ভূমি সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ
সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আলমগীর আলমের বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়েও সঠিক সময়ে না করে হয়রানির অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। শুক্রবার (২৮ জুন) অভিযোগ প্রসঙ্গে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ভুক্তভোগী হলেন, ওই ইউনিয়নের খেরুদিয়া গ্রামের আবদুর রহমান বকাউলের স্ত্রী আমেনা বেগম লাকী। এ ঘটনায় গত সোমবার চাঁদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর তিনি লিখিত অভিযোগও করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তার স্বামীর নামীয় ৯ শতক জমি খাজনা দাখিল অনলাইন করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান। কিন্তু ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আলমগীর আলম কাজটি নিয়ে টালবাহানা করেন। তিনি এই কাজের জন্য ওই কর্মকর্তাকে দুই হাজার ৫০০ টাকা দিলেও সেবা পাননি। পরবর্তী সময়ে গেলে আলমগীর আলম ও অফিসের ঝাড়ুদার তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এসব কারণে তিনি প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছেন।  আমেনা বেগম বলেন, এই কর্মকর্তার কাছে সেবার জন্য গেলে সবাইকে হয়রানি করেন। তিনি প্রকাশ্যে বলেন, সরকার যে কয় টাকা বেতন দেয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। টাকা না দিলে আমি কোনো কাজ করব না। আমি নিজে একজন ভুক্তভোগী এবং যারা তার কাছে গিয়ে হয়রানির শিকার হন, সবার দাবি তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর আলম বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সত্যতা যাচাই করছে। অভিযোগের আলোকে আমি ও আমেনা বেগম লাকী বক্তব্য দিয়েছি। আপাতত এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তিনি আরও বলেন, সেবা নিতে আসা আমেনা বেগম লাকী যেসব অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়। উনি যখন আমার কাছে সেবা নিতে এসেছেন। আমরা তখন অফিসের নিজস্ব কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আর ওনার কাগজপত্র ও মোবাইল নম্বর নিয়ে সমস্যা ছিল। সে জন্য কাজটি করতে দেরি হয়েছে। তবে আমি ওনার কাজ সম্পন্ন করেছি। এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগকারী আমেনা বেগম লাকী বলেছেন তাকে হয়রানি ও নামজারির জন্য অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছে। আর আলমগীর আলম তা অস্বীকার করেছেন। মূল সত্যটা বেরিয়ে না আসায় এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমি তাদের বক্তব্যের বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানাব। এরপর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২৮ জুন, ২০২৪

ভারতে লোকসভা নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতি / শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি হয়েছে নির্বাচন ঘিরে
ভারতে লোকসভা নির্বাচন ঘিরে এযাবৎকালের ‘সবচেয়ে বড় শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির’ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এ ‘কেলেঙ্কারির’ সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জড়িত বলে ইঙ্গিত দেন তিনি। একই সঙ্গে বিষয়টি তদন্তে একটি যৌথ পার্লামেন্টারি কমিটি (জেপিসি) গঠনের দাবি জানান। খবর এনডিটিভির। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন পাঁচ কোটি পরিবারকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন? এমন পরামর্শ দেওয়া কি তাদের কাজ? কেন তারা এমন এক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মালিকানাধীন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিলেন, শেয়ারবাজারে কারসাজির অভিযোগে যে গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (এসইবিআই)?’ গত ৪ জুন ভারতে লোকসভা নির্বাচনে ফল ঘোষণা করা হয়। এর আগে ১ জুন শেষ হয় সাত দফায় ভোট গ্রহণ। সেদিনই ভোটের বুথফেরত জরিপ প্রকাশ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সংস্থা। তাতে আভাস দেওয়া হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি লোকসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে। তবে প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে জোট সরকার গঠনের পথে হাঁটতে হচ্ছে দলটি। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি চার শতাধিক আসন পাবে—এমন আশার কথা শুনিয়ে আসছিলেন মোদিও। নির্বাচন চলাকালে গত ২৩ মে নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে, ৪ জুন বিজেপি রেকর্ডসংখ্যক আসন পাবে। আর শেয়ারবাজারের সূচকও রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছাবে। এর আগে ১৩ মে অমিত শাহ এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমার মতে, ৪ জুনের আগে শেয়ার কিনুন। শেয়ারবাজারের সূচক (এর পরে) বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে।’ শেয়ারবাজারের এ ‘কেলেঙ্কারিতে’ ভারতের বিনিয়োগকারীরা ৩০ লাখ কোটি রুপি হারান দাবি করে রাহুল বলেন, ‘বিজেপি, ভুয়া বুথফেরত জরিপকারী ও সন্দেহজনক বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যকার সম্পর্কটা কী? এসব বিদেশি বিনিয়োগকারী বুথফেরত জরিপ ঘোষণার এক দিন আগে বিনিয়োগ করেছিল এবং পাঁচ কোটি পরিবারের ক্ষতি করে বিপুল মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছে। জেপিসিকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে হবে।’
০৮ জুন, ২০২৪

বিয়ের প্রলোভনে অনৈতিক সম্পর্ক, পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক তৈরির অভিযোগে হীরন্ময় সরকার নামে পুলিশের এক পরিদর্শককে (তদন্ত) প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি বাগেরহাটের মোংলা থানায় কর্মরত ছিলেন। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান। ভুক্তভোগী ওই নারী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) চাকরির সুবাধে যশোর থাকার সময়ে ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় হীরন্ময় সরকারের। পরিচয় থেকে হয় প্রেম। এরপর বিয়ে করার প্রলোভনে তারা শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এইভাবে কেটে যায় প্রায় চার বছর। এরই মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ওই নারী। পরে জোরপূর্বক গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করা হয় বলে অভিযোগ ৩২ বছর বয়সী ওই নারীর। যদিও এ ঘটনার পর বিয়ের চাপ দিলে হীরন্ময় সরকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেন ভুক্তভোগীর সঙ্গে। গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিষয়টি মোংলা থানার ওসি ও সহকারী পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন তিনি। পরে শনিবার (১১ মে) বাগেরহাট পুলিশ সুপার মো. আবুল হাসনাত বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দাখিল করেন ওই নারী। ওই নারীর অভিযোগ, নিজের ধর্ম পরিচয় লুকিয়ে এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন হীরন্ময় সরকার। এরপর এ ঘটনায় দৈনিক কালবেলা এবং একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে তোলপাড় শুরু হয়। সোমবার (১৩ মে) দুপুরে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে অভিযুক্ত হীরন্ময় সরকারকে মোংলা থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। যেহেতু হীরন্ময়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধে অভিযোগ দাখিল করেছেন ওই নারী। বিষয়টি তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে পুলিশের এই কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত হতে পারেন।
১৩ মে, ২০২৪

হলমার্কের তানভীর ও তার স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ ও তার স্ত্রী জেসমিন ইসলামসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেম এ রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি তানভীর মাহমুদ ও জেসমিন ইসলামকে ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এছাড়া প্রতারনার আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২৫ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির সহকারী উপমহাব্যবস্থাপক সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মতিন, জেনারেল ম্যানেজার তুষার আহম্মেদ, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, প্যারাগণ গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি আব্দুল মালেক এবং টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান। যাবজ্জীবন দণ্ডের পাশাপাশি তাদের ১০ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। প্রতারণরা আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি দুই লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। রায়ে সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ সাত কর্মকর্তা-প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, সাবেক জিএম ননী গোপাল নাথ, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক জিএম মীর মহিদুর রহমান, ডিএমডি মাইনুল হক, উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. সফিজউদ্দিন আহমেদ, এজিএম কামরুল হাসান খান ও সোনালী ব্যাংক ধানমণ্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেছা মেরীকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। আর প্রতারণার আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের কারাদণ্ড, দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এছাড়া সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকারকে এক ধারায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছর। আরেক ধারায় দুই বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এর আগে ২৮ জানুয়ারি আদালত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন। তবে ওইদিন দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রায় থেকে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে পাঠান। পরে গত ১২ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য ১৯ মার্চ দিন ধার্য করেন।   মামলার সূত্রে জানা গেছে, ভুয়া ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের হিসাবে সুতা রপ্তানির নামে ৫২৫ কোটি ৬২ লাখ ৯২ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের সুতা রপ্তানি করা হয় বলে নথিপত্রে দেখানো হয়। ওই হিসাবে পুরো অর্থ জমা করা হলে তা থেকে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা হলমার্কের আরেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান অ্যাপারেল এন্টারপ্রাইজের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়, যা পরে তানভীর ও তার স্ত্রী তুলে নেন। ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থের অপব্যবহার এবং পাচারের অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলা করে দুদক। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা মামলার অভিযোগ গঠন করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এ বদলির আদেশ দেন।
১৯ মার্চ, ২০২৪

কেলেঙ্কারি নথিতে স্টিফেন হকিং
যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত নারী নিপীড়নকারী জেফরি এপস্টেইন-সংক্রান্ত মার্কিন আদালতের নথিপত্রে পদার্থবিদ স্টিফেন হকিংয়েরও নাম উঠে এসেছে। এ নথিতে দেখা গেছে, হকিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভুল প্রমাণ করতে এপস্টেইন পুরস্কার প্রস্তাব করেছিলেন। ২০১৫ সালে এপস্টেইনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভার্জিনিয়া গুইফরি নামে এক নারী। তার অভিযোগ, যৌন ব্যবসার কাজে লাগানোর জন্য আরও কয়েকজন অল্প বয়সী নারীর সঙ্গে তাকেও পাচার করেছিলেন জেফরি এপস্টেইন ও তার সহযোগী জিসলেন ম্যাক্সওয়েল। ওই সময় তিনি কিশোরী ছিলেন বলে জানান ভার্জিনিয়া। ২০১৯ সালে যৌন ব্যবসার নানা অভিযোগের বিচার শুরুর আগে কারাগারে আত্মহত্যা করেন এপস্টেইন। গত ডিসেম্বরে নিউইয়র্কের একটি আদালতের বিচারক এপস্টেইনের মামলার নথিগুলো প্রকাশের অনুমতি দেন। এ নথিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অ্যান্ড্রুসহ খ্যাতনামা ব্যক্তিদের নাম আসায় শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, বিশ্বজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। পিপল সাময়িকীতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নথিতে পদার্থবিদ স্টিফেন হকিংয়ের নামও এসেছে। নথি অনুযায়ী, এপস্টেইন ২০১৫ সালে তার সহযোগী জিসলেন ম্যাক্সওয়েলকে একটি ইমেইল পাঠিয়েছিলেন। তিনি তাতে লিখেছিলেন, কেউ যদি হকিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভুল প্রমাণ করতে পারে, তবে তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে। ইমেইল থেকে জানা গেছে, হকিংয়ের বিরুদ্ধে এপস্টেইনের ব্যক্তিগত দ্বীপে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এ অভিযোগ ভুল প্রমাণের চেষ্টা করছিলেন এপস্টেইন। এটা উল্লেখ করা জরুরি, সুনির্দিষ্ট করে হকিংকে নিয়ে ভার্জিনিয়া গুইফরি কখনো সরাসরি অভিযোগ করেননি। তা ছাড়া হকিংকে কখনো কোনো যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়নি। ২০০৬ সালের মার্চে একটি বিজ্ঞানবিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিতে হকিং এপস্টেইনের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ক্যারিবীয় দ্বীপ সফর করেছিলেন। তখন অনুষ্ঠানের নানা ছবিতে দেখা গেছে, এপস্টেইনের দ্বীপে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন হকিং। তার কিছুদিন আগেই এপস্টেইনের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো অভিযোগ উঠেছিল। তবে নতুন প্রকাশিত ইমেইলে এমন কোনো আলামত নেই, যার ভিত্তিতে হকিংকে দোষী বলা যাবে। একই ইমেইলে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে ওঠা আলাদা একটি অভিযোগের প্রসঙ্গও উল্লেখ করা হয়েছিল। সেখানেও এপস্টেইন দাবি করেছেন, ক্লিনটনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। ভার্জিনিয়া গুইফরি অভিযোগ করেছিলেন, জেফরি এপস্টেইনের নির্দেশে বিভিন্ন সময় তাকে কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে হয়েছিল। তাদেরই একজন ব্রিটিশ প্রিন্স অ্যান্ড্রু। নিউইয়র্কের অভিজাত এলাকা ম্যানহাটানে এপস্টেইনের একটি বাসায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিন আইল্যান্ডে এপস্টেইনের ব্যক্তিগত দ্বীপে কিশোরী বয়সে প্রিন্স অ্যান্ড্রু তাকে নিপীড়ন করেছেন, এমনটাই অভিযোগ ভার্জিনিয়ার। যদিও প্রিন্স অ্যান্ড্রু তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করেছেন। জানিয়েছেন, ভার্জিনিয়া গুইফরির সঙ্গে কোনো ‘ভুল কাজ’ করেননি তিনি। এমনকি ভার্জিনিয়ার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্কও ছিল না। ২০২২ সালে নারী পাচার ও যৌন ব্যবসার অভিযোগে জেফরি এপস্টেইনের সহযোগী জিসলেন ম্যাক্সওয়েলের ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়।
০৮ জানুয়ারি, ২০২৪

ডোপ কেলেঙ্কারিতে ফেঁসে যাচ্ছেন বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার
সব ধরনের ফুটবল থেকে চার বছরের জন্য নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার পল পোগবা। ফরাসি মিডফিল্ডারের ডোপ কেলেঙ্কারির তদন্ত প্রতিবেদন সম্পন্ন হয়েছে। ডোপিংয়ের দায়ে জুভেন্টাস তারকাকে চার বছর নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে ইটালির ডোপবিরোধী আদালত। ডোপবিরোধী আদালতের আবেদনটি মঞ্জুর হলে ফ্রান্স তারকাকে চার বছর ফুটবল থেকে নির্বাসনে থাকতে হবে। কার্যত ফুটবল জীবনই শেষ হয়ে যেতে পারে ৩০ বছর বয়সী ফুটবলারের। আইনজীবীদের প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রতিবাদ করেনি পল পগবা।  নিষেধাজ্ঞার পরিমাণ কমাতে চাইলে সাজা হবার পর আপিল করতে হবে পগবার। একই সঙ্গে জুভেন্টাস মিডফিল্ডারকে প্রমাণ করতে হবে যে, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ডোপ নেননি। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নেওয়া চিকিৎসা পদ্ধতিতে ভুল ছিল। তাহলেই সাজার পরিমাণ কমাতে পারে এন্টি ডোপিং এজেন্সি।  চলতি বছরের ২০ আগস্ট ইতালিয়ান সিরিআ লিগে উদিনেসের বিপক্ষে ম্যাচের পর ডোপ টেস্ট করা হয় পগবার। তবে তদন্ত রিপোর্টের তথ্যে বেরিয়ে আসে, টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির জন্য ওষুধ গ্রহণ করেছেন জুভ মিডফিল্ডার। যার জন্য সেপ্টেম্বর মাস থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তদন্ত চলমান ইতালির ডোপিং আদালত।  বিশ্ব ডোপবিরোধী আইন অনুযায়ী, কোনো খেলোয়াড় যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো ওষুধ খাওয়া বা খাবারে কিছু মেশানোর প্রমাণ পেশ করতে পারেন, তা হলে শাস্তির মেয়াদ কমতে পারে। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে একটি গোল করেন পল পগবা। ২০২২ সালে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ইতালির জুভেন্টাসে যোগ দেন ফরাসি প্লে-মেকার।   
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

সাবেক এমপিপুত্রের নারী কেলেঙ্কারি ফাঁস, সমালোচনার ঝড়
খুলনায় সাবেক এমপিপুত্র শেখ রাশেদুল ইসলাম রাসেলের সঙ্গে এক নারীর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ফাঁস হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। শেখ রাশেদ খুলনা-৬ আসনের (কয়রা-পাইকগাছা) সাবেক সংসদ সদস্য শেখ নুরুল হকের ছেলে এবং জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক। ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ফাঁস হওয়া নিয়ে তিনি থানায় মামলা করার পর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। গত ১১ জুন রাজধানীর ভাটারা থানায় মামলা করেছেন শেখ রাশেদ। মামলায় তিনি উল্লেখ করেছেন, গত ৬ জুন বেলা ১১টার দিকে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তার একান্ত মুহূর্তের কিছু ছবি পাঠান এবং পরে মেসেজ দিয়ে চাঁদা দাবি করেন। মেসেজে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আপনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ব্যাপার একটু ভেবে দেখবেন। আমার যেন এই ছবিগুলো জুয়েল ভাই আর মনিরুল ভাইয়ের কাছে পাঠানো না লাগে। যদি সমঝোতায় আসেন ওকে, আপনার সব জিনিস আপনার কাছে চলে যাবে। টাকা দেবেন ৫ কোটি।’ রাশেদুল ইসলাম এজাহারে আরও উল্লেখ করেছেন, ‘একটি অজ্ঞাত মহিলা ও পুরুষ কুচক্রি মহল আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করার জন্য কৌশলে আমার একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ আমার আত্মীয়স্বজনের মোবাইলে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছেন।’ তবে শেখ রাশেদ কালবেলার কাছে দাবি করেছেন, ওই নারীর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি তাকে কোনোদিন দেখেনওনি। ছবি ও ভিডিও এডিট করা দাবি করে তিনি বলেন, ‘এসব ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে একটি চক্র এসব ছড়াচ্ছে।’ মামলার এজাহারে তিনি নিজের একান্ত মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও গোপনে ধারণ করে তার কাছে চাঁদা দাবির কথা উল্লেখ করেছেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, চাঁদা দাবি এবং তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় তিনি আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে, নারীর সঙ্গে অনৈতিক কার্যকলাপে জড়ানোয় শেখ রাশেদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কোথাও শুনিও নাই। না শুনে, না জেনে কীভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী কালবেলাকে বলেন, ‘ঘটনাটি বেশ কিছুদিন ধরেই শুনছি। কিন্তু এখনো যেহেতু অফিসিয়ালি আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। সে কারণে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কিছু নেই।’ এদিকে রাশেদুলের করা মামলায় খুলনার দৌলতপুর থেকে ফাতেমা তুজ জোহরা নামে এক নারীকে এবং পাইকগাছা উপজেলার ফতেহপুর গ্রাম থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে দুজনই ঢাকার কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।
১৮ নভেম্বর, ২০২৩

মেসি ব্যালন ডি’অর জিতলে কেলেঙ্কারি হবে
ব্যালন ডি’অর সংক্ষিপ্ত তালিকায় নাম আছে ৩০ জনের, যার ২৮ জন দর্শকের কাতারে! মূল লড়াইটা সীমাবদ্ধ লিওনেল মেসি ও আর্লিং হলান্ডের মধ্যে। হলান্ডকে ছাপিয়ে মেসির এ পুরস্কার পাওয়া নাকি নিশ্চিত! ইতালির বিখ্যাত সংবাদিক ফ্যাব্রিজিও রোমানো তেমনটাই জানিয়েছেন। রোমানো বুধবার এক্সকে (সাবেক টুইটারে) জানিয়েছেন, ‘মেসি সম্ভবত ২০২৩ সালের ব্যালন ডি’অর জিততে যাচ্ছেন। সব নির্দেশনা সেদিকেই যাচ্ছে যে, মেসিই হতে যাচ্ছেন চূড়ান্ত বিজয়ী। অফিসিয়াল ঘোষণাটা আসবে সোমবার, প্যারিস থেকে। এটি হতে যাচ্ছে মেসির অষ্টম ব্যালন ডি’অর।’ একের পর এক চকমপ্রদ সংবাদ প্রকাশ করা এ সাংবাদিকের দাবি সত্যি হলে বিশ্বসেরা ফুটবলার নির্বাচনের প্রক্রিয়াটাই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। সে প্রশ্ন তুলে রাখলেন ওয়েস্টহ্যাম স্ট্রাইকার মিকাইল অ্যান্টনিও এবং লাম উইলসন। ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া জ্যামাইকান ফুটবলার অ্যান্টনিও বলেছেন, হলান্ডকে হারিয়ে মেসি ব্যালন ডি’অর জিতলে সেটা হবে কেলেঙ্কারি। ‘আমি বুঝতে পারছি মেসির বিশ্বকাপ জেতাটা বিশাল ঘটনা। কিন্তু আপনি ট্রেবলজয়ী দলকে উপেক্ষা করতে পারেন না। হলান্ড একের পর এক রেকর্ড ভেঙে যাচ্ছেন। তিনি এ পুরস্কারের দাবিদার। হলান্ড যদি এটা না পায়, তা হবে বড় কেলেঙ্কারি’— বলছিলেন ৩৩ বছর বয়সী ফুটবলার অ্যান্টনিও।
২৭ অক্টোবর, ২০২৩

পুলিশ কর্মকর্তাদের নারী কেলেঙ্কারি নিয়ে আলোচনা
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জনগণের জানমাল ও সম্পদের নিরাপত্তায় ভূমিকা রেখে চললেও গুটি কয়েক অসাধু কর্মকর্তার জন্য বারবার সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে পুলিশ প্রশাসনকে। বিভিন্ন সময়ে ঘুস, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে নানা অনিয়ম সামনে আসলেও সম্প্রতি ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় এক পুলিশ কর্মকর্তার নারী কেলেঙ্কারির তথ্য বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অতিসম্প্রতি নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে ডিএমপির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের সঙ্গে ডিএমপির সদর দপ্তরে কর্মরত সানজিদা আফরিন নিপার অনৈতিক সম্পর্কের গুঞ্জন। এর জের ধরে সানজিদার স্বামী রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাঁধে এডিসি হারুনের। যার ভিডিও ক্লিপ পর্যন্ত ছড়িয়েছে সামাজিকমাধ্যমে। এদিকে ওই ঘটনায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে আটক করে থানা হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ করা হয়। ওই ঘটনার পর এডিসি হারুনকে রংপুরে বদলি করা হয়। সবশেষ সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে পুলিশের এই কর্মকর্তাকে। গত কয়েক বছরে পুলিশের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নারীঘটিত কেলেঙ্কারি দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ডিআইজি মিজান, পুলিশ সুপার মুক্তা ও এডিসি সাকলায়েন। যার সর্বশেষ সংযোজন এডিসি হারুন। এর আগে ২০১৭ সালে জিআইজি মিজানের ঘটনা বেশ আলোচনায় জন্ম দেয়। ওই বছরের জুলাই মাসে কর্মসংস্থান ব্যাংকের কর্মকর্তা ইকো নামের এক নারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিয়ে করেন পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এমনকি সেই বিয়েতে শর্ত দেওয়া হয় যেন, বিয়ের খবর ২০১৯ সাল পর্যন্ত গোপন রাখে ইকো। তবে শর্ত ভেঙে বিয়ের খবর প্রকাশ করায় তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ইকোকে গ্রেপ্তার করান তিনি। এমনকি বগুড়া, রমনা ও মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে ব্যবহার করে ওই নারী ও তার পরিবারকে হয়রানি করেন ডিআইজি মিজান। ইকোর লালমাটিয়ার বাসা তল্লাশি চালিয়ে জব্দ করা হয় মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, লেখাপড়া ও চাকরিসংক্রান্ত সব কাগজপত্র। যে ঘটনায় কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা। ওই সময়ে পাওয়া যায় ডিআইজি মিজানের আরও বেশ কয়েকটি নারী কেলেঙ্কারির তথ্য। যেখানে সংবাদ পাঠিকাসহ বেশ কয়েকজন নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেন ইকো ও তার মা। এমনকি ওই পুলিশ কর্মকর্তার ফাঁদে পড়ে অনেক নারীর সংসার ভেঙেছে দাবি করে বিভিন্ন ফোনালাপের রেকর্ড সংবাদমাধ্যমের কাছে সরবরাহ করেন ব্যাংক কর্মকর্তা ওই নারী। এর জের ধরে অবৈধ সম্পদের তদন্তে নামে দুদক। দুদকের করা মামলায় ডিআইজি মিজানকে ১৪ বছরের সাজা দেন আদালত। ২০১৯ সালের মে মাসে সুদানে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে থাকা অবস্থায় এক নারী কর্মকর্তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়ান বাংলাদেশ পুলিশের কন্টিনজেন্টের কমান্ডার পুলিশ সুপার মোকতার হোসেন। দেশে আসার পর এসপি মোকতারকে পিবিআইয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়। দেশে ফিরে ২০২১ সালের ১২ আগস্ট মোকতার হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন ওই নারী। পরে সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে থানাকে নির্দেশ দেন ঢাকার একটি আদালত।  ২০২১ সালে চিত্রনায়িকা পরীমণির সঙ্গে সম্পর্কের বিষয় সামনে আসার পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) গোলাম সাকলায়েনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে মিরপুরের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) সংযুক্ত করা হয় তাকে। এর আগে পরীমণির বিরুদ্ধে র‌্যাবের করা একটি মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। ওই মামলার সূত্র ধরেই এডিসি সাকলায়েনের পরীমণির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চলতি বছরের ২৭ মার্চ অফিস কাম বাসার একটি কক্ষে মেয়েদের নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ এবং ঘুস নেওয়ার অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় চাকরি থেকে অপসারণ করা হয় সহকারী পুলিশ সুপার মোহা. আবদুর রকিব খানকে। ময়মনসিংহের ত্রিশাল সার্কেলে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে অফিস কাম বাসার একটি কক্ষে দীর্ঘদিন ধরে মেয়েদের নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমরা গত দুয়েক বছরে কয়েকটি ঘটনা দেখলাম। পুলিশের কতিপয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নৈতিক স্খলনের কারণে পেশাদারিত্ব হারিয়ে নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছেন। এ ক্ষেত্রে এডিসি হারুন, এসপি মোকতার বা এডিসি সাকলায়েন কিংবা অন্য যাদের কথাই বলুন তারা আদর্শ ও নীতিবান পুলিশ হয়ে উঠতে পারেননি। শুধু নারী কেলেঙ্কারিই নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও পুলিশের এমন নীতি-আদর্শচ্যুতির উদাহরণ আছে। তারা মনে করেছেন, একটা সুযোগ যেহেতু পেয়েছি সেটা কাজে লাগাই। আমি পুলিশ, আমাকে কোথাও জবাবদিহি করতে হবে না, কেউ আমার কাছে জবাবদিহি চাইবেও না। কারণ তারা আমার পরিচয়, পোশাক ও অস্ত্রকে ভয় পাবে। এসব কারণেই কখনো কখনো তারা জোর করেই কোনো সহকর্মী অথবা অন্য কোনো নারীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছেন। আবার কখনো কখনো ওই পুলিশ ও নারী দুজনই নিজের ইচ্ছায় সম্পর্কে জড়িয়েছেন। তাদের এই নৈতিক স্খলনের কারণে তৃতীয় কেউ ভিকটিম হয়েছে। এমনকি কেউ সহিংসতার শিকার হয়েছে, আত্মহত্যা করতে হয়েছে। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে ব্যাপকভাবে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X