শতাধিক গাড়ি
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটাপদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহালে উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতিবাদে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এর ফলে দীর্ঘ দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সায়েন্সল্যাব মোড়ে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে ওই মোড়ের চতুর্দিকে আটকা পড়েছে কয়েকশ গাড়ি। তৈরি হয়েছে তীব্র যানজট। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যক্তিগত ও গণপরিবহনের যাত্রীরা। রোববার (৭ জুলাই) দুপুর ১টা ৪০ মিনিট থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। সড়ক অবরোধের কারণে তৈরি হওয়া যানজটে অচল হয়ে পড়েছে নিউমার্কেট, নীলক্ষেত ও সায়েন্সল্যাবসহ আশপাশের গোটা এলাকা। নীলক্ষেত থেকে সায়েন্সল্যাব অভিমুখী সড়ক, শাহবাগ থেকে সায়েন্সল্যাব অভিমুখী সড়ক, ধানমন্ডি এবং মোহাম্মদপুর থেকে সায়েন্সল্যাবমুখী সব সড়কেই তৈরি হয়েছে তীব্র যানজট। সবগুলো সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। পুরো কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীদের ‘কোটা প্রথা বাতিল চাই’; ‘আঠারোর পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে’; ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’; ‘৫২ এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’; ‘ছাত্রসমাজের একশন ডাইরেক্ট একশন’; ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘মেধা যার, চাকরি তার’; ‘সারা বাংলায় খবর দে কোটাপ্রথা কবর দে’; ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘সংবিধানের মূলকথা সুযোগের সমতা’; ‘লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’; ‘৭১ এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’; ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’; ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি সংবলিত স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গার মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে রাস্তা অবরোধও করছেন আন্দোলনকারীরা। বিশেষ করে, শাহবাগ মোড়ে ঢাবির শামসুন্নাহার হল, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল, বেগম রোকেয়া হল, সুফিয়া কামাল হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল, মাস্টারদা সূর্যসেন হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, বিজয় একাত্তর হল, কবি জসীম উদ্দিন হল, এ এফ রহমান হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও জগন্নাথ হল; চানখারপুলে ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল, ফজলুল হক মুসলিম হল, অমর একুশে হল, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ও শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ এবং সায়েন্সল্যাবে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ ও গার্হস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে বলে জানা গেছে। কোটাবৈষম্য নিরসন এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি জানানো হয়েছে। সেগুলো হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; ১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে; সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।  প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ কয়েকটি দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা আন্দোলন করছেন। যদিও স্বাধীনতার পর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণির চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা চলে আসছিল। একপর্যায়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ২০১৮ সালের অক্টোবরে নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। 
২ ঘণ্টা আগে

ঢাবি এলাকায় পুরোদমে চলছে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি 
সরকারি চাকরিতে বেতন কাঠামোর ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির) মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটাপদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহালে উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতিবাদে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের পক্ষ থেকে ঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু হয়ে পুরোদমে চলছে। রোববার (৭ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে আন্দোলনকারীরা জমায়েত হয়ে সেখান থেকে সোয়া ৩টায় বিশাল মিছিল বের করেন। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হয়ে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গার মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে রাস্তা অবরোধও করছেন আন্দোলনকারীরা। বিশেষ করে, শাহবাগ মোড়ে ঢাবির শামসুন্নাহার হল, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল, বেগম রোকেয়া হল, সুফিয়া কামাল হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল, মাস্টারদা সূর্যসেন হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, বিজয় একাত্তর হল, কবি জসীম উদ্দিন হল, এ এফ রহমান হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও জগন্নাথ হল; চানখারপুলে ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল, ফজলুল হক মুসলিম হল, অমর একুশে হল, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ও শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ এবং সায়েন্সল্যাবে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ ও গার্হস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে বলে জানা যায়। পুরো কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীদের ‘কোটা প্রথা বাতিল চাই’; ‘আঠারোর পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে’; ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’; ‘৫২ এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’; ‘ছাত্র সমাজের একশন ডাইরেক্ট একশন’; ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাই নাই’; ‘মেধা যার, চাকরি তার’; ‘সারা বাংলায় খবর দে কোটাপ্রথা কবর দে’; ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘সংবিধানের মূলকথা সুযোগের সমতা’; ‘লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’; ‘৭১ এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’; ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’; ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি সংবলিত স্লোগান দিতে দেখা যায়। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচির শেষে আজকের এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, রোববার বিকেল ৩টা থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। শুধু শাহবাগ মোড় নয়, সাইন্সল্যাব, চানখারপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ীসহ ঢাকার প্রতিটি পয়েন্ট অবরোধ করা হবে। এসব পয়েন্টে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা নেমে আসবেন এবং বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি সফল করবেন। আর ঢাকার বাইরে যেসব শিক্ষার্থীরা আছেন আপনারা জেলায় জেলায় মহাসড়কগুলো অবরোধ করবেন। তিনি বলেন, সরকার মনে করেছে আমরা দুই-তিনদিন রাস্তা অবরোধ করে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে যাব। সরকারের এই ধারণা যে ভুল সেটি আমাদের প্রমাণ করে দিতে হবে। আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি প্রয়োজনে আমরা হরতাল দিতে বাধ্য হবো। আন্দোলনকারীরা বলেন, কোটাবৈষম্য নিরসন এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি জানাই। সেগুলো হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; ১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে; সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
২ ঘণ্টা আগে

কোটা সংস্কারের দাবিতে যশোর-চৌগাছা সড়কে বাংলা ব্লকেড
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী ‘বাংলা ব্লকেড’-এর সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এর আগে ৭ জুলাই থেকে ১৩ জুলাই সব প্রকার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে তারা। রোববার (৭ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে যশোর-চৌগাছা স্বাধীনতা সড়ক অবরোধ করে কোটা আন্দোলনকারী।  আন্দোলনকারীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে এমন কোটা প্রথা মানা যায় না। আমরা চাই অবিলম্বে কোটা সংস্কারের মাধ্যমে সব ক্ষেত্রে মেধাবীদের সুযোগ করে দেওয়া হোক। দেশব্যাপী বাংলা ব্লকেডের সঙ্গে আমরা একাত্মতা প্রকাশ করে সড়ক ব্লক করে রেখেছি।  এ সময় শিক্ষার্থীরা কোটার বিরুদ্ধে  সম্মিলিত কণ্ঠে ‘কোটা না মেধা? মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘আঠারোর পরিপত্র, পুনর্বহাল করতে হবে’, ‘কোটাপ্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ৫ জুলাই জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখ সড়কে বিক্ষোভ করে যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা এবং রাতে শহীদ মিনার চত্বরে মশাল জ্বালিয়ে মিছিল করে। পরের দিন ৬ জুলাই সড়ক অবরোধ করে মিছিল করে।
৩ ঘণ্টা আগে

কোটা সংস্কারের পরিপত্র বহালের দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালের দাবিতে চট্টগ্রামে শিক্ষার্থী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে নগরের ষোল শহরের ২ নম্বর গেটে এই সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকুরিতে সকল কোটা বাতিল হয়। সম্প্রতি এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সেই পরিপত্রটি বাতিল করেন উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের এমন রায়ের পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবারও কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও চট্টগ্রামের সমন্বয়ক আবুল ফয়েজ মামুন বলেন, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করেন। কিন্তু ২০২৪ সালে এসে উচ্চ আদালত সে পরিপত্র বাতিল করে ছাত্র সমাজের মধ্যে আবারও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। যে বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই বৈষম্য দূর করার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ জেগে উঠেছে। তিনি আরও বলেন, তাদের দাবি মূলত চারটি- ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে সব গ্রেডে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কোটা রেখে কোটা পুনর্বণ্টন বা সংস্কার; চাকরির পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা; কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া। শিক্ষার্থী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল থেকে আগামীকাল কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী সকল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলো ২ নম্বর গেটে সড়কে অবস্থান করছে।
১৬ ঘণ্টা আগে

মেধাবীদের বঞ্চিত করতেই কোটা চালু
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, ক্ষমতাসীন সরকার মেধাবীদের বঞ্চিত করতেই কোটা পদ্ধতি বহাল রেখেছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে পদদলিত করতেই তার ছাত্রসহ সব নাগরিকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দেশকে রক্ষা করতে এবং জনগণের পছন্দের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে গণআন্দোলনের বিকল্প নেই। গতকাল শনিবার খিলগাঁও পূর্ব থানা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত ষান্মাসিক রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খিলগাঁও পূর্ব থানা আমির আব্দুর রহমান সাজুর সভাপতিত্বে সম্মেলন পরিচালনা করেন সেক্রেটারি আ জ ম ফারুক। বক্তব্য দেন খিলগাঁও জোন পরিচালক মাওলানা আবু ফাহিম, খিলগাঁও পশ্চিম থানা আমির আব্দুল্লাহ আলামিন, খিলগাঁও উত্তর থানা আমির আসিফ আদনান, খিলগাঁও মধ্য থানা আমির মাহামুদুর রহমানসহ থানা জোনের বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নেতারা। এ ছাড়া যাত্রাবাড়ী পূর্ব থানার উদ্যোগে আয়োজিত দিনব্যাপী অগ্রসর কর্মী শিক্ষাশিবিরেও প্রধান অতিথি ছিলেন ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। যাত্রাবাড়ী পূর্ব থানা আমির শাহজাহান খানের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের পরিচালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মুজাহিদুল ইসলাম, থানা কর্মপরিষদ সদস্য কবির হোসেন মোল্লা, মোজাম্মেল হক পাটোয়ারী, মুজিবুল হক জামিল প্রমুখ।
১৭ ঘণ্টা আগে

কোটা ও পেনশন স্কিম বাতিল দাবি যৌক্তিক : ফখরুল
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি এ-সংক্রান্ত দুই আন্দোলনকে যৌক্তিক ও ন্যায়সংগত মন্তব্য করে তাতে সমর্থন জানিয়েছেন তারা। গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় এ অবস্থান জানান, যা নিয়ে সম্প্রতি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, একবিংশ শতাব্দীর এ সময়ে এসে প্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক বৈশ্বিক ব্যবস্থায় টিকে থাকতে হলে মেধাভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। তাই সাধারণ ছাত্র সমাজের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবির সঙ্গে আমরা একমত। আমরা আশা করি, সরকার তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে; আমরা এ সমস্যার সমাধানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতিবাদ ও আন্দোলনে সমর্থন করছি এবং অবিলম্বে এ পেনশন স্কিম প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। শিক্ষকদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, শিক্ষকদের ব্যাপারটা সবচেয়ে সেনসেটিভ এজন্য যে, তাদের তো অন্য কোনো সোর্স অব ইনকাম নেই। অন্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকতে পারে, শিক্ষকদের তো সেটা নেই। সেজন্য তাদের শুধু বাধ্য হয়ে এ বেতনের ওপরে নির্ভর করতে হয়। এজন্য তারা মনে করে যে, এটা তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের মতো ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা যদি কখনো সরকারে যাই, এটা (প্রত্যয় স্কিম) বাতিল করব। কোটা বড়জোর ১৫ ভাগ হতে পারে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা মনে করি, কোটা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কিছুটা থাকতে পারে, প্রতিবন্ধী আর নৃগোষ্ঠীর জন্য; এ রকম পিছিয়ে পড়ার যারা আছে.... নট ৫৬ ভাগ। এটা বড়জোর পাঁচ থেকে ১৫ শতাংশ হতে পারে। মির্জা ফখরুল বলেন, কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাস্তায় ছাত্রদের আন্দোলনে আমাদের সম্পৃক্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা দেওয়া হয়। রাষ্ট্রীয় আচার-অনুষ্ঠান, জাতীয় দিবসগুলো এমনকি তাদের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মানের সঙ্গে দাফন করা হয়। এগুলো তাদের প্রাপ্য। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতাসহ নানা সুবিধা আছে। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান অঙ্গীকার ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করা, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ বিনির্মাণ করা। তবে ৫৬ ভাগ কোটা ব্যবস্থা বহাল রেখে প্রযুক্তি ও মেধানির্ভর বিশ্বব্যবস্থার জাতি হিসেবে টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। মির্জা ফখরুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদান, পরীক্ষা গ্রহণসহ সব ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ রেখেছেন। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যেহেতু দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চরম সংকটাপন্ন, সেহেতু অন্য খাতসহ শিক্ষকদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে এ পেনশনের টাকা তুলে নিতে চাচ্ছে সরকার। আমরা মনে করি, আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে এ স্কিম চালু সরকারের দুর্বল আর্থিক খাত মেরামতের একটা কৌশল। এ পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকদের আন্দোলন অবশ্যই যৌক্তিক ও সমর্থনযোগ্য। তিনি বলেন, সরকারের অব্যবস্থাপনাকে পুঁজি করে শাসকগোষ্ঠীর আর্শীবাদপুষ্ট একশ্রেণির ব্যবসায়িক লুটেরা এবং কিছু সরকারি দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা সীমাহীন লুটপাট করছেন। ব্যাংকসহ আর্থিক খাত সম্পূর্ণ ধ্বংস করে তারা বিদেশে অর্থ পাচার করছে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সেরকম পরিস্থিতিতে নাগরিকরা সারা জীবনের অর্জিত সম্পদ কোন ভরসায় এ নতুন লুটপাট স্কিমে বিনিয়োগ করবে? যা তারা প্রত্যাখ্যান করছে।
১৭ ঘণ্টা আগে

কোটা আন্দোলন করায় ঢাবি শিক্ষার্থীকে শাস্তি
চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহশিক্ষামূলক বিতর্ক সংগঠন সোসিওলজিক্যাল ডিবেটিং সোসাইটি (এসডিএস)-এর সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসাইনকে অব্যাহতি দিয়ে শাস্তি প্রদান করেছেন সংগঠনটির মডারেটর অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন। শনিবার (৬ জুলাই) সংঘটিত এই ঘটনার প্রতিবাদে সংগঠনটিতে থাকা ২০২১-২২ সেশনের ২২ জন বিতার্কিক একযোগে পদত্যাগ করেছেন। এ বিষয়ে সোসিওলজিক্যাল ডিবেটিং সোসাইটি (এসডিএস)-এর অব্যাহতি পাওয়া সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসাইন বলেন, আমি কোটা সংষ্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় এবং ফেইসবুকে কোটা আন্দোলন নিয়ে পোস্ট করায় আমাকে সংগঠন থেকে অব্যহতি/বহিষ্কার করা হয়েছে৷ সংগঠনের মডারেটর ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন স্যার একতরফাভাবে কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাছাড়া, আদালত অবমাননার দায়ে মামলা দেওয়ার হুকমি পর্যন্ত করেছেন। তিনি বলেন, আমি এসব হুমকি এবং বহিষ্কারাদেশের কারণে একটুও বিচলিত বা ভীত নই। আমি এবং আমরা সহযোদ্ধারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কোটা সংষ্কার আন্দোলন চালিয়ে যাব। সংগঠনটির উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ বলেন, যে বিতর্কের প্ল্যাটফর্ম পরমতসহিষ্ণুতার শিক্ষা দিতে পারে না, যেখানে ছাত্রদের যৌক্তিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য একজন দায়িত্বশীলকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়, সেই বিতর্কের প্ল্যাটফর্ম থেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৬ তম ব্যাচ তথা ২০২১-২২ সেশনের বিতার্কিকরা একযোগে পদত্যাগ করেছে। পদত্যাগকারী বিতার্কিকরা হলেন আতিক শাহরিয়ার (উপদপ্তর সম্পাদক), তানভীর আহমেদ রিফাত (উপঅর্থ সম্পাদক), আবদুল্লাহ আল ফাহাদ  (উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক), ইফফাত মেহেরাজ (উপতথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক), উমা রানী (উপশিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক), সুমাইয়া আক্তার (উপযোগাযোগ সম্পাদক), ফাতিমা তুন নাহার ঐশী (উপপ্রশিক্ষণ সম্পাদক), সবুজ ইসলাম (উপপাঠাগার সম্পাদক), রিমন আকন্দ (উপঅনুষ্ঠান ও আপ্যায়ন সম্পাদক), শাহরিন জান্নাত নীরা (উপসাহিত্য সম্পাদক), রাফিয়া সানজিদা (উপসাংস্কৃতিক সম্পাদক), সাবিকুন্নাহার ইরিন (যুগ্ম আহবায়ক)। ইংরেজি বিতর্ক বিষয়ক উপকমিটি  নুসরাত জাহান নূহা (কার্যকরী সদস্য), নোশিন তাসনিম বাঁধন (যুগ্ম আহবায়ক), তাহসিন মাহতাব (সদস্য), মুনশি মুনাজ্জাহ জান্নাত (সদস্য), মাসউদূল বারী (সদস্য), জান্নাতুল আদনিন জিনিয়া (সদস্য), আবদুল্লাহ হিল কাফী (সদস্য), সামী সাঈদ দীপ (সদস্য), মিনহাজুল হাসান শাওন (সদস্য), সিরাজুম মুনিরা (সদস্য)। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ত্রাসের সংস্কৃতি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমেও আবাদ হয় তখন পুরো দেশের অবস্থা কল্পনা করতেও ভয় হয়। শিক্ষকের কাজ শিক্ষার্থীদের মননশীল করে, চক্ষুসমান করে, সত্যকে সত্য, অন্যায়কে অন্যায়  বলবার মত সাহসী করে গড়ে তোলা। কিন্তু শিক্ষক যখন দুর্বৃত্তায়নের চর্চা করে, পাড়ার মাস্তানের মতো করে হুমকি দেয়, পোস্ট শেয়ার না করলে রেজাল্টে দেখে নেওয়া হবে, বিতর্কিত কার্যকলাপে (কোটা আন্দোলন) অংশ নেয়ার জন্য বিভাগের বিতর্ক ক্লাবের সম্পাদকে বহিষ্কার করে এবং অন্যরা অংশ নিলে বিপদ হবে বলে হুঁশিয়ারি করে, তখন শিক্ষককে শিক্ষক বলতে আমার লজ্জা করে, তখন শিক্ষককে আমার মনে হয় রাজনৈতিক ক্যাডার। এ ছাড়াও অভিযোগ উঠেছে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষক অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে খোলা গ্রুপগুলোতেও আদালত অবমাননা করে কোটা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পরিণাম সম্পর্কে হুশিয়ারি প্রদান করেছেন। এ সংক্রান্ত কিছু স্ক্রিনশট কালবেলার হাতে এসেছে।  ‘৪০০ পলিটিকাল সোশিওলজি’ নামক মেসেঞ্জার গ্রুপে বার্তা প্রদানের এক স্ক্রিনশটে দেখা যায়- অধ্যাপক জামাল লিখেছেন, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার জন্য ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদকের পদ হতে মোশররফকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। নতুন সাধারণ সম্পাদক সারাফ আফ্রা মৌ। তিনি লেখেন, যারাই সমাজবিজ্ঞান বিভাগে বিতর্কিত-বিভাজিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হবেন, তারা কখনই ছাত্রছাত্রীদের সার্বজনীন কমিটিসমূহের নেতৃত্বে আসতে পারবেন না। ক্লাস ক্যাপ্টেনসহ এ জাতীয় কোনো ধরনের নেতৃত্বে আসতে পারবেন না। যারা বাইরের ঘটনাকে নিয়ে বিভাগের সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের কারণ হবে, তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অতীতেও এগুলো মোকাবিলা করা হয়েছে, এবারও মোকাবেলা করা হবে। আশা করি সংশ্লিষ্ট সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। আরেক মেসেজে তিনি লেখেন, আদালত অবমাননা কর্মকান্ড করতে গিয়ে কেউ যদি মামলা-হামলা-গ্রেপ্তার-জেল-শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হন, তখন কোনো শিক্ষক বা বিভাগের তরফ থেকে কোনো ধরনের সাহায্য সহযোগিতা আসবে না। সর্বশেষে তিনি সংবিধানের কিছু নীতি তুলে ধরে এক মেসেজে লেখেন, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রপাগান্ডা বা প্রচারণার দণ্ড২১।  ১. যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রপাগান্ডা ও প্রচারণা চালান বা উহাতে মদদ প্রদান করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।  ২. যদি কোনো ব্যক্তি উপধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ১০ (দশ) বছর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।  ৩. যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে, বা ৩ (তিন) কোটি টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। এ প্রসঙ্গে অভিযোগ করে বিভাগটির ১৩তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী কালবেলাকে বলেন, জামাল স্যারের কোর্স শেষ হওয়া সত্ত্বেও উনি ওনার কোর্সের জন্য তৈরিকৃত মেসেঞ্জার গ্রুপে বিভিন্ন ধরনের বার্তা প্রদান করেন এবং শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফেইসবুক পোস্ট শেয়ার করতে বলেন। বর্তমান চলমান কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা যেন অংশগ্রহন না করে সেজন্য তিনি বিভিন্ন ধরনের বার্তা দিচ্ছেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে ভীতি ছড়াচ্ছেন। ১৪তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, ৭ম সেমিস্টারে জামাল স্যারের ক্লাস শুরু হওয়ার পর থেকেই ওনার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক কার্যকলাপে অংশ না নিলে  নম্বর দিবেন না বলে হুমকিধামকি দিতেন। ইতোপূর্বেও চতুর্থ সেমিস্টারে উনি সোশ্যাল স্ট্যাটিসটিকস কোর্সে উনার পছন্দের স্টুডেন্টদের ভালো মার্কস দিতেন। সম্প্রতি কোটা আন্দোলনে অংশ যারা অংশ নিবে তাদেরও বিপদ হবে বলে সতর্ক করেন তিনি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীনকে মুঠোফোনে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশন চলাকালে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার যৌক্তিকতা বোঝাতে পবিত্র কোরআনের সুরা আনফালের একটি আয়াতকে ‘প্রমাণ’ হিসেবে দেখিয়ে বক্তব্য দেন ঢাবির এই অধ্যাপক। এসময় তিনি ২০১৮ সালে সংগঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সমালোচনা করেন। কোটাবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়দের ‘স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের কর্মী বলেও আখ্যা দেন তিনি।
২৩ ঘণ্টা আগে
X